Thread Rating:
  • 30 Vote(s) - 3.37 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
HORROR ভয় ২ - বাবান
#81
শেষ পর্ব

নিজেকে ওই সব অস্বাভাবিক অনুভূতি গুলো থেকে বাঁচাতে যে যুক্তির সাহায্য বারবার নিচ্ছিলাম এবং দেখি সেই যুক্তিই আমায় বাধ্য করছে আরও ভয় পেতে! এমন সব ভাবছি ঠিক তখনি আমার ডান হাতটা কে যেন হটাৎ চেপে ধরলো! চমকে উঠলাম আমি এমন হওয়াতে। সেটাই স্বাভাবিক। কেঁপে উঠে পাশে তাকিয়ে দেখি জোজো। উফফফফফ গা থেকে যেন জ্বর নেমে যাবার মতো শান্তি পেলাম। জোজো আমার হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু তাকিয়ে আছে বারান্দার দরজার দিকে যেটা এখন বন্ধ। আমার হাতে ধরা টর্চটা আলো সোফার ওপর গিয়ে পড়েছে তাই পাশের ওই দরজার জায়গাটা অন্ধকারে ঢাকা। আমি ছেলের দিকে তাকিয়েই ছিলাম। জোজো একহাতে আমায় ধরে অন্য হাতের আঙ্গুল মুখে নিয়ে ওই দিকে তাকিয়ে। কি জানি কি হলো তারপরেই দেখলাম ও দুই হাতে আমার হাতটা ধরে আমার পেছনে লুকিয়ে পড়লো। যেন কিছুটা দেখে ও ভয় পেয়েছে। আমি সঙ্গে সঙ্গে টর্চটা ফেললাম দরজার দিকে। মনে প্রবল একটা ভাব জাগলো নিশ্চই কিছু একটা ওখানে আছে আর আমি সেটার সাক্ষী হতে চলেছি কিন্তু...... কই? কিচ্ছু নেই তো ওখানে। যেমন দরজা আগের মতো বন্ধ ছিল তেমনি বন্ধ। এমন সময় ও ঘর থেকে জোজোর বাবা উঁচু স্বরে ছেলের নাম ধরে ডেকে উঠলো। আমিও আর না দাঁড়িয়ে বেরিয়ে এলাম ও ঘর থেকে। কিন্তু আমি যখন দরজা দিয়ে বেরিয়ে আসছি তখনি যেন মনে হলো দূরে একটা আওয়াজ শুনতে পেলাম। কোনোরকমে হাসি চেপে রাখার চেষ্টা করেও যখন চেপে রাখা কষ্টকর হয় আর ঠিক তখনই ঘরঘর করে একটা অদ্ভুত আওয়াজ বেরিয়ে আসে মুখ দিয়ে একদম যেন ওটার মতো। কিন্তু এইবার আর আমি পেছনে তাকাইনি। ছেলের হাত ধরে সোজা ওর বাবার কাছে চলে গেলাম। আমাদের দেখে সে জিজ্ঞেস করলো ও ঘরে আমরা কি করছিলাম। তখন বলতেই হলো কিছুনা ওই দেখে এলাম একটু। তারপরেই হটাৎ একটা প্রশ্ন জাগলো মনে। আচ্ছা জোজো তখন ফুটবল নিয়ে খেলছিল। কিন্তু ওর বলটা তো টিভি দেখার সময় ওই বসার ঘরেই রাখা ছিল। তাহলে জোজো বলটা এখন পেলো কিকরে? ও কি একা একা এই ঘর থেকে বেরিয়ে ওই অন্ধকার ঘরে গিয়ে বল নিয়ে এসেছে? এটা যেন মানতে পারছিনা। ও ছোট মানুষ তাই ভয়ের ময় অনুভূতি হয়তো পুরোপুরি ভাবে পূর্ণতা লাভ করেনি কিন্তু বাবা পাশে থাকতেও ও উঠে বল আনতে চলে গেলো? নাকি বলটা এই ঘরেই ছিল আমি বেশি ভাবছি? জিজ্ঞেস করেই ফেললাম ব্যাপারটা ওর বাবাকে। কিন্তু মনের মতো উত্তর পেলাম না। শুধু এইটুকু বললো যে জোজো কিছুক্ষন পরে হটাৎ নেমে বলটা নিয়ে খেলতে শুরু করে দিয়েছিলো। অরিন্দম শুধু এইটুকুই বলেছিল যেন চুপচাপ নিজের মতো খেলে?

- আচ্ছা একটা বল নিয়ে তুমি দেখি দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলে গো? আরে নিশ্চই বলটা এখানে ওখানেই কোথাও ছিল। ওটা নিয়ে ছেলেটা খেলছিলো। কি? তাইনা জোজো?

