23-04-2023, 04:00 PM
(13-04-2023, 11:22 PM)Manali Basu Wrote: ৫
ঘর থেকে বেরিয়ে এসে সুস্মিতা পূনরায় তিমির এর সামনাসামনি হলো। তিমির কে বললো , "তিমির , আমার কিছু কথা আছে তোমার সাথে , আমার দিকে তাকাও। "
তিমির কোনো প্রত্যুত্তর করলো না। উল্টোদিকেই মুখ ঘুরিয়ে রাখলো। সুস্মিতা তিমিরের জবাবের প্রতীক্ষা না করেই বলতে শুরু করলো , "তিমির , আমি শুধু তোমার বউদি নই , নিজের দিদির মতোই। আমার কোনো ভাই নেই , তাই তোমাকেই নিজের ভাই বলে মেনেছি। আমার এটা কর্তব্য তোমাকে ফের মূলস্রোতে ফিরিয়ে নিয়ে আনা। আমি নিজের সবরকম প্রচেষ্টা করেছি তোমাকে সাধারণ ভাবে ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনতে , কিন্তু তুমি আমার সব প্রচেষ্টা কে বিফল করে দিয়েছো। তুমি খুব জেদি একটা ছেলে। তুমি তোমার এই ম্যাসাজ প্ল্যান এখনো মন থেকে ঝেড়ে উঠতে পারোনি। তুমি আড্ডিক্টেড হয়েগেছো। এভাবে চললে তোমার জীবন নষ্ট হয়ে যাবে ভাই। তুমি যদি নিজের ভুল বুঝতে না পারো , নিজেকে রেক্টিফাই করতে না পারো , তাহলে তুমি তোমার সব ফোকাস হারিয়ে ফেলবে পড়াশুনা থেকে। তাই দয়া করে খোলসা করে আমায় একটু বলো , তুমি কি চাও শেষমেশ ??"
তিমির একটু স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করলো কিন্তু তবুও সে সুস্মিতার কোনো কথার উত্তর দিলো না। সুস্মিতা তাই বাধ্য হয়ে একটা কথা বললো , তা হলো , "দেখো তিমির , আমি অনেক ভেবে চিন্তে একটা কড়া পদক্ষেপ নিয়েছি , যা হয়তো তোমার মন কে ভালো করতে পারে। আমার কাছে আর উপায় নেই , এটা আমাকে করতেই হবে। "
তিমির একটু হতবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো , "কি পদক্ষেপ ?"
সুস্মিতা একটা লম্বা শ্বাস নিয়ে বললো , "আমি তোমাকে এইভাবে কুঁড়ে কুঁড়ে গুমড়ে থাকতে আর দেখতে পাচ্ছিনা। তাই আমি চাই তুমি তোমার ইচ্ছে পূরণ করো , আর তারপর নিজের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসো। "
এই কথা শুনে যেন তিমির আকাশের চাঁদ হাতে পেলো। তার বিশ্বাসই হচ্ছিলো না যে তার বউদি তাকে পারমিশন দিয়েছে ! সে তাই উচ্ছসিত হয়ে ফের জিজ্ঞেস করলো , "সত্যি বউদি , সত্যি তুমি চাও এটা ? নাকি তুমি রাগ করে তিতিবিরক্ত হয়ে বললে ?"
- "না তিমির , আমি সিরিয়াসলি বলছি। আমি অনেক ভাবলাম এটা নিয়ে , তারপর এই সিদ্ধান্তে উপনীত হলাম। কিন্তু আমার কয়েকটা শর্ত আছে। বা বলা ভালো তোমাকে কয়েকটা প্রমিস করতে হবে আমাকে তারপর আমি তোমাকে অনুমতি দেবো , আদারওয়াইস নয়। "
- "নিশ্চই বউদি , তুমি যা বলবে আমি তাই শুনবো। তুমি একবার হুকুম করো। "
- "তিমির আমি তোমাকে শুধু একবারের জন্য অনুমতি দেবো এসব করার , তারপর তোমাকে কথা দিতে হবে যে তুমি আবার নিজের নরমাল লাইফে ফিরে আসবে , এবং মনোযোগ দিয়ে পড়াশুনোটা করবে। "
- "বউদি তুমি চিন্তা করোনা , আমি নিজের সবটুকু দিয়ে পড়াশুনো করবো। শুধু একবার আমাকে এটা করার অনুমতি দাও। আমি জানি বিগত কয়েকমাস ধরে আমার একাডেমিক রেজাল্ট একদম ভালো যাচ্ছে না। আসলে আমি পড়াশুনোয় কোনোভাবেই কনসেনট্রেট করতে পাচ্ছিনা যবে থেকে এসব আমার মাথায় ঢুকেছে। জানি এটা গর্ব করে বলার মতো কোনো বিষয় নয়। তোমাকে এসব কথা বলতে আমার লজ্জায় মাথা হেঠ হয়ে যাচ্ছে। তবু আমি একবারের জন্য হলেও নিজের এই ফ্যান্টাসির অভিজ্ঞতাটা নিতে চাই। কারণ আমি চেষ্টা করেছি অনেকভাবে এই রঙিন স্বপ্নের বেড়াজাল ছিঁড়ে বেরিয়ে আসতে , কিন্তু আমি পারিনি। আমার কাছে এখন শ্বাস নেওয়াটাও অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে। তুমি যেরকম বললে যে যদি তুমি একবার আমাকে অনুমতি দাও এসব করার জন্য তাহলে দেখো আমি আবার সুস্থ হয়ে উঠবো। তারপর আমার পড়াশুনোটাও অটোমেটিক ভালো হয়ে যাবে " , তিমির কনফিডেন্টলি বললো।
- "ঠিক আছে তিমির , তাই হবে। আমি অনেকদিন পর তোমাকে এতো উচ্ছাসের সাথে কনফিডেন্টলি কথা বলতে দেখলাম। আশা করবো তুমি তোমার কথাটা রাখবে। "
- "৪০০ শতাংশ নিশ্চিত থাকো বউদি , আমি কথা রাখবো। "
- "ঠিক আছে , তাহলে তুমি ধরে নাও যে আমি তোমাকে অনুমতি দিলাম। কিন্তু এর সাথে আমার একটা ছোট্ট রিকোয়েস্ট আছে। "
- "কি , বলো বউদি। .."
- "দেখো আমি অলরেডি তোমাকে বিগড়ে দিয়েছি ফোন দিয়ে। এবার আরো এক ধাপ এগিয়ে তোমাকে অ্যালাও করছি ম্যাসাজ পার্লারে গিয়ে কোনো এক অজানা ম্যাসাজ গার্ল কে দিয়ে তোমাকে ম্যাসাজ করিয়ে তোমার ফ্যান্টাসি পূরণ করতে। এই কথা যদি বাবা মা , তোমার দাদামণি জানতে পারে তাহলে তাঁরা আমাকে আস্ত রাখবেনা সেটা নিশ্চই তুমি বুঝতে পারছো ? তাই এই কথাটা গোপন রাখার দায়িত্ব কিন্তু তোমার। "
- "তুমি একদম চিন্তা করোনা বউদি। এটা আমাদের মধ্যে সিক্রেট থাকবে , সারাজীবন। আর তাছাড়া তুমি ভাবলে কি করে আমি এসব কথা আমার পরিবারের লোকজনদের জানাতে পারবো ! তোমার কাছে ধরা পড়েই আমার যা অবস্থা হয়েছিল। "
এবার সুস্মিতা একটু মজা করে বললো , "হুমম !! তুমি অনেক বড়ো হয়েগেছো। নিজের বউদির কাছে অহিংস আন্দোলন করে ঠিক অনুমতি আদায় করে নিলে ম্যাসাজ পার্লারে যাওয়ার জন্য। গুড জব !! "
সুস্মিতার কথা শুনে তিমির একটু লজ্জা পেলো। সুস্মিতারও নিজের ভাতৃসম দেওরের মুখে অনেকদিন পরে হাসির ঝিলিক দেখে মনটা জুড়লো। সুস্মিতা তাই এরকম মজার কথার ছলে নিজের দেওরের লেগ পুল করতে লাগলো , যাতে তিমিরের মনে আর কোনো গিল্ট ফিলিং না কাজ করে। আর এইভাবেই সুস্মিতা বন্ধু হিসেবে তার দেওরের কাছাকাছি আসতে লাগলো যাতে সে তার দেওরকে influence করে তাকে পূনরায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নিয়ে আনতে পারে , ঠিক যেন থেরাপিস্ট এর মতো।