06-05-2023, 10:37 AM
(This post was last modified: 12-06-2023, 08:31 AM by sairaali111. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
সতী শর্মিলা / ০৪১ 06/05/2023
. . . ওর পড়ার টেবলের বাঁ দিকের তলার ড্রয়ারটায় বিশেষ দরকারী কাগজপত্র রাখে সাধারণত শর্মিলা । ওখানেই একটা মাঝারি সাইজের ডায়েরির ভিতরই , যতোদূর মনে হয় , ওটা রেখেছিল । ডায়েরিটা-ও উনিই দিয়েছিলেন সেদিন । ... একটু হাঁটকাতেই পেয়ে গেল ডায়েরিটা । দ্রুত সাপল্ করতেই আত্মপ্রকাশ করলো ছোট্ট কার্ডটা । হালকা গোলাপী রঙের উপর ঘণ সবুজে লেখা - অনির্বচনীয়া নাসরিন ( অ্যানি ) । নিচের বাঁ দিকের কোণ থেকে উপরের ডানদিকের কোণ বরাবর একগুচ্ছ টিউলিপ - হালকা হলুদ রঙের । আর , খুব খুদে খুদে লেখায় , একটি ফোন নাম্বার । ব্যাস্ , আর কিচ্ছু নেই কার্ডখানায় । অথচ , সবাই জানে , অ্যানিম্যামের বেশ ক'টি দেশী-বিদেশী ডিগ্রী আছে । নামের আগে 'ডক্টরেট' লেখার ছাড়পত্র আছে । প্রায়ই বিভিন্ন চ্যানেলের তর্কে-বিতর্কে মনস্তত্ব বিশ্লেষণের ডাক আসে । অসাধারণ পান্ডিত্য , প্রগাঢ় আধুনিকতা , নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি আর সহজ ভাষায় জটিল বিষয়েরও চুলচেরা বিশ্লেষণী ক্ষমতায় অ্যানি ম্যাম হয়ে ওঠেন সেইসব সভার প্রধাণ আকর্ষণ ।
কাঁধ ছাড়িয়ে আর একটুখানি নামা স্ট্রেইট চুল - যা' অনেকটাই বাদামীঘেঁষা । চোখের মণি-ও ঠিক কটাসে বা বিড়ালাক্ষী নয় - নীলাভ । প্রায় পাঁচ পাঁচ হাইট আর মানানসই বুক-কোমর-পাছার গমরঙা অ্যানিম্যামকে হঠাৎ দেখলে যেন বাঙালি মেয়ে মনেই হয় না । তাঁর উপস্হিতি এতোই প্রভাবশালী আর চৌম্বকীয় যে একবার সংস্পর্শে এলেই উনি মনের মাঝে থেকে যান । মাস আটেক আগে শর্মিলাদের কলেজের বড়দি আর সেক্রেটারি অনেক বলেকয়ে ম্যামকে রাজি করিয়েছিলেন ''আন্তর্জাতিক নারী দিবস'' অনুষ্ঠানে কলেজে আসতে । ছাত্রীরা কঠোর আর দীর্ঘ প্রস্তুতি নিয়েছিল বড়দির নজরদারি আর শারমিন ম্যামের সযত্ন তত্ত্বাবধানে । অ্যানিম্যাম এসেছিলেন । নিজের স্কুটারে । ঘিয়ে রঙের শাড়ি আর কালো স্লিভলেস ব্লাউজ পরেছিলেন । কী অসাধারণ ভাষণই না দিয়েছিলেন সেদিন ম্যাম । বিষয় ছিল - ''নারী স্বাধীনতায় পুরুষের ভূমিকা'' - মন্ত্রমুগ্ধের মতো চল্লিশ মিনিট কেটে গেছিল মুহূর্তে । - আর , শর্মিলার মনে হয়েছিল - ''কেন এমন হলো গো আমার এই নব যৌবনে....''
উদ্বোধনী-সঙ্গীত পরিবেশন করেছিল শর্মিলা-ই । ''আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে....'' - ওকে ডেকে কথা বলছিলেন ডক্টর নাসরিন - অ্যানি ম্যাম । নিজের ব্যাগ খুলে একটা ডায়েরী আর তার ফোল্ডারে একটা নেম-কার্ড রেখে বলেছিলেন ''এতে আমার প্রাইভেট নাম্বার আছে । কারোকে শেয়ার ক'রো না প্লিইজ । আর , তোমাকে আমার বাসায় আশা করছি কোন দিন - মানে , যে কোন দিন ।- ভাল থাকো ।...'' - ম্যামের শরীর থেকে উঠে-আসা গন্ধটা এখনও যেন শর্মিলর নাকে লেগে আছে । শর্মিলা ঠিক সিওর নয় - গন্ধটা কোন ফরাসী ডিও ছিলো , নাকি.... ওটা অ্যানি ম্যামেরই নিজস্ব ...... . . .
এক চান্সেই শর্মিলার কানে বাজলো সে-ই মেলোডিয়াস কন্ঠ - ''অ্যানি ইজ হিয়ার , প্লিইজ...'' - খানিকটা দ্বিধায় , অনেকটা ইতস্তত , করেই শর্মিলা ধীরে ধীরে বলতে পারলো - ''ম্যাম্ আমি শর্মিলা....'' ইনটারসেপ্টেড হলো শর্মিলা - জলতরঙ্গের মতো হাসির তরঙ্গে ভেসে-আসা কথাটা কানে বাজলো - '' আগুনের পরশমণি - শর্মিলা - ওয়েলকাম মাই ডার্লিং .... অ্যাতোদিনে তাহলে আমার ফোন নাম্বারটা ইউজ করলে ? - বলো ডিয়ার ...'' - অনির্বচনীয়া থামলেন । ওনার কন্ঠের আন্তরিকতা ছুঁয়ে গেল শর্মিলাকে , কেটে গেল দ্বন্দ্ব-দ্বিধা । খুব সহজেই যেন এবার বলতে পারলো শর্মিলা - ''ম্যাম্ , খুব দরকারে আপনাকে বিরক্ত করছি , আপনার পনের মিনিট সময় চাইছি ...'' - ''আরে , থামো থামো ... প্রথমেই - সংশোধন নয় , অ্যাক্কেবারে বাদ দাও ওই শব্দটা - 'বিরক্ত' , আর , দুই , পনের নয় , এখনই চলে এসো - দরকারে আজ থেকেই যাবে - নয় তো সে-ই রাত্রে । আমি ছেড়ে দিয়ে আসতেও পারি । ও হ্যাঁ , সবচে' ইমপর্ট্যান্ট কথাটাই তো বলা হয়নি - আমি ছুটির দিনে নতুন নতুন খাবার বানানোর চেষ্টা করি । আজও করছি । 'ফিটন্ বিরিয়ানি' আর 'শচি বল' ..... তো , কারোকে যদি খাইয়ে সার্টিফিকেটই না পেলাম তাহলে খেটে লাভ কি ? খুব ভাল হয়েছে । 'পরশমণি'কে পাওয়া গেল । .... তোমার মা কে দাও তো একবার ।''
বিনা বাক্য ব্যয়ে শর্মিলা ''মা তোমার সাথে অ্যানিম্যাম কথা বলবেন - নাও'' বলে ফোন ধরিয়ে দিলো । - ''ম্যাডাম , আমি অনির্বচনীয়া মানে অ্যানি আপনার একটুখানি সময় নিচ্ছি , প্লিইজ কিছু মনে করবেন না...'' - ''ছি ছি এ কী বলছেন ডক্টর নাসরিন ? আপনি কথা বলছেন এ তো আমার পরম সৌভাগ্য । বলুন প্লিইজ...'' শর্মিষ্ঠা একটু থামতেই অ্যানি বললেন - ''আগুনের পরশমণি শর্মিলা আমার কাছে আসবে , ওকে আমি লাঞ্চে চাইছি । ছুটির দিনে আমার তৈরি করা খাবারের একজন সমঝদার তো দরকার ....'' দু'প্রান্তে দুজনেই হেসে উঠলেন । অ্যানি কথা শেষ করলেন - ''তাই আপনার কাইন্ড পার্মিশন চেয়ে রাখছি । তেমন হলে ডিনারও আমরা দুজন একসাথেই করবো আজ ।'' - শর্মিষ্ঠা বলে দিলেন - ''আপনি নিজের হাতের রান্না খাওয়াবেন শর্মিকে - এ তো ওর ভাগ্য । আমাদেরও । তবে , একটা অনুরোধ আছে ম্যাম - আমাদের বাড়িতেও একদিন কিন্তু আপনাকে অন্নগ্রহণ করতে হবে দয়া করে ...'' - দু'জনের উচ্ছ্বসিত হাসিতে কথা শেষ হলো । - ফোন হস্তান্তরের পরে অ্যানি ম্যাম বললেন - ''তাহলে ? চলে এসো । যা খাবার এখানেই খাবে । কুঈঈক । ছাড়ছি - পরশমণি....আগুনের....হাহাহাহা....''
... কী মনে হলো , শর্মিলা ওর মায়ের একটা ঘি-রঙা শাড়ি পরলো । ব্লাউজটা অবশ্য নিজেরই কিন্তু কনুই-হাতা । স্লিভলেস নয় । ও রকম ব্লাউজ ওর নেই-ই । মা সঙ্গে নিয়ে যেতে দিলেন নিজর তৈরি করা এক বোতল কাসুন্দি আর একটা শান্তিনিকেতনী বাটিকের কাজ করা দামী ব্যাগ - কাপড়ের । শর্মিলাকে বললেন - ''শাড়ি পরে স্কুটি চালাতে পারবি তো ?'' - দত্ত সাহেব কাছেই ছিলেন , বেশ প্রত্যয়ী-কন্ঠেই বলে উঠলেন - ''সি ইজ আ মোস্ট ওয়ান্ডারফুল স্কুটি-চালিকা ।'' তারপরেই যোগ করলেন - ''আবদুল নামিয়ে দিয়ে আসবে না কি রে , মামণি ?'' - জিনিসপত্র গুছিয়ে নিতে নিতে মাথা নাড়লো শর্মিলা । - ''তাহলে চলছি মা , বাপি....'' - মনের দোলাচল ওর মুখের রেখায় একটুও বোঝা গেল না । ... রওনা হয়ে গেল শর্মিলা । . . . .
