22-04-2023, 08:26 PM
(This post was last modified: 26-04-2023, 11:13 AM by Bumba_1. Edited 6 times in total. Edited 6 times in total.)
নন্দনার অধ্যায়
|| ১ ||
মনুষ্যজাতির জীবনে নিঃসন্দেহে সবচেয়ে সেরা সময় হলো তার শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলি। কতকটা নদীর এপার কহে ছাড়িয়া নিঃশ্বাসের মতো শৈশবকালে আমরা মনে করি বড় হলে না জানি কতই সুখ আমাদের জন্য অপেক্ষা করে রয়েছে। কিন্তু একবার যখন বড় হই, তখন আমরা সকলে প্রতিমুহূর্তে বারবার ফিরে যেতে চাই আমাদের সেই শৈশবের ফেলে আসা দিনগুলিতে। ফিরে পেতে চাই ছেলেবেলার সেই সারল্য আর মাধুর্যে ভরা দিনযাপনের সময়কালকে। তবে এর মধ্যে ব্যতিক্রম কি নেই? অবশ্যই আছে। শিশু-শ্রমিক মুক্ত দেশ আমরা যেদিন গড়তে পারবো, সেদিন হয়তো শৈশবকাল নিয়ে বলা এই কথাগুলি একশো শতাংশ সত্যি হবে।
আমাদের শৈশবকাল কতকটা মুক্তবিহঙ্গের মতো কাটে। ছেলেবেলায় তার না থাকে কোনো দায়িত্ব, না থাকে চিন্তাভাবনা। শুধুমাত্র খুশি, আনন্দ আর হুল্লোড়ের মধ্য দিয়ে সমগ্র ছোটবেলা কখন যে অতিবাহিত হয়ে কৈশোর পেরিয়ে আমরা যৌবনে প্রবেশ করি তা বুঝতেও পারিনা। বুঝতে যখন পারি, তখন সেই সারল্য মাখা দিনগুলো হারিয়ে গিয়েছে মহাকালের গভীরে। এরপর সারা জীবন কাটে মাথার ওপর চেপে বসা নানা ঘটনাপ্রবাহে, আর ছেলেবেলার স্মৃতিচারণায়। এই উপন্যাসের অন্যতম প্রধান চরিত্র নন্দনার কাছে তার বর্তমান বর্ণময় জীবনের থেকে ছেলেবেলার রোজনামচাও কিছু কম রঙিন ছিলো না।
শৈশবকালে নন্দনা ছিলো তার মা-বাবার নয়নের মণি। খুব সকালে কলেজ থাকতো বলে তার মা মলিনা দেবী তাকে ভোরবেলা ঘুম থেকে তুলে দিতো, যে অভ্যাসটা তার এখনো রয়ে গিয়েছে। তারপর স্নান খাওয়া সেরে বইপত্র গুছিয়ে নিয়ে নন্দনা কলেজের উদ্দেশ্যে রওনা হতো। এরপর কলেজ থেকে যখন বাড়ি ফিরতো, তখন প্রায় দুপুর হয়ে যেত। বাড়ি ফিরে আবার মায়ের হাতে খাওয়া-দাওয়া করে, খানিকক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে পৌঁছে যেতো খেলার মাঠে। বন্ধুদের সঙ্গে সারা বিকালটা কাটতো হই-হুল্লোড়ের মধ্যে দিয়ে। সন্ধ্যেবেলা যখন বাড়ির অঙ্গন থেকে শঙ্খধ্বনি শুনতে পেতো, তখন খেলার মাঠ থেকে বাড়ি ফিরে বইপত্র নিয়ে বসে পড়তো হোমওয়ার্ক করতে। তার মা প্রতিদিন তাকে পড়াশোনায় সাহায্য করতো। রাত ন'টায় হোমওয়ার্ক শেষ করে বাবার পাশে বসে টিভি দেখতে দেখতে রাতের খাওয়া-দাওয়া সেরে নিতো সে। এরপর আবার মা-বাবার মাঝখানে পরম আশ্রয় শুয়ে নিশ্চিন্তে ঘুম। এটাই ছিলো নন্দনার রোজনামচা।
