26-02-2023, 03:53 AM
(This post was last modified: 26-02-2023, 02:22 PM by rehan301. Edited 1 time in total. Edited 1 time in total.)
৪।
প্রায় ১৫ মিনিট পর মনিষা রুম থেকে বের হয়ে এলো। আমি ডাইনিং এ বসে ফোন টিপছিলাম। খেয়ালই করি নি কখন সামনে এসে দাড়িয়েছে।হটাৎ আমাকে ডাক দিলো আমি তাকালাম। আমাকে বললো রাতের খাবার দেব। আমি বললাম ঠিক আছে দাও। মনিষা রান্না ঘরের দিকে চলে গেল। আমি পেছন পেছন গেলাম ওকে সাহায্য করতে। খাবার গরম করতে লাগলো। আমি পাশে দাড়িয়ে দেখছি। মনিষা কোন কথা বলছে না বুঝলাম সে এখনো লজ্জা পাচ্ছে। আমার চোখেন দিকেই তাকাচ্ছে না। আমি বললাম মনিষা কোন সমস্যা। ও ঘাড় নেড়ে না সৃচক উত্তর দিলো। আমি বললাম মনিষা ইটস ওকে এটা তো নরমাল তাই না। এতে লজ্জার কি আছে। তবুও কিছুই বললো না। খাবার ডাইনিং এ নিতে শুরু করলো আমিও টুকটাক সাহাযঢ করলাম। খাবার টেবিলে দুজন মানুষ দুই পাশে খাচ্ছি। একদম নিরব ভাবে মনে হচ্ছে এখানে কারো উপস্থিতি নেই। আমি নিরাবতা ভাঙলাম বললাম মনিষা রান্নাটা কিন্তু খুবই সুন্দর হয়েছে। মনিষা হাসলো। হাসলে ওকে দুর্দান্ত লাগে ওর দাত গুলোকে কোন মুক্তার চেয়ে কোন অংশে কম লাগে না। আমি বিমোহিত হয়ে ওকে দেখছি।বললাম মনিষা তোমার কোন কষ্ট হচ্ছে না তো এখানে থাকতে। মনিষা বললো না রেহান কি বলছো কোন ফাইব স্টার হোটেলের চেয়ে কোন অংশে কম নেই। তিনবেলা খাচ্ছি, এসি রুমে ঘুমোচ্ছি, যা দরকার তুমি এনে দিচ্ছো আমি তোমার এই ঋণ কিভাবে শোধ করবো রেহান। আমি বললাম হাসি দিয়ে। ব্যস আমার দিকে তাকিয়ে হেসো তাহলেই ঋণ পরিশোধ হবে। নানা রকম কথা চললো। খাওয়া শেষ আমাদের গল্প শেষ হলো না। রান্না ঘরে দুজন মিলে এটে বাসন ধোয়ার পাশাপাশি গল্প চলছেই। কলেজ জীবনের গল্প নানান কথা। মনিষা বললো কলেজ কলেজে তো তোমার চলাফেরাই অন্য রকম ছিলো কোন মেয়ের সাথে কথাই বলতে না।আমি হাসলাম মনে মনে ভাবলাম তুমি থাকতে অন্য মেয়ের সাথে কথা কি ভাবে বলি। আমার যে ধ্যন ধারনায় পুরোটাই তুমি আর তুমি। কথা বললে বলতে কখন যে রাত 1 টা বেজে গেছে সেই খেয়াল ই নেই। সর্বনাশ সকালে অফিস আছে। দুজন দুই রুমে চলে গেলাম সুয়ে পরলাম।ভাবছি গত ৩ দিন যাবত কত সুন্দর দিন কাটছে যদি সারাটা জীবন মনিষা এভাবেই আমার পাশে থাকতো টাকা পয়সা বাড়ি গাড়ী কোন কিছুর প্রয়োজন আমার পড়বে না। কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি সেই খেয়াল ই আমার নেই। সকালে এর্লামে এর পরও দেরিতে ঘুম ভাংলো। দ্রুত রেডি হলাম রুম থেকে বের হলাম মনিষার রুমের দরজায় টোকা দিলাম কোন সারা শব্দ নেই। দরজা ঠেলে ভিতরে ডুকলাম। মনিষা ওয়াশরুমে। কি করি আমার তো দেরি হয়ে যাচ্ছে তারমধ্যে আজকে অফিসে মিটিং আছে৷ মনিষা ওয়াস রুম থেকে বের হলো আমাকে দেখে আবার ওয়াসরুমে ডুকে গেল বুঝলাম ওড়না নিতে আবার গেয়েছিলো আমি একটু লজ্জাই পেলাম। আমি বললাম মনিষা আমি অফিস গেলাম। মনিষা বললো আরে নাস্তা করবে না। আমি বললাম সময় নেই।এখন নাস্তা তৈরী করে খাবার। মনিষা বললো নাস্তা তৈরী করাই আছে তুমি টেবিলে বস আমি দিচ্ছি।আমি বসলাম ও নাস্তা নিয়ে এল আমি দ্রুত খেতে লাগলাম। মনিষা বললো আস্তে গলায় খাবার আটকে যাবে তো৷ ওর বলা আর আমার গলায় খাবার আটকা কেশে উঠলাম দ্রুত আমার দিকে পানি এগিয়ে দিলো। পানি খাবার পর কাশি টা কমছে না। মনিষা চেয়ার থেকে উঠে এসে আমার মাথায় আস্তে আস্তে হাত দিয়ে বারি দিতে লাগলো। আমার অনুভুতি তখন চরমে। হটাৎ ফোন বাজলো দেখি আমার এক কলিগের ফোন। কোথায় স্যার আপনি এমডি স্যার অফিসে ঠিক ৩০ মিনিট পর মিটিং বসবে। আমি বললাস আমি রাস্তায় আসতেছি।
মনিষাকে বললাম সনিষা দরজা লাগিয়ে দাও৷ কেউ এলে দরজা খোলার দরকার নেই। আগে দরজার কি হোলে দেখবে কে। আমি ছাড়া যেই হোক খোলার দরকার নেই। আমি দরজা থেকে বের হলাম মনিষা বললো সাবধানে যেও।
বাসা থেকে বের হয়ে পাঠাও এ একটা মোটরবাইক ঠিক করলাম। আজনআর গাড়ি নেয়া যাবে না এমনি দেরি। 2 মিনিটের মধ্যে মধ্যে বাইক চলে এসেছে। বাইক চলছে কিন্তু আমার মনে তখন ও মনিষা। কত সুন্দর আদর্শ গৃহবধুর মত সে নাস্তা তৈরী করে ফেলেছে। ওকে যে আমার সারা জীবনের জন্য চাই। কিন্তু সত্যি এটাই যে ওকে এটা বলার সাহস আমার একদমই নেই। কারন আমি একটা ভিতুর ডিম। আর ও যেহেতু এখন আমার সাথে রয়েছে কিছু বললে যদি ভুল বোঝে না আছে থাক কিছু বলার নেই। দিখি বাইক আলা বলছে আরে ভাই নামেন কি হলো। দিখি অফিসের সামনেই দাড়িয়েছে। সরি ভাই অন্য খেয়ালে ছিলাম ভাড়া দিয়ে অফিসের ভিতরে দৌড় লাগালাম। সবাই কনফারেন্স রুমে অলরেডি মিটিং শুরু হয়ে গেছে আস্তে করে ভিতরে ডুকে নিজের চেয়ারে বসলাম। এমডি স্যা বক্তব্য দিচ্ছে। আমার পাশে বসা কলিগ আস্তে আস্তে বলছে কি ব্যপার রেহান ২ দিন ধরে অফিসে দেরি করে আসছো আবকর অফিস শেষ হবার সাথে সাথেই দৌড় লাগাচ্ছো কাহিনী কি বাড়িতে বউ আছে নাকি। সামনে এমডি স্যার বক্তব্য দিচ্ছে তার দিকে তাকিয়েই এমন ভাবে কথা গুলো বললো দুর থেকে দেখলে মনে হবে না জানি কত গভীর মনোযোগে কথা শুনছে সে। আমি বললাম আরে না তেমন কিছু না রাত জেগে মুভি দেখেছি উঠতে দেরি হয়ে গেল আরকি। যা বুঝলাম ফরেন্ট ক্লাইন্টের সাথে মিটিং পুরো ৭ দিন। মিটিং হবে কক্সবাজারে আমাদের অফিস থেকে ২ জনকে পাঠানো হবে। এখন সিলেক্ট করা হয় নি কোন দুজন যাবে। আমি চুপচাপ আছি মনে মনে একটায় ভয় যদি আবার আমাকে যেতে বলে তখন । আরেকজনের পাশে ঠিক এমন ভাবে বসলাম যাতে এমডি স্যার আমার চেহারাটাই না দেখতে পারে। এমডি স্যার নানান রকম কথা বলে এখন নাম ঘোষনা করবে আমি আল্লাহ আল্লাহ করছি আমার নাম যেন না বলে। এমডি স্যার ঘোষনা দিলো রেহান এবং বৃষ্টি যাবে। কি রেহান সমস্যা নেই তো তাই না। আমি বললাম না মানে স্যার আমি গতবার ও তো আমি গেলাম এবার না হয় অন্য কাউকে দিন।
স্যার বললো আরে সে জন্যই তো তোমাকে বললাম গকবার ক্লাইটরা তোমার এপ্রোচ এ খুব খুশি হয়েছে তাই তোমাকে সিলক্ট করেছি। আর সমস্যা কি ৭ দিন থাকবে মিটিং হবে ৩ দিন মাত্র। ঘুরেও আসলা মনে করও ছুটি কাটাতেই যাচ্ছা। ব্যাচেলর মানুষ তুমি তোমার কি সমস্যা। হোটেলের রুম বুক করা আছে ২ টা। টিকেট তোমরা কথা বলে কেটে নিও। আমি আর কিছু বলতে পারলাম না। স্যার বললো তাহলে কাল রাতে রওনা দিয়ে চলে যাও।
যে ভয় পেয়েছিলাম সেটাই হলো আমর ই নাম বললো তাও একজন মেয়ের সাথে। মেয়েটা মাত্র ২ মাস এই অফিসে জয়েন্ট করেছে।কি করি।নিজের ডেস্ক এ গিয়ে বসলাম কাজ গুলো গুছিয়ে নিচ্ছি বুঝছি যেতেই হবে।ভাবছি মনিষাকে কি বলবো ওকে একা বাসায় রেখে যাবো কি ভাবে দুর কি করি এখন মেজাজটাই গরম হয়ে যাচ্ছে।
আমি কি করবো ভাবছি এমন সময় বৃষ্টি এলো ভাইয়া টিকেট ৩ টা কাইটেন আমার একজন যাবে। আমি বললাম ঠিক আছে। ব্যস আমার মাথায় ও চলে আসলো বৃষ্টিরযদি কাউকে সাথে নিতে পারে তাহলে তো আমিও মনিষাকে সাথে নিতেই পারি।
অফিসে বললাম কিছু কাজ আছে যেহেতু কালকে যেতে হবে তাই কাজ গুলো শেষ করতে হবে। ১২ টার দিকে অফিস থেকে বের হয়ে গেলাম। দ্রুত যাওয়ার জন্য আবার ও বাইকে রওনা দিলাম। বাসায় পৌছালাম ১ টার দিকে। ফ্লাটের কলিং বেল চাপার কিছু সময় পর দেখি রহিমা আপা দরজা খুললো। আমি বললাম আরে রহিমা আপা কবে আসলেন। আজকেই সকালে স্যার কইছি না ৩ দিন ছুডি নিমু। আমি জবানে একবারে পাক্কা। স্যার স্যার। হুমম বলেন আপনি কি আমারে কাম থিকা ছাড়াইয়া দিবেন। কেন ছাড়াবো কেন। বাসার সব কাজ তো দেখি ম্যাডামে কইরা রাহে। আমি আইহা দেহি কান কামই নাই আমার। আমি হাসলাম বললাম আপনি ছিলেন না তাই ও করেছে। এই যে আসলেন কাল থেকে আপনি করবেন৷ বুঝলাম রহিমা আপা খুব খুশি হলো। আমি বললাম তো আপনার ম্যাডাম কোথায় এখন। ম্যাডাম রান্না করে স্যার আমি কইলাম আমি রান্না কইরা দেই হে কইলো আজ থিকা নাকি রান্না আর আমার কাম না হেই করবো। আমি বললাম আচ্ছা ঠিক আছে সমস্যা নেই আপনি অন্য অন্য কাজ গুলো করে নিয়েন।
রান্না ঘরের দিকে পা বাড়ালাম দেখি মনিষা একবারে ওড়না কোমনে বেধে রান্নার কাজে নেমে পড়েছে। আমাকে দেখে একটু অবাকই হলো বললো রেহান এত তাড়াতাড়ি কোন সমস্যা। আমি বললাম হুমম সমস্যাই তো। মনিষা আমার দিকে তাকালো আমি বললাম আরে না তেমন সমস্য না। বিষয়টা হচ্ছে অফিস থেকে আমাকে কক্সবাজার পাঠাচ্ছে একটা কাজে ৭ দিনের জন্য। মনিষা বললো ও। আমি বললাম তুমি। মনিষা আমার দিকে তাকালো আমি বললাম না ম মানে তোমাকে এখানে একা রেখে আমার পক্ষে যাওয়া সম্ভব না। তাই বলছিলাম তুমিও চলো আমার সাথে নাকি। মনিষা চুপ করে রইলো।
মনিষা যাবে সমস্যা নেই তো কোন তাই না।মনিষা বললো ঠিক আছে যাবো। মনিষা খুব মনোযোগ দিয়ে রান্না করছে আর আমি পাশে দাড়িয়ে দেখছি চুপচাপ। মনে মনে ভাবলাম ও যদি একান্তই আমার হতো ওকে পেছন থেকে জরিয়ে ধরতাম কেমন হতো সে মুহূর্তটা। সেই মুহূর্তের কথা ভাবতে ভাবতে আমি কল্পনার রাজ্যে ডুকে গিয়েছিলাম। হুস ফিরলো মনিষার ডাকে।রেহান রেহান কি হলো আমি বললাম হুমম বলো। বললাম ফ্রেস হয়ে নাও খেতে দেই আমি বললাম হুমম যাই।
নিজের রুমে এসে ফ্রেস হয়ে বের হলাম। মনিষা টেবিলে খাবার সাজাচ্ছে। রহিমা আপা বললো স্যার তাইলে আমি গেলাম স্যার। আমি বললাম শুনুন আগামি ৭ দিন আপনার ছুটি ঢাকার বাইরে যাবো। একদম সাত দিনের দিন আসবেন। রহিমা আপা চলে গেল। আমি আর মনিষা খেতে বসলাম। বুঝলাম না মনিষা যাই রান্না করে তাই আমার কাছে অমৃতের মত লাগে। নাকি ওকে ভালো বাসি বলে ওর সবটাই আমার ভালো লাগে। মনিষাকে বললাম মনিষা বিকেলে কিন্তু একটু বের হতে হবে। কক্সবাজার যাবো কিছু কেনাকাটা করতে হবে। মনিষা বললো আচ্ছা ঠিক আছে। বিকেলে মনিষাকে নিয়ে বের হলাম। এই প্রতম মনিষাকে নিয়ে বের হলাম। মনিষার জন্য কিছু কাপড় চোপর কিনলাম ওকে ২ টা শাড়ি ও কিনে দিলাম।একটা মোবাইল আর সিম ও কিনে দিলাম।যদিও মনিষা বার বার না করছিলো কিন্তু আমি জানি মোবাইল ছাড়া এখনকার দিনে আসলে কারোই ভালো লাগে না। বিকেল থেকে রাত হয়ে গেল মার্কেট করতে করতে রাতের খাবারটা বাইরের রেস্টুরেন্টে এ করেই ফিরলাম। প্রচন্ড ক্লান্ত অনুভব করলাম। ১ বেলা মার্কেট করে আমি শেষ কিন্তু মনিষার মাঝে কোন ক্লান্ত ভাব দেখলাম না। বুঝলাম হাজার হলেও মেয়ে মানুষ শপিং করতে গিয়ে এরা ক্লান্ত হয় না। রুমে গিয়ে শুইতেই ঘুমিয়ে গেলাম। ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখছি আমি আর মনিষা কক্সবাজার বীচ এ হাটছি আর আমাদের মাঝে একটা ৩-৪ বছরেে ফুটফুটে মেয়ে দেখতে হুবুহু মনিষার মতো। আমাদের দুজনের হাত ধরে হাটছে। এল্যামের শব্দে ঘুমটা ভেঙে গেল ফালতু বাজার আর সময় পেল না এত সুন্দর স্বপ্নটা নষ্ট করে দিলো। মনে মনে বললাম আল্লাহ প্লিজ স্বপ্নটা সত্যি করে দাও।
অফিস যেতে হবে প্রচুর কাজ করতে হবে আজকে ক্লাইন্টেদের সাথের মিটিং এর যাবতীয় সব ঠিক করতে হবে। অফিসে পৌছে বৃষ্টির সাথে বসে যাবতীয় কাজ শেষ করলাম গত রাতেই ৪ টা টিকেট বুক করেছি। বৃষ্টিকে বলে দিলাম ১১ টায় বাস সময় মত যেন চলে আসে।
রাত ১০ আমি আর মনিষা সিএনজি করে বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছালাম। দেখলাম বৃষ্টি ও চলে চলে আসছে। ওর সাথে একজন ছেলে আছে বয়ফ্রেন্ড হবে হয়তো। মনিষার সাথে বৃষ্টিকে পরিচয় করিয়ে দিলাম।বাসে উঠে বসলাম আমি আর মনিষা পাশাপাশি আর ওরা দুজন পাশাপাশি।
মনিষাকে বললাম এর আগে কক্সবাজার গিয়েছিলো। মনিষা বললো এর আগে প্রায় ৩-৪ বার প্লান করেও শেসমেস যেতে পারে নি। আমি বললাম দেখলে তুমি প্লান করেও যেতে পারো নি আর আমি তোমাকে কোন রকম প্লান ছাড়াই কক্সবাজার নিয়ে যাচ্ছি। মনিষা হাসলো। আমি নানান রকম কথা বলেই চলছি হটাৎ দেখি মনিষা আমার কাধে মাথা রাখলো। ওর দিকে তাকালাম দেখলাম ঘুমিয়ে গেছে। এর মানে অনেক সময় যাবত আমি একাই কথা বলছিলাম। মনিষাকে এভাবেই সারা জীবন আমার কাধে চাই। একটু পর দেখি মনিয়া আমাকে ওর হাত দিয়ে আমার বাহু জড়িয়ে ধরেছে ওর গরম নিশ্বাস আমার কাধে পরছে এ যন আমার জন্য স্বর্গ সুখ। বাসের এসির বাতাসে ঠান্ডা লাগছে একটা কম্বল টেনে নিয়ে আমার আর মনিষার উপর নিলাম।। আমি বাসের হাল্কা আলোও কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি সে খেয়াল আমার নেই। যখন ঘুম ভাঙলো তখন দেখলাম আমরা প্রায় কক্সবাজারের কাছাকাছি আর হয়তো ৩০ মিনিট লাগবে সর্বোচ্চ। আমি মনিষাকে দেখছি রাতে যে ভাবে জড়িয়ে ঘরেছিলো ঠিক সে ভাবেই ধরে আছে। ওর নিস্পাপ মুখটা আমি দেখছি। হটাৎ বাসের ঝাঁকিতে মনিষার ঘুম ভেঙে গেল। তাড়াহুড়ো করে আমাকে ছেড়ে নিজেকে আলাদা করলো। হয়তো লজ্জা পেয়েছে। আমি পরিস্থিতি সালাল দিয়ে বললাম আহা কি নাক ডেকেই না ঘুমুচ্ছিলে। মনিষা বললো না কখনোই না আমি নাক ডাকিই না। তুমি কি করে বুঝবে যে তুমি নাক ডাক আমি শুনছি তাই বললাম। না না আমি নাক ডাকি। আমার হেসে দিলাম মনিষা বাচ্চাদের মত করছো তুমি। মনিষা লজ্জা পেয়ে মুখ ঘুরিয়ে নিলো তবুও বলতে লাগলো আমি কিন্তু নাক ডাকি না। আমি বললাম আচ্ছা বাবা ঠিক আছে তুমি নাক ডাকো না।মনিষা হেসে উঠলো। বললাম কিছুক্ষনের মধ্যে নামবো আমরা রেডি হও। কিছু সময় পর আমারা নেমে পড়লাম। হোটেলে গিয়ে চাবি নিয়ো রুমে চলে গেলাম। মনিষাকে বললাম রুম একটাই নিয়েছি তোমাকে আলাদা রুমে দিলে আমি টেনশনে ঘুমাতে পারতাম না। তুমি বিছানায় ঘুমিয়ে আমি নিচে শুয়ে নেব। অফিস থেকে রুম বুক করা সিঙ্গেল বেড এর রুম বুক করে দিয়েছে। কোন সমস্যা নেই তো মনিষা। মনিষা বললো তোমার সাথে এক ছাদের নিচে থেকেছি তোমাকে বিশ্বাস করি বলেই। নিচে শুতে হবে না বিছানাই শুইয়ো। একজন সকালের নাস্তা দিয়ে গেল। ফ্রেস হয়ে খাবার খেয়ে নিলাম। ক্লান্ত থাকায় ঘুমিয়ে পরলাম মনিষা ও আমার পাশেই শুয়েছে মাঝে আমি নিজে থেকেই একটা বালিশ দিয়েছি।ঘুম ভাঙলো বিকেল ৩ টায় আমার চোখের সামনে মনিষা ঘুমিয়ে আছে। ওকে দেখছি মনে হচ্ছে এ ভাবে ওকে দেখতে দেখতে সারা জীবন পার করে দিতে পারবো।
বিকেলে মনিষাকে নিয়ে বীচে ঘুরতে গেলাম। মনিষা বাচ্চাদের মত ঢেউয়ের সামনে দৌড়াচ্ছে। একটা ঘোড়াতে উঠিয়ে ঘুরালাম। আর সন্ধ্যায় নানা রকম সামুদ্রিক মাছ দিয়ে ভুঁড়ি ভোজ। বীচ থেকে ফিরতে ফিরতে রাত ৮ টার দিকে ফিরলাম। অফিস থেকে ফোন দিয়ে অলরেডি জানিয়েছে কাল সকাল ১০ টায় মিটিং। কিছু কাজ শেষ করে রাত ১১ টার দিকে ঘুমিয়ে পড়লাম। ঘুম ভাঙলো মনিষার ডাকে। আমি তড়িঘড়ি করে উঠলাম কি, কিন হয়েছে মনিষা। মনিষা বললো কিছু না উঠ তাড়াতাড়ি সূর্য উদয় দেখবো ও এই কথা। বললাম বারান্দায় দাড়ালেই দেখতে পারবে এর আগে আমি এই হোটেলের বারান্দায় দাড়িয়েই দেখেছি। মনিষা বললা না চলো না বীচে যাই সেখান থেকে দেখবো। কি আর করি প্রিয়তমার কথা কি আর ফেলা যায়। হাটা দিলাম বীচের দিকে এই রকম গরমের দিনেও ভোর বেলা বীচের আবহাওয়া মোটামুটি ঠান্ডা আমি আর মনিষা সূর্য উদয় দেখছি। আরও অনেক মানুষই আছে দেখলাম বৃষ্টি আর ওই ছেলেটাও আছে । কাল থেকে এদের দেখা নেই।যদিও কাল রাতেই মিটিং ১০ টায় ফোনে বলে দিয়েছি। রুমে ফিরে ফ্রেস হলাম। ৯.৩০ এ বৃষ্টি এলো। মনিষাকে বললাম একা কোথাও যেও না আমি মিটিং শেষ করে আসি।
বের হলাম অন্য এক হোটেলে মিটিং ফিক্সড করা হয়েছে। সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত মিটিং চললো। যা বুঝলাম ক্লাইন্ট আমাদের কাজে খুশি। হয়তো কালকে মিটিং হলেই কাজটা হয়ে যাবে। যদিও কথা ছিলো এক দিন পর পর ৩ দিন হবে কিন্তু ক্লাইন্ট নিজেই কালকে মিটিং করতে চাইলো। রুমে ফিরলাম। আমাকে দেখে মনিষা খুশি হলো। বললাম কি করছিলে কি আর করবো বসে বসে বোর হচ্ছিলাম। আমি বললাম আমি চলে এসেছি আর বোর হতে হবে না। বিকেলে বের হলাম আজকে কক্সবাজার শহরটা ঘুরে দেখালাম মনিষাকে। নানা রকম জিনিস কেনা হলো নানান রকম খাবার খাওয়া হলো। রাত ১০ টা আমি আর মনিষা বীচে বালুর উপর বসে চাদের আলোও সমুদ্র দেখছি। নিরাবতা ভেঙে মনিষা বললো ধন্যবাদ রেহান।
কেন।
এত সুন্দর করে আমার সমুদ্র দেখার ইচ্ছা পূরন করে।
আমি বললাম আর কি ইচ্ছে আছে তোমার।
কেন।
আমি বলেই ফেললাম আলাদীনের জ্বীনের মত তোমার সকল ইচ্ছা পূরন করে দেব।
মনিষা হাসলো।
হাসলে কেন।
আমার জীবনা বড়ই অনিশ্চিত হয়ে গেছে রেহান। তোমার আশ্রয়ে হয়তো এখনো বেচে আছি নইলে হয়তো এ কয়দিনে মরেই যেতাম।
আমি বললাম কি বলছো মনিষা।
তুমি জানো বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে আমি এক প্রকারে ঠিক ই করে নিয়েছিলাম এ জীবন আর রাখবো না। কিন্তু তুমি আমাকে বাচিয়ে দিলে।
জীবন কি এতই সহজ মনিষা যে চাইলেই শেষ করা যায়।
কি করবো বলো নিজ হাতে আমার ভাগ্য আমি বদলে ফেলেছি রেহান আজ বলতে গেলে আমার সব কিছু থেকেও নেই। মনিষা কেদে দিলো।
আমি ওকে সান্তনা দিলাম কিছু ভেবো না আমি তোমার সব সমস্যা ঠিক করে দেব। আমি তোমার বাবার সাথে কথা বলবো।
মনিষা হাসলো। তুমি আমার বাবাকে জানোনা রেহান উনি কোনদিন আমাকে নিজের মেয়ে হিসেবে মেনে নেবে না।
বুঝলাম এভাবে থাকলে মনিষার মন আরও বেশি খারাপ হবে। উঠে দাড়ালাম বললাম মনিষা চলো চাদের আলোও সমুদ্রের ধার ধরে একটু হেটে বেড়াই।
বেশ কিছু সময় আমরা হাটলাম। কোন কথা ছাড়াই।
তারপর ফিরে এলাম রুমে ঘুমিয়ে পরলাম।
পরদিন মোটমুটি মিটিং এ সব কম্পিলিট হয়ে গেল ৭ দিনের কাজ ৩ দিনে কম্পিলিট। ক্লাইন্ট খুশি তো বস খুশি বললো ৭ দিন কাটিয়ে আসো সমস্যা নেই।
বৃষ্টিকে বললাম তোমরা তাহলে থাকো আমরা একটু ৩ দিন অন্য জায়গায় কাটাই। রুমে ফিরলাম।
মনিষাকে বললাম সমুদ্র কেমর দেখলে।
ভালোই কিন্তু আমি জানতাম সমুদ্রের পানি নীল হয় কিন্তু এখানে তো ঘোলা পানি।বললাম সকালে রেডি থেকো তোমাকে নীল জলরাশি দেখাবো
সকাল ৯ টার জাহাজে রওনা দিলাম সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশ্যে। জাহাজ চলা শুরু করলো আর দেখা গেল এক অপূর্ব দৃশ্য। জাহাজের সাথে পাখিরাও উড়তে শুরু করলো। মনিষা খুব মজা পেল।এই পাখিগুলোর দিকে বিস্কিট চিপস ছুড়ে দিলে পাখিগুলো উড়ে সে গুলো খায়। দেখা মিললো নীল জলরাশি।
সমুদ্রের নীল দেখতে পেলে মনিষা।
হুমম।
মন ভালো হয়েছে।
খুব।
এ ভাবেই হাসতে থেকো মনিষা কান্না করলে তোমাকে একদমই ভালো লাগে না।
এক গভীর মায়া ভরা চোখে মনিষা আমার দিকে তাকালো।
কিন্তু আমি সেই চোখের ভাষা পড়তে পারলাম না।
প্রায় ১৫ মিনিট পর মনিষা রুম থেকে বের হয়ে এলো। আমি ডাইনিং এ বসে ফোন টিপছিলাম। খেয়ালই করি নি কখন সামনে এসে দাড়িয়েছে।হটাৎ আমাকে ডাক দিলো আমি তাকালাম। আমাকে বললো রাতের খাবার দেব। আমি বললাম ঠিক আছে দাও। মনিষা রান্না ঘরের দিকে চলে গেল। আমি পেছন পেছন গেলাম ওকে সাহায্য করতে। খাবার গরম করতে লাগলো। আমি পাশে দাড়িয়ে দেখছি। মনিষা কোন কথা বলছে না বুঝলাম সে এখনো লজ্জা পাচ্ছে। আমার চোখেন দিকেই তাকাচ্ছে না। আমি বললাম মনিষা কোন সমস্যা। ও ঘাড় নেড়ে না সৃচক উত্তর দিলো। আমি বললাম মনিষা ইটস ওকে এটা তো নরমাল তাই না। এতে লজ্জার কি আছে। তবুও কিছুই বললো না। খাবার ডাইনিং এ নিতে শুরু করলো আমিও টুকটাক সাহাযঢ করলাম। খাবার টেবিলে দুজন মানুষ দুই পাশে খাচ্ছি। একদম নিরব ভাবে মনে হচ্ছে এখানে কারো উপস্থিতি নেই। আমি নিরাবতা ভাঙলাম বললাম মনিষা রান্নাটা কিন্তু খুবই সুন্দর হয়েছে। মনিষা হাসলো। হাসলে ওকে দুর্দান্ত লাগে ওর দাত গুলোকে কোন মুক্তার চেয়ে কোন অংশে কম লাগে না। আমি বিমোহিত হয়ে ওকে দেখছি।বললাম মনিষা তোমার কোন কষ্ট হচ্ছে না তো এখানে থাকতে। মনিষা বললো না রেহান কি বলছো কোন ফাইব স্টার হোটেলের চেয়ে কোন অংশে কম নেই। তিনবেলা খাচ্ছি, এসি রুমে ঘুমোচ্ছি, যা দরকার তুমি এনে দিচ্ছো আমি তোমার এই ঋণ কিভাবে শোধ করবো রেহান। আমি বললাম হাসি দিয়ে। ব্যস আমার দিকে তাকিয়ে হেসো তাহলেই ঋণ পরিশোধ হবে। নানা রকম কথা চললো। খাওয়া শেষ আমাদের গল্প শেষ হলো না। রান্না ঘরে দুজন মিলে এটে বাসন ধোয়ার পাশাপাশি গল্প চলছেই। কলেজ জীবনের গল্প নানান কথা। মনিষা বললো কলেজ কলেজে তো তোমার চলাফেরাই অন্য রকম ছিলো কোন মেয়ের সাথে কথাই বলতে না।আমি হাসলাম মনে মনে ভাবলাম তুমি থাকতে অন্য মেয়ের সাথে কথা কি ভাবে বলি। আমার যে ধ্যন ধারনায় পুরোটাই তুমি আর তুমি। কথা বললে বলতে কখন যে রাত 1 টা বেজে গেছে সেই খেয়াল ই নেই। সর্বনাশ সকালে অফিস আছে। দুজন দুই রুমে চলে গেলাম সুয়ে পরলাম।ভাবছি গত ৩ দিন যাবত কত সুন্দর দিন কাটছে যদি সারাটা জীবন মনিষা এভাবেই আমার পাশে থাকতো টাকা পয়সা বাড়ি গাড়ী কোন কিছুর প্রয়োজন আমার পড়বে না। কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি সেই খেয়াল ই আমার নেই। সকালে এর্লামে এর পরও দেরিতে ঘুম ভাংলো। দ্রুত রেডি হলাম রুম থেকে বের হলাম মনিষার রুমের দরজায় টোকা দিলাম কোন সারা শব্দ নেই। দরজা ঠেলে ভিতরে ডুকলাম। মনিষা ওয়াশরুমে। কি করি আমার তো দেরি হয়ে যাচ্ছে তারমধ্যে আজকে অফিসে মিটিং আছে৷ মনিষা ওয়াস রুম থেকে বের হলো আমাকে দেখে আবার ওয়াসরুমে ডুকে গেল বুঝলাম ওড়না নিতে আবার গেয়েছিলো আমি একটু লজ্জাই পেলাম। আমি বললাম মনিষা আমি অফিস গেলাম। মনিষা বললো আরে নাস্তা করবে না। আমি বললাম সময় নেই।এখন নাস্তা তৈরী করে খাবার। মনিষা বললো নাস্তা তৈরী করাই আছে তুমি টেবিলে বস আমি দিচ্ছি।আমি বসলাম ও নাস্তা নিয়ে এল আমি দ্রুত খেতে লাগলাম। মনিষা বললো আস্তে গলায় খাবার আটকে যাবে তো৷ ওর বলা আর আমার গলায় খাবার আটকা কেশে উঠলাম দ্রুত আমার দিকে পানি এগিয়ে দিলো। পানি খাবার পর কাশি টা কমছে না। মনিষা চেয়ার থেকে উঠে এসে আমার মাথায় আস্তে আস্তে হাত দিয়ে বারি দিতে লাগলো। আমার অনুভুতি তখন চরমে। হটাৎ ফোন বাজলো দেখি আমার এক কলিগের ফোন। কোথায় স্যার আপনি এমডি স্যার অফিসে ঠিক ৩০ মিনিট পর মিটিং বসবে। আমি বললাস আমি রাস্তায় আসতেছি।
মনিষাকে বললাম সনিষা দরজা লাগিয়ে দাও৷ কেউ এলে দরজা খোলার দরকার নেই। আগে দরজার কি হোলে দেখবে কে। আমি ছাড়া যেই হোক খোলার দরকার নেই। আমি দরজা থেকে বের হলাম মনিষা বললো সাবধানে যেও।
বাসা থেকে বের হয়ে পাঠাও এ একটা মোটরবাইক ঠিক করলাম। আজনআর গাড়ি নেয়া যাবে না এমনি দেরি। 2 মিনিটের মধ্যে মধ্যে বাইক চলে এসেছে। বাইক চলছে কিন্তু আমার মনে তখন ও মনিষা। কত সুন্দর আদর্শ গৃহবধুর মত সে নাস্তা তৈরী করে ফেলেছে। ওকে যে আমার সারা জীবনের জন্য চাই। কিন্তু সত্যি এটাই যে ওকে এটা বলার সাহস আমার একদমই নেই। কারন আমি একটা ভিতুর ডিম। আর ও যেহেতু এখন আমার সাথে রয়েছে কিছু বললে যদি ভুল বোঝে না আছে থাক কিছু বলার নেই। দিখি বাইক আলা বলছে আরে ভাই নামেন কি হলো। দিখি অফিসের সামনেই দাড়িয়েছে। সরি ভাই অন্য খেয়ালে ছিলাম ভাড়া দিয়ে অফিসের ভিতরে দৌড় লাগালাম। সবাই কনফারেন্স রুমে অলরেডি মিটিং শুরু হয়ে গেছে আস্তে করে ভিতরে ডুকে নিজের চেয়ারে বসলাম। এমডি স্যা বক্তব্য দিচ্ছে। আমার পাশে বসা কলিগ আস্তে আস্তে বলছে কি ব্যপার রেহান ২ দিন ধরে অফিসে দেরি করে আসছো আবকর অফিস শেষ হবার সাথে সাথেই দৌড় লাগাচ্ছো কাহিনী কি বাড়িতে বউ আছে নাকি। সামনে এমডি স্যার বক্তব্য দিচ্ছে তার দিকে তাকিয়েই এমন ভাবে কথা গুলো বললো দুর থেকে দেখলে মনে হবে না জানি কত গভীর মনোযোগে কথা শুনছে সে। আমি বললাম আরে না তেমন কিছু না রাত জেগে মুভি দেখেছি উঠতে দেরি হয়ে গেল আরকি। যা বুঝলাম ফরেন্ট ক্লাইন্টের সাথে মিটিং পুরো ৭ দিন। মিটিং হবে কক্সবাজারে আমাদের অফিস থেকে ২ জনকে পাঠানো হবে। এখন সিলেক্ট করা হয় নি কোন দুজন যাবে। আমি চুপচাপ আছি মনে মনে একটায় ভয় যদি আবার আমাকে যেতে বলে তখন । আরেকজনের পাশে ঠিক এমন ভাবে বসলাম যাতে এমডি স্যার আমার চেহারাটাই না দেখতে পারে। এমডি স্যার নানান রকম কথা বলে এখন নাম ঘোষনা করবে আমি আল্লাহ আল্লাহ করছি আমার নাম যেন না বলে। এমডি স্যার ঘোষনা দিলো রেহান এবং বৃষ্টি যাবে। কি রেহান সমস্যা নেই তো তাই না। আমি বললাম না মানে স্যার আমি গতবার ও তো আমি গেলাম এবার না হয় অন্য কাউকে দিন।
স্যার বললো আরে সে জন্যই তো তোমাকে বললাম গকবার ক্লাইটরা তোমার এপ্রোচ এ খুব খুশি হয়েছে তাই তোমাকে সিলক্ট করেছি। আর সমস্যা কি ৭ দিন থাকবে মিটিং হবে ৩ দিন মাত্র। ঘুরেও আসলা মনে করও ছুটি কাটাতেই যাচ্ছা। ব্যাচেলর মানুষ তুমি তোমার কি সমস্যা। হোটেলের রুম বুক করা আছে ২ টা। টিকেট তোমরা কথা বলে কেটে নিও। আমি আর কিছু বলতে পারলাম না। স্যার বললো তাহলে কাল রাতে রওনা দিয়ে চলে যাও।
যে ভয় পেয়েছিলাম সেটাই হলো আমর ই নাম বললো তাও একজন মেয়ের সাথে। মেয়েটা মাত্র ২ মাস এই অফিসে জয়েন্ট করেছে।কি করি।নিজের ডেস্ক এ গিয়ে বসলাম কাজ গুলো গুছিয়ে নিচ্ছি বুঝছি যেতেই হবে।ভাবছি মনিষাকে কি বলবো ওকে একা বাসায় রেখে যাবো কি ভাবে দুর কি করি এখন মেজাজটাই গরম হয়ে যাচ্ছে।
আমি কি করবো ভাবছি এমন সময় বৃষ্টি এলো ভাইয়া টিকেট ৩ টা কাইটেন আমার একজন যাবে। আমি বললাম ঠিক আছে। ব্যস আমার মাথায় ও চলে আসলো বৃষ্টিরযদি কাউকে সাথে নিতে পারে তাহলে তো আমিও মনিষাকে সাথে নিতেই পারি।
অফিসে বললাম কিছু কাজ আছে যেহেতু কালকে যেতে হবে তাই কাজ গুলো শেষ করতে হবে। ১২ টার দিকে অফিস থেকে বের হয়ে গেলাম। দ্রুত যাওয়ার জন্য আবার ও বাইকে রওনা দিলাম। বাসায় পৌছালাম ১ টার দিকে। ফ্লাটের কলিং বেল চাপার কিছু সময় পর দেখি রহিমা আপা দরজা খুললো। আমি বললাম আরে রহিমা আপা কবে আসলেন। আজকেই সকালে স্যার কইছি না ৩ দিন ছুডি নিমু। আমি জবানে একবারে পাক্কা। স্যার স্যার। হুমম বলেন আপনি কি আমারে কাম থিকা ছাড়াইয়া দিবেন। কেন ছাড়াবো কেন। বাসার সব কাজ তো দেখি ম্যাডামে কইরা রাহে। আমি আইহা দেহি কান কামই নাই আমার। আমি হাসলাম বললাম আপনি ছিলেন না তাই ও করেছে। এই যে আসলেন কাল থেকে আপনি করবেন৷ বুঝলাম রহিমা আপা খুব খুশি হলো। আমি বললাম তো আপনার ম্যাডাম কোথায় এখন। ম্যাডাম রান্না করে স্যার আমি কইলাম আমি রান্না কইরা দেই হে কইলো আজ থিকা নাকি রান্না আর আমার কাম না হেই করবো। আমি বললাম আচ্ছা ঠিক আছে সমস্যা নেই আপনি অন্য অন্য কাজ গুলো করে নিয়েন।
রান্না ঘরের দিকে পা বাড়ালাম দেখি মনিষা একবারে ওড়না কোমনে বেধে রান্নার কাজে নেমে পড়েছে। আমাকে দেখে একটু অবাকই হলো বললো রেহান এত তাড়াতাড়ি কোন সমস্যা। আমি বললাম হুমম সমস্যাই তো। মনিষা আমার দিকে তাকালো আমি বললাম আরে না তেমন সমস্য না। বিষয়টা হচ্ছে অফিস থেকে আমাকে কক্সবাজার পাঠাচ্ছে একটা কাজে ৭ দিনের জন্য। মনিষা বললো ও। আমি বললাম তুমি। মনিষা আমার দিকে তাকালো আমি বললাম না ম মানে তোমাকে এখানে একা রেখে আমার পক্ষে যাওয়া সম্ভব না। তাই বলছিলাম তুমিও চলো আমার সাথে নাকি। মনিষা চুপ করে রইলো।
মনিষা যাবে সমস্যা নেই তো কোন তাই না।মনিষা বললো ঠিক আছে যাবো। মনিষা খুব মনোযোগ দিয়ে রান্না করছে আর আমি পাশে দাড়িয়ে দেখছি চুপচাপ। মনে মনে ভাবলাম ও যদি একান্তই আমার হতো ওকে পেছন থেকে জরিয়ে ধরতাম কেমন হতো সে মুহূর্তটা। সেই মুহূর্তের কথা ভাবতে ভাবতে আমি কল্পনার রাজ্যে ডুকে গিয়েছিলাম। হুস ফিরলো মনিষার ডাকে।রেহান রেহান কি হলো আমি বললাম হুমম বলো। বললাম ফ্রেস হয়ে নাও খেতে দেই আমি বললাম হুমম যাই।
