Thread Rating:
  • 159 Vote(s) - 3.41 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
WRITER'S SPECIAL গোলকধাঁধায় গোগোল (সমাপ্ত)
[Image: Polish-20230107-164633806.jpg]

(১৩)

কিছু ঘটনা, কিছু পরিস্থিতি মানুষের জীবনে এতটাই প্রভাব ফেলে যে কালের আবর্তে ঘুরতে ঘুরতে তার জীবনে এমন একটি সময় আসে, যখন কাছের মানুষগুলিকে অচেনা মনে হয়। পছন্দের প্রিয় রঙিন ক্যানভাসটায় সাদা-কালো রঙের সাম্রাজ্য স্থাপিত হতে চায়। প্রিয় ক্ষনটিতে ব্যাস্ততার গ্রহন লেগে থাকে একটানা। পছন্দের সেই সুরটিতে বেতারের সিগন্যাল জটিলতার মতো ঝিরঝির শব্দরা গ্রাস করে ফেলে। এমনকি প্রিয় খাবারের রেসিপি ভুলে যাবার মতো অভূতপুর্ব ঘটনা ঘটে যায় তখন। গোগোলেরও সেই অবস্থায় হয়েছে। 

এই ক'দিনের মধ্যে তার পৃথিবীটাই যেন বদলে গিয়েছে। সুজাতা আর হিয়ার প্রবল উপস্থিতি সত্ত্বেও প্রতিনিয়ত কোথাও যেন একটা ছন্দপতন ঘটছিলো তার জীবনে। মাঝে মাঝেই একটা যেন অজানা অপরাধবোধ গ্রাস করতে থাকে তাকে, কাউকে নতুন করে যেন জানার ইচ্ছে হয় তার। কিন্তু কিসের অপরাধবোধ .. কার জন্য তার মনের এই ব্যাকুলতা .. এইসব প্রশ্নের কোনো সদুত্তর পায়না সে।

ভালবাসি বলে প্রতিটা দিন তোমায় দিয়েই শুরু করতে চাই। সকালে আড়মোড়া ভেঙে ভেঙ্গে প্রথমে তোমাকে খুঁজি। ভালবাসি বলেই তপ্ত রোদে অনুভব করি তোমার ঘামে ভেজা ক্লান্ত মুখ আমি মুছিয়ে দিচ্ছি আমার নরম শাড়ির আঁচল দিয়ে। ভালবাসি বলে
প্রতিটা মুহুর্ত তোমায় দিতে চাই। যখন তুমি আড়াল হও, পাগলের মতো খুঁজে বেড়াই তোমাকে। তাই তো তোমার উপস্থিতিতেই নিজেকে খুঁজে পাই। ভালবাসি বলেই তো তোমাকে হারাবার ভয় তাড়া করে সর্বদা। রাতে যখন দুঃস্বপ্নে দেখি তোমাকে হারিয়ে ফেলছি, তখন ভয়ে গা টা শিউরে ওঠে। ভালবাসি বলে তোমার আর আমার মাঝের এই দূরত্ব আর মনে সয় না। মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় সবকিছু ছেড়ে দিয়ে পাকাপাকি ভাবে ছুটে যাই তোমার কাছে। জানিনা না কেন বেশিক্ষন তোমার ওপর রাগ করে থাকতে পারিনা। যেটা হয় সেটা অভিমান। চাই আরো বেশি ভালোবাসো এই অভিমানীকে। আসলে ভালোবাসি বলেই তো এত অভিমান আর অভিমান তো করি ভাঙ্গানোর জন্যই। তুচ্ছ কিছু হলেও হয়ে যাই দিশেহারা। তখন নিঃশ্বাস নিতেও যে কষ্ট হয়। গুলিবিদ্ধ একটা পাখির মতো ছটফট করতে থাকি। এতো ভাবানা, এতো কল্পনা, এতো স্বপ্ন, এতো হারানোর ভয়, এতো অভিমান .. কেন? ভালবাসি বলেই .. শুধু তোমাকে। সেদিন আমাদের বাড়িতে তোমাকে ভুল বুঝে অতগুলো কথা শুনিয়ে দেওয়ার জন্য আই এ্যাম সরি লাটসাহেব।  তুমি তো জানো আমি এইরকমই .. আমার খুব তাড়াতাড়ি অভিমান হয়, আবার খুব তাড়াতাড়ি গলে জল হয়ে যাই। কিন্তু তুমি কেন অভিমান করে আছো সেই দিনের পর থেকে? কই আমাকে তো একবারও নিজে থেকে ফোন করলে না?

হিয়ার এই মেসেজটা পেয়ে সে যতটা না অবাক হলো, তার থেকে অনেক বেশি অপরাধবোধ জাগলো গোগোলের মনে। তৎক্ষণাৎ সে ভাবলো হিয়াকে এখনই ফোন করে বলবে, "আমি জানি তো হিয়া, তুমি অভিমান করেছো এবং অভিমান করার যথেষ্ট কারণ ছিলো। তোমার জায়গায় আমি থাকলে ওই কথাগুলো শোনার পর আমিও ওই ভাবেই রিএ্যাক্ট করতাম। কিন্তু তোমাকে  কি করে সান্ত্বনা দিই বলো, যখন নিজের হৃদয়ে জ্বলছে অশান্তির আগুণ! অথচ বিশ্বাস করো এর কারণ আমি জানি না। ঠিক যেন মনে হচ্ছে আমার হৃদয় যে অশান্তির আগুন জ্বলছে, সেই আগুনের দাবানলে আমি পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছি। অথচ এর থেকে মুক্তির পথ খুঁজে পাচ্ছি না। আসলে যার মনে বিন্দুমাত্র শান্তি নেই সুখ নেই সে অন্যকে কি করে দেবে সুখের ঠিকানা! আমাকে ক্ষমা করো হিয়া। আমি না কিরকম যেন ঘেঁটে আছি .. আমার হৃদয়ে যে দুঃখের নদী, জানা নেই আদৌ তা শুকাবে কিনা। জানিনা আবার কবে ফিরতে পারবো পাড়ে। হ্যালো হিয়া, শুনতে পাচ্ছো? তুমি উত্তর দিচ্ছ না কেন হিয়া?" 

কিন্তু কিছুই বলতে পারলো না সে। এই কথাগুলো বলার সাহস হলো না তার মনে .. কথাগুলো শোনার পর পাছে হিয়া তাকে ভুল বোঝে, এই ভয়ে। ফোনটা বের করে হিয়ার মেসেজের উত্তরে শুধু লিখলো "ডোন্ট বি সরি, সব দোষ আমার। আমি তোমাকে পরে ফোন করে নিচ্ছি .. কেমন!" 

★★★★

"কি ব্যাপার? তুমি এখানে, এইসময়? তোমার কাজের জায়গায় যাওনি?" গোগোলকে হঠাৎ নিজের ঘরে প্রবেশ করতে দেখে বিছানার উপর শায়িত টগর অবিন্যস্ত হয়ে থাকা তার জামাকাপড় ঠিক করতে করতে উঠে বসে কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে জিজ্ঞাসা করলো তাকে।

"সরি, আমার নক করে ঢোকা উচিৎ ছিলো। বাড়িতে ঢোকার সময় চোখে পড়লো স্বপন কাকা দোকানে আছে, শিউলি বোধহয় কলেজে গিয়েছে। দেখলাম তোর ঘরের দরজা খোলা আছে, তাই ঢুকে পড়লাম। হ্যাঁ সাইটে যাবো, ওখানে তো আমি আর মিস্ত্রির কাজ করি না, পুরো কাজটা সুপারভাইস করি। তাই একটু পরে গেলেও চলবে। ‌আসলে তোর বাবা মানে স্বপন কাকা আমাকে ফোন করেছিলো।‌ তুই নাকি কালকে রাতে রান্না করতে করতে .." 

গোগোলের কথাগুলো শেষ হওয়ার আগেই টগর বলে উঠলো "সত্যি বাবাকে নিয়ে আর পারা যায় না। এতবার করে বললাম কাউকে কিছু না বলার জন্য .. আজ ফিরুক দোকান থেকে! আসলে মাইগ্রেনের প্রবলেম তো ছোট থেকেই আছে আমার, কিন্তু মাথার যন্ত্রণাটা এই ক'দিন যেনো একটু বেড়েছে। বাদল জেঠুর হোমিওপ্যাথির দোকান থেকে ওষুধ এনেও বিশেষ কাজ হচ্ছে না। তার উপর গতকাল রাতে রান্না করতে করতে হঠাৎ করে সেন্সলেস হয়ে গিয়েছিলাম, তাই হয়তো বাবা একটু বেশি চিন্তা করছে। কিন্তু তোমাকে কেন ফোন করতে গেলো, এটাই তো আমি বুঝতে পারছি না। এরকম ব্যস্ত মানুষকে কেউ এভাবে বিব্রত করে?"

"আচ্ছা তুই তখন থেকে আমাকে ফোন করা নিয়ে এতো চিন্তিত হয়ে পড়েছিস কেনো, বলতো? তোর শরীর খারাপ হলে বা তোদের পরিবারের কারোর শরীর খারাপ হলে আমিই তো আগে খবর পাবো, এটাই তো স্বাভাবিক। আমি কি এর আগে তোদের বাড়িতে আসিনি নাকি তোদের বিপদ-আপদে পাশে দাঁড়াইনি? মানুষই তো মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়ায়, তাকে সাহায্য করে। আমাদের পরিবারের পাশেও তো তুই কতবার দাঁড়িয়েছিস। একসময় যখন আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ ছিলো, তখন স্বপন কাকাকে লুকিয়ে কতবার এমনিতে আমাদের বাড়িতে মুদিখানার জিনিস দিয়ে এসেছিস। কই আমরা তো তখন তোকে বারণ করিনি! তাহলে তুই এখন কেন .. যাইহোক, আমার মনে হয় সেই রাতের ঘটনার পর তোর মনে একটা চাপ পড়েছে। সেখান থেকেই বোধহয়, কিছু সমস্যা হচ্ছে। একজন ভালো ডাক্তার দেখাতে হবে।" কিছুটা জোর দিয়েই কথাগুলো বললো গোগোল।

- "চিন্তা করো না, আমি সুজাতা মাসিকে বলে মিউনিসিপাল হসপিটালে দেখিয়ে নেবো। তুমি এখন এসো গোগোল দাদা, তোমার দেরি হয়ে যাচ্ছে না?"

- "আমাকে তাড়িয়ে দিচ্ছিস টগর? এসেছি যখন, এক সময় ঠিকই চলে যাবো। কিন্তু মিউনিসিপাল হসপিটালে নয়, তোকে শহরের সিটি হসপিটালে নিয়ে যাবো আমি। এত বেলা পর্যন্ত শুয়ে থাকার মেয়ে তো তুই নয় .. তোর মুখ-চোখের অবস্থাও আমার খুব একটা ভালো লাগছে না। ওখানকার হসপিটালের  একজন ভালো ডাক্তারকে দেখাতে হবে। প্রথমে একজন মেডিসিনের ডাক্তারকে দেখাবো, তারপর উনি যদি অন্য জায়গায় রেফার করেন তাহলে তোকে তার কাছে নিয়ে যাবো।"

গোগোলের কথাগুলো শুনে মুচকি হাসলো টগর। তাকে হাসতে দেখে গোগোল জিজ্ঞাসা করলো "কি হলো? আসছিস যে .. আমি কি হাসি পাওয়ার মতো কোনো কথা বললাম?"

- "কম্পেন্সেশন?"

- "মানে? কি বলছিস? তোর কথার মাথামুন্ডু কিছুই বুঝতে পারছি না।"

"না না, কিছু বলিনি .. বাদ দাও। তোমাকে এত চিন্তা করতে হবে না। সামান্য একটা মাইগ্রেনের প্রবলেম, এমনিতেই ঠিক হয়ে যাবে। তুমি কিন্তু অনেকক্ষণ এসেছো, তোমার কাজের ক্ষতি হবে। তাছাড়া হিয়া দিদি জানে তুমি এখানে এসেছো?"

- "আমাকে তাড়িয়ে দিতে পারলেই যেন তুই বাঁচিস! সব কাজ তো আমি হিয়াকে বলে করি না, তাহলে এখানে আসার কথাটা শুধু শুধু ওকে বলে .."

- "শুধু শুধু ওকে বলে বিব্রত করতে যাবে কেনো .. তাই তো? তোমাকে আমি তাড়িয়ে দিতে চাই না গোগোল দাদা। কোনোদিন চাইনি .. আমি তো চাই তুমি সবসময় আমার কাছেই .. যাগ্গে , ও কথা থাক। তুমি যদি সবাইকে বলে বিশেষ করে হিয়া'দি কে বলে, ওর পারমিশন নিয়ে আমাকে সিটি হসপিটাল নিয়ে যেতে পারো তাহলেই আমি যাবো, না হলে নয়। কারণ, পরে কথাগুলো জানাজানি হলে একটা বিশাল অশান্তি হবে .. আমার আর এখন কোনো অশান্তি ভালো লাগে না।"

কত ঝড় চলে গিয়েছে তার জীবনের উপর দিয়ে। কত কিছুই ঘটে গিয়েছে তার জীবনে! মাঝে মাঝে ভাবে যা হারিয়েছে হয়তো তার থেকেও বেশি পেয়েছে বা হয়তো পায়নি। কতজন চলে গেলো চিরতরে, আবার কেউ কেউ থেকেও যেন থাকতে চায় না আর। কেউ তাকে ভুল বুঝেছে, আর কারো কাছে হয়তো আজও সে অচেনা। সবার কথা তো মনে পড়ে না, সে মনে করতেও চায়না না। কিন্তু একজন .. সেই একজনকেই তো হাজার চেষ্টাকেও এড়িয়ে যেতে পারছে না কিছুতেই। তাকে ভুলতে অনেক চেষ্টা করেও, হাজার কৃত্রিম ব্যস্ততার একটুখানি ফাঁকে তবুও সে চলে আসে বারবার। যাকে মনেই রাখতে চায় না, তবে কি তার অস্তিত্ব হৃদয়পটে থেকে যাবে চিরকাল! টগরের কথাগুলো শোনার পর কোনো উত্তর দিতে না পেরে একরাশ অপরাধবোধ মাথায় নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলো গোগোল।

★★★★

অনেকক্ষণ ধরে বাজতে থাকা ফোনটা পকেট থেকে বের করে নিয়ে স্ক্রিনের দিকে তাকাতেই গোগোল দেখলো লালু আলমের অফিস থেকে ফোন এসেছে। তখন প্রায় সকাল এগারোটা বাজে। পুরোদমে কাজ চলছে .. দোতলার ছাদ ঢালাই হচ্ছে। এই সময়ে ফোন আসাতে কিছুটা বিরক্তই হলো সে। ফোনটা তুলতেই ওপার থেকে একটা নারীকন্ঠ ভেসে এলো, "মিস্টার মুখার্জি বলছেন? আপনাকে ইমিডিয়েটলি আলম সাহেব ডেকেছেন। খুব আর্জেন্ট .. তাড়াতাড়ি আসার চেষ্টা করবেন।" 

নারীকন্ঠটি ভীষণ চেনা লাগলো গোগোলের। গলাটা যে খুব সম্প্রতি সে শুনেছে তা নয়, তবে মনে হলো গলাটা যেন তার অনেক দিনের চেনা .. কিন্তু কিছুতেই মনে করতে পারলো না এই কন্ঠ সে আগে কোথায় শুনেছে। "এখন সাইটে আছি, এখানে কাজ চলছে। সবকিছু মিটিয়ে বেলার দিকে যাবো।" এইটুকু বলে ফোনটা রেখে দিলো গোগোল।

দুপুরের দিকে বাড়িতে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করে লালু আলমের অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা হলো গোগোল। গঙ্গানগর রেল স্টেশনের পশ্চিমপ্রান্ত দিয়ে আরো কিছুটা এগিয়ে স্টেশন রোড আর আলতারা কলিহারি রোড যেখানে একসঙ্গে মিশেছে তার উল্টোদিকের  বিল্ডিংটার সামনে নিজের বাইক দাঁড় করালো গোগোল। এই ভর দুপুরেও জায়গাটা প্রায় জনমানবশূন্য। তাহলে রাতের দিকে এই এলাকার কি অবস্থা হয় সেটা সহজেই অনুমেয়। ঘড়িতে প্রায় দুপুর দু'টো বাজতে চললো। বিল্ডিংয়ের বাইরেটা রঙচটা, জায়গায় জায়গায় প্লাস্টার খসে গিয়ে ইঁট বেরিয়ে পড়লেও, ভেতরটা কিন্তু ঝাঁ চকচকে। প্রত্যেকটি ঘরের ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন এবং আসবাবপত্র দেখলে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। 

প্রধান ফটক পেরিয়ে নিচের ওয়েটিং রুমে প্রবেশ করার পর সেখানে বসে থাকা সুন্দরী রিসেপশনিস্ট ইঙ্গিতপূর্ণ হাসি হেসে জানালো, "আলম সাহেব এখন তার নতুন প্রাইভেট সেক্রেটারি জুলিকে ডিকটেশন দিচ্ছেন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে যান, উনার হয়ে গেলে আপনাকে ডেকে নেওয়া হবে।" 

 লালু আলমের অফিসের এই রিসেপশনিস্ট মেয়েটিকে একদমই পছন্দ নয় গোগোলের। বড্ড গায়ে-পড়া মেয়েটা .. যেকোনো অজুহাতে তার কাছাকাছি আসার চেষ্টা করে। যদিও লাস্যময়ী যুবতীরা যে গোগোলের মতো এরকম একজন অল্পবয়সী হ্যান্ডসাম পুরুষের সান্নিধ্য লাভ করতে চাইবে এতে অস্বাভাবিকতার কিছু নেই। তাই গম্ভীর মুখে "আচ্ছা, ঠিক আছে .." এইটুকু বলে ওয়েটিংরুমে রাখা অনেকগুলি গদি-আঁটা চেয়ারের মধ্যে একটিতে বসলো সে।
[+] 8 users Like Bumba_1's post
Like Reply


Messages In This Thread
RE: গোলকধাঁধায় গোগোল (চলছে) - by Bumba_1 - 09-01-2023, 09:12 PM



Users browsing this thread: 30 Guest(s)