01-02-2023, 12:53 PM
#মিলন_হবে_কত_দিনে
#সরজিৎ_ঘোষ
আমার এক বন্ধু মিলন একবার এক সুন্দরী বৌদির প্রেমে পড়েছিল।আমরা যে মেসে থাকতাম তার উল্টোদিকের বাড়িটাতেই ওই বৌদি থাকত।যখন তখন দেখতাম বারান্দায় দাঁড়িয়ে মিলন কী যেন দেখে।তারপর বুঝেছিলাম ওই বাড়ির বৌদিকে দেখার জন্যই মিলন বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকে।আমরা সেই নিয়ে মিলনের সাথে মজা করতাম।আমরা মিলনকে বলতাম,
--বৌদির সাথে তো কথা বলার সুযোগ হলো না কোনোদিন।কারণ তোর সে সাহস নেই।
---ও কোনো ব্যাপার নয়।আমি ইচ্ছে করলেই আলাপ করে নেব একদিন।
তবে হ্যাঁ মিলন যে কোনো কারো সাথেই সহজে ভাব জমিয়ে নিতে পারতো।মিলন সত্যিই একদিন বৌদির সাথে আলাপ করে নিল। তারপর থেকে মিলন সুযোগ পেলেই বৌদির সাথে গল্প করত।বৌদি ব্যালকনিতে এলেই মিলন দৌড়তো। বৌদি ছাদে গেলেই মিলন ছাদে চলে যেত।এই ভাবে বেশ কয়েক দিনের মধ্যেই মিলন বৌদির সাথে ভালোই ভাব জমিয়ে ফেললো।আমরা এই ব্যাপারটা বেশ উপভোগ করতাম।
কিছুদিন পর একদিন সকালে দেখলাম লাগেজ পত্র নিয়ে দাদা গাড়ি করে বেরিয়ে গেল।যাবার সময় বৌদিকে বলতে শুনলাম,
--সাবধানে যেও।আর পৌঁছে ফোনটা করতে মনে থাকে যেন।
--হ্যাঁ গো।তুমি সাবধানে থাকবে।এক সপ্তাহর তো ব্যাপার।
আমরা বুঝে গেলাম দাদা কিছু দিন থাকছে না।মিলনকে এবার পায় কে।দাদা নেই মানে এখন সব দায়িত্ব যেন মিলনের।দাদা চলে যাবার পর বৌদি ব্যালকনিতে আসতেই মিলন জিজ্ঞেস করলো,
--দাদা কোথাও গেল নাকি?
--আর বলো না।অফিসের জরুরী কাজে বম্বেতে যেতে হলো সাত দিনের জন্য।
---কোনো অসুবিধে হলে বলো।
---হ্যাঁ নিশ্চয়ই।তা তোমার কলেজ নেই আজ?
--না না এই সপ্তাহটা আমিও কলেজ যাব না।মেসেই থাকব।দরকার পড়লে আমাকে বলো কিন্তু।আমি মেসেই থাকব।
দাদা সাতদিন থাকবে না।আর মিলনও দেখলাম বলে দিল সাত দিন কলেজ নেই ওর।আমাদের এক বন্ধু মিলনকে বলল,
---মিলন এমন দিন আর পাবি না।দাদা এখন থাকবে না সাতদিন।
তারপর থেকে মিলন যখনই সময় পাচ্ছে বৌদির সাথে কথা বলছে। মিলনের ভীষণ ইচ্ছে বৌদি যদি কোনো একটা কাজ দেয় সেই সুযোগে বৌদির বাড়ির মধ্যে যাওয়া যাবে।কিন্তু বৌদি কিছুই বলছে না।মিলন তবুও বলছে,
--বৌদি কোনো অসুবিধা হচ্ছে না তো।আমাকে বলতে পারো।
--না না। ঠিক আছে। অসুবিধে হলে বলব।।
আমরা মজা করে বলতাম,
--তোকে আর এ জীবনে ডাকল না।তিনদিন হয়ে গেল।গল্প করে করেই সময় কেটে যাবে তোর।
যাইহোক পরের দিন সকালে দেখি বৌদি ব্যালকনি থেকে মিলনের নাম ধরে ডাকছে। মিলন তখন বাথরুমে। আমি বলি,
---তুই বাথরুমে ঢুকে বসে আছিস। এদিকে বৌদি তোকে ডেকে যাচ্ছে।
আমার কথা শুনে পরি মরি করে বাথরুম থেকে দৌড়ে বেরিয়ে বারমুডাটা পরে বারান্দায় গিয়ে বলে,
--বৌদি ডাকছো?
--শোনো না তুমি ফ্রি আছো।
--হ্যাঁ আমি তো অলটাইম ফ্রি।
বৌদি একটু আসতে করে বলে,
---আজ আসতে পারবে একবার?
মিলন এপাশ ওপাশ দেখে নিয়ে বলে,
--যখন ডাকবে তখনই চলে যাব।কখন যেতে হবে বলো?
আমরা তো আড়াল থেকে দেখছি বৌদি কী যেন একটা ভেবে নিয়ে বলে,
---শোনো তাহলে রাতে ওই আটটার দিকে চলে এসো।তোমার অসুবিধা নেই তো?
--না না আমার আবার কী অসুবিধা?ও হ্যাঁ!বৌদি তুমি কী খেতে ভালোবাসো?যতই হোক তোমার বাড়িতে প্রথম যাচ্ছি।
--আরে ধুরর্। ওসব কিছু আনতে হবে না।তুমি আসলেই হবে।
কথা গুলো বলে বৌদি ভিতরে চলে যায়। মিলন রুমের মধ্যে দৌড়ে এসে ইয়া বলে চিৎকার করে আমাকে জড়িয়ে ধরে।গোপাল বলে,
--শোন ভাই ট্রিট চাই। সন্ধ্যে বেলা দিশি মুরগীর মাংস আর ভাত। মেসে এখন বেশি কেউ নেই। ছজন আছি।একটা দুকেজি সাইজের মুরগী আনলেই হবে।
---আরে ভাই ঠিক আছে হবে হবে।
---আরে ঠিক নেই।তুই আগে মাল ছাড়।
মিলন তিনশো টাকা বের করে গোপালের হাতে দিয়ে বলে,
---মাংস নিয়ে যে টাকাটা থাকবে মিষ্টি নিয়ে নিস কিছু।
মিলন তো সেই মেজাজে আছে।ক্লিনিক প্লাস শ্যাম্পু,ডাভ সাবান দিয়ে স্নান।সন্ধ্যের পর ফিটফাট হয়ে আমার ডেনিমের বডি স্প্রে টা ফুস ফুস করে সারা গায়ে মেখে আটটার সময় চলে গেল।এদিকে আমরা দিশি মুরগী রান্নার তোড়জোড় চালাচ্ছি।মিলন চলে যাবার পর রান্না শুরু হয়েছে। আর আমরা কয়েকজন মিলে বারান্দায় এসে দাঁড়াচ্ছি।দেখি বৌদির বাড়ির ব্যালকনির দিকে জানালা গুলো বন্ধ করা।আমরা মিলনকে নিয়ে যা ভাবার ভাবছি।কিছুক্ষণ পর বৌদির ঘর থেকে হুপ হুপ হুপ করে আওয়াজ আসছে।দেবা বলছে,
---আরে এটা তো মিলনের গলা।এদিকে মাংস রান্নার গন্ধে পুরো মেসটা ম ম করছে।
যাইহোক নটা বাজতে না বাজতেই দেখি মিলন চলে এলো।মিলনের সার্টের ওপরের দুটো বোতাম তখনও খোলা।চুল গুলো এলো মেলো।গায়ে হাত দেখি ঘেমে ভিজে গেছে।গোপাল তো বলে উঠল,
--এত তাড়াতাড়ি চলে এলি? তোর দ্বারা কিছু হবে না।যাই হোক বল কী সব হলো?
--আগে জলের বোতলটা দে পরে সব বলছি।
মিলনের থেকে সব শুনতে হবে।দেবা একবাটি মাংস নিয়ে এসে হাজির। কষা মাংস আর মিলনের গল্প। পুরো জমে যাবে।মিলন বোতলটা নিয়ে ঢক ঢক করে এক বোতল জল শেষ করে জামাটা খুলে হাতে নিয়ে বসেছে।আমি মাংসের একটা হাড় নিয়ে চিবোতে চিবোতে বলি,
--বল আর কত ওয়েট করব।
মিলন গামছা দিয়ে ঘামটা মুছে নিয়ে বলতে শুরু করলো।
আমি যেতেই বৌদি আমাকে বললো,
--বা দারুণ তো বডিস্প্রের গন্ধটা। তোমার দাদার সঙ্গে যখন প্রেম করতাম তোমার দাদাও এটাই ইউজ করত।আমার খুব প্রিয়।
--আমারও ভীষণ প্রিয়।
---আরে আস্তে কথা বলো।কোনো আওয়াজ না হয়। আর পা টিপে টিপে এসো।আমার ছেলে না বুঝতে পারে।
তারপর আমি পা টিপে টিপে গেলাম।আমাকে একটা ঘরে নিয়ে গেল।ঘরটা অন্ধকার।আমার হাতটা ধরে বললো,
---এই শোনো না তুমি ওই খাটের উপর উঠে পড়ো।আমি একটু পর আসছি।
জীবনে এই প্রথম কোনো মেয়ে আমরা হাতটা ধরে খাটে উঠতে বললো।রোমান্টিক পরিবেশ।আমিও খাটের উপর উঠে পড়লাম।খাটে উঠে বসে আছি।অন্ধকার ঘরে আমি তখন রোমাঞ্চ অনুভব করছি।
মিনিট পাঁচেক পর বৌদি এসে বলে গেল,
---তুমি তাড়াতাড়ি জামাটা খুলে ফেলো।
তখন তো ভীষণ লজ্জা করছে।তবুও আমি জামা খুলে ফেললাম।বৌদি তারপর এসে বললো,
--আমি রেডি।এবার তুমি রেডি হয়ে নাও।তোমার দাদার এই মাটি কালারের পাঞ্জাবিটা পরার পর মুখোশটা পরে নাও।আমি যখনই বলব ওই আসছে ওই আসছে তুমি তখন জোরে জোরে হুপ হুপ করবে আর এমন লাফাবে যেন খুব আওয়াজ হয়।
আমি বলি,
--মানে?
তখন বৌদি বলে,
--আরে আমার ছেলেটাকে দিনের বেলা যাইহোক করে খাওয়াতে পারি।আর দেখো না রাতের বেলা তিনদিন খাচ্ছে না।দিনের বেলা পাখি দেখাই। মাঝে মধ্যে হনুমান গুলোও আসে হুপ হুপ আওয়াজ করে।ওই সব দেখিয়ে ভয় পাইয়ে খাইয়ে দিই।কিন্তু রাতের বেলায় ওসব কোথায় পাব বল তো। তোমার দাদাও নেই। তিনদিন কিছুতেই খাওয়াতে পারি নি। বেশি দেরি করো না একটু তাড়াতাড়ি নাও।
তারপর বৌদি ছেলেকে খাওয়ালো। আমি ওই আধঘণ্টা ধরে মুখোশ আর পাঞ্জাবি পরে লাফিয়েছি আর হুপ হুপ করে আওয়াজ করে গেছি। তাতেই আমার অবস্থা।ভাই পা গুলো ভীষণ ব্যথা করছে।
সব কিছু শুনে তো আমরা থ।সেই সঙ্গে বিরাট হাসির রোল।গোপাল আর দেবা দেখি হনুমানের মতো ডাকতে শুরু করলো, হুপ হুপ।
মনটা ভেঙে যাওয়ার মতো অবস্থা মিলনের। মিলন বলে,
--খিদে পেয়েছে ভাই। একটু মাংস নিয়ে আয়।
গোপাল তখন গান ধরেছে ,"মিলন হবে কত দিনে।" তারপর হাসতে হাসতে বলে,
--তোকে মাংস খেতে হবে না।দুটো সিঙ্গাপুরি কলা পড়ে আছে।ওগুলোই তোকে এনে দিচ্ছি।খেয়ে ঘুমিয়ে পড়।হনুমান আবার কি মাংস খাবে!
:সমাপ্ত:
#সরজিৎ_ঘোষ
আমার এক বন্ধু মিলন একবার এক সুন্দরী বৌদির প্রেমে পড়েছিল।আমরা যে মেসে থাকতাম তার উল্টোদিকের বাড়িটাতেই ওই বৌদি থাকত।যখন তখন দেখতাম বারান্দায় দাঁড়িয়ে মিলন কী যেন দেখে।তারপর বুঝেছিলাম ওই বাড়ির বৌদিকে দেখার জন্যই মিলন বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকে।আমরা সেই নিয়ে মিলনের সাথে মজা করতাম।আমরা মিলনকে বলতাম,
--বৌদির সাথে তো কথা বলার সুযোগ হলো না কোনোদিন।কারণ তোর সে সাহস নেই।
---ও কোনো ব্যাপার নয়।আমি ইচ্ছে করলেই আলাপ করে নেব একদিন।
তবে হ্যাঁ মিলন যে কোনো কারো সাথেই সহজে ভাব জমিয়ে নিতে পারতো।মিলন সত্যিই একদিন বৌদির সাথে আলাপ করে নিল। তারপর থেকে মিলন সুযোগ পেলেই বৌদির সাথে গল্প করত।বৌদি ব্যালকনিতে এলেই মিলন দৌড়তো। বৌদি ছাদে গেলেই মিলন ছাদে চলে যেত।এই ভাবে বেশ কয়েক দিনের মধ্যেই মিলন বৌদির সাথে ভালোই ভাব জমিয়ে ফেললো।আমরা এই ব্যাপারটা বেশ উপভোগ করতাম।
কিছুদিন পর একদিন সকালে দেখলাম লাগেজ পত্র নিয়ে দাদা গাড়ি করে বেরিয়ে গেল।যাবার সময় বৌদিকে বলতে শুনলাম,
--সাবধানে যেও।আর পৌঁছে ফোনটা করতে মনে থাকে যেন।
--হ্যাঁ গো।তুমি সাবধানে থাকবে।এক সপ্তাহর তো ব্যাপার।
আমরা বুঝে গেলাম দাদা কিছু দিন থাকছে না।মিলনকে এবার পায় কে।দাদা নেই মানে এখন সব দায়িত্ব যেন মিলনের।দাদা চলে যাবার পর বৌদি ব্যালকনিতে আসতেই মিলন জিজ্ঞেস করলো,
--দাদা কোথাও গেল নাকি?
--আর বলো না।অফিসের জরুরী কাজে বম্বেতে যেতে হলো সাত দিনের জন্য।
---কোনো অসুবিধে হলে বলো।
---হ্যাঁ নিশ্চয়ই।তা তোমার কলেজ নেই আজ?
--না না এই সপ্তাহটা আমিও কলেজ যাব না।মেসেই থাকব।দরকার পড়লে আমাকে বলো কিন্তু।আমি মেসেই থাকব।
দাদা সাতদিন থাকবে না।আর মিলনও দেখলাম বলে দিল সাত দিন কলেজ নেই ওর।আমাদের এক বন্ধু মিলনকে বলল,
---মিলন এমন দিন আর পাবি না।দাদা এখন থাকবে না সাতদিন।
তারপর থেকে মিলন যখনই সময় পাচ্ছে বৌদির সাথে কথা বলছে। মিলনের ভীষণ ইচ্ছে বৌদি যদি কোনো একটা কাজ দেয় সেই সুযোগে বৌদির বাড়ির মধ্যে যাওয়া যাবে।কিন্তু বৌদি কিছুই বলছে না।মিলন তবুও বলছে,
--বৌদি কোনো অসুবিধা হচ্ছে না তো।আমাকে বলতে পারো।
--না না। ঠিক আছে। অসুবিধে হলে বলব।।
আমরা মজা করে বলতাম,
--তোকে আর এ জীবনে ডাকল না।তিনদিন হয়ে গেল।গল্প করে করেই সময় কেটে যাবে তোর।
যাইহোক পরের দিন সকালে দেখি বৌদি ব্যালকনি থেকে মিলনের নাম ধরে ডাকছে। মিলন তখন বাথরুমে। আমি বলি,
---তুই বাথরুমে ঢুকে বসে আছিস। এদিকে বৌদি তোকে ডেকে যাচ্ছে।
আমার কথা শুনে পরি মরি করে বাথরুম থেকে দৌড়ে বেরিয়ে বারমুডাটা পরে বারান্দায় গিয়ে বলে,
--বৌদি ডাকছো?
--শোনো না তুমি ফ্রি আছো।
--হ্যাঁ আমি তো অলটাইম ফ্রি।
বৌদি একটু আসতে করে বলে,
---আজ আসতে পারবে একবার?
মিলন এপাশ ওপাশ দেখে নিয়ে বলে,
--যখন ডাকবে তখনই চলে যাব।কখন যেতে হবে বলো?
আমরা তো আড়াল থেকে দেখছি বৌদি কী যেন একটা ভেবে নিয়ে বলে,
---শোনো তাহলে রাতে ওই আটটার দিকে চলে এসো।তোমার অসুবিধা নেই তো?
--না না আমার আবার কী অসুবিধা?ও হ্যাঁ!বৌদি তুমি কী খেতে ভালোবাসো?যতই হোক তোমার বাড়িতে প্রথম যাচ্ছি।
--আরে ধুরর্। ওসব কিছু আনতে হবে না।তুমি আসলেই হবে।
কথা গুলো বলে বৌদি ভিতরে চলে যায়। মিলন রুমের মধ্যে দৌড়ে এসে ইয়া বলে চিৎকার করে আমাকে জড়িয়ে ধরে।গোপাল বলে,
--শোন ভাই ট্রিট চাই। সন্ধ্যে বেলা দিশি মুরগীর মাংস আর ভাত। মেসে এখন বেশি কেউ নেই। ছজন আছি।একটা দুকেজি সাইজের মুরগী আনলেই হবে।
---আরে ভাই ঠিক আছে হবে হবে।
---আরে ঠিক নেই।তুই আগে মাল ছাড়।
মিলন তিনশো টাকা বের করে গোপালের হাতে দিয়ে বলে,
---মাংস নিয়ে যে টাকাটা থাকবে মিষ্টি নিয়ে নিস কিছু।
মিলন তো সেই মেজাজে আছে।ক্লিনিক প্লাস শ্যাম্পু,ডাভ সাবান দিয়ে স্নান।সন্ধ্যের পর ফিটফাট হয়ে আমার ডেনিমের বডি স্প্রে টা ফুস ফুস করে সারা গায়ে মেখে আটটার সময় চলে গেল।এদিকে আমরা দিশি মুরগী রান্নার তোড়জোড় চালাচ্ছি।মিলন চলে যাবার পর রান্না শুরু হয়েছে। আর আমরা কয়েকজন মিলে বারান্দায় এসে দাঁড়াচ্ছি।দেখি বৌদির বাড়ির ব্যালকনির দিকে জানালা গুলো বন্ধ করা।আমরা মিলনকে নিয়ে যা ভাবার ভাবছি।কিছুক্ষণ পর বৌদির ঘর থেকে হুপ হুপ হুপ করে আওয়াজ আসছে।দেবা বলছে,
---আরে এটা তো মিলনের গলা।এদিকে মাংস রান্নার গন্ধে পুরো মেসটা ম ম করছে।
যাইহোক নটা বাজতে না বাজতেই দেখি মিলন চলে এলো।মিলনের সার্টের ওপরের দুটো বোতাম তখনও খোলা।চুল গুলো এলো মেলো।গায়ে হাত দেখি ঘেমে ভিজে গেছে।গোপাল তো বলে উঠল,
--এত তাড়াতাড়ি চলে এলি? তোর দ্বারা কিছু হবে না।যাই হোক বল কী সব হলো?
--আগে জলের বোতলটা দে পরে সব বলছি।
মিলনের থেকে সব শুনতে হবে।দেবা একবাটি মাংস নিয়ে এসে হাজির। কষা মাংস আর মিলনের গল্প। পুরো জমে যাবে।মিলন বোতলটা নিয়ে ঢক ঢক করে এক বোতল জল শেষ করে জামাটা খুলে হাতে নিয়ে বসেছে।আমি মাংসের একটা হাড় নিয়ে চিবোতে চিবোতে বলি,
--বল আর কত ওয়েট করব।
মিলন গামছা দিয়ে ঘামটা মুছে নিয়ে বলতে শুরু করলো।
আমি যেতেই বৌদি আমাকে বললো,
--বা দারুণ তো বডিস্প্রের গন্ধটা। তোমার দাদার সঙ্গে যখন প্রেম করতাম তোমার দাদাও এটাই ইউজ করত।আমার খুব প্রিয়।
--আমারও ভীষণ প্রিয়।
---আরে আস্তে কথা বলো।কোনো আওয়াজ না হয়। আর পা টিপে টিপে এসো।আমার ছেলে না বুঝতে পারে।
তারপর আমি পা টিপে টিপে গেলাম।আমাকে একটা ঘরে নিয়ে গেল।ঘরটা অন্ধকার।আমার হাতটা ধরে বললো,
---এই শোনো না তুমি ওই খাটের উপর উঠে পড়ো।আমি একটু পর আসছি।
জীবনে এই প্রথম কোনো মেয়ে আমরা হাতটা ধরে খাটে উঠতে বললো।রোমান্টিক পরিবেশ।আমিও খাটের উপর উঠে পড়লাম।খাটে উঠে বসে আছি।অন্ধকার ঘরে আমি তখন রোমাঞ্চ অনুভব করছি।
মিনিট পাঁচেক পর বৌদি এসে বলে গেল,
---তুমি তাড়াতাড়ি জামাটা খুলে ফেলো।
তখন তো ভীষণ লজ্জা করছে।তবুও আমি জামা খুলে ফেললাম।বৌদি তারপর এসে বললো,
--আমি রেডি।এবার তুমি রেডি হয়ে নাও।তোমার দাদার এই মাটি কালারের পাঞ্জাবিটা পরার পর মুখোশটা পরে নাও।আমি যখনই বলব ওই আসছে ওই আসছে তুমি তখন জোরে জোরে হুপ হুপ করবে আর এমন লাফাবে যেন খুব আওয়াজ হয়।
আমি বলি,
--মানে?
তখন বৌদি বলে,
--আরে আমার ছেলেটাকে দিনের বেলা যাইহোক করে খাওয়াতে পারি।আর দেখো না রাতের বেলা তিনদিন খাচ্ছে না।দিনের বেলা পাখি দেখাই। মাঝে মধ্যে হনুমান গুলোও আসে হুপ হুপ আওয়াজ করে।ওই সব দেখিয়ে ভয় পাইয়ে খাইয়ে দিই।কিন্তু রাতের বেলায় ওসব কোথায় পাব বল তো। তোমার দাদাও নেই। তিনদিন কিছুতেই খাওয়াতে পারি নি। বেশি দেরি করো না একটু তাড়াতাড়ি নাও।
তারপর বৌদি ছেলেকে খাওয়ালো। আমি ওই আধঘণ্টা ধরে মুখোশ আর পাঞ্জাবি পরে লাফিয়েছি আর হুপ হুপ করে আওয়াজ করে গেছি। তাতেই আমার অবস্থা।ভাই পা গুলো ভীষণ ব্যথা করছে।
সব কিছু শুনে তো আমরা থ।সেই সঙ্গে বিরাট হাসির রোল।গোপাল আর দেবা দেখি হনুমানের মতো ডাকতে শুরু করলো, হুপ হুপ।
মনটা ভেঙে যাওয়ার মতো অবস্থা মিলনের। মিলন বলে,
--খিদে পেয়েছে ভাই। একটু মাংস নিয়ে আয়।
গোপাল তখন গান ধরেছে ,"মিলন হবে কত দিনে।" তারপর হাসতে হাসতে বলে,
--তোকে মাংস খেতে হবে না।দুটো সিঙ্গাপুরি কলা পড়ে আছে।ওগুলোই তোকে এনে দিচ্ছি।খেয়ে ঘুমিয়ে পড়।হনুমান আবার কি মাংস খাবে!
:সমাপ্ত: