01-03-2023, 02:20 PM
(This post was last modified: 02-03-2023, 01:44 PM by Orbachin. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান। আগামী ২৬ জুন কলকাতায় মুক্তি পাবে তার সিনেমা ‘পুতুল নাচের ইতিকথা’। এই সিনেমা প্রসঙ্গে ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জয়া জানিয়েছেন, আমি প্রেম করছি কিন্তু বিয়ের তারিখ এখনো ঠিক হয়নি।
সেই সাক্ষাৎকারে জয়ার কাছে প্রশ্ন রাখা হয়, কলকাতার এক তারকা জানিয়েছেন যে, জয়া বাংলাদেশের একজনের সাথে প্রেম করছেন এবং আগামী বছর বিয়ে করবেন। এই প্রশ্নের উত্তরে জয়া কৌশলে বলেন, ওহ! আমার সম্পর্কে এত কিছু কে বললেন? এরপর জয়ার কাছে জানতে চাওয়া হয় তাহলে এই বিয়ের খবর গুজব কি না? এ সময় বাংলাদেশের এই অভিনেত্রী বলেন, না। আমি প্রেম করছি। সে বাংলাদেশি তবে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির কেউ নন। কিন্তু বিয়ের দিনক্ষণ এখনো ঠিক হয়নি।
নাটকের জয়া, সিনেমার জয়া-তার প্রতিটি পদক্ষেপ, ধীরে ধীরে জয়ার এগিয়ে যাওয়ার সময়। সেই জয়া আহসান এখন দেশের সীমানা ছাড়িয়ে চুটিয়ে কাজ করছেন পাশের দেশ ভারতে, কলকাতার ইন্ডাস্ট্রিতে তার এখন দারুণ জনপ্রিয়তা, বাঘা বাঘা পরিচালক তার কাজে আস্থা খুঁজে পাচ্ছেন। দুই বাংলার আলোচিত অভিনেত্রী জয়া আহসান। ইদানীং বাংলাদেশের চেয়ে কলকাতার সিনেমা নিয়েই বেশি ব্যস্ততা।
জয়া আহসানের দুর্দান্ত অভিনয়ের স্বাক্ষর দেখা গেছে নাটকে। বিটিভির ‘এনেছি সূর্যের হাসি’ থেকে শুরু করে ‘শঙ্খবাস’, ‘লাবণ্যপ্রভা’ কিংবা ‘চৈতা পাগল’ অথবা ‘তারপরেও আঙুরলতা নন্দকে ভালোবাসে’-যেখানেই জয়া আহসান অভিনয় করেছেন, প্রত্যেক জায়গাতেই তার অভিনয়প্রতিভায় মুগ্ধ হয়েছে সবাই। শূন্য থেকে উঠে এসে দারুণ সব অভিনেতার সঙ্গে কাজ করেছেন। এত সব মেধার ভিড়েও নিজেকে আড়াল হয়ে যেতে দেননি, বারবার মনে করিয়ে দিয়েছেন, এ প্রজন্মের সবচেয়ে মেধাবী অভিনেত্রী তিনিই।
দু’ই বাংলা তাঁর প্রেমে বানভাসি। নেটমাধ্যমে তাঁর অনুরাগীর সংখ্যা বিপুল।তিনি কী করছেন, কোন পোশাক পরছেন, কার সঙ্গে কথা বলছেন, এই নিয়ে চর্চার শেষ নেই। তবে তার থেকেও বেশি কৌতূহল তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে। জয়া আহসানের ‘গুডবুক’-এ থাকতে চান এমন বিখ্যাত ব্যক্তিত্বের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই নায়িকা এই মুহূর্তে কোনও সম্পর্কে আছেন কি না,, তা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও তিনি যে একসময় গভীর প্রেমে ছিলেন,তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
জয়ার প্রথম স্বামী ফয়সাল মাসুদ। ফয়সালকে ভালবেসে বিয়ে করেছিলেন জয়া। বাংলাদেশের জমিদার পরিবারের ছেলে ফয়সাল ছিলেন বিত্তবান। জয়ার সঙ্গে ফয়সালের দেখা হয়েছিল ১৯৯৮-এ। সেই প্রথম দেখার কথা ফয়সাল বলেছিলেন এক সাক্ষাৎকারে।একটি বিজ্ঞাপনের শ্যুটিংয়ে জয়ার সঙ্গে ফয়সালের প্রথম দেখা। শুরুটা হয়েছিল তিক্ততা দিয়ে। সময়ে আসতে পারেননি ফয়সাল, মেক-আপের পর এক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছিল জয়াকে। রেগে গিয়ে কথা শোনাতে ছাড়েননি জয়া।এই রাগই আবার অনুরাগে বদলাতে বেশি সময় লাগেনি। ফোনে কথা বলতে বলতেই একে অপরের প্রতি ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন।গভীর প্রেমে পড়েই ফয়সালকে বিয়ে করেছিলেন জয়া।
তাঁদের তেরো বছরের দাম্পত্য কেন টিকল না, তা আজও রহস্য। জমিদার ঘরণি হয়ে জয়ার গুছিয়ে সংসার করা, একে অপরের প্রতি কতটা অনুরক্ত ছিলেন তাঁরা? তাঁদের কাছের মানুষরা জানেন সব। এত কিছুর পরেও কেন ভেঙে গিয়েছিল তাঁদের সাজানো সংসার? বিচ্ছেদের পর কেটে গেছে আরো ১২ বছর। আজো কেউ জানেনা তাদের বিচ্ছেদের আসল কারণ। তবে মিডিয়া পাড়ায় খবর হচ্ছে, কোথাও যেন জনপ্রিয়তা বাড়ছিল জয়ার। তুলনায় কিছুটা পিছিয়ে ছিলেন ফয়সাল।এই সাফল্যই হয়তো তাদের দাম্পত্যের অসাফল্যের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।তাঁদের মধ্যে বাড়তে থাকে মনোমালিন্য। দূরত্ব ক্রমশ বাড়তেই থাকে। চেষ্টা করেও যা ঠিক করতে পারেননি ফয়সাল। যার পরিণতি বিবাহ বিচ্ছেদ।২০১১ সালে পাকাপাকি ভাবে আলাদা হয়ে যান তাঁরা।
আসল সত্যটা শুধু জানে জয়া। বিয়ের পর কি ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে তাকে যেতে হয়েছে সে শুধু নিজেই জানে। বিয়ের প্রথম কয়েকটা বছর বেশ ভালোই কেটেছিল। সমস্যার শুরু হয় ২০০৩-০৪ সালের দিক থেকে। তখন আস্তে আস্তে জয়ার জনপ্রিয়তার বাড়ছে আর ফয়সালের জনপ্রিয়তা এবং কাজ দুটোই কমছে। এককালে ফয়সালদের জমিদারি ছিলো, সেখানেও ভাটা পড়েছে। ফয়সাল বলতে গেলে টাকার জন্য জয়ার উপরেই নির্ভর হয়ে পড়ে। দুএকটা ব্যবসাও করার চেষ্টা করেছিলো, সেটাও মুখথোবরে পড়েছে। তাও কোন সমস্যা হচ্ছিলো না জয়ার। স্বামীকেই টাকা পয়সা কামাতে হবে, স্ত্রী ঘরে বসে থাকবে এসব চিন্তা তাঁর মাথায় ছিলো না। সে রুজি করবে, তাঁর স্বামী খরচ করবে এটাতো স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু ফয়সালের জন্য এটা স্বাভাবিক কোন ঘটনা না। সে আস্তে আস্তে ভিতরে ভিতরে ধুমড়ে মুচড়ে যেতে শুরু করলো। এভাবেই চলছিলো। তারপর আসে সেই ভয়াবহ সময়। একরাতে ফয়সাল জয়াকে বলে, তাঁর ব্যবসার খুব জরুরি একটা ফাইল এক সরকারি অফিসার আটকে রেখেছে। এই ব্যবসাতে টাকা লাগানোর জন্য ফয়সাল নিজের পৈত্রিক জমিদারী সম্পত্তি বন্ধক রেখে টাকা লোন নিয়েছে। এখন যদি এই ফাইল ওকে হয়ে না আসে তবে তাঁর ব্যবসা রাস্তায় নেমে আসবে। পৈত্রিক সম্পত্তি, সম্মান, ইজ্জত সব যাবে। শুনে জয়া আঁতঁকে উঠেছিলো। আরো দশটা মেয়ের মতো স্বামীর এমন বিপদের দিনে চিন্তায় সে উদগ্রীব হয়ে গেলো। বলল, যদি ঐ অফিসার ঘুষ চায় তবে দিয়ে দাও। যেভাবেই পারো ফাইলটা ছুটাও। ফয়সাল জানায় লোকটা ঘুষ নিতে রাজি হয় নি। সে পাগলের মতো অবস্থায় আছে। তাঁর পৈত্রিক সম্পত্তি এভাবে ব্যাংকের জিম্মায় চলে যাবে সে এটা মানতেই পারবে। এখন কি উপায়, জানতে চাওয়ায় ফয়সাল আচমকা জয়া পা জড়িয়ে ধরে। বলে,
- জয়া, একমাত্র তুমি পারো আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি বাঁচাতে। আমার ইজত রাখতে।
- আরে আরে করো কি! পা ধরছো কেন! আমার টাকাতো তোমারই টাকা। আমার কাছে যত টাকা সব দিয়ে দিচ্ছে। তুমি ব্যাংক থেকে জায়গার দলিল ফেরত আনো।
- ওতে হবে না জয়া।
- তাহলে।
- রাশেদ সাহেব ফাইল ফাইল ছাড়তে রাজি হয়েছে। তবে একটা শর্তে!
- রাশেদ সাহেব কে!
- ঐ সরকারি অফিসার
- কি শর্ত।
- লোকটা এক রাতের জন্য তোমাকে চায়।
- মানে!
- মানে তুমি যদি তাঁর সাথে শুয় তবেই সে ফাইল ছাড়বে।