02-05-2023, 03:18 PM
ক্লাসের একদম লাস্ট বেঞ্চে মাথা নিচু করে বসে আছে কথা, যাতে এই সাজে কারো চোখে না পরে। ওর পাশেই বসে আছে রাফিয়া। হঠাৎ ক্লাসে একজন সুদর্শন পুরুষ এসে ঢুকলো। ক্লাসের সব মেয়েরা হা করে পুরুষটির দিকে তাকিয়ে আছে। এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যেন ওরা আগে কখনও এত সুন্দর পুরুষ মানুষ দেখেনি। কথা এখনও মাথা নিচু করেই বসে আছে। সবার ভালো লাগার সেই পুরুষ মানুষটি হঠাৎ বলে উঠল : হ্যালো স্টুডেন্ড। আই আ'ম ইউর নিউ টিচার।
মাই নেম ইজ মাসুদ আল ইভান।
নামটা শুনেই তড়িৎ গতিতে মাথা তুলে তাকালো কথা। সামনের মানুষটিকে দেখে চোখ দুটো পানিতে ভরে উঠলো। আজ ৭ বছর পর ওর অতীত ওর সামনে দাঁড়িয়ে আছে। মে অতীতকে পিছনে ফেলার জন্য ওর এত চেষ্টা। সামনের মানুষটাকে দেখেই ঘৃনায় ওর মনটা ফেটে পড়ছে। এই মানুষটার জন্যই ওকে হাজারো মিথ্যা অপবাদ মাথায় নিয়ে ওর শহড় ছাড়তে হয়েছিল। এই মানুষটার জন্যই ওর বাবা মা একদিন অপমানিত হয়েছিল। আজ সেই লোকটা ওর সামনে। নিজের ভয়ংকর অতীতকে সামনে দেখে বসে থাকতে পারছে না। নিজের ভয়ংকর অতীতটা ওর চোখের সামনে ভেসে উঠছে। বুকটা ফেটে যাচ্ছে। এত বছর পর কেন এই মানুষটা আবার ওর সামনে এলো? কেন? তবে মানুষটা বদলে গেছে অনেক। শেষ যখন এই মানুষটাকে কথা দেখেছিল তখন কেবল একটু একটু দাড়ি গজিয়েছিল আর এখন চাপ দাড়ি। আগে এত ফর্সা ছিল না , আগের থেকে অনেক ফর্সা হয়েছে। তখন বডিটাও এমন ছিল না, এখন জিম করা সুঠম বডি।
কথা বলতে বলতে ইভানের হঠাৎ চোখ আটকে যায় ক্লাসের একদম পিছনের বেঞ্চে বসা একটা মেয়ের দিকে। চোখ দুটো বড্ড চেনা চেনা লাগছে। মুখে মাস্ক থাকায় চোখ ছাড়া কিছু দেখা যাচ্ছে না। কোনো একদিন এমনই দুই বিনুনি করা এক কলেজ পড়ুয়া মেয়ের চোখে হারিয়ে গিয়েছিল ইভান। এই মেয়েটির চোখের দিকে তাকিয়ে আজ অতীতের সেই মধুর স্মৃতিগুলো ভেসে উঠছে ইভানের চোখের সামনে। হঠাৎ কিছু একটা ভেবে ইভানের মাথায় ধপ করে আগুন জ্বলে উঠলো। ওর চোখ মুখ দেখেই মনে হচ্ছে ভীষণ রেগে গেছে ও। কিন্তু কি কারনে এত রেগে গেল সবারই অজানা। ইভান আস্তে আস্তে কথার বেঞ্চের কাছে গিয়ে দাঁড়ালো।
ইভান কথার দিকে তাকিয়ে : স্টান্ড আপ।
কথা কাচুমাচু করে উঠে দাঁড়ালো। মস্কটা টেনে মুখটা আর একটু ভালোভাবে ঢেকে নিল । যে করেই হোক এই লোকটার কাছে ধরা পড়া যাবে না। যদিও ইভানের কথাকে চেনার কথা নয় কারন আজকের কথা আর ৭ বছর আগের কথার মধ্যে অনেক তফাৎ তবুও সাবধানের মার নেই।
ইভান : কোন ক্লাসে পড়ো তুমি?
কথা উত্তর না দিয়ে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ইভানের দিকে। শুধু কথা নয় ক্লাসের সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ইভানের দিকে। সে কোন ক্লাসে পড়াতে এসেছে সে কি নিজেই জানে না?
ইভান কথার কোনো উত্তর না পেয়ে আবার ধমক দিয়ে বলে উঠলো : কোন ক্লাসে পড়ো তুমি?
ইভানের ধমকে কথাসহ ক্লাস শুদ্ধো সবাই চমকে উঠলো। এতক্ষন যে যে মেয়েরা ইভানের উপর ক্রাশ খেয়েছে তারা নিজেরাই মনে মনে নিজেদের গালি দেওয়া শুরু করেছে। এটা স্যার নাকি কোনো জমদুত?
কথাকে চুপ করে থাকতে দেখতে ইভানের মাথায় আরও আগুন ধরে গেল।
ইভান : স্পিক আপ? অনার্সে পড়া একটা মেয়ে হয়ে এই সব বাচ্চাদের মতো কি পোশাক পড়ে ক্লাসে এসেছো? তুমি কি এখনও বাচ্চা?
ইভানের কথা শুনে এতক্ষনে সবাই বুঝতে পারলো ইভান কেন এতক্ষন কথাকে ঝাড়ছিল। কথা এখনও চুপচাপ বসে দাঁড়িয়ে আছে।
ইভান : হে ইউ কোনো ম্যানার্স নেই তোমার? চুপ করে দাঁড়িয়ে আছো কেন? কোনো টিচার কিছু জিজ্ঞেস করলে উত্তর দিতে হয় তা জানো না ? সমস্যা কি তোমার? আচ্ছা বেয়াদব মেয়ে তো তুমি?
ইভান আরও কিছু বলতে যাবে এর মধ্যে ক্লাসের ঘন্টা পড়ে গেল। ইভান ঘন্টার শব্দ শুনে এক মিনিটও দাড়িয়ে না থেকে গটগট করে ক্লাস থেকে বেড়িয়ে গেল । ইভান বেড়িয়ে যেতে কথা যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো। একক্ষন ওর নিঃশ্বাসটা যেন ওর গলার কাছে আটকে ছিল।
ইভান বেড়িয়ে যেতেই রাফিয়া : এই কথা স্যার যা জিজ্ঞেস করছিল তার উত্তর না দিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলি কেন?
কথা কটমট করে রাফিয়ার দিকে তাকিয়ে : এই সব হয়েছে তোর জন্য। তুই যদি আমাকে ঐ ফালতু ডেয়ার না দিতি তাহলে আমাকে এত কথা শুনতেই হতো না। আর এই বদমাইশটাও প্রথম দিন আসতে না আসতেই আমাকে ঝেড়ে দিল।
রাফিয়া : এই তুই এত সুন্দর হ্যান্ডসাম একজন স্যারকে বদমাইশ বলছিস?
কথা কটমট করে রাফিয়ার দিকে তাকাতেই ও ভয়ে চুপসে গেল।
----------
কলেজ থেকে ফিরেই কথা কারো সাথে কোনো কথা না বলে রুমে ঢুকে দরজা আটকে দিয়ে ব্যাগটা বিছানায় ছুড়ে মেরে ধপ করে ফ্লোরে বসে পড়লো। ওর মনের মধ্যে আজ ঝড় বয়ে যাচ্ছে। আজ এত দিন পর ওর অতীত ওর সামনে। ওর বুকের মধ্যে পুরোনো ব্যাথা নাড়া দিয়ে উঠছে। ওর চোখের সামনে ভেসে উঠছে সমাজের মানুষ কিভাবে ওর দিকে সেদিন আঙুল তুলেছিল। কিভাবে এই মানুষটার জন্য সমাজের মানুষ ওকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছলো। বুকের মধ্যে খুব কষ্ট হচ্ছে। পুরোনো কষ্টগুলো আবার ওকে ঘিরে ধরেছে আজ। কিন্তু না ও আর আগের মতো নেই ও এখন অনেক শক্ত। ও এখন নিজেকে নিজে সামলে নিতে জানে। ও আর কাঁদবে না। ওকে শক্ত হতেই হবে। থাকুক এ মানুষটা ওর চোখের সামনে ওকে ভেঙে পড়লে চলবে না। আর বাবা মা কেও কিছু বলা যাবে না। তারা এমনি সারাদিন ওকে নিয়ে চিন্তায় থাকে। তার উপর যদি আবার ইভানের ফিরে আসার খবর শুনতে পায় তাহলে তো হলোই ওর কলেজে যাওয়াই বন্ধ করে দিবে । আর ওর ভাই যদি ইভানের কথা জানতে পারে তাহলে এবার একটা রক্তারক্তি কান্ড ঘটিয়ে ফেলবে। তার থেকে বিষয়টা নিজে হ্যান্ডেল করাই ভালো।
----------
( পরের দিন )
কলেজ ক্যান্টিনে বই মুখে গুজে বসে আছে কথা । আর ওর পাশেই বকবক করেই চলছে রাফিয়া। এই একটা মেয়ে সারাক্ষণ ননস্টপ কথা বলতেই থাকে। এত কথা একটা মানুষ কিভাবে বলতে পারে মাঝে মাঝে ভেবেই পায় না কথা। এর মধ্যে হঠাৎ ক্যান্টিন নিশ্চুপ হয়ে গেল। এতক্ষন তো ক্যান্টিনে ভালোই কোলাহল ছিল হঠাৎ এত নিশ্চুপ হয়ে গেল কেন দেখতে বইটা মুখ থেকে সরাতেই দেখতে পেল ইভান ক্যান্টিনে ঢুকেছে। আর সব মেয়েরা কথা থামিয়ে ইভানের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে তাই এত নিশ্চুপ। কথা তাকিয়ে দেখলো এই রাফিয়াটাও হা করে ইভানের দিকে তাকিয়ে আছে। সবাই এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যেন মনে হচ্ছে চোখ দিয়েই ইভানকে এখন এক একজন গিলে খেয়ে ফেলবে। ইভানকে দেখেই কথা বই দিয়ে মুখ ঢেকে ফেললো। ইভান তাকিয়ে দেখে সব মেয়েরা ওর দিকে তাকিয়ে আছে শুধু একটা মেয়ে ওর দিকে না তাকিয়ে বই দিয়ে মুখ ঢেকে রেখেছে। ইভান ভ্রু কুঁচকে কথার দিকে তাকিয়ে তারপর কথার দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো। কথা বই মুখে দিয়ে রাখলেও বেশ ভালোই বুঝতে পারছে ইভান ওর দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে। ইভান যত ওর দিকে এগোচ্ছে ততো কথার বুকের মধ্যে থাকা কলিজাটা তার লাফানোর গতিও বাড়িয়ে দিচ্ছে। ইভান একদম কথার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথাকে পর্যবেক্ষণ করছে। কেন যেন এই মেয়েটাকে ওর ভীষণ পরিচিত মনে হয় ।
চলবে....
( ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন.ধন্যবাদ)
মাই নেম ইজ মাসুদ আল ইভান।
নামটা শুনেই তড়িৎ গতিতে মাথা তুলে তাকালো কথা। সামনের মানুষটিকে দেখে চোখ দুটো পানিতে ভরে উঠলো। আজ ৭ বছর পর ওর অতীত ওর সামনে দাঁড়িয়ে আছে। মে অতীতকে পিছনে ফেলার জন্য ওর এত চেষ্টা। সামনের মানুষটাকে দেখেই ঘৃনায় ওর মনটা ফেটে পড়ছে। এই মানুষটার জন্যই ওকে হাজারো মিথ্যা অপবাদ মাথায় নিয়ে ওর শহড় ছাড়তে হয়েছিল। এই মানুষটার জন্যই ওর বাবা মা একদিন অপমানিত হয়েছিল। আজ সেই লোকটা ওর সামনে। নিজের ভয়ংকর অতীতকে সামনে দেখে বসে থাকতে পারছে না। নিজের ভয়ংকর অতীতটা ওর চোখের সামনে ভেসে উঠছে। বুকটা ফেটে যাচ্ছে। এত বছর পর কেন এই মানুষটা আবার ওর সামনে এলো? কেন? তবে মানুষটা বদলে গেছে অনেক। শেষ যখন এই মানুষটাকে কথা দেখেছিল তখন কেবল একটু একটু দাড়ি গজিয়েছিল আর এখন চাপ দাড়ি। আগে এত ফর্সা ছিল না , আগের থেকে অনেক ফর্সা হয়েছে। তখন বডিটাও এমন ছিল না, এখন জিম করা সুঠম বডি।
কথা বলতে বলতে ইভানের হঠাৎ চোখ আটকে যায় ক্লাসের একদম পিছনের বেঞ্চে বসা একটা মেয়ের দিকে। চোখ দুটো বড্ড চেনা চেনা লাগছে। মুখে মাস্ক থাকায় চোখ ছাড়া কিছু দেখা যাচ্ছে না। কোনো একদিন এমনই দুই বিনুনি করা এক কলেজ পড়ুয়া মেয়ের চোখে হারিয়ে গিয়েছিল ইভান। এই মেয়েটির চোখের দিকে তাকিয়ে আজ অতীতের সেই মধুর স্মৃতিগুলো ভেসে উঠছে ইভানের চোখের সামনে। হঠাৎ কিছু একটা ভেবে ইভানের মাথায় ধপ করে আগুন জ্বলে উঠলো। ওর চোখ মুখ দেখেই মনে হচ্ছে ভীষণ রেগে গেছে ও। কিন্তু কি কারনে এত রেগে গেল সবারই অজানা। ইভান আস্তে আস্তে কথার বেঞ্চের কাছে গিয়ে দাঁড়ালো।
ইভান কথার দিকে তাকিয়ে : স্টান্ড আপ।
কথা কাচুমাচু করে উঠে দাঁড়ালো। মস্কটা টেনে মুখটা আর একটু ভালোভাবে ঢেকে নিল । যে করেই হোক এই লোকটার কাছে ধরা পড়া যাবে না। যদিও ইভানের কথাকে চেনার কথা নয় কারন আজকের কথা আর ৭ বছর আগের কথার মধ্যে অনেক তফাৎ তবুও সাবধানের মার নেই।
ইভান : কোন ক্লাসে পড়ো তুমি?
কথা উত্তর না দিয়ে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ইভানের দিকে। শুধু কথা নয় ক্লাসের সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে ইভানের দিকে। সে কোন ক্লাসে পড়াতে এসেছে সে কি নিজেই জানে না?
ইভান কথার কোনো উত্তর না পেয়ে আবার ধমক দিয়ে বলে উঠলো : কোন ক্লাসে পড়ো তুমি?
ইভানের ধমকে কথাসহ ক্লাস শুদ্ধো সবাই চমকে উঠলো। এতক্ষন যে যে মেয়েরা ইভানের উপর ক্রাশ খেয়েছে তারা নিজেরাই মনে মনে নিজেদের গালি দেওয়া শুরু করেছে। এটা স্যার নাকি কোনো জমদুত?
কথাকে চুপ করে থাকতে দেখতে ইভানের মাথায় আরও আগুন ধরে গেল।
ইভান : স্পিক আপ? অনার্সে পড়া একটা মেয়ে হয়ে এই সব বাচ্চাদের মতো কি পোশাক পড়ে ক্লাসে এসেছো? তুমি কি এখনও বাচ্চা?
ইভানের কথা শুনে এতক্ষনে সবাই বুঝতে পারলো ইভান কেন এতক্ষন কথাকে ঝাড়ছিল। কথা এখনও চুপচাপ বসে দাঁড়িয়ে আছে।
ইভান : হে ইউ কোনো ম্যানার্স নেই তোমার? চুপ করে দাঁড়িয়ে আছো কেন? কোনো টিচার কিছু জিজ্ঞেস করলে উত্তর দিতে হয় তা জানো না ? সমস্যা কি তোমার? আচ্ছা বেয়াদব মেয়ে তো তুমি?
ইভান আরও কিছু বলতে যাবে এর মধ্যে ক্লাসের ঘন্টা পড়ে গেল। ইভান ঘন্টার শব্দ শুনে এক মিনিটও দাড়িয়ে না থেকে গটগট করে ক্লাস থেকে বেড়িয়ে গেল । ইভান বেড়িয়ে যেতে কথা যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো। একক্ষন ওর নিঃশ্বাসটা যেন ওর গলার কাছে আটকে ছিল।
ইভান বেড়িয়ে যেতেই রাফিয়া : এই কথা স্যার যা জিজ্ঞেস করছিল তার উত্তর না দিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলি কেন?
কথা কটমট করে রাফিয়ার দিকে তাকিয়ে : এই সব হয়েছে তোর জন্য। তুই যদি আমাকে ঐ ফালতু ডেয়ার না দিতি তাহলে আমাকে এত কথা শুনতেই হতো না। আর এই বদমাইশটাও প্রথম দিন আসতে না আসতেই আমাকে ঝেড়ে দিল।
রাফিয়া : এই তুই এত সুন্দর হ্যান্ডসাম একজন স্যারকে বদমাইশ বলছিস?
