02-04-2023, 07:51 PM
(01-04-2023, 06:26 PM)Bumba_1 Wrote:
বিল্টু আর তার মামা গেছে পাত্রী দেখতে। মামার মেজাজ খুবই ফুরফুরে। বিল্টুকে বারবার জিজ্ঞাসা করছিলো , "পাত্রীর বাড়ি কি লাল?" বিল্টু বললো , "বাড়ির রঙ তো জানি না!" মামা বিরক্ত হয়ে উত্তর দিলো , "ওরে গাধা, বাড়ির রঙ নয়। আমি জানতে চাইছি ওরা সিপিএম কিনা!" বিল্টু বললো, তার জানা নেই।
যাইহোক , পাত্রীর বাড়ির সামনে যেতেই দেখা গেলো একটা লোক মহাকাশচারী টাইপ ড্রেস পরে দাঁড়িয়ে আছেন। ওদের দু'জনকে রিক্সা থেকে নামতে দেখেই নমস্কার করলেন। পরিচয় দিলেন , উনি পাত্রীর কাকা। বাড়ির গেটে ঢোকার আগে বিল্টু আর তার মামার কপালে থার্মাল গান লাগিয়ে দেখলেন জ্বর আছে কিনা। তারপর জিজ্ঞাসা করলেন , "রিপোর্ট এনেছেন?" মামা বললো , "আজ্ঞে ছেলের গুপ্তরোগ নেই।"
বিল্টুও রিপোর্টের কথা শুনে ভেবলে গিয়েছিলো। পাত্রীর কাকা বিরক্তি প্রকাশ করে বললেন , "আরে ধুর মশাই, গুপ্তরোগের প্রশ্ন আসছে কোত্থেকে? আমি কোভিড টেস্টের রিপোর্টের কথা বলছি।" এই কথা শুনে বিল্টু আর তার মামা দু'জনেই মাথা নেড়ে জানিয়ে দিলো , "নাহ্ , ওসব নেই।"
পাত্রীর কাকা ছাড়নেওয়ালা পার্টি নয়, এটা বেশ বোঝা গেলো। বললেন, "ওটা আপনাদের আনা উচিৎ ছিলো। এর আগে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁদের আমরা রিপোর্ট ছাড়া অ্যালাও করিনি।" মামা বললো , "তাহলে আমরা আসি!" সঙ্গে সঙ্গে আর একজন পিপিই পরা ভদ্রলোক হাজির হলেন। জানা গেলো ইনি পাত্রীর বাপ, থুড়ি বাবা। তিনি বললেন , "আহা, উনার কথায় কিছু মনে করবেন না প্লিজ , আপনারা ভেতরে আসুন।"
মামা তার উত্তরে বললো , "না না আগে টেস্ট করিয়ে আসি। তারপর না হয় .." বিল্টু চুপচাপ দাঁড়িয়ে এতক্ষণ ধরে সবার কথা শুনছিলো। সে এবার বলে উঠলো , "না মানে টেস্টেও সবসময় ধরা পড়ে না।"
সেই শুনে পাত্রীর কাকা ভদ্রলোকটি বললেন , "আপনাদের কোনো সিম্পটম আছে?" মামা তৎক্ষণাৎ উত্তর দিলো , "দু'দিন হলো খুব গ্যাস হচ্ছে আর বাহ্যে তীব্র দুর্গন্ধ।" তার সঙ্গে বিল্টু সংযোজন করলো , "আসলে দু'দিন পেট পরিষ্কার হয়নি কিনা .. তাই।"
পাত্রীর কাকা গুগুল করলেন। তারপর বললেন , "নাহ্ এগুলো কোভিডের সিম্পটম নয়।" পাত্রীর বাবা ওদের দু'জনকে গদগদ হয়ে ভেতরে নিয়ে যেতে উদ্যত হলেন। তবে তার আগে বললেন , "এই নিন পিপিই কিট পরে নিন।" প্রথমে কিছুটা ইতস্তত করলেও পরে বিল্টু আর তার মামা ওইগুলো পড়ে নিলো , তারপর ফেসশিল্ড। জিনিসগুলো পড়ার ফাঁকে মামা স্বগতক্তি করে উঠলো , "শালা .. পাত্রী দেখতে এসছি, নাকি বাড়ি স্যানিটাইজ করতে!"
ড্রেসপর্ব মিটলে ওদের দু'জনের সারা গায়ে স্প্রে করে দেওয়া হলো। উফফ কি তীব্র দুর্গন্ধ! মামা ফিসফিস করে বললো, "ভাগ্নে, এরা কি নর্দমার জল স্প্রে করে দিলো?" সেই কাকাটা হঠাৎ বলে উঠলেন, "গন্ধটা কেমন লাগছে?" এর উত্তরে বিল্টু কিছু বলার আগেই তার মামা বললো, "সাতদিনের পচা পায়খানার গন্ধ এর চেয়ে বেটার।" কাকা বললেন , "যাক তাহলে আপনি গন্ধ পাচ্ছেন!" মামা বললো , "মানেটা কি?" কাকার উত্তর , "আরে অনেক পাত্রপার্টি গুল মারে। গন্ধ না পেয়েও বলে, পাচ্ছি। তাই , এমন স্প্রে দিয়েছি যে গুল মারার অপশন নেই।"
পাত্রীর বাবা গদগদ হয়ে বললেন , "আমাদের সব স্প্রে পুজো করে ঘরে ঢোকে, মানে আমরা নিয়ে আসি আর কি। তাই, এটা শান্তির জল ভেবে নিন। বিল্টু আর তার মামা ফাইনালি ভেতরে ঢুকলো। ভেতরে কারা বসে আছেন বোঝার উপায় নেই । কারণ সকলেই পিপিই কিট পরে আছেন। এবার পরিচয়পর্ব শুরু হলো .. মামা , মামী , মাসি , মেসো , মা , বাবা .. যদিও এদের সবাইকে একরকম লাগছে । মেয়ে একটা আলাদা চেয়ারে বসেছে। পাত্রপক্ষ অর্থাৎ বিল্টু আর তার মামার জন্য জন্য সিঙ্গারা , মিষ্টি , ফিসফ্রাই , পকোরা এসব প্লেটে সাজিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারপর সেই প্লেটে কিসব স্প্রে করে দেওয়া হলো। মামা সেই দেখে বললো , "যেটা ঢোকার সময় আমাদের গায়ে স্প্রে করেছিলেন, সেই মোষপচা গন্ধের স্প্রে'টা আবার দিলেন?"
পাত্রীর কাকা বললেন , "না না এটা হারবাল। এটা খাবারে দেওয়া যায়, কোনো ক্ষতি হয় না। সিঙ্গারা খেয়ে মনে হলো নর্দমার পাঁক পুরে মিশিয়েছে। ফিসফ্রাইতে এতো ঝাল যে সারা শরীর জ্বলতে শুরু করলো। কাকা জিজ্ঞাসা করলেন , "খুব ঝাল লাগছে?" বিল্টুরা দুজনেই জিভ বার করে "হ্যাঁ" বলতে পারলো কোনোমতে ।
সেই দেখে কাকা মৃদু হেসে জানালেন , "তারমানে স্বাদ যায়নি।" মামা উত্তেজিত হয়ে বলে উঠলো , মানেটা কি?"
"আরে অনেকে স্বাদ না পেয়েও গুল মারে তো , তাই .." নির্বিকার চিত্তে বলে উঠলেন পাত্রীর কাকা। মামা ফিসফিয়ে বিল্টুর কানে বললো , "শালা পুরো ক্ষ্যাপাচোদা ফ্যামিলি। এখানে বিয়ে করলে মরে যাবি বলে দিলাম।
এই প্রথম পাত্রী মুখ খুললো। সে বললো - ''সোফাটা খুব নরম লাগছে না?'' তার উত্তরে বিল্টু আর তার মামা দুজনেই বলে উঠলো , "হ্যাঁ , তা লাগছে। এটাও কি করোনার কোনো টেস্ট?"
কাকা বললেন, '‘না না তা নয়, আসলে এসবই কাকলি ফার্নিচারের থেকে কেনা।" মামা বললো, "কলকাতায় ব্রাঞ্চ খুলেছে নাকি?" কাকার উত্তর , "নাহ্ ডিরেক্ট ওপার থেকে আনিয়েছি , ওরা হোম ডেলিভারি দেয় তো।" তারপর কোথা থেকে দুটো বাচ্চা মেয়ে এসে অন্য একটি সোফায় উঠে লাফাতে শুরু করলো আর তারা চিৎকার করে বলতে লাগলো - "দামে কম মানে ভালো কাকলি ফার্নিচার , দামে কম মানে ভালো কাকলি ফার্নিচার ..."
হঠাৎ বিল্টুর ঘুমটা ভেঙে গেলো ... পেটগরম হয়েছে , বিচ্ছিরি স্বপ্ন।
very funny and great story