Thread Rating:
  • 12 Vote(s) - 2.58 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
সাজু ভাই সিরিজ (সিরিজ নম্বর-০২) (গল্প:- হারিকেন) (সমাপ্ত গল্প)
#12
 পর্ব -০৬


সাজু ভাবলো, এখন যদি তাকে খুন করে চলে যায় তাহলে তো কতকিছু অজানা থেকে যাবে। কিন্তু মনের মধ্যে সাহস রেখে সে সোজা হয়ে বসলো তবে শক্তি নেই, দুর্বল শরীর। 

- আগন্তুক যুবকদের মধ্যে একজন বললো, সরি ভাইয়া ক্ষমা করবেন প্লিজ, আসলে আমরা এই পাশের রুমেই আছি। কিন্তু সবাই মিলে গল্প করতে করতে না দেখে আপনার রুমে ঢুকে গেছি, আশা করি ভুলটা মাফ করবেন। 

সাজু এবার অবাক হয়ে গেল, আর ছেলেগুলো এক এক করে বেরিয়ে যেতে লাগলো। মাথা মোটা বলে নিজেকে নিজে একটু বিদ্রুপ করলো, আর তারপরই চোখ বন্ধ করে পরে রইল। 

অনেকগুলো ফলমূল নিয়ে রুমের মধ্যে প্রবেশ করলো কবিতা, সেগুলো টেবিলে রেখে দরজা বন্ধ করে দিল। তারপর একটা কাটা ছুরি দিয়ে কাটতে কাটতে বললো:-

- ডাক্তার বলেছেন যে তোমাকে আরো বেশ কিছু দিন বিশ্রাম করতে হবে, আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে তোমাকে আমার সঙ্গে ঢাকা নিয়ে যাবো৷ 

- কেন? আর তাছাড়া আমি কিন্তু একটা মামলার ঠিক মাঝপথে আছি। 

- নিজের জীবন বিপন্ন করে রহস্যের পিছনে তুমি কেন যাও? এ জীবনে একবার যখন দেখা হয়েছে তখন আর তোমাকে হাতছাড়া করবো না। 

- আমি কিন্তু তোমার চোখের প্রতি আজও মায়া অনুভব করি, কি মিষ্টি তোমার চোখ। 

- হয়েছে আর কিছু বলতে হবে না, আমি ভাবছি আর কখনো ভিডিও বানাবো না। 

- কেন? 

- তোমার মতো আর কেউ যেন চোখের প্রেমে না পরে সেজন্য, হিহিহিহি। 

- তাহলে ঠিক আছে, আমি কিন্তু মারুফের সঙ্গে পরবর্তী ঘটনা এখনো শুনিনি। 

- এতো অস্থির কেন? আগে খাবার খেয়ে নাও তারপর ওষুধ আছে, ঔষধ খেয়ে বিশ্রাম করবে তারপর নাহয় বলবো। কিন্তু আমি জানি, সবকিছু জেনে তুমি এখন যেভাবে স্বাভাবিকভাবে কথা বলছো সেভাবে আর কথা বলবে না। 

- সেটা নাহয় সবকিছু শুনেই সিদ্ধান্ত নেবো। 

এবার কবিতা, চেয়ার ছেড়ে উঠে এসে সাজু ভাইর পাশে বসে ডান হাতটা ধরে বললো, কথা দিচ্ছি সবকিছু বলবো কিন্তু খারাপ করে বকা দিতে পারবে না, সমাজের মানুষ যেভাবে আমাদের ঘৃণা করে সেভাবে ঘৃণা করতে পারবে না, কারণ তুমি যদি ঘৃণা করো তবে কষ্ট পাবো। 

- ঠিক আছে তাই হবে। 

- একটা প্রশ্ন করবো সাজু? 

- করো। 

- আমি যখন মারুফের সঙ্গে রিলেশনে ছিলাম সেই সময় তুমি আমাকে পছন্দ করতে? 

- যদি হ্যাঁ বলি? 

- তাহলে তো আমি কপাল পোড়া তাই তোমার মত মানুষের সঙ্গী হতে পারিনি।

- কি হয়েছে তোমার জীবনে? 

- মারুফের সঙ্গে আমি ধানমন্ডি কলাবাগানের একটা ফ্ল্যাটে উঠলাম। মারুফ বলেছিল ওটা নাকি ওর এক বন্ধুর বাসা, তারা নাকি এখন সপরিবারে দেশের বাইরে তাই আমরা আপাতত সেখানেই থাকবো। সকাল বেলা মারুফ বিয়ের ব্যবস্থা করার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়ে গেল, আর সেটাই আমাদের শেষ যোগাযোগ। দুপুর পেরিয়ে বিকেল আর বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যা, কিন্তু তবুও তার আর ফেরার নাম নেই এবং মোবাইল বন্ধ। যাবার সময় দরজা বাহির থেকে বন্ধ করে রেখে দিয়েছে কারণ কেউ যেন প্রবেশ না করে। গভীর রাত হয়ে গেল তবুও মারুফের আসা হয়ে ওঠে না, আমার তো চিন্তায় চিন্তায় জীবন শেষ। সারারাত জাগ্রত থেকে একা একা ফাঁকা বাসার মধ্যে কান্না করতে লাগলাম। 

চারদিন পরে রুমের দরজা খুলে অন্য কেউ প্রবেশ করলো, ৩৫/৩৬ বছর বয়সী একটা সুদর্শন পুরুষ দেখে ভয়ে অবাক হয়ে গেলাম। তার দিকে আমি করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে কিছু জিজ্ঞেস করতে গিয়ে থমকে গেলাম। 

- লোকটা স্বাভাবিক ভাবে সোফায় বসে আমার দিকে তাকিয়ে বললো, তোমার নাম কি? 

- আমি বললাম, কবিতা। 

- তুমি কি জানো যে তোমাকে বিক্রি করা হয়েছে? 

- আমি তখন আকাশ থেকে পরার মতো মুমূর্ষু হয়ে বললাম, কি বলছেন আপনি? আমি তো এই বাসায় মারুফের সঙ্গে এসেছি, ও নিশ্চয়ই কোন বিপদে পরেছে। 

- ওহ্ আচ্ছা, তাহলে তুমি যার ধোঁকায় পরে এই খাঁচায় বন্দী হলে তার নাম মারুফ? 

- আমি কান্না করে বললাম, মানে? 

- আমি তোমাকে বা সেই মারুফকে চিনি না, তবে আমি একজনকে বলেছিলাম আমার জন্য একটা ফ্রেশ মেয়ে যোগাড় করতে। 

- কেন? 

- তুমি কি চা বানাতে পারো? 

- হ্যাঁ পারি। 

- তাহলে দুকাপ চা বানিয়ে আনো, আর আমাকে নিয়ে চিন্তার কোন কারণ নেই। চা নিয়ে আসো তারপর গল্প করবো, আমার হাতে ঘন্টা খানিক সময় আছে। রান্নাঘরে চা চিনি থাকার কথা, চেক করে দেখো। 

আমি জানতাম যে চা চিনি আছে কারণ সেখানে তো রান্না করে একা একা চারদিন বেঁচে আছি। কিন্তু এই অপরিচিত ভয়ঙ্কর লোকটার জন্য চা তৈরি করতে হবে ভেবে কষ্ট হচ্ছিল। তাছাড়া মারুফ যদি সত্যি সত্যি আমাকে বিক্রি করে দিয়ে থাকে তাহলে কাকে ভালবাসলাম আমি? 

চা নিয়ে আসার পরে আবারও বসলাম। 

- সে বললো, আমি আমার স্ত্রীকে ভালবেসে বিয়ে করেছিলাম আজ থেকে আট বছর আগে। কিন্তু বিয়ের বছর খানিক পরে একটা এক্সিডেন্টে ওর একটা পা কেটে ফেলতে হয়েছে। তাছাড়া তার শরীরে অনেক যায়গা ক্ষত হয়েছে, আর সেজন্য তারপর থেকে তার সঙ্গে রাতের বেলা ভালবাসা বৃদ্ধি করতে ইচ্ছে করে না। কিন্তু আমার শশুরের প্রচুর টাকা এবং আমার স্ত্রী ছিল সেই সম্পত্তির একমাত্র উত্তরাধিকারী। আমি তাই ভালবাসার অভিনয় করে তার সঙ্গেই মিশে আছি, আমার স্ত্রী এক পা না থাকলেও হুইলচেয়ারে বসে বসে নিজের হাতে রান্না করে। তার এতবড় এক্সিডেন্ট করার পরেও আমি যখন তাকে ছাড়িনি তখন আমার শশুর আমাকে খুব বিশ্বাস করেন তারপর আমি হলাম বিশ্বস্ত। গতবছর আমার শশুর মারা গেছে, কিন্তু সকল সম্পত্তি আমার আর তার মেয়ে শান্তনার নামে লিখে দিয়েছেন। এখন তো আমি অনেক টাকার মালিক, বিগত আট বছরের মধ্যে আমি অনেক পতিতা-দের সঙ্গে থেকেছি। বাহির থেকে শরীরের চাহিদা পুরণ করে বাসায় গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে ভালবাসার নাটক করতাম। কিন্তু হঠাৎ করে তোমার মতো কাউকে রাখতে ইচ্ছে করলো কারণ যে থাকবে শুধু আমার জন্য। আমার স্ত্রী বেঁচে থাকতে আমি কাউকে বিয়ে করতে পারবো না তাই তোমাকে এখানে রাখবো বলে কিনেছি। এই ফ্ল্যাট আমি গোপনে কিনেছি, তারপর আমি তোমার বিষয় কথা বলি। তোমার ছবি দেখে খুব ভাল লেগেছিল তাই পাঁচ লক্ষ টাকা নগদ দিয়ে দিলাম। 

