06-01-2023, 11:39 AM
চ্যালেঞ্জ:৭
পরেরদিন---
আজ বিকালে পাঁচী এবং বাবুল মাঝিদের সাথে আলোচনায় বসবে তাই বাবুল কক্সবাজার গিয়ে পাঁচীর ব্যায়ামের কস্টিউম কিনে আনতে পারলনা। সে মনে মনে ঠিক করল আর ২/১ দিন পর কক্সবাজারে যাবে।
বিকাল ৪ টার দিকে এক কমিউনিটি সেন্টারে পাঁচী, বাবুল এবং মহেশখালীর প্রায় সব ওস্তাদ জেলে (সাধারণত প্রতি ট্রলারে একজন ওস্তাদ জেলে থাকে যার অধীনে ঐ ট্রলারের সব জেলে এবং মাঝিরা কাজ করে) এবং প্রায় ৫০০ জেলে আলোচনায় বসল। ওস্তাদ জেলে এবং সাধারণ জেলে মিলে এই সংখ্যা প্রায় ৯০০ এর কাছাকাছি।
পাঁচী এবং বাবুল হলরুমের সামনে টেবিলে বসা, টেবিলের উপরে স্টান্ডে একটা মাত্র মাইক্রোফোন রাখা। আর উপস্থিত অন্য সবাই সামনে চেয়ারে বসা।
শুভেচ্ছামূলক কথা বার্তার পর পাঁচী আলোচনা শুরু করল “আমি জানতে পারলাম আপনাদের মাঝে শুধু ৩০-৪০ জন জেলে স্মাগলিং করেন। কে কে করেন তা আমি জানতে চাইব না। আমার কথা হচ্ছে আমার ট্রলার, জাল, তেল নিয়ে কোনো মাঝি স্মাগলিং করে সেই মাদক দ্রব্য আমারই দেশে ঢুকাতে পারবেনা। এ কাজ আমি কোনোমতেই হতে দেবনা। যে সমস্ত মাঝি/জেলেরা এই স্মাগলিংয়ের সাথে জড়িত তারা যদি আমার ট্রলারে থেকে থাকেন তাহলে তারা আমার ট্রলার ছেড়ে দিন। অন্য কারো ট্রলারে চলে যান বা অন্য কোনো ব্যাবসায় যোগ গিন। আমি আমার কোনো মাঝিকে স্মাগলিং করতে দেবনা। কিন্তু মনে রাখবেন আপনারা সবাই স্বাধীন, তাই আপনারা চাইলে যেকোনো সময় আমার ট্রলার ছেড়ে চলে যেতে পারেন। আপনাদের কারো কোনো প্রশ্ন আছে? থাকলে এখনই করুন”।
পাঁচীর কথা শুনে মাঝিদের ভিতর গুঞ্জন উঠল। মাঝিরা নিজেদের মধ্যে বেশ জোড়ে জোড়ে কথা বলতে লাগল।
বাবুল মাঝিদের উদ্দেশ্যে বলল ‘আপনারা ৮০০-৯০০ লোক এক সাথে কথা বললে কিছুই বোঝা যাবেনা। আপনাদের পক্ষ থেকে কেউ একজন সামনে এসে মাইকে কথা বলুন।
কিন্তু মাঝিদের মধ্য হতে কেউ এলনা।
বাবুল ‘কই আসুন’।
তারপরেও কেউ এলনা। তাই দেখে বাবুল বলল ‘আমি যদি আপনাদের মধ্যে হতে ভালো কোনো মাঝিকে ডেকে নেই তাহলে কি আপনারা রাজী থাকবেন’?
মাঝিরা একত্রে সবাই বলে উঠল ‘হ রাজী’।
বাবুল পাঁচীর সাথে আলোচনা করে তার ওস্তাদ জেলেকে ডাক দিল। বাবুলের ডাক শুনে ওস্তাদ জেলে ইতস্তত করতে ছিল। তাই দেখে পাঁচী বলল ‘ওস্তাদ আপনি আসুন, আপনার কোনো ভয়নাই। যা মাঝিদের জন্য ভালো আপনি তাই বলবেন’।
সবার সামনে রানীমার মুখে ওস্তাদ ডাক শুনে তিনি আশ্বস্ত হলেন এবং উঠে সামনে গেলেন। ওস্তাদ জেলে মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে রানীমা এবং সরকারকে ধন্যবাদ দিলেন এরপর সব মাঝিদেরকে নমস্কার ও সালাম দিলেন। ওস্তাদ বলা শুরু করলেন- ‘আমরা গরিব মানুষ, আমাদের একমাত্র পেশা জলে যাওয়া, মাছ ধরা। এই কাজ বাদে আমরা আর কিছু শিখি নাই, আর কিছু আমরা পারিও না। এই কাজের সাথে কিছু কিছু খারাপ মাঝি, তা আমিও হতে পারি, স্মাগলিং মিশিয়েছে। এই স্মাগলিংয়ে অনেক টাকা। লোভ সামলানো কষ্ট। কিন্তু নতুন আইন হইছে ধরা পড়লে মৃত্যুদণ্ড, আর আমাদের মহাজনও চাইছে আমরা যেন স্মাগলিং না করি, এবং যদি আমরা কেউ স্মাগলিং করি তবে রানীমার ট্রলার যেন ছেড়ে দেই। কিন্তু সমস্যাটা হল- মহেশখালীতে একমাত্র মহাজন হচ্ছেন রানীমা। আমরা যদি তার ট্রলার ছেড়ে দেই। তবে কার ট্রলারে কাজ করব? আর কাজ না করলে কি খাব? দুইটা ডাইল ভাত খাওয়ার জন্যই আমরা বাপ-দাদার শিখাই যাওয়া এই ব্যাবসা করছি, আর এখন ডাইল ভাতের চাইতে ভালো কিছু খাওয়ার জন্য আমাদের বেশ কিছু মাঝি শয়তান লোকদের শিখিয়ে দেওয়া স্মাগলিং করছে। আমি রানীমার কাছে দাবী জানাব তিনি জেন আমাদের আরেকটু ভালো কোনো ব্যাবস্থা করে দেন’।
ওস্তাদ জেলের এই কথা শুনে অন্য সব জেলেরা তাকে হৈ হৈ করে সমর্থন দিল। ওস্তাদ জেলে তার চেয়ারে ফিরে যেতে চায় তাই দেখে পাঁচী তাকে যেতে নিষেধ করে। ওস্তাদ গিয়ে পাঁচী আর বাবুলের পিছনে দাঁড়ায়।
পরেরদিন---
আজ বিকালে পাঁচী এবং বাবুল মাঝিদের সাথে আলোচনায় বসবে তাই বাবুল কক্সবাজার গিয়ে পাঁচীর ব্যায়ামের কস্টিউম কিনে আনতে পারলনা। সে মনে মনে ঠিক করল আর ২/১ দিন পর কক্সবাজারে যাবে।
বিকাল ৪ টার দিকে এক কমিউনিটি সেন্টারে পাঁচী, বাবুল এবং মহেশখালীর প্রায় সব ওস্তাদ জেলে (সাধারণত প্রতি ট্রলারে একজন ওস্তাদ জেলে থাকে যার অধীনে ঐ ট্রলারের সব জেলে এবং মাঝিরা কাজ করে) এবং প্রায় ৫০০ জেলে আলোচনায় বসল। ওস্তাদ জেলে এবং সাধারণ জেলে মিলে এই সংখ্যা প্রায় ৯০০ এর কাছাকাছি।
পাঁচী এবং বাবুল হলরুমের সামনে টেবিলে বসা, টেবিলের উপরে স্টান্ডে একটা মাত্র মাইক্রোফোন রাখা। আর উপস্থিত অন্য সবাই সামনে চেয়ারে বসা।
শুভেচ্ছামূলক কথা বার্তার পর পাঁচী আলোচনা শুরু করল “আমি জানতে পারলাম আপনাদের মাঝে শুধু ৩০-৪০ জন জেলে স্মাগলিং করেন। কে কে করেন তা আমি জানতে চাইব না। আমার কথা হচ্ছে আমার ট্রলার, জাল, তেল নিয়ে কোনো মাঝি স্মাগলিং করে সেই মাদক দ্রব্য আমারই দেশে ঢুকাতে পারবেনা। এ কাজ আমি কোনোমতেই হতে দেবনা। যে সমস্ত মাঝি/জেলেরা এই স্মাগলিংয়ের সাথে জড়িত তারা যদি আমার ট্রলারে থেকে থাকেন তাহলে তারা আমার ট্রলার ছেড়ে দিন। অন্য কারো ট্রলারে চলে যান বা অন্য কোনো ব্যাবসায় যোগ গিন। আমি আমার কোনো মাঝিকে স্মাগলিং করতে দেবনা। কিন্তু মনে রাখবেন আপনারা সবাই স্বাধীন, তাই আপনারা চাইলে যেকোনো সময় আমার ট্রলার ছেড়ে চলে যেতে পারেন। আপনাদের কারো কোনো প্রশ্ন আছে? থাকলে এখনই করুন”।
পাঁচীর কথা শুনে মাঝিদের ভিতর গুঞ্জন উঠল। মাঝিরা নিজেদের মধ্যে বেশ জোড়ে জোড়ে কথা বলতে লাগল।
বাবুল মাঝিদের উদ্দেশ্যে বলল ‘আপনারা ৮০০-৯০০ লোক এক সাথে কথা বললে কিছুই বোঝা যাবেনা। আপনাদের পক্ষ থেকে কেউ একজন সামনে এসে মাইকে কথা বলুন।
কিন্তু মাঝিদের মধ্য হতে কেউ এলনা।
বাবুল ‘কই আসুন’।
তারপরেও কেউ এলনা। তাই দেখে বাবুল বলল ‘আমি যদি আপনাদের মধ্যে হতে ভালো কোনো মাঝিকে ডেকে নেই তাহলে কি আপনারা রাজী থাকবেন’?
মাঝিরা একত্রে সবাই বলে উঠল ‘হ রাজী’।
বাবুল পাঁচীর সাথে আলোচনা করে তার ওস্তাদ জেলেকে ডাক দিল। বাবুলের ডাক শুনে ওস্তাদ জেলে ইতস্তত করতে ছিল। তাই দেখে পাঁচী বলল ‘ওস্তাদ আপনি আসুন, আপনার কোনো ভয়নাই। যা মাঝিদের জন্য ভালো আপনি তাই বলবেন’।
সবার সামনে রানীমার মুখে ওস্তাদ ডাক শুনে তিনি আশ্বস্ত হলেন এবং উঠে সামনে গেলেন। ওস্তাদ জেলে মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে রানীমা এবং সরকারকে ধন্যবাদ দিলেন এরপর সব মাঝিদেরকে নমস্কার ও সালাম দিলেন। ওস্তাদ বলা শুরু করলেন- ‘আমরা গরিব মানুষ, আমাদের একমাত্র পেশা জলে যাওয়া, মাছ ধরা। এই কাজ বাদে আমরা আর কিছু শিখি নাই, আর কিছু আমরা পারিও না। এই কাজের সাথে কিছু কিছু খারাপ মাঝি, তা আমিও হতে পারি, স্মাগলিং মিশিয়েছে। এই স্মাগলিংয়ে অনেক টাকা। লোভ সামলানো কষ্ট। কিন্তু নতুন আইন হইছে ধরা পড়লে মৃত্যুদণ্ড, আর আমাদের মহাজনও চাইছে আমরা যেন স্মাগলিং না করি, এবং যদি আমরা কেউ স্মাগলিং করি তবে রানীমার ট্রলার যেন ছেড়ে দেই। কিন্তু সমস্যাটা হল- মহেশখালীতে একমাত্র মহাজন হচ্ছেন রানীমা। আমরা যদি তার ট্রলার ছেড়ে দেই। তবে কার ট্রলারে কাজ করব? আর কাজ না করলে কি খাব? দুইটা ডাইল ভাত খাওয়ার জন্যই আমরা বাপ-দাদার শিখাই যাওয়া এই ব্যাবসা করছি, আর এখন ডাইল ভাতের চাইতে ভালো কিছু খাওয়ার জন্য আমাদের বেশ কিছু মাঝি শয়তান লোকদের শিখিয়ে দেওয়া স্মাগলিং করছে। আমি রানীমার কাছে দাবী জানাব তিনি জেন আমাদের আরেকটু ভালো কোনো ব্যাবস্থা করে দেন’।
ওস্তাদ জেলের এই কথা শুনে অন্য সব জেলেরা তাকে হৈ হৈ করে সমর্থন দিল। ওস্তাদ জেলে তার চেয়ারে ফিরে যেতে চায় তাই দেখে পাঁচী তাকে যেতে নিষেধ করে। ওস্তাদ গিয়ে পাঁচী আর বাবুলের পিছনে দাঁড়ায়।