02-01-2023, 09:50 PM
সপ্তপঞ্চাশৎ অধ্যায়
ঘুম ভাঙ্গলো একটু বেলায়।গুন গুন করে রবীন্দ্র সঙ্গীতের সুর ভাজতে ভাজতে উঠে পড়লেন দীপশিখা।রান্না ঘরে গিয়ে চায়ের জল চাপিয়ে বেসিনে দাঁড়িয়ে দাত ব্রাশ করতে করতে ভাবেন আজকের সারাদিনের কাজ।সাধারণত সবাই মিলে টাকা তুলে কিছু কিনে দেওয়াই কলেজের রীতি। এবার কি হবে জানেন না, শুক্লার বিয়েতে আলাদাভাবে কিছু দেবার কথা ভাবছেন দীপশিখা।শুক্লা কলেজে জয়েন করার পর থেকেই তার সঙ্গে একটা অন্য রকম সম্পর্ক গড়ে তুলেছে।
চায়ে চুমুক দিতে দিতে অন্যান্য রান্না করতে থাকেন।একার জন্য রান্না অনেক জিনিস নষ্ট হয়।একেবারে শেষে ভাত চাপিয়ে দীপশিখা ঘরে এসে বসলেন।টেবিলের উপর শুক্লার বিয়ের কার্ডটা নজরে পড়তে হাতে তুলে চোখ বোলাতে বোলাতে ভাবেন তার কথামতো শুক্লার ভাই লিখেছে।খাম থেকে কার্ডটা বের করে খামটা কুচি কুচি করে ছিড়ে বাস্কেটে ফেলে দিলেন।ব্যাপারটা জানাজানি হলে কেলেঙ্কারীর একশেষ।হুট করে কিছু না ভেবেই ফোনটা দিয়ে দিলেন।অবশ্য ফোনটা বেকার পড়ে ছিল।এখন মনে হচ্ছে সিমটা খুলে দেওয়া উচিত ছিল।তিনি একটা কলেজের অধ্যাপিকা ভেবে খুব খারাপ লাগে। প্রকৃত পরিচয় না দিলেই পারতেন।দীপশিখা নাম অধ্যাপিকা সবই জেনে গেছে।নতুন একটা দুশ্চিন্তা মাথায় ঢুকলো। ফোনটা নিয়ে ছেলেটি কি করতে পারে?বলবেন ফোন চুরি হয়ে গেছে।বাসে ট্রামে ফোন পিক পকেট হওয়া নতুন কোনো ব্যাপার নয়।অবশ্য ছেলেটিকে খারাপ মনে হয় নি।তাকে খুব যত্ন করেছে।অবশ্য বাইরে থেকে মানুষকে কতটুকু বোঝা যায়।ছেলেটি পুরুষালী চেহারা ব্যবহার অত্যন্ত ভাল বয়স খুবই কম না হলে দীপশিখার ওকে খারাপ লাগে নি। কোথায় থাকে কেমন পরিবার কিছুই জানেন না।বলছিল বিএ পরীক্ষা দিয়েছে।পরীক্ষা দিয়ে এইসব করছে যত সব।অবশ্য কথা বলছিল বেশ বুদ্ধিদীপ্ত,একেবারে লেখাপড়া জানে না তা নয়। এই বয়সেই এসব কাজে বেশ এক্সপার্ট,পেনিসটাও বেশ বড়--তা প্রায় আট ন-ইঞ্চি হবে।অবশ্য করছিল বেশ যত্ন করে দীপশিখা রক্তিম হলেন।পেশাদাররা হয়তো কৃত্রিম উপায়ে পেনিস বড় করে। ভাত উথলে পড়তে উঠে হাড়ী নামিয়ে উপুড় করে দিয়ে স্নানে গেলেন।
সারা গায়ে সাবান মেখে বগল গুদ শরীরের বিভিন্নখাজ কচলে কচলে ধুয়ে ফেললেন।শুক্লার কথাগুলো মনে পড়ল।মেয়েরা কি মাটির ভাড় একবার ব্যবহার করলে ফেলে দিতে হবে।থালা বাসন ব্যবহারের পর ধুয়ে আবার ব্যবহার করি না।কমলের সঙ্গে সে অর্থে বলতে গেলে তার বিয়ে হয় নি।পুরানো কথা আর মনে করতে চান না যা হয়ে গেছে তা নিয়ে ভেবে কি হবে।আবার মনে হয় শুক্লার ভাই বাড়ী গিয়ে কি বলেছে কে জানে।শুক্লার সঙ্গে দেখা হলে জানা যাবে।
বাথরুম হতে বেরিয়ে একেবারে উলঙ্গ হয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নিজেকে নিরীক্ষন করেন।শাড়ী পরে বেরোবার জন্য প্রস্তুত হতে থাকেন।
ছেলেটা যাবার আগে বলছিল নিজের দিকে একটু নজর দিতে।এই রকম কথাগুলোই তাকে দুর্বল করে দিয়েছে।
হঠাৎ বাবার কথা মনে পড়ল।দ্বৈপায়ন মিত্র আদর্শবাদী দৃঢ়চেতা মানুষ ছিলেন।সেদিন বাবার অবাধ্য না হলে জীবনটা অন্য রকম হতো।আচলে চোখ মুছলেন।
বসুমতী ইতিমধ্যে বার দুয়েক উকি দিয়ে গেছে।ধাড়া খুবই বিরক্ত বলল,পুরুষদের মেস এত কিসের নজরদারী বলুন তো?
উপেনবাবু বললেন,সংসার নেই কি করবে? নেই কাজ খই ভাজ এই আরকি।
সুখ চিন্তিত বুঝতে পারে এখান থেকে দ্রুত পাততাড়ি গোটাতে হবে।বাঘিনী রক্তের স্বাদ পেয়েছে।কিন্তু যাবে কোথায়?একজন ব্যাচেলরের পক্ষে ঘর পাওয়া মুষ্কিল।রেজাল্টটার জন্য অপেক্ষা করছে। সেও অন্যদের সঙ্গে প্রস্তুত হতে থাকে।তার অবশ্য এদের মত তাড়া ছিল না।কিন্তু একা হলেই ঝাপিয়ে পড়বে বাঘিনী।
তোমাকেও কি আগে বেরোতে হবে?উপেনবাবু জিজ্ঞেস করলেন।
হ্যা কাকু ইদানীং একটু তাড়াতাড়ি যেতে বলেছে।হেসে বলল সুখ।
বালিশের কাছে ওটা ফোন মনে হচ্ছে?
হ্যা সেকেণ্ড হ্যাণ্ড পেলাম।
মিথ্যেরা সারি দিয়ে চলে একটার পর একটা।সুখ গামছা নিয়ে বাথরুমে চলে গেল।
সিথীর মোড়ে আকাশি রঙের গাড়ীটার কাছে এগিয়ে যেতে সামনের দরজা খুলে গেল।শুক্লা লাজুক হেসে উঠে বসতে গাড়ী স্টার্ট করে।
রোজই আসবে নাকি?শুক্লা জিজ্ঞেস করে।
কেন আপত্তি আছে?
আপত্তির কথা হচ্ছে না।আর দু-সপ্তাও নেই--।
আমার কাছে দু-সপ্তা দু-বছরের মত।
থাক হয়েছে।এইযে তুমি আসো বাড়ীতে জানে?
আমার বোন সৃজিতা আছে না?জানো তো মেয়েদের স্বভাব।ড সুজিত বলল।
তুমি অন্যায় করবে সেটা বললে দোষ?
আমি কি অন্য মেয়ে নিয়ে যাচ্ছি?
আমাদের কি বিয়ে হয়েছে?
বাজে তর্ক ভাল লাগছে না অন্যকথা বলো।
কি বলব?
আচ্ছা তোমার দীপুদি বিয়ে করেন নি?