. . . . স্কুটিতে মিনিট কুড়ির দূরত্ব । ছোট্ট ছিমছাম বাড়িটার সামনে এসে দাঁড়াতেই একটু যেন নার্ভাস ফিল্ করলো শর্মিলা । গেটের পাশেই ডোর-বেল । ওটাতে হাত দিতেই দরজা খুলে গেল । হাঁটু-লেন্থ আকাশী রঙের হাউসকোট পরা অ্যানি ম্যাম যেন ঝলমল করে উঠলেন । -'' সামনের দিকে এগিয়ে ডানদিকে তাকাও , আমার স্কুটার আছে । পাশেই তোমারটাও রেখে চলে এসো । স্কুটি রেখে , সাইড বক্স থেকে মায়ের দেওয়া গিফ্ট দুটো বের করে , ভিতরে এসে দাঁড়ালো শর্মিলা । ঝুঁকে প্রণাম করতে যেতেই অ্যানি ওকে সপাটে টেনে বুকে জড়িয়ে ধরলেন । না , এটি নিছক 'হাগ্' নয় । রীতিমত প্যাশনেট্ আলিঙ্গন । শর্মিলার মাথায় এসে গেল - ''রোগের মতন বাঁধিব তোমারে দারুণ আলিঙ্গনে...'' 'রাহুর প্রেম' । কিন্তু কী আশ্চর্য , ও নিজেও যে দু'হাত জড়িয়ে ধরেছে ম্যামকে । ভাগ্যিস গিফ্ট দুটো আগেই একটা চেয়ারের উপর রেখে দিয়েছিল । - খুউব ফিসফিসিয়ে যেন অ্যানিম্যাম বলে উঠলেন মনে হলো - ''অ্যাতোদিনে তোমার সময় হলো ? আমি যে চাতকের মতো পথ চেয়ে বসেছিলাম ...'' হাতের বাঁধন যেন , মনে হলো , আরো দৃঢ় হলো ওনার । হাইট্ দুজনেরই প্রায় সমান সমান হওয়ায় দুজনের চুঁচি-ই দু'জনেরটায় চেপে রইলো টানটান হয়ে । - শর্মিলার নাকে এসে লাগলো সে-ই গন্ধ । ম্যামের শরীর থেকে উঠে-আসা সুগন্ধি । শর্মিলা নিশ্চিত হলো এটি কোনো পার্ফিউম্ নয় । ম্যামের নিজস্ব গন্ধ । রীতিমত উত্তেজক । কাম জাগানিয়া ।...
বাঁধন আলগা হ'তেই শর্মিলা গিফ্ট দুটো হাতে নিয়ে খুব আন্তরিক ভাবে বললো - '' মা পাঠিয়েছে আপনার জন্যে , ম্যাম্ ।'' - দৃশ্যতই অ্যানি ম্যাম খুশি হলেন বোঝা গেল । তবে , মুূহূর্তে মুখ গম্ভীর করে যেন আল্টিমেটাম দিচ্ছেন এমন করে বলে উঠলেন -''তোমার মা কে সুক্রিয়া । কিন্তু এ দুটো তখনই নিতে পারবো যখন বাহিকা আমাকে 'আপনি' ছেড়ে 'তুমি' আর 'ম্যাম' ছেড়ে 'আপু' বলবে , তার আগে নয় । - শর্মিলার মন টেনশনের মধ্যেও যেন আন্দোলিত হলো হঠাৎ-ওঠা ঘূ্র্ণি ঝড়ের মতো । এমনটি ও স্বপ্নেও আশা করেনি । - ''আপু , এ দুটো তোমার । না-ও...'' - শর্মিলার মুখে উচ্চারিত হ'তেই অ্যানি দু'হাতের অঞ্জলিতে ওর গাল চেপে ধরে সশব্দে চুমু দিলেন - ঠোটে । উপহার দুটি নিয়ে রাখলেন টেবলে । মুখে যথেষ্ট প্রশংসাও করলেন । - তারপর বললেন - ''মণি , তুমি নিশ্চয় শাড়িতে খুব কমফর্টেবল নও । এসো , নতুন আনইউজড হাউসকোট আছে । পরে নাও । তারপর আমার তৈরি স্পেশ্যাল ডিশ - ''শচি বল'' ।...
ছোট্ট রাউন্ড চারজনের জন্যে করা ডাঈনিং টেবলে বসার আগে লাইট কলাপাতা রঙের হাউসকোটে যেন ঝলমলিয়ে উঠছিল শর্মিলা । অ্যানি-ও বলেছিলেন - ''ঊঃঃ মণি , তোমায় যা দেখাচ্ছে না....'' - জড়তা সরিয়ে শর্মিলা শুধিয়েছিল - ''আমায় মণি বলছো কেন আপু ?'' - প্লেটে খাবার দিতে দিতে অ্যানি হাসতে হাসতে বলেছিলেন - ''ব্রিফ্ । আমার নামটা যেমন বিদেশী বন্ধুরা উচ্চারণ-ই করতে না পেরে ''অ্যানি'' বানিয়ে নিয়েছে 'অনির্বচনীয়া'কে - তেমনি তোমারটাও । না , শর্মিলা নয় । ওইই যে 'আগুনের পরশমণি...' - ছোট্ট করে আমার 'মণি' '' - দু'জনের শব্দিল হাসিতে সঙ্কোচের অবশিষ্ট মেঘটুকুও উড়ে গিয়ে ঝকঝকে রোদালো নীল আকাশ দেখা দিল ।
''চমৎকার খেতে'' - শর্মিলা একটা খেয়েই বলে উঠলো - ''কিন্তু আপু , এগুলোর শচি-বল্ নাম কেন ? কখনো শুনিনি , খায়-ও নি ।'' - '' সাস্পেন্স '' - স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বলেই যোগ করে দিলেন অ্যানি - ''কফি খেতে খেতে জানতে পারবে ।'' . . . কফিতে চুমুক দিয়ে জানতে চাইলেন - ''বল্ টা তো সোজা । গোলাকার বস্তু । যদিও অনেক অর্থেই শব্দটির ব্যবহার আছে । সে যাকগে , আমার মণি কি জানে 'শচি' কি বা কে ?'' - ফুলটস । শর্মিলা সপাটে চালালো - ''শচি হলেন দেবরাজ ইন্দ্র-পত্নী ।'' -
''নাঃ , আমার মণি শুধু পরীর মতো সুন্দরীই নয় , আড়ালি ম্যাজিক ওয়ান্ডও আছে দেখছি । একদম ঠিক । কিন্তু আরো একটু আছে । এ যুগেও দেখবে ধনকুবের শিল্পপতির লক্ষ লক্ষ খরচ করে কসমেটিক সার্জারি করা , মেকাপ নেওয়া পঞ্চাশোর্ধ বউ-ও কেমন সাঙ্ঘাতিক সমাজসেবী হয়ে উঠেছে । শুধু তাই নয় , একই সাথে ফুটবল-বোদ্ধা , ক্রিকেটপ্রেমী , ফিল্ম ক্রিটিক , ইতিহাসবেত্তা ..... কততো কী প্রতিভার বিচ্ছুরণ তার ভিতর হয়ে চলেছে - বিস্ময়ে সব হতবাক । - শচিদেবীও তাই-ই ছিলেন । দানবরাজ পুলোমার কন্যা । ইন্দ্র তাকে ;., করেছিলেন । পরে বিবাহ । দেবতার ঘরে দানব-কন্যা । বাঘের ঘরে ঘোগের বাসা । যত্তো মারদাঙ্গা খুনোখুনি রেষারেষি গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব - সব স-ব বরাদ্দ নীচুতলার কর্মীদের জন্যে । উপর মহল বরাবরই - ঈয়ে দোস্তি.....'' প্রাণখোলা হাসিতে গুমোট অনেকখানিই কেটে গেছে তখন শর্মিলার । নিজের সমস্যাটা কখন বলবে ভাবতে ভাবতেই অ্যানি আবার শুরু করলেন -'' তো , আমাদের তো মন্ত্রই হলো পতি পরম গুরু - তাই , শচীর পরিচয় হলো 'ইন্দ্রানী' নামে । আর , আরেকটি কাজও উনি নাকি বিগ বসের বউ বা ফার্স্ট লেডি হিসেবে করলেন । একটি আবিস্কার । নাম - 'ইন্দ্রানিক' । এটি এমন একটি সঙ্গমাসন যে ভঙ্গিতে অবস্থান করলে একজন অরজস্বলা অরমিতা মেয়েও অনায়াসে তার ভিতর গ্রহণ করতে পারবে একটি পূর্ণবয়স্ক পুরুষের বৃষ অথবা অশ্বলিঙ্গ ....'' - চেষ্টা করেও গালে শরমের ছোপ আটকাতে পারলো না শর্মিলা । চোখ এড়ালো না অ্যানিরও ।
''না , আমরা তো পরস্পরের বন্ধুই । তাই না মণি ?'' - তারপরেই বৈঠকি মেজাজে যোগ করলেন - ''অবশ্য আমার এই শচিবলের সাথে দেবরাজ বা তার বউ বা ওই ভয়ঙ্কর সুখের আসনভঙ্গি - কোনটিরই বিন্দুমাত্র যোগ নেই । এটির মূল মালমশলা হলো মাছ আর মুরগা । ফিশ-এর ''শ'' আর চিকেন-এর ''চি'' - মিলে মিশে হয়ে গেল - না , প্যারিসের ছেঁচকি নয় - হলো শচি । শচি বল ....'' - এবার কিন্তু চাঁদের হাসি বাঁধ ভাঙ্গলো । শর্মিলার দিকে তাকিয়ে থেমে রইলেন অ্যানি । হাসির গমক কমলে নিশ্চিত প্রত্যয়ে বলে উঠলেন - ''তোমার ঐ গজদাঁতটা কিন্তু ভবিষ্যতে অনেককেই খুন করবে ।'' . . . .
কফি শেষ । শর্মিলা কিছু বলার আগেই অ্যানি যেন ওর মন পড়ে নিলেন । - ''আমার বিরিয়ানি রেডি । তাই , এখন ছুটি । আজ কোন গেস্টকেও এন্টারটেইন করবো না । চলো , তোমার কথা শুনবো এবার ।'' - দুই , সমবয়স্ক না হলেও , সমমনস্ক সুন্দরী এগিয়ে চললেন অ্যানির বিলাসী বেডরুমের দিকে . . . . . ( চ ল বে....)
