07-02-2023, 06:03 PM
পিসি জানলায় মুখ রেখে একবার কাছে ডাকলো আমায় । আমার চোখ টা না চাইতেও জলে ভরে যাচ্ছে । মন বলছে হ্যা ভালো বাসি তো এই বিধবাটিকে । এই তো আমার পিসি । দেখতে কেমন যেন আমার বাবার মুখের আদলে । কি চমৎকার মনের শৃঙ্খল । পিসি জালনা থেকে বাড়িয়ে দিলো সেই নীল রঙের বটুয়া যেখানে পিসের ১ টাকা দিয়ে কেনা কানের সোনার দুলটা রেখেছিলো ।
" এটা আর লাগবে না , এটা তুই নে । "
নিলে নিলাম হাত থেকে । ট্রেন এগিয়ে যাচ্ছে স্টেশন ছেড়ে । কাছে গিয়ে একবার বললাম " তুই জিজ্ঞাসা করেছিলি না ভালো বাসি কিনা ! এখন ভালোবাসি !"
চোখে জল দেখে পিসি খুব উচ্ছল হাসি হাসলো । প্রণাম করলো জপের মালা নিয়ে । আমিও প্রণাম করলাম । দুগ্গা দুগ্গা বলতে হয় কিনা জানি না । কারণ পদি পিসি নতুন আলোর দিকে হেটে যাবে ।
ফিরে আসলাম অনমনস্ক হয়ে গাড়িতে । হাতের নীল থলি টায় হাত দিলাম । নাঃ কানের দুল তো নেই । বরং গোটা দশেক লাল পাথর , খুবই চকচকে , যেন খুব দামি । পাথরের জ্ঞান নেই । নাঃ নাঃ লাল পাথর , " পারসের দিকে নিয়ে চলো গাড়ি আলাদা করে পয়সা দেব । একটু কাজ আছে ।"
পারস এর দোকানের সামনে গাড়ি পার্ক করিয়ে গেলাম দোকানে । কলকাতার সব চেয়ে বড়ো দামি রত্ন পাথরের দোকান ।
" আচ্ছা দাদা , একটা লাল পাথর তুলে দিলাম এক জহুরির দিকে, এটার কি দাম দেবেন বিক্রি করবো? " ভাবটা এমন করলাম পাথর আমি চিনি ।
আমাকে বসিয়ে রেখে চলে গেলো জহুরি পাথর নিয়ে কালো অন্ধকার ঘরে । বসে আছি প্রায় দু ঘন্টা । খুব অধিরাজ লাগছে আজ নিজেকে । সন্দেহের চোখে সবাই দেখছে আমায় । পুলিশ ডাকবে নাকি? । একজন মালিক , গলায় পুরু সোনার চেন খদ্দরের পাঞ্জাবি , লালাই হবে দোকানের ।
" আরেকজন চা সিঙ্গারা মিষ্টি আর কল ড্রিক্স দে রে । "
সেই ভদ্রলোক এসে বসলেন আমার পাশে ।
আমি শুধু চা নিলাম ।
" ১০০ টাকার বেশি দাম না নকল কাঁচ ।"
মন টা দোমে গেলো । " আচ্ছা ফিরত দিন ।" বলে চাইলাম পাথর টা ।
" আরে বসেন মশাই বসেন , জানেন কি জিনিস আছে এটা ?"
আমি সত্যি জানি না ওটা কি । আমি এ ও বলি নি আরো ১০ টা ওরকম পাথর আছে পদি পিসির দেয়া ।
আমি: লক্ষ টাকার জিনিস বলছেন ১০০ টাকা ।
ভদ্রলোক হেসে বললেন " এ সব তো এখন পাওয়া যায় না আশ্চর্য হচ্ছি মোগোক বার্মার এমন ১৮০০ সালের আগের মাইনের চুনী আপনি পেলেন কি করে ? এটা ৪ ক্যারেটের পাথর পিজন ব্লাড রেড , অন্তত ৬০০০০০০ টাকা দাম আছে । সব টাকা কিন্তু আমি এখনই দেব না , আগে টেস্টিং করবো আমেরিকাল জেমোলজিকাল ইনস্টিটিউট থেকে ! এখন চেক দিচ্ছি ৩০ লাখের বাকি ৩০ লক্ষ আপনি রিপোর্ট আসলে পাবেন । "
আমি ভীষম খেলাম ।
বোকার মতো বসে রইলাম । পদি পিসি কে কি ভাববো জানি না । বাবাকে কি বলবো জানি না । মিনিট দুয়েক পরেই একাউন্ট্যান্ট চেক নিয়ে দিলো হাতে । " দাদা আপনার এড্ড্রেস দিন , বাড়িতে টাকা পৌঁছে দেব !"
দিলাম এড্রেস । এ যেন নিজের নিঃশ্বাসের কাছেও নিজে ঋনী ।
" দাদা একটা রিকোয়েস্ট আছে , আরো এরকম মাল থাকলে বলবেন প্লিস ! আমি যা দাম দিচ্ছি কেউ কিন্তু দেবে না বিশ্বাস করেন ?"
কিছু বললাম না ভদ্রলোক কে । ভিসিটিং কার্ড দিলো আর সেন্টিরিয়ান ব্যাংকের ৩০ লক্ষ টাকার চেক ।
বাড়ির রাস্তা টা হেটে যেতে ইচ্ছে করছে সন্ধ্যের আবেশ নিয়ে । ছুটে চলেছে পদি পিসির ট্রেন । ওসব ট্রেন ধন্যবাদের জন্য দাঁড়ায় না ।
হয় তো মা, তুলসী তলায় প্রদীপ জ্বালিয়ে পদি পিসির গুষ্টির তুলোধোনা করছে বর্মী বাক্স ঘেটে ।
সমাপ্ত
" এটা আর লাগবে না , এটা তুই নে । "
নিলে নিলাম হাত থেকে । ট্রেন এগিয়ে যাচ্ছে স্টেশন ছেড়ে । কাছে গিয়ে একবার বললাম " তুই জিজ্ঞাসা করেছিলি না ভালো বাসি কিনা ! এখন ভালোবাসি !"
চোখে জল দেখে পিসি খুব উচ্ছল হাসি হাসলো । প্রণাম করলো জপের মালা নিয়ে । আমিও প্রণাম করলাম । দুগ্গা দুগ্গা বলতে হয় কিনা জানি না । কারণ পদি পিসি নতুন আলোর দিকে হেটে যাবে ।
ফিরে আসলাম অনমনস্ক হয়ে গাড়িতে । হাতের নীল থলি টায় হাত দিলাম । নাঃ কানের দুল তো নেই । বরং গোটা দশেক লাল পাথর , খুবই চকচকে , যেন খুব দামি । পাথরের জ্ঞান নেই । নাঃ নাঃ লাল পাথর , " পারসের দিকে নিয়ে চলো গাড়ি আলাদা করে পয়সা দেব । একটু কাজ আছে ।"
পারস এর দোকানের সামনে গাড়ি পার্ক করিয়ে গেলাম দোকানে । কলকাতার সব চেয়ে বড়ো দামি রত্ন পাথরের দোকান ।
" আচ্ছা দাদা , একটা লাল পাথর তুলে দিলাম এক জহুরির দিকে, এটার কি দাম দেবেন বিক্রি করবো? " ভাবটা এমন করলাম পাথর আমি চিনি ।
আমাকে বসিয়ে রেখে চলে গেলো জহুরি পাথর নিয়ে কালো অন্ধকার ঘরে । বসে আছি প্রায় দু ঘন্টা । খুব অধিরাজ লাগছে আজ নিজেকে । সন্দেহের চোখে সবাই দেখছে আমায় । পুলিশ ডাকবে নাকি? । একজন মালিক , গলায় পুরু সোনার চেন খদ্দরের পাঞ্জাবি , লালাই হবে দোকানের ।
" আরেকজন চা সিঙ্গারা মিষ্টি আর কল ড্রিক্স দে রে । "
সেই ভদ্রলোক এসে বসলেন আমার পাশে ।
আমি শুধু চা নিলাম ।
" ১০০ টাকার বেশি দাম না নকল কাঁচ ।"
মন টা দোমে গেলো । " আচ্ছা ফিরত দিন ।" বলে চাইলাম পাথর টা ।
" আরে বসেন মশাই বসেন , জানেন কি জিনিস আছে এটা ?"
আমি সত্যি জানি না ওটা কি । আমি এ ও বলি নি আরো ১০ টা ওরকম পাথর আছে পদি পিসির দেয়া ।
আমি: লক্ষ টাকার জিনিস বলছেন ১০০ টাকা ।
ভদ্রলোক হেসে বললেন " এ সব তো এখন পাওয়া যায় না আশ্চর্য হচ্ছি মোগোক বার্মার এমন ১৮০০ সালের আগের মাইনের চুনী আপনি পেলেন কি করে ? এটা ৪ ক্যারেটের পাথর পিজন ব্লাড রেড , অন্তত ৬০০০০০০ টাকা দাম আছে । সব টাকা কিন্তু আমি এখনই দেব না , আগে টেস্টিং করবো আমেরিকাল জেমোলজিকাল ইনস্টিটিউট থেকে ! এখন চেক দিচ্ছি ৩০ লাখের বাকি ৩০ লক্ষ আপনি রিপোর্ট আসলে পাবেন । "
আমি ভীষম খেলাম ।
বোকার মতো বসে রইলাম । পদি পিসি কে কি ভাববো জানি না । বাবাকে কি বলবো জানি না । মিনিট দুয়েক পরেই একাউন্ট্যান্ট চেক নিয়ে দিলো হাতে । " দাদা আপনার এড্ড্রেস দিন , বাড়িতে টাকা পৌঁছে দেব !"
দিলাম এড্রেস । এ যেন নিজের নিঃশ্বাসের কাছেও নিজে ঋনী ।
" দাদা একটা রিকোয়েস্ট আছে , আরো এরকম মাল থাকলে বলবেন প্লিস ! আমি যা দাম দিচ্ছি কেউ কিন্তু দেবে না বিশ্বাস করেন ?"
কিছু বললাম না ভদ্রলোক কে । ভিসিটিং কার্ড দিলো আর সেন্টিরিয়ান ব্যাংকের ৩০ লক্ষ টাকার চেক ।
বাড়ির রাস্তা টা হেটে যেতে ইচ্ছে করছে সন্ধ্যের আবেশ নিয়ে । ছুটে চলেছে পদি পিসির ট্রেন । ওসব ট্রেন ধন্যবাদের জন্য দাঁড়ায় না ।
হয় তো মা, তুলসী তলায় প্রদীপ জ্বালিয়ে পদি পিসির গুষ্টির তুলোধোনা করছে বর্মী বাক্স ঘেটে ।
সমাপ্ত