14-01-2023, 07:49 PM
#___Part___9
.
.
--ঐ কুত্তা কই যাস?আর এক পা এগোলে ঠ্যাং ভেঙ্গে লুলা করে দেবো তোকে।
--এমা নাহহ,তাইলে আমি হাটবো কেমনে?আমি লুলা হলে কেউ আমায় বিয়ে করবে না।?আমার বিয়ে না হলে আমি বাচ্চাকাচ্চা পামু কই?আর তোরে আমি বেয়াইন বানামু কেমতে,,এ্যাাাাাাাাাাাাাাাা
---ঐ ঢঙ্গি থামবি তুই?এমনিতেই লেট করে আসছে আবার দএসেই ঢং শুরু করছে।
ওদের এই খুনশুটি ভালোবাসা দেখে সবাই হেসে ফেলেছে।
দুজনে যেনো দুজনের আত্না।
,
বাইরে শরগোল শোনা যাচ্ছে খুব।মনে হচ্ছে বর এসেছে।সব ফ্রেন্ডস রা মিলে গেট ধরলাম।
জিজুর থেকে মোটা অংকের টাকা খোসানোর ধান্দা আরকি।
তার আগে জিজুর জন্য স্পেশালি নাস্তার ব্যবস্থা করেছি।শালিকা হিসেবে জিজু কে সারাজীবন জ্বালানোর লাইসেন্স প্রাপ্ত হতে যাচ্ছি।গেটে জিজু কে আপ্যায়ন করলাম খুব সুন্দর ভাবেই।
--আরে তোরা সবাই এভাবে দাড়িয়ে আছিস কেনো?দেখছিস না আমার জিজুর গুলুমুলু ফেস টা কেমন শুকিয়ে আছে।
একটু ঠান্ডা দে জিজু কে।হুররর একটাও কাজের না সব শালা অকাজের।
অনেক মজা করলাম গেট ধরার সময়।বাচ্চা বাচ্চা পোলাপাইন আসে এই #ঋতুর সাথে টক্কর দিতে।ওরা জানেনা হয়তো আমার সাথে টক্কর দেওয়ার আগে আমার থেকে ওদের ট্রেনিং নিতে হবে।তার আগে সম্ভব নাহ।
শালা যাদের নাক চিপলে দুধ বের হয় তারা আসে আমার সাথে পার্ট নিতে।হুহহহহহহ?এমন নাকানিচুবানি দিমু যে সারাজীবনেও ভুলতে পারবো না মোরে।
,
ব্যাটা কুভ্র আজ হাল্কা আকাশী কালারের জিন্স,ওয়াইট শার্ট,আকাশী কালারের ব্লেজার।
মেচিং সু।চোখে সান গ্লাস,চুলে জেল দিয়ে এক পাশে সাট করা।জাতির ক্রাশ আজ জাতির কাছে ধরা দিয়েছে।বিয়ে বাড়ির সব মেয়েরা তো চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে।নির্লজ্জ,বেহায়া মেয়েরা কেমন আগ বাড়িয়ে আলাপ করতে যাচ্ছে।সব কয়টা শাঁকচুন্নিকে মনে হচ্ছে মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে দেই।রাগে শরীর জ্বলে যাচ্ছে আমার।কি লুইচ্চা রে বাবা দাড়িয়ে দাড়িয়ে মেয়েদের সাথে মজা নিচ্ছে।চোখ মুখ দেখে মনে হচ্ছে বিষয় টা তে ও খুব ইনজয় ফিল করছে।
,
অনেকক্ষণ ধরে লক্ষ করছি যে একটা ছেলে আমায় ফলো করছে।যেখানেই যাচ্ছি দূর থেকে লক্ষ করছে।
মেয়েদের নাকি পঞ্চ-ইন্দ্রীয় আছে।দূর থেকে যদি কেউ তাকিয়ে থাকে তার দিকে তাহলে নাকি বুঝতে পারে সে।সত্যি সেটার বাস্তব প্রমাণ পেলাম নিজ থেকে।
----সেই কখন থেকে দেখছি আপনি আমায় ফলো করছেন।কি ব্যাপার বলুন তোহ।(আমি)
---আমি যে আপনায় ফলো করছি সেটা আপনি বুঝলেন কি করে?আপনিও নিশ্চয়ই আমায় দূর থেকে আড়চোখে দেখছিলেন।
--মোটেও নাহ।আমি আপনার দিকে তাকিয়ে থাকবো কেনো?
