Thread Rating:
  • 6 Vote(s) - 3 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
সাজু ভাই- সিরিজ নম্বর -০৩(গল্প:- সরি আব্বাজান)( সমাপ্ত গল্প)
#4
#সরি আব্বাজান > পর্ব:-০২

শেষরাতের দিকে আমাদের ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয় শত্রুরা, আমার তিনজন তখন ঘুমাচ্ছিলাম ঠিক তখনই তৌহিদ "আগুন আগুন বলে চিৎকার করতে লাগলো। " 

আচ্ছা আরেকটু খুলে বলিঃ-

তৌহিদ ও পারভেজ দুজনেই মেসেজ পরে চমকে গেল, তৌহিদ আস্তে করে কানে কানে বললো "এই কথা কাউকে কিছু বলিস না, কারণ এখন তোর আশেপাশের সবাইকে শত্রু মনে করতে হবে! "

মনিরুল ভাইদের বাড়ি থেকে রাতের খাবার রান্না করে পাঠানো হয়েছে, তৌহিদ ও পারভেজ সেই খাবার খেয়েছে। আমাকেও তৌহিদ নিজের হাতে ভাত মেখে দু লোকমা খাইয়ে দিল, সমস্ত ঘরের মধ্যে মা-বাবার স্মৃতি জড়িয়ে আছে। রাতের বেলা আমি তৌহিদ ও পারভেজ একসঙ্গে ঘুমালাম। মনির ভাই থাকতে চেয়েছিলেন কিন্তু আমরা নিষেধ করেছি। রাত দশটার দিকে আমার কলেজের শিক্ষক এসেছিলেন দেখা করতে, অনেক কিছু উপদেশ দিয়ে ২৫/৩০ মিনিট পরে বিদায় নিয়ে চলে গেলেন। 

কারা হতে পারে সেই খুনের আসামি? আমাকে মারার জন্য কেন তাদের পরিকল্পনা? বাবা কেন আমাকে এসব থেকে আলাদা হতে বললো?

- পারভেজ বললো, লিমন তুই ঘুমানোর চেষ্টা কর বন্ধু, আমি আর তৌহিদ জেগে আছি। যদি সত্যিই কেউ তোদের শত্রু থাকে তাহলে অবশ্যই হামলা করতে পারে। 

- আমি বললাম, কিন্তু কেন করবে এমন? আমার তো কোন শত্রু নেই আর তাছাড়া আমরা কারো ক্ষতি করিনি কোনদিন। 

- তৌহিদ বললো, দোস্ত আজকাল ভালো মানুষ দের ধ্বংস করার জন্য পৃথিবীতে অনেক খারাপ মানুষ আছে। নিশ্চয়ই এখানে অনেক বড় কিছু ঘটনা আছে তাই সেটা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে। 

- কিন্তু বাবা তো আমাকে গ্রামে আসতে নিষেধ করেছে, তাহলে কি বাবার শেষ অনুরোধ রাখতে পারবো না? 

- তুই নিজে গ্রাম ত্যাগ করবি কিন্তু গোয়েন্দা বা সিআইডি মোতায়েন করতে হবে। তারা অবশ্যই এই রহস্যের উন্মোচন করতে সক্ষম হবে, তখন সবকিছু পরিষ্কার হবে। 

এরপরই আমরা চুপচাপ শুয়ে রইলাম, বাহিরে ও ঘরের মধ্যে বৈদ্যুতিক বাতি জ্বলছে৷ মা-বাবার কত স্মৃতি মনে পরে যাচ্ছে, চোখ বেয়ে অজান্তেই অগোচরে পানি বের হয়ে আসছে। এভাবেই কখন চোখ বন্ধ করেছিলাম জানি না কিন্তু হঠাৎ করে তৌহিদের মুখে আগুন আগুন চিৎকার শুনে খুব ভয় পেয়ে বিছানায় বসলাম। 

পারভেজ বললো " দোস্ত তাড়াতাড়ি বের হতে হবে নাহলে সবাই আগুনে পুড়ে মারা যাবো। "

কিন্তু আমরা যখন দরজা খুলে বের হতে যাবো তখন দেখি দরজা বাহির থেকে বন্ধ করা। তিনটা দরজা দিয়ে বাহির হওয়া যায় কিন্তু সবগুলোই বাহির থেকে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। গতকাল যেই পিছনের দরজা ভেঙ্গে মনির ভাই প্রবেশ করেছিল সেটা আজকে একদম ভালো করে পেরেক ঠুকে বন্ধ করে দিয়েছি। কিছু বাকি দুটি দরজা কারা বন্ধ করলো? আমাকে যারা খুন করতে চায় তারা কি এসব করছে? 

পশ্চিমে একটা নড়বড়ে জানালা ছিল সেটাই এক ধাক্কা দিয়ে ভেঙ্গে দিল পারভেজ। তারপর আমি পারভেজ ও তৌহিদ বেরিয়ে গেলাম, আগুন সেই সময় প্রায় সমস্ত টিনের চালে ছড়িয়ে গেছে। ইটের দেয়াল হলেও কাঠ আর টিনের চালের ছাউনি দিয়ে ঘেরা ঘরটা চোখের সামনে পুড়ছে। তৌহিদ ও পারভেজ দুজনেই সামনের দরজা বাহির থেকে খুলে পারভেজের বাইক বের করলো। আরও কিছু জিনিসপত্র বের করতে চেয়েছিল কিন্তু পরিস্থিতি খুবই অস্বাভাবিক। 

আবারও সেই চিৎকার চেচামেচি শুনে গভীর রাতে অনেকেই ছুটে এসেছে, পানি ঢেলে আগুন নিভে যাবে তাই পানি নিয়ে ব্যস্ত অনেকে। আমি শুধু ঘরের সামনের আমগাছের গোড়ায় ঘাপটি মেরে বসে রইলাম। 

সকাল বেলা পুলিশ এসেছে আবার, চেয়ারম্যান সাহেব নিজেও উপস্থিত হয়েছেন কিন্তু মা-বাবার স্মৃতিবিজড়িত ঘরটা দাঁড়িয়ে আছে পোড়া এক বিভৎস রূপ ধরে। 

- দারোগা বললেন, আপনারা তখন কোথায় ছিলেন? আগুনের ঘটনা প্রথম কে দেখে? 

- তৌহিদ বললো, জ্বি স্যার আমি প্রথমে দেখতে পেয়েছি। আমার কান খুব পাতলা, ঘুমের মধ্যে পাতা নড়ার শব্দটাও কানে আসে। আমি যখন শুনি যে টিন পুড়ছে আর আর স্ক্রু একটা করে পটপট করে ছুটছে তখন চিৎকার করছি। 

- আপনারা বাহিরে বের হবার পর কেউ কি তখন এখানে ছিল বা আক্রমণ করতে চেয়েছিল? 

- না স্যার তেমন কিছু নয়, আমরা তো এখানে সম্পুর্ণ ফাঁকা দেখেছি। 

- আচ্ছা লিমন সাহেব, আপনার মা-বাবার সঙ্গে কারো শত্রুতা ছিল? যেহেতু এখন একটা আক্রমণ হয়েছে তাই আমরা কিছু শত্রুদের সন্দেহ করি। 

- তেমন কোন শত্রু নেই যারা খুন করবে, আমরা সবসময় ঝামেলা এড়িয়ে চলতাম। 

- জমিজমা নিয়ে কারো সঙ্গে কোন বিবাদ ছিল? নিজেদের মধ্যে বংশগত ব্যাপারে? 

- জলিল চাচার সঙ্গে পূর্বপাড়ায় একটা রাস্তার পাশের জমি নিয়ে মামলা চলে। তবে বাবা সপ্তাহ খানিক আগে বলেছিল যে জলিল চাচা নাকি আমাদের জমি ফিরিয়ে দিতে রাজি হয়েছে। 

- এমন তো হতে পারে সেই জলিল পরিকল্পনা করে ইচ্ছে করেই জমি ছেড়েছে কারণ মনে মনে একদম খুন করার ষড়যন্ত্র ছিল। 

- আমি সেটা জানি না। 

- আপনার কি ধারণা? আপনার মা-বাবা দুজনেই আত্মহত্যা করেছে নাকি খুন করা হয়েছে? 

- তৌহিদ বললো, স্যার খুন করা হয়েছে। 

- আপনি নিশ্চিত? 

- হ্যাঁ স্যার, লিমনের বাবা ওকে কল করার আগে একটা মেসেজ দিয়েছিল। কিন্তু সেই মেসেজ চেক করা হয় নাই বলে জানতাম না, তাকে কেউ খুব ভয় দেখিয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করা হয়েছে। 

- ও মাই গড, বলেন কি? 

দারোগা সাহেব মেসেজটি জোরে জোরে পড়লেন, চেয়ারম্যান সাহেব গভীর চিন্তার মধ্যে হারিয়ে গেল সেটা বোঝা যাচ্ছে। জলিল মিয়াকে ভালো করে জিজ্ঞেস করতে হবে বলে দারোগা সাহেব বাজারে চলে গেলেন। 

দুপুর পর্যন্ত অনেকেই আমাদের বাড়িতে ছিলেন, দুপুরে খাবার খেলাম প্রতিবেশী মনোয়ার কাকার বাড়িতে। কাকিমা রান্না করে ডেকেছিল কিন্তু আমি যাইনি বলে পাঠিয়ে দিয়েছে। 

বিকেলের দিকে পারভেজ খুলনা চলে গেল, তবে আমাকে নিয়ে যাবার খুব চেষ্টা করেছে। 

- পারভেজ বললো, তুই এখানে থাকলে কিন্তু অনেক বিপদে পরবি লিমন। তারচেয়ে খুলনা বরং শহরে চল তাড়াতাড়ি, তাহলে সেখানে মোটামুটি নিরাপত্তা আছে। কিন্তু যেখানে আঙ্কেল নিজেই তোকে আসতে নিষেধ করেছে সেখানে তুই কি করবি দোস্ত? নিজের জীবনের বিপদ ডেকে এনে ভুল করিস না বন্ধু, চল আমার সঙ্গে। 

- আমি বললাম, আমি রহস্যের শেষ দেখে যেতে চাই পারভেজ, কারা আমার মা-বাবার সর্বনাশ করেছে? আমি সেই গোপনীয় সবকিছু পরিষ্কার করতে চাই নাহলে শান্তি নেই। 

- তুই বরং সাজু ভাইয়ের সাহায্য নিতে পারিস, তোর মনে আছে সাজু ভাইয়ের কথা? 

- হ্যাঁ মনে আছে, কিন্তু তিনি কি আসবেন আমার মা-বাবার খুনের রহস্য বের করতে? আমাকে কে বা কারা খুন করতে চায়, সেই রহস্যের উন্মোচন কি সাজু ভাই করতে পারবে? 

- আমার বিশ্বাস তিনি পারবেন, কারণ সাজু ভাই হচ্ছে ঠান্ডা মাথার এক রোমান্টিক মানুষ। সকলের সঙ্গে কত সুন্দর মিল তাই না? সেবার যখন তিনি খুলনা এসেছিলেন তোদের মেসের মধ্যে তখন তো আমরা সবাই গেছিলাম দেখা করতে। 

- তৌহিদ বললো, সাজু ভাই, সজীব ভাই, শফিক ভাই ও রকি ভাই এরা সবাই যেই রুমে থাকতো এখন আমরা সেই রুমে থাকি। 

- বললাম, ঠিক আছে পারভেজ তুই বরং এখন সন্ধ্যা হবার আগেই চলে যা। আমি আর তৌহিদ আগামীকাল সকালে খুলনা আসবো, তারপর সাজু ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে সবকিছু তাকে জানাবো। 

- তাহলে রাতে থাকতে হবে কেন? 

- মনির ভাই বললেন যে আজকে নাকি রাতের বেলা তিনি কিছু জরুরি কাগজপত্র দেখাবেন। সবকিছু আমাদের জমিজমার বিষয়ে আর সেই সঙ্গে কিছু গোপনীয় কথা জানাতে চায়। 

- তাহলে এখন দিনের বেলা সমস্যা কি? আমরা যে কতটা বিপদের মধ্যে তা কি সে জানে না? 

- তাদের বাড়িতে সমস্যা হবে না পারভেজ, আর শুধু শুধু চিন্তা করিস না তো। 

- ঠিক আছে সাবধানে থাকিস আর আগামীকাল সকালে উঠে রওনা দিস লিমন। 

- আচ্ছা ঠিক আছে।

সন্ধ্যার খানিকটা আগে বাজারের মধ্যে গেলাম আমি আর তৌহিদ। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর একদম কর্নারের হোটেলের মালিক শাহজাহান কাকা আমাকে ডাকলেন। আমি তার কাছে যেতেই তিনি আমাকে নিয়ে হোটেলের পিছনে গেলেন, তার সঙ্গে সঙ্গে আমিও গেলাম। 

- কাকা বললেন, তোমার মা-বাবার ঘটনার জন্য সবাই স্তব্ধ হয়ে গেছে তাই সান্ত্বনা দেবার ভাষা জানা নেই। কিন্তু তোমাকে কিছু গোপনীয় কথা জানাতে চাই, মনোযোগ দিয়ে শুনবা তবে আমার কথা কাউকে বলবা না। 

- কি কথা শাহজাহান কাকা? 

- তোমার জলিল চাচার সঙ্গে ওপাড়ে যে জমি নিয়ে মামলা ছিল সেটা কেন শেষ হয়েছে জানো? 

- না তো। 

- তোমার বাবা জলিল মিয়াকে ওই জমির জন্য টাকা দিয়েছে নতুন করে। 

- কিন্তু ওটা তো আমাদের জমি তাহলে কেন বাবা আবার টাকা দেবে? 

- কারণ জমিটা নাকি তোমার খুব পছন্দের, তুমি নাকি সেখানে একটা পার্কের মতো মনোরম স্থান বানিয়ে বাগান করতে চাও? 

- হ্যাঁ কিন্তু...

- তোমার বাবা আমাকে বলেছিলেন যে তোমার নাকি খুব ইচ্ছে ওখানে বাগান করবে। তাই তিনি অনেক চেষ্টা করেও জমিটা রক্ষা করতে চেয়েছে কিন্তু নিজেই... 

- জমির বিনিময়ে যদি জলিল চাচা টাকা নিয়ে থাকে তাহলে আবার ঝামেলা কিসের? 

- সেখানেই ঝামেলা লিমন, আমি তো হোটেলের মানুষ তাই অনেককিছু জানি কারণ বাংলাদেশের মধ্যে হোটেলে বা চায়ের দোকানে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়। দলীয় বা বিরোধীদলীয় সকল পক্ষের কথা জানা যায়, সকালে এক গ্রুপ আবার বিকেলে অন্য গ্রুপ। 

- আপনি কি তেমন কিছু জানেন? 

- না বাবা, তবে আমারও পরিবার আছে তাই বেশি কিছু বলে বিপদ বাড়াতে চাই না। যতটুকু বললাম ততটুকু দিয়ে খুঁড়তে আরম্ভ করো, কেঁচো খুঁড়তে আরম্ভ করো সাপ এমনিতেই বের হবে। 

