31-01-2023, 01:27 AM
প্রথম অভিজ্ঞতা তখন ছয় সাত বছরের তাই যতটা মনে আছে ততটা বলছি তার আগে সময় বুঝার জন্য কয়েকটা কথা বলছি আমাদের গ্রামে বাড়ি আছে এখনো, যেটা দাদুর আমলের তো আমরা মাঝে মধ্যেই দিদিদের কলেজের ছুটিতে ওখানে ঘুরতে যেতাম বাবা মার সাথে বিশেষ করে দোল পূর্ণিমা, তারপর কালি পূজা যেখানে ব্রহ্মা শীতলা পূজা হতো আমাদের বাড়িতে ।তখন ওখানে সব কাকাত ভাই বোন পিসির ছেলে সব আসতো সব মিলিয়ে আমরা ভাইবোন ছিলাম 22 জন তো বুঝতেই পারেন সব বাচ্চারা মিলে কেমন ধামাল করতাম। তখন গ্রাম মানে পুরো একদম গন্ড গ্রাম যাকে বলে, যেখানে বিদ্যুতের আসে নি তখন, যেখানে সন্ধের সাথে সাথে রাত হয়ে যেত তাড়াতাড়ি ভাত খেয়ে আটটাতে ঘুম, রাতে বাড়ির সাথের জঙ্গল থেকে শিয়াল এর আওয়াজ শুনা যেত ভোর বেলা সব ভাই বোনেরা মিলে ফুল তুলতে যেতাম তখন বন মোরগ দেখাযেত । তারপর ছোট ভাই বোনের গ্রামের বালুওয়ারি কলেজে খিচুড়ি খেতে চলে যেতাম সেখান থেকে এসে পুকুরে দাপাদাপি এক দের ঘন্টা দাদু ঠাকুমার চিল চিৎকার করলে তারপর ঘরে বিকালে আম গাছে উঠে কে কত উপরে উঠতে পারবে তার কম্পিটিশন এই ছিল আমার ছোট বেলা । তো আমার ঠাকুমার এক বোনের বাড়ি ছিল আমাদের বাড়ির থেকে একটু দুরে ঠাকুমা সব সময়ই বলতো দুপুরে যেন ঐ দিদার বাড়ি দিকে একা একা না যাই রাস্তা ভালো না । বাচ্চার মন বুঝতেই পারেন বড়রা যেটা মানা করবে সেটা বেশি করে করবে । একদিন দুপুরের সবাই যখন ঘুমে আমি ঐ দিদার বাড়ি চলে গেলাম। বিকাল বেলা চলে আসলাম দিদা নিজে এসে আমাকে দিয়ে যান । কেউ কিছু বলেন নি কিন্তু ঠাকুমা একটু আমাকে বকাবকি করলো। কাকতালীয় ভাবে ঐ রাতে আমার ধুম জ্বর বাবা মা বলছে সারা দিন না খেয়ে ঘুরলে এমন হবেই। কিন্তু ঠাকুমা একদম চুপ। পরের দিন আমার জন্য সবাই চলে আসলাম শহরে । এবার আরেকটা কথা আমরা যারা বাঙাল তারা সুকনু মাছ যেটাকে সুটকি বলে ওটা রান্না করে খেতে খুব ভালো বাসি। ইলিশ মাছ কে ছয় সাত মাস লবন দিয়ে প্রিসার্ভ করে রান্না করে খায় ওটাকে লোনা ইলিশ বলে। তো গ্রামের থেকে আসার পর থেকে আমি চুপচাপ থাকি বেশি কেউর সাথে কথা বলি না। এ ভাবেই কিছু দিন চলেছে , এক দিন বাবা বাজার থেকে ঐ লোনা ইলিশ এনেছে বাস ঘরে আনার সাথে সাথে আমার তো সুরু হলো পাগলামি ঐ ইলিশের গন্ধ নেওয়ার লোভ ঐ দিন সন্ধ্যার সময় আমি হঠাৎই কি মনে হলো আমি চুপচাপ রান্না ঘরে গিয়ে ইলিশের ব্যাগ থেকে ইলিশ বের করে কাঁচা ইলিশ খাওয়া শুরু করলাম ঐ স্বাদ আমি জীবনে এখনো কোনও কিছুতে পাইনি। যাইহোক তারপরের সব কিছু খুব ঝাপসা ঠিক মনে নেই আমার, বাকিটা আমার মার ঠাকুমার মুখ থেকে শোনা, আমি যখন রান্না ঘরে এই কান্ড করছিলাম আমার দিদি দেখে ফেলে ও সোজা গিয়ে মা কে বলেছে মা তো শুনেই রান্না ঘরে আমার কাছে। তারপর সেখান থেকে আমাকে ঘরে নিয়ে আসলো ঐ সময়ের পর ধীরে ধীরে আমার ধুম জ্বর একেবারে ১০৩''। রাত কোনও ভাবে কাটানোর পর সকালে ডাঃ কাছে নিয়ে যায় বাবা। ওখান থেকে বাড়ি এসে দেখি ঠাকুমা আর দাদু গ্রাম থেকে এসেছে আসার সময় কি এক তাবিজ নিয়ে এসেছে আমার জন্য। আর ঐ দিন ভর সন্ধ্যার সময়ের রাস্তার তেমাথায় আমাকে রান্না করে দিয়েছে কিছু খাওয়ার জন্য পরের দিন থেকে আমি একদম ঠিক। মাঝের দুই দিন আমার জীবন থেকে পুরোটাই মুছে গেছে । তারপর অনেক পরে ঠাকুমা আর মা কাছে যেটা শুনেছি আমি যে দিন ঠাকুমার বোনের বাড়ি গিয়েছিলাম তার কিছুদিন আগে ঐ দিদার বড় ছেলের বৌ সুইসাইড করে ছিল কাকুর অন্য মহিলার সাথে সম্পর্ক ছিল ঐ বাড়ি থেকে আসার সময়ে কিছু একটা আমার সঙ্গে এসেছিল। আমার ঠাকুমা এক ওঝার কাছে যাই আমার শহরে চলে আসার পর কারন ওনার সন্দেহ হয়েছিল আমার চাঞ্চল্য দেখে এবং ঐ ওঝা গণনা করে বলে দেন কি হয়েছে এবং কি করতে হবে । যদিও আমার এখনও বিশ্বাস হয় না এমন কিছু হয়ে ছিল আমার কাছে পুরো ঘটনাটা একটা শপ্নের মত মনে হয় এখনও । আমার মনে হয় তখন আমি কিছুটা মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়েছিলাম।
এই কথা গুলি বলতে যত আরামে বলা যাই লেখতে ততটাই কষ্ট হয় । এই গেল এক রইলো বাকি দুই কালকে আবার বলবো দাদা।
এই কথা গুলি বলতে যত আরামে বলা যাই লেখতে ততটাই কষ্ট হয় । এই গেল এক রইলো বাকি দুই কালকে আবার বলবো দাদা।
আমাকে আমার মত থাকতে দাও