14-06-2023, 12:25 AM
পর্ব -২৫
"রুদ্র তো এখনো এলো না।" সাত্যকি বলল।
"ইরিনা, রুদ্রকে একটা কল দিয়ে দেখ, ও কোথায় আছে।" ফাহিম বলল।
রুদ্রের নাম্বার বের করে ইরিনা রুদ্রকে কল দিলো।
রুদ্র ফোন রিসিভ করেই বলল, "হ্যাঁ, বল।"
"তুই কোথায়?" ইরিনা জিজ্ঞেস করলো।
"প্রায় চলে এসেছি। আরেকটু অপেক্ষা কর।"
"সেই কখন থেকে অপেক্ষা করছি। তোর কোনো খোঁজই নেই।"
"সরি, একটু দেরি হয়ে গেলো।"
"একটু বলছিস? প্রায় তিরিশ মিনিটিরে মত তোর জন্য সবাই অপেক্ষা করছি।"
"সরি দোস্ত, আর মাত্র পাঁচ মিনিট লাগবে।"
"আচ্ছা, দ্রুত আয়। ওহ হ্যাঁ, তোর সাথে কি রিয়া আছে? আলিফও তো এলো না এখনো।"
"দুইজনকে নিয়ে আসতে গিয়েই তো দেরি হলো আমার।"
"যাক ভালো হয়েছে। আচ্ছা আয় তুই। আমরা অপেক্ষা করছি।"
"আচ্ছা, আসছি।" রুদ্র বলেই ফোন কেটে দিলো।
রুদ্র এসে পৌছালো আরো দশ মিনিট পর। সবাই ক্যাম্পাসে মিলিত হলো। অনেকদিন পরে সবাই আবার একসাথে একত্রিত হলো, সাত্যকির জন্মদিন উপলক্ষে।
আজ সাত্যকির জন্মদিন। সে-ই সবাইকে ফোন করে একত্রিত করেছে। আজ শুক্রবার বলে সবাই আসতে পেরেছে। সবাই-ই মনে মনে চাচ্ছিলো ক্যাম্পাস লাইফের মত আবার একসাথে জমিয়ে আড্ডা দিতে। কিন্তু কয়েকবার কেউ কেউ উদ্যোগ নিলেও সবাইকে পাইনি। কেউ না কেউ মিসিং থাকতোই।
"জয় দাদা কোথায়?" সাত্যকিকে উদ্দেশ্য করে রুদ্র বলল।
"সেখানে যাবো বলে তোদের জন্য অপেক্ষা করছি। এদিকে সে আমাকে ফোন দিয়ে পাগল করে ফেলছে কখন আসবো।" সাত্যকি বলল।
"দাদা ক্যাম্পাসে আসবে না?" রুদ্র বলল।
"আমি বলেছিলাম, কিন্তু সে বলল, সে সবকিছু ব্যবস্থা করবে। আমাদের শুধু সময়মত যেতে হবে।" সাত্যকি বলল।
"তাহলে তো ভালোই হলো। আচ্ছা তাহলে চল, আর দেরি করা উচিত হবে না।" রুদ্র বলল।
একটা অটো ঠিক করে তারা তাদের গন্তব্যে পৌঁছে গেলো। পার্টি সেন্টারের ভেতর ঢুকতেই সবাই রীতিমতো বাকরুদ্ধ। কি বিরাট আয়োজন। চারদিকে বাহারি রকম ফুল ও লাইটিং দিয়ে জাঁকজমক অবস্থা।
সাত্যকিকে দেখতে পেয়েই জয় ছুঁটে এলো। তার হাতে বড় একটা ফুলের তোরা। সে সেটা সাত্যকির দিকে বাড়িয়ে দিয়ে তাকে জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানালো। তারপর সে সবাইকে নিয়ে ভেতরে ঢুকলো।
মাঝারি একটা টেবিল ফুল দিয়ে চারদিকে সাজানো। তার মাঝে বড় একটা চকলেট কেক। সাত্যকির চকলেট কেক পছন্দ, সেটা জয় ভুলেনি। সেই কবে একবার সে জয়কে কথাটা বলেছিলো।
সাত্যকি এতোটা সারপ্রাইজ আগে কখনো হয় নি। সে ভীষণ অবাক হয়েছে। সে কখনো ভাবেই নি জয় এরকম কিছু করবে। সে নিজেকে স্পেশাল অনুভব করছে। সেই সাথে তার বুকের ভেতর ভীষণ আনন্দ হচ্ছে। সে আজ অবাক-খুশি।
সবাই মিলে কেক কাটলো। সবাই কেক খেতে ব্যস্ত ঠিক সেই সময় জয় তার পকেট থেকে একটা এনগেজমেন্ট রিং বের করে সাত্যকির সামনে হাটু গেড়ে বসলো। তখনই সবাই তাদের দুইজনের চারপাশে এসে জড় হলো। সবাই উৎফুল্ল।
এনগেজমেন্ট রিংটা সাত্যকির দিকে বাড়িয়ে জয় বলল, "উইল ইউ ম্যারি মি?"