**

আমি তার কথা শুনে কাঁদতে লাগলাম সাজু, যে মানুষের জন্য সবকিছু ত্যাগ করে আসলাম সেই মারুফ আমাকে বিক্রি করে দিয়েছে। ভদ্রলোক সেদিন আমার সঙ্গে গল্প করে চলে গেলেন, আর দ্বিতীয়বার এলেন আরো একুশ দিন পর। আমার খাবারের সকল বাজারের ব্যবস্থা করতো বাড়ির কেয়ারটেকার, তাকে ওই ভদ্রলোক টাকা দিত অনেক। আমি তো আত্মহত্যা করতে চাইতাম কিন্তু মরতে বড্ড ভয় করছে সাজু। 

.
.

মনোযোগ দিয়ে শুনছিল সাজু ভাই, মনের মধ্যে কিছু প্রশ্ন জমা হচ্ছে কিন্তু সে চায় কবিতা নিজে থেকে সবকিছু বলুক। 

- কবিতা বললো, পাঁচ বছর ধরে আমি সেভাবেই তার ফ্ল্যাটে থাকতাম, মাস খানিকের মধ্যে আমি সারাদিন একা একা থাকার মধ্যে অভ্যস্ত হলাম। সপ্তাহে একবার লোকটা আসতো, আমি তোমাকে তার পরিচয় বলবো না সাজু। তুমি বিশ্বাস করবে কিনা জানি না, আমাকে সেখানে রাখার প্রায় ছয়মাস পরে একদিন সে একটা হুজুর নিয়ে এসে আমাকে বিয়ে করে। আমিও তিনবার কবুল বলে বিয়ে করলাম, সেদিনই সে আমার শরীর স্পর্শ করেছিল। আমাকে বললেন " তোমাকে বৈধ করে নিলাম, কারণ তুমি যেন নিজেকে পাপী ভাবতে না পারো। আজ থেকে আমি তোমার স্বামী তাই আমি তোমাকে স্পর্শ করতেই পারি। " এরপর আমার সেই অদ্ভুত বৈবাহিক জীবন শুরু হয়ে গেল, কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে সে আমার স্বামী হলেও মাসে একবারই শুধু আমরা দুজন দুজনকে আলিঙ্গন করতাম। তার নাকি আমার সঙ্গে শুধু গল্প করতে ভালো লাগে, আর সে জন্য সপ্তাহে একবার এসে অনেকক্ষণ গল্প করে চলে যেতো। 

এভাবে কেটে গেল দেড় বছর। 
একবার এসে আমাকে বললেন যে শরীর অসুস্থ তাই দেশের বাইরে যাবে চিকিৎসা করতে। আমার জন্য ব্যাঙ্কে কিছু টাকা জমা দিয়ে গেছে, ব্যাবসার অবস্থা ভালো না তাই বেশি দিতে পারে নাই। ফ্ল্যাট আমার নামে লিখে দিয়েছে মাস তিনেক আগে, আর নগদ টাকা দিয়ে যেন চলতে পারি। লোকটা বুঝতে পেরেছিল সে মারা যাবে তাই হয়তো আমার কথা ভেবে এতকিছু করে গেল। বিদেশে চিকিৎসার জন্য গিয়ে সে লাশ হয়ে ফিরে এলো, আমার স্বামী হওয়া স্বত্বেও আমি তাকে মৃত্যুর পরে স্পর্শ করতে পারি নাই। একটা বিশ্বস্ত লোক সব জানতো, সে আমাকে নিয়ে গিয়েছিল তার আত্মীয় পরিচয় দিয়ে। তারপর থেকে সেই ফাঁকা ফ্ল্যাটে একা একা আছি আর মাস শেষে ব্যাঙ্কের টাকা তুলে নিয়ে আসি। মা-বাবার জন্য মনটা খারাপ লাগে কিন্তু নিজের ইচ্ছেতেই আর তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে চাই নাই। 

- সাজু ভাই বললো, তাহলে গতকাল সকাল বেলা যে-সব বললা? 

- হাহাহা, আমি তোমাকে দেখেই চিনতে পেরেছি সাজু সাহেব, তাই ওভাবে মিথ্যা বললাম। তোমার সঙ্গে একটু রসিকতাও বলতে পারো, তবে আমার সঙ্গে যে দুটি বান্ধবী ছিল ওরা খুব ভালো। 

- এতবড় মিথ্যা বলে মজা করা ঠিক না। 

- আচ্ছা সরি, কান ধরবো? 

- না থাক, কিন্তু তোমার সব ভিডিওর মধ্যে তারা থাকে কীভাবে? 

- ওদের মধ্যে একজনের নাম রিজিয়া, আর অন্য মেয়েটা হচ্ছে তার বান্ধবী হাফসা। রিজিয়া আমি যে ফ্ল্যাটে থাকি সেই বিল্ডিংয়ের তৃতীয় তলায় থাকে। তাই একসঙ্গে আমরা ভিডিও করি, আর আমরা তিনজনেই এসেছি কক্সবাজার। 

- বুঝলাম। 

- ঘৃণা হচ্ছে? 

- মোটেই না, বরং তুমি আমাকে বেশি ভয় পাইয়ে দিয়েছিলে। 

- হাহাহা, আমি একবার হিসাব করেছিলাম যে আমার স্বামীর সঙ্গে মোট এগারোবার আমার শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে। 

- আশ্চর্য। 

★★★

সন্ধ্যা বেলা অসুস্থ শরীরে কক্সবাজার থেকে সাজু ভাই চট্টগ্রামে যেতে প্রস্তুতি নিল। রকির কাছে বিকেলেই খবর পাঠানো হয়েছে এবং সে এসেছে মাত্র আধা ঘণ্টা মধ্যে। পুলিশ এসেছে সবকিছু জানার জন্য, 

- দারোগা বললো, যেহেতু আপনার উপর হামলা করা হয়েছে সেহেতু খুনি কক্সবাজার আছে। 

- সাজু ভাই বললো, কিন্তু চট্টগ্রামে যাওয়া বেশি জরুরি দারোগা সাহেব, কারণ আমি কক্সবাজার ত্যাগ করলে সেও কক্সবাজার ত্যাগ করবে। 

- আপনি কি নিশ্চিত? 

- হ্যাঁ, আরেকটা কথা, আহত ডাক্তারের উপর আক্রমণ করা সেই মেয়েটা আমাকে আক্রমণ করার সময়ও গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। আর কিছু না জানলেও, সেই মেয়েটা সবমসময় বাম হাত দিয়ে প্রধান কাজ করে। আমরা যেমন প্রায় সচারাচর ডানহাতে শক্তি বেশি পাই, সে মেয়ের শক্তি হচ্ছে বামহাতে। 

- কীভাবে জানলেন? 

- হোটেলের ভিডিও ফুটেজে সে বাম হাত দিয়ে দরজা খুলছিল, বারান্দার একটা ফুলের টব বাম হাত দিয়ে তুলেছিল, আে সেদিন আমাকে আহত করার সময় বাম হাতে স্টিক নিয়ে দুটো বারি মেরে আঘাত করেছিল। 

- বলেন কি?

- আসি দারোগা সাহেব, আবার দেখা হবে আর প্রয়োজন হলে আপনাকে জানবো। 

রাত সাড়ে বারোটার গাড়িতে অসুস্থ শরীর নিয়ে সাজু ভাই রকি আর কবিতা চট্টগ্রামে রওনা দিল। কবিতার বান্ধবীরা আগামীকাল ঢাকা চলে যাবে কিন্তু সে সাজুর সঙ্গে থাকবে বলে শপথ করেছে। সাজু তাকে বারবার বোঝাতে গিয়ে ব্যর্থ হয়েছে তাই সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছে। মারিয়ার সঙ্গে সন্ধ্যাবেলা কথা হয়েছে, পুলিশ তার স্বামীকে মাদকদ্রব্যের বিষয় সন্দেহ করাতে সে বেশ আপসেট। 

সারারাত কবিতার কাঁধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ভোরবেলা চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ে পৌঁছাল তারা তাদের বাস। বাস থেকে নেমেই রকি কাচুমাচু করে বললো:-

- সাজু একটা মেয়ের সঙ্গে একটু দেখা করবি? 

