14-07-2023, 03:09 PM
পর্ব-১৩
আমি ম্যানেজার মহিলাকে বললাম - আপনি এখুনি ভেঙে পড়বেন না আমি দেখছি কি করা যায়। তবে আপনাকে একটা ডিক্লারেশন দিতে হবে। একটা সাদা কাগজে লিখে দিন আমাকে। শুনে উনি বললেন - কি লিখতে হবে যদি একবার বলেন তো।
ওনার কথা শুনে আমি নিজেই একটা ড্রাফট করে দিলাম শুধু ওনাকে ওনার নাম ডেজিগনেশন আর এমপ্লয়ি নম্বর লিখতে হবে। দশ মিনিটের মধ্যে আমাকে লেটার বানিয়ে দিলেন। ওনার নাম ঝিলিক গুপ্তা ইউপির লোক মনে হচ্ছে। সবটা দেখে নিয়ে ওনাকে বললাম - এখুনি কোনো টেনশন নেবার দরকার নেই আমার সাধ্য মতো চেষ্টা করবো যাতে আপনার সাসপেনশন না হয়। ঝিলিক আমার ফোন নম্বর নিলো আর ওর নম্বর আমাকে দিলো। আমি বললাম যে আমি কি আপডেট হচ্ছে জানাবো।
একটু বাদেই পুলিশ এসে গেল দিপক শর্মাকে দেখিয়ে বললাম যে ওনাকে এরেস্ট করে নিয়ে চলুন। কাজ হয়ে যেতে আমি আর পায়েল সোজা নিজের অফিস চলে এলাম। বিভাস বাবুকে রিপোর্ট দিতে উনি ভালো করে দেখে বললেন - দারুন কাজ করেছো। দীপক শর্মার ১০ বছরের জেল তো হবেই। কালকে কিন্তু আর একটা ব্যাংকে যেতে হবে। আমি শুনে বললাম - লাঞ্চের পরেই তো যেতে পারি আবার কালকের জন্য কেন ফেলে রাখবো স্যার। বিভাস - আজকেই যেতে চাও তো আমার কোনো আপত্তি নেই। পায়েলের দিকে তাকিয়ে বললেন - কি তোমার আপত্তি আছে ?
পায়েল - না না স্যার সুমনের সাথে গেলে আমারও অনেক অভিজ্ঞতা হবে। ও নতুন হলে কি হবে ট্রেনিংটা ও খুব মন দিয়ে করেছে।
আমরা দুজনে খেতে এলাম। খেতে খেতে কথা চলতে লাগলো। পায়েল বলল - তোমার ওই ঝিলিক কে কেমন লাগলো ?
আমি - কেমন লাগবে তবে একটা ব্যাপার ভেবে আমি আশ্চর্য হচ্ছি এতো কম বয়েসে ও ম্যানেজার হলো কি ভাবে।
পায়েল - মানে ওর কম বয়েস দেখে কি লোভ হচ্ছে ?
আমি-দেখো কাজের সময় আমি এসব কথা ভাবি না যখন দেখেছিলাম ওকে তখন কিছুই ভাবিনি কাজ ছাড়া। তবে এখন মনে হচ্ছে যে মালটা বেশ সেক্সী বিছানায় ভালো খেলতে পারে।
পায়েল - চেষ্টা করে দেখতে পারো যদি পটে যায় তো তোমার লাভ।
খাওয়া শেষ করে আবার আমরা বেরিয়ে পড়লাম আর এক ব্রাঞ্চের উদ্দেশ্যে। সেখানে গিয়ে প্রথমেই ম্যানেজারের কেবিনে ঢুকে ওনাকে জেরা করে বুঝলাম যে উনি খুব ঝানু মাল আর ওনার পলিটিক্যাল কনেকশন আছে। কেননা উনি বার বার একজন মন্ত্রীর নাম নিচ্ছিলেন। ওনার কথা শুনে বললাম - দেখুন ও সব মন্ত্রীর কাজ নয় আপনি ওনার নাম বলে ছাড়া পাবেন যদি ভেবে থাকেন তো ভুল করছেন। কালকেই আমি ওনার সাথে দেখা করে সব খুলে জানাবো তখন দেখবো যে উনি আপনার জন্য কতটা করেন।
শুনে এবার ভীষণ ভেঙে পড়লেন বললেন - আমি সব টাকা ফেরত দিয়ে দেব আমাকে আপনি বাঁচান।
ওনার টাকার পরিমান অনেক বেশি প্রায় ৫০০ কোটি।আমি ওনাকে বললাম - নিয়েছিলেন কেন আর কোথায় রেখেছেন সব টাকা ?
বললেন - সব আমার বাড়িতেই আছে এখুনি চলুন আমি সব টাকা ফেরত দিয়ে দেব এক টাকাও খরচ করিনি। ভেবেছিলাম রিটায়ার করার পরে যা করার করবো। আমি শুনে জিজ্ঞেস করলাম - তা এভাবে কতদিন ধরে টাকা সরিয়েছেন ?
বললেন - টানা ২০ বছর আমি এই ব্রাঞ্চে আছি আর মাত্র এক বছর বাকি চাকরির। এখন আপনার ওপরেই আমার মোর বাঁচা নির্ভর করছে।
শুনে বললাম - চলুন আপনার বাড়িতে দেখি কোথায় আর কি ভাবে টাকা রেখেছেন। উনি সাথে সাথে আমার সাথে বেরিয়ে পড়লেন। বিকেল পাঁচটা বেজে গেছে। পায়েল আমাকে বলল - সুমন তুমি ওনাকে নিয়ে যাও আমাকে ছেড়ে দাও আজকে আমার হাবি ফিরছে তাই চলে যাচ্ছি তুমি কিছু মনে করোনা। আমি শুনে বললাম - ঠিক আছে আসল কাজ তো হয়েই গেছে এখন শুধু টাকা উদ্ধার করে ব্যাংকে দিলেই আমার কাজ শেষ। সুনীল মালহোত্রা (ম্যানেজার)আমাকে নিয়ে সোজা ওনার বাড়িতে গেলেন। সেখানে গিয়ে দেখি ওনার স্ত্রী আর মেয়ে রয়েছে। স্ত্রী চাবি দিতে আমাকে নিয়ে গেলেন একটা ঘরে। একটা বড় ওর্ড্রোব সরাতে দেখি আর একটা দরজা রয়েছে। সেটা চাবি দিয়ে খুলে আমাকে বললেন - চলুন।
আমি ভিতরে গিয়ে অবাক হয়ে গেলাম বিশাল একটা গোডাউনের মতো ঘরটা আর তাতে সারি সারি দেওয়াল আলমারি এক এক করে খুলছেন আর তাই দেখে আমার চোখ ছানাবড়া হয়ে গেলো। টাকার অঙ্কটা মুখে বলতে যতটা সহজ চোখের সামনে দেখলে তফাৎটা বোঝা যায়। ভাবছি ভদ্রলোকের কলিজার জোর আছে এতো টাকার সাথে উনি ঘুমোন কি করে একটুও ভয় হয়না। কি জানি বাবা এদের মোনটা কি দিয়ে তৈরী।
আমি সুনীল বাবুকে বললাম - একটা ট্রাক লাগবে যে এগুলো ব্যাংকে ফেরত নিয়ে যেতে হবে। ওনার মেয়ে ও স্ত্রীও ঘরে ঢুকে অবাক হয়ে গেলেন অতো টাকা দেখে। এবার আমি মালহোত্রাকে বললাম - এবার তো আপনাকে জেলে যেতে হবে আর ব্যাংকের থেকে ডিসমিস লেটার পেয়ে যাবেন। সুনীল বাবু আমার পায়ের কাছে বসে বললেন - আমাকে একটু দয়া করুন আমি জানি আপনি চাইলেই আমাকে বাঁচাতে পারবেন আর আমার পেনশনটাও পাবো।