07-03-2023, 05:43 PM
প্রথম পরিচ্ছেদঃ
ছেলেটাকে প্রথম যেদিন দেখলো নিলা সেদিন ওর চোখের দৃষ্টি নিলার কাছে অদ্ভুত আর কেমন যেন বিদঘুটে লেগেছিলো। ও যেন চোখ দিয়েই মানুষের ভিতরটা দেখে ফেলতে পারছে এমন মনে হচ্ছিলো, নিজেকে যেন নগ্ন নগ্ন মনে হতে লাগলো সেদিন নিলার। ছেলেটি সেদিন বাসায় এসেছিলো নিলার ছেলে আসিফের সাথে। বিকালে ঘুম ভেঙ্গে দরজা খুলে নিজের ছেলের সাথে অন্য আরেকটি ছেলেকে দেখে নিলা বেশ ঘাবড়ে গিয়েছিলো। আসিফ পরিচয় করিয়ে দেয়ায় জানতে পারলো যে ছেলেটির নাম অনি। নামটি শুনে প্রথমে নিলা ওকে ., ছেলে বলেই ভেবেছিলো, কিন্তু পরে আসিফের কাছ থেকেই জানতে পারে যে ওর পুরো নাম অনিরুদ্ধ সেন, আর ডাক নাম অনি। ছেলেটি যে * সেটা ওর পুরো নাম শুনার পরে জানতে পেরেছিলো, যদি ও নিলা কখনওই নিজের ছেলেকে কোন * ছেলের সাথে মিশতে দেখেনি। তবে নিলার ভিতরে এই জাত-পাত নিয়ে কোন রকম বাধা নিষেধ কখনই ছিলো না। ওর স্বামী কামরুলের ও অনেক * বন্ধু আছে, কামরুল ওদেরকে নিয়ে বাসায় এসে গল্প কিম্বা আড্ডাবাজী সবই করে।
নিলা ওকে ভিতর আসার জন্যে বললো। ছেলেটি কোন প্রকার সম্ভাষণ ছাড়াই ভিতরে ঢুকে সোফায় বসে গেলো। নিলার কাছে ওর আচরণ কিছুটা অস্বাভাবিক মনে হচ্ছিলো, কারন একটু সালাম দেয়া বা কেমন আছেন জিজ্ঞাসা করা তো সৌজন্যের ভিতরেই পড়ে। কিন্তু ছেলেটি এর ধারেকাছেও গেলো না।নিলার কাছে ব্যপারটা মোটেই ভালো লাগলো না। নিলা এসে অনির সামনেই অন্য একটি সোফায় বসে ও কি সে পড়ে, কোথায় থাকে জানতে চাইলো। জানতে পারলো যে ছেলেটি আজই আসিফদের ক্লাসে ভর্তি হয়েছে, কারন ওর বাবা অন্য শহর থেকে বদলি নিয়ে ঢাকা এসেছে। ওদের বাসা নিলাদের বাড়ির দুটো বাড়ি পরেই। তবে সেমিস্টারের মাঝখানে আসিফদের ক্লাসে কিভাবে ছেলেটি ঢুকলো সেটা নিলা পরে জানতে পেরেছিলো। অনির বাবা বড় সরকারি কর্মকর্তা, টাকা-পয়সা আর প্রভাব প্রতিপত্তির অভাব নেই উনার। সেই প্রভাব খাটিয়েই আসিফদের কলেজের মত নামি দামী প্রাইভেট কলেজে নিজের ছেলেকে বছরের মাঝখানে ভর্তি করিয়ে দিয়েছে। আজ ওর কলেজে প্রথম দিন, আর আজই আসিফের সাথে ওর বন্ধুত্ত হয়ে গেছে। ছেলেটিকে কথা জিজ্ঞেস করলে খুব ধীরে ধীরে নিচু স্বরে জবাব দেয়। নিলাকে প্রতিটি কথা উত্তর মনোযোগ দিয়ে শুনতে হচ্ছে না হলে ও কি বলছে এতো কাছে বসে ও নিলা স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছিলো না। ঘরে ঢুকার পরেই আসিফ ওর রুমে চলে গিয়েছিলো, এখন ওর কলেজের জামা কাপড় পরিবর্তন করে চলে এসেছে ওদের কাছে।
আসিফ ওর পাশে বসে ওকে রিলাক্স করার জন্যে বললো, "শুন দোস্ত, তুই এমন জড়সড় হয়ে আছিস কেন? আমার আম্মু খুব ভালো।আমাকে যেমন আদর করে আম্মু, তেমনি আমার বন্ধুদের ও আদর করে। তুই আমার আম্মুকে নিজের মায়ের মতই মনে করতে পারিস। আম্মু, ও আজ প্রথম এলো তো আমাদের বাসায়, তাই এমন আড়ষ্ট হয়ে আছে।"
“আমার আম্মু নেই”-অনির মুখ দিয়ে একটু জোরেই বেরিয়ে আসা কথাটি শুনে নিলা আর আসিফ দুজনেই যেন স্তব্দ হয়ে গেলো।নিলা কি বলবে ভেবে পাচ্ছিলো না।
“আম্মু নেই, মানে মারা গেছেন?”-নিলা জানে কথাটি জিজ্ঞাসা করা উচিত হচ্ছে না তারপর ওর মুখ দিয়ে কিভাবে প্রশ্নটি বের হয়ে গেলো বুঝতে পারছিলো না।
"না, মারা যায় নি, উনি আমার বাবাকে ডিভোর্স দিয়ে অন্য একজনকে বিয়ে করেছেন।"-অনি মুখ তুলে নিলার চোখের দিকে তাকিয়ে বললো।"ওহ"-বলে নিলা চুপ করে গেলো।"তোরা বস, আমি তোদের জন্য কিছু নিয়ে আসছি"-বলে নিলা ওখান থেকে রান্নাঘরের দিকে চলে গেলো। আসিফ ওর বন্ধুকে সান্ত্বনা দেবার চেষ্টা করলো, "বন্ধু, স্যরি, আমি জানতাম না। তুই কিন্তু আমার আম্মুকে তোর মায়ের মতই মনে করতে পারিস। আমার সব বন্ধুদেরকে ও আম্মু খুব আদর করে।"
"কি, আমার আম্মুর মত মনে করবো? কেন তোর আম্মুর কি আরেকটা বিয়ে হয়েছে, এটা কি উনার দ্বিতীয় বিয়ে?"-অনির মুখ থেকে অজাচিত অভদ্র কথায় আসিফ বেশ কষ্ট পেল। "না, না...আমি বলতে চাইছি, যেন মায়ের মত মনে করিস, মানে তোর মায়ের মত না..."-আসিফ কথাটি গুছিয়ে বলতে পারছিলো না।
"শুন, আমি আমার মা কে খুব ঘৃণা করি। আর আমার কোন মায়ের ও প্রয়োজন নেই। আমি নিজেই নিজের জন্যে যথেষ্ট।"-অনি বেশ দৃঢ় গলায় কথাটি বলে আসিফের চোখের দিকে চাইলো। আসিফ কি বলবে বুঝতে না পেরে ওর দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো।
ছেলেটাকে প্রথম যেদিন দেখলো নিলা সেদিন ওর চোখের দৃষ্টি নিলার কাছে অদ্ভুত আর কেমন যেন বিদঘুটে লেগেছিলো। ও যেন চোখ দিয়েই মানুষের ভিতরটা দেখে ফেলতে পারছে এমন মনে হচ্ছিলো, নিজেকে যেন নগ্ন নগ্ন মনে হতে লাগলো সেদিন নিলার। ছেলেটি সেদিন বাসায় এসেছিলো নিলার ছেলে আসিফের সাথে। বিকালে ঘুম ভেঙ্গে দরজা খুলে নিজের ছেলের সাথে অন্য আরেকটি ছেলেকে দেখে নিলা বেশ ঘাবড়ে গিয়েছিলো। আসিফ পরিচয় করিয়ে দেয়ায় জানতে পারলো যে ছেলেটির নাম অনি। নামটি শুনে প্রথমে নিলা ওকে ., ছেলে বলেই ভেবেছিলো, কিন্তু পরে আসিফের কাছ থেকেই জানতে পারে যে ওর পুরো নাম অনিরুদ্ধ সেন, আর ডাক নাম অনি। ছেলেটি যে * সেটা ওর পুরো নাম শুনার পরে জানতে পেরেছিলো, যদি ও নিলা কখনওই নিজের ছেলেকে কোন * ছেলের সাথে মিশতে দেখেনি। তবে নিলার ভিতরে এই জাত-পাত নিয়ে কোন রকম বাধা নিষেধ কখনই ছিলো না। ওর স্বামী কামরুলের ও অনেক * বন্ধু আছে, কামরুল ওদেরকে নিয়ে বাসায় এসে গল্প কিম্বা আড্ডাবাজী সবই করে।
নিলা ওকে ভিতর আসার জন্যে বললো। ছেলেটি কোন প্রকার সম্ভাষণ ছাড়াই ভিতরে ঢুকে সোফায় বসে গেলো। নিলার কাছে ওর আচরণ কিছুটা অস্বাভাবিক মনে হচ্ছিলো, কারন একটু সালাম দেয়া বা কেমন আছেন জিজ্ঞাসা করা তো সৌজন্যের ভিতরেই পড়ে। কিন্তু ছেলেটি এর ধারেকাছেও গেলো না।নিলার কাছে ব্যপারটা মোটেই ভালো লাগলো না। নিলা এসে অনির সামনেই অন্য একটি সোফায় বসে ও কি সে পড়ে, কোথায় থাকে জানতে চাইলো। জানতে পারলো যে ছেলেটি আজই আসিফদের ক্লাসে ভর্তি হয়েছে, কারন ওর বাবা অন্য শহর থেকে বদলি নিয়ে ঢাকা এসেছে। ওদের বাসা নিলাদের বাড়ির দুটো বাড়ি পরেই। তবে সেমিস্টারের মাঝখানে আসিফদের ক্লাসে কিভাবে ছেলেটি ঢুকলো সেটা নিলা পরে জানতে পেরেছিলো। অনির বাবা বড় সরকারি কর্মকর্তা, টাকা-পয়সা আর প্রভাব প্রতিপত্তির অভাব নেই উনার। সেই প্রভাব খাটিয়েই আসিফদের কলেজের মত নামি দামী প্রাইভেট কলেজে নিজের ছেলেকে বছরের মাঝখানে ভর্তি করিয়ে দিয়েছে। আজ ওর কলেজে প্রথম দিন, আর আজই আসিফের সাথে ওর বন্ধুত্ত হয়ে গেছে। ছেলেটিকে কথা জিজ্ঞেস করলে খুব ধীরে ধীরে নিচু স্বরে জবাব দেয়। নিলাকে প্রতিটি কথা উত্তর মনোযোগ দিয়ে শুনতে হচ্ছে না হলে ও কি বলছে এতো কাছে বসে ও নিলা স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছিলো না। ঘরে ঢুকার পরেই আসিফ ওর রুমে চলে গিয়েছিলো, এখন ওর কলেজের জামা কাপড় পরিবর্তন করে চলে এসেছে ওদের কাছে।
আসিফ ওর পাশে বসে ওকে রিলাক্স করার জন্যে বললো, "শুন দোস্ত, তুই এমন জড়সড় হয়ে আছিস কেন? আমার আম্মু খুব ভালো।আমাকে যেমন আদর করে আম্মু, তেমনি আমার বন্ধুদের ও আদর করে। তুই আমার আম্মুকে নিজের মায়ের মতই মনে করতে পারিস। আম্মু, ও আজ প্রথম এলো তো আমাদের বাসায়, তাই এমন আড়ষ্ট হয়ে আছে।"
“আমার আম্মু নেই”-অনির মুখ দিয়ে একটু জোরেই বেরিয়ে আসা কথাটি শুনে নিলা আর আসিফ দুজনেই যেন স্তব্দ হয়ে গেলো।নিলা কি বলবে ভেবে পাচ্ছিলো না।
“আম্মু নেই, মানে মারা গেছেন?”-নিলা জানে কথাটি জিজ্ঞাসা করা উচিত হচ্ছে না তারপর ওর মুখ দিয়ে কিভাবে প্রশ্নটি বের হয়ে গেলো বুঝতে পারছিলো না।
"না, মারা যায় নি, উনি আমার বাবাকে ডিভোর্স দিয়ে অন্য একজনকে বিয়ে করেছেন।"-অনি মুখ তুলে নিলার চোখের দিকে তাকিয়ে বললো।"ওহ"-বলে নিলা চুপ করে গেলো।"তোরা বস, আমি তোদের জন্য কিছু নিয়ে আসছি"-বলে নিলা ওখান থেকে রান্নাঘরের দিকে চলে গেলো। আসিফ ওর বন্ধুকে সান্ত্বনা দেবার চেষ্টা করলো, "বন্ধু, স্যরি, আমি জানতাম না। তুই কিন্তু আমার আম্মুকে তোর মায়ের মতই মনে করতে পারিস। আমার সব বন্ধুদেরকে ও আম্মু খুব আদর করে।"
"কি, আমার আম্মুর মত মনে করবো? কেন তোর আম্মুর কি আরেকটা বিয়ে হয়েছে, এটা কি উনার দ্বিতীয় বিয়ে?"-অনির মুখ থেকে অজাচিত অভদ্র কথায় আসিফ বেশ কষ্ট পেল। "না, না...আমি বলতে চাইছি, যেন মায়ের মত মনে করিস, মানে তোর মায়ের মত না..."-আসিফ কথাটি গুছিয়ে বলতে পারছিলো না।
"শুন, আমি আমার মা কে খুব ঘৃণা করি। আর আমার কোন মায়ের ও প্রয়োজন নেই। আমি নিজেই নিজের জন্যে যথেষ্ট।"-অনি বেশ দৃঢ় গলায় কথাটি বলে আসিফের চোখের দিকে চাইলো। আসিফ কি বলবে বুঝতে না পেরে ওর দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো।