Thread Rating:
  • 159 Vote(s) - 3.41 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
WRITER'S SPECIAL গোলকধাঁধায় গোগোল (সমাপ্ত)
আগুন আর কতোটুকু পোড়াতে পারে? সীমাবদ্ধ তার ক্ষতি করার ক্ষমতা, সীমিত তার বিনাশের প্রচেষ্টা। কিন্তু মন .. মন‌ যখন এক অবশ্যম্ভাবী ক্ষতির আশঙ্কায় জ্বলে-পুড়ে শেষ হয়ে যায়, তখন তার না থাকে কোনো সীমানা, না থাকে কোনো পরিমাপ। দেহের আগুনে পুড়লে তবু কিছু থাকে .. হোক না তা শ্যামল রঙের ছাই। কিন্তু মনের আগুনে পুড়লে অবশিষ্ট আর কিছু থাকে না‌ .. পুরোটাই শূন্য, পুরোটাই ফাঁকা। নানারকম চিন্তার গোলকধাঁধায় তলিয়ে যেতে যেতে কোথায় যেন হারিয়ে গেছিলো গোগোল।


"গোগোল দাদা .." টগরের গলার আওয়াজে ঘোর কাটলো গোগোলের।

"এইতো .. আমার ফরফরানির ঘুম ভেঙেছে .." টাগরের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো গোগোল।

- "আবার ওই কথা? আমাকে একদম ফরফরানি বলবে না তো .. আমি পছন্দ করি না  .." 

- "বলবো .. বলবো .. বলবো .. একশো বার বলবো .."

- "বুড়ো বয়সে আমার হাতে মার খাওয়ার ইচ্ছা হয়েছে নাকি?"

গোগোল আর টগরের কথোপকথনে পূর্বের ন্যায় সেই একইভাবে কপট রাগ দেখিয়ে কথাগুলো বললো টগর। কিন্তু সেই কথায় আগের মতো জোর ছিলো না .. যেন অতি কষ্টে গভীর থেকে গভীরতর কোনো গহ্বর থেকে সে বের করে আনার চেষ্টা করছিলো তার গলার স্বর। তারপর একসময় দু'জনেই হেসে উঠলো।

 "তোকে কোনোদিন বলিনি, আজ একটা কথা বলবো টগর? তোকে না রাগাতে আমার খুব ভালো লাগে। এমনিতেই তোকে খুব সুন্দর দেখতে, তবে রাগলে তোকে আরো সুন্দর দেখায়।" হাসতে হাসতে বললো গোগোল।

- "আমাকে সুন্দর দেখতে লাগবে .. তাই বুঝি আমাকে তুমি রাগাও সবসময়?" 

- "কি জানি .. হয়তো তাই .. কিংবা হয়তো তোকে প্যাম্পার করতে আমার ভালো লাগে .. সেই জন্য .."

"আমাকে একটু উঠিয়ে বসিয়ে দেবে গোগোল দাদা?" গোগোলের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করলো টগর।

টগরের পিছনে একটা বালিশ রেখে সাপোর্ট দিয়ে ওকে ধীরে ধীরে উঠিয়ে বসালো গোগোল। "একটা কথা বলবো, রাখবে?" জিজ্ঞাসা করলো টগর।

- "হ্যাঁ রাখবো .. বল .."

- "এই পৃথিবীতে হিয়া দিদি তোমাকে যতটা ভালোবাসে, ততটা বোধহয় আর কেউই বাসেনা। তুমি কিন্তু ওকে কোনোদিন কষ্ট দিও না। ওকে সুখী করো, কেমন?"

- "এসব কথা এখন থাক টগর। তুই এখনো ছোট, তাই জীবনের জটিলতা বুঝিস না। আমার জীবনের মানে পাল্টে গিয়েছে এখন। সত্যের সম্মুখীন হতে হবে এবার আমাকে।"

- "মানে?" 

- "এখন নয় .. তুই সুস্থ হয়ে ওঠ, তোকে সবকিছু .. বলবো।"

- "আমার আর সুস্থ হয়ে ওঠা হবে না গো গোগোল দাদা। আমার প্রাণশক্তি ধীরে ধীরে কমে আসছে আমি এটা বেশ বুঝতে পারছি। বাবার শরীরের অবস্থা একদম ভালো নেই। তার উপর আমার যদি কিছু হয়ে যায় বাবার কি হবে আমি জানিনা। শিউলিটা এখনো অনেক ছোট। ওকে একটু দেখো প্লিজ .."

"এটাও তোকে বলে দিতে হবে টগর? আমি .. আমি .." আর কিছু বলতে পারল না গোগোল। গলা ধরে এলো তার।

"জানো তো গোগোল দাদা .. আমি চাইনি এভাবে বিদায় নিতে। এই পৃথিবীটা কত সুন্দর, বলো! আমি বাঁচতে চেয়েছিলাম গোগোল দাদা। চাইনি মায়া ভরা তোমার ওই দু-চোখে অশ্রু ঝরাতে। চাইনি এক পলক দেখার জন্য আকাশের দিকে চেয়ে থাকতে। চেয়েছি সকালবেলা শিশির ভেজা ঘাসে পা ভিজাতে। আমি চাইনি এইভাবে মৃত্যুর প্রহর গুনতে। চাইনি এই চেনা জীবনের ভিতর দিয়ে বয়ে যাওয়া অচেনা পথের দিকে চেয়ে থাকতে। আমি চাইনি মরা কোনো নদীর বুকে হাঁটতে। চাইনি গরম বালিতে পা পোড়াতে। চেয়েছি ঝর্ণায় ফুলেফেঁপে ওঠা জলে হাবুডুবু খেতে। কিন্তু যা চাই, তা তো এ জন্মে আর পাওয়া হবে না। যদি তোমার খুব আপত্তি না থাকে, তাহলে আমায় একটু জড়িয়ে ধরবে গোগোল দাদা? বিদায় বেলায় তোমার স্পর্শসুখ অনুভব করতে চাই আমি।" গোগোলের দিকে নিজের দুই হাত বাড়িয়ে তার চোখে চোখ রেখে কথাগুলো বললো টগর।

"ও মা গো .. এভাবে বলিস না প্লিজ। আমি আর সহ্য করতে পারছি না রে .." এই বলে টগরকে জড়িয়ে ধরে হাউ হাউ করে কেঁদে ফেললো গোগোল।

"বিশ্বাস করো গোগোল দাদা .. আমি চাইনি তোমার দুঃখের কারণ হতে। আমি তো চেয়েছিলাম তোমার জীবনের সঙ্গী হতে। চাইনি মনে মনে দুঃস্বপ্ন দেখতে, ঘুমের মধ্যে হঠাৎ জেগে উঠতে। আমি তো চেয়েছি আলতো ভিজে তোমার ঠোঁটে আমার ঠোঁট রাখতে। আমি চাইনি চাঁদনী রাতে রাত জাগা পাখির মতো একা একা বসে থাকতে। চাইনি আলো ভরা জ্যোৎস্নার মাঝে নিরবে কাঁদতে। চেয়েছি মরুভুমির বুকে বৃষ্টি নামাতে। আমি চাইনি পথহারা পথিক হতে। চাইনি কাঁটাতারে আবদ্ধ থাকতে। আমি তো চেয়েছিলাম পাথরের বুকে ফুল ফোটাতে।" টগরের শেষ কথাগুলো শুনতে পেলো না গোগোল। কারণ সে কথাগুলো বলতেই পারেনি .. বলার আগেই তো ..

অবশেষে আসন্ন মৃত্যুর ঘোর চারিপাশে বনবন করে ঘুরতে ঘুরতে ক্রমশ এগিয়ে আসছে কাছে, আরো কাছে। মৃত্যুর হাতছানি .. কুহকীর সুরে। সব স্বপ্ন ক্ষয়ে ক্ষয়ে শেষে, সম্মোহন আর আচ্ছন্নতায় ভেসে।‌ মৃত্যুর বার্তা আসে বর্ষায় ভেজা সেই একাকিনী শালিকের মতো। অস্পষ্ট জীবনের দৃশ্য ছিঁড়েখুঁড়ে, মায়ার দৃশ্যে ঘিরে প্রবল শেকড়ে জড়িয়ে ধরে। একরত্তি মেয়েটা কিভাবে ফেরায় তাকে! বন্দরে নোঙ্গর ফেলা হয়ে গিয়েছে যে! এত নিশ্চয়তা! এত অনন্ততা! পঞ্চমীর চাঁদের সাথে তাকে বোধছানি দিয়ে ডাকে। সব তৃষ্ণা মিটে গিয়ে, সব বোধবুদ্ধি বিচক্ষণতা কেমন যেন গুলিয়ে যায়। চাঁদ যেতে যেতে নুয়ে পরে, সাধ জাগে এক জাঁকজমক মৃত্যুর। 

