Thread Rating:
  • 58 Vote(s) - 2.69 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
সেক্টর ফাইভের সেক্স
#88
# # ৩৭ # #

গবান বাঁচিয়ে দিলেন মীনাকে। বা ভগবানের রূপাধারীনী আন্নাবুড়ি। গ্রামের একটেরে থাকে। আধপাগলি বুড়ি সারাদিনই জঙ্গলে ঘুরে বেড়ায়। ফলটা, লতাটা, পিঁপড়ের ডিম কুড়িয়ে বেড়ায়। আগের দিন রাতের গোলাগুলির আওয়াজ কিছুই যায় নি বুড়ীর কানে। সন্ধাবেলাতেই হাঁড়িয়া চাপিয়ে চলে গিয়েছিলো অচৈতন্যতার জগতে। রাত না কাটতেই জঙ্গলে বেরিয়ে পড়েছিলো বুড়ী, সারাদিনের আহার্য্য সংগ্রহের জন্য। ভোরবেলাতেই জংলা মুরগীগুলো ডিম দেয়। সকাল সকাল না নিতে পারলে, শেয়ালগুলো খেয়ে নেয়, কিংবা অন্য কেউ নিয়ে নেয়। সব হারিয়ে গরীব আদিবাসিদের এখন শেষ ভরসা এই জঙ্গল, যে তাঁদের মাতৃসমা।

নকশাল না খ্যাকশিয়াল বলে, জঙ্গলের গভীরে তাদের ডেরায় যাওয়ার সাহস দেখায় না কেউ। আন্নাবুড়ীর কিন্তু ভয়ডর নেই। টরটর করে সে পৌঁছে যায় সব জায়গায়। পিঠে বন্দুকবাঁধা ছেলেগুলোও তাঁকে বাঁধা দেয় না; বরং ভালোই বাসে। প্রথম প্রথম তাঁকে একটু পুলিশের স্পাই ভেবে একটু সন্দেহের চোখে দেখলেও, ক্রমশঃ সবাই বুঝতে পেরেছে, এই পাগলি বুড়ী এক্কেবারেই বিপদ্জনক নয়। দু’বেলা দু’মুঠো জোগাড় করা ছাড়া এর আর কোনো ধান্দাই নেই। তাই ছেলেরা মাঝে মাঝেই কমিউনের হেঁশেল থেকে খাবার ম্যানেজ করে দেয়। তোবড়ানো গাল আর অস্থিচর্মসার শীর্ণ হাত তুলে বিড়বিড় করে আশীর্বাদ করে বুড়ি।

যদিও এই ব্যাপারটা একদমই না-পসন্দ কমরেড মাহীর। কমরেড শেখরনের শিক্ষায় দীক্ষিত মাহী মনে করেন দরিদ্রকে ভিক্ষা দেওয়া বুর্জোয়া মানসিকতা। বরং তাকে অভুক্ত রেখে তার খিদের আগুনটাকে লড়াইয়ের স্ফুলিঙ্গে পরিনত করাই একজন মার্ক্সবাদীর পরম কর্তব্য। এইভাবেই দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়বে বিপ্লবের দাবানল। যদিও একজন ক্ষুধার্ত, শারীরিক ভাবে অশক্ত বৃদ্ধাকে সাহায্য করার বিষয়ে বিদেশী মার্ক্সসাহেবের বৈপ্লবিক ব্যাখ্যা অনেকেরই মাথায় ঢোকে না।

ভোরের সূর্য্য বোধহয় গতকাল রাতের পাপাচারের জন্য উদিত হতে লজ্জা পাচ্ছিল। সেই আলো-আঁধারিতে আন্নাবুড়ি আবিস্কার করলো মীনার জীবন্মৃত দেহ, তার দেহনির্গত গর্ভস্রাব ও শোণিতপ্রবাহে মধ্যে। বুড়ির পক্ষে সম্ভব ছিল না, মীনার ওই দেহ তুলে নিয়ে যাওয়ার। অনেকক্ষণ পর কিছু রাখাল বালকের সাহায্যে, বাঁশের মাচা মত কিছু একটা বানিয়ে, মীনাকে ঘরে এনে তুললো আন্নাবুড়ি।

গোটা একটা চালকুমড়ো দক্ষিণা কবুল করে গ্রামের একমাত্র কবিরাজ কাম ওঝা কাম গুণীন, লখাই মাঝিকে মীনার চিকিৎসার ভার নিতে রাজী করালো বুড়ি। যৌবনে মাঝির সাথে কোন একটা রসালো সম্পর্কের দিব্যিও দিলো বুড়ী। গুণীনের হাতযশেই হোক, বা পুরুষানুক্রমে শেখা কবিরাজী বিদ্যার জোরেই হোক, কিংবা আদিবাসীদের ভগবান বোংগা বুড়ুর আশীর্বাদেই হোক, শরীর থেকে অপর্যাপ্ত রক্তক্ষরণ হওয়ার ফলে বাঁচবার বিন্দুমাত্র আশা না থাকা স্বত্তেও, মৃত্যুর মুখ থেকে বেঁচে ফিরে এলো মীনা। একজন গ্রাম্য হাতুড়ে চিকিৎসকের জংলি গাছপালার টোটকা এবং একজন অশিতীপর বৃদ্ধার অক্লান্ত সেবা পুনর্জন্ম দান করলো মীনার।

আস্তে আস্তে চিকিৎসায় সাড়া দিলেও, শারিরীক ভাবে খুবই দুর্বল ছিলো মীনা। প্রথম যেদিন শরীরটাকে টেনে হেঁচড়ে ঘরের বাইরে বার করতে পারলো, দিকচক্রবালে সেদিন অস্তমিত সূর্য্যের লালিমার সাথে সাজুয্য রেখে উঠেছে কালবোশেখীর ঝড়। দামাল হাওয়ায় মিশে আছে লাল মাটির অবাধ্যতা। আর সেই ধুলোর পাহাড় ভেদ করে আসছে এক কালপুরুষ, যে আগামীদিনে মীনার জীবনটাই পাল্টে দেবে। তার এই “নেই কিছুর” অমাবস্যায় ভরা জীবনে আনবে “সব পেয়েছির” রামধনু। সে আর কেউ নয়, মীনার স্বামী বিপ্লবের বাল্যবন্ধু কামেশ্বর সিংহ।
ভালবাসার ভিখারি
[+] 3 users Like দীপ চক্কোত্তি's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: সেক্টর ফাইভের সেক্স - by দীপ চক্কোত্তি - 22-01-2023, 09:55 PM



Users browsing this thread: 3 Guest(s)