- কিসের মেয়ে? 

- তোর একজন পাঠিকা, তোর লেখা গল্প সবসময় নাকি পড়ে, আমি তো তোর ক্লোজ বন্ধু তাই সে আমাকে নক করেছিল অনেক আগে। 

- তারপর? 

- গতকাল রাতে তাকে বলেছি যে আমরা চট্টগ্রাম আসতেছি, আর তুই অসুস্থ শুনে তার খুব খারাপ লাগছে। আর সে এখন আশেপাশেই আছে কারণ আমি তাকে অনেকক্ষণ আগে কল দিয়ে বলেছি যে আমরা প্রায় পৌঁছে গেছি। তাই তুই যদি একটু দেখা করতি, মেলা মেলা খুশি হতো মেয়েটা। 

কবিতার কাছে বেশ ইন্টারেস্টিং লাগছিল, তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও সাজু রাজি হয়ে গেল। বোরকা পরা একটা মেয়ে দশ মিনিটের মধ্যে তাদের ঠিক সামনে এসে দাঁড়াল। সাজুর মাথায় বেন্ডেজ করা, হাতে শরীরে বিভিন্ন স্থানে এখনো ব্যথা করে। 

মেয়েটার সঙ্গে দাঁড়িয়ে কথা বলছিল, এমন সময় একটা লোক পাশ দিয়ে যাবার সময় একটা গন্ধ নাকে এলো। সাজু রকি দুজনেই কাশতে লাগলো, আর তখনই মেয়েটা তার হাতের পানির বোতল এগিয়ে দিয়ে বললো, " পানি খান সাজু ভাই "

সাজু কিছু না ভেবেই পানি মুখে দিল, রাস্তার মধ্যে একটা কিছু ব্লাস্ট হবার শব্দ হলো। সবাই তখন চারিদিকে দৌড়ে যাচ্ছে, সাজু ভাই নিজের মাথা ঘুরতে অনুভব করলো। প্রচুর থুতু আসতে শুরু করলো মুখে, হাতপা শক্তিহীন হয়ে পরে যাচ্ছে দেখে তাড়াতাড়ি তাকে ধরে ফেললো কবিতা। 

সাজু ভাই তখন চারিদিকে তাকিয়ে সেই মেয়েটা খুঁজতে লাগলো কিন্তু কোথাও নেই সে। সাজুর কাশি বাড়তে লাগলো, থুতুর সঙ্গে সাদা সাদা কিছু বের হচ্ছে। রকিকে হাত দিয়ে ইশারা করে মুখের কাছে নিয়ে গেল। 

- রকি তার কান সাজুর মুখের কাছে নিল। 

সাজু ভাই বললো, পরিকল্পনা পরিবর্তন করতে হবে রকি, খুনির মূল টার্গেট আমি নিজেই। এখন জানি না বাঁচতে পারবো কিনা, বিষাক্ত কোন বিষ পানির বোতলে মেয়েটা আমাকে দিয়েছে। বোকার মতো সেটা খেয়ে নিলাম, এটাই কিন্তু সেই বামহাতি মেয়ে, তার বোতল নড়াচড়া আর কিছু বিষয় দেখে সেটা বুঝতে পারছি। খুনি একজন নয় আর তুই বা সজীব কিছু করতে পারবি না। আমার যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে আফসোস করবি না, কিন্তু আমাকে এখন হাসপাতাল নেবার আগেই তুই সিলেটে হাসান ভাইয়ের কাছে কল দিয়ে চট্টগ্রামে আসতে বলবি। আমার ব্যাগের নোটবুকের সতেরো নাম্বার পাতায় সাংকেতিক চিহ্নের মাধ্যমে কিছু লেখা আছে। হাসান ভাই সেই সবকিছু বুঝতে পারবে, আশা করি তিনি রহস্যের উন্মোচন করতে পারবে। 

- কবিতা কান্না করে বললো, তোমার কিছু হবে না সাজু, তুমি সুস্থ হবে। 

সাজু চোখ বন্ধ করলো। 

.

কেমন হচ্ছে অবশ্যই জানাবেন, যদি খারাপ লাগে তাহলে বলবেন, আমি শেষ করে দেবো। 
.

চলবে.... 

.
.
 
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

[+] 1 user Likes Bangla Golpo's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: সাজু ভাই সিরিজ (সিরিজ নম্বর-০২) (গল্প:- হারিকেন) - by Bangla Golpo - 14-06-2023, 12:28 AM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)