শুক্লার মনটা মুহূর্তে অন্য জগতে চলে যায়।দীপুদির বাবার ইচ্ছে ছিল না মেয়ে শহরে এসে থাকুক।তিনি বুঝিয়েছিলেন এই গ্রামের জলে হাওয়ায় বড় হয়ে মানুষ হয়ে গ্রামের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা থাকবে না?স্বার্থপরের মত চলে যেতে হবে। বাবার এইসব কথায় কর্ণপাত না করে দীপুদি গ্রাম ছেড়ে শহরের কলেজে চাকরি নিলেন।দীপুদির মুখেই শোনা এসব কথা।
কি হল?
দীপুদির জীবনটা ভেরি স্যাড।ভাল বংশের মেয়ে দীপশিখা মিত্র ইংরেজীতে ভাল রেজাল্ট। আমি বেশি জানি না শুনেছি একটা ফ্রড লোকের পাল্লায় পড়েছিলেন তারপর সেপারেশন হয়ে যায়।আর বিয়ে করেন নি।সেই থেকে একাকী জীবন।এই-এই এখানেই থামাও কলেজের কাছে যাবে না।
গাড়ী থামিয়ে সুজিত বলল,তোমার দীপুদির কথা শোনা হল না।অদ্ভুত ভদ্রমহিলা এক ঝলক দেখেই মনে হয়েছিল অন্য রকম। শুক্লা গাড়ী থেকে নেমে হাত নেড়ে বিদায় নিয়ে কলেজের দিকে হাটতে থাকে।
ক্লাস শুরু হয়ে গেছে দীপশিখা ক্লাস নিচ্ছেন।লেকচার করতে করতে নজরেপড়ে পিছনে দুটি মেয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলছে।পড়াতে পড়াতে মনে হল তার পড়ানো কি যথেষ্ট আকর্ষণীয় হচ্ছে না।ক্লাস শেষ হবার মুখে দীপশিখা ডাকলেন,শিখা এ্যাণ্ড কুন্তলা কামিং প্লিজ।
মেয়েদুটি জড়োসড় হয়ে কাছে এসে দাড়াল।
আই ডোণ্ট ফিল গুড টিচিং?
না ম্যাম।
কি কথা হচ্ছিল তোমাদের?
মেয়েদুটি পরস্পর চোখাচুখির পর মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে রইল।
কি হল?সত্যি কথা বললে আমি কিছু বলব না।
ম্যাম কুন্তলা বলছিল--।
এই তুই বলিস নি ডিএম ম্যামকে দেখ--।
তুই বলিস নি ম্যামকে এলিজাবেথ টেলরের মত লাগছে।
কি মিথ্যুক আমি আগে বলেছি--ম্যাম বিশ্বাস করুন--।
ঠিক আছে ঠিক আছে জায়গায় গিয়ে বোসো।দীপশিখা আর কথা বাড়াতে দিলেন না।তিনি জানেন অধ্যাপিকাদের নিয়ে মেয়েরা নানা রকম কথা বলে।এসব কথায় কান দিতে নেই।
ক্লাস শেষ করে স্টাফ রুমে ঢুকে শুনলেন মিসেস সেন বলছেন,এই মোবাইল একেবারে সর্বনাশ করে ছাড়বে।
কেন মিসেস সেন আগে ফোন এলে প্রিসিপালের ঘরে ছুটতে হত এখন জায়গায় বসেই কথা বলতে পারছেন সেটা তো বলছেন না?
আহা আমি তাই বলেছি আপনি জানেন মেয়েরা বিচ্ছিরি-বিচ্ছিরি সাইট খুলে কি সব দেখে?
সবাই হো-হো করে হেসে উঠল।হাসি থামলে মিসেস চ্যাটার্জি বললেন,আমরা যদি মিস ইউজ করি তার জন্য মোবাইলকে দায়ী করা ঠিক হবে না।
দীপশিখা বসে কুন্তলার কথা ভাবে।আজকালকার মেয়েরা অনেক বেশী এ্যাডভান্স।ব্রিজিত বার্ডোট এলিজাবেথ টেলর এই বয়সে আমরা জানতামও না।বড়জোর বাংলা সিনেমার কিছু নায়ক-নায়িকা অবধি ছিল আমাদের দৌড়।সত্যিই কি তাকে এলিজাবেথ টেলরের মত দেখতে? মনে মনে হাসলেন দীপশিখা।
ঘুম ভাঙ্গলো একটু বেলায়।গুন গুন করে রবীন্দ্র সঙ্গীতের সুর ভাজতে ভাজতে উঠে পড়লেন দীপশিখা।রান্না ঘরে গিয়ে চায়ের জল চাপিয়ে বেসিনে দাঁড়িয়ে দাত ব্রাশ করতে করতে ভাবেন আজকের সারাদিনের কাজ।সাধারণত সবাই মিলে টাকা তুলে কিছু কিনে দেওয়াই কলেজের রীতি। এবার কি হবে জানেন না, শুক্লার বিয়েতে আলাদাভাবে কিছু দেবার কথা ভাবছেন দীপশিখা।শুক্লা কলেজে জয়েন করার পর থেকেই তার সঙ্গে একটা অন্য রকম সম্পর্ক গড়ে তুলেছে।
চায়ে চুমুক দিতে দিতে অন্যান্য রান্না করতে থাকেন।একার জন্য রান্না অনেক জিনিস নষ্ট হয়।একেবারে শেষে ভাত চাপিয়ে দীপশিখা ঘরে এসে বসলেন।টেবিলের উপর শুক্লার বিয়ের কার্ডটা নজরে পড়তে হাতে তুলে চোখ বোলাতে বোলাতে ভাবেন তার কথামতো শুক্লার ভাই লিখেছে।খাম থেকে কার্ডটা বের করে খামটা কুচি কুচি করে ছিড়ে বাস্কেটে ফেলে দিলেন।ব্যাপারটা জানাজানি হলে কেলেঙ্কারীর একশেষ।হুট করে কিছু না ভেবেই ফোনটা দিয়ে দিলেন।অবশ্য ফোনটা বেকার পড়ে ছিল।এখন মনে হচ্ছে সিমটা খুলে দেওয়া উচিত ছিল।তিনি একটা কলেজের অধ্যাপিকা ভেবে খুব খারাপ লাগে। প্রকৃত পরিচয় না দিলেই পারতেন।দীপশিখা নাম অধ্যাপিকা সবই জেনে গেছে।নতুন একটা দুশ্চিন্তা মাথায় ঢুকলো। ফোনটা নিয়ে ছেলেটি কি করতে পারে?বলবেন ফোন চুরি হয়ে গেছে।বাসে ট্রামে ফোন পিক পকেট হওয়া নতুন কোনো ব্যাপার নয়।অবশ্য ছেলেটিকে খারাপ মনে হয় নি।তাকে খুব যত্ন করেছে।অবশ্য বাইরে থেকে মানুষকে কতটুকু বোঝা যায়।ছেলেটি পুরুষালী চেহারা ব্যবহার অত্যন্ত ভাল বয়স খুবই কম না হলে দীপশিখার ওকে খারাপ লাগে নি। কোথায় থাকে কেমন পরিবার কিছুই জানেন না।বলছিল বিএ পরীক্ষা দিয়েছে।পরীক্ষা দিয়ে এইসব করছে যত সব।অবশ্য কথা বলছিল বেশ বুদ্ধিদীপ্ত,একেবারে লেখাপড়া জানে না তা নয়। এই বয়সেই এসব কাজে বেশ এক্সপার্ট,পেনিসটাও বেশ বড়--তা প্রায় আট ন-ইঞ্চি হবে।অবশ্য করছিল বেশ যত্ন করে দীপশিখা রক্তিম হলেন।পেশাদাররা হয়তো কৃত্রিম উপায়ে পেনিস বড় করে। ভাত উথলে পড়তে উঠে হাড়ী নামিয়ে উপুড় করে দিয়ে স্নানে গেলেন।