বাবার প্রশ্ন শুনে জোজো কোনো উত্তর দিলোনা। শুধু বাবার গায়ে এলিয়ে পড়ে ফোনটা হাতে নিয়ে নিলো বাবার থেকে। ছেলেটা এমনিতেও বড্ড শান্ত স্বভাবের আমার। কিন্তু ওর এই চুপ করে থাকাটা যেন এই মুহূর্তে আমার ভালো লাগছিলো না। যেন মনে হচ্ছে ও কিছু একটা বারবার দেখেছে কিন্তু ওর ছোট্ট মস্তিস্ক সেটা বোঝার ক্ষমতা অর্জন করেনি সেইভাবে এখনো তাই হয়তো ও গুরুত্ব দিচ্ছেনা। নইলে কি দেখে অমন লুকিয়ে গেছিলো ও আমার পেছনে? এ যে কি অস্বস্তিকর একটা পরিস্থিতি সেটা আমিই টের পাচ্ছিলাম। আধঘন্টা আগেও আমি ও ঘরে ওদের সাথে বসে টিভি দেখার মজায় ডুবে ছিলাম। আর এখন সব কেমন যেন পাল্টে গেছে। আমি আর বেশি কিচ্ছু না ভেবে বিছানায় উঠে গিয়ে বসে পড়লাম আর খোলা জানলার সামনে হেলান দিয়ে বসে আমার ফোনটায় গান শুনতে লাগলাম। যদি একটু এসব থেকে বেরিয়ে মাথাটা শান্ত করতে পারি। কিন্তু আমি যেন কিছুতেই রবীন্দ্রসংগীতে মন দিতেই পারছি না। বার বার চোখ যাচ্ছে বাইরের পাঁচিল আর তার ওপাশের সুপারি গাছ গুলোর দিকে। হাওয়ায় নড়ে ওঠা পাতাগুলো যেন মনে হচ্ছে ইশারা করে কাছে ডাকছে। ওগুলো যেন পাতা নয়, হাত। সেগুলো নেড়ে এইদিকে তাকাতে বলছে। উফফফফফ! এই অন্ধকারে যেন সবকিছুই ভয়ের লাগে। ছোটোখাটো সামান্য ব্যাপার পর্যন্ত অন্য রূপ নেয়। আমি আর ওদিকে নজর না দিয়ে  ফোনের স্ক্রিনে মন দিলাম। এরপরেও যে পুরোপুরি সেই অনুভূতি গুলো পুরোপুরি চলে গেছিলো বললে ভুল বলা হবে। প্রায়ই মনে হয়েছে পাঁচিলের ওপাশ থেকে উঁকি মেরে কেউ জানলার দিকেই চেয়ে আছে, আবার একবার মনে হয়েছে জানলার বাইরে এপাশ থেকে ওপাশে ভয়ানক তীব্র গতিতে কিছু যেন একটা চলে গেলো। আর সবচেয়ে ভয়ের আর অস্বস্তিকর হলো যেটা সেটা হলো জানলার একেবারে বাইরে দাঁড়িয়ে কেউ দাঁড়িয়ে আছে একদম চুপ করে। আমার আর সাহস হয়নি তখন ঐদিকে তাকানোর। ভেতর থেকে আমিই যেন নিজেকে বলছিলাম একবারও তাকাবিনা ঐদিকে। চোখ যেন না যায়। ওই দৃশ্য সহ্য করতে পারবিনা তুই। সে চায় যে তুই তাকা কিন্তু তাকাবি না কিন্তু!

উফফফফফ!! এসব কি হচ্ছে ? পুরোটাই মনের ভুল? যাচ্ছেতাই একেবারে! ভাবলাম নিজেই সরে যাবো ওখান থেকে কিন্তু দেখলাম জোজোর বাবাই আমার পাশে এসে বসলো। "কি দেখছো দেখি " বলে আমার একটা ইয়ারফোন নিজের কানে লাগিয়ে চুপটি করে আমার কাঁধে মাথা রেখে শুনতে লাগলো সেই চিরদিনের প্রিয় মানুষটার সৃষ্টি। একটু পরেই বুঝলাম আর কোনো খারাপ অনুভূতির বিন্দুমাত্র নেই অন্তরে। নানান সব আজগুবি চিন্তায় ভোরে ওঠা মাথাটা যেন এতক্ষন ভারী হয়ে ছিল সেটা হালকা হয়ে গেছে। তার বদলে  আমি আবার দুজন মানুষের প্রতি ভালোবাসা অনুভব করলাম। একজন ওই বিশ্ব বিখ্যাত মানুষটা যে বাড়িতে বসে সৃষ্টি করে গেছে একের পর এক সব জাদু ভরা লেখা যা একবার শুরু করলে থামা যায়না। আর দ্বিতীয় জন হলেন এই আমার কাঁধে মাথা রেখে চোখ বুজে থাকা লোকটা। যে বিশ্ব বিখ্যাত না হতে পারে, কিন্তু আমার কাছে সব। কারণ সে আমাকে পৃথিবীর সেরা উপহারটা দিয়েছে। যেটা এখন ওই যে দূরে শুয়ে বাবার মোবাইলে ডোরেমন দেখছে। ও আসার পরেই তো বুঝলাম মা হবার মানে কি। ছোটবেলায় মা যখন বকতো কিংবা বেশি দুস্টুমি করলে হাত তুলতো তখন খুব রাগ হতো মায়ের ওপর। আজ বুঝি ওই সময় মায়ের ওপর দিয়ে কি যেত। আজ বুঝি তার দিকটা। আমার জোজো তো আমার মতো দুস্টু নয় তাতেই সামলে ওঠা যায়না, সেদিন মায়ের কি অবস্থা হতো। কিন্তু এটাই তো মা হবার সবচেয়ে আনন্দের ব্যাপার। এই রাগ এই বকুনি আর তার সাথে অনেক অনেক আদর। সেই লোভে পড়েই তো মাঝে মাঝে আবার মা হতে ইচ্ছে করতো আমার। ছোট্ট জোজোর মুখটা মনে পড়তো। খুব সামলে কোলে নিয়ে ওর বাবা যখন তাকিয়ে থাকতো নিজের সৃষ্টির দিকে..... সেই দৃষ্টি, সেই মুহুর্তটর আবার সাক্ষী হতে ইচ্ছে জাগতো আমার। আমার এই ইচ্ছের কথা আমার কাঁধে মাথা রেখে বসে থাকা মানুষটাকে বললেই হেসে আমায় এইভাবেই জড়িয়ে ধরতো। বুঝতাম তারও লোভ জাগে। এমন লোভে ক্ষতি নেই বোধহয়।

