13-04-2023, 11:15 PM
(This post was last modified: 13-04-2023, 11:16 PM by দীপ চক্কোত্তি. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
## ৬৮ ##
এখন ঘুঁটঘুঁটে অন্ধকার আমার খুব ভালো লাগে!
সেখানে আমি বেশ লুকিয়ে থাকতে পারি,
সেখানে আমি বেশ নিজেকে চিনতে পারি,
ঠিক ততোটা চিনতে পারি
যতোটা আলোতে পারি না!
আবারো আমি সজ্ঞানেই বলছি
এখন ঘুঁটঘুঁটে অন্ধকার আমার খুব ভালো লাগে! – কবি জসিমুদ্দিন।
রিসর্টের এই অংশটাকে জাহাজের আকৃতি দেওয়া হয়েছে। লাইফ বোট, আ্যঙ্কর বয়া, রেলিঙে লাইফ বয়া, দড়িদড়া ও অন্যান্য কৃত্রিম যন্ত্রপাতি দিয়ে ছাদটাকে একটা জাহাজের ডেকের মতো সাজানো হয়েছে। একদম নির্জন জায়গাটা। সামনে সূদুরবিস্তৃত সমুদ্রের নীলচে কালো জল, মাথার উপর নক্ষত্রহীন আকাশ, সি বিচের সার্চ লাইটগুলো শুধু বেখাপ্পা রসভঙ্গকারীর মতো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে নিশ্ছিদ্র অন্ধকারের সৌন্দর্য্যকে নষ্ট করছে। দুরে মাঝে মাঝে ঢেউয়ের মাথায় জ্বলন্ত ফসফরাসের আলো, অন্ধকার রাতকে আরো মনোরম করে তুলেছে। আরো দুরে মাছধরা নৌকার আলো ঢেউয়ের সাথে একবার ভেসে উঠছে; পরমূহূর্তেই আবার যেনো সমুদ্রের অতলে ডুবে যাচ্ছে। ঢেউয়ের ছলাৎ-ছল, ছলাৎ-ছল শব্দ রাতের নিস্তব্ধতাকে ব্যহত করছে। অক্টোবরের শেষ, বেশ ঠান্ডা দামাল হাওয়া; পেটে ভারমুথ আছে বলে রক্ষে। বোতল থেকে একটা লম্বা চুমুক মেরে একমুঠো কাজু মুখে ভরলেন অমল।
হঠাৎ চোখ পড়লো ছাদের মাঝখানে একটা উঁচু স্ট্রাকচারের দিকে, যেটাকে জাহাজের ক্রো নেস্টের আদল দেওয়া হয়েছে। সেখানে দাড়িয়ে এক ব্যক্তি, যার শরীরে জড়ানো একটি সাদা চাদর। চাদরের এক অংশ পতাকার মতো পত-পত করে উড়ছে। হঠাৎই একটা দমকা হাওয়ায় উড়ে চলে গেলো আর অমলের চোখের সামনে ভেসে উঠলো এক নগ্নিকার অবয়ব। কে এই রহস্যময়ী, এই মায়াবী অন্ধকার রাতে একাকীনি ওই ক্রো নেস্টে দাড়িয়ে আছে। হাইমাস্টের আলোর বিচ্ছুরণে সেই নারীর শরীরের প্রতিটি ভাঁজ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ঈষৎ নতমুখী ভারী স্তন, ক্রমশঃ ভারী হয়ে ওঠা কটিরেখার নীচে সুবিশাল শ্রোণীদেশ, সুগঠিত পদযুগল, সব মিলিয়ে যৌনতার এক আস্ত প্যাকজ। অন্তর্বাসের নীচে অমলের পুংদন্ড কামিনীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে ফেললো। চাদরটি এসে পড়েছে তারই পায়ের কাছে। চাদর নয়, হোটেলেরই একটা বেডশিট বলে মনে হচ্ছে। সেটা তুলে নিয়ে নিশিতে পাওয়া বালকের মতো ল্যাডার পেয়ে উঠতে লাগলো অমল।
“এ কি চঞ্চলতা জাগে আমার মনে,
ভালো লাগে, বড়ো ভালো লাগে ….।“
মেন ওয়ার্কআউট এরিয়া, কার্ডিয়ো-ভাসকুলার সেকশন, ইয়োগা সেকশন, আয়ুর্বেদা সেকশন, সনা, স্টিম বাথ, টার্কিশ বাথ, স্লিমিং স্যালন, ম্যাসাজ সেকশন, রেইকি সেন্টার, রুফটপ সোলারিয়াম, সুইমিং পুল, সানবাথ, – কি নেই বেসমেন্ট এবং রুফ মিলিয়ে প্রায় পনেরো হাজার স্কোয়ার ফুটের নীলের এই হেল্থ ব্যুটিকে। কিন্তু সবথেকে ইন্টারেস্টিং এই মেডিটেসন রুম, দীপ যার নাম দিয়েছে “পরাণসখা”, “The Soulmate”। ঘরটির দরজা গাঢ় নীল রঙের, যাতে সাধারণ মানুষের চোখের উচ্চতায় খুনখারাবী লাল রঙের একটি হৃদয় আঁকা আছে।
“শরীর সুস্থ রাখতে গেলে মনকে সুস্থ রাখা ভীষণ জরুরি। যজুর্বেদে বলা আছে,
“আত্মানাং রথিনাং বিদ্ধি শরীরং রথমএবচ,
বুদ্ধিং সারথিং বিদ্ধি মন প্রোগহমএবচ।“
- অর্থ্যাৎ শরীর হচ্ছে রথ আর হৃদয় হচ্ছে তার রথি, এতে বুদ্ধি সারথি এবং মন চালিকা নিয়ন্ত্রক লাগাম।
আর তাই আমার এই ব্যুটিকে শরীরের সাথে মনের অনুশীলনেরও ব্যাবস্থা আছে। আপনারা যাকে মেডিটেশন বলেন, আমি তাকেই বলি মনের অনুশীলন। সেই হিসাবে আপনি এই ঘরটিকে মেডিটেশন রুম বা ধ্যানকক্ষ বলতে পারেন। উড ইউ লাইক টু ট্রাই আ ব্রীফ ইনট্রোডাকটারি সেশন? “
উর্মির শরীর আজ আর যেনো তার বশে নেই। হাতলের নব ঘুরিয়ে দীপ দরজাটা খুলে দিতেই একটা প্রায়ান্ধকার ঘরের মধ্যে পায়ে পায়ে ঢুকে পড়লো সে। উর্মির অনেকটা খোলা পিঠে আলতো করে ছুঁয়ে তাকে ঘরের মধ্যে এগিয়ে দিলো দীপ। শিউরে উঠলো উর্মি। একটা দারুন মিষ্টি গন্ধ ঘরের মধ্যে মঁ মঁ করছে। অজ্ঞাত উৎস থেকে আলো উৎসারিত হচ্ছে – বারে বারেই পরিবর্তিত হচ্ছে আলোর রঙ – কখনো হালকা নীল, কখনো ধূসর সবুজ, কখনো মরা হলুদ, কখনো বা ফ্যাকাসে গোলাপী। এই মায়াবী আলোর ধাঁধায় চোখটা একটু সয়ে যেতেই চোখে পড়লো সামনের দেয়ালে একটা বিরাট হৃদয় আঁকা আছে। দরজার মতোই এই হৃদয়ের রঙও গাঢ় লাল। “বসুন ম্যাডাম”, উর্মির দুই ডানা ধরে একটা ডিভান জাতীয় আসনের উপর তাকে বসিয়ে দিলো দীপ। “পদ্মাসনে বসতে পারবেন?” দীপের প্রশ্নের জবাব না দিয়ে, পা টা মুড়িয়ে পদ্মাসনে বসার ব্যর্থ চেষ্টা করলো সে।
“ও কে, ওকে। রিল্যাক্স। আপনি সুখাসনেই বসুন“. বলে উর্মির পিছন দিকে চলে গেলো দীপ। উর্মির মাথার দুপাশ দিয়ে দুটো হাত বেড় দিয়ে নিয়ে এসে কপালে হালকা ম্যাসাজ করা শুরু করলো সে। দীপের হাতদুটো কেমন যেনো চটচট করছে। কি যেনো মেখে নিয়েছে সে তার হাতে, দারুন সুগন্ধী আর দারুন ঠান্ডা। মুডটা কি দারুন ভালো হয়ে গেলো উর্মির। আলতো করে তার চোখের পাতার উপর হাত বুলিয়ে চোখ দুটো বুজিয়ে দিলো দীপ। হাতদুটো তার ভ্রমন শুরু করলো উর্মির কপাল হয়ে চোখের পাতা হয়ে গালে। বাচ্চাদের যেভাবে গাল ধরে আদর করে, সেভাবেই তার গালের মাংস ধরে আলতো করে টানতে লাগলো সে। “থ্যাঙ্ক গড, ইউ হ্যাভ নট গেইনড এনি ফ্যাট অন ফেস। মুখের মেদ ঝরানো খুবই ডিফিকাল্ট”, অস্ফুটে বলে উঠলো দীপ। কানের লতি খুবই সংবেদনশীল স্পট উর্মির শরীরে। তাইতো দীপের আঙ্গুলগুলো তা’ স্পর্শ করতেই আর একবার শিহরণ জাগে উর্মির। হাত দুটো চিকবোন হয়ে গলার কাছে ডাবল চিন হয়ে উঠতে চাওয়া মাংসপেশীকে আদর করতে থাকলো।
পরবর্তী গন্তব্য উর্মির ঘাড়, গলা হয়ে তার কাঁধ। বেশ চওড়া কাঁধ তার; স্লিভলেজ ব্লাউজের সংক্ষিপ্ত অংশের নীচে ব্রায়ের স্ট্র্যাপের উপর হাত ঘুরছে পরপুরুষের; নিষেধ করা উচিত উর্মির, কিন্তু করছে না সে, বা বলা উচিত করতে পারছে না সে। দীপের হাত কি নেমে আসবে তার স্তনবিভাজিকার বিপদ্জনক অববাহিকায়? স্পর্শ করবে কি তার পাকা ডালিমের মতো কুচযুগল? নিপীড়ন করবে কি তার আঙ্গুরের মতো রসালো চুচুক? কন্ঠার হাড়ের নীচে বুকের উপরের অংশে মর্দন করে হাত আবার চলে গেলো উর্মির দুই ডানায়। এক এক করে দুটো হাতই তুলে ম্যাসাজ করতে লাগলো দীপ। নির্লোম বাহূমূলে পুরুষের স্পর্শে শিহরণ জাগলো উর্মির। তার চাঁপাকলির মতো আঙ্গুলের ডগা ধরে টেনে দিতে থাকলো দীপের লম্বা লম্বা বজ্রকঠিন অথচ সুললিত আঙ্গুলগুলো। এরপর সেই হাত চলে গেলো তার পৃষ্ঠদেশে। গ্রীবা থেকে শুরু করে তার গুরুনিতম্বের গভীর খাত যেখান থেকে শুরু হয়েছে, সেই অতি সংবেদনশীল অঞ্চল অবধি বিস্তৃত সুষ্ণুমাকান্ডের দুপাশে খেলা শুরু করে দীপের আঙ্গুল। কেমন বিন্দাস মেজাজ হয় যায় উর্মির।
“নাও স্লোওওওলি ওপেন ইওর আইজ“, যেন অনেক দুর থেকে আওয়াজ আসে দীপের। অনিচ্ছার বিরুদ্ধে ধীরে ধীরে চোখের পাতা খুলতে যেতেই একটা তীব্র নীল আলো ধাক্কা মারলো তার চোখে। কোথা থেকে যেনো একটা ভারী গমগমে গলায় স্ত্রোত্রপাঠ ভেসে আসছে -
“ওঁ অজ্ঞানতিমিরান্ধস্য জ্ঞানাঞ্জন শলাকয়া।
চক্ষুরুন্মীলিতং যেন তস্মৈ শ্রীগুরুবে নমঃ।।“
- অজ্ঞতার গভীর অন্ধকারে আমার জন্ম হয়ে ছিল এবং আমার গুরুদেব জ্ঞানের আলোক বর্তিকা দিয়ে আমার চক্ষু উন্মীলিত করলেন। তাকেঁ জানাই আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি।
খোলা পিঠে পুরুষের আঙ্গুলের বিহার, রিরংসার রঙ দীপের তীব্র রশ্মি, উর্মির ক্ষুধার্ত হৃদয়ের আকূতি – সব মিলিয়ে আর নিজেকে সামলাতে পারলো না উর্মি। তার শরীরের দুকুল ছাপিয়ে এলো কামনার জোয়ার, দীপের শরীরের উপর নিজের শরীরের ভার ছেড়ে দিয়ে এক অবচেতনার দুনিয়ায় নিজেকে হারিয়ে ফেললো উর্মি।
ভালবাসার ভিখারি