Poll: নতুন থ্রিলার গল্প চলবে।
You do not have permission to vote in this poll.
Yes
100.00%
8 100.00%
No
0%
0 0%
Total 8 vote(s) 100%
* You voted for this item. [Show Results]

Thread Rating:
  • 17 Vote(s) - 3.35 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
থ্রিলার গল্প:বোকা প্রেমিকা (লেখিকা:লুৎফুন্নাহার আজমীন)
#25
 পর্ব:০৯




কাবিননামায় সাক্ষর করতেই জলের মনে একটাই কথা ভেসে উঠে।তা হলো,,,

" অনেক তোমায় সুযোগ দিয়েছি বর্ষণ।এটা সর্বশেষ সুযোগ।এরপরেও যদি তুমি আমার বাবার মতো একই কাজ করো তাহলে এর ফলাফল কত ভয়াবহ হবে তা তুমি কল্পনাও করতে পারবে না।"

কাবিননামায় সাক্ষর করে বর্ষণ জলের দিকে তাকিয়ে বিজয়ের হাসি দেয়।জলও প্রত্যুত্তরে কৃত্রিম বিজয়ের হাসি দেয়।মনে মনে আওড়াতে থাকে জল,,

" আজ তোমার সময় শেষ।আমার সময় শুরু।দশগুণ অবহেলা আজ থেকে তোমায় ফিরিয়ে দেবো বর্ষণ।"

শুভ কাজ সম্পন্ন হলে দুই পরিবার মেতে ওঠে খাওয়া দাওয়ায়।ফর্মালিটি,লোক দেখানোর জন্য জল তাতে ওর সৎ মা ফিরোজা বেগমকে সাহায্য করে।যদিও মহিলাটিকে জলের মোটেও পছন্দ না।
খাওয়া দাওয়া শেষ হলে বর্ষণের বাড়ির লোকজন জলকে তাদের বাড়িতে নেওয়ার প্রস্তাব দেয়।কিন্তু জল তাতে নাকোচ করে।ভার্সিটির ক্লাসের বাহানা দিয়ে সে বিষয়টাকে কাটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।এবং তাতে সফলও হয়। শেষে জাবেদ সাহেব মেয়েকে প্রস্তাব দেন আজকের রাতটা এ বাড়িতে কাটানোর।জল তাতেও নাকোচ করে।সে যে বাসায় ছিলো সে বাসায়ই যাবে আর থাকবেও।বর্ষণের বাড়ি টঙ্গী।যার দরুণ সে মেসে থেকে পড়াশোনা করতো।যেহেতু জল বর্ষণের বিয়ে হয়েছে।তাই আজ থেকে বর্ষণ জলের সাথে জলের বাড়িতে থাকবে।
বাসায় যাওয়ার পথে জল ফুলের দোকান থেকে কিছু ফুল কিনে নেয়।তা দেখে বর্ষণ খানিকটা অবাকই হয়।

" ফুল কেন?"

" ওমা! বিয়ে করলাম বাসর ঘর সাজাবো না?আজ তুমি আমি দুইজন মিলে ঘর সাজাবো।"

বর্ষণ আর কিছু বলে না।বেশ দ্রুতই বাড়ি পৌঁছায় দুজন।গাড়ি থেকে নামতেই বর্ষণ পুরো বাড়িটায় চোখ বুলিয়ে নেয়।কেমন যেন ভুতুড়ে ভুতুড়ে লাগছে বাড়িটাকে বর্ষণের কাছে।জল বর্ষণের চোখ মুখ দেখেই বুঝতে পারে বর্ষণের মনে বাড়িটাকে নিয়ে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।জল মুচকী হেসে বলে,,,

" পুরো বাড়িটাতে একা থাকি তো!তাই সেভাবে বাড়িটার যত্ন নেওয়া হয়ে ওঠে না।এবার তুমি এসেছো।দুইজন মিলে বাড়িটার যত্ন নিয়ে সাজিয়ে গুছিয়ে নিজেদের সুন্দর পৃথিবী বানাবো।"

কথাটা বলে জল গাড়ি থেকে ফুল গুলো নামাতে লাগে।বর্ষণ গিয়ে ফুলগুলোর কিছু অংশ হাতে নেয়।জল গাড়িটাকে গ্যারেজে রেখে আসে।
বাড়ির ভিতরে ঢুকে বর্ষণের পিলে চমকে ওঠে।বাইরের থেকে ভিতরে আরও ভয়ানক ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজমান। নিচতলার পুরো জায়গা জুড়ে মোটা মোটা বড় বড় মাকড়সার জাল।জল এতদিন এই বাড়িতে একা থাকতো?ভাবতেই বর্ষণের গা শিউরে ওঠে।জল ফোনের ফ্ল্যাশলাইটের আলোর সাহায্য নিয়ে ড্রয়িংরুমের লাইটটা দেয়।লাইটটা বেশ পুরোনো হবে।আবছা আবছা আলো দিচ্ছে।যাওয়ার দশা প্রায়।এই পুরোনো লাইটের আবছা আবছা আলোয় ভুতুড়ে ভুতুড়ে ভাবটা আরও বেড়ে গেলো।এই মুহুর্তে দিনের আলো ফুটলে হাফ ছেড়ে বাঁচে বর্ষণ।
জল বর্ষণকে নিয়ে ওর ঘরের পাশের ঘরটায় যায়।গতকাল নিজ হাতে ঘরটা পরিষ্কার করেছে জল।কিন্তু ভেন্টিলেটরে থাকা চড়ুই পাখির বাসাটা ভাঙে নি।ওরাও থাকুক।এটা ঘর বাঁধার জায়গা।ঘর ভাঙার না।
নবদম্পতি পরম যত্নে নিজেদের ফুলশয্যার খাট সাজায়।তারপর দুজনে ফ্রেশ হয়ে নেয়।জল সুতির নীল রঙের একটা থ্রীপিস পরে।উজ্জ্বল শ্যামবর্ণে জামাটা ভালোই মানিয়েছে জলকে।জল বর্ষণকে ট্রাউজার আর একটা টিশার্ট বের করে দেয়।বর্ষণ সেগুলোই পরে।

" তুমি কি সব আগে থেকেই প্ল্যান করে রেখেছিলেন?"

" কিসের প্ল্যান?"

" এইযে আমায় এখানে নিয়ে আসবে।"

" ভেবে রেখেছিলাম।প্ল্যান করে রাখলে নতুন ড্রেসই পরতে দিতাম তোমায়।আমার ইউজ করা গুলো না।"

" মানে?এগুলো তোমার?"

" হু।ছেলেদের ড্রেসে কমফোর্ট ফিল করি।তাই বাসায় এগুলোই পরি।"

" আচ্ছাহ!"

কথাটা বলে বর্ষণ জলকে জড়িয়ে ধরে।জল এক জটকায় বর্ষণকে দূরে ঠেলে দেয়।বর্ষণ তাজ্জব হয়ে যায়।

" what's the problem Jol?তুমি কেন আমাকে এইভাবে দূরে সরিয়ে দিলে?এখন তো আমরা আর গার্লফ্রেন্ড বয়ফ্রেন্ড না।তোমার ওপর সম্পুর্ন অধিকার আছে আমার।"

" It will take me a while to prepare myself.please give me some time to prepare myself."

" well. I gave time. But today I need a small kiss."

কথাটা বলেই বর্ষণ জলের দিকে এগিয়ে আসতে লাগে।জল পিছাচ্ছে বর্ষণ আগাচ্ছে।পিছাতে পিছাতে এক পর্যায়ে জলের পিঠ দেয়ালের সাথে ঠেকে যায়।জলের দেয়ালের সাথে মিশে যাওয়ার মতো অবস্থা।বর্ষণের সেদিকে কোনো হুশই নেই।সে তীব্র উত্তেজনা নিয়ে জলের দিকে আগাচ্ছে।এক পর্যায়ে জলের খুব কাছাকাছি এসে পরে বর্ষণ।জলের চিবুকে ধরে আলতো করে চোখ বন্ধ করে জলের কোমল ঠোঁটে নিজের ঠোঁট খানা ডুবাতে যাবে ঠিক সেই মুহুর্তে জল আবারও বর্ষণকে ঠেলে দূরে সরিয়ে দেয়।বর্ষণ কিছু বুঝে ওঠার আগেই দৌড়ে ছাদের দিকে পা বাড়ায় জল।বর্ষণও তার পিছু নেয়।কিন্তু সিঁড়িকোঠার ভুতুরে অবস্থা দেখে পিছ পা হয় বর্ষণ।যেখানে বর্ষণ পুরুষ হয়ে জায়গাটায় যাওয়ার সাহস পাচ্ছে না সেখানে জল কত সহজেই চলে গেলো।বর্ষণ অবাক দৃষ্টিতে জলের যাওয়ার পানে চেয়ে থাকে।বেশ কিছুক্ষণ।সে জলের ফেরার জন্যও অপেক্ষা করে।কিন্তু জল না ফিরায় সে ঘরে গিয়ে শুয়ে পরে।এমনিতেও সারাদিন শরীরের ওপর দিয়ে অনেক ধকল গেছে।
ছাদের চিলেকোঠার এক কোণে জল সিগারেট আর লাইটার রেখেছিলো।সেখান থেকে একটা সিগারেট নিয়ে ধরায় সে। রাতের শীতল হাওয়ায় সিগারেটের ধোঁয়া ছেড়ে জল নিজে নিজেই বলে,,,,

" কিছুতেই না।বর্ষণের প্রতি দুর্বলতা কখনোই চলবে না এখন।দিনের পর দিন জলকে বর্ষণ যা অবহেলা করেছে তার প্রতিটি এখন বর্ষণকে সুদে আসলে ফিরিয়ে দিতে হবে।বর্ষণের সময় শেষ জলের সময় শুরু।"

কথাটা বলে জল অট্টহাসিতে হেসে দেয়।জলের হাসি গভীর নির্জন রাতে ভুতুরে পরিবেশের সৃষ্টি করে।

জল যখন ঘরে ফেরে তখন রাত প্রায় সাড়ে তিনটা।বর্ষণ এতক্ষণে ঘুমের দেশে পাড়ি দিয়েছে।জল গিয়ে ঘুমন্ত বর্ষণের দিকে তাকায়।কত নিষ্পাপ চেহারা!অথচ এই মানুষটাই জলের সাথে দিনের পর দিন প্রতারণা করেছে।ব্যবহার করেছে জলকে।ঘুমালে পৃথিবীর সবচে নিকৃষ্ট ব্যক্তিকেও সদ্য ভূমিষ্ঠ হওয়া শিশুর মতো নিষ্পাপ লাগে।জল কাঁদে।প্রচুর কাঁদে।কিন্তু সেই কান্না বর্ষণের কর্ণকুহরে পৌঁছায় না।তারপর হঠাৎ করেই আদিবার কথা মনে পরে জলের।জল তীব্র ঘৃণা নিয়ে বর্ষণের থেকে দূরে ছিটকে পরে।রাগে ঘৃণায় জল কাঁপছে।উঠে দৌড়ে নিজের ঘরটায় চলে যায় জল।

সকালে জলের ডাকেই বর্ষণের ঘুম ভাঙে। আর পাঁচটা বিবাহিত নারীর মতোই জল মিষ্টি করে ডাক দিয়ে বর্ষণকে ঘুম থেকে তোলে।

" এই যে মিস্টার!সকাল হয়ে গেছে।উঠুন।"

জলের এ হেন আচরণে বর্ষণ অবাক হয়।রাতের জল আর এখনকার জলের মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ।বর্ষণ চোখ কোচলাতে কোচলাতে ওয়াশরুমে যায় ফ্রেশ হয়ে।জল বিছানা গুছিয়ে নিচে যাওয়ার আগে বর্ষণকে বলে,,,

" ফ্রেশ হয়ে নিচে এসো।আমি নাস্তা রেডি করছি।"

জল নিচে চলে যায় নাস্তা রেডি করার জন্য।ফ্রেশ হয়ে বর্ষণ নিচে নামে।ঘুম ঘুম চোখে মেঝের দিকে তাকাতেই আঁতকে ওঠে বর্ষণ।কালচে লাল জমাট বাঁধা এগুলো কি?বর্ষণ মেঝেতে পরে থাকা জমাট বাঁধা কালচে লাল বিন্দুগুলোতে নখ ঘষে।রক্ত?রক্ত কেন এখানে?

" এখানে রক্ত?"

" মুরগী কেটেছিলাম একদিন।হঠাৎ করেই একটা ইমার্জেন্সি কল আসে।সেই কাটা মুরগী হাতে নিয়েই ফোন ধরতে ওপরে যাই।তখন মুরগী থেকে পড়েছিলো।বাসায় আমি একা থাকি।আর কেউ আসে না।যার কারণে পরিষ্কার করার প্রয়োজন মনে করিনি।"

স্বাভাবিক কন্ঠে কথাগুলো বলে জল।বর্ষণের প্রথমদিকে কথা গুলো স্বাভাবিক না লাগলেও পরে মানতে বাধ্য হয়।জল খাবারগুলো টেবিলে সাজিয়ে বর্ষণকে বসার অনুরোধ জানায়।বর্ষণ টেবিলে বসে।জল ওর প্লেটে রুটি আর সুজি দেয়।দিতে দিতে বলে,,,

" জানোই আমার রান্নার হাত কাঁচা।বেশি কিছু করতে পারলাম না।"

" তুমি যা রান্না করবে তাই অমৃত।"

বর্ষণ খাওয়া শুরু করে।জলও ওর পাশে বসে খেতে লাগে।খেতে খেতে বর্ষণ জলকে বলে,,,

" যাই বলো জল।রাতে বাড়ির অবস্থা দেখে কিন্তু আমি সেই ভয় পেয়েছি।পুরো হরর মুভির বাড়ির মতো তোমার এই বাড়িটা।কিভাবে যে তুমি এতদিন একা থাকতে?আমার তো ভাবতেই গা শিউরে ওঠে।"

জল বর্ষণের কথার কোনো জবাব দেয় না।শুধু একটা মুচকী হাসি দেয়।

চলবে........
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

[+] 1 user Likes Bangla Golpo's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: থ্রিলার গল্প:বোকা প্রেমিকা (লেখিকা:লুৎফুন্নাহার আজমীন) - by Bangla Golpo - 16-03-2023, 12:47 AM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)