Thread Rating:
  • 6 Vote(s) - 3 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
সাজু ভাই- সিরিজ নম্বর -০৩(গল্প:- সরি আব্বাজান)( সমাপ্ত গল্প)
#10
পর্বঃ- ০৫

বাগানের মধ্যে চেয়ারম্যান সাহেবের কাশির শব্দ পেয়ে থমকে গেল সাজু ভাই। যদিও সে এখানে একটা আশঙ্কা নিয়ে এসেছে কিন্তু চেয়ারম্যান যে নিজে উপস্থিত হবে সেটা বুঝতে পারে নাই। তবে নিজেকে কিছুটা ভাবনার মধ্যে নিয়ে গেল কারণ সে চেয়ারম্যান সাহেবের সঙ্গে মাত্র একবারই দেখা করেছে। আর তখনই এই চেয়ারম্যানের কাশির শব্দ মগজে গেঁথে গেছে কারণ সেদিন এই কাশিটা খুব বিরক্ত লাগছিল। একটু পরে চেয়ারম্যান সাহেব বাগান থেকে বের হয়ে গেল, সাজু ভাই ও রাজু দুজনেই আস্তে আস্তে বের হলো। এই মুহূর্তে মুখোমুখি হওয়া যাবে না, মনের সকল প্রশ্ন চেপে রেখে অনুসন্ধান করতে হবে গভীরভাবে। 

নিজেদের এলাকায় ফেরার পথে রাজু জিজ্ঞেস করলো " আমরা এখানে কেন এসেছিলাম সাজু ভাই? আর ওই লোকটা এখানে কেন? "

- সাজু ভাই বললো, যেহেতু একটা পুতুল নিয়ে সবকিছুর গন্ডগোল তাই সেটা অবশ্যই কেউ না কেউ অনুসন্ধান করবে। তাছাড়া যিনি এখানে এসেছেন তিনি এলাকার চেয়ারম্যান, তবে আমার অনুমান মিথ্যাও হতে পারে। 

- তাহলে কি চেয়ারম্যান জড়িত? 

- জড়িত হতে পারে কিন্তু মূল নয়, কারণ এমন করে পরিকল্পনা করার সাহস তিনি একা নিতে পারবে না। 

- লিমনের সঙ্গে কি কোনভাবে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন ভাই? 

- না, কীভাবে করবো? 

- আমি তো জানি না। 

- আচ্ছা ভেবে দেখি। 

রাতে ডিনার করে সাজু কিছুক্ষণ বিছানায় বসে বসে ভাবতে লাগলো। সবকিছু যেন জট পাকিয়ে আছে, চেইন সেলাইয়ের মতো একবার খুলতে পারলে একটানে সবটা খুলে যাবে। কিন্তু যদি গিট্টু লেগে যায় তাহলে মেলা মেলা সময় লাগবে। 

(১) তৌহিদ কেন মিথ্যা বলেছে? 
(২) লিমনের বাবার সেই পুতুল এখন কোথায়? 
(৩) মনিরুল লোকটাকে খুন করলো কেন? 

★★

রাত প্রায় গভীর, বিছানায় শুয়ে অন্ধকার রুমের মধ্যে কান্না করছে লিমন। মা-বাবার কথা বড্ড মনে পরছে তার, সন্ধ্যা বেলা ঘুমিয়েছিল তখনই বাবাকে স্বপ্ন দেখলো। অনেক কিছু উপদেশ দিয়ে চলে গেল, ঘুম থেকে উঠে সেই সময় ধরে চোখের পানি পরছে। নিজে এখন অপরাধী হয়ে সবকিছুর জন্য দায়ী অথচ সে কিছু জানেই না। 

দরজা খোলার ক্যাঁৎ করে শব্দ হলো, অন্ধকারে কেউ একজন দরজা খুলে প্রবেশ করলো। যিনি প্রবেশ করেছে তিনি হয়তো লুকিয়ে এসেছে কারণ সে বাতি অন করে নাই। আস্তে করে বিছানার পাশে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইল, তারপর একটা হাত এগিয়ে দিল লিমনের কপালে। 

মনে হচ্ছে সেই নাসরিন মেয়েটা এসেছে, লিমনের কপালে হাত দিয়ে কিছু বুঝতে চেষ্টা করলো। কিন্তু গালের কাছে হাত পরতেই গাল ভেজা অনুভব করে মেয়েটা আস্তে করে বললো:-

- আপনি কি জেগে আছেন? 

- হ্যাঁ জেগে আছি কিন্তু আপনি এত রাতে এখানে কেন? কি হয়েছে? 

- দিনের বেলা স্বাধীনভাবে আসতে পারি না তাই রাতের আঁধারে লুকিয়ে এসেছি। 

- আপনারা খুব খারাপ, আপনাদের সঙ্গে কথাই বলতে ইচ্ছে করে না। 

- আচ্ছা একটা প্রশ্ন করবো? 

- করেন। 

- আপনিই কি সেই? যার মা-বাবাকে পুতুলের জন্য পরিকল্পনা করে হত্যা করা হয়েছে। 

- আমার মা-বাবা মারা গেছে এটা সত্যি কিন্তু কি কারণে মারা গেছে জানি না। আমি সেটা জানার জন্য চেষ্টা করবো কিন্তু আমি তো বন্দী এখানে। 

- আমিও একসময় আপনার মতো একটা খুবই সাধারণ মেয়ে ছিলাম, কিন্তু এদের চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়ে আজ কতটা খারাপ। 

- আপনারা আমাকে মুক্তি দেবেন কবে? 

- জানি না, আমি শুধু এখানে রান্না করি আর সবার জন্য চা-নাস্তা তৈরী করি। 

- আপনাকেও কি কিডন্যাপ করেছে? 

- হ্যাঁ, আমি ওদের এখানে বছর খানিক ধরে বন্দী আছি, কতটা কষ্ট হচ্ছে জানেন? কতদিন পেরিয়ে গেল কিন্তু খোলা রাস্তায় হাঁটতে পারি না। 

- আমারও বারবার আত্মহত্যা করতে ইচ্ছে করে, খুব খারাপ লাগছে। 

- এটা ভুলেও মুখে আনবেন না, সময় সবকিছুই সমাধান করে দেবে। শুধু ধৈর্য ধরতে হবে আর নিজেকে সৎ রাখতে হবে, তাহলে ঠিকই একদিন নতুন সূর্যের সাথে দেখা হবে। 

- আপনার সঙ্গে কথা বলে ভালো লেগেছে, তবে আপনাদের বসের পরিচয় জানতে চাই।

- সেটা আমিও জানি না, এরা সবসময় বস বস করে কিন্তু আজও তাকে চিনতে পারিনি। 

- নাকি মিথ্যা বলছেন? 

- যা সত্যি তাই বললাম, আচ্ছা আপনি মনে হয় বিরক্ত হচ্ছেন, পরে আবার কথা হবে। 

★★

ভোরবেলা নামাজ পড়ে বারান্দার চেয়ারে বসে সামনে মাঠের দিকে তাকিয়ে আছে সাজু ভাই। বেশ চিন্তিত, মোবাইল হাতে নিয়ে বসে আছে, একটু আগে সজীব আর রুহি দুজনের নাম্বারে কল দিয়েছে কিন্তু কেউ রিসিভ করে নাই। দুজনেই গতকাল রাতে তাকে কল দিয়েছে, যেহেতু রুহির মা অসুস্থ তাই চিন্তা হচ্ছে। তাছাড়া দুজনেই যখন কল দিয়েছে তখন নিশ্চয়ই কোন কারণ আছে। কিন্তু সকাল বেলা উঠে দুজনের নাম্বারেই ট্রাই করা হয়েছে কেউই রিসিভ করে না। 

অসুস্থ দুর্বল শরীর নিয়ে বসে আছে, দাদি এসে চা দিয়ে গেছে, সেই চা একটা চুমুক দিয়ে সে রেখে দিয়েছে। চিনি একটু বেশি হয়েছে তাই খেতে ইচ্ছে করে না, আবার ডাক দিয়ে নতুন এক কাপ নিয়ে আসতেও বলছে না। 

মোবাইলে রুহির কল এসেছে। 

- আসসালামু আলাইকুম সাজু ভাই। 

- ওয়া আলাইকুম আসসালাম, কেমন আছো রুহি আর তোমার মা কেমন আছেন? 

- মোটামুটি ভালো, হাসপাতালেই আছি। 

- গতকাল রাতে তুমি কল করেছিলে আর সজীব ও কল দিয়েছে, কিন্তু আমার শরীর অসুস্থ তাই মোবাইল সাইলেন্ট করে ঘুমিয়ে গেছিলাম। 

- আপনি কি বেশি অসুস্থ? কাল রাতে সজীবকে আপনার কথা জিজ্ঞেস করেছিলাম তখন সজীব বললো আপনি অসুস্থ। আর সজীব আপনাকে কল দিয়েই আমাকে কল করেছে, যখন বললো আপনি রিসিভ করেননি। তখন আমার আরও চিন্তা হতে লাগলো, এদিকে আপনি গতকাল গল্প পোস্ট করেন নাই। 

- তুমি কি হাসপাতালে বসেও গল্প পড়ো? 

- তাহলে? পোস্ট করার সঙ্গে সঙ্গে একটু সুযোগ করে পড়া শুরু করি, কিন্তু গতকাল পোস্ট করেন নাই তাই মেলা মেলা মন খারাপ। 

- নতুন মামলার মধ্যে এমনিতেই একটু ব্যস্ততা আর তাছাড়া অসুস্থ। 

- হুম বুঝলাম, সেজন্য সজীব এর সঙ্গে কথা শেষ করে আপনাকে কল দিছিলাম কিন্তু রিসিভ করতে পারেননি আপনি। 

- ভাবছি গল্প লেখা বন্ধ রাখবো। 

- কেন? কেন? 

- কপি করে করে অনেকেই নিজের নামে পোস্ট করে, তখন আসল লেখক খুঁজে বের করা যায় না। 

- সবাই তো জানে, মোঃ সাইফুল ইসলাম ওরফে সাজু ভাই হচ্ছে আসল লেখক, তাহলে সেখানে আবার সমস্যা কি? 

- সবাই জানে না তবে অনেকেই জানে। 

- আপনি তাদের কথা বাদ দিয়ে লেখা চালিয়ে যান সাজু ভাই, আর আমার মায়ের জন্য দোয়া করবেন প্লিজ। 

- সবসময়ই দোয়া রইল, আর আমি ঢাকা থাকলে অবশ্যই দুবেলা দেখা করতাম। 

- সজীব বলেছে সে নাকি আসবে। 

- ওর নাকি ছুটি নেই। 

- হ্যাঁ ভাই, তবে বলেছে যে বৃহস্পতিবার রাতের বাসে করে আসবে, সারাদিন হাসপাতালে থেকে আবার বিকেলে চলে যাবে। 

- বাহহ বাহহ রুহি সজীবের কি অসাধারণ প্রেম। 

- আপনি না হলে কিন্তু আমাদের পরিচয় সম্ভব ছিল না সাজু ভাই। 

- কপালে লেখা ছিল তাই তোমাদের পরিচয় হয়ে গেছে, সেখানে আমি কেবল অছিলা। তবে দোয়া করি দুজনেই বিয়ে করে সারাজীবন একসঙ্গে যেন ভালবাসা নিয়ে থাকতে পারো। সকল বিপদের দিনগুলো যেন ধৈর্যের সঙ্গে অতিক্রম করতে পার সেই কামনা রইল। 

- মেলা মেলা ধন্যবাদ সাজু ভাই। 

- হাহাহা, আর দিতে হবে না। 

★★

সকাল নয়টার দিকে দারোগা সাহেব কল দিয়ে বললো, " সাজু সাহেব, একটু আগে তৌহিদকে ছেড়ে দিতে হয়েছে, সে এখন জেলের বাইরে তাই তার দিকে লক্ষ্য রাখবেন। " 

তারপর সাজু ভাই পারভেজের নাম্বারে কল দিয়ে তৌহিদের নাম্বার নিল। তৌহিদকে যখন কল দিল তখন তৌহিদ বাসের মধ্যে বসে আছে। 

- হ্যালো কে? 

- তৌহিদ আমি সাজু ভাই বলছি, তুমি এখন কোন যায়গা আছো? 

- ভাই আমি বাসের মধ্যে বসে আছি। 

- কোথায় যাও? বাড়িতে নাকি? 

- না ভাই খুলনায় মেসে যাচ্ছি, আমার গ্রামের বাড়িতে অলরেডি সবাই জেনে গেছে আমি জেলে ছিলাম। এই মুহূর্তে গ্রামের বাড়িতে যেতে লজ্জা করছে তাই মেসের মধ্যে যাবো। 

- তুমি একটু সাবধানে থেকো সবসময়, বাহিরের মধ্যে ঘোরাঘুরি কম করবা। 

- কেন সাজু ভাই? 

- এমনিতেই বললাম, আর যদি কখনো মনে হয় যে তুমি বিপদে পরতে যাচ্ছ তাহলে সঙ্গে সঙ্গে আমাকে কল দিয়ে জানাবে। 

- ঠিক আছে ভাই। 

- রাখি তাহলে? 

- আচ্ছা ঠিক আছে সাজু ভাই। 

আজকে আর কোথাও বের হতে ইচ্ছে করছে না, তাছাড়া যেহেতু লিমনদের গ্রামে গিয়ে তার জন্য অনুসন্ধান করা নিষিদ্ধ। তাই নতুন কোন উপায় সেই গ্রামের মধ্যে প্রবেশ করতে হবে। আসরের কিছুক্ষণ পর সাজু ভাই নিজেদের পুকুরের পাড়ে হাঁটছিল, এমন সময় তৌহিদ কল দিল, সাজু খানিকটা অবাক হয়েই রিসিভ করলো।

- তৌহিদ কল দিয়ে বললো, সাজু ভাই আমাকে ক্ষমা করবেন প্লিজ। 

- মানে কি? কি হয়েছে হঠাৎ? 

- আমার মনে হচ্ছে ওরা আমাকে শেষ করবে, আমি পুরোপুরি নিশ্চিত। 

- কারা খুন করবে? 

- আমি তাদের চিনিনা, আমার সঙ্গে শুধু দুজন মানুষের দেখা হয়েছে, তাও সেদিন রাতে, কিন্তু তাদের দলনেতা আমি চিনি না। 

- কোনদিন রাতে? 

- যেদিন মনিরুল ভাইয়ের খুন হয়েছে। 

- মানে? 

- ভালো আমি আপনার সঙ্গে মিথ্যা কথা বলেছি সেদিন জেলের মধ্যে। 

- তাহলে সত্যি কি? 

- সেদিন রাতে সজীব ঘুমিয়েছিল, জানালার পাশে আমি...

দুপুরবেলা পুকুরে জাল ফেলে মাছ ধরা হয়েছে আর সেই মাছ ছাড়ানো হয়েছে এখানে। তাই কাঁদা আর পানি এখনো খানিকটা জমে ছিল, সেই কাঁদা আর পিছল পানিতে পা পিছলে পরে গেল সাজু ভাই। হাত থেকে মোবাইল ছিটকে পরলো পুকুরের মধ্যে। সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আফসোস করতে লাগলো, এ বছরই বৈশাখ মাসে পুকুরের সকল পানি সেঁচে নতুন করে কাটানো হয়েছে। অনেক গভীরতা এখন, তাই সেখানে মোবাইল কতটা গভীরে গেছে আর কোথায় গেছে? 

তৌহিদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ কথা আর শোনা হলো না সাজু ভাইয়ের। 

দাদাকে বলে দুজন লোক এনে তাড়াতাড়ি করে পুকুরে নামানো হলো। তারা প্রায় ঘন্টা খানিক ধরে নাকানিচুবানি খেয়েও উদ্ধার করতে পারলো না। মাগরিবের আজান দিচ্ছে চারিদিকে, হতাশ হয়ে সাজু ভাই বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করলো। 

★★

রাত সাড়ে দশটা। 
রুমের দরজা বন্ধ করে বিছানায় শুয়ে আছে তৌহিদ, ভয়ে আতঙ্কে তার মুখের অবস্থা একদম খারাপ। এমন সময় দরজা ধাক্কার শব্দ শুনে সে বললো, 

- কে ওখানে? 

- আমি লিমন, দরজা খোল তৌহিদ। 

- তৌহিদ বিব্রত হয়ে গেল, কিন্তু বারবার দরজা ধাক্কায় সে দরজা খুলে দেখে সত্যি সত্যি সেখানে লিমন দাঁড়িয়ে আছে। " কিরে তুই? ভালো আছো বন্ধু? তোকে আমরা কত খুঁজেছি তুই জানো? "

- কেমন আছো তৌহিদ? 

- ভালো না বন্ধু, খুব খারাপ। 

- কেন তৌহিদ? বিশ্বাসঘাতকতা যারা করে তারা তো খারাপ থাকার কথা নয়। 

তৌহিদ দেখলো, লিমন ততক্ষণে দরজা বন্ধ করে দিয়েছে, সে ভাবছে চিৎকার করবে। কিন্তু লিমন ততক্ষণে তাদের রুমে তার নিজের সাউণ্ডবক্স অন করে ফুল ভলিউম বাড়িয়ে দিল। এতরাতে এখন মেসের অন্যরা কি মনে করবে তাতে লিমনের কিছু যায় আসে না। 

- তৌহিদ বললো, তুই কি বলছিস এসব? 

- দেখ তৌহিদ, পৃথিবীর ইতিহাসে মীরজাফর হচ্ছে বিশ্বাসঘাতক হিসাবে অধিক পরিচিত। কিন্তু সেই বিশ্বাসঘাতক মীরজাফরকে কিন্তু ইংরেজরা আবার হত্যা করেছে। তাদের উদ্দেশ্য সফল করার জন্য তারা তাকে ব্যবহার করেছে, কাজ শেষ করে কিন্তু তাকেও সরিয়ে দিয়েছে। তোকেও যারা ব্যবহার করেছে তারা আবার আমাকেই এখন তোকে খুন করতে পাঠিয়েছে। তুই আমার অনেক ভালো বন্ধু, কিন্তু তবুও হাসতে হাসতে তোকে এখন খুন করবো। 

রুমের মধ্যে চারিদিক কাপিয়ে বক্সে ডিজে গান হচ্ছে, তৌহিদ পিছনে সরতে গিয়ে খাটের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে বসে পরলো। লিমনের হাতে এতক্ষণ যে লাঠির মতো ছিল সেটা কাভার খুলে সে একটা চকচকে ছুরি বের করলো। 

মুহুর্তের মধ্যে তৌহিদ বিছানা থেকে উঠে তাকে আঘাত করতে যাবে তার আগেই লিমন বাম হাত দিয়ে ধাক্কা দিয়ে ডান হাতের ছুরি পেটে চালান করে দিল। আহত তৌহিদ বিছানায় শুয়ে এখন কাতরাতে লাগলো আর তার মুখ চেপে ধরে গলা কাটায় ব্যস্ত রইল লিমন। 

তৌহিদের লাশটা ভালো করে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে একটা কাঁথা দিয়ে ভালো করে মুড়িয়ে দিল। দেখলে মনে হয় যেন কেউ ঘুমিয়ে আছে, তারপর নিজের রক্তমাখা গেঞ্জি খুলে আরেকটা গেঞ্জি পরে গান বন্ধ করলো। 

তৌহিদের মোবাইল বের করে সাজুর নাম্বারে কল দিল লিমন কিন্তু নাম্বার তো বন্ধ। কারণ পুকুরে মোবাইল পরে গেছে তাতো কেউ জানে না। 

দরজা খুলে দেখে মেসের দুজন সদস্য দাঁড়িয়ে আছে, মাহিম ও তমাল। 

- তমাল বললো, কিরে লিমন তুই? 

- হ্যাঁ আসলাম মাত্র, কিন্তু তৌহিদের তো অনেক জ্বর এসেছে, তোরা থাক আমি ডাক্তার নিয়ে আসি। 

- সন্ধ্যা বেলা দেখেছি মন খারাপ করে বসে আছে তখনই বুঝেছি শরীর অসুস্থ। 

- তোরা একটু থাক আমি ডাক্তারের কাছে গিয়ে দেখি কি করা যায়। 

- আচ্ছা ঠিক আছে। 

লিমন চলে গেল, ওরা দুজন রুমে প্রবেশ করে দাঁড়িয়ে রইল একটু পরেই খাটের পাশে রক্তমাখা গেঞ্জি ও ছুরি দেখে দুজনেই আৎকে উঠেছে। মাহিম ভয়ে ভয়ে তৌহিদের শরীর থেকে কাঁথা সরিয়ে দুজনেই চিৎকার করে ওঠে। 

গলা ও পেটে ছুরিকাঘাত করে নির্মমভাবে হত্যা করা তৌহিদের লাশটা পরে আছে। মাহিম দ্রুত রুম থেকে বের হয়ে রাস্তায় এসে দেখে সমস্ত রাস্তা ফাঁকা, কোথাও কেউ নেই। 

.

চলবে...?



.
লাইক বা রিয়্যাক্ট দিয়ের হাজিরা প্রকাশ করে যাবে, মেলা মেলা ধন্যবাদ। 
আপনাদের মতামত ও আগ্রহ দেখার অপেক্ষায় রইলাম। 

.
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

[+] 1 user Likes Bangla Golpo's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: সাজু ভাই- সিরিজ নম্বর -০৩(গল্প:- সরি আব্বাজান)( সমাপ্ত গল্প) - by Bangla Golpo - 18-06-2023, 10:26 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)