29-06-2023, 08:31 PM
পঞ্চপঞ্চাশৎ পর্ব
(২)
এ যেন রবীন্দ্রনাথের ছোট গল্পের মতো, “শেষ হইয়া, না হইলো শেষ”। দৌড় শেষ হলো, কিন্তু বিজেতা (winner) ঘোষিত হলো না। কারণ পিঙ্ক অর্কিড এবং মানালি ম্যানিয়া একসঙ্গে finshing line touch করেছে; অন্ততঃ সাদা চোখে দেখে তাই মনে হচ্ছে। খুব ছোট ছোট গ্যালপ করে উইনিং পোস্টে পৌঁছে গিয়েছিলো পিঙ্ক অর্কিড, কিন্তু কোথা থেকে আরশাদ আলমের হুইপ খেয়ে লাস্ট মোমেন্টে মুখটা বাড়িয়ে দিলো মানালি ম্যানিয়া। এই হচ্ছে শানুর ভাগ্য, জিততে জিততেও, জিততে পারে না সে। শনির দশা না কি যেন বলে। এমনিতে গ্রহ-ট্রহ খুব একটা বিশ্বাস করে না, কিন্তু এই রকম সিচুয়েশনে নিজেকে কেমন যেন, বিংশ শতাব্দীর বৃহৎ বঞ্চিত বাঞ্চোৎ মনে হয়। সি সি টিভিতে বারবার দেখাচ্ছে finshing মূহূর্তটা। একবার মনে হচ্ছে, পিঙ্ক অর্কিডই জিতেছে, কিন্তু আবার অন্য angle থেকে দেখলে মনে হচ্ছে, মানালি ম্যানিয়া বাজিমাৎ করেছে। দুর শালা কিচছু ভালো লাগে না। একেই বলে ফটোফিনিশ, এখন বারংবার video recording দেখে panel of jury ঠিক করবে কে এই রেসের winner. একে তো মনের মধ্যে এরকম anxiety, তার উপর কিছু অত্যুৎসাহী লোক, পাশে এসে ঘ্যানঘ্যান করতে শুরু করেছে, “পিঙ্ক অর্কিড খেলেছেন দাদা?”, “কি করে ধরলেন দাদা?”, “কোনো খবর ছিল না কি দাদা?”।
আচ্ছা মুশকিল হলো তো। লোকগুলো তাকে দেখেছে, পিঙ্ক অর্কিডের নাম করে চেঁচাতে। যদি পিঙ্ক অর্কিডের উপর নাই বাজী ধরে, তাহলে তার নাম করে চেঁচাবে কেন? আর খবর-টবর শানু রাখে না, কারণ সে বুঝেছে, রেসের মাঠের অধিকাংশ খবরই ভূঁয়ো। এইসব খবর বেচে, খবরিলালরা দু’পয়সা কামায়, তারপর আর তাদের টিকি দেখা যায় না। খবরের ঘোড়া জিতলে অবশ্য দাঁত ক্যালাতে ক্যালাতে ঠিক চলে আসে, বকশিশ নেওয়ার জন্য। শানু পিঙ্ক অর্কিডকে ধরেছে, কিছুটা বিজ্ঞানসম্মত guesstimation পদ্ধতি apply করে এবং বাকিটা নিজের intuition দিয়ে, যেটা এইসব গাঁড়লদের বললে বুঝবে না। এখানে থাকলে মাকড়াগুলো পাগল করে দেবে। তার থেকে ধুমকির ঠেকের দিকে যাওয়া যাক।
ভালবাসার ভিখারি