--মোটেও হ্যাঁ।অবশ্য কিউট,হ্যান্ডসান,ডেসিং ছেলেদের দেখলে মেয়েরা এমনিতেই ফিদা হয়ে যায় তার ওপর যদি হয় আমার মতো।?তাহলে তো কোনো কথাই নেই।(অচেনা ছেলেটি)
--যেই না চেহারা কুত্তায় দেয় পাহারা।আয়নায় কখনো নিজের এই বান্দর মার্কা চেহারা দেখেছেন?
হেয়ার স্ট্যাইল কি?ইয়াকক আমার তো দেখেই বমি পাচ্ছে।
?
কলাগাছের হনুমান,লাল কুমির একটা নাক টা দেখেছেন?মনে হচ্ছে যেনো হাতির নাক।একটা কাজ করতে পারেন প্রতিদিন এভাবে,(নাকে হাত দিয়ে নাকের ডগায় হাতের তালু উচা করে)করলে ও করতে পারেন।
--জ্বি আচ্ছা!! অবশ্যই মনে থাকবে।
--চশমা তো কানারাও পড়ে আপনি কি কানা?
--কানা না।আবার ভাব করেও নেই যে এমন তা না।
--হু,বুঝলাম।
---হ্যালো! আমি ইহান।
--হোয়াট?হ্যালো?আমি কি আপনার পূর্ব পরিচিত বা আপন কেউ?হ্যালো বলে সম্বধন করে তাদেরই যারা আপনার কাছের কেউ।
--জানতাম না তোহ।
--এখন তো জানলেন।
--হু,সরি।(কানে হাত দিয়ে)
--ইট'স অকে।ইট'স অকে।কোনো ব্যাপার না।(একটু হেসে)
--নাইস স্মাইল।
--কিছু বললেন?
--কই না তোহ।
--না বললেই ভালো।
দূর থেকে বোঝা যাচ্ছে এক জোড়া চোখ আমার দিকে তাকিয়ে রাগে ফুসছে।
খেয়াল করলাম ব্যাটা শুভ্র আমার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে আছে।কিন্তু কেনো বুঝতেছি না।
রাগলে আমার কি হুহহহহ।আমি কারো রাগের ধার ধারি নাকি।
আমার তো বেশ ভালই লাগছে ইহান নামের এই জোকার ছেলেটা কে।কে না চায়! সব মেয়েরাই চাইবে সুন্দর,হ্যান্ডসাম ছেলেদের এটেনশন।আমিই বা তার ব্যতিক্রম হবো কেনো।
যেখানে আমার সব বান্ধবী রা ৩-৪ বছর করে রিলেশন করে বিয়ের পিড়িতে বসছে আর আমি সেখানে এখনো সিঙ্গেল।
এই দুঃখ আমি কই রাখুম?আল্লাহ তুমি মাটি ফাঁক করো আমি ঢুকে যাই।
আজ যদি বফ থাকতো তাহলে কি আর একা একা ঘুরতে হতো??কপাল সবই আমার এই ভাঙ্গা কপালের দোষ।
লাইফে কম প্রোপজাল পাইনি।কিন্তু একটাও মনের মতো হয়নি বলে আজোও প্রেম করতে পারলাম না একটা।
তবে এবার ভেবে নিয়েছি যেই প্রথম প্রপোজ করবে তাকেই এক্সেপট করবো।দেন জমিয়ে প্রেম করবো।সবাইকে দেখিয়ে বেড়াবো,হুহহহহহ।
,
আম্মা কল দিচ্ছে বারবার।আম্মা এরকমই আমি বাইরে গেলেি বারবার কল দিয়ে খোজ খবর নিতে থাকবে।আসলে বাবা নেই আর বড় মেয়েতো।তাই একটু সবার আদরের নয়ন মনি।কল কেটে দিচ্ছি তারপরেও দিয়েই যাচ্ছে। মেজাজ টা গরম হয়ে যাচ্ছে।এতবার কেউ কল দেয় নাকি ফাউ।কি দরকার ফালতু বকবক করার?বুঝিনা কিছু এসব আদিখ্যেতা।একটু পর পর কল দিয়ে বলবে বাবু কি করিস?
খেয়েছিস কিছু?বাইরের খাবার খাস না তুই অসুস্থ হয়ে পড়বি।বেশিক্ষণ বাইরে ঘুরাঘুরি করিস না বাবু।শহরের অবস্থা ভালো না তুই তাড়াতাড়ি বাসায় চলে আসিস।
এত্ত সব প্যারা ভাল্লাগে আপনারাই বলুন?এসব নিয়ে মাঝেমাঝে ফ্রেন্ডস দের হাসির বলির পাঠা মনে হয় আমার।সেকেন্ডে সেকেন্ডে কল দেবে আর খোজ নেবে।
এর জন্য কম বকাবকি করি না তারপরেও আবার কল করবে আগের মতো।
একটু বেশিই ভালোবাসে তোহ।
কোথা থেকে যেনো শুভ্র এগিয়ে আসলো।
এসে-
তোমার ফোন কই?
--কেনো?এই তো আমার হাতেই তোহ
--কই দেখি তোহ
--এক্সকিউজ মি!!আমার ফোন আমি আপনাকে দিতে যাব কেনো বলুন তো?
--এই মেয়ে এত কথা বলো কেন?দিতে বলছি দাও(ধমক দিয়ে)
--এ,,,,ই নিিিনন(ধমক শুনে কাঁপা কাঁপা হাতে)
--কল লিস্ট চেক করে।ঋতুর সামনে ফোন ধরে,
এটা কি?মামনি কতবার কল দিয়েছে তোমায়?কি প্রবলেম টা কি?ফোন রিসিভ করতে যখন এতই প্যারা তাহলে ফোন ব্যবহার করতে যাও কেন?
--আমি ভাবছি এমনিই কল দিচ্ছে আম্মু তাই রিসিভ করিনি।আর ফোন সাই,,,,,,,,,,,,,,,,,
---নো এক্সকিউজ,আই টোল্ড ইউ না নো মোর এক্সকিউজ?
আন্সার মি ড্যামন?
,
স,,সরিিিিিি স,,্যাররররর।আর এই ভুল হবে না।?
--ইট'স অকে।মনে থাকে যেনো।
এখন চলো।
--কই যাব স্যার?
--জাহান্নামে?
--কি বলেন কি স্যার?জাহান্নামে কেউ যায় নাকি?ঐখানে তো শুধু আগুন আর আগুন।?
--হোয়াট ননসেন্স।
--জ্বি স্যার।
--ইডিয়ট একটা।
--জ্বি স্যার জানি।
--হোয়াট দ্যা
--জাহান্নাম,না মানে আপনি নাকি জাহান্নামে যাবেন বললেন? তো চলুন
--হোয়াট দ্যা হেল
--হুররর,,সেই জাহান্নামেই তো যাব বলছি তো চলুন নাহ
---ইডিয়ট ওটা জাহান্নাম না হাসপাতাল
--কিহহহহহহ!!হাসপাতালে কেনো?কার কি হয়েছে?
--প্রিয়া কে হাসপাতালে এডমিট করা হয়েছে নাকি শুনলাম।
--প্রিয়া কে মানে?ওর কি হয়েছে?