পরবর্তীতে নন্দনা লক্ষ্য করেছে আজকালকার শিশুরা খেলাধুলার প্রতি তুলনামূলকভাবে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। আউটডোর গেমসের থেকে ইনডোর গেমসের প্রতি এদের আগ্রহ অনেক বেশি। যাক সে কথা, তবে তাদের ছেলেবেলায় প্রত্যেকদিন কলেজ থেকে ফিরে বিকালে কুমিরডাঙ্গা, লুকোচুরি, বুড়ি-বসন্ত .. এইসব খেলার একটা আলাদা মাধুর্য ছিলো। বর্ষাকালে মাঠভরা কাদার মধ্যে দাপাদাপি করে ছোঁয়াছুঁয়ি খেলার আনন্দ ইহজীবনে কোনোদিন ভোলবার নয়। নিজেদের খেলার মতো করে তারা সবাই নিজেদের নিয়ম বানিয়ে নিতো। পৃথিবীর প্রচলিত চিরাচরিত নিয়ম তখন তাদের খেলায় খাটতো না। যে নিয়মে প্রতিদিন সকালে বিকালে মাঠের মধ্যে পরম আনন্দের পরিবেশ রচিত হতো, তা ছিলো একান্তই তাদের নিজস্ব।
শৈশবকালে নন্দনার সবচেয়ে আনন্দের দিন ছিলো বছরের উৎসবের দিনগুলি। সেই উৎসবের দিনগুলিকে উপলক্ষ করে তার এবং তার ভাই বোনেদের গায়ে উঠতো নতুন জামাকাপড়। মা-বাবার সাথে হই হই করে জামাকাপড় কিনতে যাওয়া। এই প্রসঙ্গে ছেলেবেলায় কাটানো দুর্গাপূজার কথা খুব মনে পড়ে নন্দনার। ছেলেবেলায় প্রতি বছর দুর্গাপুজোর সময় তারা সপরিবারে যেতো তাদের গ্রামের বাড়িতে। সেইখানে সকল ভাই বোনদেরকে নিয়ে একসাথে পুজো কাটানোর যে আনন্দ, তা কখনো ভোলার নয়।
পুজোর দিনগুলো তাদের কাটতো বাড়ির মন্ডপে, পুজোর কাজ করে, আর হয়তো মাঠে কিংবা নদীর ধারে হৈ-হুল্লোড় করতে করতে। এছাড়া নন্দনার স্মৃতিপটে ভেসে ওঠে ছেলেবেলার নববর্ষের দিনগুলির কথা। প্রতিবছর নববর্ষের দিনে নতুন জামাকাপড় পড়ে বাবা মার সাথে হাত ধরে সে নানান পরিচিত দোকানের হালখাতা করতে যেতো। সকল দোকানদার কাকু তাকে ভালোবেসে নিজের হাতে মিষ্টি খাইয়ে দিতো। সেইসব নিখাদ আনন্দের দিনগুলির কথা ভেবে মাঝে মাঝে নিজের মনেই হেসে ওঠে নন্দনা।
ছেলেবেলায় ঘটে যাওয়া একটি ঘটনার কথা আজও স্পষ্ট মনে আছে নন্দনার। সেদিন ছিলো শীতকাল; কোনো একটি ছুটির দিন। নন্দনা রোজকার মতো ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে পড়তে বসেছিলো। হঠাৎ মনে হলো .. সে যে চেয়ারের উপর বসেছিলো, সেটা এবং সামনের টেবিলটা যেন নড়ে উঠলো। তাদের বাড়ি দো'তলা হওয়ায় তার মা রান্নাঘর থেকে দৌড়ে এসে নন্দনাকে নিয়ে নিচে নেমে গেলেন।
তারপর বাড়ির সামনে পুকুরের ধারে পৌঁছে সে দেখতে পেলো পুকুরের জল পুকুরপাড় ছাপিয়ে রাস্তায় এসে পড়ছে। আর আশেপাশের বাড়িগুলোকে মাঝেমধ্যেই দেখলো কেমন একটা অদ্ভুতভাবে নড়ে উঠতে। মা বলেছিলেন, "এটা এক ধরনের ভূমিকম্প .." পরে সে জানতে পেরেছিলো ওই ভূমিকম্প আসলে সেই বছর ঘটে যাওয়া ভয়ঙ্কর সুনামির আঞ্চলিক রূপ। তার বাবার পাশে বসে সেই দিন রাতে টিভির পর্দায় সে দেখেছিলো সুনামি বিধ্বস্ত এলাকার মানুষের দুর্দশার চিত্র। সেই দিনের পর প্রাকৃতিক বিপর্যয় সম্পর্কে নন্দনার মনে অত্যন্ত ভয় ঢুকে গিয়েছিলো।
★★★★
এই বয়ঃসন্ধিকালে কে কোন ভূমিকা নেবে, কে কার বন্ধু হবে, সবকিছু হয়তো জানা যায় জীবনের বেতার-বার্তায়। পুরনো বন্ধু, বইপত্র, ইজের, টেপ-জামার করুণ কলরব শেষ হয়ে গিয়ে এই সময় মরিচা-পড়া সমস্ত পুরনো তালাচাবির গর্ব মৎস্যের আহার হতে চায়।
