08-03-2023, 06:30 PM
নারীদিবস
উপলক্ষে লেখা।
( অনুগল্প )
চার বাড়ী কাজ সেরে বিমলা বাড়ী ফিরছে । ১ টা বাজলো । মার্চ এর শুরু তাতেই কি রোদের তাপ গায়ের চামড়া পুড়ে যাওয়ার মতো । সকাল থেকেই ক্লাবে কিসের গান বাজছে । বাবুদের কত উৎসব ভাবতে ভাবতে যাচ্ছিল বিমলা ।
ক্লাবের কাছে আসতেই অপুর্ব এক গাল হেসে বিমলা কে ডেকে একটা প্যাকেট ধরালো । ছেলেটা বড় ভালো । বিমলা জিজ্ঞেস করলো - আজ তোমাদের কেলাবে কি পুজা গো ?
অপুর্ব হো হো করে হেসে বলল - কোনও পুজো টুজো না গো মাসি আজ নারীদিবস । বিমলা হাঁ করে চেয়ে বলল - সেটা কি গো দাদা বাবু ? অপুর্ব ফ্যাসাদে পড়লো কাজের মাসিকে নারীদিবস কি বোঝাবে সে । একটু ভেবে বলল
নারীদিবস মানে মেয়েদের দিন , এই তোমাদের দিন ।
- এই দিনে কি হয় গো দাদাবাবু ? আচ্ছা ঝামেলায় পরা গেলো মনে মনে ভাবল অপুর্ব ।
- হয় বলতে এই দিনে মেয়েদের সম্মান দেখান হয় । তাদের সাথে ভালো করে কথা বলতে হয় । এই সব আর কি ..................
- ও ! এই দিনটা আজ প্রথম এলো ।
- আরে না না প্রতি বছর ৮ ই মার্চ এই দিন টা আসে । আমাদের ক্লাব এ বছর থেকে পালন করছে ।
- আগেও আসতো ? আমার বাবা মুখ্যু মানুষ এই দিনটার কথা জানতই না । আমাকে গালি না দিয়ে কোন দিন জল খায় নি - পোড়ারমুখী , হারামজাদি , ভাতারখাকি কত কি ? এই ভালো কথা বলার দিনেও বলতো হয়তো । কি জানি ? আচ্ছা সে
তো মুখ্যু নয় কিন্তু ওই দত্ত বাড়ির গিন্নী তো মুখ্যু না বলো । বৌ এর জোড়া মেয়ে হয়েছে বলে আজও বসে বৌ এর গুষ্টি উদ্ধার করছে । ৮ মাস হল হাসপাতাল থেকে বাপের বাড়ী পাঠিয়েছে আজও আনল না । আজ মেয়েদের দিনে মেয়েগুলো কে
নিজের বাড়ী আনা উচিৎ নয় বলো দাদাবাবু । আর ওই যে মিতু বৌদির বর সে কি জানে না আজ মেয়েদের দিন । সকালে পোঁচের কুসুম টা ছেদরে গ্যাছে বলে পেলেট টা ছুঁড়ে মারল বৌ এর দিকে । ভাগ্যিস সরে গেছিল নইলে রক্তারক্তি হতো ।
তোমরা খুব ভালো কাজ করছ গো দাদা মেয়েদের দিন পালন করে । যাও না গো দত্ত বাড়ী গিয়ে গিন্নী কে বলো আজ মেয়েদের দিন মেয়ে দুটো কে বাড়ি নিয়ে আসে যেন । আর ওই মিতু বউদির বর কেও বোলো আজ মেয়েদের দিন ,আজ যেন
বৌ কে না মারে । আর হ্যাঁ আমার বাড়ী এই বস্তিতে তুমি তো চেন , আমার ছেলেকে বলে এস আজ মায়ের গায়ে হাত তুলতে নেই , মা ও তো মেয়ে ই ।
অপুর্ব আমতা আমতা করে বলল - এসব কথা আমরা কি করে বলব মাসি ।
- পারবে না ? জানতাম পারবে না ! মেয়েছেলের আবার মেয়েছেলে দিন হাহ ! প্যাকেট টা অপুর্ব র হাতে ধরিয়ে বিমলা এগিয়ে গেলো । অপুর্ব বিমলার যাওয়ার পথের দিকে চেয়ে দেখল রোদে শুধু চামড়া পুড়ছে না । বিমলার কথা গুলোয় ভেতর টাও পুড়ছে ।
অপুর্বর মনে পড়লো রিম্পির জন্মের পর বউদি যেদিন প্রথম বাড়ী ফিরল সেদিন অপুর্বর মা বলেছিল - প্রথম টাই মেয়ে হল , কি আর করা যাবে ! পরের বার কিন্তু নাতি চাই । বউদির নতুন মা হওয়ার খুশি টা কিরম অব্যাক্ত ব্যাথায় বদলে গেছিল ।
সেদিনও অপুর্ব কিছু বলতে পারে নি । ধুত শালা কিসের নারী দিবস ? প্যাকেট খুলে মিষ্টি আর নিমকি গুলো রাস্তার কুকুর টার দিকে ছুঁড়ে দিলো । আশ্চর্য কুকুর টাও শুঁকে চলে গেলো মুখে দিলো না । শেষে কুকুর ও কি মানুষের ভড়ং বুঝে ফেলল নাকি ?
(সংগৃহীত)
উপলক্ষে লেখা।
( অনুগল্প )
চার বাড়ী কাজ সেরে বিমলা বাড়ী ফিরছে । ১ টা বাজলো । মার্চ এর শুরু তাতেই কি রোদের তাপ গায়ের চামড়া পুড়ে যাওয়ার মতো । সকাল থেকেই ক্লাবে কিসের গান বাজছে । বাবুদের কত উৎসব ভাবতে ভাবতে যাচ্ছিল বিমলা ।
ক্লাবের কাছে আসতেই অপুর্ব এক গাল হেসে বিমলা কে ডেকে একটা প্যাকেট ধরালো । ছেলেটা বড় ভালো । বিমলা জিজ্ঞেস করলো - আজ তোমাদের কেলাবে কি পুজা গো ?
অপুর্ব হো হো করে হেসে বলল - কোনও পুজো টুজো না গো মাসি আজ নারীদিবস । বিমলা হাঁ করে চেয়ে বলল - সেটা কি গো দাদা বাবু ? অপুর্ব ফ্যাসাদে পড়লো কাজের মাসিকে নারীদিবস কি বোঝাবে সে । একটু ভেবে বলল
নারীদিবস মানে মেয়েদের দিন , এই তোমাদের দিন ।
- এই দিনে কি হয় গো দাদাবাবু ? আচ্ছা ঝামেলায় পরা গেলো মনে মনে ভাবল অপুর্ব ।
- হয় বলতে এই দিনে মেয়েদের সম্মান দেখান হয় । তাদের সাথে ভালো করে কথা বলতে হয় । এই সব আর কি ..................
- ও ! এই দিনটা আজ প্রথম এলো ।
- আরে না না প্রতি বছর ৮ ই মার্চ এই দিন টা আসে । আমাদের ক্লাব এ বছর থেকে পালন করছে ।
- আগেও আসতো ? আমার বাবা মুখ্যু মানুষ এই দিনটার কথা জানতই না । আমাকে গালি না দিয়ে কোন দিন জল খায় নি - পোড়ারমুখী , হারামজাদি , ভাতারখাকি কত কি ? এই ভালো কথা বলার দিনেও বলতো হয়তো । কি জানি ? আচ্ছা সে
তো মুখ্যু নয় কিন্তু ওই দত্ত বাড়ির গিন্নী তো মুখ্যু না বলো । বৌ এর জোড়া মেয়ে হয়েছে বলে আজও বসে বৌ এর গুষ্টি উদ্ধার করছে । ৮ মাস হল হাসপাতাল থেকে বাপের বাড়ী পাঠিয়েছে আজও আনল না । আজ মেয়েদের দিনে মেয়েগুলো কে
নিজের বাড়ী আনা উচিৎ নয় বলো দাদাবাবু । আর ওই যে মিতু বৌদির বর সে কি জানে না আজ মেয়েদের দিন । সকালে পোঁচের কুসুম টা ছেদরে গ্যাছে বলে পেলেট টা ছুঁড়ে মারল বৌ এর দিকে । ভাগ্যিস সরে গেছিল নইলে রক্তারক্তি হতো ।
তোমরা খুব ভালো কাজ করছ গো দাদা মেয়েদের দিন পালন করে । যাও না গো দত্ত বাড়ী গিয়ে গিন্নী কে বলো আজ মেয়েদের দিন মেয়ে দুটো কে বাড়ি নিয়ে আসে যেন । আর ওই মিতু বউদির বর কেও বোলো আজ মেয়েদের দিন ,আজ যেন
বৌ কে না মারে । আর হ্যাঁ আমার বাড়ী এই বস্তিতে তুমি তো চেন , আমার ছেলেকে বলে এস আজ মায়ের গায়ে হাত তুলতে নেই , মা ও তো মেয়ে ই ।
অপুর্ব আমতা আমতা করে বলল - এসব কথা আমরা কি করে বলব মাসি ।
- পারবে না ? জানতাম পারবে না ! মেয়েছেলের আবার মেয়েছেলে দিন হাহ ! প্যাকেট টা অপুর্ব র হাতে ধরিয়ে বিমলা এগিয়ে গেলো । অপুর্ব বিমলার যাওয়ার পথের দিকে চেয়ে দেখল রোদে শুধু চামড়া পুড়ছে না । বিমলার কথা গুলোয় ভেতর টাও পুড়ছে ।
অপুর্বর মনে পড়লো রিম্পির জন্মের পর বউদি যেদিন প্রথম বাড়ী ফিরল সেদিন অপুর্বর মা বলেছিল - প্রথম টাই মেয়ে হল , কি আর করা যাবে ! পরের বার কিন্তু নাতি চাই । বউদির নতুন মা হওয়ার খুশি টা কিরম অব্যাক্ত ব্যাথায় বদলে গেছিল ।
সেদিনও অপুর্ব কিছু বলতে পারে নি । ধুত শালা কিসের নারী দিবস ? প্যাকেট খুলে মিষ্টি আর নিমকি গুলো রাস্তার কুকুর টার দিকে ছুঁড়ে দিলো । আশ্চর্য কুকুর টাও শুঁকে চলে গেলো মুখে দিলো না । শেষে কুকুর ও কি মানুষের ভড়ং বুঝে ফেলল নাকি ?
(সংগৃহীত)