27-07-2023, 01:44 PM
পর্ব-৪৩
মুখ নিচু করে বিছানায় বসে পড়ল। কাকলি বাইরে বেরিয়ে এসে পায়েলকে বলল - তোমার বরের ক্ষমতা দেখলাম আমার কিছুই হলোনা কিন্তু উনি ঝরিয়ে ফেললেন। পায়েল শুনে বলল - সে তো আমি জানি ক্ষমতা নেই কিন্তু লোভ আছে ষোলোআনা।
যাইহোক, রাতের খাবার খেয়ে আমরা ফিরে এলাম। কাকলিকে আর একবার চুদে ল্যাংটো হয়েই ঘুমিয়ে পড়লাম। সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে কাকলিকে ডেকে দিলাম। কাকলি উঠেই মুখ ধুয়ে আমাকে চা করে এনে দিয়ে বলল - ঘরে তো কিছুই নেই গো তোমাকে কি খেতে দি বলতো ?
আমি - আমাকে একটা ব্যাগ দাও কাছেই বাজার আছে সেখান থেকে কিছু কিনেআনি। বাজার গিয়ে একটা বড় দেখে মাছে কাটিয়ে আনলাম সাথে কিছু তরিতরকারি। কলকাতার থেকে এখানে একটু বেশি দাম। আর জলখাবারের জন্য কচুরি আর কিছু মিষ্টি কিনে ফিরলাম। পাশের ঘরে নিশাকে ডেকে বললাম - জলখাবার খাবে এসো। নিশা - আগে তোমার বন্ধু উঠুক সেতো এখনো ভোঁস ভোঁস করে ঘুমোচ্ছে। আমি ঘরে ঢুকে দিলীপকে ডেকে তুললাম বললাম - এই শালা মুখ ধুয়ে আমার ঘরে আয়।
আমি কাকলিকে বাজার দিয়ে বললাম - আমি স্নানে যাচ্ছি এসে খেয়েই বেরিয়ে পড়বো। কাকলি - শুধু জলখাবার খেয়েই চলে যাবে দুপুরের টিফিন কি হবে ? আমি - অতো চিন্তা করোনা আমার ব্যাংকে খুব ভালো খাবার পাওয়া যায় সেখানেই খেয়ে নেবো। স্নান সেরে রেডি হয়ে জলখাবার খেতে বসলাম। দিলীপ আর নিশা ঘরে এলো ওরাও খেতে বসল। কাকলি আমাদের দিয়ে নিজেও খাবার নিলো।
জল খেয়ে বেরিয়ে পড়লাম। নিচে গিয়ে রাস্তাতে দাঁড়ালাম এখানে অনেক শেয়ারে যাবার গাড়ি আছে শুনেছি। একটু বাদেই অয়েল এসে আমার হাত ধরে বলল - একা একা যাচ্ছ যে আমাকে ডাকতে পড়তে। আমি শুনে বললাম - আমার মনে হয়েছে যে তুমি বেরিয়ে গেছো।
একটা গাড়ি এলো তাতে করে আমার দুজনে একদম ব্যাংকের সামনে নামলাম। আমাদের ডিপার্টমেন্টে পৌঁছে আমার ডেস্কে বসতে যেতেই বেয়ারা এসে বলল -সাহাব আপকা কেবিন উধার হ্যায় চলিয়ে। আমাকে নিয়ে একটা কেবিনের সামনে গিয়ে বলল - সাহাব এহি হ্যায়। কেবিনের দরজায় আমার নাম লেখা একটা বোর্ড এসিস্টেন্ট ম্যানেজার বলে লেখা। ভিতরে ঢুকে নিজের চেয়ারে বসে বিভাসদাকে ইন্টারকমে বললাম - দাদা আমি এসে গেছি। বিভাসদা বললেন - ঠিক আছে একবার আমার কেবিনে এসো। আমি যেতে উনি বললেন - দেখো একটা কমপ্লিকেসি হয়েছে। তোমরা যে দুটো ব্যাংকার কাজ করেছিলে তারমধ্যে দ্বিতীয়টা তো ডিসিশন হয়ে গেছিলো। কিন্তু প্রথমটা নিয়ে একটা সমস্যা দেখা দিয়েছে। আমি - কেন কি হলো আবার। বিভিসাদা - ওই ম্যানেজার ভদ্রমহিলার চাকরি যাবে হয় তো। আমি - কেন ওনার তো কোনো দোষ নেই। বিভাসদা বললেন - সে আমি আর তুমি জানি কিন্তু আমি যে নোট দিয়ে ফাইলটা পাঠিয়ে ছিলাম তাতে পার্সোনাল ডিপার্টমেন্ট এডভাইস করেছে ওই নিলাম কাউরের সার্ভিসে ডিসকন্টিনিঊ করার। এখন কি করা যায় সেটাই ভাবছি। ওই নিলাম ম্যাডাম আমার কাছে এসে হাতে পায়ে ধরেছেন ওনার চাকরি বাঁচানোর জন্য আর শুধু তোমার কথা জিজ্ঞেস করছিলেন। আমি শুনে জিজ্ঞেস করলাম - উনি কি ওনার ব্রাঞ্চে আসছেন ? বিভাসদা - না না ওনার কাছে একটা চিঠি পাঠানো হয়েছে যতদিন না এই কেসের ডিসিশন হচ্ছে উনি কাজে যোগ দিতে পারবেন না।
আমি শুনে বললাম -ফাইলটা একবার দেখতে হবে আমাকে। একবার চেষ্টা করে দেখতে দোষ কোথায়। বিভাসদা - আমি জানি তুমি চেষ্টা করলেই পারবে। আমি উঠে দাঁড়িয়ে বললাম - দাদা আমি একবার পার্সোনাল ডিপার্টমেন্টে গিয়ে ফাইলটা নিয়ে আসছি। বিভাসদা - তুমি গেলে দেবেনা ওরা দাড়াও আমি ফোন করে বলেদিচ্ছি ; তও যদি না দেয় তো সোজা গভর্নরের কাছে একবার যেতে হবে। তবে ওনার এপয়েন্টমেন্ট পাওয়া খুব শক্ত। তবে উনি তোমার খুব প্রশংসা করে নোট দিয়েছেন তোমার পার্সোনাল ফাইলে। আমি শুনে বললাম - তাহলে কি আমি একবার ওনার সেক্রেটারিকে বলে এপয়েন্টমেন্ট নেবো আপনি কি বলেন ? বিভাসদা - চেষ্টা করতে দোষ নেই। যাও একবার। আমি বেরিয়ে সোজা গভর্নরের অফিসে গেলাম। ওনার কেবিনের সামনে একজন মহিলা অবশ্য বয়েসে খুবই ছোট মনে হচ্ছে। আমি ওনার কাছে গিয়ে দাঁড়াতে বলল -বলুন আপনার জন্য কি করতে পারি ? আমি আমার নাম বলতে হেসে বলল - ও আপনি মিঃ সুমন দাস কি করতে পারি বলুন যদি আমার পক্ষে সম্ভব হয় তো নিশ্চই করব। আমি - আপনিই পারেন , আমি আমার জন্য আসিনি একজনের চাকরি বাঁচানোর চেষ্টা করছি। আমি ওকে সবটা জানাতে বলল - দাঁড়ান আমি ওই ফাইলটা এনিয়ে নিচ্ছি সেটা নিয়ে এখুনি গভর্নরের সাথে দেখা করিয়ে দিচ্ছি। আমি ওকে ধন্যবাদ দিলাম। মেয়েটির নাম নিকিতা দেশাই। ও ফাইল এনিয়ে আমাকে বলল - একটু অপেক্ষা করুন আমি দেখি স্যার খালি আছেন কিনা।
নিকিতা কেবিনে ঢুকে গেল আমি ওখানেই বসে রইলাম। একটু বাদে ফায়ার এলো আর আমাকে বলল - শিগগিরই যান উনি মাত্র দশ মিনিট সময় দিয়েছেন তারপরেই আজকে আর পাবেন না ওনাকে। আমি ফাইল নিয়ে ওনার কেবিনে ঢুকলাম। বিশাল কেবিন একদম শেষের দিকে ওনার বিশাল টেবিল সামনে অনেক গুলো চেয়ার। ওনার সামনে গিয়ে দাঁড়াতে উনি হাত বাড়িয়ে দিলেন আমি একটু অবাক হয়ে গেলাম হাত বাড়িয়ে হ্যান্ডশেক করে ফাইলটা এগিয়ে দিলাম ওনার দিকে। উনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন - খুব সংক্ষেপে আমাকে ঘটনটা বলুন তারপর ফাইল দেখবো। আমি