08-04-2023, 09:54 PM
## ৬৬ ##
-
“অর্থ্যাৎ আপনি খাবেন মিহিদানা আর আমার বেলায় নকুলদানা!“
- “মতলব?”
- “মতলব, আপনি তিন ফসলা জমি নিয়ে বড়লোকদের ফুর্তি করার বৃন্দাবন বানাবেন, সেক্টর ফাইভে সরকারী অনুদানের জমিতে জয়েন্ট ভেন্চারের নামে প্রমোটারি করবেন; আমি সবই জানতে পারবো, কিন্তু আমার কাগজে কিছু ছাপতেও পারবো না, আমার চ্যানেলে কিছু বলতেও পারবো না। আর তার বদলে কিছুদিন বাদেই অচল হয়ে যাওয়া পাঁচশো-হাজার টাকায় আমায় এক কোটি টাকা দিয়ে আমার মুখ বন্ধ করতে চাইছেন। আমাকে দেখে কি এতটাই বোকাচোদা মনে হয় আপনার?”
- “তাজ্জব কি বাত, আপনি ভি ইয়ে খবর জানেন?”
- “হাঃ হাঃ হাঃ”, অট্টহাস্য দিয়ে উঠলেন সরকার সাহেব, “লাখোটিয়াজী, এবার কিন্তু আমার আপনাকে বোকাচোদা মনে হচ্ছে। শায়দ আপ ভুল রহে হ্যায়, খবর রাখনা হি মেরা পেশা হ্যায়।“
কথা হচ্ছিলো সরকার সাহেবের স্যুটে বসে। কোয়েলরানির কৌমার্য্যহরণ পালার শেষে যখন ভেবলিকে দিয়ে কুমারীর সতীচ্ছদ ফাটানো রক্ত, রাগরস এবং নিজের থকথকে বীর্য্য মাখানো পুংদন্ডটা চাটিয়ে সাফ করাচ্ছিলেন, তখনই লাখোটিয়ার ফোন আসলো; একটা মালাইদার ডিল নিয়ে কথা বলতে চান। লাখোটিয়া ডেকে পাঠাবে আর শৌভিক সরকার কুত্তার মতো দৌড় লাগাবে, এমনটা তো হতেই পারে না। “আই আ্যম নট দি কিং, আই আ্যম দি কিংমেকার”। লাখোটিয়াকে নিজের স্যুটে ডেকে পাঠিয়ে, ভেবলিকে দিয়ে ল্যাওড়াটা মোটামুটি সাফ করিয়ে, বাথরুমে গিয়ে ধুয়ে এসে ধুতিটাকে লুঙ্গির মতো জড়িয়ে নিলেন। প্রচুর জল খসানো এবং সরকার সাহেবের ভীমগাদন সহ্য করার পর ক্লান্ত হয়ে বালিশে মুখ গুঁজে শুয়ে ছিলো কোয়েল। ওর ল্যাংটো শরীরটার উপর একটা পাতলা বেডশীট টেনে দিলেন শৌভিকবাবু।
তারপর চোখ পড়লো ঘরে উপস্থিত দ্বিতীয় নারীর দিকে। উফ্ফ্ ডিসগাস্টিং। এই মাগীটাকে আর টলারেট করা যাচ্ছে না। তাছাড়া লাখোটিয়ার সাথে গোপন মিটিঙের সময় এর উপস্থিতিও কাম্য নয়। “জাস্ট ফাক অফ ….”, মুখে চোখে একরাশ বিরক্তি ফুটিয়ে বললেন শৌভিক। একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেলো ভেবলি। পরক্ষণেই সামলে নিলো নিজেকে। কচি ছুঁড়ী পেয়ে আর তার এঁটো শরীর পছন্দ নয় বুড়োর। পুরুষদের কাছ থেকে এরকম ব্যবহার পেতে অভ্যস্ত সে। চা খেয়ে ভাড় ফেলে দিতে ছেলেরা খুবই ওস্তাদ। অবশ্য সে নিজেও তো ট্যাঁকের ওজন কমে যাওয়া পুরুষদের বাল দিয়ে পাত্তা দেয়। এ খেলার নিয়মই এই; অন্যকে ব্যবহার করা এবং নিজে ব্যবহৃত হওয়া এই খেলার দস্তুর। তাই বিলকুল সেন্টু না খেয়ে মারিজুয়ানার একটা পাউচ এবং ডানহিলের প্যাকেটটা নিয়ে, উদোম শরীরে একটা বেডশীট চাপিয়ে বেরিয়ে আসে সে।
গালাগালিগুলো চুপচাপ হজম করলেন লাখোটিয়া। তার ফ্যক্টরির ইউনিয়ানের নেতাও সকালে শ্রমিকদের সামনে তাকে চার অক্ষর – পাঁচ অক্ষরের গালিগালাজ করে, আর রাতের বেলায় পিছনের দরজা দিয়ে ঢুকে কুত্তার মতো পায়ের কাছে কুঁই কুঁই করে দু’চারটে নোটের বান্ডিলের জন্য। এর জন্যই তো তিনি সফল ব্যবসায়ী। তার ঠাকুর্দা রাজস্থান থেকে লোটা-কম্বল সম্বল করে এসে রাজমিস্ত্রীর যোগাড়ের কাজ করতেন, তার বাবা গোটা তিরিশেক লেবার জোগাড় করে ঠেকেদারি করতেন আর আজ তিনি বাংলার রিয়েল এস্টেট দুনিয়ার বেতাজ বাদশা।
কিন্তু এই সরকার হারামিও কোনো ছোটোখাটো লোক নয়। বাংলা সংবাদ মাধ্যমের মধ্যমনি। তার নিজের কতো ভালো নেটওয়ার্ক আছে দিল্লীর দরবারে, তাও খবরটা পেতে এতো দেরী হলো। আর এই মাদারচোদ ঠিক নোট বাতিলের খবরটা পেয়ে গেছে, তারও আগে। এই লোককে তো সমঝে চলতেই হবে। না হলে কোথা থেকে আঙ্গলি করে দেবে, তার প্রজেক্টের পোঁয়া মারা যাবে। এই বহন কে ল্যাওড়ে কে ম্যানেজ করতে পারলেই চাষীদের আন্দোলনের মা-মাসী করে দেওয়া যাবে। লাখোটিয়াজীর জীবনের মূলমন্ত্র হলো, “জরুরত পড়নে সে গধে কো ভী বাপ বোলনা পড়তা হ্যায়।“ মূহূর্তে নিজের তেবড় পাল্টে ফেললেন লাখোটিয়াজী।
- “আরে ছোড়িয়ে সরকার সাহেব। আপকা ডিম্যান্ড বোলিয়ে।“
- “দেখুন লাখোটিয়াজী, যে দু’টো প্রজেক্টে আপনি হাত দিতে যাচ্ছেন, দুটোই ইল্লিগ্যাল; এর মধ্যে আবার চাষীদের কৃষিজমি দখল করে রিসর্ট বানানোর কেসটা তো দারুন সেনসিটিভ। এই এক ইস্যুতে একটা সরকার পরিবর্তন হয়ে গেলো; সেটাতো তাও কারখানা বানানোর জন্য ছিলো, জনস্বার্থের মিনিমাম একটা ট্যাগ দেওয়া গিয়েছিলো; যদিও সেটাও সুপ্রীম কোর্টে টিকলো না। আর আপনার কেসটা তো বড়লোকদের ফুর্তির আখড়া বানানোর ব্যাপার। এক্কেবারে ব্রেকিং নিউজ হয়ে যাবে। পাব্লিক সকাল বিকাল চেটেপুটে খাবে। এই খবর যদি আমার চ্যানেলে চেপে যাই, চ্যানেলের টিআরপি নেমে যাবে আর আমার বিপি বেড়ে যাবে হুহু করে। আমার কমপিটিটর চ্যানেল ‘সাতদিন’ কি এই নিউজটা ছেড়ে দেবে? পাব্লিক আমার চ্যানেল এবং কাগজ দুটোই বয়কট করবে। এমনিতেই কাগজের সার্কুলেশন লাখ ছ’য়েক কমে গেছে। এই অবস্থায় আপনি কিনা দুদিন বাদেই অচল হয়ে যাবে, এমন নোট দিয়ে ছেলে ভোলাতে চাইছেন?”
- “বেশ তো, গুস্সা হচ্ছেন কেন? গলতি হইয়ে গিয়েসে। আপনাকে কি ভাবে কমপেনসেট করতে পারি।“
- “দেখুন লাখোটিয়াজী, আপনার টোট্যাল কেসটা ধামাচাপা দিতে গেলে আপনাকে আমার ফাইন্যান্সিয়াল লসটা বিয়ার করতে হবে।“
- “বলুন, কিতনা এমাউন্ট?”
- “এমাউন্ট-ট্যামাউন্ট নয়। আগামী ছয় মাস আমার চ্যানেলে প্রাইম টাইমে নিউজটা আপনাকে স্পনসর করতে হবে এবং আমার শনিবার-রবিবার আমার খবর কাগজের এক্সট্রা ফুল ফ্রন্ট পেজ আ্যড দিতে হবে।“
মনে মনে পুরো খরচটা হিসেব করে লাখোটিয়াজীর মাথায় চক্কর এসে গেলো। বুঢ্ঢা শালা পাক্কা মাদারচোদ হ্যায়। লেকিন ইসে নারাজ ভি নহী কর সকতে হ্যায়। দো নম্বরী ধান্দা করনা হ্যায়, তো মিডিয়াকো সাথ মে লেকে চলনা হি হ্যায়। ঠিক হ্যায় থোড়া বার্গেনিং তো হো সকতা হ্যায়।
- “সরকারসাহাব, ইয়ে থোড়া জ্যাদা নহী হো গয়্যা”
- “আমার তো মনে হয় না, বাকি চয়েস ইজ ইওর্স।“
- “নিউজপেপারে শনিচারের আ্যডটা কম সে কম তো ছেড়ে দিন।“
এক মূহূর্ত চিন্তা করলেন শৌভিক সরকার। ততক্ষণে তার চোখ পড়ে গেছে বেডশীটের নীচ থেকে বেরিয়ে থাকা কোয়েলের পায়ের দিকে। “স্মরগরল খন্ডনং, মম শিরসি মন্ডনং, দেহি পদপল্লব মুদারম“। কবি জয়দেব বোধহয় এরকম পদযুগল দেখেই এই পংক্তি রচনা করেছিলেন। হে প্রিয়ে কামবিষের নাশক আমার শিরোভূষণ তোমার ওই দুটি সুঠাম চরণ আমাকে আমার মাথায় নিতে দেও। আমার চিত্ত মদনানলে দগ্ধ। তোমার পাদস্পর্শে তার জ্বালা জুড়োক। মাড়োয়ারী বুড়োটার সঙ্গে আর সময় কাটাতে রাজী নন তিনি। এখন তিনি এই ফুলকলির পা দুটো নিয়ে খেলতে চান। “ওক্কে, দ্যা ডিল ইজ ডান”, বলে আলোচনায় ছেদ টেনে দিলেন সরকারসাহেব।
ভালবাসার ভিখারি