22-02-2023, 03:21 PM
৪০. এডভেঞ্চার - বাবান
বাবা একটা গল্প বলোনা?
- কি গল্প শুনবি? ভূত নাকি গোয়েন্দা নাকি...
এডভেঞ্চার!! বাবা একটা এডভেঞ্চার এর গপ্পো বলো
- এডভেঞ্চার? আচ্ছা? বেশ তবে তাই শোন। আমারই একটা অতীতের ঘটনা বলি। সে অনেক দিন আগের কথা বুঝলি। আমি একটা বেড়াল মারতে বন্দুক হাতে একাই রাতের আঁধারে বেরিয়ে পড়েছিলাম।
হেহেহেহে বাবা? বেড়াল মারতে বন্দুক?
- ওরে গাধা এ বেড়াল সে বেড়াল নয় যাকে তুই রোজ বিস্কুট দিস। এ নামে বেড়াল কিন্তু আসলে ভয়ানক জিনিস! প্রচন্ড হিংস্র এক প্রাণী। এর থেকে কোনো মানুষই সহজে বাঁচতে পারেনা। যে একবার এর সামনে চলে আসে ব্যাস! পুরো চুষে চেটে কামড়ে খেয়ে খেয়ে নেয় তার সব রস... ইয়ে রক্ত।
বাবা! তাই নাকি! আর তুমি একাই ওটাকে মারতে বিন্দুক হাতে বেরিয়ে পড়লে? তারপর তারপর?
- আমি তো রাতের আঁধারে বেরিয়ে অনেক পথ অতিক্রম করে শেষে পৌছালাম তার গুহার সামনে। সে বিশাল গুহা। কিন্তু আমি গুহার মুখ দিয়ে ঢুকিনি। যদি ওই বেড়ালের পরিবার আমার খবর পেয়ে যায় তাহলেই শেষ করে দেবে। আমার দরকার ছিল সবচেয়ে হিংস্র বেড়ালটাকে কব্জা করা। আমি কোনোরকমে উঁচুতে উঠে একটা ফাঁক ফোকর পেয়ে ঢুকে গেলাম ভেতরে। দেখি বেড়াল কুমারী নিজের মতো করে ঘুমিয়ে আছে। আমিও বুঝলাম এই সুযোগ। আস্তে আস্তে করে এগিয়ে গেলাম বন্দুকটা হাতে নিয়ে।
তোমার ভয় করলোনা বাবা?
- ভয়? তা একটু করছিলো বৈকি? ওই বেড়াল কুমারীর পরিবার যদি জেগে যায় আর জানতে পারে তাদের গুহায় আমি এসেছি তাহলেই রান্না করে খেয়ে ফেলবে। কিন্তু ভয় পেলে চলবেনা। সাহস করে এগিয়ে যেতে হবেই। এই ভেবেই তো বেরিয়েছিলাম বাড়ি থেকে। আমি বন্দুক হাতে গিয়ে দাঁড়ালাম সেই হিংস্র ঘুমন্ত বন্য প্রাণীর পাশে। বন্দুকটা ভয় কেঁপে উঠলো কয়েকবার নাকি আমার হাত? যে জানে? কোনোরকমে সাহস এনে ওটাকে তাক করলাম প্রাণীটার একটা নির্দিষ্ট স্থানে। আমি কম বয়সেই জেনে গেছিলাম কোথায় মারলে কাজ হবে। আমার দাদু আমায় শিখিয়েছিল সেই বেড়াল মারার পদ্ধতি। ওনার নাম নিয়ে হাত জোর করে কোনোরকমে সাহস করে দিলাম চালিয়ে বন্দুক। পচ! করে একটা আওয়াজ ছড়িয়ে পড়লো সারা ঘরে।
ওমা! এ আবার কেমন আওয়াজ? বিন্দুক দিয়ে তো গুড়ুম করে আওয়াজ বেরোয় বাবা?
- ওরে গাধা এ কি আর সেসব ওসব কমজোর বন্দুক নাকি? ওসব বন্দুকে ও প্রাণীকে কব্জা করা যেতোনা। তার জন্য প্রয়োজন বিশেষ এক ধরণের বন্দুক। ওটা উত্তরাধিকার সূত্রে আমি পেয়েছিলাম। সেটা দিয়েই চালিয়ে দিলাম। ব্যাস পচ পচ পচাৎ আওয়াজে ভোরে উঠলো ঘর। অমনি ব্যাথায় ককিয়ে উঠতে গেলো প্রাণীটা। কিন্তু সে আওয়াজ করে ফেললেই তো বাকিগুলো জেগে যেতে পারে। তাই আমি তখনি ওটার মুখ চেপে ধরলাম।
তোমার দারুন সাহস তো বাবা!
তবে? হুহুবাওয়া আমি ছিলাম দাদুর পরে এলাকার সেরা বন্দুকবাজ। ওটার মুখ চেপে ধরে আরও কয়েকটা গুলি চালিয়ে দিলাম পচাৎ পচাৎ করে। এই বন্দুক যেহেতু বিশেষ রকমের তাই এর আওয়াজ বাইরে একটুও যায়না। প্রাণীটা প্রথমে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করলেও পরে দেখলাম নেতিয়ে পড়লো। বুঝলাম আর ভয় নেই। ব্যাস বন্দুকে যত গুলি ছিল সব উগ্রে দিলাম প্রাণীটার ভেতর। গলগল করে সাদা রক্তে মাখামাখি হয়ে গেলো গুহার মেঝে। তোর জিজ্ঞেস করার আগেই বলেদি বিশেষ প্রাণী তো তাই অমন রক্ত। ব্যাস আমার কাজ শেষ। বেড়াল মারার পরে আমিও আর বেশিক্ষন ওখানে দাঁড়ায়নি। বন্দুক আবার লুকিয়ে ফেলে যে জায়গা দিয়ে এসেছিলাম সেখান দিয়েই বেরিয়ে পালাই। তবে যাবার আগে শেষবারের মতো পেছন ফিরে একবার প্রাণীটার দিকে তাকিয়ে দেখেছিলাম।
বাবা! ইউ আর গ্রেট! মা মা শুনে যাও বাবা কত সাহসী ছিল। আমিও আমার বাবার মতোই সাহসী হবো।
বান্টি দৌড়ে বেরিয়ে যেতেই তার বাবার ঠোঁটে একটা হাল্কা হাসি ফুটে উঠলো। তার সত্যিই মনে পরে গেলো সেদিনের সেই শেষ মুহূর্তে ফিরে তাকানো। তিনি দেখেছিলেন সেই হিংস্র প্রাণীটা তার দিকেই তাকিয়ে ছিল। ঠোঁটে ছিল একটা সন্তুষ্টির হাসি। যে গুলি দিয়ে শিকারী তাকে বিদ্ধ করেছে তা সে নিজের মধ্যে ক্ষত হিসেবে নয় উপহার হিসেবে গ্রহণ করেছিল সেদিন। সেই উপহার নিজেই একটু আগে ছুটে বেরিয়ে গেলো সেই বাঘিনীর কাছে শিকারির গল্পটা বলতে।
- বাবান
বাবা একটা গল্প বলোনা?
- কি গল্প শুনবি? ভূত নাকি গোয়েন্দা নাকি...
এডভেঞ্চার!! বাবা একটা এডভেঞ্চার এর গপ্পো বলো
- এডভেঞ্চার? আচ্ছা? বেশ তবে তাই শোন। আমারই একটা অতীতের ঘটনা বলি। সে অনেক দিন আগের কথা বুঝলি। আমি একটা বেড়াল মারতে বন্দুক হাতে একাই রাতের আঁধারে বেরিয়ে পড়েছিলাম।
হেহেহেহে বাবা? বেড়াল মারতে বন্দুক?
- ওরে গাধা এ বেড়াল সে বেড়াল নয় যাকে তুই রোজ বিস্কুট দিস। এ নামে বেড়াল কিন্তু আসলে ভয়ানক জিনিস! প্রচন্ড হিংস্র এক প্রাণী। এর থেকে কোনো মানুষই সহজে বাঁচতে পারেনা। যে একবার এর সামনে চলে আসে ব্যাস! পুরো চুষে চেটে কামড়ে খেয়ে খেয়ে নেয় তার সব রস... ইয়ে রক্ত।
বাবা! তাই নাকি! আর তুমি একাই ওটাকে মারতে বিন্দুক হাতে বেরিয়ে পড়লে? তারপর তারপর?
- আমি তো রাতের আঁধারে বেরিয়ে অনেক পথ অতিক্রম করে শেষে পৌছালাম তার গুহার সামনে। সে বিশাল গুহা। কিন্তু আমি গুহার মুখ দিয়ে ঢুকিনি। যদি ওই বেড়ালের পরিবার আমার খবর পেয়ে যায় তাহলেই শেষ করে দেবে। আমার দরকার ছিল সবচেয়ে হিংস্র বেড়ালটাকে কব্জা করা। আমি কোনোরকমে উঁচুতে উঠে একটা ফাঁক ফোকর পেয়ে ঢুকে গেলাম ভেতরে। দেখি বেড়াল কুমারী নিজের মতো করে ঘুমিয়ে আছে। আমিও বুঝলাম এই সুযোগ। আস্তে আস্তে করে এগিয়ে গেলাম বন্দুকটা হাতে নিয়ে।
তোমার ভয় করলোনা বাবা?
- ভয়? তা একটু করছিলো বৈকি? ওই বেড়াল কুমারীর পরিবার যদি জেগে যায় আর জানতে পারে তাদের গুহায় আমি এসেছি তাহলেই রান্না করে খেয়ে ফেলবে। কিন্তু ভয় পেলে চলবেনা। সাহস করে এগিয়ে যেতে হবেই। এই ভেবেই তো বেরিয়েছিলাম বাড়ি থেকে। আমি বন্দুক হাতে গিয়ে দাঁড়ালাম সেই হিংস্র ঘুমন্ত বন্য প্রাণীর পাশে। বন্দুকটা ভয় কেঁপে উঠলো কয়েকবার নাকি আমার হাত? যে জানে? কোনোরকমে সাহস এনে ওটাকে তাক করলাম প্রাণীটার একটা নির্দিষ্ট স্থানে। আমি কম বয়সেই জেনে গেছিলাম কোথায় মারলে কাজ হবে। আমার দাদু আমায় শিখিয়েছিল সেই বেড়াল মারার পদ্ধতি। ওনার নাম নিয়ে হাত জোর করে কোনোরকমে সাহস করে দিলাম চালিয়ে বন্দুক। পচ! করে একটা আওয়াজ ছড়িয়ে পড়লো সারা ঘরে।
ওমা! এ আবার কেমন আওয়াজ? বিন্দুক দিয়ে তো গুড়ুম করে আওয়াজ বেরোয় বাবা?
- ওরে গাধা এ কি আর সেসব ওসব কমজোর বন্দুক নাকি? ওসব বন্দুকে ও প্রাণীকে কব্জা করা যেতোনা। তার জন্য প্রয়োজন বিশেষ এক ধরণের বন্দুক। ওটা উত্তরাধিকার সূত্রে আমি পেয়েছিলাম। সেটা দিয়েই চালিয়ে দিলাম। ব্যাস পচ পচ পচাৎ আওয়াজে ভোরে উঠলো ঘর। অমনি ব্যাথায় ককিয়ে উঠতে গেলো প্রাণীটা। কিন্তু সে আওয়াজ করে ফেললেই তো বাকিগুলো জেগে যেতে পারে। তাই আমি তখনি ওটার মুখ চেপে ধরলাম।
তোমার দারুন সাহস তো বাবা!
তবে? হুহুবাওয়া আমি ছিলাম দাদুর পরে এলাকার সেরা বন্দুকবাজ। ওটার মুখ চেপে ধরে আরও কয়েকটা গুলি চালিয়ে দিলাম পচাৎ পচাৎ করে। এই বন্দুক যেহেতু বিশেষ রকমের তাই এর আওয়াজ বাইরে একটুও যায়না। প্রাণীটা প্রথমে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করলেও পরে দেখলাম নেতিয়ে পড়লো। বুঝলাম আর ভয় নেই। ব্যাস বন্দুকে যত গুলি ছিল সব উগ্রে দিলাম প্রাণীটার ভেতর। গলগল করে সাদা রক্তে মাখামাখি হয়ে গেলো গুহার মেঝে। তোর জিজ্ঞেস করার আগেই বলেদি বিশেষ প্রাণী তো তাই অমন রক্ত। ব্যাস আমার কাজ শেষ। বেড়াল মারার পরে আমিও আর বেশিক্ষন ওখানে দাঁড়ায়নি। বন্দুক আবার লুকিয়ে ফেলে যে জায়গা দিয়ে এসেছিলাম সেখান দিয়েই বেরিয়ে পালাই। তবে যাবার আগে শেষবারের মতো পেছন ফিরে একবার প্রাণীটার দিকে তাকিয়ে দেখেছিলাম।
বাবা! ইউ আর গ্রেট! মা মা শুনে যাও বাবা কত সাহসী ছিল। আমিও আমার বাবার মতোই সাহসী হবো।
বান্টি দৌড়ে বেরিয়ে যেতেই তার বাবার ঠোঁটে একটা হাল্কা হাসি ফুটে উঠলো। তার সত্যিই মনে পরে গেলো সেদিনের সেই শেষ মুহূর্তে ফিরে তাকানো। তিনি দেখেছিলেন সেই হিংস্র প্রাণীটা তার দিকেই তাকিয়ে ছিল। ঠোঁটে ছিল একটা সন্তুষ্টির হাসি। যে গুলি দিয়ে শিকারী তাকে বিদ্ধ করেছে তা সে নিজের মধ্যে ক্ষত হিসেবে নয় উপহার হিসেবে গ্রহণ করেছিল সেদিন। সেই উপহার নিজেই একটু আগে ছুটে বেরিয়ে গেলো সেই বাঘিনীর কাছে শিকারির গল্পটা বলতে।
- বাবান