ভিজে শ্যাম্পু-চুলে তোয়ালে ঘষতে ঘষতে চোখ তুলে তাকালো শর্মিলা । ঐ তো সামনের মানুষ-সাইজ আয়নাটায় ও দাঁড়িয়ে আছে । সিক্ত শরীর বেয়ে টুপটাপ ঝরছে জলকণা শরৎ-শিশিরের মতো , হাত তুলে মাথা মোছার ফলে পুরো উন্মুক্ত দু'টি বগল-ই । জলে ভিজে বগলের কেশরাশি ঝড়বিধ্বস্ত পাটগাছের মতো শুয়ে পড়েছে পরস্পরের উপরে - অসহায় ভাবে । আর , চুঁচি-বোঁটা দুখান উঠে দাঁড়িয়ে যেন পর্যবেক্ষকের মহান আর গুরুদায়িত্ব পালন করে চলেছে । -
সকাল থেকে এই প্রথমবার শর্মিলা ওর ক্যানাইনের গজদাঁতটা বের করে হাসলো । জ্যেনুইন , অকপট , নিপাট , অনাবিল আর , বলাই বাহুল্য , তীব্র যৌনাবেদনে ভরপূর সে হাসি । ..... দ্রুত হাত চালালো শর্মিলা । ...
This 041 Portion Update is Being Dedicated to Neellohit JanabJi with Subho Kamona and Saalam.
. . . ওর পড়ার টেবলের বাঁ দিকের তলার ড্রয়ারটায় বিশেষ দরকারী কাগজপত্র রাখে সাধারণত শর্মিলা । ওখানেই একটা মাঝারি সাইজের ডায়েরির ভিতরই , যতোদূর মনে হয় , ওটা রেখেছিল । ডায়েরিটা-ও উনিই দিয়েছিলেন সেদিন । ... একটু হাঁটকাতেই পেয়ে গেল ডায়েরিটা । দ্রুত সাপল্ করতেই আত্মপ্রকাশ করলো ছোট্ট কার্ডটা । হালকা গোলাপী রঙের উপর ঘণ সবুজে লেখা - অনির্বচনীয়া নাসরিন ( অ্যানি ) । নিচের বাঁ দিকের কোণ থেকে উপরের ডানদিকের কোণ বরাবর একগুচ্ছ টিউলিপ - হালকা হলুদ রঙের । আর , খুব খুদে খুদে লেখায় , একটি ফোন নাম্বার । ব্যাস্ , আর কিচ্ছু নেই কার্ডখানায় । অথচ , সবাই জানে , অ্যানিম্যামের বেশ ক'টি দেশী-বিদেশী ডিগ্রী আছে । নামের আগে 'ডক্টরেট' লেখার ছাড়পত্র আছে । প্রায়ই বিভিন্ন চ্যানেলের তর্কে-বিতর্কে মনস্তত্ব বিশ্লেষণের ডাক আসে । অসাধারণ পান্ডিত্য , প্রগাঢ় আধুনিকতা , নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি আর সহজ ভাষায় জটিল বিষয়েরও চুলচেরা বিশ্লেষণী ক্ষমতায় অ্যানি ম্যাম হয়ে ওঠেন সেইসব সভার প্রধাণ আকর্ষণ ।
কাঁধ ছাড়িয়ে আর একটুখানি নামা স্ট্রেইট চুল - যা' অনেকটাই বাদামীঘেঁষা । চোখের মণি-ও ঠিক কটাসে বা বিড়ালাক্ষী নয় - নীলাভ । প্রায় পাঁচ পাঁচ হাইট আর মানানসই বুক-কোমর-পাছার গমরঙা অ্যানিম্যামকে হঠাৎ দেখলে যেন বাঙালি মেয়ে মনেই হয় না । তাঁর উপস্হিতি এতোই প্রভাবশালী আর চৌম্বকীয় যে একবার সংস্পর্শে এলেই উনি মনের মাঝে থেকে যান । মাস আটেক আগে শর্মিলাদের কলেজের বড়দি আর সেক্রেটারি অনেক বলেকয়ে ম্যামকে রাজি করিয়েছিলেন ''আন্তর্জাতিক নারী দিবস'' অনুষ্ঠানে কলেজে আসতে । ছাত্রীরা কঠোর আর দীর্ঘ প্রস্তুতি নিয়েছিল বড়দির নজরদারি আর শারমিন ম্যামের সযত্ন তত্ত্বাবধানে । অ্যানিম্যাম এসেছিলেন । নিজের স্কুটারে । ঘিয়ে রঙের শাড়ি আর কালো স্লিভলেস ব্লাউজ পরেছিলেন । কী অসাধারণ ভাষণই না দিয়েছিলেন সেদিন ম্যাম । বিষয় ছিল - ''নারী স্বাধীনতায় পুরুষের ভূমিকা'' - মন্ত্রমুগ্ধের মতো চল্লিশ মিনিট কেটে গেছিল মুহূর্তে । - আর , শর্মিলার মনে হয়েছিল - ''কেন এমন হলো গো আমার এই নব যৌবনে....''
উদ্বোধনী-সঙ্গীত পরিবেশন করেছিল শর্মিলা-ই । ''আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে....'' - ওকে ডেকে কথা বলছিলেন ডক্টর নাসরিন - অ্যানি ম্যাম । নিজের ব্যাগ খুলে একটা ডায়েরী আর তার ফোল্ডারে একটা নেম-কার্ড রেখে বলেছিলেন ''এতে আমার প্রাইভেট নাম্বার আছে । কারোকে শেয়ার ক'রো না প্লিইজ । আর , তোমাকে আমার বাসায় আশা করছি কোন দিন - মানে , যে কোন দিন ।- ভাল থাকো ।...'' - ম্যামের শরীর থেকে উঠে-আসা গন্ধটা এখনও যেন শর্মিলর নাকে লেগে আছে । শর্মিলা ঠিক সিওর নয় - গন্ধটা কোন ফরাসী ডিও ছিলো , নাকি.... ওটা অ্যানি ম্যামেরই নিজস্ব ...... . . .
এক চান্সেই শর্মিলার কানে বাজলো সে-ই মেলোডিয়াস কন্ঠ - ''অ্যানি ইজ হিয়ার , প্লিইজ...'' - খানিকটা দ্বিধায় , অনেকটা ইতস্তত , করেই শর্মিলা ধীরে ধীরে বলতে পারলো - ''ম্যাম্ আমি শর্মিলা....'' ইনটারসেপ্টেড হলো শর্মিলা - জলতরঙ্গের মতো হাসির তরঙ্গে ভেসে-আসা কথাটা কানে বাজলো - '' আগুনের পরশমণি - শর্মিলা - ওয়েলকাম মাই ডার্লিং .... অ্যাতোদিনে তাহলে আমার ফোন নাম্বারটা ইউজ করলে ? - বলো ডিয়ার ...'' - অনির্বচনীয়া থামলেন । ওনার কন্ঠের আন্তরিকতা ছুঁয়ে গেল শর্মিলাকে , কেটে গেল দ্বন্দ্ব-দ্বিধা । খুব সহজেই যেন এবার বলতে পারলো শর্মিলা - ''ম্যাম্ , খুব দরকারে আপনাকে বিরক্ত করছি , আপনার পনের মিনিট সময় চাইছি ...'' - ''আরে , থামো থামো ... প্রথমেই - সংশোধন নয় , অ্যাক্কেবারে বাদ দাও ওই শব্দটা - 'বিরক্ত' , আর , দুই , পনের নয় , এখনই চলে এসো - দরকারে আজ থেকেই যাবে - নয় তো সে-ই রাত্রে । আমি ছেড়ে দিয়ে আসতেও পারি । ও হ্যাঁ , সবচে' ইমপর্ট্যান্ট কথাটাই তো বলা হয়নি - আমি ছুটির দিনে নতুন নতুন খাবার বানানোর চেষ্টা করি । আজও করছি । 'ফিটন্ বিরিয়ানি' আর 'শচি বল' ..... তো , কারোকে যদি খাইয়ে সার্টিফিকেটই না পেলাম তাহলে খেটে লাভ কি ? খুব ভাল হয়েছে । 'পরশমণি'কে পাওয়া গেল । .... তোমার মা কে দাও তো একবার ।''
বিনা বাক্য ব্যয়ে শর্মিলা ''মা তোমার সাথে অ্যানিম্যাম কথা বলবেন - নাও'' বলে ফোন ধরিয়ে দিলো । - ''ম্যাডাম , আমি অনির্বচনীয়া মানে অ্যানি আপনার একটুখানি সময় নিচ্ছি , প্লিইজ কিছু মনে করবেন না...'' - ''ছি ছি এ কী বলছেন ডক্টর নাসরিন ? আপনি কথা বলছেন এ তো আমার পরম সৌভাগ্য । বলুন প্লিইজ...'' শর্মিষ্ঠা একটু থামতেই অ্যানি বললেন - ''আগুনের পরশমণি শর্মিলা আমার কাছে আসবে , ওকে আমি লাঞ্চে চাইছি । ছুটির দিনে আমার তৈরি করা খাবারের একজন সমঝদার তো দরকার ....'' দু'প্রান্তে দুজনেই হেসে উঠলেন । অ্যানি কথা শেষ করলেন - ''তাই আপনার কাইন্ড পার্মিশন চেয়ে রাখছি । তেমন হলে ডিনারও আমরা দুজন একসাথেই করবো আজ ।'' - শর্মিষ্ঠা বলে দিলেন - ''আপনি নিজের হাতের রান্না খাওয়াবেন শর্মিকে - এ তো ওর ভাগ্য । আমাদেরও । তবে , একটা অনুরোধ আছে ম্যাম - আমাদের বাড়িতেও একদিন কিন্তু আপনাকে অন্নগ্রহণ করতে হবে দয়া করে ...'' - দু'জনের উচ্ছ্বসিত হাসিতে কথা শেষ হলো । - ফোন হস্তান্তরের পরে অ্যানি ম্যাম বললেন - ''তাহলে ? চলে এসো । যা খাবার এখানেই খাবে । কুঈঈক । ছাড়ছি - পরশমণি....আগুনের....হাহাহাহা....''
... কী মনে হলো , শর্মিলা ওর মায়ের একটা ঘি-রঙা শাড়ি পরলো । ব্লাউজটা অবশ্য নিজেরই কিন্তু কনুই-হাতা । স্লিভলেস নয় । ও রকম ব্লাউজ ওর নেই-ই । মা সঙ্গে নিয়ে যেতে দিলেন নিজর তৈরি করা এক বোতল কাসুন্দি আর একটা শান্তিনিকেতনী বাটিকের কাজ করা দামী ব্যাগ - কাপড়ের । শর্মিলাকে বললেন - ''শাড়ি পরে স্কুটি চালাতে পারবি তো ?'' - দত্ত সাহেব কাছেই ছিলেন , বেশ প্রত্যয়ী-কন্ঠেই বলে উঠলেন - ''সি ইজ আ মোস্ট ওয়ান্ডারফুল স্কুটি-চালিকা ।'' তারপরেই যোগ করলেন - ''আবদুল নামিয়ে দিয়ে আসবে না কি রে , মামণি ?'' - জিনিসপত্র গুছিয়ে নিতে নিতে মাথা নাড়লো শর্মিলা । - ''তাহলে চলছি মা , বাপি....'' - মনের দোলাচল ওর মুখের রেখায় একটুও বোঝা গেল না । ... রওনা হয়ে গেল শর্মিলা । . . . .
. . . . স্কুটিতে মিনিট কুড়ির দূরত্ব । ছোট্ট ছিমছাম বাড়িটার সামনে এসে দাঁড়াতেই একটু যেন নার্ভাস ফিল্ করলো শর্মিলা । গেটের পাশেই ডোর-বেল । ওটাতে হাত দিতেই দরজা খুলে গেল । হাঁটু-লেন্থ আকাশী রঙের হাউসকোট পরা অ্যানি ম্যাম যেন ঝলমল করে উঠলেন । -'' সামনের দিকে এগিয়ে ডানদিকে তাকাও , আমার স্কুটার আছে । পাশেই তোমারটাও রেখে চলে এসো । স্কুটি রেখে , সাইড বক্স থেকে মায়ের দেওয়া গিফ্ট দুটো বের করে , ভিতরে এসে দাঁড়ালো শর্মিলা । ঝুঁকে প্রণাম করতে যেতেই অ্যানি ওকে সপাটে টেনে বুকে জড়িয়ে ধরলেন । না , এটি নিছক 'হাগ্' নয় । রীতিমত প্যাশনেট্ আলিঙ্গন । শর্মিলার মাথায় এসে গেল - ''রোগের মতন বাঁধিব তোমারে দারুণ আলিঙ্গনে...'' 'রাহুর প্রেম' । কিন্তু কী আশ্চর্য , ও নিজেও যে দু'হাত জড়িয়ে ধরেছে ম্যামকে । ভাগ্যিস গিফ্ট দুটো আগেই একটা চেয়ারের উপর রেখে দিয়েছিল । - খুউব ফিসফিসিয়ে যেন অ্যানিম্যাম বলে উঠলেন মনে হলো - ''অ্যাতোদিনে তোমার সময় হলো ? আমি যে চাতকের মতো পথ চেয়ে বসেছিলাম ...'' হাতের বাঁধন যেন , মনে হলো , আরো দৃঢ় হলো ওনার । হাইট্ দুজনেরই প্রায় সমান সমান হওয়ায় দুজনের চুঁচি-ই দু'জনেরটায় চেপে রইলো টানটান হয়ে । - শর্মিলার নাকে এসে লাগলো সে-ই গন্ধ । ম্যামের শরীর থেকে উঠে-আসা সুগন্ধি । শর্মিলা নিশ্চিত হলো এটি কোনো পার্ফিউম্ নয় । ম্যামের নিজস্ব গন্ধ । রীতিমত উত্তেজক । কাম জাগানিয়া ।...
বাঁধন আলগা হ'তেই শর্মিলা গিফ্ট দুটো হাতে নিয়ে খুব আন্তরিক ভাবে বললো - '' মা পাঠিয়েছে আপনার জন্যে , ম্যাম্ ।'' - দৃশ্যতই অ্যানি ম্যাম খুশি হলেন বোঝা গেল । তবে , মুূহূর্তে মুখ গম্ভীর করে যেন আল্টিমেটাম দিচ্ছেন এমন করে বলে উঠলেন -''তোমার মা কে সুক্রিয়া । কিন্তু এ দুটো তখনই নিতে পারবো যখন বাহিকা আমাকে 'আপনি' ছেড়ে 'তুমি' আর 'ম্যাম' ছেড়ে 'আপু' বলবে , তার আগে নয় । - শর্মিলার মন টেনশনের মধ্যেও যেন আন্দোলিত হলো হঠাৎ-ওঠা ঘূ্র্ণি ঝড়ের মতো । এমনটি ও স্বপ্নেও আশা করেনি । - ''আপু , এ দুটো তোমার । না-ও...'' - শর্মিলার মুখে উচ্চারিত হ'তেই অ্যানি দু'হাতের অঞ্জলিতে ওর গাল চেপে ধরে সশব্দে চুমু দিলেন - ঠোটে । উপহার দুটি নিয়ে রাখলেন টেবলে । মুখে যথেষ্ট প্রশংসাও করলেন । - তারপর বললেন - ''মণি , তুমি নিশ্চয় শাড়িতে খুব কমফর্টেবল নও । এসো , নতুন আনইউজড হাউসকোট আছে । পরে নাও । তারপর আমার তৈরি স্পেশ্যাল ডিশ - ''শচি বল'' ।...
ছোট্ট রাউন্ড চারজনের জন্যে করা ডাঈনিং টেবলে বসার আগে লাইট কলাপাতা রঙের হাউসকোটে যেন ঝলমলিয়ে উঠছিল শর্মিলা । অ্যানি-ও বলেছিলেন - ''ঊঃঃ মণি , তোমায় যা দেখাচ্ছে না....'' - জড়তা সরিয়ে শর্মিলা শুধিয়েছিল - ''আমায় মণি বলছো কেন আপু ?'' - প্লেটে খাবার দিতে দিতে অ্যানি হাসতে হাসতে বলেছিলেন - ''ব্রিফ্ । আমার নামটা যেমন বিদেশী বন্ধুরা উচ্চারণ-ই করতে না পেরে ''অ্যানি'' বানিয়ে নিয়েছে 'অনির্বচনীয়া'কে - তেমনি তোমারটাও । না , শর্মিলা নয় । ওইই যে 'আগুনের পরশমণি...' - ছোট্ট করে আমার 'মণি' '' - দু'জনের শব্দিল হাসিতে সঙ্কোচের অবশিষ্ট মেঘটুকুও উড়ে গিয়ে ঝকঝকে রোদালো নীল আকাশ দেখা দিল ।
''চমৎকার খেতে'' - শর্মিলা একটা খেয়েই বলে উঠলো - ''কিন্তু আপু , এগুলোর শচি-বল্ নাম কেন ? কখনো শুনিনি , খায়-ও নি ।'' - '' সাস্পেন্স '' - স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বলেই যোগ করে দিলেন অ্যানি - ''কফি খেতে খেতে জানতে পারবে ।'' . . . কফিতে চুমুক দিয়ে জানতে চাইলেন - ''বল্ টা তো সোজা । গোলাকার বস্তু । যদিও অনেক অর্থেই শব্দটির ব্যবহার আছে । সে যাকগে , আমার মণি কি জানে 'শচি' কি বা কে ?'' - ফুলটস । শর্মিলা সপাটে চালালো - ''শচি হলেন দেবরাজ ইন্দ্র-পত্নী ।'' -
''নাঃ , আমার মণি শুধু পরীর মতো সুন্দরীই নয় , আড়ালি ম্যাজিক ওয়ান্ডও আছে দেখছি । একদম ঠিক । কিন্তু আরো একটু আছে । এ যুগেও দেখবে ধনকুবের শিল্পপতির লক্ষ লক্ষ খরচ করে কসমেটিক সার্জারি করা , মেকাপ নেওয়া পঞ্চাশোর্ধ বউ-ও কেমন সাঙ্ঘাতিক সমাজসেবী হয়ে উঠেছে । শুধু তাই নয় , একই সাথে ফুটবল-বোদ্ধা , ক্রিকেটপ্রেমী , ফিল্ম ক্রিটিক , ইতিহাসবেত্তা ..... কততো কী প্রতিভার বিচ্ছুরণ তার ভিতর হয়ে চলেছে - বিস্ময়ে সব হতবাক । - শচিদেবীও তাই-ই ছিলেন । দানবরাজ পুলোমার কন্যা । ইন্দ্র তাকে ;., করেছিলেন । পরে বিবাহ । দেবতার ঘরে দানব-কন্যা । বাঘের ঘরে ঘোগের বাসা । যত্তো মারদাঙ্গা খুনোখুনি রেষারেষি গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব - সব স-ব বরাদ্দ নীচুতলার কর্মীদের জন্যে । উপর মহল বরাবরই - ঈয়ে দোস্তি.....'' প্রাণখোলা হাসিতে গুমোট অনেকখানিই কেটে গেছে তখন শর্মিলার । নিজের সমস্যাটা কখন বলবে ভাবতে ভাবতেই অ্যানি আবার শুরু করলেন -'' তো , আমাদের তো মন্ত্রই হলো পতি পরম গুরু - তাই , শচীর পরিচয় হলো 'ইন্দ্রানী' নামে । আর , আরেকটি কাজও উনি নাকি বিগ বসের বউ বা ফার্স্ট লেডি হিসেবে করলেন । একটি আবিস্কার । নাম - 'ইন্দ্রানিক' । এটি এমন একটি সঙ্গমাসন যে ভঙ্গিতে অবস্থান করলে একজন অরজস্বলা অরমিতা মেয়েও অনায়াসে তার ভিতর গ্রহণ করতে পারবে একটি পূর্ণবয়স্ক পুরুষের বৃষ অথবা অশ্বলিঙ্গ ....'' - চেষ্টা করেও গালে শরমের ছোপ আটকাতে পারলো না শর্মিলা । চোখ এড়ালো না অ্যানিরও ।
''না , আমরা তো পরস্পরের বন্ধুই । তাই না মণি ?'' - তারপরেই বৈঠকি মেজাজে যোগ করলেন - ''অবশ্য আমার এই শচিবলের সাথে দেবরাজ বা তার বউ বা ওই ভয়ঙ্কর সুখের আসনভঙ্গি - কোনটিরই বিন্দুমাত্র যোগ নেই । এটির মূল মালমশলা হলো মাছ আর মুরগা । ফিশ-এর ''শ'' আর চিকেন-এর ''চি'' - মিলে মিশে হয়ে গেল - না , প্যারিসের ছেঁচকি নয় - হলো শচি । শচি বল ....'' - এবার কিন্তু চাঁদের হাসি বাঁধ ভাঙ্গলো । শর্মিলার দিকে তাকিয়ে থেমে রইলেন অ্যানি । হাসির গমক কমলে নিশ্চিত প্রত্যয়ে বলে উঠলেন - ''তোমার ঐ গজদাঁতটা কিন্তু ভবিষ্যতে অনেককেই খুন করবে ।'' . . . .
কফি শেষ । শর্মিলা কিছু বলার আগেই অ্যানি যেন ওর মন পড়ে নিলেন । - ''আমার বিরিয়ানি রেডি । তাই , এখন ছুটি । আজ কোন গেস্টকেও এন্টারটেইন করবো না । চলো , তোমার কথা শুনবো এবার ।'' - দুই , সমবয়স্ক না হলেও , সমমনস্ক সুন্দরী এগিয়ে চললেন অ্যানির বিলাসী বেডরুমের দিকে . . . . . ( চ ল বে....)