Thread Rating:
  • 16 Vote(s) - 2.63 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Misc. Erotica বদ্ধ কেবিনে বন্দী দুজনে (সমাপ্ত)
#17
                                            ।।২।।

লাঞ্চের বেশ কিছুক্ষণ পরে ডাক্তারবাবু রাউন্ডে এলেন। সকাল থেকে দুবার প্রেশার, সুগার আর টেম্পারেচার মাপা হয়েছে। সবই নর্মাল রেঞ্জেই আছে। গতকাল লিপিড প্রোফাইল আর লিভার ফাঙ্কশন টেস্টও করা হয়েছে। তার রিপোর্ট ও কখন ফাইলে ঢুকে গেছে সঞ্জয় জানতে পারেনি। কোলেস্টেরলটা বর্ডার লাইনে আর ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রাটা বেশ উপরের দিকে। হল্টার মেশিনটা লাগানোর জন্য বিশেষ কোনো অসুবিধা হচ্ছে কিনা জানতে চাইলেন। পায়খানা- পেচ্ছাপ পরিষ্কার হচ্ছে কিনা জানতে চাইলেন। ডাক্তারবাবুর সাথে আরএমও এসেছিলেন। বুকের উপর থাকা হল্টার মেশিনটা চব্বিশ ঘন্টা পরেই খুলে নেওয়া হবে। ঐটা বইতে একটু অসুবিধাই হচ্ছে সঞ্জয়ের। তারা চলে যাবার পর রুকসানাও খেতে বেরিয়ে গেলো। ফাঁকা রুমটায় একা একা শুয়ে রুকসানার কথাই ভাবছিল সঞ্জয়। এর মধ্যেই চোখটা লেগে এসেছিল ওর। 

বা হাতে করা চ্যনেলটায় একটা শীতল অনুভূতি অনুভব করতেই জেগে উঠলো ও। আরেকটি নতুন মেয়ে ওর স্যালাইনের পাউচটা নিয়ে নাড়াচাড়া করছে। ঘড়ির দিকে তাকালো সঞ্জয়। দুটো বেজে পঁয়ত্রিশ। ডিউটি চেঞ্জ হয়ে হ্যান্ড ওভার হয়ে গেছে। মনে মনে আশা করেছিল সঞ্জয় যদি দীপান্বিতা আসে। এই নতুন মেয়েটিকে দেখে মন খারাপ হয়ে গেলো ওর। কিন্তু রুকসানা কি এখনও ফিরে আসেনি? সে কখন যে গেছে। ভালো করে এই নতুন মেয়েটিকে লক্ষ্য করলো সঞ্জয়। বেশ রোগা মেয়েটি।  দেখতে মন্দ না হলেও নারীদেহের সম্পদগুলো দিতে যেন কিঞ্চিৎ কার্পণ্য করেছেন ভগবান। গায়ের রঙ পরিষ্কার কিন্তু স্তন যেন দেহের সঙ্গে মিশে গেছে। গালগুলো চাপা পাছায়ও মাংস নেই।  কিছুক্ষণ পরেই ঘরে প্রবেশ ঘটলো সবুজ ইউনিফর্ম পরা একটা কম বয়সী ছেলের। প্রথমে থাকে জুনিয়র ডাক্তার বলে ভাবলেও ওদের কথাবার্তায় ভ্রান্তি কাটলো সঞ্জয়ের। মেয়েটির নাম তনুশ্রী আর ছেলেটির নাম রুপম। মনে হয় বয়ফ্রেন্ড - গার্লফ্রেন্ড। মানে ওই কচি বয়সের প্রেমিক প্রেমিকা আর কি! কিছুক্ষণ পর ছেলেটি বেরিয়ে গেল। আবার বেশ খানিকক্ষণ পর ফিরেও এলো। প্রাণোচ্ছল এই দুই যুবক যুবতীর নিষ্পাপ আমোদে পুরনো স্মৃতির সরণীতে ফিরে যাচ্ছিল ও। সঞ্জয়ের মনে পড়ছিল ওর কলেজজীবনের কথা। শর্মিলার কথা, ওর বাকি বন্ধুদের কথা। কলেজে ওদের ডিপার্টমেন্টে সঞ্জয় আর শর্মিলা ছাড়াও আরো বেশ কয়েকটা প্রেমিক - প্রেমিকার জোড় ছিল যারা সেই সময় একে অন্যকে চোখে হারাতো। কিন্তু অর্ণব আর প্রিয়াঙ্কা ছাড়া আর কারোর প্রেমই টেকেনি। অর্ণব আর প্রিয়াঙ্কার এখন বিয়ে করে পুনেতে সেটলড। ওদের একটা মেয়েও হয়েছে রিসেন্টলি। ফেসবুকে নিয়মিত আপডেট দেয় ওরা। স্মৃতির ছেঁড়া পাতাগুলো নিয়ে খেলতে খেলতে চোখটা লেগে এসেছিল সঞ্জয়ের। মাথায় হাতের স্পর্শে তন্দ্রা কাটলো ওর। ভিজিটিং আওয়ার্স শুরু হয়ে গেছে। পারমিতা এসে কখন যে ওর মাথার কাছে দাড়িয়েছে! পারমিতা আজ বেশি সময় নিলো না। সঞ্জয়ের চার - পাঁচজন অফিস কলিগরা এসেছে। তাদেরকেও সময় দিতে হবে। তবে সবার শেষে যে ঢুকলো তাকে সঞ্জয় এক্সপেক্ট করেনি। মিঃ কমলেশ প্যাটেল কেবিনে ঢুকতেই একটু অবাক হলো সঞ্জয়। সঞ্জয়ের পেয়ালার বন্ধু এবং সঞ্জয় - পারমিতার শুভাকাঙ্ক্ষী হিসেবে আসতেই পারে মিঃ প্যাটেল। 
"কেয়া রে? তবিয়াত ক্যায়সা হ্যায় তেরা? - দেতো হাসি হেসে প্যাটেল জিজ্ঞাসা করল সঞ্জয়কে। 
" অভি তো ঠিক হি লগ রহে হ্যায়।"
কেবিনের স্লাইডিং দরজাটা দিয়ে বেশ কয়েকটা অপরিচিত মুখ সমানে উকি মেরে চলেছে।  এই হাসপাতালেরই তৈলমর্দনকারী কর্মচারীরা হয়তো। তদের একজন ডিরেক্টর সাহেব এসেছেন বলে কথা! রুপম আর তনুশ্রীরও বডি ল্যাঙ্গুয়েজ পাল্টে গেছে। 
" সোচা থা পেহলে হি আউঙ্গা লেকিন হো নাহি পায়া ব্রাদার।"
বহুত ব্যস্ত মানুষ প্যাটেল। কর্মক্ষেত্রে ব্যস্ত সঞ্জয়ও। কিন্তু সঞ্জয় চাকরি করে। আর প্যাটেল বড় ব্যবসাদার। তাই দুজনের ব্যস্ততারও পার্থক্য রয়েছে। সেটা সঞ্জয় নিজের মালিকদের  আর ঘরণীকে দেখে বোঝে। পারমিতাদের ব্যবসাটা নেহাৎই ছোট। তা সত্ত্বেও বেচারী একটুও সময় পায় না। নিজের জন্য খাটার একটা অদ্ভুত তৃপ্তি রয়েছে। যেটা নিজের কাজের মধ্যে সঞ্জয় খুঁজে পায় না। কোম্পানির দক্ষিণ  - পূর্ব এশিয়ার কাজকর্মের পুরোটাই ওকে সামলাতে হয়। তবুও দিনের শেষে কোম্পানির মাসমাইনে করা একজন চাকর ও। 
" হসপিটাল ক্যায়সা লাগা ভাই?"
"আচ্ছা হ্যায়। বহুত বড়িয়া। লেকিন উসসে ভি আচ্ছা ইয়াহা কা ম্যাডাম লোগ হ্যায়। " - হেসে উত্তর দিল সঞ্জয়। 
খোচাটা বুঝেই হো হো করে হেসে উঠল প্যাটেল।। আর ওদের কথায় ওখানে উপস্থিত তনুশ্রী বোধ হয় একটু লজ্জা পেয়ে গেলো। 
" চুন চুন কে লাতে হ্যায় ভাই...চুন চুন কে।" - বলেই তনুশ্রীর দিকে ইঙ্গিত করে বিকট অট্টহাসিতে ফেটে পড়ল নারীলোলুপ মারওয়ারীটা। তনুশ্রী এবার একটু অস্বস্তিতেই পড়ে গেলো। সঞ্জয় লক্ষ্য করলো তনুশ্রীর হাত ইতিমধ্যেই শক্ত করে ধরে ফেলেছে রুপম। বেশ ভালো লাগলো সঞ্জয়ের। এইভাবেই ও সারা জীবন শর্মিলার পাশে থাকতে চেয়েছিল। কিন্তু বিধাতাপুরুষ ওর জীবনসঙ্গিনী হিসেবে নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলেন পারমিতাকেই। স্ত্রী হিসেবে সঞ্জয়ের প্রতি পারমিতার কোনো খামতিও সঞ্জয় বিশেষ ভাবে খুঁজে পায় না। প্রথম প্রথম পারমিতাকে বিশেষ সময় দিত না সঞ্জয়। শুধু রাতগুলোতে জানোয়ারের মতো নিজের পাশবিক প্রবৃত্তি পূরণ করতো। নিজের একঘেঁয়েমি কাটাতে পারমিতাও ওর কলেজের বান্ধবী পুষ্পার সাথে বুটিকের ব্যবসাটা শুরু করলো। সঞ্জয়ের কোনো আপত্তি ছিল না। এসব ব্যাপারে ও বরাবরই উদার। ধীরে ধীরে কালের নিয়মে ওদের মধ্যে সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করলো। পারমিতার প্রতি টান অনুভব করতে লাগলো সঞ্জয়। 
" কুছ কাম হ্যায় তো যাও, নহি তো যাও থোড়া সা বাহার ঘুমকে আও।" - খানিকটা নির্দেশের সুরেই তনুশ্রী আর রুপমকে কথা গুলো বেশ চিবিয়ে চিবিয়ে বললো কমলেশ প্যাটেল।
ওরা বেরিয়ে যেতেই সঞ্জয়ের দিকে ফিরল কমলেশ। কাধে হাত রেখে ফিসফিসিয়ে জিজ্ঞেস করল - " তো তুঝে রুকসানা পসন্দ হ্যায় ?"
কাল রাতে হোয়াটসঅ্যাপে একটু অতিরিক্ত কৌতূহল দেখিয়ে ফেলেছিল সঞ্জয়। আর এই রুকসানাই যে প্যাটেলের একটা হবু শিকার মাত্র সেটাও ও বুঝতে পেরে গেছিল। নিজের শিকারের উপর অন্য লোকের নজর পড়েছে বুঝে এবার শয়তানটা কি করবে কে জানে! তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে সঞ্জয়ের দিকে তাকিয়ে রয়েছে প্যাটেল।
"মিলেগা ভাই মিলেগা। ইন্তেজাম ম্যায় কর দুঙ্গা। ভাই তেরে লিয়ে তো ইতনা কর হি সকতা হু " - হাসিটা বড্ড ক্রুর লাগল সঞ্জয়ের। একটা নিষ্পাপ সাদা সিধে মেয়ে যে কিভাবে এক সর্বনাশের পথের দিকে এগোচ্ছে সেটা কেউ ভাবতেই পারছে না। 
" গেট ওয়েল সুন ব্রাদার।"- হেসে সঞ্জয়ের পিঠ চাপড়ে কেবিন থেকে বেরিয়ে গেলো প্যাটেল।
ভিজিটিং আওয়ার্স শেষ হয়েছে। কিছুক্ষণ আগের কোলাহল যেন কোনো মায়াবলে এক অদ্ভুত নিস্তব্ধতায়। বিকেলের টিফিনে শশা দিয়ে মাখা মুড়ি গলা দিয়ে নামছিল না সঞ্জয়ের। হাসপাতালের এই খাবারে কোনো স্বাদই খুঁজে পায়না সঞ্জয়। রুকসানার কথাই বার বার মনে অসছে ওর। মেয়েটার প্রতি প্রচন্ড রকমের শারীরিক আর মানসিক আকর্ষণ অনুভব করছে ও। মেয়েটাকে সবরকমভাবে পেতে ইচ্ছে করছে ওর। রুকসানার নিস্পাপ মলিন দৃষ্টি, অদ্ভুত মোহময়ী চোখ, টানা ভ্রু, টিকালো নাক, পাতলা লাল ঠোঁট, ওর গ্রীবাদেশ আর সাদা পোশাকে উন্নত বুকের আভাষ চুম্বকের মতো টানেছে সঞ্জয় কে। বাইরে চাপা কোলাহল আর পায়চারির শব্দ। ঘড়ির দিকে তাকাল সঞ্জয়। আটটা বাজে। আবার ডিউটি চেঞ্জ হবার সময়। রুকসানা...
[+] 2 users Like ron6661's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: বদ্ধ কেবিনে বন্দী দুজনে - by ron6661 - 22-06-2024, 11:50 AM



Users browsing this thread: