31-03-2023, 10:35 AM
সীমানা পেরিয়ে
আমার সাথে ছবিতে তাকে দেখেই সবাই কনফিউসড হয়ে যেত, কেননা আমি ছিলাম আমার বাবার চেহারার একেবারেই বিপরীত। বাবা ছিলেন লাল টুকটুকে ফরসা, টিকলো নাক ঝাকড়া চুল কিন্তু আমি পেয়েছি হালকা শ্যমবর্ণ,চ্যপটা নাক আর সিল্কি চুল। ছবিতে আমার সাথের মহিলাটি শ্যমবর্ণ, পটলচেরা আঁখি, প্রশস্ত বক্ষ ও গলা প্রদেশ, ছবিটি আবক্ষ হওয়ায় ও একটি কাথান শারী পরে ছবি তোলায় মহিলার বক্ষ সম্পদ বোঝার উপায় নেই। তার ছন-বনের মত সোজা ও সিল্কী মোটা চুল কপালে একগোছা এসে পড়েছে। সুন্দর হালকা মেক আপ কোন বাড়াবাড়ি নয় শুধু চোখের উপরে বুকের উপরে টেনে দেওয়া শাড়ির পাড়ের সাথে ম্যাচ করে একটু সোনালী শেড। বন্ধুরা দেখে বলতো বড় বোন কিনা । ছবিটার মাইন্ড ও বডি ল্যাংগুয়েজ এ কেউই বুঝতে পারতো না যে ইনিই আমার একমাত্র গার্লফ্রেন্ড, আমার মা। একজন রমনী যেমন পরম নির্ভরতার পুরষের ঘাড় ও গলায় মাথা রাখে ঠিক তেমনি আমার মাও রেখেছে। আবার ছবিটার এক্সপ্রেশানে মনে হয় না যে ছেলেটা আর মহিলাটির মধ্যে কোন বাজে সম্পর্ক আছে । ছবিটাতে আমার বয়েস তখন একুশ বছর মার ঠিক উনচল্লিশ ।আমার মা ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দিয়েই বিয়ে হয়ে যায় আর তার পরের বছরই আমার এই পৃথিবীতে আগমন। আমি যখন ইঞ্জিনিয়ারিং ফাইনাল সেমিস্টার এর কোর্স ট্রান্সফার করে কানাডাতে আসি ছবিটা তার দুই দিন আগে তোলা। মায়ের ইন্ড্রাস্টিতে জনসংযোগ বিভাগের ক্যামেরা ও ফটোগ্রাফার থাকার পরেও, মা নিউ মার্কেট এর স্টুডিও হতে ক্যামেরাম্যান কে বাসায় এসে আমাদের নীচতলার ড্রয়িংরুমে এই ছবিটা তুলেছিল। আমার বাবা রোড এক্সিডেন্ট এর মারা যান আমি যখন সিক্সে পরি। বাবা ছিলেন ব্যাবসায়ী ও শিল্পপতি, সারাদিন ব্যস্ত তাই বাবার সাথে আমার সম্পর্ক টা ছিল গতানুগতিক টাইপের। সারাদিন তখন আমি কলেজ, ক্লাসমেট আর বাসায় এলে মা। মা ই ছিল আমার একমাত্র ভুবন। বিশাল বাড়ী আমাদের। সারাদিন বলতে গেলে দুটো মাত্র প্রানী। নীচে বুয়া, আয়া ঝি ড্রাইভার চাকর সবাই আছে যার যার থাকার জায়গায় কিনতু আমাদের দোতলা পর্যন্ত তাদের কোন যাতায়ত ছিলনা শুধু মাত্র দিনের ঝাড়ু ও আসবাবপত্র পরিষ্কার করা জন্য রহিম চাচা দম্পতি যাদের কে আমি জন্মের পর থেকেই দেখছি তাদেরই উপরে যাওয়ার অনুমতি ছিল। কিন্তু তাও দিনে একবার সেই সকালবেলার সময়টাতে ।
আমি দেশে ফিরছি প্রায় তিন বছর পরে। আমার মায়ের কাছে। এই তিনটাবছর খালি প্রান আকুলিবিকুলি করেছে কবে আমি দেশে ফিরবো। এই তিনটা বছর বলতে গেলে আমার দম ছিল আমার মায়ের সাথে এই ছবিটা, আমার ডর্মে এসে কেউ ছবিটা দেখে বিশ্বাস করতে চাইত না এটা আমার মায়ের ছবি কিন্তু ফ্রেমের বিপরীতে আমার বাবা ছোট্ট আমি ও আমার মায়ের আরেকটা পুরনো পারিবারিক ছবি রেখে দিয়েছিলাম, সেটা দেখালে সবাই নিশ্চিত হত। একবার জর্জ ও স্টেচি এসে তো দেখে অবাক- নাও উই কুড হ্যাভ ক্লিয়ারিটি হোয়াই ইউ এভয়েড গার্লস ম্যান, সো নাইস এন্ড কিউট, ইউর গিফা ম্যান। আমি সাথে সাথে বলেছিলাম ওহ নো নো –শি ইজ মাই মাম। রেজাল্ট মোটামুটি হল আমার। আসলে আমার এই সবকিছু এখন বাবার ইন্ড্রাস্টিতে দেখভাল করার কাজে লাগবে রেজাল্ট করার জন্য আসিনি। এসেছি আমার ম্যাকানিকেল ও সিভিল সাইড টা আরেকটু ক্লিয়ার হয়ে নেওয়ার জন্য। আমি জানি ঠিক এমন আকুলিবিকুলি করে থাকতো আমার মা, আমি কবে ফিরবো। কবে আমাদের বাড়ীর উপর তলটা আমি আর মা মিলে সবসময় অধিকার করে রাখবো।
চোখ বন্ধ করে আমি কতবার রাতের পর রাত মায়ের গন্ধ পেতাম। মাও আমাকে বলতো তোর শরীরের গন্ধ লেগে আছে আমার নাকে, তুই কবে আসবি। পৃথিবীতে যত ধন সম্পদ ও চাকুরী আমার জন্য এদেশ রেখে দিকনা কেন, কিন্তু আমি ফিরবো মায়ের গন্ধের জন্য। মা আমার পাগল করা প্রান। হ্যাঁ আমাদের পারিবারিক শিল্প গ্রুপের ব্যবসা না থাকলে আমি হয়তো মাকে নিয়ে এই দেশে চলে আসতাম স্থায়ীভাবে। কিন্তু বাবার করা এত কষ্টের সম্পদ মা দ্বিগুন করেছে, সেটা রেখে মায়ের পক্ষেও আসা সম্ভব না, আর এদেশে আমি অমন রাজকীয় হালে থাকতেও পারবো না।
আমার সাথে ছবিতে তাকে দেখেই সবাই কনফিউসড হয়ে যেত, কেননা আমি ছিলাম আমার বাবার চেহারার একেবারেই বিপরীত। বাবা ছিলেন লাল টুকটুকে ফরসা, টিকলো নাক ঝাকড়া চুল কিন্তু আমি পেয়েছি হালকা শ্যমবর্ণ,চ্যপটা নাক আর সিল্কি চুল। ছবিতে আমার সাথের মহিলাটি শ্যমবর্ণ, পটলচেরা আঁখি, প্রশস্ত বক্ষ ও গলা প্রদেশ, ছবিটি আবক্ষ হওয়ায় ও একটি কাথান শারী পরে ছবি তোলায় মহিলার বক্ষ সম্পদ বোঝার উপায় নেই। তার ছন-বনের মত সোজা ও সিল্কী মোটা চুল কপালে একগোছা এসে পড়েছে। সুন্দর হালকা মেক আপ কোন বাড়াবাড়ি নয় শুধু চোখের উপরে বুকের উপরে টেনে দেওয়া শাড়ির পাড়ের সাথে ম্যাচ করে একটু সোনালী শেড। বন্ধুরা দেখে বলতো বড় বোন কিনা । ছবিটার মাইন্ড ও বডি ল্যাংগুয়েজ এ কেউই বুঝতে পারতো না যে ইনিই আমার একমাত্র গার্লফ্রেন্ড, আমার মা। একজন রমনী যেমন পরম নির্ভরতার পুরষের ঘাড় ও গলায় মাথা রাখে ঠিক তেমনি আমার মাও রেখেছে। আবার ছবিটার এক্সপ্রেশানে মনে হয় না যে ছেলেটা আর মহিলাটির মধ্যে কোন বাজে সম্পর্ক আছে । ছবিটাতে আমার বয়েস তখন একুশ বছর মার ঠিক উনচল্লিশ ।আমার মা ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দিয়েই বিয়ে হয়ে যায় আর তার পরের বছরই আমার এই পৃথিবীতে আগমন। আমি যখন ইঞ্জিনিয়ারিং ফাইনাল সেমিস্টার এর কোর্স ট্রান্সফার করে কানাডাতে আসি ছবিটা তার দুই দিন আগে তোলা। মায়ের ইন্ড্রাস্টিতে জনসংযোগ বিভাগের ক্যামেরা ও ফটোগ্রাফার থাকার পরেও, মা নিউ মার্কেট এর স্টুডিও হতে ক্যামেরাম্যান কে বাসায় এসে আমাদের নীচতলার ড্রয়িংরুমে এই ছবিটা তুলেছিল। আমার বাবা রোড এক্সিডেন্ট এর মারা যান আমি যখন সিক্সে পরি। বাবা ছিলেন ব্যাবসায়ী ও শিল্পপতি, সারাদিন ব্যস্ত তাই বাবার সাথে আমার সম্পর্ক টা ছিল গতানুগতিক টাইপের। সারাদিন তখন আমি কলেজ, ক্লাসমেট আর বাসায় এলে মা। মা ই ছিল আমার একমাত্র ভুবন। বিশাল বাড়ী আমাদের। সারাদিন বলতে গেলে দুটো মাত্র প্রানী। নীচে বুয়া, আয়া ঝি ড্রাইভার চাকর সবাই আছে যার যার থাকার জায়গায় কিনতু আমাদের দোতলা পর্যন্ত তাদের কোন যাতায়ত ছিলনা শুধু মাত্র দিনের ঝাড়ু ও আসবাবপত্র পরিষ্কার করা জন্য রহিম চাচা দম্পতি যাদের কে আমি জন্মের পর থেকেই দেখছি তাদেরই উপরে যাওয়ার অনুমতি ছিল। কিন্তু তাও দিনে একবার সেই সকালবেলার সময়টাতে ।
আমি দেশে ফিরছি প্রায় তিন বছর পরে। আমার মায়ের কাছে। এই তিনটাবছর খালি প্রান আকুলিবিকুলি করেছে কবে আমি দেশে ফিরবো। এই তিনটা বছর বলতে গেলে আমার দম ছিল আমার মায়ের সাথে এই ছবিটা, আমার ডর্মে এসে কেউ ছবিটা দেখে বিশ্বাস করতে চাইত না এটা আমার মায়ের ছবি কিন্তু ফ্রেমের বিপরীতে আমার বাবা ছোট্ট আমি ও আমার মায়ের আরেকটা পুরনো পারিবারিক ছবি রেখে দিয়েছিলাম, সেটা দেখালে সবাই নিশ্চিত হত। একবার জর্জ ও স্টেচি এসে তো দেখে অবাক- নাও উই কুড হ্যাভ ক্লিয়ারিটি হোয়াই ইউ এভয়েড গার্লস ম্যান, সো নাইস এন্ড কিউট, ইউর গিফা ম্যান। আমি সাথে সাথে বলেছিলাম ওহ নো নো –শি ইজ মাই মাম। রেজাল্ট মোটামুটি হল আমার। আসলে আমার এই সবকিছু এখন বাবার ইন্ড্রাস্টিতে দেখভাল করার কাজে লাগবে রেজাল্ট করার জন্য আসিনি। এসেছি আমার ম্যাকানিকেল ও সিভিল সাইড টা আরেকটু ক্লিয়ার হয়ে নেওয়ার জন্য। আমি জানি ঠিক এমন আকুলিবিকুলি করে থাকতো আমার মা, আমি কবে ফিরবো। কবে আমাদের বাড়ীর উপর তলটা আমি আর মা মিলে সবসময় অধিকার করে রাখবো।
চোখ বন্ধ করে আমি কতবার রাতের পর রাত মায়ের গন্ধ পেতাম। মাও আমাকে বলতো তোর শরীরের গন্ধ লেগে আছে আমার নাকে, তুই কবে আসবি। পৃথিবীতে যত ধন সম্পদ ও চাকুরী আমার জন্য এদেশ রেখে দিকনা কেন, কিন্তু আমি ফিরবো মায়ের গন্ধের জন্য। মা আমার পাগল করা প্রান। হ্যাঁ আমাদের পারিবারিক শিল্প গ্রুপের ব্যবসা না থাকলে আমি হয়তো মাকে নিয়ে এই দেশে চলে আসতাম স্থায়ীভাবে। কিন্তু বাবার করা এত কষ্টের সম্পদ মা দ্বিগুন করেছে, সেটা রেখে মায়ের পক্ষেও আসা সম্ভব না, আর এদেশে আমি অমন রাজকীয় হালে থাকতেও পারবো না।