06-06-2023, 10:47 PM
উননবতি অধ্যায়
বাথরুমে ঢুকে সারা শরীর ভিজিয়ে গায়ে সাবান ঘষতে ঘষতে মনুর কথা ভাবেন।যোনীপ্রদেশে চোখ পড়তে হাসলেন কি করেছে মনুটা।তাকে ছেড়ে যেতে খারাপ লাগছে মনুর মুখে শুনে ভাল লেগেছিল।অন্যদিন হলে ছোবড়া দিয়ে মনু গা ঘষে দিত।ঈশানীটা আজকেই অসুস্থ হয়ে পড়ল।
ঈশানীর আবার কি হল।সুখ গিয়ে বসার ঘরে দরজায় দাঁড়িয়ে দেখল শুয়ে আছে।কি সুন্দর কাত্তিকের মত দেখতে লাগছে সাহেবকে ঈশানী চোখ পিট পিট করে দেখে অভিমানে মুখ ঘুরিয়ে নিল।সুখ ভিতরে ঢুকে জিজ্ঞেস করল,এখন কেমন বোধ হচ্ছে আপনার?
ঈশানী কোনো সাড়া দেয়না।সুখ হাতের তালুর পিছন কপালে রেখে বলল,ঠাণ্ডা জ্বর তো নেই।
ঈশানী এক দুঃসাহসী কাজ করল হাতটা টেনে নিয়ে বুকে চেপে ধরে বলল,বুকির মধ্যে কেমন করতিছে।
এক ঝটকায় হাত ছাড়িয়ে নিল সুখ।এতো অন্য রোগ দ্রুত ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।
ঈশানী অবাক হয় এ কেমন মানুষ।জীবনে পুরুষ মানুষ কম দেখেনি।আগে যে বাড়ীতে রান্না করত সেই পাড়ুই মশাই গ্যাসে সিগারেট ধরাতি এসে পিছনে দাঁড়ায় চাপ দিত।একবার শক্ত স্পর্শ অনুভুত হলে সে চিৎকার করে এক কাণ্ড বাধিয়েছিল।পাড়ার লোক এসে চড় থাপ্পড়ও দিয়েছিল।পাড়ুই বাড়ি আর কাজ করেনি।এতো সাজানো নৈবেদ্যও রুচি নাই।ম্যাডামের সঙ্গে রাতে এক বিছানায় শোয়।সব কেমন অদ্ভুত বোধ হয়।
বাথরুম হতে বেরিয়ে দীপশিখা দ্রুত রান্না ঘরে গিয়ে গ্যাস কমিয়ে ভাতের হাড়ি নামিয়ে উপুড় দিয়ে দিলেন।ফ্যান উপচে পড়েছে বার্ণারের উপর।ঘরে এসে কাপড় পরতে থাকেন।মনু চুপচাপ বসে আছে।ব্রেসিয়ার গায়ে দিয়ে মনূকে হুকটা লাগিয়ে দিতে ডাকলেন।
সুখ উঠে গিয়ে হুকগুলো লাগাতে থাকে।কাধে উষ্ণ নিঃশ্বাসের স্পর্শ পেয়ে বললেন,কি ভাবছো?
ভাবছি তোমাকে একা রেখে কিভাবে যাবো।
একা কোথায় ঈশানী আছে।
ওকে তুমি কতটুকু চেনো সবে তো এল।
শুক্লা বলছিল বিশ্বাসী।আমিও পরীক্ষা করে দেখেছি।বাথরুমে আঙটি খুলে রেখেছিলাম ও আঙটিটা দিয়ে বলল ম্যাডাম আপনি বাথরুমে ফেলে এসেছিলেন।
বাইরে কলিং বেল বাজতে বললেন,দেখো তো পাল মশাই এলো মনে হচ্ছে।
সুখ দরজা খুলতে যায়।ধুতি পরার অভ্যেস নেই বেশ অসুবিধে হচ্ছে।দীপশিখাও বেরিয়ে এসেছেন।দরজা খুলতে পাঞ্চালী ঢুকে অবাক হয়ে সুখকে দেখতে থাকে।তারপর বলল,বাঃ বেশ লাগছে তো?
বৌদি কোথায়?দীপশিখা জিজ্ঞেস করেন।
আসছে তোমাদের লিফট নেই সিড়ি ভেঙ্গে আসা।
দীপশিখা ব্যস্ত হয়ে বেরিয়ে সিড়ির দিকে যেতে গিয়ে দেখলেন,পারুল ধরে ধরে বৌদিকে নিয়ে আসছে।সঙ্গে মাল পত্তর নিয়ে মধু।দাদা মারা যাবার পর বৌদি অনেক কাহিল হয়ে গেছে।গাড়ি থেকে নামার পর থেকেই চিন্তাটা পিয়ালী মিত্রের মাথায় চেপে বসে।যে মেয়ের বিয়েতে মন ছিল না কাকে দেখে রাজি হয়ে গেল? দীপশিখা বৌদিকে নিয়ে ঢুকে বললেন,বৌদি বোসো।
পিয়ালী মিত্র সোফায় বসলেন,পাঞ্চালীও মায়ের পাশে বসলো।পারুল সোফার পিছনে দাড়িয়ে,পিয়ালী মিত্রের চোখ এদিক ওদিকে করে।দীপশিখা ডাকলেন মনূ এদিকে এসো।
সুখ ঘর থেকে বেরোতে পারুল উচ্ছ্বসিত হয়ে বলল,ছোটদি আমার পছন্দ হয়েছে--।
তোমার কাছে কেউ শুনতে চেয়েছে,বড় বেশি কথা বলো ।মৃদু ধমক দিলেন পিয়ালী মিত্র।
সুখ কাছে আসতে দীপশিখা বললেন,ইনি পলির মা,প্রণাম করো।
সুখ নীচু হয়ে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করল।
থাক থাক হয়েছে।তুমি কি করো?
আণ্টি আমি এখনো কিছু করিনা--।
আণ্টি কি মামণি বলো।পাঞ্চালী ধমক দিল।
হ্যা মামণি আমি কাল যাবো একটা কলেজে জয়েন করার কথা।
পিয়ালী মিত্র মনে মনে হিসেব করেন,পলির সঙ্গে যে ছেলেটা ঘুরতো তার থেকে এই ছেলেটি দেখতে অনেক ভালই তবে সেই ছেলেটীও ছিল ডাক্তার।এই ছেলেটিকে দেখে কেমন মায়া হয়।মাস্টার মশায়ের ছেলে মনে হয়না খারাপ হবে।
দীপশিখা বললেন,পলি এদিকে আয়তো।
পাঞ্চালী উঠে দাঁড়িয়ে বলল,সঙ্গের মত দাঁড়িয়ে কেন?বোসো মামণি যা জিজ্ঞেস করছে বলো।
দীপশিখার সঙ্গে যেতে যেতে পাঞ্চালী বলল,কি ব্যাপার?
ঈশানীর ঘরে নিয়ে গিয়ে বললেন,সকালে ভালই ছিল হঠাৎ কি হল দেখতো।
আমি কি রোগী দেখতে এসেছি নাকি?একটা টুল নিয়ে বসে ঈশানীর একটা হাত তুলে নাড়ি দেখতে দেখতে কপালে চিন্তার ভাজ।তারপর বলল,কেমন লাগছে তোমার?
বুকের মধ্যে কেমন ধড়ফড় করছে।
কিচ্ছু না। মনের ব্যাপার।চিন্তা কোরোনা ঠিক হয়ে যাবে।
কলিং বেল বাজতে মধু দরজা খুলে দিতে দীপশিখা দেখলেন,মথুরেশ পাল।হেসে বললেন,আসুন আপনি ঠিক সময়ে এসেছেন।বসুন।
আমি কাগজ পত্র সব রেডি করে এনেছি কেবল সই করলেই হয়ে যাবে।মথুরেশ পাল বসে বললেন,আচ্ছা প্রফেশর মিত্র কিছু মনে করবেন না।এই দেবাঞ্জন মিত্র কি ডাক্তার দেবাঞ্জন?
হ্যা আপনি চেনেন নাকি?
আলাপ নেই তবে নাম শুনেছি।ওনার চলে যাওয়ায় চিকিৎসা জগতে বড় ক্ষতি হয়ে গেল।
ওর মেয়েও ডাক্তার।
পিয়ালী মিত্র আচলে চোখ মুছলেন।
সুখর দিকে তাকিয়ে বললেন,আপনি তো পাত্র?বলুন আমি সজ্ঞানে নিজের ইচ্ছায় পাঞ্চালী মিত্রকে পত্নী হিসেবে গ্রহণ করছি।
সুখ বিড় বিড় করে বলার পর বললেন,এখানে সই করুন।
এইভাবে পাঞ্চালীকে দিয়ে বলিয়ে সই করিয়ে নিয়ে বললেন,কাগজ পত্র সব আপনাকে পাঠিয়ে দেব।
একী বসুন খাওয়া দাওয়া করে যাবেন।দীপশিখা বললেন।
না না প্রফেসর মিত্র আমার একটু তাড়া আছে।সোমবারেই কাগজ পত্র পাঠিয়ে দেবো।
অনেক বেলা হোল বৌদি এবার তোমরা খেতে বসে যাও।পারুল তুমি আমাকে সাহায্য করো।
এক ফাকে পিয়ালী মিত্র মেয়েকে বললেন,তুই ওর সঙ্গে ওভাবে কথা বলছিস কেন?
বা বা আলাপ হতে না হতেই মেয়েকে ছেড়ে জামাইয়ের পক্ষে চলে গেলে।
বেশী পাকামো করিস নাতো।
সবাই খেতে বসে গেছে দীপশিখাকেও জোর করে বসিয়ে দিয়েছে পারুল।সুখকে পাশে বসিয়ে পিয়ালী মিত্র খেতে খেতে মৃদু স্বরে কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছেন।পাঞ্চালী একটু বিরক্ত তাদের বিয়ে হয়ে গেছে কোথায় পাশাপাশি বসবে তা না ইডিয়ট্টা মামণির পাশে বসেছে।কি এত কথা?মামণির ওকে ভালো লেগেছে বুঝতে পারে।
মাংস কে রান্না করেছে দীপা তুমি?পিয়ালী মিত্র জিজ্ঞেস করলেন।
হ্যা কেন ভালো হয়নি?
পলির ঠাম্মাও বেশ রান্না করতেন।
সুখ মনে মনে ভাবে তার মায়ের রান্নারও সকলে প্রশংসা করতো।মা বাবা কেউ আজ নেই।খাওয়া হয়ে গেছে সুখ বলল,আমি উঠছি?
হ্যা বাবা তুমি যাও।পিয়ালী মিত্র বললেন।
মনুটা কেমন বদলে যাচ্ছে দীপশিখা লক্ষ্য করেন।বিয়ে হলেও পলির সঙ্গে তেমন ঘনিষ্ঠতা চোখে পড়ছে না।দীপশিখা বললেন,পারুল তোমরা এবার খেয়ে নেও।
জীবনদাকে উপরে বলবো?মধু জিজ্ঞেস করে।
হ্যা ডেকে নিয়ে এসো,উনিও তো খাবেন।পাঞ্চালী বলল।
জিবনকে ডেকে নিয়ে এসে পারুলরা খেতে বসে গেল।ঈশানীও ওদের সঙ্গে বসে গেছে।সুখকে নিয়ে মামণি বড় ঘরে বসে গল্প করছে মোমোও ওদের সঙ্গে আছে।লাইব্রেরীতে বসে পাঞ্চালী ফুসতে থাকে।রেজিস্ট্রি হবার পর একান্তে একটু কথা বলার সুযোগ হল না।ওদেরই বা কি আক্কেল সারাক্ষন কি এমন কথা যে শেষ হতেই চায় না।
দিনের আলো কমে এসেছে।ওদের খাওয়া দাওয়া শেষ।দীপশিখা বেরিয়ে এসে বললেন,ঈশানী এখন কেমন বোধ হচ্ছে?
আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে।ঈশানী বাসন ধুতে ধুতে বলল।
পাঞ্চালী ঘরে গিয়ে বলল,মামণি রাতে এখানে থাকবে?
না না আমদের রওনা হতে হবে।দীপা বেলা থাকতে থাকতে আমাদের বেরোতে হবে।
বাথরুমে ঢুকে সারা শরীর ভিজিয়ে গায়ে সাবান ঘষতে ঘষতে মনুর কথা ভাবেন।যোনীপ্রদেশে চোখ পড়তে হাসলেন কি করেছে মনুটা।তাকে ছেড়ে যেতে খারাপ লাগছে মনুর মুখে শুনে ভাল লেগেছিল।অন্যদিন হলে ছোবড়া দিয়ে মনু গা ঘষে দিত।ঈশানীটা আজকেই অসুস্থ হয়ে পড়ল।
ঈশানীর আবার কি হল।সুখ গিয়ে বসার ঘরে দরজায় দাঁড়িয়ে দেখল শুয়ে আছে।কি সুন্দর কাত্তিকের মত দেখতে লাগছে সাহেবকে ঈশানী চোখ পিট পিট করে দেখে অভিমানে মুখ ঘুরিয়ে নিল।সুখ ভিতরে ঢুকে জিজ্ঞেস করল,এখন কেমন বোধ হচ্ছে আপনার?
ঈশানী কোনো সাড়া দেয়না।সুখ হাতের তালুর পিছন কপালে রেখে বলল,ঠাণ্ডা জ্বর তো নেই।
ঈশানী এক দুঃসাহসী কাজ করল হাতটা টেনে নিয়ে বুকে চেপে ধরে বলল,বুকির মধ্যে কেমন করতিছে।
এক ঝটকায় হাত ছাড়িয়ে নিল সুখ।এতো অন্য রোগ দ্রুত ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।
ঈশানী অবাক হয় এ কেমন মানুষ।জীবনে পুরুষ মানুষ কম দেখেনি।আগে যে বাড়ীতে রান্না করত সেই পাড়ুই মশাই গ্যাসে সিগারেট ধরাতি এসে পিছনে দাঁড়ায় চাপ দিত।একবার শক্ত স্পর্শ অনুভুত হলে সে চিৎকার করে এক কাণ্ড বাধিয়েছিল।পাড়ার লোক এসে চড় থাপ্পড়ও দিয়েছিল।পাড়ুই বাড়ি আর কাজ করেনি।এতো সাজানো নৈবেদ্যও রুচি নাই।ম্যাডামের সঙ্গে রাতে এক বিছানায় শোয়।সব কেমন অদ্ভুত বোধ হয়।
বাথরুম হতে বেরিয়ে দীপশিখা দ্রুত রান্না ঘরে গিয়ে গ্যাস কমিয়ে ভাতের হাড়ি নামিয়ে উপুড় দিয়ে দিলেন।ফ্যান উপচে পড়েছে বার্ণারের উপর।ঘরে এসে কাপড় পরতে থাকেন।মনু চুপচাপ বসে আছে।ব্রেসিয়ার গায়ে দিয়ে মনূকে হুকটা লাগিয়ে দিতে ডাকলেন।
সুখ উঠে গিয়ে হুকগুলো লাগাতে থাকে।কাধে উষ্ণ নিঃশ্বাসের স্পর্শ পেয়ে বললেন,কি ভাবছো?
ভাবছি তোমাকে একা রেখে কিভাবে যাবো।
একা কোথায় ঈশানী আছে।
ওকে তুমি কতটুকু চেনো সবে তো এল।
শুক্লা বলছিল বিশ্বাসী।আমিও পরীক্ষা করে দেখেছি।বাথরুমে আঙটি খুলে রেখেছিলাম ও আঙটিটা দিয়ে বলল ম্যাডাম আপনি বাথরুমে ফেলে এসেছিলেন।
বাইরে কলিং বেল বাজতে বললেন,দেখো তো পাল মশাই এলো মনে হচ্ছে।
সুখ দরজা খুলতে যায়।ধুতি পরার অভ্যেস নেই বেশ অসুবিধে হচ্ছে।দীপশিখাও বেরিয়ে এসেছেন।দরজা খুলতে পাঞ্চালী ঢুকে অবাক হয়ে সুখকে দেখতে থাকে।তারপর বলল,বাঃ বেশ লাগছে তো?