এগুলোই ভাবতে ভাবতে নিজেও কখন যেন গুনগুন করতে শুরু করেছিলাম। লোকটা পাশে থাকলেই যেন সব ভুল চিন্তাগুলো গায়েব হয়ে যায়। কি যে জাদু আছে এই জোজোর বাবাটার মধ্যে কে জানে। কিছুক্ষন পরে আবার কারেন্ট ফিরে এলো। অন্ধকার কেটে গিয়ে আবার আলোয় ভোরে উঠলো ঘর গুলো। বসার ঘর এমনকি বাইরের বারান্দায় গিয়ে ঘরের গেট শেষবারের মতো দেখে এলাম। জোজোকে নিয়ে গিয়ে বাথরুম করিয়ে আনলাম। তারপরে শাশুড়ি মায়ের ঘর থেকে ঘুরে এসে বিছানায় উঠে ঘরের জানলা বন্ধ করে লাইট নিভিয়ে নাইট ল্যাম্প জ্বেলে ছেলেকে ঘুম পাড়াতে লাগলাম। এতক্ষন ধরে অন্ধকার ঘিরে থাকা ঘরে আলো ফিরে এলেও পুনরায় আবারো অন্ধকারে ডুবে গেলো ঘরটা। ঘরের ওই হালকা সবুজ আলোয় হালকা হালকা সব দেখা যাচ্ছিলো। দুজন শুয়ে কথা বলতে বলতে একসময় ঘুমিয়ে পড়লাম আমি। আমার মনে নেই আর কিছু। জোজোর বাবাকে দেখেছিলাম শেষবারের মতো ফোন হাতে নিয়ে ওপাশ ফিরে শুয়ে পড়তে। আমিও আর চোখ খুলে রাখতে পারিনি। ওকে ফোন নিয়ে আর ঘাঁটাঘাঁটি না করতে বলে চোখ বুজি। ঘুমে চোখ জড়িয়ে আসায় একসময় ঘুমে হারিয়ে যাই।

কতক্ষন সময় পার হয়েছে কিচ্ছু মনে নেই। হটাৎ কেমন একটা অসস্তি অনুভব হতে শুরু করলো আমার। আমি বুঝতে পারছি কিছু একটা যেন হচ্ছে আমার সাথে। দম নিতে কষ্ট হচ্ছে যেন। যেন নিঃস্বাস নেবার স্বাভাবিক পক্রিয়ায় একটা বাঁধা আসছে। মাথাটা এদিক ওদিক করছি আমি। কিন্তু চোখ খুলছিনা কেন? এদিকে যে বুকের চাপ আরও বেড়েই চলেছে! আমি মাথা টুকু ছাড়া আর কিছুই যেন নাড়তে পারছিনা। হটাৎ করে পুরো শরীর অসার হয়ে গেছে আমার! এ কি হচ্ছে আমার সাথে? প্রচন্ড অসস্তিতে শেষমেষ অজান্তেই কোন সময় যেন খুলে গেলো আমার চোখটা! আর চোখ খুলতেই আমি চমকে উঠলাম। জোজো!! আমার ওপর উঠে বসে আছে! ওর ঠোঁটে হাসি। কিন্তু নিজের ছেলের এই হাসিটা চিনতে পারছিনা কেন আমি? আর ও এমন করে আমার ওপরে বসেই বা কেন? উফফফফফ বুকটা!! এ কি হচ্ছে কি! জোজো এতো ভারী হলো কিকরে? এর আগেও তো কতবার জোজো আমার ওপর উঠে বসেছে, খেলা করেছে। কিন্তু আজকেরটা যে আমি সহ্য করতে পারছিনা। ওহহহহ! এতো ভার কিকরে হয়ে গেলো ওর? ঐভাবে তাকিয়ে হাসছে কেন সে? আমি কোনোরকমে কিছু একটা বলার চেষ্টা করলাম। কিন্তু সামান্য জোজো নামটুকু নিতে মনে হলো যেন অনেকটা সময় লেগে গেল। আমি উঠে বসতে চেষ্টা করলাম কিন্তু কিছুতেই পারছিনা। কিন্তু আমি পুরো দমে চেষ্টা করে গেলাম। আমার ওই হালকা নড়ার ফলে একটা অদ্ভুত ব্যাপার হলো। আমার চোখের সামনে জোজো হটাৎ লাফিয়ে নেমে পড়লো বিছানা থেকে আর দ্রুত গতিতে ঘরের খোলা দরজার পর্দা সরিয়ে বেরিয়ে গেলো। এ! একিকরে হতে পারে! ও এতো জোরে কিকরে ছুটতে পারে? এমন সময় বাইরে থেকে মেঝেতে কিছু পড়ার আওয়াজ আসলো আর তারপরেই মাআআআ!! বলে চেঁচিয়ে উঠলো জোজো! আমি আর থাকতে পারলাম না এরপরে। জোজো! বলে চেঁচিয়ে উঠে দৌড়ে বেরিয়ে গেলাম বাইরে কিন্তু একি! কোথায় জোজো? বাইরে তো কিছু নেই। আলো জ্বালাতে গেলাম কিন্তু একি! আবারো কারেন্ট গেছে নাকি? উফফফফ জোজো কোথায়? সিঁড়ির দিকের কাঁচের জানলাটা দিয়ে বাইরের হালকা আলো ওই সিঁড়িতে পড়েছে। তাতেই যেন অনেকটা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি এখন। এগিয়ে গেলাম ওদিকে। এমন সময় শুনলাম ছাদের দরজার শব্দ। ওটা কেউ খুললো। তারপরেই সিঁড়িতে পায়ের শব্দ। কেউ যেন ওপর থেকে নিচে নামছে। এটা যে জোজো নয় সেটা ওই পায়ের আওয়াজ শুনেই বোঝা যাচ্ছে। কারণ ভারী পায়ের আওয়াজ। অন্ধকারের মাঝেই যেন আরও গভীর অন্ধকারে ঢাকা কিছু একটা সিঁড়ির সামনে এসে দাঁড়ালো। অবয়বটা কোনো পুরুষের মনে হচ্ছেনা? একটু এগিয়ে যাবো? হ্যা তাই যাই। কে ওটা?

ওমা! একি? অরিন্দম কখন ছাদে গেছিল? এতো রাতে ছাদে কি কাজ ওর? ও হটাৎ নেমে আসছে যে । জোজোকে দেখতে পাচ্ছিনা। আমাকে দেখেই ও দ্রুত নেমে এসে আমার হাত ধরে বললো "চলো  চলো ছাদে চলো!" এদিকে আমি কিছু বুঝতে পারছিনা। অবাক হয়ে ওর সাথে এগোতে লাগলাম। জিজ্ঞেস করলাম ছেলে কোথায়? ও কি তোমার সাথে? কোনো উত্তর দিচ্ছেনা সে। হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে ওপরের দিকে। কিন্তু ও যেন সিঁড়ি দিয়ে উঠছেনা.... দৌড়োচ্ছে। উফফফফ আমাকে একপ্রকার যেন জোরে টেনে নিয়ে উঠে যাচ্ছে ছাদে। আমি! আমি যেতে চাইনা কিন্তু আমি যে থামতেও পারছিনা! ওকে বললাম আমরা এখন ছাদে যাচ্ছি কেন? জোজো কোথায়? কিচ্ছু উত্তর দিচ্ছেনা ও। আচ্ছা ও ওই ভাবে হটাৎ হাসছে কেন? এই রাতে কি দেখাবে ও ছাদে? জোজো কোথায়? ওর বাবা ঐভাবে হাসছে কেন? পেছন থেকে কে যেন আমার নাম ধরে ডাকলো না? এদিকে আমি যেন আর হাটছিনা। আমার পা যেন আর সিঁড়ির ওপরে নেই। আমি কি হাওয়ায় ভাসছি নাকি? উফফফফ আবার কে নাম ধরে ডাকে আমায়? অরিন্দম? কিন্তু সেতো আমার সাথে!  তাহলে পেছনে কে ডাকে? ওই তো পৌঁছে গেছি দরজার সামনে। এবার ভেতরে যাওয়া বাকি। হটাৎ! কানের কাছে মুখ এনে কে যেন খুব জোরে আমার নাম ধরে ডাকলো তিন্নি!

--------------------------------------------

হটাৎ পেছন থেকে বেশ জোরে একটা হাতের চাপে চোখটা খুলে গেলো আমার। সাদা উজ্জ্বল আলোয় চোখটা এক মুহূর্তের জন্য ধাঁধায়ে গেল। আমি ঘুরে তাকাতেই দেখি জোজোর বাবা অবাক চোখে আমার দিকেই তাকিয়ে। আমি ঘেমে গেছি। জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছি। যেন অনেক্ষন পরে নিঃশাস নিতে পারছি আমি।

- কি গো? কি হয়েছে? তুমি এইভাবে!! হটাৎ..... হটাৎ কি হলো তোমার!?

গভীর ঘুম থেকে জাগিয়ে দিলে যেমন প্রথম মুহূর্তে কিছুই বোঝা যায়না। দিনরাত গুলিয়ে যায় সাথে আশে পাশের চেনা দৃশ্যগুলো তেমনি অবস্থা তখন আমার। ওর কথাও যেন শুরুতে বুঝতে পারছিলাম না। যেন অন্য ভাষায় কিসব বলছে ও। মাথায় ঢুকছে না সেসব। তারপরে ওর ঝাকুনিতে ঘুমের রেশটা কাটলো। টানা টানা স্বরে জিজ্ঞেস করলাম " কি? কি হয়েছে? আমি....আমার আবার কি হবে? কেন কি হয়েছে? "

ও অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো - কি হয়েছে মানে?  তুমি!..... তুমি.....তাকিয়ে দেখো তুমি কোথায়!তুমি এখানে কি করছো? আর ঐভাবে উঠে এলে কেন?

আমার চোখে যেন ভয়ানক ঘুম চেপেছিল। ওটা ভাঙিয়ে দিতে যেন মাথাটা হালকা গরম হয়ে যাচ্ছিলো। তাই ওই অবস্থাতেই রেগে বলেই ফেললাম " কি সব বলছো কি?  জাগালে কেন  আমায় এখন? আর কোথায় আবার আমি যাবো?... আমিতো......"

ব্যাস... শুধু এইটুকু বলার পরেই আর কিচ্ছুটি বেরোলো না আমার মুখ থেকে। আমি জানিনা কারোর সাথে এমন কখনো হয়েছে কিনা কিন্তু আমার ঘুম কি পরিমানে সাংঘাতিক এসেছিলো যে আমি আমার সেই মুহূর্তের অবস্থা টুকু নিজেই বুঝতে পারছিলাম না। আমার মস্তিস্ক আটকে ছিল শেষ ওই বিছানায় যখন চোখ বুজে ছিলাম। কিন্তু এখন চোখ খোলার পরে আমার চারিপাশের দৃশ্য গুলো চোখে পড়তেই চক্ষু চরকগাছ হয়ে গেলো! আমি কিচ্ছু বলার মতো অবস্থায় যেন রইলাম না। আমি যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলাম সেখান থেকে কয়েক পা এগোলেই সিঁড়ির প্রথম ধাপ শুরু। আমি এখানে কি করছি!? আমি এলাম কিকরে এখানে? আমি তো ঘুমিয়ে ছিলাম! আর তারপরে যা সব দেখলাম সেগুলো তো...... স্বপ্ন তাইনা? হ্যা তাই হবে। কিন্তু আমি তাহলে এখানে পৌঁছে গেলাম কিকরে! হে ভগবান! আমি এখানে কেন?

আমার ওই অবস্থা দেখে জোজোর বাবা কাছে টেনে নিলো আমায়। আমি তাকে জড়িয়ে আঁকড়ে ধরলাম। আমার চোখ বিস্ফোরিত। আমি কিচ্ছু বুঝতে পারছিনা। তাই তাকে নানান সব উল্টোপাল্টা প্রশ্নে জর্জরিত করতে লাগলাম। অরিন্দম আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে একটা চেয়ারে আমায় বসিয়ে নিজেও একটাতে বসে আমার হাত চেপে ধরে রইলো। আমি কাঁপতে শুরু করেছি যেন ভয়। এসব কিকরে হয়ে গেলো? তখনই আমার মনে পড়লো একটু আগের দেখা ওই অদ্ভুত স্বপ্নটা। আমার মুখ দিয়ে বেরিয়ে গেলো জোজো কোথায়? অরিন্দম আমায় জানালো সে ঘুমোচ্ছে। তারপরে সে জানালো যা হয়েছে। আমি নাকি জোজো বলে চেঁচিয়ে উঠি। তাতেই ওর তন্দ্রা ভেঙে যায়। উফফফ ভাগ্গিস ও কিছুক্ষন আগে পর্যন্ত ফোন ঘাঁটছিলো। সবে ওর চোখে ঘুম এসেছে এমন সময় ওই কান্ড। ও ঘুরে দেখে আমি নাকি টলতে টলতে এগিয়ে যাচ্ছি সামনের দিকে। ও বোধহয় ভেবেছিলো আমি বাথরুমে যাচ্ছি। কিন্তু ওর সেই ভুল ভেঙে গেছিলো যখন ও শুনেছিলো আমি নাকি জড়ানো গলায় ছেলের নাম নিতে নিতে টলতে টলতে ঘর থেকে বেরিয়ে অন্ধকারে হেঁটে চলে যাচ্ছিলাম। অথচ ছেলে তো পাশেই শুয়ে। তখনি ও উঠে বেরিয়ে আসে আর দেখে আমি নাকি ওই অন্ধকারেই হেঁটে সামনে এগিয়ে যাচ্ছি। ও দুবার নাকি আমার নাম ধরে ডাকেও। আমি নাকি শুনতেই পাইনি। তখন সে বুঝতে পারে আমার কিছু একটা হয়েছে। তক্ষুনি বাইরের আলো জ্বালিয়ে সে দৌড়ে আসে আমার কাছে আর আমায় জাগিয়ে দেয়।

আমি সব শোনার পরে কিচ্ছু বলতে পারিনি। শুধুই অবাক চোখে ওর দিকে তাকিয়ে ছিলাম। আমার সাথে এটা কি হলো?কেন হলো। আমার তো কক্ষনো কোনো স্লিপ ওয়াকিং এর প্রব্লেম ছিলোনা। তাহলে হটাৎ এসব কি? আর এখুনি বা এমন হলো কেন? ও আমার অবস্থা দেখে জোজোর বাবাও বোধহয় গুরুত্বটা বুঝলো। তাই বার বার আমাকে শান্ত হতে বলছিলো। কিন্তু ও নিজেও যে ঘাবড়ে গেছে সেটা দেখলেই বোঝা যায়। এই কদিনে যা যা আমরা অনুভব করেছি সেসব যে আর অগ্রাহ্য করা যাবেনা সেটা দুজনেই বুঝে গেছিলাম। আমি তো উত্তেজনার বশে বলেই ফেললাম যে কালকেই চলো আমারা বাবা মায়ের কাছে চলে যাই। আমি আর থাকবোনা এখানে। তারপরে ভাবলাম এসব কি বলছি আমি! ছি ছি! আর তাছাড়া পালিয়ে গিয়ে হয়তো সাময়িক মুক্তি পেলেও পাবো কিন্তু তারপরে? ফিরে তো আসতেই হবে কিছুদিন পরে। তখন?

আমার অবস্থা দেখে জোজোর বাবাও দেখি রাজি হয়ে গেলো। বললো আমাকে আর ছেলেকে কদিন ও বাড়িতে দিয়ে আসবে। আমি যেন একটুও ভয় না পাই। ওর কথা শুনে আরও ঘাবড়ে গেলাম। তার মানে কি বলছে ও? অরিন্দম একা এই বাড়িতে ফিরে আসবে!? নানা! কিছুতেই না। ওকে একা এখানে রেখে আমি ও বাড়িতে শান্তিতে থাকতে পারবোনা। আমি কোনো রিস্ক নিতে পারবোনা। একবার রাস্তায় ও কাকে না কাকে দেখেছে। সে আবার পিছন পিছন ফলো করেছিল। ওরে বাবা নানা! আমি পারবোনা মানুষটাকে একা ছাড়তে। আর পালিয়ে গিয়েও কি রক্ষা হবে ? যদি ওখানেও...!! তার চেয়ে এখানে যেমন আছি তেমনি থাকবো।

প্রচন্ড ভয় যেমন একদিকে ভীতু বানিয়ে দিতে পারে, তেমনি হয়তো একসময় ভয়ানক সাহসও যোগায়। কিছুটা হয়তো রাগ থেকে। রাগের ফলে আসে জেদ আর সেই জেদ যোগায় সাহস। আমি শুরুতেই বলেছি আমি ভয়ানক সাহসী মেয়ে না হলেও সহজে ভয় পাইনি কোনোদিন। কিন্তু এই কদিনে আমার ভিতরে কেমন যেন কমজোরি অনুভব করছিলাম। একটুতেই ঘাবড়ে যাওয়া, সামান্য ব্যাপারে চিন্তায় পড়ে যাওয়া এমন কি এর মধ্যে নানা ছোট কারণে মাথায় রাগও এসে যাচ্ছিলো। জোজোকে সামলাতে গিয়ে বিশেষ করে। কিন্তু আজ এখন যেটা হলো তারপরে আর শান্ত থাকা যায়না। আমি ভেবে নিলাম বাড়ি ছেড়ে তো যাবোই না বরং দেখবো কতদূর যায় এই ব্যাপারটা। কালকেই মাকে সব জানাবো। আমাদের বাড়ির পরিচিত পুরোহিত মানুষ আছেন। তারক জ্যাঠু। আমি তাকে সেই নামেই চিনি। তিনি নাকি অনেক কিছু জানেন, বোঝেন। আর আমি মোটেই ঈশ্বর শক্তির কথা বলছিনা। তার দাদু নাকি নিজের যৌবনে প্রেত চর্চা করতেন । অনেক কিছু জানতেন। সেখান থেকেই নাতি সেই শিক্ষা পেয়েছে। যদিও আমাদের কাছে সে পুরোহিত হিসেবেই এতদিন পরিচিত। ঈশ্বর সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করা এক শান্ত স্বভাবের মানুষ।দরকার হলে কালকেই গিয়ে কথা বলবো ওনার সাথে। উনি যদি কোনো সুরাহা......

