02-02-2023, 04:53 PM
(This post was last modified: 03-12-2024, 12:39 PM by Anuradha Sinha Roy. Edited 2 times in total. Edited 2 times in total.)
পর্ব ২৪
টি সেন্টারের সেই কঙ্কালসার এস্কেপ লিফ্ট এসে থামল নিজের গন্তব্যে। সেখানে অন্ধকার এতটাই ঘন ছিল যে সব কিছুই যেন ফাঁকা বলে মনে হতে লাগলো ওদের | অচেনা জায়গা তার উপর অন্ধকার তারও ওপর তাদের পিছু নেওয়া সেই লোকগুলোর কথা মনে করে সামনের দিকে পা বারাবর সাহস পেলনা ওরা। কে বা কারা তাদের জন্য সেখানে অপেক্ষা করে রয়েছে সেটা না জানতে পেরে টর্চটা ভয়ে জ্বালতে পারল না রুদ্র | কিছুক্ষণ সেই ভাবে সেই অন্ধকার কুটুরে দাঁড়িয়ে থাকবার পর দীপা ফিসফিস করে বলে উঠলঃ
"রু.....এইবার টর্চটা জ্বালতে পারিস..."
সেই শুনে রুদ্র বলল, "নাহ.....দাড়াও, আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করি। অন্তত ৭৫% শিওর হতে দাও আমাকে.."
আর সেই মত আরও দশ মিনিট অপেক্ষা করাবার পর অবশেষে খুবই চকিতে টর্চটা এক মুহূর্তের জন্য জ্বেলে আবার বন্ধ করে দিল রুদ্র| তারপর আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে আবার টর্চটা জ্বেলে এবার সামনের দিকে মেলে ধরল। তবে টর্চ জ্বলতেই তারা দেখতে পেলো যে তারা একটা টানেল বা সুড়ঙ্গের মধ্যে রয়েছে। রুদ্র নিজের হাতের টর্চটা নিচের দিকে নামিয়ে এনে তার আলোটা এবার মাটিতে ফেলতেই কিছু দূরে পাতা রেল লাইনগুলি দেখতে পেল। এক সময় এখান দিয়ে ট্রেনে চেপে কত মানুষে যাতায়াত করছে কিন্তু এখন, এখন সেটা পুরোটাই পরিত্যক্ত|
তবে নিজের সামনে আর কোন পথ না দেখতে পেয়ে এইবার সেই টানেল অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নিল অরা।আস্তে আস্ত খুবই সন্তর্পণে এগিয়ে যেতে লাগলো ওরা তিনজন তবে টর্চ বন্ধ করে | মাঝে মধ্যে সামনের পথটা দেখার জন্য এক মুহূর্তের জন্য টর্চটা ফ্ল্যাশ করে আবার এগিয়ে যেতে লাগলো ওরা| খালি পায়ে হাঁটার অভ্যাস থাকাতে তাদের কোন অসুবিধা হল না, কিন্তু এই অন্ধকারের মধ্যে কোথায় কিসের ওপর পা পড়ছিল তাদের অজানা ছিল | সেইরকম হাটতে হাটতে অবশেষে তারা একটা চৌমাথাতে পৌঁছল। রুদ্র টর্চ জ্বালিয়ে প্রতিটা রাস্তার দিকে একবার একবার করে আলো ফেলতে লাগল |
"কোন দিকে?" ফিসফিস করে বলে উঠল দীপা।
"জানি না! জানলে এখানে এইভাবে দাঁড়িয়ে থাকতাম", বলে টর্চে জ্বালিয়ে আবার রাস্তা গুলোর দিকে মেলে ধরল রুদ্র।
"ওই....ওইটা কি....." বলে দীপা আঙ্গুল তুলে একদিকে ইশারা করল।
রুদ্র সেই দিকে তাকিয়ে বলল, "জা...জানি না....তবে দেখে দরজার মতন মনে হচ্ছে..."
"চল...ওই দরজার কাছটায় চল, দেখি একবার," বলে সেই দিকে পা বারাল দীপা।
দূর থেকে সেই বস্তুটিকে দরজা বলে মনে হলেও সামনে গিয়ে সেটার কোন অস্তিত্ব দেখতে পেলো না ওরা | আরেকটু সামনে যেতেই একটা ছোট্ট ঘর দেখতে পেলো ওরা। নোংরা এবং সম্পূর্ণ খালি, এককালে এটার ঢোকার মুখে দরজা থাকলেও এখন দরজার ফ্রামটাই অবশিষ্ট | কোন রকমে ভেতরে ঢুকে একটা কোনে গিয়ে টর্চটা জ্বালিয়ে মেঝেতে রেখে দিলো রুদ্র| একটু আগে ঘটে যাওয়া সেই ভয়ানক মুহূর্তের পর এই ভাঙাচোরা ঘরটা তাদের কাছে খুবই নিরাপদ বলে মনে হল |
"এইটা হয়তো একসময় সিগনালিং রুম ছিল। ওই ইলেকট্রিক প্যানেলটা দ্যাখ...", বলে দেওয়ালের ওপর ভাঙা মরচে ধরা একটা প্যানেলের দিকে ইশারা করল দীপা।
"হমমম, বাট তিস্তা...ঠিক আছে তো?" রুদ্র হঠাৎ প্রশ্ন করল।
রুদ্রর সেই প্রশ্ন শুনে নিজের ঘাড় ঘুরিয়ে তিস্তার ক্ষতর জায়গাটা ভালো করে একবার চেক করে নিয়ে ওর পাল্স মেপে দীপা বলল, "হ্যাঁ....আপাতত রক্ত বেরোনো বন্ধ করতে পারলেও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওর ভেতরে আটকে থাকা গুলিটা বের করতে হবে আমাদের..."
"ঠিক আছে", বলে টর্চটা মেঝে থেকে তুলে নিয়ে ঘরের এইদিক ওইদিক দেখতে লাগল রুদ্র, 'যদি কিছু কাজে লাগানর মতন পাওয়া যায়'| সেই ভাবে আলো ফেলতে ফেলতে টর্চের আলোটা হঠাৎ দীপার উপর পড়তেই তার অবস্থা দেখতে পেলো রুদ্র, তবে ভালো লাগার থেকে সম্ভবত খারাপই লাগলো ওর। দীপা উলঙ্গ তো ছিলই তাছাড়া তার শরীর জুড়ে লেগেছিল লাল রক্ত। কিছু কিছু জায়গায় রক্ত শুকিয়ে গিয়ে বাদামি রঙের মতন হয়ে গেছিলো আবার কিছু জায়গায় তখনও টকটকে লাল| আলোটা আরেকটু নিচে নামাতেই রুদ্র দেখল যে পাণ্ডে-জির ত্যাগ কিছুটা বীর্য দীপার যোনির মুখ দিয়ে বেরিয়ে তার উরু বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে।
দীপার সেই করুন অবস্থা দেখে ক্ষবে দুঃখে ফেটে পড়ল রুদ্র আর সেই সাথে নিজের পরনের কুর্তা শার্টটা খুলে দীপার হাতে ধরিয়ে দিল, তবে পরনের প্যান্টটা খুলতে যেতেই দীপা ওকে বাধা দিলো।
"না...না," দীপা তাকে থামিয়ে বলে উঠলো। "তোর প্যান্ট আমার হবে না রু, ওটা অনেক লম্বা আর এমনিতেও আমার পাছা দিয়ে ওটা ঢুকবে না, তবে তোর এই কুর্তা যথেষ্ট কাজ করে দেবে আমার, তুই বরং একটু তিস্তাকে ধর সোনা..." বলে তিস্তাকে রুদ্রর কাছে দিয়ে কুর্তাটা নিজের মাথা দিয়ে গলিয়ে পরে নিলো দীপা | তবে কুর্তা পড়লেও সেটা দিয়ে বেশি কিছু ঢাকা দেওয়া গেল না। আর তার পুরো নিতম্বটাই বাইরে বেরিয়ে রয়েছে দেখে রুদ্র বললঃ
"যাহ! পেছনটা তো বেরিয়ে রইলো...."
"ওতে কিছু হবে না...আর এখানে আমাকে দেখার মতো কেউ নেই রু...?", বলে স্মলান হেসে রুদ্রর দিকে তাকাল দীপা, "তবে......এইবার কি করবো আমরা ?"
"দাঁড়াও, আমাকে একটু চিন্তা করতে দাও...", বলে গভীর ভাবে কিছু একটা নিয়ে চিনতে করতে লাগলো রুদ্র।
কিছুক্ষণ সেই নিস্তব্ধতায় কেটে যাওয়ার পর হঠাৎ দীপা বললঃ
"কোনও ধরণের ম্যাপ ছাড়া এই টানেল-গুলর মধ্য দিয়ে পথ খুঁজে পাওয়া ইস ইম্পসিবল..."
"কি...কি বললে তুমি? ম্যাপ?? দাঁড়াও....আমার মন বলছে একটু আগেই এই ব্যাগে একটা ম্যাপ দেখেছি আমি আর তাছাড়া পাণ্ডে-জিরা যদি এত পরিকল্পনা করেই থাকেন তবে ম্যাপের ব্যাপারটা উনি বা তিস্তা মিস করবেন না... ধরো, টর্চটা মেলে ধরো একটু..." বলে টর্চটা দীপার হাতে দিয়ে আস্তে আস্তে ব্যাগের চেন খুলে এইদিক ওইদিক খুঁজতে লাগলো রুদ্র আর কিছুক্ষণের মধ্যে সত্যিই একটা ম্যাপ বেরিয়ে পড়লো ওদের সামনে!
"তিস্তা ইস সো ব্রিলিয়ান্ট, তাই না...?"
"একদম...তবে এবার ম্যাপটা দেখা একবার....." দীপা বলে উঠলো
"এইতো....এই দ্যাখো" বলে দীপার সামনে ম্যাপটা মেলে ধরল।
তবে সেই ম্যাপটাকে ম্যাপ বলা ভুল হবে, কারন সেটা আসলে একটা ব্লুপ্রিন্ট। কোন কিছু বানাবার বা নির্মাণ করার আগে এইরকম ব্লুপ্রিন্ট করে নেওয়া হয় আর এই এইতাও হয় সেটারই মতন।
রুদ্র সেই ব্লুপ্রিন্টের দিকে কিছুক্ষণ এক দৃষ্টে তাকিয়ে বলল, "এতক্ষণ ধরে আমরা এই...এইখান দিয়ে এসেছি আর এই হল এই সিগনালিং রুমটা। আর ওটা সামনের জংশনটা মানে চৌরাস্তাটা আররররর......এইতো....এই বাঁ দিকের রাস্তাটা ধরে এগোলেই আমাদের কাজ হয়ে যাবে..."
"তাহলে চল..রাস্তা যখন পেয়েই গেছি তখন আর দেরি করা ঠিক হবে না", বলে আবার সেই পরিত্যক্ত ঘর থেকে বেরিয়ে সেই চৌরাস্তাতে ফিরে এলো ওরা। তারপর সেখান থেকে বাঁদিকের রাস্তা ধরে আস্তে আস্তে সেই দিকে এগিয়ে যেতে লাগলো|
"টর্চটা এবার বন্ধ করে দে....এখানে আর লাইন নেই...কাজেই হাটতে আর তেমন অসুবিধে হবে না...." দীপা ফিসফিস করে বলে উঠল। দীপার কথা শুনে রুদ্র টর্চটা বন্ধ করে দিয়ে দীপার হাতটা নিজের হাতে নিয়ে আস্তে আস্তে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে লাগল।
ম্যাপের ডেটা অনুসরণ করতে করতে সেই পরিত্যক্ত টানেলের মধ্যে দিয়ে ওরা খালি পায়ে হেটে চলল | মূর্ছিত অবস্থাতে থাকার কারণে তিস্তা নিজের শরীরে সমস্ত ভার দীপার ওপর ছেড়ে দিয়েছিলো, তবে তার শরীরের ভার তেমন কিছু না হওয়ায় দীপার কোন অসুবিধে হচ্ছিল না|
প্রায় ঘণ্টা দুই ওই ভাবে হাঁটার পর, তাদের নাকে একটা ভেজা স্যাঁতস্যাঁতে গন্ধ ভেসে আসতে লাগলো কিন্তু সেই গন্ধটা যে কিসের সেটা কিছুতেই বুঝতে পারলো না ওরা | তবে আশ্চর্য ভাবে কিছুদূর চলার পর সেই গন্ধটা আপনা হতেই আস্তে আস্তে কমে যেতে লাগলো | সেই সুবাদে রুদ্র একবার টর্চটা জ্বালিয়ে চারিদিকে দিকে আলো ফেলতেই দেখতে পেলো যে ওপরের দেওয়ালে ছোট ছোট গাছে ভরতি আর তাই বেয়ে গড়িয়ে জল পড়ছে |
"এটার মানে বুঝতে পারছ...?" ভেজা দেওয়ালের দিকে ইশারা করে রুদ্র প্রশ্ন করে উঠলো।
"হমম আর ওই স্যাঁতস্যাঁতে গন্ধটার রহস্যটাও আমার কাছে এতক্ষণে পরিস্কার। আমরা এতক্ষণ ধরে নদী পেরছিলাম..তাই তো ?", দীপা বলে উঠল।
"হ্যাঁ... অ্যান্ড সো আই থিংক, আমাদের আর বেশি দূর যেতে হবে না..."
তারা যে ঠিক রাস্তা অবলম্বন করেছে তার একটা আশ্বাস পেয়ে এবার দ্বিগুণ গতিতে ওরা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে লাগল কিন্তু গণ্ডগোলটা হল ঠিক সেই মুহূর্তেই। আরও কিছুটা এগিনর সাথে সাথে রাস্তা শেষ হয়ে গেল| একটা ডেড-এন্ড। তবে ডেড-এন্ড মনে হলেও ওরা জানতো সেটার নিশ্চয়ই অন্য কোনও মানে আছে...হয়ত আবার কোন গুপ্তপথ...
"এবার কোন দিকে রু...রাস্তা যে শেষ হয়ে গেল?"
"দাঁড়াও", বলে ম্যাপটার ওপর আলো ফেলে দেখতে লাগলো রুদ্র| রুদ্র দেখল যে তারা যেখানে দাঁড়িয়ে আছে ম্যাপে সেই জায়গাটায় একটা কাঁটা চিহ্ন আঁকা রয়েছে। সেটা দেখেতেই রুদ্র এবার টর্চটা নিচে মাটির দিকে ধরল আর সেটা করতেই সামনে একটা ট্র্যাপ-ডোর দেখতে পেলো ওরা| সেই দিকে এগিয়ে গিয়ে নিজের মুখে করে টর্চটা কামড়ে ধরে দুহাতে সেই চোরা দরজাটার হাতলটায় আস্তে করে চাপ দিল। অনেকদিন ধরে না খোলার ফল বসত প্রথমবারে দরজাটা খুলল। তাই দেখে রুদ্র এবার আরও জোরে হাতলটা টানতেই দরজাটা খুলে গেল | আর দরজা খুলতেই নিচের দিকে নেমে যাওয়ার সিঁড়ি দেখতে পেলো ওরা|
দীপা সেই অতল সোপানের দিকে কিছুক্ষণ চেয়ে থেকে বললঃ
"আমাদের কাছে এছাড়া আর কোনও চয়েস নেই রুদ্র। তিস্তাকে এইভাবে নিয়ে যেতে হয়তো একটু অসুবিধে হবে কিন্তু এই পথ দিয়েই যেতে হবে আমাদের..." বলে তিস্তাকে নিয়ে সেই ট্র্যাপডরের ভেতরে ঢুকে গেল দীপা।
আর দীপাকে ভেতরে ঢুকতে দেখে রুদ্র বলল, "আরে! দাঁড়াও..টর্চটা অন্তত নিয়ে যাও...দেখতে..."
"লাগবেনা..আমার চোখ সয়ে গেছে.....", বলে সেই দিকে এগিয়ে চলল দীপা।
রুদ্রও সেই দেখাদেখি ভেতরে ঢুকে সেই ট্র্যাপ-ডোরটা বন্ধ করে দিয়ে দীপার পেছন পেছন যেতে লাগলো | এতক্ষণ রুদ্র সবার আগে ছিল। তবে এইবার পেছন থেকে টর্চ জ্বালতেই তার আলোটা হিয়ে পড়ল দীপার ওপরে।আর সেটা হতেই সেই অন্ধকার গহ্বরের মধ্যে দীপার কলসির মতন পাছাটা রুদ্রর চোখের সামনে ফুটে উঠল। প্রতিটা পা ফেলার সাথে সাথে যেন দুলে দুলে উঠছিল দীপার সেই ভরাট পাছা। তবে সেই দিকে আজ আর তেমন মনোযোগ না দিয়ে নিজেদের বাঁচার রাস্তা বের করতে মরিয়া হয়ে পড়ল রুদ্র।
সিঁড়িটা কিছুদূর একরকম সোজা হয়ে নিচে নেমে যেতে লাগলো, কিন্তু তারপরই হঠাৎ আবার ওপর দিকে উঠতে আরম্ভ করল| তিস্তাকে নিয়ে সেই সিঁড়ি বেয়ে উঠতে দীপাকে বেগ পেতে হচ্ছে দেখে রুদ্র এবার নিজেই তিস্তাকে দীপার কাছ থেকে নিয়ে এগতে লাগল।
অবশেষে অনেক বাধা টপকে একটা দরজার সামনে এসে পৌঁছল ওরা, তবে সেই দরজাতে না ছিল কোনও ছিটকিনি না ছিল কোনও লক | সেই বুঝে টর্চটা বন্ধ করে দিল রুদ্র, তারপর আস্তে করে সেই দরজা ঠেলতেই দরজাটা খুলে গেল আর সেই সাথে বাইরের ঠাণ্ডা বাতাস এসে লাগলো তাদের শরীরে | অতক্ষণ ধরে সেই গুমোট অন্ধকার অবস্থায় থাকার পর সেই জোলিও বাতাস অনুভব করে তাদের শরীর জুড়িয়ে গেল |
দরজা দিয়ে বেরিয়েই প্রথম যে জিনিসটা তাদের চোখে পড়লো সেটা হল একটা পুরনো পরিত্যক্ত বাড়ি | এপাশ ওপাশ তাকাতে ওরা বুঝতে পারলো যে সেখানে সেই বাড়িটা ছাড়া আর কোনও কিছুর চিহ্ন নেই, আর তারপরই এটা ওদের কাছে পরস্কার হয়ে গেল যে সেইটাই পাণ্ডে-জির পুরনো সেফ হাউস। ওরা এবার আস্তে আস্তে সেই বাড়ির দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়াল। রুদ্র আবার নিজের টর্চটা একবার জ্বালিয়ে বলে উঠলঃ
"একি...বাড়িটার তো কোনও লক নেই..তাহলে...?"
"এই এলাকাতে কোন কিছু লক করার প্রয়োজন হয়না রু। এই জায়গায় কে আসতে পারে বলে তোর মনে হয় বলতো..?"
"কিন্তু রাস্তা দিয়ে লোকজন এলে..."
"এই রাস্তা দিয়ে কেউ আর যাতায়াত করে না..ওই দ্যাখ", বলে দূরে ভাঙ্গা ব্রিজের দিকে ইশারা করল দীপা। রুদ্র সেই এলাকাটা ভালো ভাবে না চিনলেও, দীপা কিন্তু সেই ব্যাপারে বেশ ওয়াকিবহাল ছিল।
দীপার কাছ সেই উত্তর শুনে আর দেরি না করে দরজাটায় একটা ঠেলা দিল রুদ্র। আর সেটা করতেই একটা বিকট আওয়াজ করে দরজার পাল্লাটা একদিকে খুলে গেল| টর্চ জ্বেলে এক পা এক পা করে বাড়িটার ভেতরে প্রবেশ করতেই সেই টানেলের মতন গুমোট বাতাসের সম্মুখীন হল ওরা। বাড়িটার অবস্থা দেখে বোঝাই যাচ্ছিল যে সেখানে অনেকদিন জাবত কারুর পা পরেনি| রুদ্র দীপার কাঁধে তিস্তাকে আবার ছেড়ে দিয়ে পেছনে ঘুরে দরজাটা বন্ধ করে দিল। তারপর পাশে থাকা একটা ভাঙা টেবিল দরজার সাথে ঠেসে দিল| ওদিকে তিস্তাকে নিয়ে একটা ঘরে মধ্যে গিয়ে দেওয়ালে হেলান দিয়ে ওকে বসিয়ে দিলো দীপা| সেই সাথে তিস্তার পাল্সটা আরেকবার চেক করে উদ্বেগে নিজের মাথা নাড়িয়ে সটান রুদ্রর সামনে গিয়ে দাঁড়াল দীপা।
"না না....তুমি...তুমি কি করে করবে? তুমি তো আর ডাক্তার নও...", রুদ্র বলে উঠল।
"তবুও, আমাদের চেষ্টা করতে হবে রুদ্র, নাহলে অনেক দেরি হয়ে যাবে...প্লিজ বোঝার চেষ্টা কর .."
"মানে? তুমি বলতে চাইছ যে ওই সিনেমাতে যেমন দেখায় ওইভাবে করবে তুমি? এটা কি তোমার সুপ্ত প্রতিভা নাকি...ডাক্তারি করা...? "
"রুদ্র, ইয়ার্কি মারিস না, যেটা বুঝিস না সেটা নিয়ে তাছিল্ল করিস না| এটা একটা প্রাণের ব্যাপার, সেটা বুঝতে পারছিস না তুই ?" শক্ত গলায় বলে উঠলো দীপা।
"আমি ইয়ার্কি মারছিনা....তুমি যত দিন তিস্তাকে চেনও আমিও ততদিন তিস্তাকে চিনি আর যতটা তুমি ওকে ভালোবাসো আমিও ঠিক ততটাই ভালোবাসি, তাই....."
"জানি রুদ্র কিন্তু এখন ওসব সেন্টিমেন্টের কথা বললে চলবে না। তোকে আগে যেটা খুঁজতে বলেছি সেটা খোঁজ প্লিজ | ইটস ভেরি ইম্পরট্যান্ট রুদ্র নাহলে...."
"নাহলে? নাহলে কি বাঁড়া...?"
"এইবার কিন্তু আমার হাত চলবে রুদ্র, আর সেটা আমি একদমই চাইনা। প্লিজ রুদ্র, তিস্তার জন্য...প্লিজ..."
সেই উভয়সঙ্কটের মুহূর্তে এসে রুদ্র কি করবে কি বলবে বুঝে উঠতে পারলনা। সে কিছুক্ষণ চুপ করে সেই ব্যাপারটার পরিণতি আঁচ করতে চেষ্টা করল। 'আইদার সি লিভস অর সি ডাইস', এই কথা ভেবে অবশেষে দীপার কথা মেনে নিয়ে দীপার বলা সেই সব জিনিসগুলো খুঁজতে উদ্দত হল রুদ্র| অবশেষে একটা রাফ সার্জারি করার সব জিনিসপত্র জোগাড় করে ফেললো ওরা |
"নে এবার ওর ওই উন্ডটার ওপরে লাগানো কাপড়টা কেটে দে", দীপা বলে উঠল আর সেই সাথে রুদ্র একটা ভাঙা কচি দিয়ে কোনও মতে সেই বাঁধা কাপড়ের টুকরো দুটো কেটে আস্তে আস্তে সরিয়ে দিল। আর সেই আবরণ সরে যেতেই টর্চের আলোতে তিস্তার কাধের সেই ক্ষতটা ফুটে উঠল ওদের সামনে| ইসসস! কি নৃশংস ভাবেই না গুলিটা বিঁধেছে!
"ঠিক আছে, এবার ওকে জাগাতে হবে...দাঁড়া.....তিস্তা...এই...তিস্তা, তিস্তা ওঠো", এইভাবে ডেকে কোন সারা না পেয়ে আবার একবার সেই ভাবে ডাকল দীপা| সেই ভাবে অনেক্ষন ধরে ঝাঁকিয়েও কোনও ফল না মেলায় দীপা ওর চোখে মুখে জলের ঝাপটা দিতে বলল রুদ্রকে | রুদ্র সামনের টেবিলের ওপর রাখা নোংরা বোতল থেকে হাতে জল নিয়ে ঝাপটা দিতেই, তিস্তা নিজের চোখ খুলল| শরীর থেকে প্রচুর পরিমানে রক্ত বেরিয়ে যাওয়ার ফলে সে খুবই দুর্বল হয়ে পরেছিল, এতোটাই দুর্বল যে নিজের চোখের পাতা অব্দই খুলে রাখতে পারছিল না সে |
"তিস্তা?...অ্যাই তিস্তা...আমাদের কে চিনতে পারছ তো..এই তিস্তা...", তবে সেই প্রশ্নের কোনও উত্তর না দিয়ে কোনও রকমে ওদের মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো তিস্তা |
"ও...কথা বলছে না কেন?" রুদ্র বলে উঠল।
"এই তিস্তা....তুমি ওকে চেনও না? ওর নাম জানো না তুমি?", রুদ্রর দিকে ইশারা করে প্রশ্ন করলো দীপা।
তিস্তা কিছুক্ষণ রুদ্রর দিকে তাকিয়ে থেকে হঠাৎ একটা অস্ফুট স্বরে বলে উঠল "রু..."
"হ্যাঁ....আর..আর আমাকে ? আমার নাম কি?"
"দীপ...পা" আবার হালকা অস্ফুট স্বর ভেসে এলো তিস্তার কণ্ঠ দিয়ে।
"এইতো সোনা..কিচ্ছু হয়নি তোমার কিন্তু তিস্তা..." বলে তিস্তার মাথায় হাত রাখল দীপা "উই নিড টু অপারেট অন ইউ, তোমার কাঁধ থেকে ওই গুলিটা বার করতে হবে"
তবে দীপার সেই কথা শুনে ভয় বয়কি বরঞ্চ নিজের মাথা নাড়িয়ে সেই প্রস্তাবে সায় জানাল তিস্তা। সে কোনওকথা না বলে নিজের মাথাটা নাড়িয়ে হঠাৎ রুদ্রর দিকে তাকিয়ে ওকে কাছে আসতে বলল | রুদ্র কাছে আসতেই তিস্তা নিজের হাত দিয়ে রুদ্রর হাতটাকে শক্ত করে চেপে ধরল |
"আমি এখানেই আছি তিস্তা....আমি তোমাকে ছেড়ে কোথাও যাচ্ছি না..." বলে তিস্তার সামনে বসলো রুদ্র
ঘর থেকে খুঁজে পাওয়া লাইটারটা জ্বালিয়ে তার ওপর একটা ছুড়ি ধরল দীপা, ওটাকে স্টেরাইল করার জন্য| রুদ্র এক হাতে টর্চটাকে আর আরেক হাতে তিস্তার হাতটাকে শক্ত করে চেপে ধরে রইল | ছুড়িটা স্টেরাইল করা হয়ে গেলে দীপা তার ওপর একটা ভাঙা সাঁড়াশি গরম করতে লাগলো | তারপর একটা কাপড়ের টুকরোকে অল্প অ্যালকোহলে ভিজিয়ে ওর ক্ষতর জায়গাটা পরিষ্কার করে দিলো |
"তিস্তা, আই হোপ ইউ আর রেডি...খুব লাগবে সোনা, কিন্তু যতই লাগুক প্লিজ চেঁচাস না | চেঁচালে সব কিছু বিগড়ে যেতে পারে", এই বলে তিস্তার গালে হাত বোলাল দীপা | "রেডি?"
"হুম",এতক্ষণে এই প্রথম শক্ত ভাবে বলে উঠলো তিস্তা তবে তার কথা শেষ হতে না হতেই সেই ক্ষতর জায়গাতে অপারেট করতে আরম্ভ করল দীপা | যতই দীপা গভীরে যেতে লাগলো ততই তিস্তা রুদ্রর হাতটা চেপে ধরতে লাগলো | ব্যথায় যন্ত্রণায় তিস্তার চোখ বেয়ে জল বেরোতে থাকলেও একটা টু শব্দ বের হল না ওর মুখ দিয়ে।
"না হচ্ছে না, আরও একটু কাটতে হবে", বলে ছুড়িটা দিয়ে ওই ক্ষতর মুখটা আরও কিছুটা কেটে দিলো দীপা আর সাথে সাথে সেই নতুন ক্ষত দিয়ে টকটকে লাল রক্তর ধারা মেঝের ওপর গড়িয়ে পড়ল ।
"এ তুমি করছ বলতো! মেরে দেবে নাকি ওকে" রুদ্র রাগে চেঁচিয়ে উঠলেও, ওর কথায় কোনও সারা দিলো না দীপা | ক্ষতর মুখটা এবার হাঁ করিয়ে সাঁড়াশিটাকে আবার গরম করে সেই ক্ষতর মধ্যে ঢুকিয়ে দিলো দীপা | ওদিকে ব্যথায় যন্ত্রণায় চেঁচাতে না পেরে রুদ্রর হাত ধরে ছটফট করতে লাগলো তিস্তা আর তার সেই করুন অবস্থা দেখে রুদ্রর নিজের চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে এলো | অনেক্ষন ধরে সেই ভাবে অস্ত্রপ্রচার করবার পর অবশেষে তিস্তার ক্ষত থেকে গুলিটা বার করতে সক্ষম হল দীপা তবে তিস্তা তখন অজ্ঞান অবস্থাতে বসে | দীপা আবার ওই জায়গাটা ভাল করে মুছিয়ে দিয়ে বললঃ
"এইবার..এইবার এই জায়গাটাকে কটারাইস করতে হবে..."
"মানে....?"
"মানে ওর ক্ষতটার মুখটা বন্ধ করতে হবে যাতে না ইনফেকশন হয়"
"কি..কি করে করবে তুমি...ওটা? এখানে তো সুচ সুতো কিছুই নেই ", উদ্বিগ্ন কণ্ঠে দীপাকে প্রশ্ন করল রুদ্র যদিও সে জানত যে দীপার কাছ থেকে সেই প্রশ্নের ভালো উত্তর কিছুই পাবেনা....
"পুড়িয়ে"
"মানে??"
"পুড়িয়ে...বার্ন...", ঠাণ্ডা ভাবে বলে উঠল দীপা।
"না না একদম না, আর না....আর ওকে কত কষ্ট দেবে তুমি.."
সেই শুনে দীপা চেঁচিয়ে উঠে বলল, "আমারও ওকে এই অবস্থাত্ এই ভাবে কষ্ট দিতে একদম ভাল লাগছে না, কিন্তু কটারাইস না করলে ওই জায়গা থেকে ইনফেকশন হয়ে ওর প্রাণসংশয়ও হতে পারে, আর সেটা নিশ্চয়ই তুই চাস না? "
"না...চাইনা..কিন্তু আমি..."
"আর এ ছাড়া আর কোন পথ জানা আছে তোর?"
"না...", হতাশ কণ্ঠে বলে উঠল রুদ্র।
"ব্যাস তাহলে চুপ...একদম চুপ", বলে রুদ্রকে থামিয়ে দিলো দীপা | তারপর হাতের ছুরিটা এলকোহল দিয়ে ধুয়ে আবার লাইটারের ওপরে ধরল গরম করার জন্য, তবে এবারে আরও একটু বেশিক্ষণের জন্য | সেই সাথে তিস্তার মুখে একটা কাঠের টুকরো ঢুকিয়ে ওটাকে দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরতে বলল। ছুড়িটা গরম হতে হতে একদম আগুনের মতন লাল হয়ে জ্বলে উঠতেই দীপা বললঃ
"এইবার আগের থেকেও বেশি কষ্ট হবে তিস্তা, কিন্তু আমার কিচ্ছু করার নেই সোনা...", বলে গরম ছুড়িটা ক্ষতর কাটা জায়গার ওপর চেপে ধরল দীপা | ছুরিটা সেখানে লাগতেই "ফোঁসসস" করে একটা বিশ্রী আওয়াজ করে উঠলো আর সেই যন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে সেই কাঠের টুকরোর মধ্যে দিয়েই তিস্তা চেঁচিয়ে উঠল | তবে দীপা একদম প্রস্তুত ছিল সেই ব্যাপারে, তিস্তা চেঁচিয়ে উঠতেই সাথে সাথে নিজের হাত দিয়ে ওর মুখটা চেপে ধরল | সেই দারুণ যন্ত্রণায় আবার আগের মতন অচৈতন্য হয়ে রুদ্রর কাঁধে এলিয়ে পড়লো তিস্তা। আর সেই সাথে আবার সব কিছু আগের মতন নিস্তব্ধ হয়ে গেল |
