Thread Rating:
  • 114 Vote(s) - 2.66 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
কিছু মনের সত্যি কথা
- কাল তাহলে দেখা করছিস তো?
- হ্যাঁ ! অবশ্যই ম্যাডাম।
- হ্যাঁ, দেখা কর অনেক দরকার আছে, অন্তত কাল সামনাসামনি বসে একটা কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারবো। এটা বলে ফোন কেটে দেয় দিশারী।
ঋষভ আর দিশারীর সম্পর্ক প্রায় এক বছরের, কিন্তু  দিশারী পড়াশুনোর জন্য কলকাতাতে নেই প্রায় নয় মাস হতে চললো। সম্পর্কের প্রথমে দেখা করা সম্ভব হলেও বিগত নয় মাস আর তা হচ্ছে না এবং দুজনের মধ্যে একটা দেওয়াল তৈরী হচ্ছে এই টুকু দুজনেই বুঝতে পারে। নববর্ষ উপলক্ষে পরশু দিন দিশারী কলকাতায় এসেছে। কিছুক্ষন পর দিশারী ঋষভ কে ফোন করে বলে - কাল তো তোর বাড়িতে পুজো আছে !
- হুঁ! তুই তো জানিস।
- আজ বিকেলে তোর বাড়িতে একটা পার্সেল যাবে ওটা রিসিভ করিস।
- কিসের পার্সেল? তুই আবার কি অর্ডার দিলি।
- অত জানি না । পার্সেল নিয়ে নিবি। আর কাল আমি যাবো।
- বলছি শোন না। কেমন জানি লাগছে কথা টা বলতে।
- বল তাড়াতাড়ি। জানিস একেই এমন কাজ করে আছিস তোর উপর আমার মাথা গরম হয়ে আছে। নাটক করিস না বেশি।
- সব সময় এই রকম রেগে থাকিস না । জানিস তো নতুন অফিস । তাই আমি সময় দিতে পারি নি। আর এত রাগ করিস না । আর হ্যাঁ ! যেটা বলছিলাম কাল আমাদের বাড়িতে তুই লাল শাড়ি টা পড়ে আসবি। যেটা আমি তোকে পুজোতে দিয়েছিলাম।
একসাথে ছিলাম না বলে তো আমার বউটা কান্নাকাটি করে গেলো , কাপড় টা পরলো না ।
- বউ কি রে। একদম বউ বলবি না , খুব ঝগড়া করিস আমার সাথে। বউ হলে কি আর এত ঝগড়া করতিস, অফিস এর অছিলায় একটু কথাও না বলে ঘুমিয়ে পড়তিস। ঠিক আছে পড়বো। কাল হয়তো সব শেষ হয়ে যাবে ।
- দেখা যাক! কি হয়। কাল লাল শাড়ি টা পরে আসবি । ব্যাস আমি আর কিছু জানি না।
পরের দিন দিশারী ঋষভ এর দেওয়া লাল শাড়ি পড়েছে আর ভাবছে যত এই অল্প দিনের সম্পর্ক হোক ওরা তো ভালোবাসে, আলাদা ভাবে থাকবে কি করে। ঋষভ এর সাথে ঝগড়া হলে তো ওর কাজে মন বসে না। দিশারী ঋষভ কে ফোন করে বললো - তুই পাঞ্জাবী টা পেয়েছিস , পছন্দ তো।
- হুম! পছন্দ । কিন্তু তোকে এত পাকামি কে করতে বলেছে। বাইরে থাকিস, বাড়ি থেকে যা টাকা যায় সেই খান থেকেও টাকা জমিয়ে আমায় কিনে দিচ্ছিস এটাওটা। ভালোবাসিস সেটা আমি জানি , সব সময় বাচ্চাদের মত এত অবুঝ হলে হয় , বাচ্চাদের মত হলে তো ঝগড়া হবেই । আর রাগ করিস না । জানি সময় দিতে পারি না সেই ভাবে তার জন্য sorry বলছি আর রাগ করিস না ।
- না করছি না আর রাগ। জানিস তো একবার ভেবেছিলাম আজ সব শেষ করে দেবো। বিশ্বাস কর সব শেষ হবে শুনলে না কেমন যেনো বুকের ভিতরে চিন চিন করে ওঠে।
- সব জানি আমি। এই সব ছাড়। আমাদের ঝগড়াও হবে আবার আমাদের একসাথে থাকতেও হবে। ভুলে যাস না আমি তোর বর। তুই আমার সব কিছু শুনে চলবি।
- বর না ! তুই হলি আমার বর্বর।
- সে বর এই বল আর বর্বর এই বল আজ একটু তাড়াতাড়ি আসিস। তোর সাজগোজ করতে যা সময় লাগে আমার বাড়ির পুজো শেষ হয়ে যাবে , আর তোর  আর আসার সময়  হচ্ছে না ।
- হুম। এই বার ফোন রাখ। রেডি হতে দে।
- হ্যাঁ। রেডি হয়ে লক্ষ্মী মেয়ের মতো ছবি দিবি । আর তাড়াতাড়ি আসিস। সাবধানে আসবি।
দিশারী ঋষভের বাড়িতে গিয়ে পুরো অবাক। নববর্ষের পুজো হচ্ছে ঠিকই কিন্তু সেই খানে উকিল বাবু ও এসেছে। আর সাথে আছে দিশারীর বাড়ির লোক । দিশারী মা বাবা আর সবাই কে দেখে অবাক। ঋষভ এর মা দিশারী কে ঘরে ডেকে নিয়ে গিয়ে হাতে কিছু গয়না দিয়ে বলে এই গুলো পড়ে আয়।
ঋষভ দিশারী কে লাল শাড়ি পরে দেখে কিছুক্ষন হা করে তাকিয়ে দেখে বলে ওঠে- উকিল বাবু কোথায় সই করতে হবে বলুন।
- এই সব কি রে ঋষভ। আমায় আগে বলিস নি তো। একেই আমরা থাকি আলাদা জায়গায়। তুই কলকাতা আমি দিল্লি। এর মধ্যে রেজিস্ট্রি, পাগল হয়ে গেছিস।
- না আগে তুই সই কর ! তার পর সব বলছি। এত ভাবিস না । সই কর।
সই সাবদ হওয়ার পর আইনত এখন দিশারী আর ঋষভ স্বামী স্ত্রী। - এবার কি হবে ? আমি তো পরশু দিল্লি চলে যাচ্ছি । এই বার তো তুই বর আরো বেশি করে ঝগড়া করবি।
- তুই একা যাবি এটা তোকে কে বললো। আমিও যাবো।
- পাগল ! তবে এই খানের তোর অফিস কে করবে।
- আমার অফিস এখন দিল্লি তে ম্যাডাম। আর আমি আপনার সাথে এই থাকবো এক বাড়ি তে । আমার শশুর মশাই আমায় আজকের এই সব বুদ্ধি দিয়েছে এবং আমাদের এক সাথে সারা জীবন থাকার ব্যাবস্থা করে দিয়েছে।
- কি বলিস !
- হ্যাঁ গো গিন্নি। চলো এইবার সবাই কে প্রণাম করে আমাদের নতুন বছর শুরু করি ।
- শোন এই সব গিন্নি বলবি না ,মেরে দেবো।
- বিয়ে করে বউ হয়ে গেলি কিন্তু ঝগড়া টা করছিস দেখ বাচ্চাদের মত। বাড়ির সবাই কি ভাবছে বলতো, দেখ সবাই হাসছে।
- চল সবাই কে প্রণাম করে আশির্বাদ নিয়ে নতুন পথ চলা শুরু করি।


          অন্তরীপা পাল
[+] 1 user Likes আমিও_মানুষ's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: কিছু মনের সত্যি কথা - by আমিও_মানুষ - 01-05-2023, 08:24 PM



Users browsing this thread: 21 Guest(s)