প্রিয়া হলো ঋতুর ছোট ফুফুর মেয়ে।ওর জন্মের ১মাস পরেই ওর বাবা মারা যায়।আর মা থেকেও না থাকার মতোই।
ছোট থেকেই আমাদের কাছে বড় হয়েছে।সব সময় নিজের বোনের মতোই ভালোবেসে গেছি।
পড়াশুনা করলো না।সবাই মিলে একটা সু পাত্রের হাতে কন্যা দান করলো।ওর বয়স টা খুব বেশি হলে ১৩ বছর ৬ মাস।
খুব অবাক হচ্ছেন তাই না?এত ছোট বয়সে বিয়ে হয়েছে শুনে।
অবাক হওয়ার মতোই কথা।একে তো বাবা মা নেই,এতিম।যদিও আমরা এতদূর লালন পালন করেছি তবুও ওর লাইফের ডিসিশন নেয়ার অধিকার আমাদের নেই।
সবার মতামতেই অল্প বয়সে বাল্য বিবাহের মতো একটা অপরাধের বলির পাঠা হতে হয় ওকে।তাদের কথা;
একেতো গ্রামের মেয়ে।তারপরে এতিম।আবার পড়াশুনাও জানে না।চেহারা টাও তেমন উজ্জল যে তা না।
এখন বিয়ে না দিলে তখন বয়স বেশি হলে বিয়ে দিতে গেলে সমস্যা হবে।
যে বয়সে ওর বই হাতে কলেজে যাবার কথা সেই বয়সে ও স্বামী সংসার সামলাতে ব্যস্ত।যার এখনো সংসার,স্বামী সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই আর আজ তাকে সব কিছু সইতে হচ্ছে।
,
কিচ্ছু করার নেই।মেয়েদের একবার বিয়ে হয়ে গেলে আর বাপের বাড়িতে কোনো দাম থাকে না।থাকে না অধিকার।
আর ও তো এতিম।
যেখানে আমি পড়াশুনা করছি আর সেখানে ওর মতো তেরোষি বয়সী বাচ্চাকাচ্চার মা হতে যাচ্ছে।
বিষয়টা সত্যিই হাস্যকর বটে।
পাবনা সদর হাসপাতালের গাইনি বিভাগের বারান্দায় জীর্ণ শীর্ণ হয়ে শুয়ে আছে পাগলি টা।
দেখেই চোখ দিয়ে ঝরঝর করে পানি পড়ছে।
কে বলবে এই মেয়েটাই দুদিন আগেও আমাদের বাসায় গিয়ে মাতিয়ে রেখেছিল ওর পাগলামি তে।
ওর পেটের তিন মাসের বাচ্চা টা নষ্ট হয়ে গেছে অর্থাৎ মিসক্যারিয়েজ হয়েছে।হাসপাতালে ঢুকে সমস্ত গাইনি ওয়ার্ড ঘুরে দেখলাম প্রায় অধিকাংশ রোগী আসছে মিসক্যারিয়েজ এর।
অল্প বয়সে বিয়ে দিয়েছে।যারা নিজেই এখনো বাচ্চা তারা অন্য আর একটা বাচ্চার যত্ন নেবে কি করে?তার ভাল দেখবে কিভাবে?
প্রচুর পরিমাণে ব্লিডিং হচ্ছে।কিছু কিছু রোগীরা অতিরিক্ত ব্লিডিং আর শরীর দূর্বলতার কারণে উঠে দাড়াতেই পারছে না।গলা কাটা মুরগির মতো ছটফট করছে বেডে শুয়ে।
একটা বাচ্চা হওয়ার সময় না যে কষ্ট হয় তার থেকে বেশি কষ্ট হয় বাচ্চা নষ্ট হয়ে গেলে।
খুব রাগ হলো আমার ফ্যামিলির ওপর।ফ্যামিলির মানুষদের ওপর ঘৃণায় তাকাতে ইচ্ছে করছে না।নিজের মেয়ে হলে কি এরা পারতো এমন টা করতে?১৩ বছর যখন কষ্ট করে পালতে পারছে আর ৬ টা বছর কি একটু কষ্ট করতে পারতো না?
বাংলাদেশে মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ বছর।এর নিচে হলে সেটা বাল্যবিবাহ।আর বাল্যবিবাহ এর উপরে সরকার জোরদার আইন পালন করছে তারপরে ও এমন হচ্ছে।
পরিণত বয়সে বিয়ে হলে আর আজ এই মরণ যন্ত্রণায় হাসপাতালের বেডে শুয়ে কাতরাতে হতো না।
,
দুদিন পরে সুস্থ হলে হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে বাসায় চলে এলাম।
এর মধ্যে নুপুরের বিয়ে হয়ে ফিরনী ও চলে গেছে।সেদিন ফোন পেয়ে বিয়ের আসর থেকেই চলে আসতে হয়েছিল আমার।ওর বিয়ে পড়ানোর সময় আর দেখার সৌভাগ্য হয়নি।অবশ্য ভিডিও কলে কথা বলেছিলাম তার পরেও ভিডিও কলে কথা বলা আর সামনাসামনি কথা বলা এক হলো নাকি?
অনেক কান্নাকাটি করছিল নীল জিজুদের বাসায় যাওয়ার সময়।
.
.
.
.
--ঐ কুত্তা কই যাস?আর এক পা এগোলে ঠ্যাং ভেঙ্গে লুলা করে দেবো তোকে।
--এমা নাহহ,তাইলে আমি হাটবো কেমনে?আমি লুলা হলে কেউ আমায় বিয়ে করবে না।?আমার বিয়ে না হলে আমি বাচ্চাকাচ্চা পামু কই?আর তোরে আমি বেয়াইন বানামু কেমতে,,এ্যাাাাাাাাাাাাাাাা
---ঐ ঢঙ্গি থামবি তুই?এমনিতেই লেট করে আসছে আবার দএসেই ঢং শুরু করছে।
ওদের এই খুনশুটি ভালোবাসা দেখে সবাই হেসে ফেলেছে।
দুজনে যেনো দুজনের আত্না।
,
বাইরে শরগোল শোনা যাচ্ছে খুব।মনে হচ্ছে বর এসেছে।সব ফ্রেন্ডস রা মিলে গেট ধরলাম।
জিজুর থেকে মোটা অংকের টাকা খোসানোর ধান্দা আরকি।
তার আগে জিজুর জন্য স্পেশালি নাস্তার ব্যবস্থা করেছি।শালিকা হিসেবে জিজু কে সারাজীবন জ্বালানোর লাইসেন্স প্রাপ্ত হতে যাচ্ছি।গেটে জিজু কে আপ্যায়ন করলাম খুব সুন্দর ভাবেই।
--আরে তোরা সবাই এভাবে দাড়িয়ে আছিস কেনো?দেখছিস না আমার জিজুর গুলুমুলু ফেস টা কেমন শুকিয়ে আছে।
একটু ঠান্ডা দে জিজু কে।হুররর একটাও কাজের না সব শালা অকাজের।
অনেক মজা করলাম গেট ধরার সময়।বাচ্চা বাচ্চা পোলাপাইন আসে এই #ঋতুর সাথে টক্কর দিতে।ওরা জানেনা হয়তো আমার সাথে টক্কর দেওয়ার আগে আমার থেকে ওদের ট্রেনিং নিতে হবে।তার আগে সম্ভব নাহ।
শালা যাদের নাক চিপলে দুধ বের হয় তারা আসে আমার সাথে পার্ট নিতে।হুহহহহহহ?এমন নাকানিচুবানি দিমু যে সারাজীবনেও ভুলতে পারবো না মোরে।
,
ব্যাটা কুভ্র আজ হাল্কা আকাশী কালারের জিন্স,ওয়াইট শার্ট,আকাশী কালারের ব্লেজার।
মেচিং সু।চোখে সান গ্লাস,চুলে জেল দিয়ে এক পাশে সাট করা।জাতির ক্রাশ আজ জাতির কাছে ধরা দিয়েছে।বিয়ে বাড়ির সব মেয়েরা তো চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছে।নির্লজ্জ,বেহায়া মেয়েরা কেমন আগ বাড়িয়ে আলাপ করতে যাচ্ছে।সব কয়টা শাঁকচুন্নিকে মনে হচ্ছে মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে দেই।রাগে শরীর জ্বলে যাচ্ছে আমার।কি লুইচ্চা রে বাবা দাড়িয়ে দাড়িয়ে মেয়েদের সাথে মজা নিচ্ছে।চোখ মুখ দেখে মনে হচ্ছে বিষয় টা তে ও খুব ইনজয় ফিল করছে।
,
অনেকক্ষণ ধরে লক্ষ করছি যে একটা ছেলে আমায় ফলো করছে।যেখানেই যাচ্ছি দূর থেকে লক্ষ করছে।
মেয়েদের নাকি পঞ্চ-ইন্দ্রীয় আছে।দূর থেকে যদি কেউ তাকিয়ে থাকে তার দিকে তাহলে নাকি বুঝতে পারে সে।সত্যি সেটার বাস্তব প্রমাণ পেলাম নিজ থেকে।
----সেই কখন থেকে দেখছি আপনি আমায় ফলো করছেন।কি ব্যাপার বলুন তোহ।(আমি)
---আমি যে আপনায় ফলো করছি সেটা আপনি বুঝলেন কি করে?আপনিও নিশ্চয়ই আমায় দূর থেকে আড়চোখে দেখছিলেন।
--মোটেও নাহ।আমি আপনার দিকে তাকিয়ে থাকবো কেনো?
--মোটেও হ্যাঁ।অবশ্য কিউট,হ্যান্ডসান,ডেসিং ছেলেদের দেখলে মেয়েরা এমনিতেই ফিদা হয়ে যায় তার ওপর যদি হয় আমার মতো।?তাহলে তো কোনো কথাই নেই।(অচেনা ছেলেটি)
--যেই না চেহারা কুত্তায় দেয় পাহারা।আয়নায় কখনো নিজের এই বান্দর মার্কা চেহারা দেখেছেন?
হেয়ার স্ট্যাইল কি?ইয়াকক আমার তো দেখেই বমি পাচ্ছে।
?
কলাগাছের হনুমান,লাল কুমির একটা নাক টা দেখেছেন?মনে হচ্ছে যেনো হাতির নাক।একটা কাজ করতে পারেন প্রতিদিন এভাবে,(নাকে হাত দিয়ে নাকের ডগায় হাতের তালু উচা করে)করলে ও করতে পারেন।
--জ্বি আচ্ছা!! অবশ্যই মনে থাকবে।
--চশমা তো কানারাও পড়ে আপনি কি কানা?
--কানা না।আবার ভাব করেও নেই যে এমন তা না।
--হু,বুঝলাম।
---হ্যালো! আমি ইহান।
--হোয়াট?হ্যালো?আমি কি আপনার পূর্ব পরিচিত বা আপন কেউ?হ্যালো বলে সম্বধন করে তাদেরই যারা আপনার কাছের কেউ।
--জানতাম না তোহ।
--এখন তো জানলেন।
--হু,সরি।(কানে হাত দিয়ে)
--ইট'স অকে।ইট'স অকে।কোনো ব্যাপার না।(একটু হেসে)
--নাইস স্মাইল।
--কিছু বললেন?
--কই না তোহ।
--না বললেই ভালো।
দূর থেকে বোঝা যাচ্ছে এক জোড়া চোখ আমার দিকে তাকিয়ে রাগে ফুসছে।
খেয়াল করলাম ব্যাটা শুভ্র আমার দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে আছে।কিন্তু কেনো বুঝতেছি না।
রাগলে আমার কি হুহহহহ।আমি কারো রাগের ধার ধারি নাকি।
আমার তো বেশ ভালই লাগছে ইহান নামের এই জোকার ছেলেটা কে।কে না চায়! সব মেয়েরাই চাইবে সুন্দর,হ্যান্ডসাম ছেলেদের এটেনশন।আমিই বা তার ব্যতিক্রম হবো কেনো।
যেখানে আমার সব বান্ধবী রা ৩-৪ বছর করে রিলেশন করে বিয়ের পিড়িতে বসছে আর আমি সেখানে এখনো সিঙ্গেল।
এই দুঃখ আমি কই রাখুম?আল্লাহ তুমি মাটি ফাঁক করো আমি ঢুকে যাই।
আজ যদি বফ থাকতো তাহলে কি আর একা একা ঘুরতে হতো??কপাল সবই আমার এই ভাঙ্গা কপালের দোষ।
লাইফে কম প্রোপজাল পাইনি।কিন্তু একটাও মনের মতো হয়নি বলে আজোও প্রেম করতে পারলাম না একটা।
তবে এবার ভেবে নিয়েছি যেই প্রথম প্রপোজ করবে তাকেই এক্সেপট করবো।দেন জমিয়ে প্রেম করবো।সবাইকে দেখিয়ে বেড়াবো,হুহহহহহ।
,
আম্মা কল দিচ্ছে বারবার।আম্মা এরকমই আমি বাইরে গেলেি বারবার কল দিয়ে খোজ খবর নিতে থাকবে।আসলে বাবা নেই আর বড় মেয়েতো।তাই একটু সবার আদরের নয়ন মনি।কল কেটে দিচ্ছি তারপরেও দিয়েই যাচ্ছে। মেজাজ টা গরম হয়ে যাচ্ছে।এতবার কেউ কল দেয় নাকি ফাউ।কি দরকার ফালতু বকবক করার?বুঝিনা কিছু এসব আদিখ্যেতা।একটু পর পর কল দিয়ে বলবে বাবু কি করিস?
খেয়েছিস কিছু?বাইরের খাবার খাস না তুই অসুস্থ হয়ে পড়বি।বেশিক্ষণ বাইরে ঘুরাঘুরি করিস না বাবু।শহরের অবস্থা ভালো না তুই তাড়াতাড়ি বাসায় চলে আসিস।
এত্ত সব প্যারা ভাল্লাগে আপনারাই বলুন?এসব নিয়ে মাঝেমাঝে ফ্রেন্ডস দের হাসির বলির পাঠা মনে হয় আমার।সেকেন্ডে সেকেন্ডে কল দেবে আর খোজ নেবে।
এর জন্য কম বকাবকি করি না তারপরেও আবার কল করবে আগের মতো।
একটু বেশিই ভালোবাসে তোহ।
কোথা থেকে যেনো শুভ্র এগিয়ে আসলো।
এসে-
তোমার ফোন কই?
--কেনো?এই তো আমার হাতেই তোহ
--কই দেখি তোহ
--এক্সকিউজ মি!!আমার ফোন আমি আপনাকে দিতে যাব কেনো বলুন তো?
--এই মেয়ে এত কথা বলো কেন?দিতে বলছি দাও(ধমক দিয়ে)
--এ,,,,ই নিিিনন(ধমক শুনে কাঁপা কাঁপা হাতে)
--কল লিস্ট চেক করে।ঋতুর সামনে ফোন ধরে,
এটা কি?মামনি কতবার কল দিয়েছে তোমায়?কি প্রবলেম টা কি?ফোন রিসিভ করতে যখন এতই প্যারা তাহলে ফোন ব্যবহার করতে যাও কেন?
--আমি ভাবছি এমনিই কল দিচ্ছে আম্মু তাই রিসিভ করিনি।আর ফোন সাই,,,,,,,,,,,,,,,,,
---নো এক্সকিউজ,আই টোল্ড ইউ না নো মোর এক্সকিউজ?
আন্সার মি ড্যামন?
,
স,,সরিিিিিি স,,্যাররররর।আর এই ভুল হবে না।?
--ইট'স অকে।মনে থাকে যেনো।
এখন চলো।
--কই যাব স্যার?
--জাহান্নামে?
--কি বলেন কি স্যার?জাহান্নামে কেউ যায় নাকি?ঐখানে তো শুধু আগুন আর আগুন।?
--হোয়াট ননসেন্স।
--জ্বি স্যার।
--ইডিয়ট একটা।
--জ্বি স্যার জানি।
--হোয়াট দ্যা
--জাহান্নাম,না মানে আপনি নাকি জাহান্নামে যাবেন বললেন? তো চলুন
--হোয়াট দ্যা হেল
--হুররর,,সেই জাহান্নামেই তো যাব বলছি তো চলুন নাহ
---ইডিয়ট ওটা জাহান্নাম না হাসপাতাল
--কিহহহহহহ!!হাসপাতালে কেনো?কার কি হয়েছে?
--প্রিয়া কে হাসপাতালে এডমিট করা হয়েছে নাকি শুনলাম।
--প্রিয়া কে মানে?ওর কি হয়েছে?
