Thread Rating:
  • 30 Vote(s) - 2.63 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
নাম না জানা এক সম্পর্কের গল্প (দেয়ালের ওপারে)
#53
 পর্ব:১৮

 

        সাত্যকির হল থেকে ইরিনা বের হলো সন্ধ্যার ঠিক কিছুক্ষণ আগেই। সে ঘুমিয়ে গিয়েছিলো। হঠাৎ ফোনের রিংটোনের শব্দ শুনে তার ঘুম ভেঙে যায়। ফোন হাতে নিয়ে দেখে ফাহিমের কল। সে অলস ভাবে ফোনটা রিসিভ না করে বালিশের পাশে রেখে দেয়। তার কিছুক্ষণ পরেই ফাহিমের মেসেজ আসে। ইরিনার ততক্ষণে ঘুম ভেঙে গিয়েছিলো। সে আবার ফোন হাতে নিয়ে মেসেজটা পড়ে। ফাহিম লিখেছে, "আমি বাইরে অপেক্ষা করছি। তারাতাড়ি নিচে আয়।" 
        ইরিনা শোয়া থেকে উঠে এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখে সাত্যকি নেই। জয়ের সাথে দেখা করতে গেছে নিশ্চয়ই, এটা ভেবে সে আর সাত্যকিকে কল দিলো না। সে উঠে, গাঁ'য়ের পোশাকটা ঠিকঠাক করলো। চুলগুলো ঠিক করলো। টেবিলে আয়না রাখা ছিলো, সেটাতে নিজেকে একটু দেখে নিলো। তারপর বেরিয়ে এলো রুম থেকে। 
       সে নিচে এসে দেখে ফাহিন নেই। অথচ বজ্জাতটা মেসেজে লিখেছে, নিচে অপেক্ষা করছে। ইরিনার অল্প একটু অভিমান হলো। সে ভেবেছিল, নিচে নেমেই ফাহিমকে দেখতে পাবে। তার হাতে একটা গোলাপ থাকবে। সে এগিয়ে এসে তাকে...! ইরিনা এই পর্যন্ত ভেবে থামলো। সে কি সব ভাবছে। চিন্তা ভাবনা বাদ দিয়ে সে ক্যাম্পাসের রাস্তা ধরে হাঁটতে থাকলো আনমনে।  
        ফাহিম ঠিক ইরিনার পিছে। সে তাকে হল থেকে বের হতে দেখেছে। ইরিনা বেরিয়ে তাকে এদিক ওদিক খুঁজেছে, বিষয়টা তার ভাল লেগেছে। সেদিন সে ইরিনার ফোনে তাকে পাঠানো পুরনো মেসেজটা দেখেই সে নিশ্চিত হয়েছে, ইরিনা তাকে ভালোবাসে। তার তখনি চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে হয়েছিল, ইরিনা আমিও তোকে ভালোবাসি, ভালোবাসি! কিন্তু সে অনেক কষ্টে নিজের অভিব্যক্তি চেপে স্বাভাবিক থেকেছে। সে ইরিনাকে বুঝতেও দেয় নি বিষয়টি। সেই মুহুর্তটা ছিলো তার জীবনের শ্রেষ্ঠ মুহূর্ত। সে এটা কখনো ভুলবে না।
        একটা নির্দিষ্ট দূরত্ব রেখে ইরিনার পিছে পিছে হাঁটতে ফাহিমের ভালো লাগছে। অন্য রকম একটা ভালোলাগা কাজ করছে তার মধ্যে। সে আজকে প্রস্তুতি নিয়ে এসেছে, ইরিনাকে তার মনের কথা বলবে। সে আগেও বহুবার বলেছে, কিন্তু প্রতিবার ইরিনা তাকে এড়িয়ে গেছে। কিন্তু আজ সে এড়িয়ে যাবে না, তার মন বলছে। 
        ফাহিমের হাতে একগুচ্ছ গোলাপ ফুল। সে এখানে আসার আগে কিনে এনেছে। সে ভেবেছিল, ইরিনা হল থেকে বেরুলেই তাকে ফুলগুলো দিবে। কিন্তু হঠাৎ তার মন পরিবর্তন হয়ে গেলো। আর এখন সে ইরিনাকে লক্ষ করে তার পিছে পিছে হাঁটছে। 

        ইরিনা হঠাৎ পিছনে তাকিয়ে পড়লো। ফাহিম তার নিজের ভাবনায় ডুবে ছিলো বলে তাৎক্ষণিক সে লুকিয়ে যেতে পারলো না। ইরিনার কাছে ধরা পরে সে বোকার মত হেসে দিলো। 
        ইরিনার বেশ কিছুক্ষণ ধরে মনে হচ্ছিলো কেউ তাকে ফলো করছে। কিন্তু সে ইচ্ছে করে তাকায় না। তার কেনো জানো মনে হচ্ছিল, লোকটা ফাহিমই হবে। তাই সে নিসন্দেহে হেঁটে যাচ্ছিলো। 

        চারদিক অন্ধকার হতে শুরু করেছে৷ মসজিদ থেকে মাগরিবের আজান ভেসে আসছে। চড়ুই পাখিদের ডাকাডাকি শুরু হয়েছে। একটা গাছে একগুচ্ছ চড়ুই পাখি কিচিরমিচির করে উড়ে বেড়াচ্ছে। এই সবকিছুকে উপেক্ষা করে ইরিনা এক ভাবে ফাহিমের দিকে তাকিয়ে আছে। তার অন্য কোনো দিকে খেয়াল নেই। 
        ফাহিম এক পা এক পা করে এগিয়ে আসছে। তার হাত দুটো পিছনে। হাতে মুষ্টি বদ্ধ একগুচ্ছ গোলাপ ফুল। ইরিনা তার দিকে ফিরতেই সে ফুলগুলোকে পিছে লুকিয়ে ফেলতে সফল হয়েছিলো। সে হেঁটে এসে ইরিনাকে বলল, "তোকে সুন্দর লাগছে।"
        "এতোক্ষণ ধরে চুপিচুপি পিছে পিছে আসছিস কেনো? ডাক দিলেই পারতি?" ইরিনা বলল।
        "দূর থেকে তোর পায়ের সাথে পা মিলিয়ে হাঁটতে বেশ ভালো লাগছিলো। তোকে দেখতে ভালো লাগছিল। তাই আর ডাকিনি।" কথাটা শেষ করে ফাহিম হাসলো।
        "বোকার মত হাসছিন কেনো?"
        ফাহিম আবার হাসলো। তার হাসি পাচ্ছে। সে বলল, "ভালো লাগছে। তোকে দেখেই বুকের মধ্যে খুশি খুশি অনুভব হচ্ছে।" 
        ইরিনাও হাসলো। সে বলল, "পাগল!"
        "চল, ওদিকটাতে গিয়ে বসি। ওদিকটা নিলিবিলি।" 
        "আচ্ছা, চল।" 

        ইরিনা পাশাপাশি ফাহিম হাঁটছে। হঠাৎ ইরিনা বলল, "হাতে কি?" 
        "কই কিছু না তো!" ফাহিম এলোমেলো ভাবে না ভেবেই উত্তর দিলো।
        "তাহলে ওভাবে হাত পিছে ধরে রেখেছিস কেনো?" কথাটা বলে ইরিনা পিছে ঘুরে হাত দেখতে গেলে ফাহিম ঘুরে গেলো।
        "তোর জন্যই এনেছি। তোকেই দিবো। এতো অস্থির হতে হবে না। চল, আগে ওখানে যাই।" 
        "আচ্ছা।" বাধ্য মেয়ের মত করে বলল ইরিনা। 

        তারা তাদের গন্তব্যে পৌঁছে গেছে। ইরিনাকে বসতে বলে ফাহিম তার সামনে দাঁড়ালো। তারপর একটা গোলাপ এগিয়ে দিলো তার সামনে। ইরিনা গোলাপটা দেখেই খুশি হয়ে উঠলো। সে হাত বাড়িয়ে গোলপ ফুলটা নিলো। তখনি ফাহিম আরেকটা, তারপর আরেকটা, এভাবে একটা একটা করে গোলাপ এগিয়ে দিতে থাকলো। ইরিনা অবাক-খুশিতে ফুলগুলো নিলো। শেষ গোলাপি দেওয়ার সময় ফাহিম হাটু গেড়ে বসল ইরিনার সামনে। তারপর গোলাপটা তার মুখের সামনে ধরে কোনো দ্বিধাহীন, সংকোচ হীন ভাবে বলে দিলো, "ভালোবাসি।" 
        ইরিনা ফুল সহ ফাহিমের হাতটা ধরল বেশ শক্ত করে। তারপর সেও তাকে বলল, "আমিও ভালোবাসি।" তার মধ্যেও কোনো সংকোচ নেই। যেনো কথাটা তারা আগেও বহুবার বলেছে একে অন্যকে।
        ফাহিম বলল, "কি বললি? আমি শুনিনি।"
        "ভালোবাসি।"
        "একটু জোরে বলল।"
        ইরিনা এবার ধীরে ধীরে বলল, "আই লাভ ইউ!"
        ফাহিম উঠে দাঁড়িয়ে বলল, "হচ্ছে না।"
        "হচ্ছে না মানে?" ইরিনাও উঠে দাঁড়ালো।
        "ভালো ভাবে শুনতে পাচ্ছি না। এতোটা দূর থেকে বললে শোনা যায়!"
        ইরিনা খানিকটা দূরত্ব ঘুচিয়ে এনে ফাহিমকে অবাক করে দিয়ে তাকে জড়িয়ে নিলো তার বাহুডোরে। ফাহিমও তাকে ছড়িয়ে ধরলো।
        "আই... লাভ... ইউ!" প্রতিটা শব্দ ভেঙ্গে ভেঙ্গে ধীরে ধীরে বলল ইরিনা। 
        "আমিও তোকে ভীষণ ভালোবাসি।" ইরিনাএ কানের কাছ থেকে তার চুলগুলো সরিয়ে ফাহিম ফিসফিস করে বলল।
        "কি করছিস, কানে সুড়সুড়ি লাগছে।" কথাটা বলেই ফাহিমকে ছেড়ে দিয়ে সে বসে পড়লো। তার খানিকটা লজ্জা লাগছে।
        ফাহিম তার পাশে বসতে বসতে বলল, "আমাকে এতোটা অপেক্ষা কেনো করালি?"
        "আমরা দুইজন দুইজনকে ভালোবাসি এটা-তো আমরা জানি। আমরা একে অন্যকে কেয়ার করি। খোঁজ খবর নেই। একজনের প্রতি আমাদের এই যে আগ্রহ। ভালোবাসি না বলেও ভালোবেসে যাচ্ছিলাম। আমাদের এই খুনসুটি, এই টুকরো অনুভূতি, অভিমান, রাগ, এ-সবকিছু আমার ভালো লাগছিল। এছাড়া ভয় হচ্ছিলো, যদি ভালোবাসি বলে দেই তাহলে যদি আমাদের সম্পর্কটা এরকম না থাকে। যদি পরিবর্তন হয়ে যায়। সেই কারণে ভেবেছি, কিছু না বলেই তোকে ভালোবাসা যাক। কিন্তু তুই-তো সেটা করতে দিলি না। কৌশলে আমার কাছ থেকে ফোন নিয়ে তোকে পাঠানো মেসেজটা দেখে নিলি। ফাজিল কোথাকার।" ইরিনা কথাগুলো বলে একটু থামলো। তারপর সে আবার বলল, "জানিস, তোর ফোন হারিয়ে যাওয়াতে আমি খুশি হয়েছিলাম একটা সময় গিয়ে। প্রথম অনেক রাগ হয়েছিল কিন্তু তুই প্রতিদিন হাসপাতালে আমাকে দেখতে আসছি। আমাদের মধ্যে রাগ ছিলো, ভালোবাসা ছিলো। আমরা অভিমানী হয়ে একে অন্যের সাথে কথার যুদ্ধ করতাম। এই সবকিছু আমার ভালো লাগতে শুরু করে। তুই চলে গেলে, হাসপাতালের শেষের দিনগুলোতে আমি অপেক্ষায় থাকতাম কখন সকাল হবে, তুই কখন আসবি। আচ্ছা, এই অনুভূতির নাম কি? নিশ্চয়ই ভালোবাসা! আমি আসলে এই ভালোবাসাটুকুই সবসময় চাইতাম এবং তোর থেকে সেটা পেয়েছিও।" 
        ইরিনার হাত ধরে আছে ফাহিম। সে মনোযোগ দিয়ে ইরিনার কথা শুনছিলো। সে বলল, "আমাদের সম্পর্ক সবসময় এরকমই থাকবে।" 
        "সত্যি?" 
        "উঁহু।" 

        নিভে যাওয়া দিনের আলোয় তারা দুইজন আরো বেশকিছু সময় পাশাপাশি হাত ধরে বসে রইল। এই অন্ধকার তাদের আরো কাছে আসতে সাহায্য করলো। যতটুকু দূরত্ব ছিলো তা অন্ধকার দূরে করে দিলো। একটা সময় একজনের ঠোঁট নেমে এলো আরেকজনের ঠোঁটের উপর। তারা ডুবে যেতে থাকলো অপার্থিব এক অনুভূতির সমুদ্রে। যেখানে কোনো আলো নেই, অন্ধকারও নেই। সবকিছু শূন্য। 

        তাদের হুশ ফিরলো ফোনের রিংটোনের শব্দে। হটাৎ ইরিনার ফোন বেজে উঠলো। সে ফোন হাতে নিয়ে দেখে তার মা কল দিয়েছে। তখনি তার চোখ গেলো ফোনের বাম দিকে কর্ণারে থাকা সময়ের দিকে। রাত বাজে আটটা। সে ফোন রিসিভ করে কথা বলল। কথা শেষ করে ফাহিমের দিকে তাকিয়ে বলল, "ফাহিম, আমাকে বাসায় যেতে হবে।"
        "হ্যাঁ, অনেকটা দেরি হয়ে গেলো।" ফাহিমও সম্মতি দিয়ে বলল।
        "তাহলে চল উঠি।"
        "আচ্ছা৷" 

        তারা হেঁটে ক্যাম্পাসের ভেতর থেকে বাইরে বেরিয়ে এলো। বাইরে আসতেই সাত্যকির সাথে দেখা হয়ে গেলো তাদের। ইরিনাকে দেখতে পেয়ে সাত্যকি এগিয়ে এসে অবাক হয়ে বলল, "তুই এখনো যাস নেই?" 
        "আড্ডা দিতে দিতে দেরি হয়ে গেলো। তুই কোথায় গিয়েছিলি।" 
        "কোথাও না। আশেপাশেই হাঁটছিলাম।" 
        "তোর সে কোথায়?" সাত্যকিকে প্রশ্নটা করতেই জয় সামনে এসে দাঁড়ালো।
        জয় হাত বাড়িয়ে দিয়ে ফাহিমকে বলল, "কি খবর ইয়াং ম্যান?" 
        "এইতো আছি, দাদা। আপনার কি খবর?" ফাহিম বলল।
        "এই চলে যাচ্ছে।" ফাহিমের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ইরিনার দিকে তাকিয়ে জয় বলল, "তোমার কি খবর ইরিনা? পায়ের কি অবস্থা?"
        "এইতো দাদা, এখন অনেকটা ভালো। সুস্থ বলতে পারেন।" 
        "সাত্যকির কাছ থেকে তোমার খবর শুনে খারাপ লেগেছিলো খুব। ব্যস্ততার কারণে আর দেখতে যেতে পারি নি।" 
        "সমস্যা নেই। সাত্যকি-তো প্রায়ই দেখা করতে আসতো।" 
        "বাসায় যাচ্ছো?"
        "হ্যাঁ। আজ সেই সকালে এসেছি, এখন পর্যন্ত বাসায় যেতে পারি নি।" 
        "ওহ আচ্ছা। যাও তাহলে। আজ তাহলে তোমাকে দেরি না করাই।" জয় কথাটা বলে ফাহিমের দিকে তাকিয়ে আবার বলল, "আবার দেখা হবে।"
        "অবশ্যই দাদা।" ফাহিম কথাটা শেষ করে জয়ের সাথে হাত মেলাল।
        "যাই দোস্ত।" সাত্যকিকে লক্ষ করে ইরিনা বলল। সেই সাথে ফাহিমও কথাটা বলে বিদায় নিলো। 

        ইরিনা এবং ফাহিম চলে গেলে জয় আর সাত্যকি হলের দিকে রওনা করলো। যেতে যেতে জয় বলল, "ওরা কি রিলেশনে আছে?"
        "কারা?" তাৎক্ষণিক প্রশ্নটা ধরতে না পেরে সাত্যকি বলল।
        "আরে ফাহিম আর ইরিনার কথা বলছি।"
        "রিলেশন আবার রিলেশন না। দুইজন দুইজনকে ভালোবাসে কিন্তু কেউ মুখে সেটা বলে না।" 
        "দুইজনকে একসাথে ভালোই মানায়।"
        "উঁহু!" 

        তারা দুইজন চলে এসেছে হলের সামনে। সাত্যকি বিদায় নিয়ে চলে গিয়েও জয়ের ডাকে সে আবার ফিরে এলো। 
        "কিছু বলবে?" সাত্যকি এসেই জিজ্ঞেস করলো।
        "না.." জয় উত্তর দিলো।
        "তাহলে ডাকলে যে।"
        "ইচ্ছে হলো তোমার নাম ধরে ডাকতে।" 
        "তুমিও না।" সাত্যকি হেসে কথাটা বলল।
        জয় হঠাৎ সাত্যকির হাত দুটো ধরে বলল, "সাত্যকি!"
        "উঁহু।"
        "চলোনা বিয়েটা করে ফেলি। বিয়ে করে ঢাকায় ছোট্ট একটা রুম ভাড়া নেই। আমাদের টুনি টোনার ছোট্ট সংবাদ হোক। ধীরে ধীরে দুইজনে মিলে সংসারটা গুছিয়ে নিতে পারবো। এছাড়া বাসা থেকে চাপ দিচ্ছে। আমার বাবা শরীরটা ভালো না। কখন কি হয়ে যায়। আমার না খুব টেনশন হয়। বাবা বলছিল, বিয়েটা করে নিতে। তারপর না হয় তোমার পড়াশোনা শেষ করা যাবে।" 
        সাত্যকি আর জয় আবারো হাঁটতে হাঁটতে হলের থেকে খানিকটা দূরে চলে এলো। সাত্যকি বলল, "এতোদিন যেহেতু অপেক্ষা করলে আর-তো ক'টা মাস। সামনের মাসেই আমার সেমিস্টার ফাইনাল। তারপর ইন্টার্নি। প্লিজ, এই কয়টা মাস একটু কষ্ট করে বাসার সবাইকে ম্যানেজ করো।" 
        জয়ের মুখ কালো হয়ে উঠলো। সে চুপচাপ সাত্যকির হাত ধরে খুব ধীরে হেঁটে চলেছে।
        জয়কে চুপচাপ থাকতে দেখে সাত্যকি আবার বলল, "কি হলো? কিছু বলছো না কেনো? একটু বোঝার চেষ্টা করো। আমি-তো পালিয়ে যাচ্ছি না।"
        "উঁহু! তোমাকে পালাতে দিলে তো!" জয় কথাটা বলে সাত্যকিকে আরো খানিকটা কাছে টেনে নিলো। 
        "কি করছো? রাস্তায় মানুষজন আছে।"
        "আমি আমার বউকে একটু কাছে টেনে নিচ্ছি। এর বেশিকিছু-তো করছি না।"
        "যখন বউ হবো তখন শুধু কাছে না, একবারে বুকের মধ্যে টেনে নিও। আমি বাঁধা দিবো না।" 
        "এই দূরত্বটুকু আমাকে প্রচন্ড কষ্ট দেয়।" মন খারাপ করে কথাটা বলল জয়।
        সাত্যকি বুঝতে পারলো জয় মন খারাপ করেছে। প্রায়ই জয় বিয়ের কথাটা তুলে। সাত্যকির বাসা থেকেও তাকে বিয়েটা করে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে। কিন্তু সাত্যকির একটাই কথা, সে পড়াশোনা শেষ না করে বিয়ে করবে না। 

            "একটু সহ্য করে নেও প্লিজ। আর-তো ক'টাদিন। তারপর তো সম্পূর্ণ ভাবে আমি তোমার।" সাত্যকি কথাটা বলে হাসলো। 
        "আচ্ছা তোমার জন্যই না হয় এখনকার এই কষ্টটুকু সহ্য করে নিলাম। কিন্তু বিয়ের পর সুদে-আসলে উসুল করে নিবো।" জয় কথাটা বলেই বাকা ঠোঁটে হাসলো। 
        "তখন দেখা যাবে কে কতটা আসল বা সুদ তুলতে পারে।" কথাটা বলে সাত্যকিও হাসলো। 

        তারা দুইজন আরো কিছুক্ষণ একসাথে পাশাপাশি হাঁটলো। তারপর সাত্যকি চলে যেতেই জয়ের আবার মন খারাপ হলো। সে মন খারাপ করেই বাসায় ফিরলো। যতক্ষণ সে সাত্যকির সাথে থাকে ততক্ষণ তার সময়টা ভালো কাটে। সে শুধু চায়, সাত্যকির সাথে আরো দীর্ঘ সময় থাকতে। কিন্তু সাত্যকি কেনো বুঝতে চায় না। জয়ের মন খারাপ বাড়লো। 

চলবে...!
===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

[+] 2 users Like Bangla Golpo's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: নাম না জানা এক সম্পর্কের গল্প (দেয়ালের ওপারে) - by Bangla Golpo - 28-02-2023, 09:37 PM



Users browsing this thread: 19 Guest(s)