Thread Rating:
  • 9 Vote(s) - 2.89 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Adultery ট্র্যাজেডি থ্রিলার নিজেকে সমর্পণ
#5
ট্র্যাজেডি থ্রিলার নিজেকে সমর্পণ-


আবার রুগীর সামনে কাসেমের সাথে কোন রকম সিন ও করতে চান না সুলেখা।যদি ও রুগী দেখতে গিয়ে সে কয়েক মুহূর্তের জন্যে স্থির হয়ে গিয়েছিলো, কিন্তু দ্রুতই নিজেকে সামলে নিলো সুলেখা,আর ওর হাতের কাজ করতে লাগলো। কাসেম একটু দূরে সড়ে গিয়ে আড়াল থেকে সুলেখার মুখের ভাব পরীক্ষা করতে লাগলো, কাসেম দেখলো সুলেখা একই ভঙ্গিতে ওর কাজ করে যাচ্ছে, যেন কিছুই হয় নি,কাসেম যেন সুলেখার পাছার উপর হাত দেয় নি।
কাসেমের মনে সাহস এলো, সে আবার পরিষ্কার করার বাহানায় আবার ও সুলেখার পিছনে চলে এলো, কাসেমকে পিছনে আসতে দেখে সুলেখার বুক ধুকপুক করতে লাগলো।যদি ও সে স্বাভাবিক থাকার প্রানপন চেষ্টা করছে,কিন্তু কাসেম সেই একই কাজটা আবার ও করলো ওর সাথে, আগের বারের সাথে পার্থক্য শুধু এটাই যে,কাসেম এইবার বেশ সময় নিয়ে হাত দিয়ে খামছে খামছে সুলেখার পাছা টিপছে, রুগীর আড়ালে থেকে।
সুলেখার মুখ হা হয়ে গেলো,কাসেম যেই আস্পর্ধা দেখাচ্ছে,সেটা ওর জন্যে চরম অবমাননাকর। সুলেখা চট করে এদিক সেদিক তাকালো,ওর কাছ থেকে একটু দূরে কাজ করতে থাকা রাবেয়া আবার দেখে ফেললো কি না,সেটা দেখে নিলো।
কিন্তু কাসেম যেন সম্পূর্ণ ভরডরহীন।সে পালা করে সুলেখার দুই পাছার দাবনাকে নিজের হাতের তালু দিয়ে বেশ কয়েকবার খামছে ধরে,এর পরে যেন ওর কাজ হয়ে গেছে এমনভাব করে জিজ্ঞেস করলো সুলেখাকে, “মেমসাহেব,এখানটা পরিষ্কার হয়ে গেছে…আমি কি যাবো নাকি,এই জায়গাটা আবার পরিষ্কার করে দিবো…”।কাসেমের কথায় স্পষ্ট যে সুলেখা আশকারা দিলে কাসেম এই নোংরা ঘৃণিত কাজটা আবার করবে।
“এখানে আর পরিষ্কার করতে হবে না কাসেম, তুমি অন্যদিকে যাও…”-কোন মতে খুব নিচু স্বরে বললো সুলেখা।
“জি মেমসাহেব,যেমনটা আপনি বলবেন…”-এই বলে কাসেম ধীর পায়ে ওখান থেকে চলে গেলো।আবার ও দূরে গিয়ে ওর মেমসাহেবকে লক্ষ্য করতে লাগলো,যেন কিছুই হয় নি এমনভাব করে সুলেখা ওর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
“হুম…মেমসাহেব কি চায়, সেটা মনে হয় জেনে গেছি আমি…”-এই বলে একটা গানের সুর গলায় ভাঁজতে ভাঁজতে কাসেম প্রফুল্ল্য চিত্তে ওর কাজ চালাতে লাগলো।
কাজের ফাঁকে একটা গোপন কিন্তু ছোট চিঠি লিখলো কাসেম,সেখানে কারো নাম উদ্দেশ্য না করে আর নিচে নিজের নাম না বলে,ঠিক যেভাবে প্রেমিক ওর প্রেমিকাকে চিঠি লিখে সেভাবে লিখলো,“আমি জানি,আপনি কি চান…আর আমি কি চাই, সেটাও আপনি জানেন…আপনাকে আমি ভালবেসে ফেলেছি…আমার শরীর মন শুধু আপনার কাছে যাওয়ার জন্যে ব্যাকুল…আমার ভালোবাসা ও আপনার জন্যেই…আমাকে একটু ইশারা করলেই আমি বুঝে যাবো, যে আপনার মতটা কি…আপনার ইশারার অপেক্ষায় রইলাম…”-একটা সাদা কাগজে শুধু এইটুকু লিখে উপরে কারো নাম বা নিচে নিজের নাম উল্লেখ না করেই চিঠিটি নিজের বুক পকেটে রেখে দিলো সে।কোন এক সুযোগ বুঝে এটা সুলেখার হাতে ফেলতে হবে ওকে।
রাত পর্যন্ত কাসেম আর বিরক্ত করলো না সুলেখাকে।তবে রাতে চেম্বার বন্ধ করার আগে আজ রাবেয়া চলে যাওয়ার পরে কাসেম ধীরে ধীরে সুলেখার কাছে গেলো,সুলেখা তখন চেম্বারের পিছনে ওর নিজস্ব একটা চেয়ার টেবিল আছে, ওখানে বসে আজ সাড়া দিনের সমস্ত রুগীর হিসাব দেখছিলো,কার জন্যে নতুন কি ওষুধ দিতে হবে বসে বসে লিস্ট করছিলো।
ধীর পায়ে কাসেম এখানে এসে দাড়ালো।দরজার কাছে আধো অন্ধকারে কাসেমের ছায়ামূর্তি দেখেই সুলেখার বুক ধুকধুক করে উঠলো।সুলেখা এখন ও সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না যে, কাসেমের ব্যাপারে ওর কি করা উচিত।বাস্তব অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ওর উচিত হলো কাসেমকে এখনই তাড়িয়ে দেয়া আর দরকার পড়লে ওকে আর্মির কাছে তুলে দেয়া।কিন্তু ওর মন যেন কিছুতেই সায় দিচ্ছে না ওর এই সিদ্ধান্তে।
সুলেখা একবার ভাবলো কাসেমকে ওর দিনের নির্লজ্জ ও বেহায়ার মত আচরনকে উল্লেখ করে তিরস্কার করে,কিন্তু ওর সাহসে কুলাচ্ছে না।আসলে নিজের শরীর ও মন উভয়কে ভয় পেতে শুরু করেছে সুলেখা নিজেই।
“মেমসাহেব,আমি চলে যাচ্ছি, স্টোর রুমে আলো কি আমি বন্ধ করে দিয়ে যাবো, নাকি আপনি বন্ধ করবেন?”-কাসেম দূরে দরজার কাছে থেকেই জানতে চাইলো।
এই ধরনের প্রশ্ন ও সুলেখার জন্যে নতুন। স্টোর রুমের আলো সব সময় কাসেমই যাওয়ার সময় নিভিয়ে দিয়ে যায়। কখন ও যদি কাসেম আগে চলে যায়,তখন রাবেয়া বা সুলেখা এটা করে থাকে।কিন্তু তাই বলে এটাকে ঘটা করে জিজ্ঞাসা করার কোন দরকার ছিলো না। সুলেখা ঘাড় ঘুরিয়ে কাসেমের দিকে তাকালেন। সাথে সাথে কাসেম মাথা নিচু করে ফেললো,যেন কোন অপরাধ করে নাই সে।
এখন সুলেখার চোখের দিকে তাকানোর মত সাহস নেই কাসেমের।সুলেখা কয়েক মুহূর্ত তাকিয়ে রইলো কাসেমের মুখের দিকে,ওর মনের ভিতর দন্দ চলছে,একবার ভাবছে কথাটা উঠিয়ে কাসেমকে তিরস্কার করে,আবার লজ্জায় কথা টা বলার সাহস হচ্ছে না সুলেখার। কাসেমকে বকা বা তিরস্কার করে যদি বের করে দেই তাহলে ওর মা আর বোনের কি হবে।
সুলেখার মনে এই রকম কত প্রশ্ন কত জিজ্ঞাসা, কত মতামতের ঝড় যে বয়ে যাচ্ছে,ওর খেয়ালই নেই যে,দরজার কাছে কাসেম ওকে কিছু জিজ্ঞাসা করেছে, কিছু জানতে চাইছে ওর কাছে।সুলেখার চোখমুখের ভাব পড়তে পারছে না কাসেম।কিন্তু সুলেখা যে মনে মনে কিছু চিন্তা করছে, সেটা বুঝতে পারলো কাসেম।কিন্তু সেটা কি ওকে কোন শাস্তি দেয়ার কথা নাকি ওকে উৎসাহ দেয়ার কথা, সেটা বুঝতে পারলো না কাসেম। সে গলা খাঁকারি দিয়ে আবার ও জানতে চাইলো, “মেমসাহেব, আমি কি যাবো?”
এইবার যেন সুলেখা আকাশ থেকে মর্তে ফিরে এলো। সে চকিতে জবাব দিলো, “তুমি চলে যাও,কাসেম, আলো আমি বন্ধ করে দিবো…”।
কাসেম চলে গেলো,ওর বেরিয়ে যাওয়ার শব্দ শুনতে পেলো সুলেখা।এর পরে ও সে আরও কিছু সময় ওখানেই বসে রইলো সুলেখা।এর পরে উঠে স্টোর রুমে ঢুকতেই দরজার সাথে একটা সাদা কাগজ আটকানো দেখতে পেলো সে।ওটাকে হাতে নিয়ে খুলে পরলো সুলেখা, কাসেমের লেখা সেই প্রেম পত্র।পড়তে পড়তে সুলেখার শরীর মন যেন কোন এক অজানা ঝড়ে ছিন্নভিন্ন হওয়ার জন্যেই তৈরি হচ্ছে,এমন মনে হলো ওর কাছে, নিজের সাদা ফর্সা মুখটা যেন লাল টুকটুকে হয়ে গেলো। এই জীবনে এটাই সুলেখার কাছে আসা একমাত্র প্রেমপত্র।
ওর জীবনটাকে একদম এলোমেলো করে দিতে পারে এমন একটি ঘটনা, এমন একটা চিঠি।চিঠিটির দিকে ভাবলেসহীন চোখে খানিকক্ষণ তাকিয়ে রইলো সুলেখা,একবার সুলেখা ওটাকে ছিঁড়ে ফেলতে চাইলো,কিন্তু পরক্ষনেই ভাবলো,ওর স্বামীর সাথে এ নিয়ে একবার কথা বলা উচিত,দেখি সে কি বলে। যদি ও সুলেখার জগত নিয়ে কোনদিন মাথা না ঘামানো স্বামীর কাছ থেকে কোন ভালো সমাধান আশা করা যে নিতান্তই বাতুলতা, এটা ও ভালো করেই জানে সুলেখা।
রাতে ঘুমুতে যাবার পরে স্বামীকে সেই চিঠিটা দেখালো সুলেখা,ওর স্বামী নিরাসক্ত চোখে চিঠি পরে জানতে চাইলো, “তুমি কি নিশ্চিত যে এটা কাসেম লিখেছে?”
“আমি নিশ্চিত…”-সুলেখা জবাব দিলো।
“কিন্তু এটা যে তোমাকেই উদ্দেশ্য করে লিখেছে কাসেম,সেটা নিয়ে সন্দেহ আছে আমার…এমন ও তো হতে পারে,কাসেম এটা অদিতির জন্যেই লিখেছে… ওর বয়সী ছেলেরা সব সময় বাচ্চা মেয়েদের দিকে চোখ থাকে…”-আকবর সাহবে যেন সত্যি জিনিষটা,বাস্তব অবস্থা কোনভাবেই উপলব্ধি করতে পারছেন না,এমনভাবে বললেন।
“আমার সেই রকম মনে হয় না…এখন তুমি বলো, আমার জন্যেই লিখুক বা অদিতির জন্যে, ওকে নিয়ে কি করা যায়,বলো…”-সুলেখা জানতে চাইলো স্বামীর কাছে।
“ও যদি লিখে,তাহলে ওর শাস্তি পাওয়া উচিত…আর যদি ও না লিখে থাকে, তাহলে,ওকে সন্দেহ করে শাস্তি দিলে অন্যায় হয়ে যাবে…তুমি কি করতে চাও?”-আকবর সাহেব উল্টো সুলেখার ঘাড়ে দায়িত্ব চাপিয়ে দিতে চাইলেন।স্বামীর কথা শুনে সুলেখার খুব রাগ হলো, ওদের পরিবারে ছোট একটা সিদ্ধান্ত ও কি ওর স্বামী ওকে সরাসরি দিতে পারে না?আকবর কি এতই গর্দভ,যে নিজের সংসারে কি হবে,কি হবে না,সেটা নিজে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
স্বামীর প্রশ্ন শুনে সুলেখা কোন জবাব না দিয়ে উল্টো দিকে ঘুরে শুয়ে পরলো,স্বামীর সাথে এটা নিয়ে আর কোন কথা বলার ইচ্ছে নেই ওর। স্ত্রীকে ঝাঁপটা মেরে অন্যদিকে ফিরে ঘুমাতে দেখে,আকবর সাহেব বুঝলেন স্ত্রী ওর উপর রাগ করেছে।তিনি যেনো ভালো কোন পরামর্শ দিচ্ছে এমন ভাব করে বললেন, “আচ্ছা,তোমার যদি মনে হয় এই কাজ কাসেম করেছে,তাহলে তুমি ওকে বিদায় করে দিচ্ছো না কেন?ওকে কাজে রাখলে তো সে আরও সমস্যা তৈরি করবে…”।
স্বামীর কথা শুনে সুলেখার রাগ আরও বেড়ে গেলো, ওর স্বামী নিজে কোন কাজ করবে নাসব কাজ সুলেখাকেই করতে হবে, কাসেমকে বিদায় দেয়ার কাজটা ওর স্বামী করতে পারে না?কিন্তু তিনি করবেন নাসব কাজ মেয়ে মানুষ হয়ে ও সুলেখাকেই করতে হবে। বড় করে একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ছেড়ে শরীরের উপর পাতলা চাদর টেনে নিলেন সুলেখা।
 
[+] 3 users Like Zarif's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: ট্র্যাজেডি থ্রিলার নিজেকে সমর্পণ - by Zarif - 13-07-2023, 10:17 AM



Users browsing this thread: 6 Guest(s)