11-06-2023, 08:19 PM
![[Image: Picsart-22-12-06-20-20-08-119.jpg]](https://i.ibb.co/5r3Wsy2/Picsart-22-12-06-20-20-08-119.jpg)
দ্বিতীয় খণ্ড
১৬তম পর্ব
মানুষের জীবন বড়ই অদ্ভুত আর জটিল কখন কি হয় কেউ বলতে পারে না স্রোতস্বিনী নদীর মতো তীব্র গতিতে বয়ে চলে কিন্তু কখন কোন দিকে বাঁক নেবে সেটা আগে থেকে কেউ কল্পনাও করতে পারে না নদীর মতোই এখানেও কখনো জোয়ার তো কখনো ভাটা, কখনও আনন্দে ভরে ওঠে তো পরমুহূর্তেই চরম দুঃখের গহ্বরে নিমজ্জিত হতে হয় তবুও থেমে না গিয়ে এগিয়ে যেতে হয় ঘাত প্রতিঘাত, ঝড়ঝঞ্ঝা আসবেই কিন্তু তবুও না থেমে গিয়ে এগিয়ে যেতে হবে এটাই প্রকৃতির নিয়ম এটাই মানব জীবনের নিয়ম।
নিজের দাদা আর প্রেমিকার থেকে প্রতারিত এবং হত্যার চেষ্টা থেকে বেঁচে গিয়েও যখন অনিকেত বাড়ি ফিরে দেখে যাকে সে নিজের পরিবার মনে করতো তারা তার কথা ভুলে বিয়ে নিয়ে মেতে আছে তখন তার মনের অবস্থা অনুমান করতে পারে এমন কেউ ছিল না, অন্য সময় হলে হয়তো বিশ্বাস করতো না কিন্তু সেদিন প্রতিবেশীর মুখে শোনা 'হয়তো কুড়িয়ে পাওয়া ছেলে' কথাটা তার মাথার গভীরে ঢুকে গেছে।
একপ্রকার বাঁচার আশা ছেড়েই দিয়েছিল এমনকি নতুন নাম, নতুন পরিচয় নতুন জীবন পাওয়ার পরেও তার সেই আশা জাগেনি, শেষে যখন সে আবার বাঁচর কথা ভাবতে শুরু করলো তখনই তাকে সেই পরিচয় ছেড়ে চলে আসতে হলো।
কিন্তু নিয়তি বোধহয় সর্বহারাদের কিছু না কিছু পাইয়েই দেন একেবারে নিঃস্ব রাখেন না। নর্থবেঙ্গল থেকে চলে আসার পরেও তাই আনন্দ নিকেতনে আশ্রয় জুটে যায় আর শুধু আশ্রয় নয় সাথে নতুন পরিবারও খুঁজে পায় আদিত্য ওরফে অনিকেত তারপর তো তার জীবনে সে আসে যে তাকে আবার নতুন করে ভালোবাসতে শিখিয়েছে তার স্ত্রী পিয়ালী।
সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল অনিকেত ভেবেছিল এইভাবেই নিশ্চিন্তে তার জীবনটা কেটে যাবে কিন্তু সেটা তো হওয়ার ছিল না প্রায় বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতোই তার ফেলে আসা অতীত তার সামনে এসে দাঁড়ায়।
তার বাবা মা, সেই প্রতারক দাদা আর সেই প্রেমিকা যে এখন তার দাদার স্ত্রী সবাই, যাদের থেকে সে এতগুলো বছর দূরে ছিল আর কখনো যাদের সামনে গিয়ে দাঁড়ানোর কথা ভাবেনি তাদেরই সামনে গিয়ে দাঁড়াতে হলো।
হটাৎ একটা বজ্রপাতের শব্দে তন্ময়তা ভেঙে অতীত ছেড়ে বর্তমানে ফিরে এলো আদিত্য ঘরের বাইরে খোলা বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিল সে বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়েছে এই বৃষ্টি দেখতে দেখতেই কখন যেন নিজের ফেলে আসা অতীতে ডুবে যায় সে, মুখে বৃষ্টির জলের ঝাপটা এসে ভিজিয়ে দিয়েছে যদিও সেই জলবিন্দুগুলোর মধ্যে আদিত্যর চোখের জল আছে কিনা এটা কেউ নিশ্চিতভাবে বলতে পারবে না, আদিত্য পরনের পাঞ্জাবির খুঁটে মুখটা মুছে নিল হাতঘড়িটা দেখলো পৌনে বারোটা বাজে।