সবটা ওনাকে বলতে উনি কোনো কথা না বলে বেল বাজালেন বেয়ারা কেবিনে ঢুকে দ্রাতে বললেন - নিকিতা ম্যাডাম কো বুলাও। নিকিতা ঘরে ঢুকে বলল - বলুন স্যার। উনি বললেন - এই ফাইলের নোট ছিড়ে ফেলো আর একটা নতুন নোট লাগাও আমি যা বলছি সেটা নোট করে টাইপ করে এখুনি নিয়ে এসো। নিকিতা নোট লিখে চলে গেলো। এবার উনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন - ইয়ং ম্যান তুমি শুরুতেই খুব ভালো কাজ করছো এভাবেই চালিয়ে যাও আর আমার তোমার অব্জার্ভেশনের উপরে ভরসা আছে। তুমি একটা ফ্যামিলি বাঁচিয়ে দিয়েছো আর এনার চাকরিও বাঁচালে আর আমি তোমার কথার ওপরে ভরসা রেখেই তোমার অনুরোধ মেনে নিলাম। তোমাকে একটু সাবধানে কাজ করতে হবে আমাদের এই ব্যাংকে অনেক লোক এমন আছে যে তাদের সাথে তুমি কম্পিট করতে পারবেনা। ভালো কাজে ওর সব সময় ওপস করে আর ওদের অনেক ওপর তলায় যোগাযোগ আছে। তাই খুব সাবধানে চলতে হবে। এরকমই একজন আমার এগেনস্টে ফাইন্যান্স মিনিস্ট্রিতে একটা রিপোর্ট পাঠিয়েছে আর আমাকে ওখানে এটেন্ড করতে হবে বিফোর লাঞ্চ। আমি শুনে অবাক হলাম গভর্নরের এগেনস্টে রিপোর্ট। ভাবলাম আমি তো ওনার কাছে কিছুই না আমার মতো অনেকে আছে। নিকিতা টাইপ করা পেপারটা ওনার হাতে দিতে উনি একবার চোখ বুলিয়ে সই করে নিকিতার হাতে দিয়ে বললেন সিল লাগিয়ে নিলাম কৌরকে পাঠিয়ে দাও, না না এই লেটার সুমন কে দিয়ে দাও ও নিজেই দিয়ে আসবে। আমার দিকে তাকিয়ে - কি পারবে তো ? আমি - কেন পারবো না স্যার। উনি বললেন - এবার আমাকে উঠতে হবে তুমি এই চিঠি নিয়ে ওনাকে দিয়ে কাল থেকেই যেন কাজে জয়েন করেন। আমি ওনাকে অনেক ধন্যবাদ দিয়ে বেরিয়ে এলাম।
নিকিতা আমার হাতে খাম দিয়ে বলল - আমি আজ পর্যন্ত দেখিনি যে স্যার এতো দ্রুত ডিশন নিয়েছেন। অবশ্য এটা আপনার ভালো কাজের পুরস্কার হয়তো। নিকিতা আমার দিকে হাত বাড়িয়ে বলল - এরপর যখন কোনো দরকার পড়বে আমাকে কল করবেন আমি আমার সাধ্য মতো চেষ্টা করব। আপনার জন্য কিছু করতে পারলে আমারও ভালো লাগবে। একটু চুপ করে থেকে আপনার কাজ তো হলো আর আপনার সাথে খুব একটা দেখা হবে না সেটাই খারাপ লাগছে। আমি ওকে বললাম - তা কেন আপনি চাইলে আবার দেখা হতে পারে তবে অফিসিয়ালি নয় ছুটির পরে। নিকিতা হেসে বলল - তাহলে তো খুব ভালো হয় আপনার মতো একজন হ্যান্ডসাম পুরুষের সাথে সময় কাটানোর থেকে ভালো আর কি হতে পারে। আমি হেসে দিলাম বললাম - কি যে বলেন আমার থেকেও অনেক হ্যান্ডসাম ছেলে আছে চাইলে তাদের কাউকে বেছে নিতে পারেন।
নিকিতা বলল - শুনেছি যে আপনার বিয়ে হয়েছে ভেরি রিসেন্ট ? আমি - ঠিক শুনেছেন বিয়ের পর আজকেই আমি কাজে জয়েন করেছি।