সারা গায়ে সাবান মেখে বগল গুদ শরীরের বিভিন্নখাজ কচলে কচলে ধুয়ে ফেললেন।শুক্লার কথাগুলো মনে পড়ল।মেয়েরা কি মাটির ভাড় একবার ব্যবহার করলে ফেলে দিতে হবে।থালা বাসন ব্যবহারের পর ধুয়ে আবার ব্যবহার করি না।কমলের সঙ্গে সে অর্থে বলতে গেলে তার বিয়ে হয় নি।পুরানো কথা আর মনে করতে চান না যা হয়ে গেছে তা নিয়ে ভেবে কি হবে।আবার মনে হয় শুক্লার ভাই বাড়ী গিয়ে কি বলেছে কে জানে।শুক্লার সঙ্গে দেখা হলে জানা যাবে।
বাথরুম হতে বেরিয়ে একেবারে উলঙ্গ হয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নিজেকে নিরীক্ষন করেন।শাড়ী পরে বেরোবার জন্য প্রস্তুত হতে থাকেন।
ছেলেটা যাবার আগে বলছিল নিজের দিকে একটু নজর দিতে।এই রকম কথাগুলোই তাকে দুর্বল করে দিয়েছে।
হঠাৎ বাবার কথা মনে পড়ল।দ্বৈপায়ন মিত্র আদর্শবাদী দৃঢ়চেতা মানুষ ছিলেন।সেদিন বাবার অবাধ্য না হলে জীবনটা অন্য রকম হতো।আচলে চোখ মুছলেন।
বসুমতী ইতিমধ্যে বার দুয়েক উকি দিয়ে গেছে।ধাড়া খুবই বিরক্ত বলল,পুরুষদের মেস এত কিসের নজরদারী বলুন তো?
উপেনবাবু বললেন,সংসার নেই কি করবে? নেই কাজ খই ভাজ এই আরকি।
সুখ চিন্তিত বুঝতে পারে এখান থেকে দ্রুত পাততাড়ি গোটাতে হবে।বাঘিনী রক্তের স্বাদ পেয়েছে।কিন্তু যাবে কোথায়?একজন ব্যাচেলরের পক্ষে ঘর পাওয়া মুষ্কিল।রেজাল্টটার জন্য অপেক্ষা করছে। সেও অন্যদের সঙ্গে প্রস্তুত হতে থাকে।তার অবশ্য এদের মত তাড়া ছিল না।কিন্তু একা হলেই ঝাপিয়ে পড়বে বাঘিনী।
তোমাকেও কি আগে বেরোতে হবে?উপেনবাবু জিজ্ঞেস করলেন।
হ্যা কাকু ইদানীং একটু তাড়াতাড়ি যেতে বলেছে।হেসে বলল সুখ।
বালিশের কাছে ওটা ফোন মনে হচ্ছে?
হ্যা সেকেণ্ড হ্যাণ্ড পেলাম।
মিথ্যেরা সারি দিয়ে চলে একটার পর একটা।সুখ গামছা নিয়ে বাথরুমে চলে গেল।
সিথীর মোড়ে আকাশি রঙের গাড়ীটার কাছে এগিয়ে যেতে সামনের দরজা খুলে গেল।শুক্লা লাজুক হেসে উঠে বসতে গাড়ী স্টার্ট করে।
রোজই আসবে নাকি?শুক্লা জিজ্ঞেস করে।
কেন আপত্তি আছে?
আপত্তির কথা হচ্ছে না।আর দু-সপ্তাও নেই--।
আমার কাছে দু-সপ্তা দু-বছরের মত।
থাক হয়েছে।এইযে তুমি আসো বাড়ীতে জানে?
আমার বোন সৃজিতা আছে না?জানো তো মেয়েদের স্বভাব।ড সুজিত বলল।
তুমি অন্যায় করবে সেটা বললে দোষ?
আমি কি অন্য মেয়ে নিয়ে যাচ্ছি?
আমাদের কি বিয়ে হয়েছে?
বাজে তর্ক ভাল লাগছে না অন্যকথা বলো।
কি বলব?
আচ্ছা তোমার দীপুদি বিয়ে করেন নি?
শুক্লার মনটা মুহূর্তে অন্য জগতে চলে যায়।দীপুদির বাবার ইচ্ছে ছিল না মেয়ে শহরে এসে থাকুক।তিনি বুঝিয়েছিলেন এই গ্রামের জলে হাওয়ায় বড় হয়ে মানুষ হয়ে গ্রামের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা থাকবে না?স্বার্থপরের মত চলে যেতে হবে। বাবার এইসব কথায় কর্ণপাত না করে দীপুদি গ্রাম ছেড়ে শহরের কলেজে চাকরি নিলেন।দীপুদির মুখেই শোনা এসব কথা।
কি হল?
দীপুদির জীবনটা ভেরি স্যাড।ভাল বংশের মেয়ে দীপশিখা মিত্র ইংরেজীতে ভাল রেজাল্ট। আমি বেশি জানি না শুনেছি একটা ফ্রড লোকের পাল্লায় পড়েছিলেন তারপর সেপারেশন হয়ে যায়।আর বিয়ে করেন নি।সেই থেকে একাকী জীবন।এই-এই এখানেই থামাও কলেজের কাছে যাবে না।
গাড়ী থামিয়ে সুজিত বলল,তোমার দীপুদির কথা শোনা হল না।অদ্ভুত ভদ্রমহিলা এক ঝলক দেখেই মনে হয়েছিল অন্য রকম। শুক্লা গাড়ী থেকে নেমে হাত নেড়ে বিদায় নিয়ে কলেজের দিকে হাটতে থাকে।
ক্লাস শুরু হয়ে গেছে দীপশিখা ক্লাস নিচ্ছেন।লেকচার করতে করতে নজরেপড়ে পিছনে দুটি মেয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলছে।পড়াতে পড়াতে মনে হল তার পড়ানো কি যথেষ্ট আকর্ষণীয় হচ্ছে না।ক্লাস শেষ হবার মুখে দীপশিখা ডাকলেন,শিখা এ্যাণ্ড কুন্তলা কামিং প্লিজ।
মেয়েদুটি জড়োসড় হয়ে কাছে এসে দাড়াল।
আই ডোণ্ট ফিল গুড টিচিং?
না ম্যাম।
কি কথা হচ্ছিল তোমাদের?
মেয়েদুটি পরস্পর চোখাচুখির পর মাথা নীচু করে দাঁড়িয়ে রইল।
কি হল?সত্যি কথা বললে আমি কিছু বলব না।
ম্যাম কুন্তলা বলছিল--।
এই তুই বলিস নি ডিএম ম্যামকে দেখ--।
তুই বলিস নি ম্যামকে এলিজাবেথ টেলরের মত লাগছে।
কি মিথ্যুক আমি আগে বলেছি--ম্যাম বিশ্বাস করুন--।
ঠিক আছে ঠিক আছে জায়গায় গিয়ে বোসো।দীপশিখা আর কথা বাড়াতে দিলেন না।তিনি জানেন অধ্যাপিকাদের নিয়ে মেয়েরা নানা রকম কথা বলে।এসব কথায় কান দিতে নেই।
ক্লাস শেষ করে স্টাফ রুমে ঢুকে শুনলেন মিসেস সেন বলছেন,এই মোবাইল একেবারে সর্বনাশ করে ছাড়বে।
কেন মিসেস সেন আগে ফোন এলে প্রিসিপালের ঘরে ছুটতে হত এখন জায়গায় বসেই কথা বলতে পারছেন সেটা তো বলছেন না?
আহা আমি তাই বলেছি আপনি জানেন মেয়েরা বিচ্ছিরি-বিচ্ছিরি সাইট খুলে কি সব দেখে?
সবাই হো-হো করে হেসে উঠল।হাসি থামলে মিসেস চ্যাটার্জি বললেন,আমরা যদি মিস ইউজ করি তার জন্য মোবাইলকে দায়ী করা ঠিক হবে না।
দীপশিখা বসে কুন্তলার কথা ভাবে।আজকালকার মেয়েরা অনেক বেশী এ্যাডভান্স।ব্রিজিত বার্ডোট এলিজাবেথ টেলর এই বয়সে আমরা জানতামও না।বড়জোর বাংলা সিনেমার কিছু নায়ক-নায়িকা অবধি ছিল আমাদের দৌড়।সত্যিই কি তাকে এলিজাবেথ টেলরের মত দেখতে? মনে মনে হাসলেন দীপশিখা।