আদিত্য ঘরের ভিতরে ঢুকে দেখে পিয়ালী তখনও জেগে, সে বিছানায় চুপ করে বসে আছে। নিজেকে একটু অপরাধী মনে হয় আদিত্যর খামোখা এতক্ষণ বাইরে দাঁড়িয়ে থাকার জন্য সে জানে যে যতক্ষণ সে পাশে না আসবে পিয়ালী ঘুমাবে না, তাড়াতাড়ি পিয়ালীর কাছে গেল আদিত্য।
"আয়্যাম রিয়েলি সরি পিয়ালী, আসলে বৃষ্টিটা দেখতে ভালো লাগছিল তাই দাঁড়িয়ে পরেছিলাম" ঠোঁটের কোণে একটা হাসি এনে কথাটা বলে বিছানায় পিয়ালীর পাশে বসলো আদিত্য, কিন্তু পিয়ালী তখনও গম্ভীর কোনো কথা বললো না।
আদিত্য পিয়ালীর মুখটা আলতোভাবে নিজের দিকে ঘোরালো পিয়ালীর চোখে এখন এক অদ্ভুত দৃষ্টি যেন ভালো লাগা, আনন্দ, বিস্ময় সব মিশে এক ঘোরের মধ্যে রয়েছে সে।
"কি হয়েছে কিছু বলবে? আমি আসতে দেরী করায় রেগে আছো?" আদিত্যর এই কথার উত্তরে পিয়ালী যা বললো সেটার জন্য আদিত্যও প্রস্তুত ছিল না,
"কাল একবার ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবে? কিছু টেস্ট করাতে হবে"
"পিয়ালী তোমার কি হয়েছে? শরীর খারাপ? তাহলে চলো আমি এখনই নিয়ে যাচ্ছি চলো ওঠো"
"আদিত্য আদিত্য রিল্যাক্স আসলে আমার মনে হচ্ছে যে.."
"কি মনে হচ্ছে বলবে? তুমি কিন্তু আমার টেনশন বাড়িয়ে দিচ্ছো"
"আমি.....আমি.....আমি প্রেগনেন্ট"
"হোয়াট?" আদিত্য পিয়ালীর কথাটা ঠিক অনুধাবন করতে পারলো না বুঝে পিয়ালী আবার বললো, "তুমি বাবা হতে চলেছো"
পিয়ালীর এই কথার জন্য আদিত্য একদমই প্রস্তুত ছিল না ফলে সে হতবাক হয়ে গেল এমনকি এতক্ষণ তার ঠোঁটের কোণে যে সূক্ষ্ম হাসির রেখাটা ছিল সেটাও মিলিয়ে গেল যেটা পিয়ালীর দৃষ্টি এড়ালো না।
"তুমি কিভাবে জানলে?" আদিত্য প্রশ্ন করে, স্বামীর মুখে হাসি নেই দেখে পিয়ালী একটু অবাক হয় সাথে একটু ভয়ও লাগে ওর মনে আশঙ্কার চোরাস্রোত বইতে শুরু করে 'তবে কি আদিত্য এখনো তৈরি নয়? এখনই কি চায়নি এটা?', মুখে কিছু না বলে পিয়ালী ঘাড় ঘুরিয়ে বিছানার পাশে টেবিলের উপরে প্যাকেটের উপরে রাখা প্রেগনেন্সি কিটটা দেখায় আদিত্য হাতে না নিয়েই দেখে সেটায় পজিটিভ সাইন দেখাচ্ছে,
পিয়ালী বলতে থাকে "এটাতে পজিটিভ বলছে তবুও কাল ডাক্তার দেখিয়ে টেস্ট করালে পুরোপুরি কনফার্ম হওয়া যাবে"।
আদিত্য তখনও মুখে কিছু বলে না সে আলতো করে তার ডান হাতটা পিয়ালীর পেটের উপরে রাখলো।
"তুমি খুশী নও?"
