27-05-2023, 08:18 PM
|| ৬ ||
অঙ্ক পরীক্ষার আগে একদিন ছুটি পেয়েছে বাপ্পা। অঙ্কে কোনোদিনই ভালো নয় সে। বরং অঙ্ক কষতে গেলেই গায়ে জ্বর আসে তার। সকালে তার মা নন্দনা দেবী তাকে কয়টা পাটিগণিতের অঙ্ক করতে দিয়ে ঘরের কাজে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছিলো। কিন্তু সংসারের কাজের ফাঁকে বারবার বিঘ্ন ঘটছিলো। তার মনে পড়ে যাচ্ছিলো গতকাল দুপুরের ঘটনা, তার সঙ্গে আগেরদিন রাতের সেই উদ্ভট, ভয়ঙ্কর এবং অশ্লীল স্বপ্নটার কথা। কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার, বারংবার ফিরে আসা এই নিষিদ্ধ ভাবনাগুলোয় তার রাগ বা ক্ষোভ হওয়ার থেকে, শরীরের মধ্যে একটা অদ্ভুত উত্তেজনা হচ্ছিলো। এই উত্তেজনার উৎস, কারণ এবং তাৎপর্য কোনোটাই জানা ছিলো না তার। বারবার নিজের পবিত্র মন দিয়ে শরীরের এই অচেনা শিহরণকে প্রশমিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছিলো চিরন্তন বাবুর স্ত্রী।
তবে এই সবকিছুর সঙ্গে মনে একটা আশঙ্কাও জাগছিলো তার। আবার যদি কোনো অজুহাতে তাদের প্রতিবেশী পাঞ্জাবী লোকটা ঢুকে আসে তাদের বাড়িতে বা তার ওই দুই গোয়ানিজ বন্ধু! মালতি কাজ করতে আসার পর, তার মুখ থেকে সে শুনলো .. 'ফ্যাক্টরিতে নাকি ভীষণ বিক্ষোভ হচ্ছে শ্রমিকদের। বিক্ষোভের মাত্রা এতটাই বেড়েছে যে মালিকপক্ষকে ছুটে আসতে হয়েছে এখানে। তার সঙ্গে এখানকার স্টাফেরাও প্রচন্ড ব্যস্ত। সম্ভবত দু-একদিন এরকম টালমাটাল অবস্থা থাকবে।' কথাগুলো শোনার পর ফ্যাক্টরির অবস্থা সম্পর্কে চিন্তিত হয়ে পড়লেও, 'অন্তত আজ আর কেউ আসবেনা তাদের বাড়িতে' .. এটা ভেবে কিছুটা নিশ্চিন্ত বোধ করছিলো নন্দনা দেবী।
মালতি কাজ করে বেরিয়ে যাওয়ার পরেই, দুটো অঙ্ক তখনো করতে না পারার জন্য বাপ্পাকে বকাবকি করে সদর দরজাটা আটকে দিয়ে স্নানে ঢুকে গেলো নন্দনা দেবী। মায়ের কাছে বকুনি খেয়ে মন খারাপ করে বসেছিলো বাপ্পা। তবে এছাড়াও তার মন ভারাক্রান্ত হওয়ার আরেকটা কারণ ছিলো। গতকাল রাতে যখন তার বাবা ফোন করেছিলো, প্রতিদিনের মতো মধুর কথোপকথন হয়নি তার মা-বাবার মধ্যে। বরং তার মা দু-একটা কথা বলেই ফোনটা ধরিয়ে দিয়েছিলো তার হাতে। "নাও .. তোমার ছেলের সঙ্গে কথা বলো। এখন আমার কথা বলতে ভালো লাগছে না .." শেষের কথাগুলো শুনে এইটুকু বয়সেই বাপ্পা বুঝেছিলো, যেকোনো কারণেই হোক তার মা ভীষণরকম অভিমান করেছে বা রেগে গেছে তার বাবার উপর। ঠিক সেই মুহূর্ত কলিংবেলটা বেজে উঠলো। সাহেবী আমলের কোয়ার্টার, তাই দরজার উচ্চতা অনেকটাই। মাটিতে দাঁড়িয়ে দরজার ছিটকিনিতে হাত পায় না বাপ্পা। একটা ছোট টুল নিয়ে এসে তার উপর উঠে দরজা খুললো সে। দরজা খুলেই সে দেখলো, তার সামনে দাঁড়িয়ে মিটিমিটি হাসছে বিপুল জেঠু।
উনি কোন সম্পর্কে বাপ্পার জেঠু হতেন তা তার জানা ছিলো না। বিপুল বাবুর বাড়ি হুগলি জেলায় ছিলো না। বর্ধমানের নিয়ামতপুরে উনার জন্মভিটে হলেও, ওনার বাড়িঘর সেখানে কিছু ছিলো না। লোকমুখে কানাঘুষো শোনা যায় কৈশোর বয়স থেকেই উশৃঙ্খল জীবন যাপনের জন্য এবং বারংবার সতর্ক করার পরেও সেই কথায় কর্ণপাত না করার জন্য বিপুল বাবুর বাবা ওনাকে ত্যাজ্যপুত্র করেছিলেন। পরবর্তীতে উনি তন্ত্রসাধনায় নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। এইসব মিলিয়ে বাপ্পার বাবা চিরন্তন বরাবরই বিপুল বাবুকে অপছন্দ করতেন, উনি বাড়িতে এলে একদমই খুশি হতেন না।
বিপুল বাবু সংসারে ভেসে বেড়াতেন। এই অঞ্চলে সেইসময় 'উইয়ের ঢিপির' মতো দেদার সম্ভ্রান্ত পরিবার ছিলো। 'ব্যাঙের ছাতা' শব্দটা ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যবহার করা হলো না, তার কারণ তারা কেউই ভুঁইফোড় নয়, সবাই বনেদি পরিবার .. অবস্থার ফেরে হয়তো জৌলুস কিছুটা কমেছে। যাইহোক, সেই সমস্ত বনেদি পরিবারগুলোর সঙ্গে বিপুল বাবুর একটা না একটা সম্পর্ক ঠিক বেরিয়েই যেত। সে সম্পর্ক যে প্রকৃত অর্থে কি .. তা কেউ জানতো না। অথচ এর-ওর বাড়িতে অতিথি হয়েই তিনি জীবনযাত্রা নির্বাহ করতেন, আর সব জায়গাতেই তিনি আদর-যত্ন পেতেন। একে ',, তার ওপর মনে যাই থাক না কেনো, কথাবার্তায় ও ব্যবহারে ছিলেন অত্যন্ত ভদ্রলোক। তাই তিনি দাদা হোন বা মামা, শালা হোন বা ভগ্নিপতি, কাকা হোন বা জেঠু .. সকলেই তাকে অতিথি করতে প্রস্তুত ছিলেন। অর্থ সাহায্য তিনি কারো কাছে চাইতেন না, উল্টে যে বাড়িতে যেতেন সঙ্গে করে প্রচুর রকমের মিষ্টান্ন এবং সেই বাড়ির সদস্যদের জন্য দামি দামি উপহার কিনে নিয়ে যেতেন।
তারাপীঠের কাছে উনার নাকি বিশেষ পরিচিতা এক মহিলা ছিলেন। রমলা নামের বিধবা ওই মহিলাটির প্রচুর ধনসম্পত্তি ছিলো। শোনা যায় নিজের তন্ত্র সাধনার বিদ্যার জোরে একবার নাকি উনি রমলা নামের ওই মহিলাটিকে সাক্ষাৎ মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন। সেখান থেকেই বিপুল বাবুর উপর ওনার অগাধ বিশ্বাস জন্মায় এবং পরবর্তীতে পরস্পরের প্রতি ঘনিষ্ঠতা হয়। কিন্তু সংসার জীবনে উদাসীন বিপুল বাবুকে তিনি ঘরে বেঁধে রাখতে পারেননি ঠিকই, তবে পকেটে টান পড়লেই উনি তারাপীঠে যেতেন। তাই চাকরি বা ব্যবসা না করলেও বিপুল বাবুর অর্থের কোনো অভাব ছিলো না কোনোকালেই। একটা কথা অবশ্য প্রায়শই তান্ত্রিক বিপুল বলতো, "যার সুডৌল স্তনের কোমলতায় মাথা রেখে এতটা পথ পাড়ি দিলাম, তার জন্য এটুকু তো করতেই হতো। লোকে যতোই আমায় খারাপ ভাবুক।" এই কথাগুলো আসলে কার উদ্দেশ্যে বলা .. রমলা নামের সেই বিধবা মহিলাটি, নাকি অন্য কেউ .. সেটা অবশ্য জানা যায়নি।
নামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বছর পঁয়তাল্লিশের বিপুল বাবুর চেহারাটাও ছিলো বিপুলাকার। প্রায় পাঁচ ফুট আট ইঞ্চি লম্বা বিপুল বাবুকে মানুষ না বলে বনমানুষ বলাটাই বোধহয় যুক্তিযুক্ত। কাঁধের নিচ পর্যন্ত লম্বা এক মাথা ঝাঁকড়া চুল এবং একমুখ কাঁচা-পাকা দাড়ির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সারা দেহে চুলের আধিক্য এতটাই বেশি যে দেখে মনে হতে পারে এই ব্যক্তির শরীরে যেনো চুলের চাষ হয়। গায়ের রঙ মিশকালো, গাট্টাগোট্টা চেহারার অধিকারী, অত্যধিক গাঁজা, চরস বা ওই জাতীয় নিষিদ্ধ বস্তু সেবনের ফলে রক্তবর্ণ চোখদুটো এতটাই ঢুলুঢুলু যে দেখে মনে হয় এইমাত্র ঘুম থেকে উঠে এসেছে। এইরূপ কদাকার, কুৎসিত-দর্শন ব্যক্তি যে কোনো মানুষের আতঙ্কের কারণ হতে পারে, একথা বলাই বাহুল্য। তাই বাপ্পাও বিপুল জেঠুকে দেখে অত্যন্ত ভয় পেয়ে গিয়ে এক লাফে টুল থেকে নেমে কয়েক-পা পিছিয়ে এলো।
★★★★
"ভয় কি? কাছে আয় .. তুই তো চিনিস আমাকে। আমি যে তোর বিপুল জেঠু!" এই বলে ভেতরে ঢুকে সদর দরজাটা আটকে দিলো আলখাল্লার মতো পোশাক পরা বিপুল বাবু। তারপর কাঁধে ঝোলানো বিশালাকার কাপড়ের ব্যাগ থেকে রাংতায় মোড়ানো একটা প্যাকেট বের করে বাপ্পার দিকে বাড়িয়ে দিলো। উপহার পেতে সব বাচ্চাদেরই ভালো লাগে, বাপ্পাও তার ব্যতিক্রম নয়। তাই দুরুদুরু বুকে এক পা এক পা করে এগিয়ে এসে প্যাকেটটা হাতে নিলো বাপ্পা। রাংতার মোড়কটা খুলতেই চোখদুটো উজ্জ্বল হয়ে উঠলো তার। চাইনিজ চেকার বোর্ড গেম .. অনেকদিন ধরেই সে এটা তার বাবাকে কিনে দিতে বলছিলো। কিন্তু তার বাবার সময়ই হয়নি তাকে কিনে দেওয়ার। অবাক কান্ড, বিপুল জেঠু তার মনের কথা জানলো কি করে! "থ্যাঙ্ক ইউ জেঠু .." মিষ্টি করে হেসে বললো বাপ্পা।
"যাক, প্রথম বাধা টপকানো গেলো। এবার যে খবরটা কানাঘুষো শুনছিলাম, তার সত্যতা যাচাই করতে গেলে ঘোড়ার মুখ থেকেই জানতে হবে আসল কথাটা।" বিড়বিড় করে বলার জন্য বিপুল বাবুর কথাগুলো ভালোভাবে শুনতে না পেয়ে বাপ্পা জিজ্ঞাসা করলো, "তুমি কি বলছো গো জেঠু? বুঝতে পারছি না।"
"কিছু না কিছু না .. আচ্ছা, আমি খবর পেলুম .. তোর বাপ নাকি এবার বেশ অনেকদিনের জন্য বাইরে অফিস ট্যুরে গেছে .. কথাটা কি সত্যি?" নিচের দিকে ঝুঁকে, বাপ্পার মুখের কাছে মুখ নিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করলো বিপুল।
"হ্যাঁ .. গেছে তো .. এক মাসের জন্য। সাত দিন হয়ে গেলো বাবা গেছে। তুমি কোত্থেকে শুনলে গো জেঠু?" সরল মনে প্রশ্ন করলো বাপ্পা।
- "সোর্স থেকে আর কিছুটা মন্ত্রবলে .. হেহেহেহে .."
- "ও মা, তাই? তুমি মন্ত্র জানো জেঠু?"
"হ্যাঁ জানি তো, তবে এবারে কোন মন্ত্রটা কাজে লাগবে সেটাই ভাবছি। যাগ্গে, ওসব কথা ছাড়। এখন বল তো, তোর মা কোথায়?" ফিসফিস করে বাপ্পার কানের কাছে মুখ নিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করলো বিপুল।
"মা? মা মনে হয় স্নানে গেছে। না হলে এতক্ষন বেলের আওয়াজ পেয়ে আর আমাদের গলার আওয়াজ শুনে ঠিক এখানে চলে আসতো। আমি ডেকে দেবো মা'কে?" বিপুল জেঠুর এনে দেওয়া খেলনার বাক্সটা হাতে নিয়ে এদিক-ওদিক নাড়াচাড়া করতে করতে আনমনা হয়ে কথাগুলো বললো বাপ্পা।
"উঁহু .. একদম ডাকার দরকার নেই। তোর মা'কে মনের সুখে স্নান করতে দে এখন। তোর তো কাল অঙ্ক পরীক্ষা? এদিকে পরীক্ষার প্রস্তুতি ভালো হয়নি, তাই তো? চিন্তা করিস না। আমি যখন এসে গেছি, তখন এবার থেকে সব ভালো হবে তোদের। কাল পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে তোকে চুপি চুপি একটা মন্ত্রপূত ফুল দিয়ে দেবো, দেখবি বেশিরভাগ অঙ্ক কমন পড়েছে। তুই শুধু আমার কথা শুনে চল, আর অতিরিক্ত কোনো প্রশ্ন নয়। এখন কোনো আওয়াজ না করে যা, চুপচাপ পড়াশোনা কর। আমি এখন তোদের শোয়ার ঘরে যাবো .. ওই ঘরে একদম আসবি না বলে দিলাম। তাহলে কিন্তু ফুল পাবি না আর পরীক্ষায় ফেল করবি। ও হ্যাঁ, এই মিষ্টির প্যাকেটটা ডাইনিং টেবিলের উপর রেখে দিস।" বাপ্পার উদ্দেশ্যে অত্যন্ত স্বাভাবিকভাবে অথচ দৃঢ়কন্ঠে কথাগুলো বলে তার ঝোলা থেকে বেশ বড়সড়ো একটা মিষ্টির প্যাকেট বের করে তার হাতে দিয়ে, নন্দনা আর চিরন্তনের মাস্টার বেডরুমে ঢুকে গেলো বিপুল বাবু।
'বিপুল জেঠু কি করে জানলো কাল তার অঙ্ক পরীক্ষা? জেঠু এটাই বা কি করে জানলো সে অঙ্কে ভীষণ কাঁচা এবং তার প্রিপারেশন একদমই ভালো হয়নি? কিছুক্ষণ আগে মন্ত্রবল নাকি যেন বলছিল জেঠু! তাহলে কি ওই মন্ত্রবলেই সে সবকিছু জানতে পরছে!' এইসব ভাবতে ভাবতে অবাক হয়ে তার জেঠুর দিকে তাকিয়ে রইলো বাপ্পা।
★★★★
'তারমানে চিরন্তনের বউটা বেডরুমের দরজা না আটকেই বাথরুমে ঢুকে স্নান করছে। আমিও শালা একটা গান্ডু .. শোবার ঘরের দরজা আটকাবেই বা কেন? বাড়িতে ওর পুঁচকে ছেলেটা ছাড়া আর কেইবা রয়েছে? ও জানবে কি করে আমার মতো একটা হারামি এখনই এসে টপকাবে! হেহেহেহে ..' কথাগুলো ভাবতে ভাবতে বেডরুমে ঢুকেই শরীরে একটা অদ্ভুত শিহরণ অনুভব করলো তান্ত্রিক বিপুল। কিন্তু এই সুবর্ণ সুযোগ তো হাতছাড়া করা যাবে না! এই সুযোগের পুরো ফায়দা তো তাকে তুলতেই হবে! পা টিপে টিপে বাথরুমে দরজার দিকে এগিয়ে গেলো বিপুল বাবু। তারপর নিচু হয়ে কোনো ছিদ্র বা 'কি-হোল' খোঁজার চেষ্টা করলো, যদি ভেতরের কোনো দৃশ্য দেখা যায়। কার্ডবোর্ডের দরজা, পুরোটাই নিরেট .. কোনো ছিদ্র খুঁজে পেলো না সে। শুধু অবিরত জলের শব্দ আর তার সঙ্গে নন্দনা দেবীর গুনগুন করে গানের আওয়াজ কানে আসছিলো।
বিফল মনোরথ হয়ে ফিরতে গিয়ে হঠাৎ বিশালাকার পালঙ্কটার দিকে দৃষ্টি যেতেই থমকে দাঁড়ালো বিপুল বাবু। প্রথমেই তার চোখ পড়লো পালঙ্কের উপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা একটি সবুজ রঙের ছাপা শাড়ি, কালো রঙের পেটিকোট, কালো রঙের স্লিভলেস ব্লাউজ আর অন্তর্বাসের দিকে। দ্রুতপায়ে বিছানার কাছে এগিয়ে গিয়ে সাদা রঙের ব্রা'টা তুলে নিলো সে। তারপর জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিয়ে প্রাণভরে শুঁকতে লাগলো ব্রায়ের কাপদুটো। "উপরেরটা তো আছে, কিন্তু নিচেরটা কই? ও আচ্ছা এইতো, সায়ার তলায় চাপা পড়ে গেছিলো। উফফফ মাইরি, প্যান্টির গন্ধে তো মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে আমার। কাচা জিনিসগুলো দিয়ে যদি এরকম গন্ধ বের হয়, তাহলে মাগীটার ব্যবহার করা সদ্য ছাড়া ব্রা-প্যান্টির গন্ধ তো পাগল করে দেবে আমাকে!" এইরূপ স্বগতোক্তি করে প্যান্টিটা হাতে নিয়ে পালঙ্কের একপাশে বসলো বিপুল বাবু।
নন্দনা দেবী কোনোদিনই বাথরুমে জামাকাপড় নিয়ে ঢোকেন না। কাচা জামাকাপড়গুলো শোওয়ার ঘরের বিছানার উপর রেখে স্নান করতে ঢোকেন। স্নান হয়ে গেলে মাঝারি সাইজের একটা গামছা দিয়ে শুকনো করে গা মুছে সেই গামছাটি শরীরের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে বাথরুম থেকে বের হন। তারপর বেডরুমের ভেতরেই ঈশান কোণে অবস্থিত ঠাকুরের সিংহাসনটার সামনে ওই গামছা পরা অবস্থাতেই বসে পুজো করেন। পুজো হয়ে গেলে বিছানায় রাখা কাচা জামাকাপড়গুলো পড়ে নেন। বহুদিন ধরে এটাই তার ডেইলি রুটিন। তবে বাড়িতে তার স্বামী, এমনকি ছেলে থাকলেও পুজো করার সময় বেডরুমের দরজা তিনি বন্ধ করে দেন।
এরপর প্রায় কয়েক মিনিট অতিক্রান্ত হয়ে গেলো। বিপুল বাবু পালা করে বাপ্পার মায়ের উর্ধাঙ্গের এবং নিম্নাঙ্গের অন্তর্বাসের ঘ্রাণ নিয়ে যাচ্ছিলো। 'তার জেঠু কি করছে ..' এটা দেখার জন্য মাঝে একবার বেডরুমে ঢুকে এসেছিলো বাপ্পা। তাকে নিজের ভয়ঙ্কর দুই রক্তচক্ষু বিস্ফোরিত করে ভয় দেখিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে তান্ত্রিক বিপুল। একসময় জল পড়ার শব্দ বন্ধ হলো, তবে নন্দনা দেবীর কন্ঠের সুরেলা গান তখনো চলছে। রিনিঝিনি চুড়ির শব্দে বিপুল বাবু বুঝতে পারলো বাথরুমের ভেতর এখন গা মোছা হচ্ছে। দাঁতে দাঁত চেপে বাথরুমের দরজার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দিয়ে অপেক্ষা করতে লাগলো তান্ত্রিকটা।
'খুট' করে বাথরুমের দরজার খোলার আওয়াজ হলো। তার প্রতিদিনের অভ্যাস অনুযায়ী একটা ভেজা গামছা শরীরের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে বাথরুম থেকে বের হলো নন্দনা দেবী। বিপুল বাবুর চোখের সামনে মধ্য তিরিশের স্বাস্থ্যবতী, সুন্দরী, এক সন্তানের মা, একজন ভদ্রঘরের গৃহবধূ প্রায় অর্ধেকের বেশি স্তন বিভাজিকা উন্মুক্ত করে, মাঝারি আকারের গামছাটা হাঁটুর অনেকটা উপরে উঠে গিয়ে ফর্সা, মাংসল ঊরুদুটোর অনেকটা প্রকাশিত করে এবং ভিজে যাওয়া পাতলা গামছার আড়ালে বৃহৎ আকার স্তনজোড়া এবং খাড়া হয়ে থাকা স্তনবৃন্তের অবস্থান প্রকট করে দাঁড়িয়েছিলো। এতটাও বোধহয় আশা করেনি তান্ত্রিক বিপুল। বিস্ফোরিত নেত্রে মুখ হাঁ করে লোভাতুর দৃষ্টিতে সে তাকিয়ে রইলো বাপ্পার মায়ের দিকে।
চমকেরও একটা সীমা থাকে। এক্ষেত্রে সেটা অতিক্রম করে গিয়েছিলো। চিরন্তন বাবুর স্ত্রী স্বপ্নেও ভাবেনি এই অবস্থায় তার বেডরুমে এরকম একজনের উপস্থিতি। কয়েক মুহূর্তের অবকাশ .. তারপরেই প্রায় আর্তনাদের ভঙ্গিতে নন্দনা দেবী বলে উঠলো "এ কি .. আ..আপনি .. এখন .. এখানে? কি করছেন?" তারপর নিজের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে অতিমাত্রায় সচেতন হয়ে এক দৌড়ে ঢুকে গেলেন বেডরুমের ভেতর। বাপ্পার মা পিছন ঘুরে দৌড়ে বাথরুমে ঢুকে যাওয়ার সময় তান্ত্রিক বিপুল লক্ষ্য করলো তার তরঙ্গ তোলা মাংসলো পাছার খাঁজে গামছাটা আটকে গিয়ে আরো উত্তেজক মুহূর্তের সৃষ্টি করেছে।
এরই মধ্যে কয়েক সেকেন্ড অতিবাহিত হয়ে গেলো। উভয়পক্ষই নিঃশ্চুপ। বিপুল বাবু লক্ষ্য করলো অবাঞ্ছিত অতিথির মুখের উপর বাথরুমের দরজাটা বন্ধ করে দিলেও ভেতর থেকে ছিটকিনি আটকায়নি তার ভাইয়ের বউ। সামান্য ফাঁক হয়ে রয়েছে বাথরুমের দরজাটা। এরকম একটা আকস্মিক চমকে দিশেহারা হয়ে গিয়ে ছিটকিনি আটকানোর কথা মাথা থেকে বেরিয়ে যেতেও পারে। আবার দূরসম্পর্কের হলেও সম্পর্কে তার ভাসুর, ভাইয়ের বউকে এই অবস্থায় দেখে ফেলে ভদ্রতার খাতিরে লজ্জায় বেডরুম থেকে বেরিয়ে গেলে সে তাড়াতাড়ি বাথরুমের দরজা খুলে বেরিয়ে এসে বেডরুমের দরজা বন্ধ করে দেবে .. এটা ভেবেও সে বাথরুমের ছিটকিনি না আটকাতে পারে। সে যে কারণেই হোক না কেনো, লজ্জা এবং ভদ্রতা, এই দুটোই ছিলো না অকুতোভয়, লম্পট তান্ত্রিক বিপুলের। তাই খুব সামান্য ফাঁক হয়ে থাকা বাথরুমের দরজাটা সামনে গিয়ে দাঁড়ালো সে।