কথা কটমট করে রাফিয়ার দিকে তাকাতেই ও ভয়ে চুপসে গেল।
----------
কলেজ থেকে ফিরেই কথা কারো সাথে কোনো কথা না বলে রুমে ঢুকে দরজা আটকে দিয়ে ব্যাগটা বিছানায় ছুড়ে মেরে ধপ করে ফ্লোরে বসে পড়লো। ওর মনের মধ্যে আজ ঝড় বয়ে যাচ্ছে। আজ এত দিন পর ওর অতীত ওর সামনে। ওর বুকের মধ্যে পুরোনো ব্যাথা নাড়া দিয়ে উঠছে। ওর চোখের সামনে ভেসে উঠছে সমাজের মানুষ কিভাবে ওর দিকে সেদিন আঙুল তুলেছিল। কিভাবে এই মানুষটার জন্য সমাজের মানুষ ওকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছলো। বুকের মধ্যে খুব কষ্ট হচ্ছে। পুরোনো কষ্টগুলো আবার ওকে ঘিরে ধরেছে আজ। কিন্তু না ও আর আগের মতো নেই ও এখন অনেক শক্ত। ও এখন নিজেকে নিজে সামলে নিতে জানে। ও আর কাঁদবে না। ওকে শক্ত হতেই হবে। থাকুক এ মানুষটা ওর চোখের সামনে ওকে ভেঙে পড়লে চলবে না। আর বাবা মা কেও কিছু বলা যাবে না। তারা এমনি সারাদিন ওকে নিয়ে চিন্তায় থাকে। তার উপর যদি আবার ইভানের ফিরে আসার খবর শুনতে পায় তাহলে তো হলোই ওর কলেজে যাওয়াই বন্ধ করে দিবে । আর ওর ভাই যদি ইভানের কথা জানতে পারে তাহলে এবার একটা রক্তারক্তি কান্ড ঘটিয়ে ফেলবে। তার থেকে বিষয়টা নিজে হ্যান্ডেল করাই ভালো।
----------
( পরের দিন )
কলেজ ক্যান্টিনে বই মুখে গুজে বসে আছে কথা । আর ওর পাশেই বকবক করেই চলছে রাফিয়া। এই একটা মেয়ে সারাক্ষণ ননস্টপ কথা বলতেই থাকে। এত কথা একটা মানুষ কিভাবে বলতে পারে মাঝে মাঝে ভেবেই পায় না কথা। এর মধ্যে হঠাৎ ক্যান্টিন নিশ্চুপ হয়ে গেল। এতক্ষন তো ক্যান্টিনে ভালোই কোলাহল ছিল হঠাৎ এত নিশ্চুপ হয়ে গেল কেন দেখতে বইটা মুখ থেকে সরাতেই দেখতে পেল ইভান ক্যান্টিনে ঢুকেছে। আর সব মেয়েরা কথা থামিয়ে ইভানের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে তাই এত নিশ্চুপ। কথা তাকিয়ে দেখলো এই রাফিয়াটাও হা করে ইভানের দিকে তাকিয়ে আছে। সবাই এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যেন মনে হচ্ছে চোখ দিয়েই ইভানকে এখন এক একজন গিলে খেয়ে ফেলবে। ইভানকে দেখেই কথা বই দিয়ে মুখ ঢেকে ফেললো। ইভান তাকিয়ে দেখে সব মেয়েরা ওর দিকে তাকিয়ে আছে শুধু একটা মেয়ে ওর দিকে না তাকিয়ে বই দিয়ে মুখ ঢেকে রেখেছে। ইভান ভ্রু কুঁচকে কথার দিকে তাকিয়ে তারপর কথার দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো। কথা বই মুখে দিয়ে রাখলেও বেশ ভালোই বুঝতে পারছে ইভান ওর দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে। ইভান যত ওর দিকে এগোচ্ছে ততো কথার বুকের মধ্যে থাকা কলিজাটা তার লাফানোর গতিও বাড়িয়ে দিচ্ছে। ইভান একদম কথার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথাকে পর্যবেক্ষণ করছে। কেন যেন এই মেয়েটাকে ওর ভীষণ পরিচিত মনে হয় ।
চলবে....
( ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন.ধন্যবাদ)
===========================
পড়তে থাকুন চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।
Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.
( Post By- Kam Pagol)