বৌদি কোথায়?দীপশিখা জিজ্ঞেস করেন।
আসছে তোমাদের লিফট নেই সিড়ি ভেঙ্গে আসা।
দীপশিখা ব্যস্ত হয়ে বেরিয়ে সিড়ির দিকে যেতে গিয়ে দেখলেন,পারুল ধরে ধরে বৌদিকে নিয়ে আসছে।সঙ্গে মাল পত্তর নিয়ে মধু।দাদা মারা যাবার পর বৌদি অনেক কাহিল হয়ে গেছে।গাড়ি থেকে নামার পর থেকেই চিন্তাটা পিয়ালী মিত্রের মাথায় চেপে বসে।যে মেয়ের বিয়েতে মন ছিল না কাকে দেখে রাজি হয়ে গেল? দীপশিখা বৌদিকে নিয়ে ঢুকে বললেন,বৌদি বোসো।
পিয়ালী মিত্র সোফায় বসলেন,পাঞ্চালীও মায়ের পাশে বসলো।পারুল সোফার পিছনে দাড়িয়ে,পিয়ালী মিত্রের চোখ এদিক ওদিকে করে।দীপশিখা ডাকলেন মনূ এদিকে এসো।
সুখ ঘর থেকে বেরোতে পারুল উচ্ছ্বসিত হয়ে বলল,ছোটদি আমার পছন্দ হয়েছে--।
তোমার কাছে কেউ শুনতে চেয়েছে,বড় বেশি কথা বলো ।মৃদু ধমক দিলেন পিয়ালী মিত্র।
সুখ কাছে আসতে দীপশিখা বললেন,ইনি পলির মা,প্রণাম করো।
সুখ নীচু হয়ে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করল।
থাক থাক হয়েছে।তুমি কি করো?
আণ্টি আমি এখনো কিছু করিনা--।
আণ্টি কি মামণি বলো।পাঞ্চালী ধমক দিল।
হ্যা মামণি আমি কাল যাবো একটা কলেজে জয়েন করার কথা।
পিয়ালী মিত্র মনে মনে হিসেব করেন,পলির সঙ্গে যে ছেলেটা ঘুরতো তার থেকে এই ছেলেটি দেখতে অনেক ভালই তবে সেই ছেলেটীও ছিল ডাক্তার।এই ছেলেটিকে দেখে কেমন মায়া হয়।মাস্টার মশায়ের ছেলে মনে হয়না খারাপ হবে।
দীপশিখা বললেন,পলি এদিকে আয়তো।
পাঞ্চালী উঠে দাঁড়িয়ে বলল,সঙ্গের মত দাঁড়িয়ে কেন?বোসো মামণি যা জিজ্ঞেস করছে বলো।
দীপশিখার সঙ্গে যেতে যেতে পাঞ্চালী বলল,কি ব্যাপার?
ঈশানীর ঘরে নিয়ে গিয়ে বললেন,সকালে ভালই ছিল হঠাৎ কি হল দেখতো।
আমি কি রোগী দেখতে এসেছি নাকি?একটা টুল নিয়ে বসে ঈশানীর একটা হাত তুলে নাড়ি দেখতে দেখতে কপালে চিন্তার ভাজ।তারপর বলল,কেমন লাগছে তোমার?
বুকের মধ্যে কেমন ধড়ফড় করছে।
কিচ্ছু না। মনের ব্যাপার।চিন্তা কোরোনা ঠিক হয়ে যাবে।
কলিং বেল বাজতে মধু দরজা খুলে দিতে দীপশিখা দেখলেন,মথুরেশ পাল।হেসে বললেন,আসুন আপনি ঠিক সময়ে এসেছেন।বসুন।
আমি কাগজ পত্র সব রেডি করে এনেছি কেবল সই করলেই হয়ে যাবে।মথুরেশ পাল বসে বললেন,আচ্ছা প্রফেশর মিত্র কিছু মনে করবেন না।এই দেবাঞ্জন মিত্র কি ডাক্তার দেবাঞ্জন?
হ্যা আপনি চেনেন নাকি?
আলাপ নেই তবে নাম শুনেছি।ওনার চলে যাওয়ায় চিকিৎসা জগতে বড় ক্ষতি হয়ে গেল।
ওর মেয়েও ডাক্তার।
পিয়ালী মিত্র আচলে চোখ মুছলেন।
সুখর দিকে তাকিয়ে বললেন,আপনি তো পাত্র?বলুন আমি সজ্ঞানে নিজের ইচ্ছায় পাঞ্চালী মিত্রকে পত্নী হিসেবে গ্রহণ করছি।
সুখ বিড় বিড় করে বলার পর বললেন,এখানে সই করুন।
এইভাবে পাঞ্চালীকে দিয়ে বলিয়ে সই করিয়ে নিয়ে বললেন,কাগজ পত্র সব আপনাকে পাঠিয়ে দেব।
একী বসুন খাওয়া দাওয়া করে যাবেন।দীপশিখা বললেন।
না না প্রফেসর মিত্র আমার একটু তাড়া আছে।সোমবারেই কাগজ পত্র পাঠিয়ে দেবো।
অনেক বেলা হোল বৌদি এবার তোমরা খেতে বসে যাও।পারুল তুমি আমাকে সাহায্য করো।
এক ফাকে পিয়ালী মিত্র মেয়েকে বললেন,তুই ওর সঙ্গে ওভাবে কথা বলছিস কেন?
বা বা আলাপ হতে না হতেই মেয়েকে ছেড়ে জামাইয়ের পক্ষে চলে গেলে।
বেশী পাকামো করিস নাতো।
সবাই খেতে বসে গেছে দীপশিখাকেও জোর করে বসিয়ে দিয়েছে পারুল।সুখকে পাশে বসিয়ে পিয়ালী মিত্র খেতে খেতে মৃদু স্বরে কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছেন।পাঞ্চালী একটু বিরক্ত তাদের বিয়ে হয়ে গেছে কোথায় পাশাপাশি বসবে তা না ইডিয়ট্টা মামণির পাশে বসেছে।কি এত কথা?মামণির ওকে ভালো লেগেছে বুঝতে পারে।
মাংস কে রান্না করেছে দীপা তুমি?পিয়ালী মিত্র জিজ্ঞেস করলেন।
হ্যা কেন ভালো হয়নি?
পলির ঠাম্মাও বেশ রান্না করতেন।
সুখ মনে মনে ভাবে তার মায়ের রান্নারও সকলে প্রশংসা করতো।মা বাবা কেউ আজ নেই।খাওয়া হয়ে গেছে সুখ বলল,আমি উঠছি?
হ্যা বাবা তুমি যাও।পিয়ালী মিত্র বললেন।
মনুটা কেমন বদলে যাচ্ছে দীপশিখা লক্ষ্য করেন।বিয়ে হলেও পলির সঙ্গে তেমন ঘনিষ্ঠতা চোখে পড়ছে না।দীপশিখা বললেন,পারুল তোমরা এবার খেয়ে নেও।
জীবনদাকে উপরে বলবো?মধু জিজ্ঞেস করে।
হ্যা ডেকে নিয়ে এসো,উনিও তো খাবেন।পাঞ্চালী বলল।
জিবনকে ডেকে নিয়ে এসে পারুলরা খেতে বসে গেল।ঈশানীও ওদের সঙ্গে বসে গেছে।সুখকে নিয়ে মামণি বড় ঘরে বসে গল্প করছে মোমোও ওদের সঙ্গে আছে।লাইব্রেরীতে বসে পাঞ্চালী ফুসতে থাকে।রেজিস্ট্রি হবার পর একান্তে একটু কথা বলার সুযোগ হল না।ওদেরই বা কি আক্কেল সারাক্ষন কি এমন কথা যে শেষ হতেই চায় না।
দিনের আলো কমে এসেছে।ওদের খাওয়া দাওয়া শেষ।দীপশিখা বেরিয়ে এসে বললেন,ঈশানী এখন কেমন বোধ হচ্ছে?
আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে।ঈশানী বাসন ধুতে ধুতে বলল।
পাঞ্চালী ঘরে গিয়ে বলল,মামণি রাতে এখানে থাকবে?
না না আমদের রওনা হতে হবে।দীপা বেলা থাকতে থাকতে আমাদের বেরোতে হবে।