নিজের রুমে এসে ফ্রেস হয়ে বের হলাম। মনিষা টেবিলে খাবার সাজাচ্ছে। রহিমা আপা বললো স্যার তাইলে আমি গেলাম স্যার। আমি বললাম শুনুন আগামি ৭ দিন আপনার ছুটি ঢাকার বাইরে যাবো। একদম সাত দিনের দিন আসবেন। রহিমা আপা চলে গেল। আমি আর মনিষা খেতে বসলাম। বুঝলাম না মনিষা যাই রান্না করে তাই আমার কাছে অমৃতের মত লাগে। নাকি ওকে ভালো বাসি বলে ওর সবটাই আমার ভালো লাগে। মনিষাকে বললাম মনিষা বিকেলে কিন্তু একটু বের হতে হবে। কক্সবাজার যাবো কিছু কেনাকাটা করতে হবে। মনিষা বললো আচ্ছা ঠিক আছে। বিকেলে মনিষাকে নিয়ে বের হলাম। এই প্রতম মনিষাকে নিয়ে বের হলাম। মনিষার জন্য কিছু কাপড় চোপর কিনলাম ওকে ২ টা শাড়ি ও কিনে দিলাম।একটা মোবাইল আর সিম ও কিনে দিলাম।যদিও মনিষা বার বার না করছিলো কিন্তু আমি জানি মোবাইল ছাড়া এখনকার দিনে আসলে কারোই ভালো লাগে না। বিকেল থেকে রাত হয়ে গেল মার্কেট করতে করতে রাতের খাবারটা বাইরের রেস্টুরেন্টে এ করেই ফিরলাম। প্রচন্ড ক্লান্ত অনুভব করলাম। ১ বেলা মার্কেট করে আমি শেষ কিন্তু মনিষার মাঝে কোন ক্লান্ত ভাব দেখলাম না। বুঝলাম হাজার হলেও মেয়ে মানুষ শপিং করতে গিয়ে এরা ক্লান্ত হয় না। রুমে গিয়ে শুইতেই ঘুমিয়ে গেলাম। ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখছি আমি আর মনিষা কক্সবাজার বীচ এ হাটছি আর আমাদের মাঝে একটা ৩-৪ বছরেে ফুটফুটে মেয়ে দেখতে হুবুহু মনিষার মতো। আমাদের দুজনের হাত ধরে হাটছে। এল্যামের শব্দে ঘুমটা ভেঙে গেল ফালতু বাজার আর সময় পেল না এত সুন্দর স্বপ্নটা নষ্ট করে দিলো। মনে মনে বললাম আল্লাহ প্লিজ স্বপ্নটা সত্যি করে দাও।
অফিস যেতে হবে প্রচুর কাজ করতে হবে আজকে ক্লাইন্টেদের সাথের মিটিং এর যাবতীয় সব ঠিক করতে হবে। অফিসে পৌছে বৃষ্টির সাথে বসে যাবতীয় কাজ শেষ করলাম গত রাতেই ৪ টা টিকেট বুক করেছি। বৃষ্টিকে বলে দিলাম ১১ টায় বাস সময় মত যেন চলে আসে।
রাত ১০ আমি আর মনিষা সিএনজি করে বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছালাম। দেখলাম বৃষ্টি ও চলে চলে আসছে। ওর সাথে একজন ছেলে আছে বয়ফ্রেন্ড হবে হয়তো। মনিষার সাথে বৃষ্টিকে পরিচয় করিয়ে দিলাম।বাসে উঠে বসলাম আমি আর মনিষা পাশাপাশি আর ওরা দুজন পাশাপাশি।
মনিষাকে বললাম এর আগে কক্সবাজার গিয়েছিলো। মনিষা বললো এর আগে প্রায় ৩-৪ বার প্লান করেও শেসমেস যেতে পারে নি। আমি বললাম দেখলে তুমি প্লান করেও যেতে পারো নি আর আমি তোমাকে কোন রকম প্লান ছাড়াই কক্সবাজার নিয়ে যাচ্ছি। মনিষা হাসলো। আমি নানান রকম কথা বলেই চলছি হটাৎ দেখি মনিষা আমার কাধে মাথা রাখলো। ওর দিকে তাকালাম দেখলাম ঘুমিয়ে গেছে। এর মানে অনেক সময় যাবত আমি একাই কথা বলছিলাম। মনিষাকে এভাবেই সারা জীবন আমার কাধে চাই। একটু পর দেখি মনিয়া আমাকে ওর হাত দিয়ে আমার বাহু জড়িয়ে ধরেছে ওর গরম নিশ্বাস আমার কাধে পরছে এ যন আমার জন্য স্বর্গ সুখ। বাসের এসির বাতাসে ঠান্ডা লাগছে একটা কম্বল টেনে নিয়ে আমার আর মনিষার উপর নিলাম।। আমি বাসের হাল্কা আলোও কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি সে খেয়াল আমার নেই। যখন ঘুম ভাঙলো তখন দেখলাম আমরা প্রায় কক্সবাজারের কাছাকাছি আর হয়তো ৩০ মিনিট লাগবে সর্বোচ্চ। আমি মনিষাকে দেখছি রাতে যে ভাবে জড়িয়ে ঘরেছিলো ঠিক সে ভাবেই ধরে আছে। ওর নিস্পাপ মুখটা আমি দেখছি। হটাৎ বাসের ঝাঁকিতে মনিষার ঘুম ভেঙে গেল। তাড়াহুড়ো করে আমাকে ছেড়ে নিজেকে আলাদা করলো। হয়তো লজ্জা পেয়েছে। আমি পরিস্থিতি সালাল দিয়ে বললাম আহা কি নাক ডেকেই না ঘুমুচ্ছিলে। মনিষা বললো না কখনোই না আমি নাক ডাকিই না। তুমি কি করে বুঝবে যে তুমি নাক ডাক আমি শুনছি তাই বললাম। না না আমি নাক ডাকি। আমার হেসে দিলাম মনিষা বাচ্চাদের মত করছো তুমি। মনিষা লজ্জা পেয়ে মুখ ঘুরিয়ে নিলো তবুও বলতে লাগলো আমি কিন্তু নাক ডাকি না। আমি বললাম আচ্ছা বাবা ঠিক আছে তুমি নাক ডাকো না।মনিষা হেসে উঠলো। বললাম কিছুক্ষনের মধ্যে নামবো আমরা রেডি হও। কিছু সময় পর আমারা নেমে পড়লাম। হোটেলে গিয়ে চাবি নিয়ো রুমে চলে গেলাম। মনিষাকে বললাম রুম একটাই নিয়েছি তোমাকে আলাদা রুমে দিলে আমি টেনশনে ঘুমাতে পারতাম না। তুমি বিছানায় ঘুমিয়ে আমি নিচে শুয়ে নেব। অফিস থেকে রুম বুক করা সিঙ্গেল বেড এর রুম বুক করে দিয়েছে। কোন সমস্যা নেই তো মনিষা। মনিষা বললো তোমার সাথে এক ছাদের নিচে থেকেছি তোমাকে বিশ্বাস করি বলেই। নিচে শুতে হবে না বিছানাই শুইয়ো। একজন সকালের নাস্তা দিয়ে গেল। ফ্রেস হয়ে খাবার খেয়ে নিলাম। ক্লান্ত থাকায় ঘুমিয়ে পরলাম মনিষা ও আমার পাশেই শুয়েছে মাঝে আমি নিজে থেকেই একটা বালিশ দিয়েছি।ঘুম ভাঙলো বিকেল ৩ টায় আমার চোখের সামনে মনিষা ঘুমিয়ে আছে। ওকে দেখছি মনে হচ্ছে এ ভাবে ওকে দেখতে দেখতে সারা জীবন পার করে দিতে পারবো।
বিকেলে মনিষাকে নিয়ে বীচে ঘুরতে গেলাম। মনিষা বাচ্চাদের মত ঢেউয়ের সামনে দৌড়াচ্ছে। একটা ঘোড়াতে উঠিয়ে ঘুরালাম। আর সন্ধ্যায় নানা রকম সামুদ্রিক মাছ দিয়ে ভুঁড়ি ভোজ। বীচ থেকে ফিরতে ফিরতে রাত ৮ টার দিকে ফিরলাম। অফিস থেকে ফোন দিয়ে অলরেডি জানিয়েছে কাল সকাল ১০ টায় মিটিং। কিছু কাজ শেষ করে রাত ১১ টার দিকে ঘুমিয়ে পড়লাম। ঘুম ভাঙলো মনিষার ডাকে। আমি তড়িঘড়ি করে উঠলাম কি, কিন হয়েছে মনিষা। মনিষা বললো কিছু না উঠ তাড়াতাড়ি সূর্য উদয় দেখবো ও এই কথা। বললাম বারান্দায় দাড়ালেই দেখতে পারবে এর আগে আমি এই হোটেলের বারান্দায় দাড়িয়েই দেখেছি। মনিষা বললা না চলো না বীচে যাই সেখান থেকে দেখবো। কি আর করি প্রিয়তমার কথা কি আর ফেলা যায়। হাটা দিলাম বীচের দিকে এই রকম গরমের দিনেও ভোর বেলা বীচের আবহাওয়া মোটামুটি ঠান্ডা আমি আর মনিষা সূর্য উদয় দেখছি। আরও অনেক মানুষই আছে দেখলাম বৃষ্টি আর ওই ছেলেটাও আছে । কাল থেকে এদের দেখা নেই।যদিও কাল রাতেই মিটিং ১০ টায় ফোনে বলে দিয়েছি। রুমে ফিরে ফ্রেস হলাম। ৯.৩০ এ বৃষ্টি এলো। মনিষাকে বললাম একা কোথাও যেও না আমি মিটিং শেষ করে আসি।
বের হলাম অন্য এক হোটেলে মিটিং ফিক্সড করা হয়েছে। সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত মিটিং চললো। যা বুঝলাম ক্লাইন্ট আমাদের কাজে খুশি। হয়তো কালকে মিটিং হলেই কাজটা হয়ে যাবে। যদিও কথা ছিলো এক দিন পর পর ৩ দিন হবে কিন্তু ক্লাইন্ট নিজেই কালকে মিটিং করতে চাইলো। রুমে ফিরলাম। আমাকে দেখে মনিষা খুশি হলো। বললাম কি করছিলে কি আর করবো বসে বসে বোর হচ্ছিলাম। আমি বললাম আমি চলে এসেছি আর বোর হতে হবে না। বিকেলে বের হলাম আজকে কক্সবাজার শহরটা ঘুরে দেখালাম মনিষাকে। নানা রকম জিনিস কেনা হলো নানান রকম খাবার খাওয়া হলো। রাত ১০ টা আমি আর মনিষা বীচে বালুর উপর বসে চাদের আলোও সমুদ্র দেখছি। নিরাবতা ভেঙে মনিষা বললো ধন্যবাদ রেহান।
কেন।
এত সুন্দর করে আমার সমুদ্র দেখার ইচ্ছা পূরন করে।
আমি বললাম আর কি ইচ্ছে আছে তোমার।
কেন।
আমি বলেই ফেললাম আলাদীনের জ্বীনের মত তোমার সকল ইচ্ছা পূরন করে দেব।
মনিষা হাসলো।
হাসলে কেন।
আমার জীবনা বড়ই অনিশ্চিত হয়ে গেছে রেহান। তোমার আশ্রয়ে হয়তো এখনো বেচে আছি নইলে হয়তো এ কয়দিনে মরেই যেতাম।
আমি বললাম কি বলছো মনিষা।
তুমি জানো বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে আমি এক প্রকারে ঠিক ই করে নিয়েছিলাম এ জীবন আর রাখবো না। কিন্তু তুমি আমাকে বাচিয়ে দিলে।
জীবন কি এতই সহজ মনিষা যে চাইলেই শেষ করা যায়।
কি করবো বলো নিজ হাতে আমার ভাগ্য আমি বদলে ফেলেছি রেহান আজ বলতে গেলে আমার সব কিছু থেকেও নেই। মনিষা কেদে দিলো।
আমি ওকে সান্তনা দিলাম কিছু ভেবো না আমি তোমার সব সমস্যা ঠিক করে দেব। আমি তোমার বাবার সাথে কথা বলবো।
মনিষা হাসলো। তুমি আমার বাবাকে জানোনা রেহান উনি কোনদিন আমাকে নিজের মেয়ে হিসেবে মেনে নেবে না।
বুঝলাম এভাবে থাকলে মনিষার মন আরও বেশি খারাপ হবে। উঠে দাড়ালাম বললাম মনিষা চলো চাদের আলোও সমুদ্রের ধার ধরে একটু হেটে বেড়াই।
বেশ কিছু সময় আমরা হাটলাম। কোন কথা ছাড়াই।
তারপর ফিরে এলাম রুমে ঘুমিয়ে পরলাম।
পরদিন মোটমুটি মিটিং এ সব কম্পিলিট হয়ে গেল ৭ দিনের কাজ ৩ দিনে কম্পিলিট। ক্লাইন্ট খুশি তো বস খুশি বললো ৭ দিন কাটিয়ে আসো সমস্যা নেই।
বৃষ্টিকে বললাম তোমরা তাহলে থাকো আমরা একটু ৩ দিন অন্য জায়গায় কাটাই। রুমে ফিরলাম।
মনিষাকে বললাম সমুদ্র কেমর দেখলে।
ভালোই কিন্তু আমি জানতাম সমুদ্রের পানি নীল হয় কিন্তু এখানে তো ঘোলা পানি।বললাম সকালে রেডি থেকো তোমাকে নীল জলরাশি দেখাবো
সকাল ৯ টার জাহাজে রওনা দিলাম সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশ্যে। জাহাজ চলা শুরু করলো আর দেখা গেল এক অপূর্ব দৃশ্য। জাহাজের সাথে পাখিরাও উড়তে শুরু করলো। মনিষা খুব মজা পেল।এই পাখিগুলোর দিকে বিস্কিট চিপস ছুড়ে দিলে পাখিগুলো উড়ে সে গুলো খায়। দেখা মিললো নীল জলরাশি।
সমুদ্রের নীল দেখতে পেলে মনিষা।
হুমম।
মন ভালো হয়েছে।
খুব।
এ ভাবেই হাসতে থেকো মনিষা কান্না করলে তোমাকে একদমই ভালো লাগে না।
এক গভীর মায়া ভরা চোখে মনিষা আমার দিকে তাকালো।
কিন্তু আমি সেই চোখের ভাষা পড়তে পারলাম না।