ঘুমন্ত পরীর মতো শুয়ে থাকে নন্দনা .. রাত্রের কোল ঘেঁষে রুপসী জোৎস্নার ফেনিল আকাশে চেয়ে। শৈশব পার হয়ে গেলে সে একাকী জীবনের প্রান্তরে একনিষ্ঠ হয়ে ভাবে শারীরিক গঠনের কারুকার্য এবং মনের ব্যাকুলতা বারবার পরিবর্তিত হতে থাকে। কোনো এক কুয়াশাচ্ছন্ন দিনে সে দেখেছে পথ হেঁটে হেঁটে পার হয়ে গেছে তার কিশোরী জীবনের অধ্যায়। মসৃণ ঘাড় নিচু হয়ে আসে তার, জলপাই বনের নিবিড় আঁধারে ওই শোনা যায় মধুর-ধ্বনি। অঘোষিত প্রস্তাবে সে খুঁজে বেড়ায় জীবনের আসল রহস্য; আর তখনই মহা সমারোহে এসে উপস্থিত হয় সেই বহু প্রতীক্ষিত যৌবন।
শৈশব থেকে কৈশোর পেরিয়ে যৌবন। জীবন পাল্টাতে থাকে প্রতিদিন; আর সেই পাল্টে যেতে থাকা সময়ের মধ্যেই নন্দনার চারপাশে অবস্থান করে এমন কিছু মানুষ, যাদের সে ভরসা করে, ভালোবেসে ভাগ করে নেয় জীবনের সুখ-দুঃখ, আর জীবন চলতে থাকে নিজের ছন্দে। চিরন্তন এমনই একজন মানুষ .. যে সারাজীবন নন্দনার পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেয়। প্রণয়ের বন্ধনে জড়িয়ে পড়ে দু'জনে।
★★★★
চিরন্তন ভালো চাকরি করলেও, কলেজের গণ্ডি পেরানোর পর আর পড়াশোনা হয়নি নন্দনার। এর পেছনে নন্দনা অনেক মহাজাগতিক কারণ দেখালেও, আসল কথা হলো মেধার ঘাটতি ছিলো তার। যদিও এই কথা কেউ তার সামনে বললে, তাকে কচুকাটা করে ছেড়ে দিতো নন্দনা। চিরন্তন ব্যাপারটা ভালোই জানতো, তাই নন্দনার সব যুক্তি মেনে নিয়ে এই প্রসঙ্গে আর কথা এগোনোর ইচ্ছা প্রকাশ করেনি কখনো। তবে একটা ব্যাপারে নন্দনার কাছের মানুষেরা .. অর্থাৎ তার মা, বাবা, চিরন্তন এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধু-বান্ধবীরা বেশ অপ্রস্তুতে পড়ে গিয়ে বিব্রত বোধ করতো মাঝে মধ্যে। সেটা হলো তার হিন্দি এবং ইংরেজিতে কথা বলার ধরন বা বেশ কিছু শব্দ উচ্চারণ।
যাক সে কথা, দু'জনে রোজকার মতোই লেলিন পার্কে বসেছিলো। চিরন্তন অফিস থেকে ফেরার পথে বিকেলের এই সময়টা আসতো নন্দনার সঙ্গে দেখা করতে। সারাদিনের পরিশ্রমের পর এইটুকু কোয়ালিটি টাইম কাটানো একটা আলাদা মাত্রা এনে দিতো চিরন্তনের রোজনামচায়। 'আজকে আকাশের চাঁদটা দেখেছো? হ্যাঁ দেখছি , শুক্লা একাদশীর চাঁদ। ঠিক ঝরনার মতো নির্ঝর জ্যোৎস্না আজ, যেমন তোমার মুখের হাসির কল্লোল। তুমি পাশে থাকলে আমার হাসি যেন ফুরোয় না, আনন্দলোকের অপার আনন্দ অনুভব করি। তাই তো প্রেয়সী, থাকতে চাই তোমার পাশে, আনন্দযজ্ঞ কার না ভাল লাগে! তোমার ঠোঁট থেকে যেন দূত্যি বেরোচ্ছে। কাছে ডাকছে , আরো পাশে যেতে। তবে কেন দূরে সখা, কেন দ্বিধাদ্বন্দ্ব? আজ হোক না দু'একটা ভুল।' নাহ্ , এই ধরনের কোনো অতি নাটকীয় কথোপকথন হচ্ছিলো না দু'জনের মধ্যে। সামনেই বিয়ে, তাই সেই নিয়ে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা বলছিলো দু'জনে।
সেই মুহূর্তে হঠাৎ তারা লক্ষ্য করলো পুলিশ মামার আগমন ঘটেছে পার্কে। দু'জন পুলিশ কনস্টেবল পার্ক আলো করে বসে থাকা বাকি কপোত-কপোতীদের তুলে দিতে দিতে এ সময় তাদের সামনে এসে দাঁড়ালো। "আপলোগ আভি ভি ইয়াহাঁ পে ব্যায়ঠে কিঁউ হো? প্রেম কারনেকা দুসরা জাগা নেহি মিলা কেয়া?" গম্ভীর গলায় প্রশ্ন করলো দু'জনের মধ্যে একজন কনস্টেবল।
