02-04-2023, 01:27 PM
ভ দ্র গ ল্প
শুরু:
১০.০৪.২০২২
শুরু:
বউ (আমার হাত থেকে মোবাইলটাকে কেড়ে নিয়ে): "কী সব আজে-বাজে, অশ্লীল জিনিসপত্র রাতদিন বসে-বসে লেখ বলো তো? তোমার লজ্জা করে না? তুমি না ভদ্রলোকের ছেলে!
এরপর থেকে ভদ্র কিছু লিখতে না পারলে, আমি তোমার এই মোবাইলটাকে, ছুঁড়ে পুকুরের জলে ফেলে দেব, এই বলে দিলাম!"
আমি চমকে উঠে ও প্রবলভাবে বিষময় খেয়ে, তড়িঘড়ি জলের বোতলটার দিকে হাত বাড়ালাম।
১.
ছোটোমাসি এক সপ্তাহের জন্য আমাদের বাড়িতে বেড়াতে এসেছে। একাই।
২.
আমার পরীক্ষা শেষ। এখন গরমের ছুটি চলছে।
৩.
ছাদের ছোটো ঘরটা আমার নিজস্ব স্বর্গ। ওখানেই আমি দিনের বেশিরভাগ সময় একা-একাই কাটাই।
৪.
ছাদ থেকে নামবার মুখে, ট্যাঙ্কির পাইপ ঢোকানোর যায়গাটায়, দেওয়াল থেকে বেশ খানিকটা সিমেন্টের চাপড়া খসে গেছে।
ওখান থেকে দোতলার বাথরুমের ভিতরটা আজকাল স্পষ্ট দেখা যায়।
তেতলায় বিশেষ কেউ ওঠে না বলেই, ফোকড়টা এখনও কারও চোখে পড়েনি।
৫.
শেষ চৈত্রের বেলা বারোটা। চারদিকে গনগন করছে রোদ।
মাসি এই একটু আগেই স্নানের ঘরে ঢুকল।
৬.
আমি দেওয়ালের ফুটোয় চোখ লাগিয়ে নিঃশ্বাস বন্ধ করে দাঁড়িয়ে পড়লাম।
মাসির গায়ে, এখন সাবানের ফেনা ছাড়া, আর অন্য কিছু নেই…
৭.
মা, আর বাবা, বিকেল-বিকেলই বেড়িয়ে গেল। শেখরকাকুদের বাড়িতে নেমন্তন্ন আছে।
বলে গেল, ফিরতে রাত হবে; আমি যেন রাত ন'টার মধ্যেই ভালোছেলে হয়ে খেয়ে নিই।
৮.
সারা বাড়ি এখন ফাঁকা।
কিন্তু আমার বুকের মধ্যে যে কী অসম্ভব দামামা বাজছে, সে কেবল আমিই জানি!
৯.
হঠাৎ মাসি নিজের ঘর থেকে বেড়িয়ে এসে, আমার দরজায় দাঁড়াল।
অদ্ভুদ একটা হাসি দিয়ে বলল: "বেসিনের নীচের নর্দমাটা এমন নোংরা করেছিস, যে ওখান দিয়ে আর কিছুতেই জল যাচ্ছে না রে…"
আমি এর উত্তরে কী যে বলব, ভেবে পেলাম না।
মাসি তখন পায়ে-পায়ে, আমার ছোট্ট ঘরটার মধ্যে ঢুকে এল।
ওদিকে পশ্চিম আকাশের বুকে তখন, খুন হওয়া সূর্য, আস্তে-আস্তে ডুবে যাচ্ছে…
১০.
ঘন্টাখানেক পর।
অদৃশ্যপূর্ব, অভূতপূর্ব এবং রোমাঞ্চকর স্বপ্নটার রেশ কাটিয়ে, অবশেষে বিছানা ছেড়ে উঠে পড়লাম আমি।
বীরদর্পে, সাপের খোলসের মতো, মেঝেতে পড়ে থাকা মাসির নাইট-গাউনটাকে মাড়িয়ে, আমি দেওয়ালে ঝোলানো ক্যালেন্ডারটার সামনে চলে এলাম।
তারপর লাল কালি দিয়ে আজকের তারিখটাকে গোল করে দিলাম ক্যালেন্ডারের পাতায়।
আজ থেকে আমি পরিপূর্ণ 'অ্যাডাল্ট পুরুষ' হয়ে উঠলাম; এ দিনটা তাই আমার কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে…
শেষ:
বউ (মোবাইলটাকে আমার হাতে ফিরিয়ে দিয়ে): "উফফ্ কী লিখেছ গো, মাইরি! একটাও খারাপ কথা নেই, অথচ… আমার তো চোখে, আর ওখানে, দু-জায়গাতেই, একসঙ্গে জল চলে এসেছে গো, তোমার এই লেখাটা পড়ে!"
আমি মনে-মনে মুচকি হাসলাম। তারপর বারান্দার ইজ়িচেয়ারটায় গা এলিয়ে বসে, মনের আনন্দে পা নাচাতে-নাচতে ভাবতে থাকলাম, এই গল্পের প্লটটা, 'রগরগে এন্টারটেইনমেন্ট'-এর পরবর্তী ওয়েব-সিরিজের জন্য বিক্রি করে যে টাকা ক'টা পাব, তাই দিয়ে ওপাড়ার দীপ্তি মাসির ক্রমশ ডাগর হয়ে ওঠা মেয়েটাকে এবার একটা বিদেশি চু-খেলনা কিনে দেবই দেব!