আমার এসব কথা শুনে জোজোর বাবাও আর যেন আমাকে বাঁধা দেবার মতো সাহস পেলোনা। সেটা আমার দৃঢ়তা দেখে নাকি তার ভেতরের ভয় থেকে জানিনা। সেদিন রাতে যে ঘুমের বারোটা বেজে গেছিলো সেটা বলাই বাহুল্য। এরপর আর ঘুম হয়? কোনোরকমে দুটো প্রাণী জেগে কাটিয়ে দিয়েছিলাম রাত। ভোরের দিকে আমি ওকে জোর করে ঘুমাতে বললাম। দেখেই বুঝেছিলাম ওর ঘুমটা এসেছে কিন্তু আমার চিন্তায় সেটাকে কাটিয়ে দেবার চেষ্টা করছে। ধমক দিয়ে শুইয়ে দিলাম ওকে। বালিশে মাথা দিতেই জোজোর বাবা থাকতে না পেরে চোখ বুজেছিলো। কিন্তু আমি আর ঘুমাইনি। আশ্চর্যজনক ভাবে ঘুমও যেন আর ছিলোনা চোখে। সব ঘুম যেন তখন রাতে চেপে বসেছিল। এতো গভীর ঘুম যে চোখে নেমে আসতে পারে ভাবতেই পারিনি। এতটাই যে জেগে ওঠার পরেও সব বুঝতে কিছুক্ষন সময় লেগেছিলো। মাঝে মাঝেই চোখ চলে যাচ্ছিলো পাশে শুয়ে থাকা ছেলেটার দিকে। নিজের ছেলের এই ঘুমন্ত শরীরটা দেখতে দেখতে রাতে  স্বপ্নে দেখা ওই দৃশ্য মনে পড়ে যাচ্ছিলো। উফফফফ শরীরের ওপর বসে আছে জোজো! আর কেমন ভাবে তাকিয়ে হাসছে! আর ওই ছিটকে পালিয়ে যাওয়াটা তো আরও....! মাগো মা! উফফফ। শরীরটা কেঁপে উঠেছিল। মা আর সন্তানের মাঝে যে অনুভূতি থাকে এক মুহূর্তের জন্য যেন সেটাকে ছিন্ন করে দিয়েছিলো ওই স্বপ্ন। আচ্ছা নিজের সন্তানকে কি কেউ ভয় পেতে পারে? তাও আবার এইটুকু বাচ্চাকে যে একটু একটু করে বড়ো হচ্ছে? ওই স্বপ্ন যেন তাই চেষ্টা করেছিল। কিন্তু যতই হোক সে আমার জোজো। আমার প্রাণ। ওই ঘুমন্ত ছেলেটাকেই জড়িয়ে গালে চুমু খেয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে অদ্ভুত শান্তি পেয়েছিলাম।

ভোরের আলো ফুটলো। পাখির কুঞ্জনে চারিপাশ ভোরে উঠলো। এই পাখির ডাক যেন অদ্ভুত এক শক্তি যোগায়। যেন মনে হয় ওরা বলছে কোনো ভয় নেই..... কিচ্ছু হয়নি তো....সব আগের মতোই তো আছে। তখন গিয়ে চোখ কিছুক্ষনের জন্য বুঝে এসেছিলো। শান্তির এক ঘুম। বেশ অনেক্ষন পরে উঠেছিলাম সেদিন। ওর বাবা উঠেও আমাকে জাগায়নি। মা ছেলেতে দেরী করে বিছানা ছেড়েছিলো। রাতের একটা ঘটনা এমন ভাবে প্রভাব ফেলেছিলো আমাদের ওপর যে দিনের আলোতেও যেন চেনা বাড়িতে একা হতেই কেমন যেন ভয় লাগছিলো। হয়তো পুরোটাই অলীক কিন্তু তাও তো ভয়। এ জিনিস একবার ভেতরে ঢুকে গেলে সহজে মুক্তি নেই। সকালেই মাকে ফোনে সব কিছু জানাই। এমনকি বাবার সাথেও কথা হয় অরিন্দমের। বাবা যদিও এসব বিষয় আলোচনা কোনোদিনই তুলতে পছন্দ করেনি কিন্তু অবিশ্বাসও করেনি কোনোদিন। কারণ বাবাও নিজের কম বয়সে এমন কিছুর সাক্ষী হয়েছিল। তখন সে স্কুলের ছাত্র। নুড়ি পাথরের বৃষ্টির ওই অদ্ভুত অভিজ্ঞতা বাবা কোনোদিন ভুলতে পারেনি। টিনের চালে শিলা বৃষ্টির মতো নুড়ি বৃষ্টি অথচ একটাও কিছু মাটিতে পড়ছেনা। এই একই রকম ঘটনাটা নাকি আমার এক বান্ধবীর কাকার সাথেও একবার হয়েছিল। যাইহোক সব শুনে মা বললো চিন্তা না করতে।  তারক জ্যাঠুর সাথে নাকি কাল সকালেই বাবার দেখা হয়েছিল। আমার কথা জিজ্ঞেস করছিলো কেমন আছি আমি। বাবা একটু পরেই যাবে ওদের বাড়ি জেঠুর সাথে কথা বলতে। যদি উনি বলেন ওনার কাছে যেতে তাহলে আমরা গিয়ে দেখা করে আসবো। এর একটা রাস্তা বার করতেই হবে। আর এসব এড়িয়ে যাওয়া যায়না। ভাগ্য ভালো যে সেদিন রবিবার ছিল। তাই আর জোজোর বাবার কাজে যাওয়ার তাড়া ছিলোনা। রাতে যা হলো এমনিতেও প্রয়োজনে ছুটি নিয়ে নিতো সে।


পরের অংশ এখুনি আসছে...
[+] 7 users Like Baban's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.


Messages In This Thread
ভয় ২ - বাবান - by Baban - 15-01-2023, 09:25 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Sanjay Sen - 15-01-2023, 09:47 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 15-01-2023, 10:01 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Sanjay Sen - 16-01-2023, 02:11 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Bumba_1 - 15-01-2023, 09:48 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Papai - 15-01-2023, 10:53 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 16-01-2023, 12:09 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Boti babu - 16-01-2023, 12:20 AM
RE: ভয় ২ - বাবান - by nextpage - 16-01-2023, 12:48 AM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 16-01-2023, 12:07 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Avishek - 16-01-2023, 12:31 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 16-01-2023, 04:19 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by ddey333 - 16-01-2023, 01:09 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 18-01-2023, 12:28 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 18-01-2023, 09:46 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Sanjay Sen - 18-01-2023, 10:10 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 18-01-2023, 11:19 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Bumba_1 - 18-01-2023, 10:25 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by nextpage - 18-01-2023, 11:31 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 19-01-2023, 12:56 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Deedandwork - 19-01-2023, 12:13 AM
RE: ভয় ২ - বাবান - by ddey333 - 19-01-2023, 10:34 AM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 19-01-2023, 01:32 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 19-01-2023, 01:39 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Avishek - 19-01-2023, 05:10 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 19-01-2023, 06:22 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Papai - 19-01-2023, 08:17 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 20-01-2023, 11:54 AM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 21-01-2023, 08:26 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Papai - 22-01-2023, 12:49 AM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 22-01-2023, 04:38 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Avishek - 22-01-2023, 04:30 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 22-01-2023, 04:38 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 22-01-2023, 04:37 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 22-01-2023, 09:31 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 22-01-2023, 09:33 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by ddey333 - 22-01-2023, 09:38 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 22-01-2023, 09:42 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Sanjay Sen - 22-01-2023, 09:47 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 22-01-2023, 10:10 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Bumba_1 - 22-01-2023, 10:15 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Bumba_1 - 22-01-2023, 09:52 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Avishek - 22-01-2023, 11:49 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 23-01-2023, 12:32 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by nextpage - 23-01-2023, 12:17 AM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Boti babu - 23-01-2023, 12:42 AM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 23-01-2023, 12:35 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Boti babu - 23-01-2023, 10:19 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Bumba_1 - 23-01-2023, 10:32 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Papai - 23-01-2023, 10:14 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 23-01-2023, 11:46 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Boti babu - 25-01-2023, 08:59 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 26-01-2023, 11:00 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 25-01-2023, 06:30 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 26-01-2023, 09:34 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Sanjay Sen - 26-01-2023, 09:59 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 26-01-2023, 10:29 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Bumba_1 - 26-01-2023, 10:01 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by ddey333 - 26-01-2023, 11:06 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 26-01-2023, 11:46 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by nextpage - 27-01-2023, 12:52 AM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 27-01-2023, 01:04 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Avishek - 27-01-2023, 01:34 AM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 28-01-2023, 12:19 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Papai - 28-01-2023, 06:37 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 28-01-2023, 10:15 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Boti babu - 28-01-2023, 09:06 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 28-01-2023, 10:21 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 29-01-2023, 08:16 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Bumba_1 - 29-01-2023, 09:00 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 30-01-2023, 09:27 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 30-01-2023, 09:32 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Boti babu - 30-01-2023, 09:57 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 30-01-2023, 11:00 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by ddey333 - 30-01-2023, 10:02 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 30-01-2023, 10:58 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by ddey333 - 04-02-2023, 11:08 AM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Sanjay Sen - 30-01-2023, 10:07 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Bumba_1 - 30-01-2023, 10:08 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Avishek - 31-01-2023, 12:57 AM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 31-01-2023, 11:56 AM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Boti babu - 31-01-2023, 01:27 AM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Bumba_1 - 31-01-2023, 10:43 AM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 31-01-2023, 11:59 AM
RE: ভয় ২ - বাবান - by ddey333 - 31-01-2023, 10:05 AM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 31-01-2023, 01:26 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Shuhasini22 - 31-01-2023, 01:32 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 02-02-2023, 02:39 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Papai - 31-01-2023, 09:38 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 02-02-2023, 02:36 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by nextpage - 02-02-2023, 01:22 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 04-02-2023, 12:27 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 06-02-2023, 10:05 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by ddey333 - 07-02-2023, 04:53 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 08-02-2023, 01:13 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Avishek - 07-02-2023, 06:20 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Papai - 07-02-2023, 10:20 PM
RE: ভয় ২ - বাবান - by Baban - 12-11-2023, 12:41 AM



Users browsing this thread: 26 Guest(s)