"প্রেম কৌন কর রাহা হ্যায় সিপাই জি? নো প্রেম। হামলোগ তো পূর্বরাগের দোরগোড়াতে এসে প্রণয়সম্পৃক্ত রসালাপ মে নিমগ্ন হ্যায়।" লোকটা বিহারী এটা বুঝতে পেরে তৎক্ষণাৎ নিজের স্বভাবসিদ্ধ হিন্দিতে উত্তর দিলো নন্দনা।
"প্রো .. প্রো .. সম্পু .. কেয়া বোলা আপনে? জো ভি হো, আচ্ছা ঠিক হ্যায়, আপনা কাম কারো .." এই বলে তার সঙ্গীটিকে নিয়ে দ্রুত সেখান থেকে প্রস্থান করলো কনস্টেবলটি। "সত্যি তুমি পারোও বটে .. তবে যাই বলো এক্ষেত্রে তোমার ওই বিশেষ হিন্দি উচ্চারণ কিন্তু আমাদের কাজে লেগে গেলো .. থ্যাঙ্ক ইউ মাই ডিয়ার .." নন্দনার দিকে তাকিয়ে থেকে উচ্চকণ্ঠে হেসে উঠে কথাগুলো বললো চিরন্তন।
"ইউ আর ঘোস্ট ওয়েলকাম .." সলজ্জ ভঙ্গিতে উত্তর দিলো নন্দনা। "ওটা 'ঘোস্ট' নয় 'মোস্ট' হবে। এনিওয়েস, আমরা তো প্রেম করছি, মানে তুমি আমার গার্লফ্রেন্ড, তাই তো? জানো তো, এই প্রেম নিয়ে আমি একটা রিসার্চ করেছি। আচ্ছা, গার্লফ্রেন্ড কয় প্রকার বলো তো?" মুচকি হেসে জিজ্ঞাসা করলো চিরন্তন।
"গার্লফ্রেন্ডের আবার প্রকারভেদ, জানিনা তো। কয় প্রকার?" জানতে চাইলো নন্দনা।
একটা সিগারেট ধরিয়ে ঠোঁটের কোণায় আলতো হাসি এনে বলতে শুরু করলো চিরন্তন, "আজ্ঞে হ্যাঁ ম্যাডাম, একরকম বা দুইরকম নয়। গুনে গুনে ২৮ রকমের প্রকারভেদ আছে গার্লফ্রেন্ডের। প্রথমেই বলতে হয় তীব্র সুন্দরী গার্লফ্রেন্ডের কথা। যদিও এরা সংখ্যায় খুবই কম। এরা সারা জীবন এতো পাত্তা পায় যে প্রেম নিয়ে বিশেষ ভাবিত নয়। কিন্তু , ভগবান বলে যে একজন রসিক গণিতজ্ঞ আছেন , তিনি এইসব গার্লফ্রেন্ডদের জন্য এমন সব বয়ফ্রেন্ড ঠিক করেন, যারা রূপে না হোক গুনের কারণে সারা জীবন বিশাল পাত্তা পেয়ে এসেছে। ফলে , দুজনের মধ্যে তীব্র ক্যাঁচাল বাঁধে। তবে , বয়ফ্রেন্ড পাত্তা দিলো কি না দিলো তাদের কিস্সু যায় আসে না, কারণ গোটা পৃথিবী এদের বিশাল পাত্তা দেয়। এই প্রসঙ্গে একটা গল্প বলি শোনো .. হোস্টেলের গল্প। আমি তখন জুট-টেকনোলজি পড়তাম। ক্যাম্পাসের মধ্যে আমাদের হোস্টেলের পাশেই লেডিস হোস্টেল ছিলো। সেখানে সাপ দেখা গেছে। সেই মর্মে অভিযোগ জানানো হয়েছে হোস্টেলের দায়িত্বে যিনি ছিলেন তার কাছে। তিনি সব শুনে বললেন , 'সাপ তো থাকবেই। আর এখনো তো কেউ মরেনি , আগে মরুক তারপর না হয় দেখা যাবে।' সেইসময় এক তীব্র সুন্দরী গার্লফ্রেন্ড থুড়ি মহিলার আবির্ভাব! গার্লস হোস্টেলের ফ্রিজ থেকে তার ৭০০ টাকা দামের চকোলেট চুরি গেছে .. এই অভিযোগ জানাতে এসেছে সে। সেই কথা শুনে হোস্টেলের দায়িত্বে থাকা অফিসার বলে উঠলেন , সেকি! আমি এক্ষুনি পুলিশ ডাকছি। আজ থেকে গার্লস হোস্টেলের ফ্রিজের সামনে অটোমেটিক রাইফেল নিয়ে একজন সর্বক্ষণ পাহারায় থাকবে। এরকম সাংঘাতিক ঘটনার কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যাগ্গে, এবার আসি ডিসকভারি গার্লফ্রেন্ডের প্রসঙ্গে। এরা বয়ফেন্ড অপেক্ষা কুকুর , ছাগল , বিড়াল এসব পছন্দ করে। বেশিরভাগ সময় তাদের সঙ্গেই সেলফি তোলে। তবে পছন্দের প্রাণীদের তালিকায় মোষ আর জলহস্তী অনুপস্থিত। এর কারণ অবশ্য আমার জানা নেই। শপিং গার্লফ্রেন্ডের কথা শুনেছো? হ্যাঁ হ্যাঁ অবশ্যই শুনেছো। না শুনলে এখন শুনে নাও। এরা সারাক্ষণ শপিং করে .. অনলাইন , অফলাইন। আজকাল অনলাইনে বিবিধ খাজা জিনিস গাঁজাখুরি গপ্পো দিয়ে অত্যধিক দামে বিক্রি হয়। এরা একটা অসামান্য যুক্তি দেয় শপিংয়ের স্বপক্ষে। শপিং করলে নাকি মনখারাপ কেটে যায়। একবার আমার খুব মনখারাপ হয়েছিলো, তাই শপিং করেছিলাম। তারপর মন আরও বেশি করে খারাপ হয়ে গিয়েছিল। শপিংয়ের লিস্টে একটা চটি (পায়ের) , একটা হাতমাটি করার সাবান আর একটা বাদামের প্যাকেট ছিলো। আচ্ছা বাদ দাও, এবার একটা নতুন প্রজাতির গার্লফ্রেন্ডের কথা বলি। মনখারাপ গার্লফ্রেন্ড .. এদের সবসময় মনখারাপ থাকে, তবে তার কারণ জানা যায় না। আচ্ছা আঁতেল গার্লফ্রেন্ডের নাম শুনেছো? খুব চাপের কিন্তু! ক্ষণে ক্ষণে মতামত পাল্টে দেয়। তবে প্রকৃত বিপ্লব কবে আসবে সেটা জানে, কিন্তু বলে না। সংস্কৃতিমনস্ক গার্লফ্রেন্ডরা প্রচুর শাড়ি আর কাঠের গয়না কেনে। হস্তশিল্প মেলা তো এদেরই জন্য। এবার একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলি শোনো। অনলাইন গার্লফ্রেন্ডরা ২৪ ঘণ্টা অনলাইনে থাকে। মেসেজ করতেই থাকে। বয়ফ্রেন্ডের কাছ থেকে প্রতি মুহূর্তের আপডেট দাবী করে। বোঝে না সে বোঝে না গার্লফ্রেন্ডের ব্যাপারে কিছু শুনেছো? সেরকম কিছু নয়। আসলে কি হয়েছে তাদেরকে সেটা কিছুতেই বোঝানো যায় না। খাই খাই গার্লফ্রেন্ডরা বিভিন্ন ক্যাফে , রেস্তোরাঁয় গিয়ে লাল , নীল , হলুদ ইত্যাদি রঙিন আর আজব নামের খাবার খায় .. একবার নয় বারবার। এদের দুটি ভাগ - স্বাস্থ্যসচেতন ও স্বাস্থ্যঅচেতন । প্রথমজন বিবিধ আলফাল পদ ভোজনের সময় হিসেব করে দেখে ঠিক কতটা ওজন বাড়লো। তারপর দু-তিন দিন না খেয়ে থাকে। দ্বিতীয়জন এসব হিসেব করে না, শুধু খেতেই থাকে। তাই তাদের চেহারাটাও .. হে হে। প্রোমোটার গার্লফ্রেন্ডরা পুরাতন মন ভেঙে দেয়। তারপর মন গড়ে কিনা আমার জানা নেই। ঝগড়ুটে গার্লফ্রেন্ডদের সংখ্যা কিন্তু তুলনামূলকভাবে একটু বেশি। প্রেম মানেই ঝগড়া , ঝগড়া মানেই প্রেম .. এই ফর্মুলাতে এরা বিশ্বাসী। দু-তিন দিন অন্তর এরা ভাবে , ঝগড়া হচ্ছে না কেন ! তাহলে আর দেরী নয়। এতো দেরি হলো কেন ফোন করতে? কি এমন কাজ করো? এখন আমি পুরোনো হয়ে গেছি তাই না! আগে তুমি অন্যরকম ছিলে। কত চেঞ্জ !!! ঝগড়া শুরু হলো । ঝগড়ার শেষে প্রেমিক চেঞ্জ হয়েছে কি হয়নি সেটি অমীমাংসিত থেকে যায় , পরের বার মীমাংসা হবে এরকম কোনো অভিপ্রায়ে। আচ্ছা কাঁদানে গ্যাস গার্লফ্রেন্ডের কথা শুনেছ তো? শোনোনি? এরা শুধু কেঁদে যায়। প্রেমিক টাইমে এলে কাঁদে, না এলেও কাঁদে। মিস করছি বললে কাঁদে, না বললেও কাঁদে। হিটলার গার্লফ্রেন্ডরা প্রেমিকের উপর নানান রুল আরোপ করে। যেমন বিড়ি খাবে না , মুখে বাজে কথা আনবে না, অমুক বন্ধুর বাড়িতে রাতে থাকবে না ইত্যাদি। না শুনলে তীব্র ঝার দেয়। অভিনব সব শাস্তি দেয়। যেমন , হঠাৎ গোবেচারা প্রেমিককে ফোন করে বলে, আমাকে ভুলে যাও , আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে .. তারপর ফোন অফ। প্রেমিক কেঁদে , না খেয়ে দু'দিন কাটায়। তারপর হঠাৎ জানতে পারে যে এটা গুল ছিলো। জাস্ট শাস্তি দেবার জন্য। নাচের দিদিমণি গার্লফ্রেন্ডরা কিন্তু ইউনিক। এরা নিজেরা স্থির থেকে বাকিদেরকে নাচায়। আর বাকিরা গাধার মতন নাচতে থাকে। অনাহার গার্লফ্রেন্ড জাস্ট অসহ্য। এরা কিছু খায় না। সারাদিন একটা রুটির এক চতুর্থাংশ আর এক চামচ ওটস খেয়ে থাকে। জিরো ফিগারের চক্করে কঙ্কালসার চেহারা হয় এদের। সংসারী গার্লফ্রেন্ডদের বেঁচে থাকার একটাই কারণ , সংসার করা । ফলে ফ্রম ডে ওয়ান তাদের একটাই প্রশ্ন, 'তুমি ছেলে চাও না মেয়ে?' পলিটিক্যাল গার্লফ্রেন্ডের সঙ্গে খুব মেপে কথা বলতে হয়। বেফাঁস কিছু বললেই , মার্কস সহায়িকা থেকে দু'শো লাইন নামিয়ে দেবে এবং তার সঙ্গে এরা মনে করে , নিজে যেটা বলছে সেটাই ঠিক , আর বাকিরা যা বলছে সব ভুল। তবে আমার কাছে সব থেকে ইন্টারেস্টিং হলো ছবি বিশ্বাস গার্লফ্রেন্ড। এরা শুধু ছবিতে বিশ্বাস করে। বিভিন্ন মুহূর্তের ছবি তোলে, এডিট করে, আপলোড করে, আবার তোলে। কোনো ছবিতেই এদের সঠিক রূপ ধরা যায় না। সিঙ্গেল গার্লফ্রেন্ড কি জিনিস জানো? যাদের অপেক্ষায় সবাই থাকে। আই.বি.এস গার্লফ্রেন্ড সম্পর্কে বলি শোনো। আইবিএস একটি যাচ্ছেতাই রোগ .. ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম। অবশ্য এখানে আমি অন্যকিছু বুঝিয়েছি আই.বি.এস বলতে .. ইরিটেবল ব্রেকআপ সিনড্রোম। যেমন পূর্বোক্ত আইবিএস রোগে যখন তখন বড় বাইরে পায়, বর্তমান আইবিএস রোগে আক্রান্ত গার্লফ্রেন্ড যখন তখন ব্রেকআপ করেন । তুই আমাকে বুঝিস না - ব্রেক আপ ! আমি তোকে বুঝি না - ব্রেক আপ। আমার দাদু তোকে বোঝে না - ব্রেক আপ। তোর প্রিয় রঙ কেন হলুদ - ব্রেক আপ ... ইত্যাদি ইত্যাদি। এরা ফোন শুরু করে 'হ্যালো ' দিয়ে , শেষ হয় 'চলে গেলো ' দিয়ে। ড্রোন গার্লফ্রেন্ডরা বয়ফ্রেন্ডের মাথার উপর উড়তে থাকে আর বয়ফ্রেন্ডের সব গতিবিধির উপর নজর রাখে। যদি এরা বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে নাও থাকে , তাহলেও সব মুহূর্তের আপডেট নিয়ে রাখে। এরা ঝড়ের বেগে ফোনের মেসেজ টাইপ করে। মেকআপ গার্লফ্রেন্ডরা দিনরাত মেকআপ করে। ফিল্ম-স্টারদের চেয়েও বেশি মেকআপ করে এরা । এমনকি ঘুম থেকে মাঝরাতে উঠে মেকআপ করে আবার ঘুমিয়ে পড়ে। আবার উঠে মেকআপ করে। মেকআপ জ্ঞান মেকআপ ধ্যান মেকআপ চিন্তামণি, থাক বাকিটা বললাম না। টেডিবিয়ার গার্লফ্রেন্ডরা ফাঁকা সময়ে টেডি বিয়ারের সঙ্গে গপ্পো করে। সেই গপ্পের ধারাবিবরণী বয়ফ্রেন্ডকে শোনায়। বয়ফ্রেন্ড উত্তর খুঁজে না পেয়ে শুধু বলে যায় , কি সুইট , কি মিষ্টি , কি সুইট , কি মিষ্টি ...! যাই হোক এবার পরেরটাতে আসি। ম্যাজিক গার্লফ্রেন্ডরা ভীষণ ইন্টারেস্টিং। এরা ম্যাজিক করে বয়ফ্রেন্ড পাল্টে দেয়। আজ 'ক' বাবু তো কাল 'খ' বাবু , পরশু 'গ' বাবু। ম্যাজিক ...! ভজহরি মান্না গার্লফ্রেন্ডরা নিজের হাতে রান্না করে বয়ফ্রেন্ডকে খাওয়াতে ভালোবাসে। টিফিন বক্স নিয়ে দেখা করতে আসে। সিপ্রোগ্রামিং গার্লফ্রেন্ড প্রজাতির নারীরা অদ্ভুত প্রকৃতি হয়। কম্পিউটারে যেমন প্রোগ্রাম লিখে দিলে সেই অনুসারে কাজ করে, এদের মাথাতেও বাড়ির লোক কিছু কোড লিখে দেয়। এরা সেই অনুযায়ী চলে, এদের নিজেদের ভাবার শক্তি একেবারে নেই বললেই চলে। একটা উদাহরণ দিই, কেমন! বাড়ি থেকে বলা হলো , এবার একটা প্রেম করতে পারো। পরদিনই সেই ছেলেটিকে 'হ্যাঁ' বলে দিলো যে সাড়ে তিন বছর ধরে চেষ্টা করছে। ছেলেটি 'হ্যাঁ' শুনে কেঁদে ফেলে। সে বলে , এর চেয়ে কম টাইমে সরকারি চাকরীর পরীক্ষা হয়ে , কেস ইত্যাদি শেষে জয়েনিং হয়ে যায়! রং নাম্বার গার্লফ্রেন্ডরা বারবার ভুল লোককে পছন্দ করে আর তীব্র কেস খায়। কথা ও কাহিনী গার্লফ্রেন্ডরা অনর্গল কথা বলতেই থাকে। কথার পিঠে কথা জমে কাহিনী হয় , কাহিনী-টু হয় , কাহিনী-থ্রি হয় .. চলতেই থাকে। আর বেচারা বয়ফ্রেন্ড কথার শুরু, শেষ ধরতে অসফল থেকে যায় চিরকাল।"
"আচ্ছা, তাই? তাহলে আমিও তোমাকে আজ উনিশ প্রকারের বয়ফ্রেন্ডের কথা বলছি। তবে এটা কোনো রিসার্চ-টিসার্চ করে নয়। একেবারে পার্সোনাল সেক্সপেরিয়েন্স থেকে বলছি।" বিজ্ঞের মতো কথাগুলো বললো নন্দনা।
"সেক্সপিরিয়েন্স? তুমি কি কোনোভাবে পার্সোনাল এক্সপেরিয়েন্স বলতে, আই মিন বোঝাতে চাইছো?" মাথা চুলকাতে চুলকাতে প্রশ্ন করলো চিরন্তন।
"আরে ওই হলো, এবার শোনো মন দিয়ে। প্রথমেই আসবে ভালো বয়ফ্রেন্ডের কথা। এরা সবসময় গার্লফ্রেন্ডের কথা শোনে। সব দরকারি তারিখ মনে রাখে। কিছু ভুলে গেলে চারদিন শোক পালন করে। প্রেমিকার সঙ্গে শপিং করে হাসি মুখে। প্রেমিকার মাসির মেয়ের পাশের বাড়ির মাম্পির বহুমুখী প্রেম সম্পর্কে জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করার ক্ষমতা রাখে। ভালোর উল্টো হলো বাজে। যারা ভালো নয় তারাই বাজে বয়ফ্রেন্ড। এবার আসি নেশারু বয়ফ্রেন্ডের কথায়। এরা তরল , শুকনো , মিশ্রিত ইত্যাদি নানাবিধ নেশা করে পড়ে থাকে। আর গার্লফ্রেন্ডকে রোজই বলে, 'আজই লাস্ট , কাল ছেড়ে দেবো।' কোনোদিন কথা দিয়ে কথা রাখে না , টাইমে আসে না। নিজে আজ কোথায় আছে , কাল কোথায় ছিলো জানে না। মাঝে মাঝেই ভুলভাল বকে। অসুস্থ বয়ফ্রেন্ডের কথা জানো? এদের সর্দি-কাশি, পেট খারাপ লেগেই থাকে, এরা ফুচকা খায় না। পাগল বয়ফ্রেন্ডের কথা না বললে তো সবকিছুই অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। এরা কবিতা লেখে, বাংলা অনার্স হলে প্রেমিকার জন্মদিনে প্রেমের কবিতা লিখে গিফট দেয়। গিফটের পয়সা বেঁচে যায়। সেই পয়সায় বাংলা খায়, যদিও এই বাংলা পাঠ্য নয়। যাই হোক, এবার আসি রোগা বয়ফ্রেন্ডের কথায়। এরা রোজই জিমে গিয়ে ভালো বডির স্বপ্ন দেখে। দুনিয়ার সবাই এদের প্রশ্ন করে - 'এতো রোগা হয়ে যাচ্ছ কেন?' প্রেমিকা কোন পোশাক গিফট করবে ভেবে পায় না। গুলবাজ বয়ফ্রেন্ডরা বিশাল বাতেলা মারে। প্রেমিকাকে বলে ওদের বাংলাদেশে জমি আছে। আর আঁতেল বয়ফ্রেন্ডরা কাল বিপ্লব আসবে এই মর্মে লেকচার দেয়। রাজনীতি করা বয়ফ্রেন্ডরা প্রেমিকাকে কম আর রাজনীতিকে টাইম দেয় বেশি। এরা বেশিরভাগই চায়নাবাম। পেটুক বয়ফ্রেন্ড হলো তারা, যারা খাবার দেখলে প্রেমিকাকে ভুলে যায়। কেরিয়ার সচেতন বয়ফ্রেন্ডরা টাইম ধরে প্রেম করে বাড়ি ফেরে। প্রেমিকা আর্টস পড়লে হ্যাটা করে। সব থেকে ডিসগাস্টিং হলো ধারালো বয়ফ্রেন্ড। এরা প্রেমিকার কাছে ধার করে। অতীতের প্রেমিকাদের কাছেও তাদের ধার ছিলো। তারা আজও মেসেজ করে, উত্তর দেয় না সে। বেকার বয়ফ্রেন্ডের সংখ্যায় সব থেকে বেশি। এরা চাকরীর চেষ্টা করে না, বিড়ি খায়। অপেক্ষা করে প্রেমিকা কবে অন্য কাউকে বিয়ে করে কেটে পড়বে। রিসার্চ স্কলার বয়ফ্রেন্ডদের প্রেমিকা থাকে না । এরা শুধু ভাবে , যদি প্রেমিকা থাকতো! নোংরা বয়ফ্রেন্ডরা স্নান করে কম। সূক্ষ্ম পোশাক কাচায় বিশ্বাস করে না। পারফিউম মাখে না। রুমাল থেকে পচা লাশের গন্ধ আসে। সন্দেহবাতিক বয়ফ্রেন্ডরা কিন্তু ডেঞ্জারাস। এরা প্রেমিকাকে সবসময় সন্দেহ করে। প্রেমিকা কোনো পুরুষ বন্ধুর সঙ্গে কথা বললেই বলে, নিজেকে শেষ করে দেবে! দুঃখী বয়ফ্রেন্ডদের মুখ সবসময় কুঁচকে থাকে। কোনো কিছুতেই খুশি হয় না। বেঁচে থেকে লাভ নেই মনে করে। ভবঘুরে বয়ফ্রেন্ডরা সারাদিন বাইক নিয়ে ঘোরে। তেলের পয়সা বাপ জোগায়। আর লাষ্ট বাট নট দ্যা লিস্ট হলো অবুঝ বয়ফ্রেন্ড। এরা প্রেমিকাদের মনের কথা বোঝে না। যদিও উপরের আঠারো রকমের মধ্যে এই সেম বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান বলে আমার ধারণা।" একদমে কথাগুলো বলে একটু দম নিলো নন্দনা।
নন্দনার মুখে বয়ফ্রেন্ড সম্পর্কিত এনালাইসিস শুনে প্রথমে কি রিঅ্যাকশন দেবে বুঝতে পারছিলো না চিরন্তন। তারপর গলাটা স্বাভাবিক করে মৃদুকন্ঠে বললো "আচ্ছা বুঝলাম, তুমি পার্সোনাল এক্সপেরিয়েন্সের কথা বললে একটু আগে। তারমানে আমার সঙ্গে পরিচয় হওয়ার আগে তোমার ১৯ জন বয়ফ্রেন্ড ছিলো?"
"ছাড়ো তো বাজে কথা। এখন চলো এখান থেকে, সন্ধ্যে হয়ে এলো।" চিরন্তনের কথায় প্রথমে কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে গিয়ে, পরে নিজেকে সামলে নিয়ে লজ্জা লজ্জা ভঙ্গিতে ঠোঁট কামড়ে বললো নন্দনা।
আগামী শনিবার পরবর্তী পর্ব আসবে
সঙ্গে থাকুন এবং পড়তে থাকুন