এতটুকু লিখে একটু দম নিল লিমন, তারপর আবারও লিখতে আরম্ভ করলো। 

বাজার থেকে আমি তৌহিদ আর মনিরুল ভাই ফিরে আসলাম। জলিল চাচার কথা কাউকে কিছু বলিনি এখনো, সাজু ভাই আমি শুধু আপনার কাছে এগুলো জানিয়ে দিচ্ছি। বাড়িতে ফিরে এসে বারবার মনে হচ্ছে যে বিকেলে পারভেজের সঙ্গে চলে গেলে ভালো হতো। কারণ রাত যতই গভীর হচ্ছে ততই ভয় লাগছে, সবাই খাবার খেয়ে এখন ঘুমিয়ে আছে। রাত এগারোটা পেরিয়ে গেছে আর গ্রামের বাড়িতে রাত এগারোটা মানে হচ্ছে অনেক রাত্রি। 

আমার কেন যেন মনে হচ্ছে আজকে রাতের মধ্যে আমারও কিছু একটা হয়ে যাবে। তেমন কোন কারণ নেই তবে বারবার সেটাই মনে হচ্ছে, হয়তো মনের ভয় কিন্তু মনে হচ্ছে সেটা সত্যি। তাছাড়া ক্ষুদ্র একটা কারণ আছে, একটু আগে হঠাৎ করে জানালার পর্দার আড়ালে কাউকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছি। আমি আস্তে আস্তে জানালার কাছে গেলাম আর তখন কারো পায়ের শব্দ দ্রুত সরে যেতে শুনতে পেলাম। 

তৌহিদকে সেই কথা বললা কিন্তু সে তেমন গুরুত্ব না দিয়ে ঘুমিয়ে আছে, গতকাল আর পরশু রাতে বেচারা ভালো ঘুমাতে পারে নাই। তাই এখন মনে হয় তাকে ঘুমে গ্রাস করেছে, আমি অবশ্য চাইলে ঘুমাতে পারি না। তাছাড়া জানালার ঘটনাটা খুব ভাবাচ্ছে আমাকে, তাই যতক্ষণ সম্ভব জাগ্রত হয়ে থাকতে চাই। 

পরশু রাত তিনটায় বাবার সেই কল করার পর থেকে যা যা ঘটেছে সবকিছু সাজিয়ে লিখে দিলাম সাজু ভাই। সত্যি বলছি আমার খুব ভয় করছে, যদি রাতের মধ্যে বা যেকোনো সময় আমি খুন হয়ে যাই তাহলে সেই খুন আর মা-বাবার খুনের রহস্য বের করার দায়িত্ব আপনার। আপনার এক ছোটভাই হয়ে সেই দায়িত্ব আপনাকে দিলাম, আশা করি আপনি আসবেন। 

আমার বন্ধু পারভেজ তৌহিদ ও আমার নিজের নাম্বার দিয়ে রাখলাম। যদি তৌহিদ ও আমার নাম্বারে না পান তাহলে পারভেজের নাম্বারে কল দেবার অনুরোধ রইল। 

ইতি, 
মোঃ লিমন। 
পিরোজপুর। 

★★

গতকাল রাতে সাজু ভাইয়ের শরীর অসুস্থ ছিল তাই তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে গেছিল। আর সকাল বেলা অনেক দেরি করে ঘুম থেকে উঠেছে, তারপর ফ্রেশ হয়ে মোবাইলের মেসেঞ্জারে আসতে প্রায় দুপুর বারোটা। অনেক পাঠক পাঠিকার মেসেজ এসে জমা হয়েছে, কেউ কেউ এখনো এ্যাক্টিভ আবার অনেকে আনএ্যাক্টিভ। সবগুলোর একটু সংক্ষিপ্ত রিপ্লাই করতে করতে হঠাৎ করে গতকাল রাত বারোটার মেসেজ চোখে পরলো। 

"Md Limon" আইডি দিয়ে এতবড় একটা মেসেজ এসেছে, সম্পুর্ন ঘটনা এখানে বর্ননা করা। সেই রাত তিনটায় কল দিয়ে কথা বলা শুরু থেকে গতকাল রাত পর্যন্ত ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ননা। 

খুব মনোযোগ সহকারে সম্পুর্ণ ঘটনা পড়লো সাজু ভাই, তারপর বেশ কিছু সময় চোখ বন্ধ করে কিছু ভাবতে লাগলো। তৌহিদ ও লিমন দুজনের নাম্বার সত্যি সত্যি বন্ধ দেখাচ্ছে, তাই পারভেজের নাম্বারে কল দিল সাজু ভাই। বেলা তখন দুপুর ১২ঃ৩৪ 

- রিসিভ করে পারভেজ বললো, আসসালামু আলাইকুম, কে বলছেন? 

- ওয়া আলাইকুম আসসালাম, সাজু ভাই বলছি, তুমি কি লিমনের বন্ধু পারভেজ? 

- জ্বি ভাই, কেমন আছেন ভাইজান? আপনার কথা গতকাল রাতেও লিমনের সঙ্গে আলোচনা করেছি। কিন্তু আপনি নিজেই আজকে আমাকে কল দিলেন, ভাইজান আমার বন্ধুর খুব বিপদ একটু সাহায্য করবেন? 

- সাজু ভাই বললেন, তোমার বন্ধু লিমন গতকাল রাতে আমাকে সম্পুর্ণ ঘটনা টেক্সট করেছে। কিন্তু আমি একটু অসুস্থ তাই রাতে রিপ্লাই করতে পারি নাই আর সকালেও অনলাইনে ছিলাম না। তোমার বন্ধু লিমন কেমন আছে? 

- ভাই একটুও ভালো না। 

- কেন? আজকে সকালে তো তৌহিদ আর লিমন শহরে যাবার কথা, যায় নাই? 

- না ভাই, গতকাল রাতেই ওদের দুজনকে কারা যেন গায়েব করে দিয়েছে। সরাসরি খুন করেনি কিন্তু ধরে নিয়ে গেছে, দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করা আছে। কিন্তু সেই বাড়িটা মাটি দিয়ে উঁচু করে তার উপর কাঠ দিয়ে নির্মান করা তাই কাঠের নিচ থেকে মাটি খুঁড়ে রুমে ঢুকেছে। মাটি খোঁড়ার চিন্হ এখনো পরে আছে, কিন্তু ওদের কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। 

- তাহলে কি সেই মনিরুল লোকটার মধ্যে কোন গন্ডগোল আছে? 

- না সাজু ভাই, কারণ সকাল বেলা পুকুরের মধ্যে পানিতে ভাসমান অবস্থায় মনিরুল ভাইয়ের লাশ পাওয়া গেছে। মনিরুল ভাইকে খুন করে ওদেরকে কিডন্যাপ করেছে, এলাকা ভয়ঙ্কর হয়ে গেছে। 

- তাহলে কি...? 

- আরেকটা কথা সাজু ভাই। 

- কি? 

- লিমনের মা-বাবা দুজনের কবরের মাঝখানে একটা কাগজ পাওয়া গেছে। সেই কাগজে লেখা আছে " সরি আব্বাজান "। 

.

চলবে...? 
.

কেমন হচ্ছে অবশ্যই জানাবেন, আর আপনারা উৎসাহ দিবেন তাহলে লেখার আগ্রহ শতগুণ বেড়ে যাবে। গতকাল প্রথম পর্ব পোস্ট করার পর বিভিন্ন ব্যক্তিরা গল্পটা কপি করে তাদের নিজের নামে পোস্ট করছে। আপনাদের কাছে অনুরোধ রইল, আমার নাম ছাড়া যদি কোথায় গল্পটা দেখতে পান তাহলে সেখানে প্রতিবাদ করবেন। তাহলে হয়ত লজ্জিত হতেও পারে। 

 
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

Like Reply


Messages In This Thread
RE: সাজু ভাই- সিরিজ নম্বর -০৩(গল্প:- সরি আব্বাজান)( সমাপ্ত গল্প) - by Bangla Golpo - 14-06-2023, 12:40 AM



Users browsing this thread: