Thread Rating:
  • 4 Vote(s) - 2.5 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
WRITER'S SPECIAL নিকৃষ্ট জীবের কথোপকথন
#4
#২

আমি জানি না এই ফোরামের রাজনৈতিক কথাবার্তা হয় কিনা। তবে আজ রাজনৈতিকভাবে নয় কিছুটা ব্যক্তিগতভাবেই কিছু কথা বলতে চাই। 

ছোট কালে সবার বাবা-মা ই কম বেশি গল্প শোনাতো। অন্তত বাংলার বাবা মায়েদের মধ্যে এই ধরনের একটা প্রভাব আমি দেখেছি। এখন অবশ্য কোনো বাবা-মা গল্প বলে না। গল্প শোনানোর জন্য ইউটিউব আছে। আমার ভাগ্য ভালো। আমি যখন জন্মেছিলাম, তখন ইউটিউব নামক ডিজিটাল ঠাকুমার ঝুলি ছিল না। ভাগ্য অবশ্য কিছুটা খারাপ ও আমার নিজের কোনো ঠাকুমা ছিল না। আই মিন, জীবিত ছিল না।

যায় হোক মূল কথাতে আসি। আমার বাবা ছোটবেলায় মাঝে মাঝেই একটা গল্প শোনাত। কোনো রূপকথা বা লোক কথার বইতে আমি গল্পটা পাই নি। আর বাবাও আজ পর্যন্ত গল্পের মূল স্রষ্টা কে সেটা বলে নি। তবে ধীরে ধীরে যখন বুঝতে শিখলাম, তখন সমাজের সাথে গল্পের এক অদ্ভুত মিল পেয়েছি। আগে চলুন গল্পটা বলি। আর হ্যাঁ গল্পটা ছেলে ভোলানো, তাই কোনো যুক্তি খুজবেন না।

এক দেশে এক রাজা ছিল। রাজার ছিল তিন ছেলে। দুই ছেলে চোখে দেখে না; আরেক ছেলে অন্ধ। তো একদিন যেই ছেলে অন্ধ সে বলল শিকারে যাবে রাজার ছেলে শিকার করবে বলে কথা। ঘোড়া তো লাগবেই। ঘোড়াশালে গিয়ে দেখা গেল পর পর দাড়িয়ে আছে তিন ঘোড়া। দুইটা ঘোড়ার পায়ে গুলি লাগছিল। আর অন্য ঘোড়াটা খোঁড়া। এখন যে ঘোড়াটা খোঁড়া সেটা নিয়ে এক অস্ত্রাগারে যাওয়া অস্ত্রাগারে দেখা গেল তিনটা বন্দুক। প্রথম দুইটার নল নেই। অন্যটার নল ভাঙ্গা। এখন নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো তাই ভাঙ্গা নলের বন্ধুক নিয়ে শিকার করতে গেল। শিকারে গিয়ে জঙ্গলের মধ্যে দেখলো তিনটা হরিণ। যার দুটা মরে গেছে, আর শেষের টা বেঁচে নেই। রাজকুমার চালালো পরপর তিন গুলি। দুইটা গুলি এদিক ওদিক দিয়ে গেল আরেকটা লাগলোনা।

 শিকার শেষে রাজকুমার ভাবলো, আজ রাত এই জঙ্গলে থেকে কাল রাজ্যে ফিরবে। রাতের বেলায় যেই মাত্র রাজকুমার ঘুমিয়েছে। তখনই বেরিয়ে এলো তিনটা বাঘ। দুইটা বাঘে হরিণ খেতে লাগলো। আর অন্য রাজকুমারকে মেরে ফেলল।

সত্যি কথা বলি, এমন কোনো গল্প রূপকথা তো দূর, লোক কথাতেও স্থান পাবে না। কিন্তু বাস্তব অবস্থার সাথে অদ্ভুদ মিল আছে।
গল্পের যে রাজা, সেটা হচ্ছে বাস্তবের একটা দেশ। আর রাজার যে তিন ছেলে; এটা হলো দেশের রাজনৈতিক দলগুলো। কেউ কারো চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। গল্পের রাজকুমার গুলো কানা, আর বাস্তবে চোর। ঘোড়াশালের ঘোড়া গুলো হচ্ছে আইন ব্যবস্থা। আইন প্রয়োগ করে চোর ধরবে কি, আইন নিজেই খোঁড়া। আর হ্যা আমি বাংলাদেশ থেকে লিখছি তার মানে এই না যে, শুধু বাংলাদেশের এই অবস্থা। যতদূর শুনেছি এবং দেখতে পাচ্ছি ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও প্রায় একই অবস্থা। 

অস্ত্রাগারের বন্দুক গুলো হচ্ছে শাসন ব্যবস্থা। যা শুধু খাতা কলমেই আছে। বস্তবে লবডঙ্কা। শাসনের নামে শোষণ চলছে। এখন কেউ কেউ আছে বলবে, ভাই আপনি তো সরকার বিরোধী কথাবার্তা বলছেন। আমি বলকে, না ভাই। ঐ সব রাজকুমারই এবং কানা। আই মিন চোর। গল্পের হরিণগুলো কি জানেন? গল্পের হরিণগুলো হচ্ছে বাস্তবের নিশ্চুপ জনতা। এরা জীবিত থেকেও মৃত। না পারে কিছু বলতে। না পারে কিছু করতে।

সবশেষ পরে থাকলো বাঘ। না ভাই বাস্তবের সাথে এখানে মিল নেই। গল্পে যেমন বাঘ আসবে রাজপুএকে খেয়ে ফেলবে; বাস্তবে এমন কোনো ক্রান্তি নেই।

ব্যক্তিগতভাবে একটা কথাই বলবো, আমি কোনো রাজনৈতিক ভাবে কথাগুলো বলি নাই। আমি এক পিতার পুত্র হিসাবে কথাগুলো বলেছি। কারন আমি এক পিতার চোখে জল দেখেছি। সন্তানের জন্য খাবার কিনতে না পারার অশ্রু। আমি সেই পিতার স্বীকারোক্তি শুনেছি; "আমরা লোকলজ্জার ভয়ে নিজেদের মধ্যবিত্ত বলি। আসলে আমরা গরিব।"
একজন বড় মিথ্যাবাদী, একজন বড় জাদুকরও
[+] 3 users Like Dead people's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: নিকৃষ্ট জীবের কথোপকথন - by Dead people - 11-05-2023, 10:31 AM



Users browsing this thread: 2 Guest(s)