09-04-2023, 10:20 AM
*ফিল্মস্টার দিলীপকুমার* বিমানে উঠলেন। বিজনেস ক্লাসে তেমন লোক নেই আজ। তাঁকে বিমানে তুলে দিতে কয়েকজন এসেছিলেন সঙ্গে। আজকাল সঙ্গে লোক না থাকলে চলাচল করা মুশকিল। এয়ারপোর্ট থেকে ট্রেন, স্টেশনে ভক্তেরা অতিষ্ঠ করে তোলে। এদের কিছু বলাও যায় না। যাইহোক দিলীপকুমার ওরফে ইউসুফ বিমানের সিটে গা এলিয়ে দিলেন। কিছু সময় পরে বিমানসেবিকা হাসি হাসি মুখে বললেন, "স্যার জুস নেবেন ?"
মেয়েটিকে দেখলেই বোঝা যাচ্ছে দিলীপকুমার-কে দেখে তার বুকের ভেতরটা উথলে উঠছে। একগাল হেসে দিলীপকুমার 'হ্যাঁ' বলতেই মেয়েটি তাঁর পাশের সিটের লোকটিকে একই প্রশ্ন করল। ইউসুফ এতক্ষণ লোকটাকে লক্ষ্য করেননি। লোকটি তাঁর পাশে জানলার দিকের সিটে বসে খবরে কাগজ পড়ছিলেন। বিমানসেবিকার প্রশ্নে লোকটি কাগজ থেকে মুখ তুলে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছেন, সে বলতে কী চাইছে ? এবার ইউসুফ তাঁর মুখ দেখলেন। এয়ার ইন্ডিয়ার বিজনেস ক্লাসের টিকিট বেশ দামী। অথচ লোকটাকে একেবারেই সাধারণ বলে মনে হচ্ছে। জৌলুসহীন হাফ হাতা জামা লোকটা না গুঁজে পড়েছেন। সঙ্গে ছাই রঙের প্যান্ট। মনে হচ্ছে এই জামা প্যান্টের কাপড় অতি সাধারণ দোকান থেকে কেনা। ইউসুফ এও লক্ষ্য করলেন, তাঁর পায়ে জুতো নেই, রয়েছে সাধারন একটা চামড়ার চটি। আর রয়েছে কাপড়ের একটা ঝোলা ব্যাগ। তাঁর বড় কৌতূহল হচ্ছে, এমন একটা লোককে বিজনেস ক্লাসের টিকিট কেটে দিল কে ?
এমন মানুষরা বিমানে উঠে হাভাতের মতো খেতে শুরু করেন, ইউসুফ দেখেছেন। তাই এই লোকটা যখন বিমানসেবিকার প্রস্তাব শুনে বললেন, 'অনলি ওয়াটার উইল ডু।' তখন তাঁর কৌতুহল বেড়ে গেল। ছোট করে ছাঁটা চুল আর ছোট গোঁফের এই মানুষটার বয়স কত হবে ? মনে হচ্ছে পঞ্চাশ পার করেছেন। বেশ লম্বা। হাতের কাগজটা ইংরেজি। খুব মন দিয়ে তিনি সেটা পড়ছেন। মাঝে মধ্যে পেন্সিল দিয়ে লেখার নীচে দাগ দিচ্ছেন। এখন অভিনয়ের কাজ এত বেড়ে গেছে যে, ইউসুফ প্রতিদিন খবরের কাগজ পড়ার সময় পান না। আগে খবরের কাগজ পড়ার অভ্যাস ছিল। কিন্তু তিনি এমন কাউকে চেনেন না, যিনি খবরের কাগজ পড়তে পড়তে পেন্সিল দিয়ে আন্ডারলাইন করেন। জুসের গ্লাসে চুমুক দিতে দিতে গোয়েন্দার মতো ইউসুফ লোকটাকে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলেন। হাতে ঘড়ি নেই। কব্জিতে কোন দাগও নেই। কাজেই ঘড়ি পরার অভ্যাস লোকটার নেই। কথাটা মাথায় আসতেই নিজের ঘড়ির দিকে নজর গেল তাঁর। সম্প্রতি ভারত সরকার এইচ এমটি নামে একটা ঘড়ির কারখানা খুলেছে ব্যাঙ্গালোর শহরে। এটা সেই কোম্পানির একটা দামী মডেল। বিমান ছাড়ার সময় হয়েছে। সেবিকা জুসের গ্লাস নিতে এসে বুঝিয়ে বললেন বিমানের ভেতর কি কি সাবধানতা নিতে হবে। ইউসুফ দেখলেন পাশের লোকটি মন দিয়ে সেবিকার কথা শুনছেন। এই সুযোগে লোকটার সঙ্গে তার চোখাচোখি হল। অথচ লোকটার দৃষ্টিতে কোনও পরিবর্তন এলো না। ইউসুফ বুঝলেন এই মানুষটা দিলীপকুমার কে চেনেন না। বিমানসেবিকা একটা খাতা এগিয়ে দিয়েছেন। সে দিলীপকুমারের অটোগ্রাফ নিতে চায়। ইউসুফ সই দিলেন, কিন্তু তাঁর ভেতরটা কেমন যেন করছে। পাশের মানুষটিকে তিনি কিছুতেই ধরতে পারছেন না।
বিমানসেবিকা কিছু খাবার আর চা দিতে এসেছিল। এতক্ষণে ভদ্রলোকের কাগজ পড়া শেষ হয়েছে। তিনি কাগজ গুটিয়ে রেখে চা নিলেন, আর কিছু খেতে রাজি হলেন না। পাশাপাশি বসে চা খাওয়ার সুবাদে মহম্মদ ইউসুফ খান সুযোগ পেলেন মানুষটার সঙ্গে দুটো কথা বলার।
'আপনি কি বোম্বাই যাচ্ছেন ?'
ইউসুফের এই প্রশ্নে ভদ্রলোক 'হ্যাঁ' সূচক মাথা নেড়ে জানতে চাইলেন, 'আপনিও বোম্বাইয়ে থাকেন ?'
এই প্রশ্নে ধাক্কা খেলেন ইউসুফ। বাইশ বছর বয়সে প্রথম রূপোলী পর্দায় এসেছিলেন তিনি, দেখতে দেখতে দশ বছর কেটে গেছে। এখন ভারতের যে কোনও শহরে তাঁকে দেখতে হিড়িক পড়ে যায়। আর এই লোকটা কিনা প্রশ্ন করছে, সে কোথায় থাকে ! নিজেকে আর সামলাতে না পেরে ইউসুফ বললেন, 'হ্যাঁ, বোম্বাইয়ে থাকি। আমি সিনেমা করি। আপনি দিলীপকুমারের নাম নিশ্চয়ই শুনেছেন।' অনেক সময় মানুষ আশা করেন না, তাঁর পাশের সিটে বিখ্যাত অভিনেতা এসে বসবেন। তাই চিনতে পারেন না। পরে আফসোস হয়, ইশ্, যদি আলাপ করতাম। এই সব সাতপাঁচ ভেবে নিজেই নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন ইউসুফ। তাঁর খুব আশা ছিল, নাম শুনে লোকটা তাকে নিশ্চয়ই চিনবেন। আশার সেই আয়না ভেঙে পড়ল যখন লোকটা বললেন, 'মাফ করবেন। আমার সিনেমা দেখা হয় না।'
ইউসুফ খান বললেন, 'এক দশকের বেশি সময় ধরে সিনেমায় অভিনয় করছি। অনেকেই আমাকে বোম্বাইয়ের এক নম্বর নায়ক বলেন।'
জ্বলন্ত অঙ্গারে জল দেওয়ার মতো করে লোকটা বললেন, 'ওঃ আচ্ছা।' তাঁর চা খাওয়া শেষ হয়ে গিয়েছিল। ব্যাগ থেকে একটা বই বার করে তিনি এবার সেখানে ডুবে গেলেন।
পাইলট ঘোষণা করলেন, কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমান বোম্বাইয়ে নামবে। আকাশ পাতাল ভাবছেন ইউসুফ। লোকটার যথেষ্ট টাকা আছে। নইলে বিমানের বিজনেস ক্লাসে উঠতে পারতেন না, অথচ তিনি দিলীপকুমারের নাম জানেন না ! এক যুগ অভিনয় করার পরেও যদি এমন হয় তাহলে নিজের উপর বিশ্বাস টলে যায়। ভদ্রলোক তাঁর কাগজ বই গুছিয়ে নিচ্ছেন। বিমান মাটিতে নেমে পড়েছে। গতিবেগ কমছে ধীরে ধীরে। এবার থেমে যাবে। সৌজন্যের খাতিরে হাত বাড়িয়ে দিয়ে দিলীপকুমার বললেন, 'আপনার সঙ্গে আলাপ হয়ে ভালো লাগলো।'
ভদ্রলোক হাসি মুখে হাত মেলালেন। আর ঠিক তখনই দিলীপকুমার করলেন সেই আকাঙ্ক্ষিত প্রশ্নটা, 'আপনার নামটা যদি....।'
ভদ্রলোক উঠতে উঠতে বললেন, *'জে আর ডি টাটা।'*
ইউসুফ নিজেও উঠতে যাচ্ছিলেন। ভদ্রলোকের নাম শুনে আবার বসে পড়লেন। মনে হচ্ছে তিনি সিটের মধ্যে তলিয়ে যাচ্ছেন। ফেরার পথে গাড়ি থামালেন বইয়ের দোকানে। কিনলেন *জে আর ডি টাটা*-র উপর লেখা একটা বই। লেখক তার লেখা শুরু করেছেন টাটা সাহেবের একটি উক্তি দিয়ে, *"গভীর চিন্তা ও পরিশ্রম ছাড়া কখনোই সার্থক কিছু পাওয়া যায় না ( Nothing worhwhile is achieved without deep thought and hard work ).*
পরবর্তীকালে মধুবালাকে এই গল্পটা বলতে বলতে দিলীপ কুমার বলেছিলেন, 'আমি ভাবছিলাম লোকটা আমাকে চিনতে পারছেন না কেন ! এখন ভাবছি, আমি তাঁকে কেন চিনতে পারিনি !' জিজ্ঞাসা না করলে তিনি তাঁর নামটা পর্যন্ত বলতেন না।
মেয়েটিকে দেখলেই বোঝা যাচ্ছে দিলীপকুমার-কে দেখে তার বুকের ভেতরটা উথলে উঠছে। একগাল হেসে দিলীপকুমার 'হ্যাঁ' বলতেই মেয়েটি তাঁর পাশের সিটের লোকটিকে একই প্রশ্ন করল। ইউসুফ এতক্ষণ লোকটাকে লক্ষ্য করেননি। লোকটি তাঁর পাশে জানলার দিকের সিটে বসে খবরে কাগজ পড়ছিলেন। বিমানসেবিকার প্রশ্নে লোকটি কাগজ থেকে মুখ তুলে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছেন, সে বলতে কী চাইছে ? এবার ইউসুফ তাঁর মুখ দেখলেন। এয়ার ইন্ডিয়ার বিজনেস ক্লাসের টিকিট বেশ দামী। অথচ লোকটাকে একেবারেই সাধারণ বলে মনে হচ্ছে। জৌলুসহীন হাফ হাতা জামা লোকটা না গুঁজে পড়েছেন। সঙ্গে ছাই রঙের প্যান্ট। মনে হচ্ছে এই জামা প্যান্টের কাপড় অতি সাধারণ দোকান থেকে কেনা। ইউসুফ এও লক্ষ্য করলেন, তাঁর পায়ে জুতো নেই, রয়েছে সাধারন একটা চামড়ার চটি। আর রয়েছে কাপড়ের একটা ঝোলা ব্যাগ। তাঁর বড় কৌতূহল হচ্ছে, এমন একটা লোককে বিজনেস ক্লাসের টিকিট কেটে দিল কে ?
এমন মানুষরা বিমানে উঠে হাভাতের মতো খেতে শুরু করেন, ইউসুফ দেখেছেন। তাই এই লোকটা যখন বিমানসেবিকার প্রস্তাব শুনে বললেন, 'অনলি ওয়াটার উইল ডু।' তখন তাঁর কৌতুহল বেড়ে গেল। ছোট করে ছাঁটা চুল আর ছোট গোঁফের এই মানুষটার বয়স কত হবে ? মনে হচ্ছে পঞ্চাশ পার করেছেন। বেশ লম্বা। হাতের কাগজটা ইংরেজি। খুব মন দিয়ে তিনি সেটা পড়ছেন। মাঝে মধ্যে পেন্সিল দিয়ে লেখার নীচে দাগ দিচ্ছেন। এখন অভিনয়ের কাজ এত বেড়ে গেছে যে, ইউসুফ প্রতিদিন খবরের কাগজ পড়ার সময় পান না। আগে খবরের কাগজ পড়ার অভ্যাস ছিল। কিন্তু তিনি এমন কাউকে চেনেন না, যিনি খবরের কাগজ পড়তে পড়তে পেন্সিল দিয়ে আন্ডারলাইন করেন। জুসের গ্লাসে চুমুক দিতে দিতে গোয়েন্দার মতো ইউসুফ লোকটাকে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলেন। হাতে ঘড়ি নেই। কব্জিতে কোন দাগও নেই। কাজেই ঘড়ি পরার অভ্যাস লোকটার নেই। কথাটা মাথায় আসতেই নিজের ঘড়ির দিকে নজর গেল তাঁর। সম্প্রতি ভারত সরকার এইচ এমটি নামে একটা ঘড়ির কারখানা খুলেছে ব্যাঙ্গালোর শহরে। এটা সেই কোম্পানির একটা দামী মডেল। বিমান ছাড়ার সময় হয়েছে। সেবিকা জুসের গ্লাস নিতে এসে বুঝিয়ে বললেন বিমানের ভেতর কি কি সাবধানতা নিতে হবে। ইউসুফ দেখলেন পাশের লোকটি মন দিয়ে সেবিকার কথা শুনছেন। এই সুযোগে লোকটার সঙ্গে তার চোখাচোখি হল। অথচ লোকটার দৃষ্টিতে কোনও পরিবর্তন এলো না। ইউসুফ বুঝলেন এই মানুষটা দিলীপকুমার কে চেনেন না। বিমানসেবিকা একটা খাতা এগিয়ে দিয়েছেন। সে দিলীপকুমারের অটোগ্রাফ নিতে চায়। ইউসুফ সই দিলেন, কিন্তু তাঁর ভেতরটা কেমন যেন করছে। পাশের মানুষটিকে তিনি কিছুতেই ধরতে পারছেন না।
বিমানসেবিকা কিছু খাবার আর চা দিতে এসেছিল। এতক্ষণে ভদ্রলোকের কাগজ পড়া শেষ হয়েছে। তিনি কাগজ গুটিয়ে রেখে চা নিলেন, আর কিছু খেতে রাজি হলেন না। পাশাপাশি বসে চা খাওয়ার সুবাদে মহম্মদ ইউসুফ খান সুযোগ পেলেন মানুষটার সঙ্গে দুটো কথা বলার।
'আপনি কি বোম্বাই যাচ্ছেন ?'
ইউসুফের এই প্রশ্নে ভদ্রলোক 'হ্যাঁ' সূচক মাথা নেড়ে জানতে চাইলেন, 'আপনিও বোম্বাইয়ে থাকেন ?'
এই প্রশ্নে ধাক্কা খেলেন ইউসুফ। বাইশ বছর বয়সে প্রথম রূপোলী পর্দায় এসেছিলেন তিনি, দেখতে দেখতে দশ বছর কেটে গেছে। এখন ভারতের যে কোনও শহরে তাঁকে দেখতে হিড়িক পড়ে যায়। আর এই লোকটা কিনা প্রশ্ন করছে, সে কোথায় থাকে ! নিজেকে আর সামলাতে না পেরে ইউসুফ বললেন, 'হ্যাঁ, বোম্বাইয়ে থাকি। আমি সিনেমা করি। আপনি দিলীপকুমারের নাম নিশ্চয়ই শুনেছেন।' অনেক সময় মানুষ আশা করেন না, তাঁর পাশের সিটে বিখ্যাত অভিনেতা এসে বসবেন। তাই চিনতে পারেন না। পরে আফসোস হয়, ইশ্, যদি আলাপ করতাম। এই সব সাতপাঁচ ভেবে নিজেই নিজের পরিচয় দিয়েছিলেন ইউসুফ। তাঁর খুব আশা ছিল, নাম শুনে লোকটা তাকে নিশ্চয়ই চিনবেন। আশার সেই আয়না ভেঙে পড়ল যখন লোকটা বললেন, 'মাফ করবেন। আমার সিনেমা দেখা হয় না।'
ইউসুফ খান বললেন, 'এক দশকের বেশি সময় ধরে সিনেমায় অভিনয় করছি। অনেকেই আমাকে বোম্বাইয়ের এক নম্বর নায়ক বলেন।'
জ্বলন্ত অঙ্গারে জল দেওয়ার মতো করে লোকটা বললেন, 'ওঃ আচ্ছা।' তাঁর চা খাওয়া শেষ হয়ে গিয়েছিল। ব্যাগ থেকে একটা বই বার করে তিনি এবার সেখানে ডুবে গেলেন।
পাইলট ঘোষণা করলেন, কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমান বোম্বাইয়ে নামবে। আকাশ পাতাল ভাবছেন ইউসুফ। লোকটার যথেষ্ট টাকা আছে। নইলে বিমানের বিজনেস ক্লাসে উঠতে পারতেন না, অথচ তিনি দিলীপকুমারের নাম জানেন না ! এক যুগ অভিনয় করার পরেও যদি এমন হয় তাহলে নিজের উপর বিশ্বাস টলে যায়। ভদ্রলোক তাঁর কাগজ বই গুছিয়ে নিচ্ছেন। বিমান মাটিতে নেমে পড়েছে। গতিবেগ কমছে ধীরে ধীরে। এবার থেমে যাবে। সৌজন্যের খাতিরে হাত বাড়িয়ে দিয়ে দিলীপকুমার বললেন, 'আপনার সঙ্গে আলাপ হয়ে ভালো লাগলো।'
ভদ্রলোক হাসি মুখে হাত মেলালেন। আর ঠিক তখনই দিলীপকুমার করলেন সেই আকাঙ্ক্ষিত প্রশ্নটা, 'আপনার নামটা যদি....।'
ভদ্রলোক উঠতে উঠতে বললেন, *'জে আর ডি টাটা।'*
ইউসুফ নিজেও উঠতে যাচ্ছিলেন। ভদ্রলোকের নাম শুনে আবার বসে পড়লেন। মনে হচ্ছে তিনি সিটের মধ্যে তলিয়ে যাচ্ছেন। ফেরার পথে গাড়ি থামালেন বইয়ের দোকানে। কিনলেন *জে আর ডি টাটা*-র উপর লেখা একটা বই। লেখক তার লেখা শুরু করেছেন টাটা সাহেবের একটি উক্তি দিয়ে, *"গভীর চিন্তা ও পরিশ্রম ছাড়া কখনোই সার্থক কিছু পাওয়া যায় না ( Nothing worhwhile is achieved without deep thought and hard work ).*
পরবর্তীকালে মধুবালাকে এই গল্পটা বলতে বলতে দিলীপ কুমার বলেছিলেন, 'আমি ভাবছিলাম লোকটা আমাকে চিনতে পারছেন না কেন ! এখন ভাবছি, আমি তাঁকে কেন চিনতে পারিনি !' জিজ্ঞাসা না করলে তিনি তাঁর নামটা পর্যন্ত বলতেন না।