সাত্যকি উত্তর না দিয়ে সে অন্য প্রসঙ্গে বলল, "আমাদের তো বিয়ে ঠিক হয়েই আছে?"
"বিয়ে ঠিক হয়ে থাকলে কি প্রপোজ করা যায় না? ওটা তো ফ্যামিলিগত ভাবে ঠিক হয়েছে। কিন্তু এখানে আমার একটা কর্তব্য আছে না? তুমি এই সব বাদ দিয়ে, এখন আমার প্রশ্নের উত্তর দেও।"
সাত্যকি আর কিছু বলল না। সে খানিকটা সময় নিরব থেকে অবশেষে বলল, "ইয়েস, আই উইল।"
জয় এবং সাত্যকিকে ঘিরে থাকা তার বন্ধুরা সবাই জয়ধ্বনি দিতে থাকলো। সেই সাথে হাত তালি দিয়ে তাদের অভিনন্দন জানালো। সবার মুখেই হাসি। একমুহূর্তে পরিবেশটা আনন্দে ভরে উঠলো।
জয় উঠেই সাত্যকিকে জড়িয়ে ধরলো। সাত্যকির লজ্জা লাগলেও সে কিছু বলল না। সে স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করলো।
হাসি আড্ডায় অনেকটা সময় অতিবাহিত হয়ে গেলো। সবাই গল্পগুজব করল। অনেকদিন পর সবাই মন খুলে হাসলো, নিশ্বাস নিলো। এই মুহুর্তটা সবার কাছেই খুব স্পেশাল হয়ে উঠলো।
জয় এবং সাত্যকির বিয়ে ইতিমধ্যে ঠিক হয়ে গেছে। আসছে যে মাস, সেই মাসের শেষ সপ্তাহের শুক্রবার তাদের বিয়ে। সবাই সেটা আজই জানতে পেরেছে। সাত্যকিই ইচ্ছে করে আগে কাউকে জানায় নি। সে চেয়েছিলো সবাইকে একসাথে জানাতে। সেই জন্য আজকের দিনটা ছিলো শ্রেষ্ঠ। কিন্তু সাত্যকিও আগে থেকে বুঝতে পারেনি আজকের দিনটা তার জন্য এতোটা শ্রেয় হয়ে উঠবে। জয়ও তাকে সারপ্রাইজ দিবে বলে আগে থেকে কিছুই জানায় নি। সবমিলিয়ে আজকের দিনে সবাই সবার দুঃখ ভুলে জয় এবং সাত্যকির খুশিতে মিশে গেলো।
এই মাসে তাদের অনার্স কমপ্লিট হয়ে যাবে। টার্ম পেপার জমা এবং ভাইভা হলেই সবকিছু শেষ। অবশ্য সাত্যকি চেয়েছিল মাস্টার কমপ্লিট করেই বিয়ে করার জন্য। কিন্তু সেটা সম্ভব হয় নি। দুইজনের পরিবারের সবাই চাচ্ছিলো বিয়েটা হয়ে যাক। এদিকে জয়ও আর দেরি করতে চাচ্ছিল না। অবশ্য সাত্যকির নিজেই চাচ্ছিল তাই তার না এর মধ্যে কোনো জোর ছিলো না।
"জয় দাদা, একটা গান হলে কেমন হয়?" আড্ডার মাঝে হঠাৎ ফাহিম বলল।
"হ্যাঁ দাদা, একটা গান হয়ে যাক। সাত্যকি অবশ্য আপনার গানের গলার অনেক প্রশংসা করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আপনার গলায় গানই শোনা হলো না। আজকে আর না শুনছি না।" ইরিনা বলল।
ইরিনা এবং ফাহিমের কথায় সবাই সম্মতি জানালো। সবার জোড়াজুড়িতে জয় আর না করতে পারল না। সে বলল, "আমি তো প্রায় সবসময়ই ইংরেজি গান শুনি। তাই একটা ইংরেজি গান গাইতে চাচ্ছি। কোনো সমস্যা আছে?"
"আমদেরও কম বেশি ইংরেজি গান শোনা হয়। আপনি যেটায় কম্ফর্ট ফিল করেন সেটাই গান।" ইরিনা বলল।
"আচ্ছা।" জয় বলল।
জয় গানের লিরিক মনে করার চেষ্টা করছে। কোন গানটা গাইবে সেটাই ভাবছে। অন্য দিকে সবাই চুপচাপ। সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছে। অবশেষে জয় খুকখুক শব্দে কাশি দিয়ে গান ধরলো।
"Who knows how long I've loved you
You know I love you still
Will I wait a lonely lifetime
If you want me to, I will
For if I ever saw you
I didn't catch your name
But it never really mattered
I will always feel the same
Love you forever and forever
Love you with all my
Love you whenever we're together
Love you when we're apart
And when at last I find you
Your song will fill the air
Sing it loud so I can hear you
Make it easy to be near you
For the things you do endear you to me
You know I will.... I will......!"
সবাই মুগ্ধ হয়ে জয়ের কন্ঠে The Beatles এর "I will" গানটা শুনলো। সবাই হতবাক। জয়ের এতো সুন্দর গানের গলা কেউই বুঝতে পারেনি। সাত্যকির মুখে শুনে কেউ ভাবেনি সত্যিই এতোটা চমৎকার।
সবাই আরো কিছুক্ষণ আড্ডা দিলো। সময়ও দ্রুত অতিবাহিত হতে থাকলো। ফেরার সময় সবারই মন খারাপ হচ্ছিলো। এভাবে হয়তো সবাই মিলে আর কখনো আড্ডা দেওয়া হবে না। একসাথে মজা করা সম্ভব হবে না। সবাই সবার ব্যস্ত জীবন নিয়ে ব্যস্ত থাকবে।
সবাই মন খারাপ করেই যার যার গন্তব্যে ফিরলো। এই সময়টুকু এখন শুধুই স্মৃতি হয়ে থাকবে। আজকের দিনটা সবাই বহুদিন মনে রাখবে। মনে রাখার মত একটা সন্ধ্যা সবাই মিলে কাটালো।
মানুষের জীবনে এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্মৃতিই সবচেয়ে মূল্যবান। কোনো এক সময় মানুষ এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্মৃতির কথা ভেবে হাসে। অন্য মানুষের কাছে আগ্রহ নিয়ে তার গল্প করবে। এটাইতো জীবন। ক্ষুদ্র একটা জীবন। তবুও মানুষ হতাশ হয়। হাজারও মানুষ বেঁছে নেয় মৃত্যু মত পন্থা। আসলে আমরা সবসময় সুখে থাকতে চাই। কিন্তু যখনই আমরা মেনে নিতে পারবো কষ্ট জীবনের একটা ক্ষুদ্রতম অংশ তখন মনে হবে জীবন সুন্দর। জীবন আসলেই সুন্দর। জীবন চড়ুই পাখির মত হলেও ভীষণ সুন্দর।
চলবে......!
"রুদ্র তো এখনো এলো না।" সাত্যকি বলল।
"ইরিনা, রুদ্রকে একটা কল দিয়ে দেখ, ও কোথায় আছে।" ফাহিম বলল।
রুদ্রের নাম্বার বের করে ইরিনা রুদ্রকে কল দিলো।
রুদ্র ফোন রিসিভ করেই বলল, "হ্যাঁ, বল।"
"তুই কোথায়?" ইরিনা জিজ্ঞেস করলো।
"প্রায় চলে এসেছি। আরেকটু অপেক্ষা কর।"
"সেই কখন থেকে অপেক্ষা করছি। তোর কোনো খোঁজই নেই।"
"সরি, একটু দেরি হয়ে গেলো।"
"একটু বলছিস? প্রায় তিরিশ মিনিটিরে মত তোর জন্য সবাই অপেক্ষা করছি।"
"সরি দোস্ত, আর মাত্র পাঁচ মিনিট লাগবে।"
"আচ্ছা, দ্রুত আয়। ওহ হ্যাঁ, তোর সাথে কি রিয়া আছে? আলিফও তো এলো না এখনো।"
"দুইজনকে নিয়ে আসতে গিয়েই তো দেরি হলো আমার।"
"যাক ভালো হয়েছে। আচ্ছা আয় তুই। আমরা অপেক্ষা করছি।"
"আচ্ছা, আসছি।" রুদ্র বলেই ফোন কেটে দিলো।
রুদ্র এসে পৌছালো আরো দশ মিনিট পর। সবাই ক্যাম্পাসে মিলিত হলো। অনেকদিন পরে সবাই আবার একসাথে একত্রিত হলো, সাত্যকির জন্মদিন উপলক্ষে।
আজ সাত্যকির জন্মদিন। সে-ই সবাইকে ফোন করে একত্রিত করেছে। আজ শুক্রবার বলে সবাই আসতে পেরেছে। সবাই-ই মনে মনে চাচ্ছিলো ক্যাম্পাস লাইফের মত আবার একসাথে জমিয়ে আড্ডা দিতে। কিন্তু কয়েকবার কেউ কেউ উদ্যোগ নিলেও সবাইকে পাইনি। কেউ না কেউ মিসিং থাকতোই।
"জয় দাদা কোথায়?" সাত্যকিকে উদ্দেশ্য করে রুদ্র বলল।
"সেখানে যাবো বলে তোদের জন্য অপেক্ষা করছি। এদিকে সে আমাকে ফোন দিয়ে পাগল করে ফেলছে কখন আসবো।" সাত্যকি বলল।
"দাদা ক্যাম্পাসে আসবে না?" রুদ্র বলল।
"আমি বলেছিলাম, কিন্তু সে বলল, সে সবকিছু ব্যবস্থা করবে। আমাদের শুধু সময়মত যেতে হবে।" সাত্যকি বলল।
"তাহলে তো ভালোই হলো। আচ্ছা তাহলে চল, আর দেরি করা উচিত হবে না।" রুদ্র বলল।
একটা অটো ঠিক করে তারা তাদের গন্তব্যে পৌঁছে গেলো। পার্টি সেন্টারের ভেতর ঢুকতেই সবাই রীতিমতো বাকরুদ্ধ। কি বিরাট আয়োজন। চারদিকে বাহারি রকম ফুল ও লাইটিং দিয়ে জাঁকজমক অবস্থা।
সাত্যকিকে দেখতে পেয়েই জয় ছুঁটে এলো। তার হাতে বড় একটা ফুলের তোরা। সে সেটা সাত্যকির দিকে বাড়িয়ে দিয়ে তাকে জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানালো। তারপর সে সবাইকে নিয়ে ভেতরে ঢুকলো।
মাঝারি একটা টেবিল ফুল দিয়ে চারদিকে সাজানো। তার মাঝে বড় একটা চকলেট কেক। সাত্যকির চকলেট কেক পছন্দ, সেটা জয় ভুলেনি। সেই কবে একবার সে জয়কে কথাটা বলেছিলো।
সাত্যকি এতোটা সারপ্রাইজ আগে কখনো হয় নি। সে ভীষণ অবাক হয়েছে। সে কখনো ভাবেই নি জয় এরকম কিছু করবে। সে নিজেকে স্পেশাল অনুভব করছে। সেই সাথে তার বুকের ভেতর ভীষণ আনন্দ হচ্ছে। সে আজ অবাক-খুশি।
সবাই মিলে কেক কাটলো। সবাই কেক খেতে ব্যস্ত ঠিক সেই সময় জয় তার পকেট থেকে একটা এনগেজমেন্ট রিং বের করে সাত্যকির সামনে হাটু গেড়ে বসলো। তখনই সবাই তাদের দুইজনের চারপাশে এসে জড় হলো। সবাই উৎফুল্ল।
এনগেজমেন্ট রিংটা সাত্যকির দিকে বাড়িয়ে জয় বলল, "উইল ইউ ম্যারি মি?"
সাত্যকি উত্তর না দিয়ে সে অন্য প্রসঙ্গে বলল, "আমাদের তো বিয়ে ঠিক হয়েই আছে?"
"বিয়ে ঠিক হয়ে থাকলে কি প্রপোজ করা যায় না? ওটা তো ফ্যামিলিগত ভাবে ঠিক হয়েছে। কিন্তু এখানে আমার একটা কর্তব্য আছে না? তুমি এই সব বাদ দিয়ে, এখন আমার প্রশ্নের উত্তর দেও।"
সাত্যকি আর কিছু বলল না। সে খানিকটা সময় নিরব থেকে অবশেষে বলল, "ইয়েস, আই উইল।"
জয় এবং সাত্যকিকে ঘিরে থাকা তার বন্ধুরা সবাই জয়ধ্বনি দিতে থাকলো। সেই সাথে হাত তালি দিয়ে তাদের অভিনন্দন জানালো। সবার মুখেই হাসি। একমুহূর্তে পরিবেশটা আনন্দে ভরে উঠলো।
জয় উঠেই সাত্যকিকে জড়িয়ে ধরলো। সাত্যকির লজ্জা লাগলেও সে কিছু বলল না। সে স্বাভাবিক থাকার চেষ্টা করলো।
হাসি আড্ডায় অনেকটা সময় অতিবাহিত হয়ে গেলো। সবাই গল্পগুজব করল। অনেকদিন পর সবাই মন খুলে হাসলো, নিশ্বাস নিলো। এই মুহুর্তটা সবার কাছেই খুব স্পেশাল হয়ে উঠলো।
জয় এবং সাত্যকির বিয়ে ইতিমধ্যে ঠিক হয়ে গেছে। আসছে যে মাস, সেই মাসের শেষ সপ্তাহের শুক্রবার তাদের বিয়ে। সবাই সেটা আজই জানতে পেরেছে। সাত্যকিই ইচ্ছে করে আগে কাউকে জানায় নি। সে চেয়েছিলো সবাইকে একসাথে জানাতে। সেই জন্য আজকের দিনটা ছিলো শ্রেষ্ঠ। কিন্তু সাত্যকিও আগে থেকে বুঝতে পারেনি আজকের দিনটা তার জন্য এতোটা শ্রেয় হয়ে উঠবে। জয়ও তাকে সারপ্রাইজ দিবে বলে আগে থেকে কিছুই জানায় নি। সবমিলিয়ে আজকের দিনে সবাই সবার দুঃখ ভুলে জয় এবং সাত্যকির খুশিতে মিশে গেলো।
এই মাসে তাদের অনার্স কমপ্লিট হয়ে যাবে। টার্ম পেপার জমা এবং ভাইভা হলেই সবকিছু শেষ। অবশ্য সাত্যকি চেয়েছিল মাস্টার কমপ্লিট করেই বিয়ে করার জন্য। কিন্তু সেটা সম্ভব হয় নি। দুইজনের পরিবারের সবাই চাচ্ছিলো বিয়েটা হয়ে যাক। এদিকে জয়ও আর দেরি করতে চাচ্ছিল না। অবশ্য সাত্যকির নিজেই চাচ্ছিল তাই তার না এর মধ্যে কোনো জোর ছিলো না।
"জয় দাদা, একটা গান হলে কেমন হয়?" আড্ডার মাঝে হঠাৎ ফাহিম বলল।
"হ্যাঁ দাদা, একটা গান হয়ে যাক। সাত্যকি অবশ্য আপনার গানের গলার অনেক প্রশংসা করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আপনার গলায় গানই শোনা হলো না। আজকে আর না শুনছি না।" ইরিনা বলল।
ইরিনা এবং ফাহিমের কথায় সবাই সম্মতি জানালো। সবার জোড়াজুড়িতে জয় আর না করতে পারল না। সে বলল, "আমি তো প্রায় সবসময়ই ইংরেজি গান শুনি। তাই একটা ইংরেজি গান গাইতে চাচ্ছি। কোনো সমস্যা আছে?"
"আমদেরও কম বেশি ইংরেজি গান শোনা হয়। আপনি যেটায় কম্ফর্ট ফিল করেন সেটাই গান।" ইরিনা বলল।
"আচ্ছা।" জয় বলল।
জয় গানের লিরিক মনে করার চেষ্টা করছে। কোন গানটা গাইবে সেটাই ভাবছে। অন্য দিকে সবাই চুপচাপ। সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে আছে। অবশেষে জয় খুকখুক শব্দে কাশি দিয়ে গান ধরলো।
"Who knows how long I've loved you
You know I love you still
Will I wait a lonely lifetime
If you want me to, I will
For if I ever saw you
I didn't catch your name
But it never really mattered
I will always feel the same
Love you forever and forever
Love you with all my
Love you whenever we're together
Love you when we're apart
And when at last I find you
Your song will fill the air
Sing it loud so I can hear you
Make it easy to be near you
For the things you do endear you to me
You know I will.... I will......!"
সবাই মুগ্ধ হয়ে জয়ের কন্ঠে The Beatles এর "I will" গানটা শুনলো। সবাই হতবাক। জয়ের এতো সুন্দর গানের গলা কেউই বুঝতে পারেনি। সাত্যকির মুখে শুনে কেউ ভাবেনি সত্যিই এতোটা চমৎকার।
সবাই আরো কিছুক্ষণ আড্ডা দিলো। সময়ও দ্রুত অতিবাহিত হতে থাকলো। ফেরার সময় সবারই মন খারাপ হচ্ছিলো। এভাবে হয়তো সবাই মিলে আর কখনো আড্ডা দেওয়া হবে না। একসাথে মজা করা সম্ভব হবে না। সবাই সবার ব্যস্ত জীবন নিয়ে ব্যস্ত থাকবে।
সবাই মন খারাপ করেই যার যার গন্তব্যে ফিরলো। এই সময়টুকু এখন শুধুই স্মৃতি হয়ে থাকবে। আজকের দিনটা সবাই বহুদিন মনে রাখবে। মনে রাখার মত একটা সন্ধ্যা সবাই মিলে কাটালো।
মানুষের জীবনে এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্মৃতিই সবচেয়ে মূল্যবান। কোনো এক সময় মানুষ এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্মৃতির কথা ভেবে হাসে। অন্য মানুষের কাছে আগ্রহ নিয়ে তার গল্প করবে। এটাইতো জীবন। ক্ষুদ্র একটা জীবন। তবুও মানুষ হতাশ হয়। হাজারও মানুষ বেঁছে নেয় মৃত্যু মত পন্থা। আসলে আমরা সবসময় সুখে থাকতে চাই। কিন্তু যখনই আমরা মেনে নিতে পারবো কষ্ট জীবনের একটা ক্ষুদ্রতম অংশ তখন মনে হবে জীবন সুন্দর। জীবন আসলেই সুন্দর। জীবন চড়ুই পাখির মত হলেও ভীষণ সুন্দর।
চলবে......!
===========================
পড়তে থাকুন চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।
Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.
( Post By- Kam Pagol)