18-01-2023, 08:30 PM
সপ্তদশ পর্ব
খুব হাঙ্গামা হয়েছিলো সেবার পাড়ায়। সুচরিতার চিল-চিৎকারে জড়ো হয়েছিলো প্রথমে আশেপাশের বাড়ির মেয়ে-বউরা। তারপর তাদের সম্মিলিত আর্তনাদে এগিয়ে এলো পূর্বাচল কিশোর সংঘের ছেলে-ছোকরারা। এরপর খবর পেয়ে উপস্থিত হলেন, ততোটা কিশোর নয়, এলাকার নেতারা। এবং সবশেষে এলেন লাল্টুদা। তিনি আশার আগেই কিশোর, যুবক, আধবুড়োরা মিলে বাড়িওয়ালার বাড়ি ভাঙ্গচুর শেষ করে দিয়েছে। ফ্রিজ, টিভি, গ্যাস থেকে শুরু করে বাসনকোসন, সবকিছু। কিছু ভাঙ্গচুর হয়েছে, বাকিটা লুঠপাট হয়েছে। মার খেয়েছেন প্রৌঢ় বাড়িওয়ালা এবং তার স্ত্রী। রমেন দু-চার ঘা পড়তেই হাত ছাড়িয়ে চোঁচা দৌড়। সেজাতে মাতাল, তালে ঠিক। বাবা-মাকে বাঁচানোর থেকে নিজে বাঁচাই শ্রেয় বলে সে মনে করেছে।
টিউশনি পড়ে ফিরছিলো রমেনের বোন কামনা। এই কামনাকে বাসনা করতো পাড়ার ছেলে-বুড়ো সবাই। কিন্তু রমেনের ভয়েই কেউ খাপ খুলতে পারতো না। আজ একদম ক্ষুধার্ত হায়নার মতো ঝাপিয়ে পড়লো তারা। মারধোর বিশেষ খায় নি কামনা। কিন্তু তার সালোয়ার-কামিজের বিশেষ বিশেষ জায়গা ছিড়ে-খুড়ে একাকার। তার বারুইপুরি পেয়ারার মতো ম্যানাদুটি একাধিক পুরুষের কঠিন হাতে পেষিত হতে লাগলো। যারা তার স্তনের নাগাল পেলো না, তারা সালোয়ারের নাড়া ধরে টানাটানি করতে লাগলো। অল্পক্ষণের মধ্যেই কাটা কলগাছের মতো মসৃণ উরু দৃশ্যমান হয় গেলো। কিছুলোক সেটার দখল নিলো আর বঞ্চিতরা পিছনের দিকে গিয়ে তার উল্টানো তানপুরার মতো পাছার খোলের থেকে প্যান্টির খোলস উন্মোচনে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। এক নারীর অমর্য্যাদার প্রতিবাদ করতে এসে অপর এক নারীর অমর্য্যাদা হয়ে গেলো।
এমতাবস্থায় লাল্টুর প্রবেশ। লাল্টু দেখলো কেস বাড়াবাড়ি পর্য্যায়ে চলে যাচ্ছে। এই ছেলেগুলি তারই পালিত জীব। এলাকায় রাজনীতি করতে গেলে এরকম কিছু লুম্পেন পুষতেই হয়। ভোটের সময় মৃত ব্যক্তিরা এদের রুপ ধরে এসে ভোট দিয়ে যান। এলাকা দখল, বিরোধীদের কব্জায় রাখতে এইসব এলিমেন্টদের খুব দরকার। এছাড়া এদের তিনি নিজের প্রোমোটিং এবং সিন্ডিকেট ব্যবসাতেও কাজে লাগান। কিন্তু এখানে যেটুকু হয়েছে, তার থেকে বেশী করতে গেলে কেস জন্ডিস হয়ে যাবে। পুলিস ঢুকে গিয়ে ফালতু কিছু টাকা খিঁচে নেবে। তার থেকে এই ভয়ের বাতাবরণটা বজায় রেখে পার্টিফান্ড এবং নিজের পকেট ভারী করে নেওয়া যাক। মূহূর্তে গেমপ্ল্যান তৈরী হয়ে গেলো তার। এক ঢিলে দুই পাখি নয়, অনেকগুলো পাখি মারার আইডিয়া ভেবে নিলেন তিনি।
প্রথমেই রক্তাক্ত সুচরিতাকে এলাকার নার্সিংহোমে পাঠানোর ব্যবস্থা করলেন তিনি। তারপর কামনাকে কোনোরকমে শয়তানগুলোর হাত থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে ঘরে পাঠালেন। এতে একটা নারীর শ্লীলতারক্ষাকারীর ইমেজ তৈরী হয়ে গেলো তার। যদিও শ্লীলতা শব্দটা কিছুতেই লাল্টুর জিভ দিয়ে বেরোয় না। ‘স’ এ স্লিপ করে যায় সে, তাই সে উচ্চারন করে “স্স্সিলতা”। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ প্রথমে এসব পুলিশ কেস নিতে চায় নি। কিন্তু রিসেপশনের দু-এক পিস কাঁচ ভাঙ্গা হতেই টনক নড়লো তাদের। মা এবং নবজাতক শুশ্রুষা পেলো। এরকম প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও শেষ অবধি জিতে যাওয়া, জন্ম থেকে এটাই ঝুমের নিয়তি। এসটি সিক্সের নিত্যযাত্রী মদনদা শখের হাত-টাত দেখেন। ঝুমের হাত দেখে বলেছিলেন, তার হাতে শনির বলয় আছে। মাঝসমুদ্রে পড়ে গেলেও খড়-কুটো ধরে সে বেঁচে যাবে।