"বৌমা .. ও বৌমা .. তুমি খুব অবাক হয়ে গেছো তাই না, আমাকে এখানে দেখে? আসলে অশোকদের বাড়িতে এসেছিলাম। আরে অশোক গো .. চিনতে পারলে না? দক্ষিণপাড়ার অশোক, আমাদের চিরন্তনের সেজো পিসির ছেলে। ওদের বাড়িতে একটা বিশেষ কাজে এসেছিলাম। ওর বউ রুনার একটা প্রবলেম হয়েছিলো .. ওদের আবার আমার তন্ত্রসাধনার উপর খুব বিশ্বাস তো! তাই আমাকে ডেকেছিলো। ভেবেছিলাম কাজটা মিটতে দিন চারেক বা তার বেশি সময় লেগে যাবে, কিন্তু দু'দিনেই মিটে গেলো। তাই ভাবলাম যাওয়ার পথে তোমাদের সঙ্গে একটু দেখা করে যাই। কতদিন দেখিনি আমার ভাই আর ভাইপোটাকে। কিন্তু আমার ভাগ্যটাই খারাপ .. তোমাদের বাড়িতে এসে তোমার ছেলের কাছ থেকে শুনলাম চিরন্তন নাকি এখানে নেই! অফিসের কাজে বাইরে কোথাও গেছে। তারপর ভাবলাম ভাই নেই তো কি হয়েছে? ভাইপো আর ভাই-বউ তো রয়েছে .. তাদের সঙ্গেই দু'দণ্ড গল্প করে যাবো না হয়! আমার অবশ্য ফোন করে আসা উচিৎ ছিলো! কিন্তু কি করবো বলো, পুরনো দিনের মানুষ তো! তাই ফোন করার কথা সবসময় মাথায় থাকে না। হঠাৎ করে এসে পড়ে তোমাকে খুব অসুবিধার মধ্যে ফেলে দিলাম, তাই না?" বাথরুমের দরজার অনেকটা কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে কথাগুলো বললো তান্ত্রিক বিপুল।
এই কথার কোনো উত্তর এলো না বাথরুমের ভেতর থেকে। কিন্তু এত সহজে তো নগ্নদেহের উপর শুধুমাত্র একটি মাঝারি সাইজের ভেজা গামছা জড়ানো তার সদ্যস্নাতা দূর সম্পর্কের ভাইয়ের বউকে অব্যাহতি দেওয়ার পাত্র নয় নির্লজ্জ বেহায়াটা! তাই কয়েক মুহূর্ত অপেক্ষা করার পর বিপুল বাবু বাথরুমের দরজার আরও কাছে সরে গিয়ে গলার স্বর আরও একটু নামিয়ে জিজ্ঞাসা করলো, "কি হলো বৌমা .. কিছু বললে না যে? ভেজা গামছা জড়িয়ে বাথরুমের ভেতরে এতক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকো না। গায়ে জল বসে গেলে জ্বর আসতে পারে।"
"আ..আপনি একটু বাইরে যান না প্লিজ। আমি পুজো করবো!" বাথরুমের ভেতর থেকে মৃদুস্বরে বলে উঠলো তার ভাইয়ের স্ত্রী।
"ও আচ্ছা পুজো করবে? এ তো ভালো কথা। এয়ো-স্ত্রী তুমি, তার উপর এক সন্তানের জননী .. গৃহস্থের কল্যাণের জন্য তো পুজো করাই উচিৎ .. ও আচ্ছা এবার বুঝেছি, আসলে তুমি কাপড়জামা পড়বে, সেজন্য আমাকে বেরিয়ে যেতে বলছো, তাই তো?" বাথরুমের দরজার সামনে থেকে এক চুলও না সরে জিজ্ঞাসা করলো বিপুল বাবু।
"না মানে ঠিক তা নয়, পুজো করার পর আমি কাচা জামাকাপড় পরি।" এবারও গলার স্বর নামিয়েই কথাগুলো বললো তার ভাইয়ের স্ত্রী।
"পুজো করার পর জামাকাপড় পড়ো? আর পুজো করার সময়?" তার ভাসুরের এই অবান্তর এবং অপ্রীতিকর প্রশ্নে অস্বস্তিতে পড়ে গিয়ে বেশ কিছুক্ষণ চুপ করে থাকার পর বাথরুমের ভেতর থেকে নন্দনা দেবী একটা শব্দ একাধিকবার উচ্চারণ করে কুণ্ঠিতভাবে বললো, "যে..যেটা এখন পড়ে আছি ম..মানে এই গামছাটা প..পড়েই পু..পুজো করি। আপনি প্লিজ বেডরুমের বাইরে যান একটু।"
~ কিছুক্ষণের মধ্যেই পরবর্তী আপডেট আসছে ~