08-01-2023, 03:01 PM
(08-01-2023, 01:33 PM)rijuguha Wrote: আমার মতে ;., করেনি। বুধন দেখতে পেয়েছিল কাবেরীর ভিতরের চাওয়া। কাবেরী ওকে চাইতে শুরু করেছিল অনেক আগেই।
"আপনার কাছে কাবেরীর যা করেছে ঠিক করছে, যা ভূল সব অরুনাভর আর তাদের ছেলেদের । "
না, এমন জেনেরিক ধারণার দিকে যাচ্ছি না। আমি গল্পে যতটুকু ডেটা দেওয়া আছে, সেটার ভিত্তিতেই কথা বলছি। গল্পের প্রথম দিকে অরুণাভর কথাবার্তা খুবই শ্লেষাত্মক, অপমান জনক যেটা করবী ম্যাডামও দেখিয়ে দিয়েছেন। অরুণাভ খুবই আমি কেন্দ্রিক। কাবেরীর সূক্ষ্ম অনুভূতির ধার ধারেনি, বরং অপমান করেছে, উপহাস করেছে।
অরুনাভর সব কিছুই বুঝি খারাপ তা হলে এতো দিন কাবেরী সংসার করলো কি ভাবে । কাবেরী চাইলে কবেই অরুনাভর সংসার ছারতে পারতো। কিন্তু ছাড়তে পারেনি । এ সব করার থেকে ওর স্বামীকে ডিভোর্স দিলেই পারতো।
প্রতিবাদ কেবল এক দিক থেকে আসে না। কাবেরী এখনও প্রতিবাদ করেনি। সে কেবল নিজের স্বাধীন জীবন খুঁজে নিচ্ছে। ঠিক এমনই এক বিষয় নিয়ে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের এমন এক গল্প পড়েছিলাম অনেকদিন আগে। সেখানে নারী এক মাঝির প্রেমে পড়েছিল। মঝির খেটে খাওয়া সুঠাম পেশী, জিমে যাওয়া ফোলান পেশী নয়।
আমি আপনার সাথে অনেকটাই সহমত। অরুণাভ সেই সব পুরুষদের মধ্যে পড়ে যে কি চায় সেটা হয়তো নিজেও আজও জানেনা। সে একদিকে চায় স্ত্রীর আধুনি হয়ে ওঠা নতুন রূপ, আবার সত্যিই যদি কাবেরী স্বামীর ইচ্ছা পূরণ করে তবে তখন সে ভাববে কেন এতো পরিবর্তন আসলো তার মধ্যে? এর চেয়ে তো আগের নারীই ভালো ছিল। আবার তার ভিতরের পুরুষ অনেকবার স্ত্রীকে এমন কিছু কথা বলে সুখ পেয়েছে যেগুলো হয়তো স্ত্রী হিসেবে বা সর্বোপরি নারী হিসাবে কাবেরীকে একটু হলেও কষ্ট দিয়েছে। লাইফ টা এনজয় করতে শেখো - এই কথাটার অনেক মানে বেরোতে পারে। স্বামী কি সত্যিই চায় তার স্ত্রী লাইফ এনজয় করুক? আর চাইলে সেটা কিভাবে? হয়তো উত্তর তারও জানা নেই।
অনেক সময় স্বামীরা অপর সুঠাম দেহের পুরুষ নিয়ে স্ত্রীকে টিজ করে কিন্তু তার উত্তরে স্ত্রীও যদি স্বামীর সাথে সহমত পোষণ করে তখনই স্বামীর দুস্টু হাসি মিলিয়ে যায়। অর্থাৎ তার ইচ্ছে মতো স্ত্রী চলবেও, তাকে কাতুকুতু দিয়ে হাসতে বাধ্য করবে আবার তাকে স্বামী সন্তানের জীবনের বাইরে বেরিয়ে এনজয় করার জ্ঞানও দেবে। আমারও তাই এই চরিত্রটা পছন্দ হয়নি। হেনরি দা সেইভাবেই ফুটিয়ে তুলেছেন অরুণাভ কে।
কিন্তু বটি বাবুর কথা গুলোও সম্পূর্ণ ফেলে দেবার মতো নয়। আমি মোটেও বলবোনা সে স্বার্থপর এক নারী। সে সত্যিই এক স্ত্রী আর এক যোগ্য মা। যার মধ্যে আজও এক মা বর্তমান। যার বুক শুধুই আপন পেটের সন্তান ছাড়াও এক অচেনা শিশুর জন্য কাঁদে। যাকে দুধ দিয়ে জীবনের অন্যতম সেরা শান্তি অনুভব করে সে। কিন্তু যেখানে যৌন মিলন ব্যাপারটা চলে আসে সেখান থেকেই নানা মতের সৃষ্টি হয়। আজ আধুনিক যুগে যৌন মিলন যেন খুব সাধারণ ব্যাপার হয়ে গেছে। আচ্ছা সত্যিই কি সম্ভগ ব্যাপারটা এতটাই সাধারণ? আমার তো তা মনে হয়না। স্বামী স্ত্রী হোক বা প্রেমিক প্রেমিকার মধ্যে হওয়া সম্পর্কেও অবাক সময় নোংরামি থাকতে পারে আবার অবৈধ সম্পর্কেও ভালোবাসা থাকতে পারে। স্বামীর অত্যাচার সহ্য করা নারী যদি কোনো ভালোবাসার মানুষ খুঁজে পেয়ে তাকে আপন করে নেয় তাতে অন্তত সে সুখ পায়। দুনিয়া তো অপমান করার জন্য বসেই আছে। কিন্তু অন্তত সেতো শান্তি পাক। কিন্তু এখানে অর্থাৎ এই গল্পে ব্যাপারটা একটু যেন আলাদা। কাবেরীর স্বামীর খারাপ দিক গুলোর সাক্ষী আমরা হলেও সে হয়তো পুরোপুরি একজন খলনায়ক চরিত্র নয়। হয়তো এতদিনের একসাথে থাকা মানুষটা তার কাছে অভ্যেস হয়ে উঠেছে তাই তাকে বড্ড হালকা ভাবে নেয় অরুণাভ। ঠিক অনেকটা বাচ্চার খেলনা কেনার আবদারের মতো। যে বাবা মার কাছে যে খেলনা বায়না করে কেনে, একদিন সেটাকেই ফেলে দেয়। কিনে নেয় আরও দামি খেলনা। কিন্তু সেটা একটা বাচ্চাকে মানায়। যদি সেটাই সে প্রাপ্ত বয়স্ক হবার পরেও নিজের আপন জনের সাথে করে তবে তাকে মেনে নেওয়া যায়না। কিন্তু এক্ষেত্রে অরুণাভ সেই একই কাজ করলেও বোধহয় নতুন খেলনার প্রতি আকৃষ্ট হয়নি। নিজের পুরানো মানুষটাকেই সে আজও চায়। তাকে কথা শোনাতে ভোলেনা কিন্তু তাকে ভুলে যেতেও পারবেনা। বুকের একটা কোণে আজও সেই নারীই বসবাস করে।
সেই জায়গায় কাবেরী যেটা করে ফেললো সেটা কি পুরোপুরি ঠিক? গল্পেই হয়তো ব্যাপারটা মানায় কিন্তু বাস্তবে কি মানাবে? সে উড়ছে আজ মুক্ত আকাশে কিন্তু উড়তে উড়তে কি একবারও মনে হবেনা এই ওড়ার উদ্দেশ্য কি? আমি মোটেই এটা পুরুষ হিসাবে বলছিনা যে সে চুপচাপ করে সব মেনে মানসিক কষ্ট পাক কিন্তু তার থেকে মুক্তির উপায় কি শুধুই এইটা?
এর উত্তরে যদি বলি সে আজ খুঁজে পেয়েছে এমন এক পুরুষ যাকেই হয়তো সে চাইতো কিন্তু নিজেও জানতোনা নিজের ইচ্ছার কথা। তার প্রয়োজন ছিল এমন পুরুষের যে সত্যিই বড্ড তীব্র, বীর্যবান বড্ড কামুক। তার প্রতি আকর্ষণ শুধুই ওই দেহের জন্য নয়, ওই পুরুষের রূদ্র রূপ সবচেয়ে বেশি আকর্ষিত করেছে কাবেরী কে। অনেকটা ওই ক্লাসের সেরা ছাত্রীর পেছনের বেঞ্চে বসা খারাপ ছেলেটার প্রতি হয়। তার ওপর রাগও হয় আবার একা সময় হয়তো ওই বদ ছেলের মুখটা মনে পড়তেই ঠোঁটে হাসি খেলে যায়।
বুধন এর মুখে মাগি কথাটাও উত্তেজনা বাড়ায় কিন্তু সেই একি কাজ যদি অরুণাভ করতো? নিজের যৌন পিপাসা মেটানোর জন্য বারবার মাগি বলে তাকে বাধ্য করতো মিলিত হতে? তখন কি অরুণাভকে আমরা সত্যিকারের ভালো স্বামীর চোখে দেখতাম? কাবেরী কি তখন সেও স্বামীকে সেরা স্বামী মেনে নিতো? হয়তো হ্যা কিংবা হয়তো একদমই না।
আমরা দুই পুরুষকে দুই ভাবে দেখছি। আর হয়তো দ্বিতীয় পুরুষের কাছে গল্পের নারী চরিত্র সুখ পাচ্ছে তাই শুধু ওই প্রথম পুরুষ আমাদের চোখে কাঁটা। তাই এই গল্পে বোধহয় তিনজনেই কোনো না কোনো দোষে দোষী। তবে এটাও ঠিক একটু খারাপ হতেও কোনো ক্ষতি নেই যদি ভালোটা শুধুই দুঃখ দেয়। তাই এই চরিত্র নিয়ে আলোচনা করা আপনারা প্রত্যেকে নিজের নিজের জায়গায় সঠিক।