19-04-2023, 10:05 PM
শপিং সেন্টারে ঢুকে, হাঁটতে হাঁটতে লোপা হঠাৎই বললো, কাষ্টোমারদের সাথে যত কম কথা বলা যায়, ততই ভালো। টাকা আদায় হয়ে গেলে বাড়তি কথা না বলাই ভালো।
আমি কোন কিছু না বুঝে, বললাম, মানে?
লোপা বললো, এত কথা কিসের, ওই মেয়েটির সাথে? নিশ্চয়ই মহিলা হোস্টেলের মেস ম্যানেজার? কাঁচা বাজার সাপ্লাই দাও বুঝি?
ঝর্ণার সাথে আমার সম্পর্কটা বলতে গিয়েও কেনো যেনো থেমে গেলাম। আমার মনে পরে, তখন আমি মটর ভ্যানটা কিনেছিলাম মাত্র। ছুটির দিনই ছিলো। সকাল নয়টার মাঝেই সবার বাড়ীতে বাড়ীতে বাজার সাপ্লাইয়ের কাজটা শেষ করে এসে, বাসায় ফিরে অবাক হয়েই দেখেছিলাম, ঝর্ণা আমার জন্যেই অপেক্ষা করছে। পরনে, জিনসের ফুল হাতা শার্ট, আর জিনসের হাফপ্যান্ট। মাথায় খয়েরী রং এর হ্যাট। বললাম, তুমি? এত সকালে?
ঝর্ণা রাগ করার ভান করেই বললো, সকাল বলছো? সূর্য্য মাথার উপর উঠে যাচ্ছে! আমি তো সেই সাতটা থেকেই তোমার জন্যে অপেক্ষা করছি।
আমি বললাম, কি ব্যাপার বলো তো?
ঝর্ণা বললো, হাইকিং এ যাবো।
আমি বললাম, হাইকিং?
ঝর্ণা বললো, হ্য। এদিক দিয়ে কোথায় নাকি উঁচু পাহাড় আছে। সেই পাহাড়ের চূড়ায় উঠবো। তোমার আবার কাজ নেই তো?
ইদানীং ঝর্ণা বেশ অধিকার ভরা গলাতেই কথা বলে। আমারও ঝর্ণার সেই দাবী নিয়ে আদায় করে নেবার ভঙ্গিমাটুকু ভালো লাগে। এমন ভাবে বললে, কাজ থাকলেও কাজের কথা বলা যায়না। আমার দেহটা ক্লান্ত থাকলেও বললাম, চলো।
ঝাউতলা স্টেশন এর রেল লাইনটা পেরিয়ে, বেশ কিছুটা এগুলেই চাষের জমি। তারপরই পাহাড়ী পথটুকু শুরু হয়। চাষের জমিগুলো পেরিয়ে ছোট খাট বেশ কয়েকটা নালার মতো আছে। সেগুলো দুজনে লাফিয়ে লাফিয়েই পার হলাম। পরবর্তী যে নালাটা চোখে পরলো, সেটি একটু প্রশস্থই বটে। আমি লাফিয়েই পার হতে চাইলাম। আমার দেখাদেখি, ঝর্ণাও লাফ দিতে চাইলো। আমি নালাটা পার হতে পারলেও, ঝর্ণা পারলোনা। খানিকটুকুর জন্যেই পানিতে পরে, পরনের শার্ট প্যান্ট সব ভিজিয়ে ফেললো।
ভেজা কাপরেই পানি থেকে কোন রকমে উপরে উঠে আবারো এগিয়ে চললো আমার হাত ধরে।
লোকালয় থেকে বেশ দূরেই চলে এসেছিলাম। লোকজনের ছায়াও তখন নেই। ঝর্ণা হঠাৎই দাঁড়িয়ে, পরনের জিনস এর শার্টটার বোতাম খুলতে থাকলো। দীর্ঘ একটা পথ পায়ে হেঁটে, আমি রীতীমতো ঘামছিলাম। তাই বললাম, কি ব্যাপার, খুব গরম লাগছে বুঝি?
ঝর্ণা বললো, গরম? দেখছোনা? পরনে ভেজা পোষাক! ভেজা পোষাক এত ক্ষণ গায়ে থাকলে তো ঠাণ্ডা লেগে যাবে।
এই বলে শার্টটার দু অস্তিন টেনে বুকটা উদোম করে, শার্টটা পরন থেকে খুলতে থাকলো। শার্টের তলায় ব্রা কিংবা অন্য কোন সেমিজ জাতীয় পোষাক ছিলো না বলে, সুঠাম সুদৃশ্য স্তন দুটি চোখের সামনেই স্পষ্ট হয়ে থাকলো।
আমি বললাম, কি ব্যাপার? বসলে কেনো? আরো তো অনেক পথ! টায়ার্ড হয়ে গেলে নাকি?
ঝর্ণা বললো, জায়গাটা খুব সুন্দর না? সুন্দর বলেই হয়তো কেউ বাড়ী করেছিলো শখ করে। এখানে একটু বসে বিশ্রাম করলে কেমন হয়? সেই ফাঁকে শার্টটাও শুকিয়ে যাবে।
এই বলে কোমরে প্যাঁচানো শার্টটা সরিয়ে, মাটিতেই বিছিয়ে দিলো শুকানোর জন্যে।
আমি খুব ছটফটই করছিলাম। ঝর্ণার অর্ধ নগ্ন দেহটা আমার দেহে এক ধরনের যন্ত্রনাই দিচ্ছিলো থেকে। ঝর্ণার চৌকু সুঠাম স্তন যুগলে কি যাদু আছে বুঝতে পারলাম না। নয়ন ভরে দেখতে ইচ্ছে করছিলো ঠিকই, তারপরও পারছিলামনা। আমি নিজেকে সামলে রাখার জন্যেই এদিক সেদিক পায়চারী করে, খানিকটা দূরেই গাছের ছায়ায় বসে, পাহাড়ী দৃশ্যই দেখছিলাম শুধু। ঝর্ণাও বুঝি এতে করে নিসংগতাই অনুভব করছিলো। সে টেবিলটার উপর থেকে নেমে এসে, আমার সামনা সামনি উঁচু পিড়ীটার উপরই বসলো। তারপর, ডান হাঁটুটার উপর ডান কনুইটা রেখে, ঝরঝরে রেশমী চুলগুলো বিলি কেটে কেটে, আমার চোখে চোখে খানিকক্ষণ এক দৃষ্টিতেই তাঁকিয়ে থাকলো। আমি বললাম, কি ব্যাপার?
ঝর্ণা বললো, খুব কাছাকাছি থেকেও, কেনো যেনো দূরের মানুষ বলেই মনে হচ্ছে।
আমি বললাম, দূরে থাকাটাই কি উচিৎ না! আমার মাঝেও যদি পশুত্ব জেগে উঠে!
ঝর্ণা রাগ করার ভান করেই বললো, তুমি কি সত্যিই ভালো? নাকি ভালো দেখানোর একটা ভান করো? নাকি, আমাকে এড়িয়ে যাবার জন্যেই, এমন ভাব দেখাও।
আমি বললাম, এড়িয়ে যাবার কি কোন কারন আছে?
ঝর্ণা বললো, তাহলে সব সময় এমন করে এড়িয়ে যাও কেনো? আমি ঘর থেকে বেড়োতে না বেড়োতেই, কত শত ছেলে বুড়ু, আমার দিকে পলকহীন দৃষ্টিতেই তাঁকিয়ে থাকে। অথচ, তোমাকে দেখে তো মনে হয়না, কখনো আমাকে ভালো করে দেখেছো!
ঝর্নার হঠাৎ আবেগ ভরা কথাবার্তার কোন কারন আমি বুঝতে পারলাম না। আমি শান্ত গলাতেই বললাম, কিভাবে দেখলে খুশী হবে?
এই বলে পলকহীন দৃষ্টিতেই কয়েক মুহুর্ত ঝর্ণার দিকে তাঁকিয়ে থেকে বললাম, এখন খুশী হয়েছো?
এই বলে উঠে দাঁড়িয়ে অনত্র্যই তাঁকাতে থাকলাম।
ঝর্ণা মন খারাপ করেই বললো, এত অপছন্দ আমাকে?
আমি বললাম, আসলে, তোমার সারা দেহে আগুন! এমন আগুনের দিকে খুব বেশীক্ষণ তাঁকিয়ে থাকলে, চোখ ঝলসে যায়।
ঝর্ণা রসিকতা করেই বললো, কই দেখি দেখি! কতটুকু ঝলসে গেছে?
ঝর্ণার কথায় আমিও হাসলাম। বললাম, কিছু কিছু ঝলসে যাওয়া জিনিষ চোখে দেখা যায়না। বুকের ভেতর শুধু যন্ত্রণা বাড়ায়।
ঝর্ণা খুব সহজ গলাতেই বললো, যন্ত্রণা মিটিয়ে ফেললেই তো পারো।
আমি বললাম, যখন সময় হবে তখনই মিটিয়ে নেবো।
ঝর্ণা বললো, সেই সময়টা কবে হবে শুনি?
আমি বললাম, ঝাউতলা বাজারে একটা দোকান দিতে পারলেই। এইভাবে ডেলিভারী সার্ভিসের কাজ আর কতদিন করবো? আর নোংড়া বস্তিতেই বা কদিন থাকবো? দোকানটা নিতে পারলে, ভালো আবাসিক এলাকাতেই একটা বাসা নেবো বলে ভাবছি।
ঝর্ণা বললো, কখন দোকানটা নিচ্ছো? বাসাটাই বা কবে নেবে?
আমি বললাম, খুব বেশী না। দিন রাত তো পরিশ্রম করেই চলেছি। আর দু বছরেই সব হয়ে যাবে।
ঝর্ণা মুখ বাঁকিয়েই বললো, গাছে কাঠাল, গোফে তেল! এই বলে অন্যত্রই উদাস দৃষ্টি মেলে তাঁকিয়ে থাকলো।
ঝর্ণা হঠাৎই উঠে দাঁড়ালো। বললো, চলো ফিরে যাই।
আমি বললাম, এখনো তো পাহাড়েই উঠা হলো না।
ঝর্ণা মন খারাপ করেই বললো, ভালো লাগছেনা কিছুই!
ঝর্ণার হঠাৎ মন খারাপ করা ভাব দেখে, আমার মনটাও খুব খারাপ হয়ে গেলো। বললাম, তোমার কি হয়েছে বলো তো?
ঝর্ণা বললো, মানুষ চুরি করলে কোন দোষ হয়না। জানাজানি হয়ে গেলেই সবাই ঘৃণায় চোখ ফিরিয়ে নেয়। তুমি তো আমার সব কিছু জানো। জেনে শুনে আমাকে পছন্দই বা করবে কেনো?
ঝর্ণার কথা শুনে আমার বুকটা হঠাৎই কেমন যেনো দোলে উঠলো। আমি পাগলের মতোই ঝর্ণাকে বুকের মাঝে টেনে নিলাম। গোলাপী সরু চৌকু ঠোট যুগল নিজ ঠোট গুলোর ভেতর পুরে নিলাম নিজের অজান্তেই। আনমনেই বলতে থাকলাম, অমন কথা কক্ষনো আর বলবে না। সেসব অতীতের কথা আমি মনেও রাখিনি কখনো। আই লাভ ইউ, ঝর্ণা! আই লাভ ইউ!
ঝর্ণাও আবেগ আপ্লুত হয়ে, খুব শক্ত করেই জড়িয়ে ধরে রাখলো আমাকে। আমাকেও চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দিয়ে বলতে থাকলো, আমাকে নুতন করে বাঁচার পথ দেখিয়ে যদি এড়িয়ে যাও, তখন বুঝি আমার কষ্ট হয়না?
আমিও আবেগ ভরা গলাতেই বলতে থাকলাম, আর কক্ষনো তোমাকে কষ্ট দেবো না। তুমি যেমনটি চাইবে, তেমনটিই হবে।
ঝর্ণার মনটাও আনন্দে ভরে উঠলো সাথে সাথেই। ফিশ ফিশ করেই বললো, খুব করতে ইচ্ছে করছে।
আমি বললাম, এখানে?
ঝর্ণা বললো, যাহ! এর জন্যেই তো বলছি, ফিরে চলো। হাইকিং এ আর মন নেই।
আমি কোন কিছু না বুঝে, বললাম, মানে?
লোপা বললো, এত কথা কিসের, ওই মেয়েটির সাথে? নিশ্চয়ই মহিলা হোস্টেলের মেস ম্যানেজার? কাঁচা বাজার সাপ্লাই দাও বুঝি?
ঝর্ণার সাথে আমার সম্পর্কটা বলতে গিয়েও কেনো যেনো থেমে গেলাম। আমার মনে পরে, তখন আমি মটর ভ্যানটা কিনেছিলাম মাত্র। ছুটির দিনই ছিলো। সকাল নয়টার মাঝেই সবার বাড়ীতে বাড়ীতে বাজার সাপ্লাইয়ের কাজটা শেষ করে এসে, বাসায় ফিরে অবাক হয়েই দেখেছিলাম, ঝর্ণা আমার জন্যেই অপেক্ষা করছে। পরনে, জিনসের ফুল হাতা শার্ট, আর জিনসের হাফপ্যান্ট। মাথায় খয়েরী রং এর হ্যাট। বললাম, তুমি? এত সকালে?
ঝর্ণা রাগ করার ভান করেই বললো, সকাল বলছো? সূর্য্য মাথার উপর উঠে যাচ্ছে! আমি তো সেই সাতটা থেকেই তোমার জন্যে অপেক্ষা করছি।
আমি বললাম, কি ব্যাপার বলো তো?
ঝর্ণা বললো, হাইকিং এ যাবো।
আমি বললাম, হাইকিং?
ঝর্ণা বললো, হ্য। এদিক দিয়ে কোথায় নাকি উঁচু পাহাড় আছে। সেই পাহাড়ের চূড়ায় উঠবো। তোমার আবার কাজ নেই তো?
ইদানীং ঝর্ণা বেশ অধিকার ভরা গলাতেই কথা বলে। আমারও ঝর্ণার সেই দাবী নিয়ে আদায় করে নেবার ভঙ্গিমাটুকু ভালো লাগে। এমন ভাবে বললে, কাজ থাকলেও কাজের কথা বলা যায়না। আমার দেহটা ক্লান্ত থাকলেও বললাম, চলো।
ঝাউতলা স্টেশন এর রেল লাইনটা পেরিয়ে, বেশ কিছুটা এগুলেই চাষের জমি। তারপরই পাহাড়ী পথটুকু শুরু হয়। চাষের জমিগুলো পেরিয়ে ছোট খাট বেশ কয়েকটা নালার মতো আছে। সেগুলো দুজনে লাফিয়ে লাফিয়েই পার হলাম। পরবর্তী যে নালাটা চোখে পরলো, সেটি একটু প্রশস্থই বটে। আমি লাফিয়েই পার হতে চাইলাম। আমার দেখাদেখি, ঝর্ণাও লাফ দিতে চাইলো। আমি নালাটা পার হতে পারলেও, ঝর্ণা পারলোনা। খানিকটুকুর জন্যেই পানিতে পরে, পরনের শার্ট প্যান্ট সব ভিজিয়ে ফেললো।
ভেজা কাপরেই পানি থেকে কোন রকমে উপরে উঠে আবারো এগিয়ে চললো আমার হাত ধরে।
লোকালয় থেকে বেশ দূরেই চলে এসেছিলাম। লোকজনের ছায়াও তখন নেই। ঝর্ণা হঠাৎই দাঁড়িয়ে, পরনের জিনস এর শার্টটার বোতাম খুলতে থাকলো। দীর্ঘ একটা পথ পায়ে হেঁটে, আমি রীতীমতো ঘামছিলাম। তাই বললাম, কি ব্যাপার, খুব গরম লাগছে বুঝি?
ঝর্ণা বললো, গরম? দেখছোনা? পরনে ভেজা পোষাক! ভেজা পোষাক এত ক্ষণ গায়ে থাকলে তো ঠাণ্ডা লেগে যাবে।
এই বলে শার্টটার দু অস্তিন টেনে বুকটা উদোম করে, শার্টটা পরন থেকে খুলতে থাকলো। শার্টের তলায় ব্রা কিংবা অন্য কোন সেমিজ জাতীয় পোষাক ছিলো না বলে, সুঠাম সুদৃশ্য স্তন দুটি চোখের সামনেই স্পষ্ট হয়ে থাকলো।
আমি বললাম, কি ব্যাপার? বসলে কেনো? আরো তো অনেক পথ! টায়ার্ড হয়ে গেলে নাকি?
ঝর্ণা বললো, জায়গাটা খুব সুন্দর না? সুন্দর বলেই হয়তো কেউ বাড়ী করেছিলো শখ করে। এখানে একটু বসে বিশ্রাম করলে কেমন হয়? সেই ফাঁকে শার্টটাও শুকিয়ে যাবে।
এই বলে কোমরে প্যাঁচানো শার্টটা সরিয়ে, মাটিতেই বিছিয়ে দিলো শুকানোর জন্যে।
আমি খুব ছটফটই করছিলাম। ঝর্ণার অর্ধ নগ্ন দেহটা আমার দেহে এক ধরনের যন্ত্রনাই দিচ্ছিলো থেকে। ঝর্ণার চৌকু সুঠাম স্তন যুগলে কি যাদু আছে বুঝতে পারলাম না। নয়ন ভরে দেখতে ইচ্ছে করছিলো ঠিকই, তারপরও পারছিলামনা। আমি নিজেকে সামলে রাখার জন্যেই এদিক সেদিক পায়চারী করে, খানিকটা দূরেই গাছের ছায়ায় বসে, পাহাড়ী দৃশ্যই দেখছিলাম শুধু। ঝর্ণাও বুঝি এতে করে নিসংগতাই অনুভব করছিলো। সে টেবিলটার উপর থেকে নেমে এসে, আমার সামনা সামনি উঁচু পিড়ীটার উপরই বসলো। তারপর, ডান হাঁটুটার উপর ডান কনুইটা রেখে, ঝরঝরে রেশমী চুলগুলো বিলি কেটে কেটে, আমার চোখে চোখে খানিকক্ষণ এক দৃষ্টিতেই তাঁকিয়ে থাকলো। আমি বললাম, কি ব্যাপার?
ঝর্ণা বললো, খুব কাছাকাছি থেকেও, কেনো যেনো দূরের মানুষ বলেই মনে হচ্ছে।
আমি বললাম, দূরে থাকাটাই কি উচিৎ না! আমার মাঝেও যদি পশুত্ব জেগে উঠে!
ঝর্ণা রাগ করার ভান করেই বললো, তুমি কি সত্যিই ভালো? নাকি ভালো দেখানোর একটা ভান করো? নাকি, আমাকে এড়িয়ে যাবার জন্যেই, এমন ভাব দেখাও।
আমি বললাম, এড়িয়ে যাবার কি কোন কারন আছে?
ঝর্ণা বললো, তাহলে সব সময় এমন করে এড়িয়ে যাও কেনো? আমি ঘর থেকে বেড়োতে না বেড়োতেই, কত শত ছেলে বুড়ু, আমার দিকে পলকহীন দৃষ্টিতেই তাঁকিয়ে থাকে। অথচ, তোমাকে দেখে তো মনে হয়না, কখনো আমাকে ভালো করে দেখেছো!
ঝর্নার হঠাৎ আবেগ ভরা কথাবার্তার কোন কারন আমি বুঝতে পারলাম না। আমি শান্ত গলাতেই বললাম, কিভাবে দেখলে খুশী হবে?
এই বলে পলকহীন দৃষ্টিতেই কয়েক মুহুর্ত ঝর্ণার দিকে তাঁকিয়ে থেকে বললাম, এখন খুশী হয়েছো?
এই বলে উঠে দাঁড়িয়ে অনত্র্যই তাঁকাতে থাকলাম।
ঝর্ণা মন খারাপ করেই বললো, এত অপছন্দ আমাকে?
আমি বললাম, আসলে, তোমার সারা দেহে আগুন! এমন আগুনের দিকে খুব বেশীক্ষণ তাঁকিয়ে থাকলে, চোখ ঝলসে যায়।
ঝর্ণা রসিকতা করেই বললো, কই দেখি দেখি! কতটুকু ঝলসে গেছে?
ঝর্ণার কথায় আমিও হাসলাম। বললাম, কিছু কিছু ঝলসে যাওয়া জিনিষ চোখে দেখা যায়না। বুকের ভেতর শুধু যন্ত্রণা বাড়ায়।
ঝর্ণা খুব সহজ গলাতেই বললো, যন্ত্রণা মিটিয়ে ফেললেই তো পারো।
আমি বললাম, যখন সময় হবে তখনই মিটিয়ে নেবো।
ঝর্ণা বললো, সেই সময়টা কবে হবে শুনি?
আমি বললাম, ঝাউতলা বাজারে একটা দোকান দিতে পারলেই। এইভাবে ডেলিভারী সার্ভিসের কাজ আর কতদিন করবো? আর নোংড়া বস্তিতেই বা কদিন থাকবো? দোকানটা নিতে পারলে, ভালো আবাসিক এলাকাতেই একটা বাসা নেবো বলে ভাবছি।
ঝর্ণা বললো, কখন দোকানটা নিচ্ছো? বাসাটাই বা কবে নেবে?
আমি বললাম, খুব বেশী না। দিন রাত তো পরিশ্রম করেই চলেছি। আর দু বছরেই সব হয়ে যাবে।
ঝর্ণা মুখ বাঁকিয়েই বললো, গাছে কাঠাল, গোফে তেল! এই বলে অন্যত্রই উদাস দৃষ্টি মেলে তাঁকিয়ে থাকলো।
ঝর্ণা হঠাৎই উঠে দাঁড়ালো। বললো, চলো ফিরে যাই।
আমি বললাম, এখনো তো পাহাড়েই উঠা হলো না।
ঝর্ণা মন খারাপ করেই বললো, ভালো লাগছেনা কিছুই!
ঝর্ণার হঠাৎ মন খারাপ করা ভাব দেখে, আমার মনটাও খুব খারাপ হয়ে গেলো। বললাম, তোমার কি হয়েছে বলো তো?
ঝর্ণা বললো, মানুষ চুরি করলে কোন দোষ হয়না। জানাজানি হয়ে গেলেই সবাই ঘৃণায় চোখ ফিরিয়ে নেয়। তুমি তো আমার সব কিছু জানো। জেনে শুনে আমাকে পছন্দই বা করবে কেনো?
ঝর্ণার কথা শুনে আমার বুকটা হঠাৎই কেমন যেনো দোলে উঠলো। আমি পাগলের মতোই ঝর্ণাকে বুকের মাঝে টেনে নিলাম। গোলাপী সরু চৌকু ঠোট যুগল নিজ ঠোট গুলোর ভেতর পুরে নিলাম নিজের অজান্তেই। আনমনেই বলতে থাকলাম, অমন কথা কক্ষনো আর বলবে না। সেসব অতীতের কথা আমি মনেও রাখিনি কখনো। আই লাভ ইউ, ঝর্ণা! আই লাভ ইউ!
ঝর্ণাও আবেগ আপ্লুত হয়ে, খুব শক্ত করেই জড়িয়ে ধরে রাখলো আমাকে। আমাকেও চুমুতে চুমুতে ভরিয়ে দিয়ে বলতে থাকলো, আমাকে নুতন করে বাঁচার পথ দেখিয়ে যদি এড়িয়ে যাও, তখন বুঝি আমার কষ্ট হয়না?
আমিও আবেগ ভরা গলাতেই বলতে থাকলাম, আর কক্ষনো তোমাকে কষ্ট দেবো না। তুমি যেমনটি চাইবে, তেমনটিই হবে।
ঝর্ণার মনটাও আনন্দে ভরে উঠলো সাথে সাথেই। ফিশ ফিশ করেই বললো, খুব করতে ইচ্ছে করছে।
আমি বললাম, এখানে?
ঝর্ণা বললো, যাহ! এর জন্যেই তো বলছি, ফিরে চলো। হাইকিং এ আর মন নেই।