Thread Rating:
  • 168 Vote(s) - 3.39 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
Romance ছিন্নমূল ঃ কামদেব
ঊনষট্টি অধ্যায়




শীতের আর দেরী নেই।বাতাসে ভোরের দিকে হিমেল পরশ পাওয়া যায়। শুক্লার বিয়ের আর চারদিন বাকী।দীপশিখা চায়ের কাপ নিয়ে ব্যালকনিতে এসে বসলেন।রাস্তায় লোক চলাচল বাড়তে থাকে। রাস্তার দুপাশে বাতি স্তম্ভে আলো জ্বলে উঠেছে। মনু তার ফোন নম্বর জানতো না আজ জেনে গেল।কত বড় ভিআইপি বলে কিনা দেরী হবে।তোকে আসতে হবে না। ফোনে একটা মহিলার গলা পেয়েছেন।অবশ্য ওর এটাই পেশা ওই মহিলাকে হয়তো আজ সার্ভিস দেবে।যাকে খুশি দিক তাতে তার কি যায় আসে।আসলে ঐসব ছবি দেখে কেমন উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলেন।এখন মনে হচ্ছে ওকে ফোন না করলেই ভাল হতো।ছোড়া ঢিল তো আর ফিরে আসবে না।এখন ভেবে আর কি হবে। সেদিনের কথা ভেবে রক্তিম হলেন দীপশিখা।ছেলেটা বেশ যত্নের সঙ্গে করেছিল।এত আদর আগে কোথাও পায়নি সেজন্য ওর প্রতি একটু দুর্বলতা বোধ করেছিলেন।ওকে নিয়ে একটু বেশী ভাবছেন নিজের প্রতি বিরক্ত হন।
ঘড়ি দেখলেন সাতটা বাজে।আটটার সময় ভাত চাপালে হবে।নিঃশেষিত চায়ের কাপ পাশে নামিয়ে রাখলেন।এই ওয়েদার বেশ ভাল লাগে।খুব গরমও না আবার ঠাণ্ডাও না।কাল থেকে শুক্লা আসবে না।এক সপ্তাহের ছুটি নিয়েছে।মোটা শরীর নিয়ে ডাক্তার শুক্লার উপর উঠেছে দৃশ্যটা মনে করে মনেমনে হাসলেন।শুক্লা ভাবছে কিইনা কি হবে।ঐটা যদি খুব ছোটো না হয় নেশা ধরে যাবে।কলিং বেল বাজলো মনে হল?মনু এলো নাতো?নাকি তার শোনার ভুল।আসলে মনে মনে মনুকে এক্সপেক্ট করছে বলে এরকম মনে হল।আবার বাজতে দীপশিখা বুঝলেন ভুল শোনেন নি।মনে মনে ভাবেন বেশী পাত্তা দেবেন না।উঠে চোখে মুখে একটা নির্বিকার ভাব ফুটিয়ে দরজা খুলতে গেলেন।
দরজা খুলে সুখকে দেখে দীপশিখা স্বাভাবিক গলায় বললেন,ও তুমি?
সুখ ভিতরে ঢুকে হেসে বলল,তুমি আর কাউকে আসতে বলেছিলে নাকি?
সুখ সোফায় বসতে দীপশিখা বললেন,ভাল কথা জিজ্ঞেস করা হয় নি,তোমার রেট কত?
মোমো রেগে গেছে সুখ বুঝতে পেরে বলল,তুমি আমার উপর রাগ করেছো?
রাগ হবে না?তুমি যদি দেখো আরেকজন আমাকে উপভোগ করছে কেমন লাগবে তোমার?
এ কথার উত্তর কি দেবে?সুখ চুপ করে থাকে।
চুপ করে আছো কেন?খুব ভাল লাগবে তোমার?
কি বলব?তুমি বিশ্বাস করো মোমো আমার এসব ভাল লাগে না।আমি এরকম ছেলে নই--।
তাহলে এখানে কেন এসেছো?
তোমার কথা আলাদা।শোনো মোমো তুমি বিশ্বাস করবে কিনা জানি না,অন্য কেউ ডাকলে আমি আসতাম না আর আমার আসল নাম  আমি ইংলিশ অনার্স নিয়ে বিএ পরীক্ষা দিয়েছি এসব কেউ জানে না।শুধু তুমি হ্যা শুধু তুমি জানো।
দীপশিখা হেসে ফেললেন বললেন,ঠিক আছে বিশ্বাস করেছি।তুমি বোস আমি চা করে আনছি। 
চা থাক।বেশি দেরী করতে পারব না। এসো আজ তোমাকে ড্রেসিং করে দেব দেখবে শরীর একদম ঝুরঝুরে লাগবে। 
কেন আবার কোথাও যেতে হবে?
তা নয় বেশি দেরী করলে পার্কে রাত কাটাতে হবে।
মানে?
আমাদের মেসে দশটার পর প্রবেশ নিষেধ।হেসে বলল সুখ।
পার্কে রাত কাটাতে হবে কেন?আমার ফ্লাট নেই?
বিস্ময়ে সুখর চোখ গোল হয়ে যায় তারপর উচ্ছ্বসিত গলায় বলল,রাতে এখানে থাকবো?সত্যি বলছো ওহ মোমো আজ সারা রাত দারুন মজা হবে। 
দীপশিখা রান্না ঘরে চলে গেলেন।এবেলা হয়তো টিফিন করেনি।ডিম দিয়ে স্যাণ্ডউইচ করার কথা ভাবলেন।রান্না ঘরে কাজ করতে করতে পিছনে না তাকিয়েও বুঝতে পারেন মনু ঢুকেছে।পিছনে দাঁড়িয়ে কাধের দুপাশ হতে টিপতে টিপতে ঘাড়ের কাছে চলে আসে।আঃ হা বেশ ভাল লাগছে।
খাবার তৈরী হতে একটা প্লেটে দু-টো স্যাণ্ডউইচ পেয়াজ কুচি দিয়ে সামনে ধরে দীপশিখা বললেন,এটা নিয়ে যাও আমি চা নিয়ে যাচ্ছি।
তোমার?
আমি খেয়েছি।আমি না খেয়ে তোমায় দেব ভেবেছো?হাল্কাভাবে দীপশিখা বললেন।
সুখ প্লেট নিয়ে বৈঠকখানায় এসে বসে খেতে থাকে।মনে মনে ভাবে মেয়েরা না খেয়ে অন্যকে দেওয়া কেন আরো অনেক কিছু পারে। দীপশিখা এক কাপ চা নামিয়ে রেখে ঘরে গিয়ে পোশাক বদলান। ম্যাক্সি খুলে শাড়ি পরলেন।চা শেষ করে বৈঠকখানায় এসে বললেন,তুমি বোসো আমি এখুনি আসছি।
এতরাতে তুমি কথায় যাবে?
দরকার আছে।
সেতো বুঝলাম কিন্তু কি দরকার আছে?
ভারী মুষ্কিল হল সব কথা ওনাকে বলতে হবে।দীপশিখা বললেন,একটু মাংস আনতে যাচ্ছি।
আমাকে দাও আমি যাচ্ছি।
তুমি পারবে?
পারতে হবে।
দীপশিখা বুঝতে পারলেন একে থামানো যাবে না বললেন,শোনো মৌলালী পেরিয়ে ওদিকে দেখবে মাংসের দোকান।সামনের টেংরি হতে পাচশো মাংস আনবে।খালি খালি আমি শাড়ী চেঞ্জ করলাম।
শোনো মোমো তুমি একা কি কর আমি দেখতে আসব না কিন্তু আমার সামনে তুমি বাজার করবে আর আমি ঘরে বসে থাকব সেটা হবে না।সুখ টাকা নিয়ে বেরিয়ে গেল।দীপশিখা আনন্দে আচলে চোখ মুছলেন।এরকম একজন জীবন সঙ্গী পেলে আর কি চাই।ব্যালকনিতে গিয়ে রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকেন।মনু রাস্তা পেরিয়ে দক্ষিন দিকে চলে গেল।চলার ভঙ্গিতে পুরুষালী ভাব মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে থাকেন।
কিছুটা গিয়ে নজরে পড়ে মাংস ঝুলছে।কতকাল মাংস খায়নি।মোমো রান্না করবে কেমন করবে কে জানে।বাবা মারা যাবার পর মা মাছ মাংস কিছুই খেত না।সেজন্য সুখও গরজ করেনি।বৈচি মাসীর ভাইঝির বিয়েতে শেষ মাংস খাওয়া।কেমন আছে বৈচিমাসী কে জানে।
আজ রাতে মনুর সঙ্গে এক বিছানায় একসঙ্গে ঘুমাবে ভেবে দীপশিখা শিহরিত হন। ঘরে এসে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে শাড়ি পেটিকোট  খুলে ফেললেন।পরণে কেবল ব্রেসিয়ার আর প্যাণ্টি।নিজেকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখতে থাকেন।প্যাণ্টির ফাক দিয়ে কৃষ্ণবর্ণের পশম বেরিয়ে রয়েছে।রান্না ঘরে যখন কাধ টিপে দিচ্ছিল খুব ভাল লাগছিল।আমার সামনে তুমি বাজার করতে যাবে আমি ঘরে বসে থাকব কথাগুলো মনে পড়তে বেশ মজা লাগে।ঐটুকু ছেলে তাকে শাসন করছে।জীবন সঙ্গী হিসেবে ভাবতে গিয়ে লজ্জা পায় যদি পাচ/সাত বছরেরও ছোট হতো তাহলে ভাবা যেতো।জীবনটা একেবারে ওলট পালট হয়ে গেল।বাবার অবাধ্য হয়ে মনে হয়েছিল কিইনা কি করছে।আজ বাবা বেচে নেই সেজন্য আফশোস হয়।আরে ছেলেটা গেছে তো গেছেই।এতক্ষনে খেয়াল হয় একটু মাংস আনতে এত সময় লাগে।পাচশো টাকার নোট দিয়েছে।কথাটা মনে আসতেই নিজেকে ধমক দেয় ছিঃ একি ভাবছেন।কলিং বেলের শব্দ হতে দ্রুত ম্যাক্সি গলিয়ে দরজা খুলতে গেলেন।
কি হল এত দেরী?
খুচরো টাকা ফেরত দিয়ে সুখ বলল,সামনের টেংরী নেই।অনেক্ষন দাঁড়িয়ে থেকে আরেকটা পাঁঠা কাটা হলে তবে পাওয়া গেল।
নেই অন্য কিছু নিয়ে আসতে।
তুমি বললে--
বলেছি তো কি হয়েছে?নিজে বুদ্ধি খাটিয়ে কিছু করতে পারো না? 
 
Like Reply


Messages In This Thread
RE: ছিন্নমূল ঃ কামদেব - by kumdev - 07-01-2023, 02:53 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)