আদিত্য এবার পিয়ালীর দিকে তাকালো পিয়ালীও তার দিকে কৌতূহলী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,
'না'
আদিত্যর এই উত্তর পিয়ালী প্রত্যাশা করেনি ধীরে ধীরে তার দৃষ্টি নীচে নেমে গেল কিন্তু এরপর আদিত্য যা করলো সেটার জন্য পিয়ালী আরোই প্রস্তুত ছিল না।
আদিত্য হটাৎই একটা হাত পিয়ালীর মাথার পিছনে দিয়ে মাথাটা একটু নিজের দিকে টেনে তার কপালে একটা চুম্বন দিল তারপর বললো, "তোমাকে বলে বোঝাতে পারবো না আমি কতটা খুশী"
পিয়ালীর মুখ উজ্জ্বল হয়ে উঠলো আদিত্য এবার পিয়ালীকে জড়িয়ে ধরে বলে, "থ্যাংক ইউ, থ্যাংক ইউ। আমি তো সবকিছু হারিয়ে বাঁচার আশাও ছেড়ে দিয়েছিলাম কিন্তু তুমি যে শুধু আমাকে বাঁচার পথ দেখিয়েছো তাই নয় আজ আমাকে নতুনভাবে বাঁচার কারণটাও দিলে"।
আদিত্য যে সত্যিই ভীষণ খুশী হয়েছে পিয়ালীর সেটা বুঝতে আর বাকি থাকে না, সে এখন তার স্বামীর মুখে এই আনন্দের ভাবটা উপভোগ করছে আর আদিত্য? তারও খুশির সীমা নেই একবার তো পিয়ালীর পেটে কান পেতে বোধহয় নবাগত সন্তানের আগমনের পদধ্বনি শোনার চেষ্টা করলো আর সেটা দেখে পিয়ালী খিলখিলিয়ে হেসে উঠলো।
কিছুক্ষণ পিয়ালীর পেটে কান পেতে থাকার পর উঠে হাতঘড়িতে সময় দেখে আদিত্য বলে, "আগে বলতে পারলে না? তাহলে ডাক্তারের কাছে গিয়ে টেস্টগুলো করিয়ে নিতাম সাথে এখন কি কি করা উচিত সেগুলোও জেনে নিতাম"
"আদিত্য রিল্যাক্স একটু শান্ত হও, সকাল হোক তারপর যাবো"
"আমি অনেককিছু হারিয়েছি পিয়ালী আর কিছু হারাতে চাইনা পারবোও না"
"আর কিছু হারাতে হবে না"।
পরদিন গ্ৰামের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডাক্তার দেখিয়ে তারপর টেস্ট করিয়ে রিপোর্ট পেতে পেতে সন্ধ্যা হয়ে গেল এবং অবশ্যই রিপোর্ট প্রেগন্যান্সি কনফার্ম করলো, খবরটা অত্যন্ত দ্রুতগতিতে পুরো গ্ৰামে ছড়িয়ে পরলো বলাবাহুল্য পুরো গ্ৰামের মহিলারা এসে পিয়ালী আর আদিত্যকে নানা জ্ঞান দিতে থাকেন কি করা উচিত কি উচিত নয়, কি খাওয়া উচিত কি খাওয়া ঠিক নয় ইত্যাদি নানা জনের নানা মত।
গ্ৰামের অনেকেই অনেক সবজি ফল দিয়ে গেছেন অখিলবাবুও অনেক ফল এনে দিয়েছেন আর কড়া হুকুম করেছেন যে এখন থেকে পিয়ালীর ঘরে কাজ করা বন্ধ, খাবার রিসর্ট থেকে চলে আসবে আর ঘরের অন্যান্য কাজের জন্য লোক পাঠিয়ে দেবেন পিয়ালী একটু আপত্তি করেছিল এতে কারণ রিসর্টের কাজে লোক কমে যাক এটা সে চায়না কিন্তু অখিলবাবুর ধমকের পরে আর কথা বলেনি।
রাতে বিছানায় পিয়ালী জিজ্ঞেস করলো "আদিত্য একটা কথা জিজ্ঞেস করবো?"
আদিত্য পিয়ালীর পাশে বসে অখিলবাবুর দেওয়া আপেল কাটছিল পিয়ালীর জন্য সেটা করতে করতেই বললো, "করো"
"তোমার কি চাই ছেলে না মেয়ে?"
"তোমার কি চাই?"
"আগে আমি জিজ্ঞেস করেছি"
"ঠিক আছে আমি বলবো তো, কিন্তু আগে তোমারটা জানি"
"ছেলে বা মেয়ে যেই হোক সে তো আমাদেরই যেই হোক আমি খুশী হবো, এবার তুমি বলো"
"আমার দুটোই চাই"
"কি?" পিয়ালীর মুখ লজ্জায় লাল হয়ে উঠলো, আদিত্য আবার বললো,
"হ্যাঁ, আমার দুজনকেই চাই"
পিয়ালী আরো রক্তিম হয়ে আদিত্যর কাঁধে মাথা রাখলো। আদিত্য এইসময় দরজার কাছে বাদশাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে ওকে কাছে ডাকে বাদশা বিছানায় উঠে পিয়ালীর কাছে বসে পিয়ালী একবার ওর মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে, আদিত্য বাদশাকে বলে,
"বাদশা তোর দায়িত্ব কিন্তু বেড়ে গেল এতদিন তুই আমার সুরক্ষা করেছিস এবার কিন্তু আমার সন্তানের সুরক্ষাও করতে হবে, তোকে ছোটো থেকেই নিজে হাতে বড়ো করেছি তুই আমার ছেলে আমার ভাই আমার বন্ধু এবার তোকেও কিন্তু তোর ভাই, তোর ভাইপো বা তোর ছোট্ট বন্ধুর দায়িত্ব নিতে হবে, পারবি তো?"
"ভৌ" সারমেয়টা আনন্দের সাথেই সম্মতি দিল, পিয়ালী আবার ওর মাথায় হাত বোলাতে থাকে।
"শোনো এবার আসল কাজের সময় এসে গেছে"
সামনে বসা লোকটিকে বললেন প্রীতমবাবু। আজ আবার মনোজিত বাবুর বাড়িতে মিটিং হচ্ছে গুণ্ডা প্রকৃতির লোকগুলো আবার উপস্থিত হয়েছে,তাদেরই একজনকে কথাটা বললেন প্রীতমবাবু।
"খুব ভালো, কবে করতে হবে কাল?" গুণ্ডা প্রকৃতির লোকটা জিজ্ঞেস করলো।
"হ্যাঁ, কদিন থেকেই বিকেলের দিকে যাদবপুরে একটা পার্কে যাচ্ছে লোকটা সাথে শুধু ড্রাইভার ওখানে কিছুক্ষণ বসে তারপর ফিরছে, ওইসময় পার্কে কিছু বাচ্চা খেলা করে কিন্তু পার্কের বাইরের রাস্তায় লোক বিশেষ থাকে না"
"কিন্তু ড্রাইভার টা?"
"চিন্তা নেই ও আমার লোক তোমাদের হেল্পই করবে"
"ঠিক আছে কাজ হয়ে যাবে"
"একটা কথা মনে রেখো গুলি মেরে নয় ছুরি দিয়ে ওর পুরো শরীর ক্ষতবিক্ষত করে দিতে হবে, বুঝতে পেরেছো?"
"পেরেছি"
লোকগুলো চলে গেলে মনোজিত বাবু কথা বললেন, "এক গুলিতে শেষ করার বদলে ছুরি মারতে বললেন কেন?"
"যাতে কষ্ট পেয়ে মরে আমাকে অপমান করার হিসাব তো চোকাতেই হবে"
"ওই পার্কে কি করতে যান উনি?"
"ওখানে ছোটোছেলেকে নিয়ে যেতেন, ইদানীং ওই ছেলের প্রতি দরদ উথলে উঠেছে"
"যে মরে ভূত হয়ে গেছে তার জন্য দরদ?" মনোজিত বাবু হো হো করে হেসে ওঠেন, কিন্তু প্রীতমবাবু গম্ভীরমুখে বলেন "এবার ও নিজেও ওই ছেলের কাছে যাবে"।
পার্কের সামনে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণের জন্য স্মৃতিতে ডুবে যায় আদিত্য এই সেই পার্ক যেখানে ছোটোবেলায় মাঝে মাঝে বাবার সাথে আসতো সে, এমনিতে দাদার জন্য বাবার সান্নিধ্য খুব একটা পায়নি সে কিন্তু তবুও তার মাঝে কিছু কিছু সময় বাবার সাথে এখানে আসতো এখানে বাবার কয়েকজন বন্ধু থাকতেন বাবা তাদের সঙ্গে গল্প করতেন আর সে তার কয়েকজন বন্ধুদের সাথে খেলতো তারপর অবশ্য ধীরে ধীরে তার আসা বন্ধ হয়ে যায়।
আজ এতবছর পরে সেই পার্কের সামনে দাঁড়িয়ে ছোটোবেলার কথা মনে পরে আদিত্যর। এখন আর বাড়ি থেকে বেশি বাইরে বেরোয় না রিসর্টে রোজকার কাজগুলো সেরেই বাড়িতে ফিরে যায়, বাড়িতে নতুন অতিথি আসছে তাই সে এখন স্ত্রীর সঙ্গেই বেশীরভাগ সময় কাটায় কিন্তু না চাইতেও আজ বেরোতে হয়েছে।
শৈলেশবাবু বেঁচে থাকতেই আনন্দ নিকেতনে বেশ কয়েকজন স্পন্সর ছিল তারা এখনো আছে, এদের মধ্যে বেশিরভাগেরই নিজস্ব ছোটোখাটো কোম্পানি আছে কারো ফ্যাক্টরি আছে তারা তাদের কোম্পানি বা প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপন দেন রিসর্টে বা কেউ ছোটোখাটো স্টল লাগান, কলকাতা ছাড়াও আরো অনেক জায়গা জুড়েই তারা থাকেন কলকাতাতেও অনেকেই থাকেন এরকমই একজন থাকেন যাদবপুরে।
তার সঙ্গেই একটা মিটিং ছিল আদিত্যর, আদিত্য যদিও আসতে চাইছিল না সে বারবার করে কিন্তু ভদ্রলোক নিজের অসুস্থতার খবর দিয়ে আদিত্যকে অনুরোধ করেন আসতে।
এখানে আসার সময়েই পার্কটা দেখেছিল সার্ভিসিংএর জন্য বাইকটা আনেনি, ক্যাব বুক করে এসেছে কিন্তু তখন সময় না থাকায় ঢোকেনি, এখন ফেরার সময় ভাবলো কিছুক্ষণ পার্কে বসে তারপর ফিরবে, সেইমতো পার্কের সামনে দাঁড়িয়ে ভিতরে ঢুকলো।
পার্কটা একটু সংস্কার করা হয়েছে চারিদিকে বসার জন্য জায়গা করা হয়েছে, ভিতরে মাঝখানে বাচ্চারা খেলা করছে দেখতে দেখতে আদিত্যর চোখের সামনে তার নিজের ছোটোবেলার দিনগুলো ভেসে উঠতে থাকে।
আদিত্য চারিদিকে তাকিয়ে দেখতে থাকে হটাৎই একটা বসার জায়গায় তার চোখ আটকে যায় সেখানে একাই একজন লোক বসে আছেন, সঙ্গে সঙ্গে তার ভিতরটা মোচড় দিয়ে ওঠে আদিত্য একবার ভাবে ফিরে যাবে কিন্তু তার পা দুটো যেন তার ইচ্ছার বিরুদ্ধেই সেদিকে এগোতে থাকে।
আদিত্য আসতে আসতে সেদিকে গিয়ে লোকটির পাশে বসলো অতিকষ্টে চোখের জল সংবরণ করে বলে, "আপনি এখানে একা বসে আছেন? শরীর ভালো?"
এতক্ষণে বোধহয় আদিত্যর উপস্থিতি অনুধাবন করে তার দিকে তাকালেন মিস্টার অভিরূপ ব্যানার্জী।
I'm the King of Dark
&
I rule over all Devils

