Thread Rating:
  • 114 Vote(s) - 2.66 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
কিছু মনের সত্যি কথা
#অণুগল্প

 
জানেন, এই দুনিয়ায় কেউ কারো হয় না।
বিশেষ করে ছেলেরা।
নইলে, যে মানুষটার জন্য আমি সবকিছু ছেড়ে দিলাম, এমনকি বাবা মা কে ও ছেড়ে চলে এলাম, সে কিনা এরকম করল আমার সঙ্গে?
অথচ কী করিনি আমি ওর জন্য?
যখন প্রায় এক কাপড়ে চলে এসেছিলাম ওর কাছে – কী অবস্থায় ছিল ও? একটা সামান্য শাড়ির দোকানের কর্মচারী। তাও সারাদিন মালিকের মুখঝামটা খেয়ে কাটায়। ক'টা টাকাই বা মাইনে পেত তখন? বস্তির ভাড়া বাড়িতে থাকত।
এক কাপড়ে চলে এসেছিলাম, কিন্তু গয়না গুলো আনতে ভুলিনি। হতভাগা মিনসে তো সেই দেখেই ভয়ে কাঁপতে শুরু করে দিয়েছিল। গয়না বিক্কিরির ব্যবস্থা তো একা হাতে আমিই করেছিলাম। আর সেই টাকা দিয়েই তো ব্যবসা শুরু করেছিলাম আমি। শাড়ির ব্যবসা।
চোদ্দবছর ধরে এত খাটুনির পরে একটু দাঁড়িয়েছে ব্যবসাটা। আগে বাড়ি বাড়ি গাঁটরি ভরে নিয়ে যেতে হতো… এখন তো একটা দোকানও হয়েছে। না, নতুন দোকান না, যে দোকানটায় একসময় ও কাজ করত, সেটাই আমাদের এখন। কিভাবে? থাক, চোদ্দটা বছর ধরে কী কী করেছি সবকিছু আপনাদের বলে দেব নাকি? ইল্লি রে!
তবে, দোকানটা পাবার পর থেকেই মুখপোড়াটা কেমন পালটে গেছে। আগে আমার খেয়াল রাখত খুব। চোখের দিকে তাকালেই বুঝে যেত আমার কিছু চাই কিনা। আর এখন? তাকিয়েই দেখে না আমার দিকে! আর তাকালেও, কেমন একটা ভয়ে ভয়ে… যেন আমি ওকে খেয়ে ফেলব!
মরণ!
একেই বলে "যার জন্য করি চুরি সেই বলে চোর।"
আরে, আমি কি নিজের কথাই ভাবি নাকি সারাক্ষণ? তুমি ছাড়া আমার আছে কে শুনি? তা, তোমাকে ভাল রাখার জন্য যদি আমাকে একটু বাঁকা পথ ধরতে হয়, হবে! সেজন্য তুমি আমাকে এত ভয় পাবে?
আর, ভয় পেয়ে কি করছে? ওই নেকি মাগির কাছে ঘেঁষে ঘেঁষে থাকছে। ওকে দামী দামী শাড়ি দিচ্ছে দোকানের। অথচ আগে যখন মহাজনের কাছ থেকে শাড়ি কিনে আনতাম, এক একটা শাড়ি বিক্কিরি করতেই চাইত না ও। বলত ওগুলো নাকি আমাকে বেশি মানায়! মনখারাপ করত। বারবার বলত "কেন যে তুমি আমার দোকানে এলে আর সেদিনই আমাকে মালিক অপমান করছিলেন সেটা দেখে নিলে…"। আমি থামিয়ে দিতাম ওকে, আমার নিজস্ব উপায়ে।
তখন অভাব ছিল, তবু জানতাম আমিই ওর জীবনে একমাত্র। নারী -টারী না, একমাত্র সবকিছু।
আর সেই লোকটা এখন… আমার থেকে দূরে চলে গেছে। আমাকে দেখিয়ে দেখিয়েই সেদিন মাগিটার কাছে গেল। আমি তাকিয়ে আছি… তারমধ্যেই আমারই দোকানের একটা শাড়ি পরিয়ে দিল… ছিঃ! ঘেন্না ঘেন্না!
বাপের বাড়ি যাবার মুখ নেই আমার, নাহলে একটু কাঁদাকাটির জায়গা অন্তত থাকত। কাকেই বা বলতাম আমার এই কষ্টের কথা। স্বামী ভয় পায়, আবার আমাকে দেখিয়ে দেখিয়ে একটা বেলাজ মেয়েছেলেকে নিয়ে পড়ে থাকে… বলতে তো লজ্জাও লাগে, নাকি?
তাও হাল ছাড়িনি। আমাদের এখানের কালীমন্দিরে গেছিলাম, পুরুতমশাই হাত দেখেন ভাল। সব জানালাম। উনি পাত্তাই দিলেন না। বললেন "তোর মাথা খারাপ হয়েছে, তুই বাড়ি যা।"
কেউ মানতেই চায়না ওর সব কান্ডের কথা। চোদ্দবছর ধরে দেখছে তো ওকে, আর আমাকেও। তাই…
তবে অনেক সহ্য করেছি। আজ ওর একদিন কি আমার একদিন।
আমার সামনে এতদিন নোংরামো করে এসেছে। আজ আমি সব শেষ দেখব। ধুতরোর বিষ কি করে, আমিও জানি…
আরে, প্রণব সমাদ্দারের মতো ঝুনো ব্যবসায়ী কিছু বুঝতে পারল না আর বাদল সরকার তো নস্যি!
আমার সামনে অন্য একজনকে নিয়ে মাতামাতি!
বোঝ শালা এবার!
আমি কিচ্ছু চাইনি কোনোদিন। যা করেছি সব নিজে। সব।
আর এবারেও নিজেই করলাম।
হতভাগা, আমার বদলে অন্য কাউকে ভালবাসবি? শাড়ি খুলবি আবার পরাবি?
কিছুতেই মানব না।
সে যতই দোকানের… ওই কি যেন বলে… ম্যানে..ম্যানি…ম্যানিকুইন হোক না কেন!
 

[+] 1 user Likes ddey333's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: কিছু মনের সত্যি কথা - by ddey333 - 15-01-2023, 09:31 PM



Users browsing this thread: 17 Guest(s)