ভয় আর উত্তেজনায় তিন জন্যেই একদম ঘেমে স্নান করে গেছিলো আর তার ওপর সেই বাড়িতেও কোনও ইলেক্ট্রিসিটির লাইন ছিল না | দীপা তিস্তার ক্ষতটাকে ভালো ভাবে পরীক্ষা করে যখন সন্তুষ্ট হল তখন ঘড়িতে বাজে রাত ১টা | রুদ্র তখনও তিস্তার হাতটা চেপে ধরেছিল, তারপর কিছুক্ষণ বাদে নিজের মাথাটা তিস্তার মাথার উপর এলিয়ে দিয়ে চোখ বুজে বসলো |
দীপা এবার আস্তে আস্তে মেঝের ওপর থেকে উঠে টর্চটা নিয়ে বাথরুমের দিকে গেল | বাড়ির প্রতিটা কোন নোংরা জঞ্জালে ভর্তি থাকায় খুব সাবধানে এগতে হচ্ছিলো তাকে| একটু এগতেই হঠাৎ নাকে একটা ভোঁটকা পচা গন্ধ আসতেই নিজের নাকটা হাতে করে চাপা দিল দীপা | সেই গন্ধ অনুসরণ করে বাথরুমে ঢুকে নিজের কুর্তাটা খুলে কমোডের ওপর বসতে যেতেই সেই গন্ধের উৎস খুঁজে পেলো দীপা | কমোডের কালো জলের মধ্যে একটা ইঁদুর মোড়ে পোঁচে ভাসছিল তবে সেটা তার কাছে নতুন নয় | বস্তি বাড়িতে থাকা কালীন ওকে আর রুদ্রকে এরকম অনেক কিছুই দেখতে হয়েছিল যা দেখলে সাধারণ মানুষের অন্নপ্রাশনের ভাত উঠে আসতো | নিজের ঘেন্নাটেন্নার সব জলাঞ্জলি আগেই দিয়ে দিয়েছিলো দীপা তাই আর দেরি না করে কমোডের মধ্যে থেকে ইঁদুরটার লেজটা ধরে ওপরে তুলে বাইরে জানালা দিয়ে ফেলে দিলো | তারপর নিজের হাতটা সেই কুর্তাতে মুছে কমোডে বসে পেছাব করতে আরম্ভ করল | কমোডের সামনের থাকা কলের পেঁচটা আস্তে করে ঘোরাতেই প্রথমে একটা সাঁইসাঁই আওয়াজ হল তারপর ভগ ভগ করে কালো রঙের জল বেরোতে লাগলো | কিছুক্ষণ সেই ভাবে জলটা ছেড়ে দেওয়ার পর পরিষ্কার জল বেরতে লাগল। দীপা সেই কলের নিচে বসে নিজের শরীর থেকে রক্তের সমস্ত চিহ্ন ধুয়ে মুছে ফেলল তারপর উঠে কুর্তাতে নিজের গা হাত মুছে বাথরুম থেকে বেরিয়ে এলো|
সামনের ছোট জানালা দিয়ে বাইরের দিকে তাকাতেই দূরে...অনেক দূরে কয়েকটা উঁচু উঁচু বিল্ডিঙে আলো জ্বলতে দেখল দীপা | সেইরকমই একটা বহুতলে আজকে তাদের সঙ্গে এমন কিছু ঘোটে ছিল যেটা সে হয়তো কোনোদিনই ভুলতে পারবে না | হাল্কা হাল্কা ঠাণ্ডা বাতাস সেই জানালার দিয়ে দীপার নগ্ন শরীরকে স্পর্শ করতে লাগল আর সেই বাতাসে দীপার শরীর ভেসে যেতে লাগলো | সারাদিনে এতক্ষণে ওর মনটা একটু শান্ত হল | পা টিপে টিপে রুদ্রদের ঘরের সামনে যেতেই বুঝল যে বাকি দুজন নিদ্রায় মগ্ন হয়ে গেছে |
সেই বুঝে আস্তে আস্তে সেই ঘরের মধ্যে ঢুকে রুদ্র পাশে দেওয়ালে হেলান দিয়ে বসলো দীপা | তারপর ঘাড় ঘুরিয়ে রুদ্র আর তিস্তার দিকে তাকাল। ওদের দুজনকে শান্তিতে ঘুমোতে দেখে দীপার মনটা একটা ভীষণ তৃপ্তিতে ভোরে গেল |
"অনেক কষ্ট দিয়ে ফেললাম আমি আজ তোকে", বলে তিস্তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো দীপা | তারপর বসে থাকতে থাকতে নিজের অজান্তে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লো সেটা নিজেই বুঝতে পারলো না দীপা |