প্রিয়া হলো ঋতুর ছোট ফুফুর মেয়ে।ওর জন্মের ১মাস পরেই ওর বাবা মারা যায়।আর মা থেকেও না থাকার মতোই।
ছোট থেকেই আমাদের কাছে বড় হয়েছে।সব সময় নিজের বোনের মতোই ভালোবেসে গেছি।
পড়াশুনা করলো না।সবাই মিলে একটা সু পাত্রের হাতে কন্যা দান করলো।ওর বয়স টা খুব বেশি হলে ১৩ বছর ৬ মাস।
খুব অবাক হচ্ছেন তাই না?এত ছোট বয়সে বিয়ে হয়েছে শুনে।
অবাক হওয়ার মতোই কথা।একে তো বাবা মা নেই,এতিম।যদিও আমরা এতদূর লালন পালন করেছি তবুও ওর লাইফের ডিসিশন নেয়ার অধিকার আমাদের নেই।
সবার মতামতেই অল্প বয়সে বাল্য বিবাহের মতো একটা অপরাধের বলির পাঠা হতে হয় ওকে।তাদের কথা;
একেতো গ্রামের মেয়ে।তারপরে এতিম।আবার পড়াশুনাও জানে না।চেহারা টাও তেমন উজ্জল যে তা না।
এখন বিয়ে না দিলে তখন বয়স বেশি হলে বিয়ে দিতে গেলে সমস্যা হবে।
যে বয়সে ওর বই হাতে কলেজে যাবার কথা সেই বয়সে ও স্বামী সংসার সামলাতে ব্যস্ত।যার এখনো সংসার,স্বামী সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেই আর আজ তাকে সব কিছু সইতে হচ্ছে।
,
কিচ্ছু করার নেই।মেয়েদের একবার বিয়ে হয়ে গেলে আর বাপের বাড়িতে কোনো দাম থাকে না।থাকে না অধিকার।
আর ও তো এতিম।
যেখানে আমি পড়াশুনা করছি আর সেখানে ওর মতো তেরোষি বয়সী বাচ্চাকাচ্চার মা হতে যাচ্ছে।
বিষয়টা সত্যিই হাস্যকর বটে।
পাবনা সদর হাসপাতালের গাইনি বিভাগের বারান্দায় জীর্ণ শীর্ণ হয়ে শুয়ে আছে পাগলি টা।
দেখেই চোখ দিয়ে ঝরঝর করে পানি পড়ছে।
কে বলবে এই মেয়েটাই দুদিন আগেও আমাদের বাসায় গিয়ে মাতিয়ে রেখেছিল ওর পাগলামি তে।
ওর পেটের তিন মাসের বাচ্চা টা নষ্ট হয়ে গেছে অর্থাৎ মিসক্যারিয়েজ হয়েছে।হাসপাতালে ঢুকে সমস্ত গাইনি ওয়ার্ড ঘুরে দেখলাম প্রায় অধিকাংশ রোগী আসছে মিসক্যারিয়েজ এর।
অল্প বয়সে বিয়ে দিয়েছে।যারা নিজেই এখনো বাচ্চা তারা অন্য আর একটা বাচ্চার যত্ন নেবে কি করে?তার ভাল দেখবে কিভাবে?
প্রচুর পরিমাণে ব্লিডিং হচ্ছে।কিছু কিছু রোগীরা অতিরিক্ত ব্লিডিং আর শরীর দূর্বলতার কারণে উঠে দাড়াতেই পারছে না।গলা কাটা মুরগির মতো ছটফট করছে বেডে শুয়ে।
একটা বাচ্চা হওয়ার সময় না যে কষ্ট হয় তার থেকে বেশি কষ্ট হয় বাচ্চা নষ্ট হয়ে গেলে।
খুব রাগ হলো আমার ফ্যামিলির ওপর।ফ্যামিলির মানুষদের ওপর ঘৃণায় তাকাতে ইচ্ছে করছে না।নিজের মেয়ে হলে কি এরা পারতো এমন টা করতে?১৩ বছর যখন কষ্ট করে পালতে পারছে আর ৬ টা বছর কি একটু কষ্ট করতে পারতো না?
বাংলাদেশে মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ বছর।এর নিচে হলে সেটা বাল্যবিবাহ।আর বাল্যবিবাহ এর উপরে সরকার জোরদার আইন পালন করছে তারপরে ও এমন হচ্ছে।
পরিণত বয়সে বিয়ে হলে আর আজ এই মরণ যন্ত্রণায় হাসপাতালের বেডে শুয়ে কাতরাতে হতো না।
,
দুদিন পরে সুস্থ হলে হাসপাতাল থেকে রিলিজ নিয়ে বাসায় চলে এলাম।
এর মধ্যে নুপুরের বিয়ে হয়ে ফিরনী ও চলে গেছে।সেদিন ফোন পেয়ে বিয়ের আসর থেকেই চলে আসতে হয়েছিল আমার।ওর বিয়ে পড়ানোর সময় আর দেখার সৌভাগ্য হয়নি।অবশ্য ভিডিও কলে কথা বলেছিলাম তার পরেও ভিডিও কলে কথা বলা আর সামনাসামনি কথা বলা এক হলো নাকি?
অনেক কান্নাকাটি করছিল নীল জিজুদের বাসায় যাওয়ার সময়।
.
.