সারা জীবন ধরে শুধু বাঁচার জন্য লড়াই, অথচ কেউ ফিসফিস করে বলে না, আরও একটু পথ চলা বাকি। মৃত্যু তো আছে, ছিলো, থাকবে .. এটা তো চিরন্তন সত্য .. কেউ বলে না। যে কোকিলটা এইমাত্র উড়ে গেলো, বসন্তের মৃত্যুতে সেও ব্যাথাতুর। সে আর এই জীবনে কাউকে বিরক্ত করতে চায় না, কারোর গলগ্রহ হতে চায় না। তবুও যাওয়ার আগে থমকে দাঁড়ায় চিলেকোঠার শেষ প্রান্তে। হঠাৎ করেই চোখ ধাঁধিয়ে যায়, সবকিছু অন্ধকার। যে ধূসর ঘুঘুটা  
মৃত বৃক্ষবন ছেড়ে এসেছে, সেও উড়ে উড়ে ফিরতে চায় তার ফেলে আসা বাসায়। মৃত্যুর ডাক যে এবার খুব কাছে চলে এসেছে .. আর যে থাকার কোনো উপায় নেই। সব বাধা, সব বিপত্তি, সব মায়া অতিক্রম করে চলে গেলো টগর। পুনরায় তাকে সযত্নে বিছানায় শুইয়ে দেওয়ার আগে তার কপালে সস্নেহে একটা চুম্বন করলো গোগোল।

★★★★

চিরকালের জন্য সে চলে গিয়েছে জেনেও তার খুব চেনা, খুব কাছের মানুষটির গভীর ক্ষতে সে প্রলেপ লাগায় গোলাপের পাঁপড়ি ছড়িয়ে। খুঁজে চলে শেষ মুহূর্তের চুম্বন এবং নিবিড় আলিঙ্গন। স্নেহের তরী বেয়ে জলজ প্রেম ভেসে গেছে উজানি স্রোতে। ডাঙায় যাপন নিয়ে পাথরের ছায়াতলে শরীর খোঁজে কিঞ্চিত শান্তি। অথচ অসহ্য রোদে পুড়ে গেছে সমগ্র ছায়াতল। সরলরেখায় লুট হয়েছে যাবতীয় আহরণের মধু। অসাড় কঙ্কাল দাহ হচ্ছে লেলিহান প্রণয়ের অনলে।

দাহকার্য শেষ করে ফেরার পথে গোগোল একটাও কথা বলেনি কারোর সঙ্গে। শ্মশানে মেয়েরা যায়নি শুধুমাত্র শিউলি ছাড়া। ওকে হাজার বারণ করা সত্ত্বেও ও শোনেনি .. শিউলির কান্না থামানো যাচ্ছিলো না। এদিকে সবাই চাইছিল স্বপনবাবু একটু হলেও চোখের জল ফেলুক .. কিন্তু তিনি শোকে দুঃখে পাথর হয়ে গিয়েছিলেন। গোগোল ফেরার পর সুজাতা তাকাতে পারছিল না তার দিকে। একটা অপরাধবোধ গ্রাস করছিল তাকে .. যে মেয়েটা আজ ইহকালের মায়া ত্যাগ করে চলে গিয়েছে, তার সম্পর্কেই তো কাল কটু কথা বলেছিল সে। হিয়া গোগোলের পাশে বসে তার মাথায় গায়ে হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলো পরম যত্নে।

"যাক বাবা, সব ভালোয় ভালোয় মিটে গেছে। না মানে আমি বলতে চাইছি .. অনির্বাণ যে ওই দুজনের মৃত্যুর জন্য দায়ী নয়, এটা তো ইন্সপেক্টর সেনগুপ্ত নিজের মুখেই তখন বললেন। তার উপর টগরও চলে গেলো, যদিও সেটা খুব কষ্টের। জানি এসব কথা বলার এটা আইডিয়াল প্লেস এবং আইডিয়াল সিচুয়েশন নয়।তবুও আমি এখানে একটা এনাউন্সমেন্ট করতে চাই। এতদিন আমি ওদের, আই মিন হিয়া আর অনির্বানের বিয়ে এমনকি মেলামেশারও ঘোরতর বিরোধী ছিলাম। কিন্তু, ওদের বিয়েতে এখন আর আমার কোনো আপত্তি নেই।" হঠাৎ করে কাবেরী দেবীর এইরকম একটা অপ্রত্যাশিত উক্তিতে হিয়া এবং ইন্সপেক্টর সেনগুপ্ত কিছু একটা বলতে যাচ্ছিলো।

কিন্তু তাদের কিছু বলার আগেই গোগোল বলে উঠলো "কিন্তু এই বিয়ে তো আর সম্ভব নয়!" 

"মানে? এতদিন তো হিয়ার জন্য পাগল ছিলে। এখন আমি বলছি বলে, দর নিচ্ছ নাকি?" নিজের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে পুনরায় এই উক্তি করলেন কাবেরী দেবী।

"আপনি কিন্তু অনেকক্ষণ থেকে বাড়াবাড়ি করে চলেছেন কাবেরী দেবী .. দিস ইজ টু মাচ। এবার আপনি নিজের মুখটা বন্ধ রাখুন। না হলে আমি বাধ্য হবো আপনাকে এখান থেকে চলে যেতে বলতে।" বিরক্তি প্রকাশ করে কথাগুলো বললেন ইন্সপেক্টর সন্দীপ।

"এতক্ষণ ধরে আপনারা অনেকেই অনেক কথা বলে গেলেন। কিন্তু বিশ্বাস করুন, এইসব কোনো কথাতেই আমার কিচ্ছু যায় আসে না। কারণ, আমি আবার হেরে গেলাম। জীবনযুদ্ধে আমি আবার পরাজিত হলাম .. টগরের চলে যাওয়াটা আমি কিছুতেই মন থেকে মেনে নিতে পারছি না। তাছাড়া যেদিনকে মামণির কাছে আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই যে ওদের বিরুদ্ধে, মানে ওই কামরাজ আর মিস্টার সামন্তর বিরুদ্ধে আমি অস্ত্র তুলতে পারবো না বা ওদের কোনো ক্ষতি করতে পারবো না, সেদিন থেকে আমার ভেতর প্রতিশোধের আগুনটা ধীরে ধীরে নিভে যেতে থাকে। আমি ওদের সম্পর্কে ধীরে ধীরে উদাসীন হয়ে পড়ছিলাম। অথচ আমার ভিতরে একটা পরস্পরবিরোধী সত্তা কাজ করছিলো। একদিকে আমি ভাবছিলাম ঠিকই তো, আমি কেনো প্রতিশোধের আগুনে জ্বলছিলাম এতদিন? ভবিষ্যতটা কেনো নষ্ট করবো আমার? আমি তো ভদ্রবাড়ির সন্তান, আমার তো এইসব শোভা পায় না। অন্যদিকে মনে পড়ে যাচ্ছিল আমার মা আর বাবার সেই ভয়ার্ত করুন মুখটা। আমি কি দোষ করেছিলাম বলতে পারেন? আমার শৈশব কি দোষ করেছিলো? আমার শৈশব কৈশোর শেষ করে দিয়েছে ওই দুটো লোক। এমনকি আমার যৌবনও ধ্বংসের মুখে .. একটা অপরাধবোধ গ্রাস করছিলো আমাকে .. তার কারণ .." এইটুকু বলেই থেমে গেলো গোগোল।

"তার কারণ? থেমে যাবেন না প্লিজ অনির্বাণ বাবু .. বলুন .. আপনার মনে যা কিছু আছে সব খুলে বলুন আজ। এটাই প্রকৃত সময় নিজেকে উন্মুক্ত করার। তাহলেই আপনি মুক্তি পাবেন ঘন অন্ধকারাচ্ছন্ন গোলকধাঁধা থেকে, মনের অপরাধবোধ থেকে, নতুন জীবনের সন্ধান পাবেন। না হলে এই ভাবেই একা একা গুমড়ে মরতে হবে আপনাকে। স্পিক আউট মিস্টার অনির্বাণ মুখার্জি .." উচ্চকন্ঠে বলে উঠলো সন্দীপ। 

"অলিখিত নিয়ম অনুযায়ী .. আমি ভেঙ্গে পরে যাই আবার কুড়িয়ে জড়ো করি নিজেকে। আগামীর ভবিষ্যৎ গন্তব্যে পৌঁছাতে রূপকথার গল্পের মতো স্বর্গ সুতোর বাঁধনে ঝুলে থাকে প্রেম। নগ্ন রাতের খোলস ভাঙে নিশিথের জোনাকিরা অন্ধকারে বুকের উঠোন জুড়ে খেলে অনন্ত আদিম প্রাচীনত্ব। মায়া জালে আটকা পরে স্মৃষ্টির উল্লাসে মেতে উঠি সেই আমি। আবার পৃথিবী জন্ম দিয়ে যায় চেনা মুখের অবয়ব। আমার কিছু করার নেই মামণি আমাকে ক্ষমা করো, হিয়া আমি জানি, তুমি আমাকে ক্ষমা করতে পারবে না, কিন্তু তবুও চেষ্টা করো ক্ষমা করার। আমাকে বলতেই হবে .. এখন এই মুহূর্তে না বললে কথাগুলো আমি আর কোনোদিন বলতে পারবো না। একটু আগেই তুমি বলছিলে না মামণি .. আমার গোগোল কোনোদিন কোনো অন্যায় করতেই পারে না! তোমার গোগোল অন্যায় করেছে মামণি। অন্যায় করেছে তোমার লাটসাহেব .. হিয়া .. শুনছো তুমি? নো ওয়ান উড হ্যাভ বিন হ্যাপিয়ার দ্যান মি, যদি এই দুই দুর্বৃত্তকে আমি নিজের হাতে মারতে পারতাম। কিন্তু আমার দুর্ভাগ্য এই কাজ আমি করিনি। তবে আমার মা-বাবার মৃত্যুর কারণ এবং আমাদের পরিবারটা শেষ হয়ে যাওয়ার পিছনে যাদের হাত ছিলো তাদের একে একে আমি সরিয়েছি, হ্যাঁ আমি নিজের হাতে সরিয়েছি তাদের এই পৃথিবী থেকে।" চিৎকার করে কথাগুলো বললো গোগোল।

"এসব কি বলছো তুমি লাটসাহেব? তোমার মাথার ঠিক আছে তো?" বিস্ময় প্রকাশ করে বললো হিয়া।

"আমি এতক্ষণ ধরে যা বলে চলেছি এবং এরপরে যা ব্যক্ত করবো সব সজ্ঞানে বলছি এবং বলবো। যারা আমাদের পরিবারকে শেষ করেছে, প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে যাদের হাত আছে আমার মা এবং বাবার মৃত্যুর পেছনে .. তাদের একে একে শেষ করেছি আমি। প্রথমে দিদা, মানে আমার মায়ের মামী .. ওই যে বসে আছে আমার মামণি .. ওনার নিজের পিসি। তারপর গুরুকুলের প্রধান শিক্ষক, না না .. প্রাক্তন প্রধানশিক্ষক নিশীথ বটব্যাল। আর সব শেষে দুই নরপিশাচ ওসমান এবং জ্যাকি .. এদের সবাইকে খুন করেছি আমি নিজের হাতে। এরা কি করে, কবে, কোথায়, কখন মারা গিয়েছে পুলিশ রেকর্ড দেখলেই সেগুলো পেয়ে যাবেন ইন্সপেক্টর সেনগুপ্ত। আমাকে অ্যারেস্ট করতে পারেন অথবা আপনার যা খুশি তাই করতে পারেন .. আই ডোন্ট কেয়ার। তবে একটা কথা আপনি ঠিকই বলেছিলেন সন্দীপ বাবু .. মনের ভেতরটা অনেক হাল্কা লাগছে এখন আমার।" 

সেই মুহূর্তে ইন্সপেক্টর সেনগুপ্তর ফোনটা বেজে উঠলো। কলটা রিসিভ করে দু-একটা কথা বলার পর ফোনটা রেখে দিয়ে বললেন "মিস পর্ণার জ্ঞান ফিরেছে আর মিস্টার আলম এখন বিপদমুক্ত। কাল রাতে এক্সাক্টলি ওখানে কি ঘটেছিল, এটা জানার জন্য ওদের দু'জনের বয়ান ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।" 

(ক্রমশ)


ভালো লাগলে আপনাদের মূল্যবান মতামত জানাবেন
লাইক এবং রেপু দিয়ে উৎসাহিত করবেন

[Image: Animation-resize-gif-f3b601eb23d95beeb4e...911ac0.gif]


[+] 14 users Like Bumba_1's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.


Messages In This Thread
RE: গোলকধাঁধায় গোগোল (চলছে) - by Bumba_1 - 30-01-2023, 09:05 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)