Thread Rating:
  • 18 Vote(s) - 3.44 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
WRITER'S SPECIAL আমার প্রথম প্রেম
#4
2....
মনিষা.....
হটাৎ করেই প্রচন্ড জোরে বাজ পড়ার শব্দ হলো আমার গাড়ি সহ আমি আমি নিজেও কেপে উঠলাম। যে কারো কলিজা শুকিয়ে যাবে এমন বাজ পরার শব্দ শুনলে।  তাকিয়ে দেখলাম মনিষা একটুকু ও নড়লো না।  একভাবে নিচের দিকে চেয়ে আছে। ও যে কাঁদছে সেটা আমি ঠিকই বুঝতে পারলাম। কিন্তু কেন কিভাবে আমি যতটুকু খোঁজ নিয়েছিলাম তাতে জানতে পেরিছলাম। গতকাল ওর বিয়ে হবার কথা। প্রচন্ড বৃষ্টি হচ্ছে আশে পাশে কাছাকাছি কোন মানুষ জন নেই। আমি গাড়ি থেকে নেমে পরলাম। আমার বুকটা দুরুদুরু করে কাপছে আমার যেন এখন বিশ্বাস হচ্ছে না এটা মনিষা। গাড়ি থেকে নামে ২ পা হাটতেই পুরো শরীর ভিজে গেল। মনিষা তো একদম ভিজে কাদা। সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম ডাক দিলাম মনিষা।  যেন শুনতেই পেল না জোরে করে ডাক দিলাম মনিষা। সাথে সাথে পূর্বের থেকেও জোরে একটা বাজ পরার শব্দ।  মনিষা আমার দিকে তাকালো কিছু বলতে চাইলো বলার আগেই মাটিতে পরে গেল জ্ঞান হারিয়ে। 
আমি দ্রুত ওকে ধরতে গিয়েও ধরতে পারি নি ধপাস করে মাটিতে পরে গেল।প্রচন্ড বৃষ্টি আর বাজ পরার শব্দ।  কি করবো না ভেবেই ওকে পাজা কোলা করে তুলে গাড়ির দিকে নিয়ে গেলাম।  গাড়ির পেছনের দরজা খুলে খুব কষ্টে বসিয়ে দিলাম। 
গাড়িতে উঠে গাড়ি স্টাট দিয়ে বাসার দিকে যেতে লাগলাম। প্রচন্ড বৃষ্টিতেও রাস্তার যানজট একটুও কমে নি।
মনিষা নিয়ে আমি আমার বাসার সামনে আসতেই দাড়োয়ান দরজা খুলে দিলো।  গাড়ি নিয়ে দ্রুত ডুকে পরলাম এখন কি করবো।  মনিষাকে এভাবে নিয়ে যেতে যদি কেউ দেখে ফেলে। লিফটের কাছে পার্কিং এর জায়গাটা ফাকা।  সেখানে আসলে বাড়ির মালিকের গাড়ি থাকে।  সাত পাচ না ভেবে দ্রুত গাড়িটা সেখানে পার্কিং করলাম।
মনিষাকে কয়েক বার ডাক দিলাম না কোর সাড়া নেই। দাড়োয়ান ও দরজার পাশে নিজে৷ রুমে চলে গেছে আশে পাশে কেউ নেই। দ্রুত মনিষাকে গাড়ি থেকে বের করলাম লিফটের বোতাম চাপতেই দরজা খুলে গেল।  মনে মনে ভাবলাম আল্লাহ  কেউ যেন না দেখে এমন অবস্থায়। ৭ নম্বার বোতাম চাপ দিতেই লিফট চলা শুরু করলো। যেন মনে হচ্ছিলো আজকে লিফট এত ধীরে কেন উঠছে৷ লিফটের দরজা খুলতেই আশপাশ দেখে নিলাম না কেউ নেই। দ্রুত বের হয়ে নিজের ফ্লাটের দরজার সামনে এসে দরজা চাবি দিয়ে খুলে ডুকে পরতেই যেন হাফ ছেড়ে বাচলাম। দ্রুত মনিষাকে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দিলাম।
মনিষার দিকে তাকালাম কি নিষ্পাপ একটা মুখ। ৩ বছর পর আজ তাকে আবার দেখলাম। জীবনের প্রথম তাকে ছুয়ে দেখলাম।  মনে কোন খারাপ ইচ্ছা নয় বরং হৃদয় থেকে বের হয়ে আসা ভালোবাসার চোখে। জীবনে তো অনেক মেয়েকেই দেখেছি কিন্তু এই মেয়েটাকে আমার মনে হয় সে এই পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরী মেয়ে।
মন চাচ্ছে ওর কপালে একটা চুমু দেই। একটু ছুয়ে দেখি। সামনে এগিয়ে ওর হাতটা ধরি। এগিয়ে গেলাম হাতটা ধরলাম একি এত গরম।কপালে হাত দিয়ে বুঝলাম ওর শরীর জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে।  কি করি এখন ওর শরীরে ভেজা কাপড়। আমি ওকে কয়েকবার ডাকলাম না কোন সারাশব্দ নেই।  কি করি। এ কাপড় কি ভাবে পাল্টাবো এখন।ভেজা কাপড়ে যে জ্বর আরও বেড়ে যাবে কি করি এখন।
হটাৎ কলিং বেল এর শব্দ। হাটাৎ করে শুনে যেন কলিজাটা কেপে উঠলো। কে এলো এই সময় আমার বাসায়তো তেমন কেউ আসে না।  নাকি মনিষাকে নিয়ে আসতে অন্য ফ্লাটের কেউ দেখলো।  দরজার দিকে এগিয়ে গেলাম।  সাহস করে দরজাটা খুললাম। 
আরে এ তো রহিমা আপা আমার বাসায় কাজ করে।  কলিজায় পানি এলো। আমি বললাম আরে রহিমা আপা এই সময় আপনি এত বৃষ্টির মধ্যে।
রহিমা: স্যার ছুডি নিবার আইলাম।
আমি বললাম ছুটি হটাৎ 
আমার বোনের খুব অসুখ হেরে দেহার লাগি দেশের বাড়ি যামু।
আমি বললাম ও আচ্ছা কয়দিনের ছুটি লাগবে।
স্যার ৩ দিন স্যার ১ দিনে যাইতে একদিন আইতে আর ১ দিন দেশে থাকমু স্যার।  তয় একটা কথা কই।
আমি বললাম বল 
যদি সামনের মাসের বেতন ডা আগাম দিতেন খুব ভালা হইতো স্যার। 
আমি বললাম আচ্ছা দাড়াও আনছি। 
হটাৎ আমার মনে হলো হু এই তো সুযোগ রহিমা আপাতে দিয়ে মনিষার কাপড়টা চেন্জ করিয়ে নেই।
বললাম রহিমা আপা ভেতরে আসেন তো একটা কাজ করে দেন। 
কি কাজ স্যার। 
আমি বললাম আসেন আমার সাথে রুমে গিয়েই মনিষাকে দেখে ভুত দেখার মত চমকে উঠলো রহিমা আপা। কিছু বলতে চেয়েও যেন বললো না।
আমি বললাম ওর খুব জ্বর।  বৃষ্টিতে ভিজেছে তো। আপনি ওর কাপড়টা চেন্জ করে দিন তো।
রহিমা আপা বললো আচ্ছা হের কাপড় দেন বদলাই দিতাছি।
এই রে এবার মনিষার কাপড় আমি কই পাবো।  এখন কি করি ওর সাথে তো কোন ব্যাগ ছিলোই না। 
আমি বললাম দাড়ান আনতেছি নিজের রুমে গিয়ে আমার একটা ট্রাউজার আর একটা টিশার্ট এনে দিলাম এগুলো পড়ায় দেন।  রহিমা আপা আশ্চর্য নজরে আমার দিকে তাকালো কিন্তু কিছু বললো না।
আমি রুমের দরজা চাপিয়ে বের হয়ে আসলাম। প্রায় ১০ মিনিট পর রহিমা আপা রের হয় এলো মনইষার ভেজা কাপড় হাতে। আমি বললাম দাড়ান টাকা আনছি।  
টাকা নিয়ে ফেরত এসে দেখি  ড্রাইনিং এর ওয়াসরুমে কাপড় ধোয়ার শব্দ বুঝলাম রহিমা আপা কাপড় গুলো ধুয়ে দিচ্ছে।
মনিষার কাছে গেলাম বাহ রহিমা আপা বের সুন্দর করে চুল আর শরীর মুছে কাপড় পরিয়ে আবার উপর দিয়ে কাঁথা ও দিয়ে দিয়েছে।  আবার বুদ্ধি কররে ভেজা জায়গা থেকে পাশে সরিয়ে শুইয়ে দিয়েছে।
রহিমা আপা বাইরে থেকে ডাক দিলেন।  বের হলাম বললো ম্যাডামের কাপড় বারান্দায় নাইড়া দিসি স্যার।  আমি বললাম খুব ভালো করছো। বলে টাকাটা এগিয়ে দিলাম। 
হাত বাড়িয়ে টাকা টা নিলো।  আমি বললাম গুনে দেখেন।
উনি গোনা শুরু করলো বললো স্যার ২ হাজার টেক্যা বেশি আছে।  
বললাম রাখেন আপনার বোন অসুস্থ তার চিকিৎসা করাইয়েন। রহিমা আপা বললো ঠিক আছে স্যার তাইলে আমি গেলাম স্যার। 
বললাম ঠিক আছে। টাকাটা বেশি দিলাম যাতে কথাটা গোপন রাখে আবার কাকে বলে বসবে।সেও বুঝতে পেরেছে কেন বেশি টাকা দিলাম।
মনিষার কাছে ফিরে এলাম। কপালে হাত দিয়ে দেখি প্রচন্ড জ্বর কি করি এ তো বেহুস ওষুধ ও খাওযাতে পারবো না।
একটা কাপড় আমি কিছু পানি এনে মাথায় জল পট্টি দেয়া শুরু করলাম প্রায় ৪০ মিনিট পর মনে হলো জ্বরটা একটু কমে এসেছে।
হটাৎ আমার মনে হলো আচ্ছা আমার জানা মতে গত কাল ও বিয়ে ছিলো।  তাহলে ও ঢাকায় কি করে তাও একা এই অবস্থা কেন। কিভাবে জানা যায় এখন ও তো বেহুস।
মনিষার পাশে বসেই ফেসবুকে ডুকলাম।  হটাৎ অনুরাধার ছবি সামনে এলো।  আরে এতো মনিষার বেস্টফেন্ড এর কাছে কিছু জানা যাইতে পরে৷ কপাল জোরে মেসেন্জারে একটিভ ও পেলাম।  
আসলে অনুরাধা মনিষা আমি একই কলেজে পড়েছি। অনুরাধা ফেসবুকে ফেন্ড থাকলোও কখন কথা হয় নি।  তাই মেসেজ দিতে একটু ইতস্তত বোধ হচ্ছিলো তাও দিয়েই দিলাম। 
কিরে কি খবর।
অনু: এইতো ভালো তোর কি খবর। 
আছি রে ভালই। তো মনিষার বিয়েতে কেমন মজা করলি।
অনু: আর মজা। 
কেন রে কি হইছে।
অনু: বিয়েটা হলো কই।
কেন কি হইছে। 
অনু: বিয়ের দিন বিকেল থেকে মনিষা গায়েব।
মানে।
অনু: মানে গায়েব কই গেছে কে জানে।
তোর না বেস্ট ফেন্ড তুই জানিস না।
অনু: না রে। বিয়ের আগেও তো ওরে খুব হাসি খুশি লাগলো কিন্তু কেন যে পালাইলো তাই তো বুঝলাম না।

তো তোরা খোজা খুজি করলি না।
অনু: খুজছি তো এখন কই গেছে কে জানে। ওর বাবা কতটা ছোট হলো সবার সামনে বল৷ বিয়ে করবি না আগেই বলতি। রাগে ওর বাবা বলছে ওকে যেন কেউ না খোজে এমন মেয়ে তার দরকার নেই।
আমি বলালাম বলিস কি। 
অনু: হু কি আর করার বল ও জানে ও কই গেছে।  আচ্ছা রে আবার পরে কথা হবে।
আমি বললাম ওকে বায়।
মনিষার কপালে হাত দিয়ে বুঝলাম জ্বরটা এখন আর নেই।
আমি নিজেও ক্লান্ত থাকায় নিজের রুশে এসে একটু শুয়েছি কখন যে ঘুমিয়ে গেছি সে খেয়াল আর নেই।
ঘুম ভাঙলো ভোর ৫.৫০ মিনিটে।
একপ্রকার দৌড়ে মনিষার রুমে গেলাম। 
দেখলাম মনিষা......
[+] 6 users Like rehan301's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: আমার প্রথম প্রেম - by rehan301 - 24-02-2023, 04:38 AM



Users browsing this thread: 3 Guest(s)