31-12-2022, 01:56 PM
এরপর একদিন, সেদিনও রবিবার, অনুপম বসার ঘরে সোফায় বসে একটা বই পড়ছিল । দেখল মা বাইরে যাবার জন্য রেডি । মা একটা গরদের লালপাড় শাড়ি পড়েছে । বুঝল মা কালীবাড়ি যাবে । মা প্রায়ই কালীবাড়ি পূজা দিতে যায় । ওখানে আরো অনেক বাঙালীরা আসে । তাদের সাথে কথাবার্তা বলে । কালীবাড়িটা বাঙালী বয়স্কা মহিলাদের একটা মিলন স্থল । তবে একটা জিনিস আছে, এরা কেউই ক্লাব-পার্টি এসবে নেই । এই পূজা-আর্চা, ঘর-সংসার এসব নিয়েই থাকেন । তার বাবাও মাঝে মাঝে যান । তবে বাবার ওখানে বাবার বিশেষ সুবিধা হয় না । বাবা একটু চুপচাপ প্রকৃতির । বেশি কথাবার্তা বা ভিড় এসব এড়িয়ে চলেন । বাবা তাই রামকৃষ্ণ মিশনে বেশি যান । মাও বাবাকে বোঝে তাই বাবাকে জোড় করে না, একাই যায় । মায়ের সকালে গিয়ে পূজো দিয়ে বান্ধবীদের সাথে কথা বলে ফিরতে ফিরতে একবেলা লেগে যায় ।
মা তাকে বলল, “হ্যাঁ রে, আজকে আমার সাথে চল না ?”
অনুপম, “না তুমিই যাও । একাই তো যাও ।”
মা, “সে যাই । কিন্তু তুই তো অনেকদিন যাসনি । ঠাকুরমশাই তোর কথা মাঝে মাঝে জিজ্ঞাসা করেন । একবার চল না দেখা করে আসবি ।”
অনুপম, “তা ঠিক বলেছ । প্রায় একবছর যাইনি । সেবার মাসিরা আসতে ওদের নিয়ে গিয়েছিলাম ।”
মা, “আজকে তো তোর কোন কাজ নেই । চল, তাড়াতাড়ি চলে আসব ।”
অনুপম, “ঠিক আছে । আমি রেডি হয়ে নিচ্ছি , বেশিক্ষণ লাগবে না । তুমি বাবার চা-টা রেডি কর, আমি এক্ষুনি আসছি ।”
কিছুক্ষন পর মায়ে-পোয়ে কালীবাড়ি রওনা হ’ল । সেখানে পৌঁছে আগে মাকে নামিয়ে দিল । তারপর সে গাড়ী পার্ক করে ভেতরে গেল । ভেতরে ঢুকে মাকে এদিক-ওদিক খুঁজতে লাগল । একটু পরেই দেখতে পেল । কিন্তু দেখে তো সে অবাক । মা দেবলীনার সাথে কথা বলছে । সাথে আর একজন ভদ্রমহিলা আছেন । দেখে মনে হয় দেবলীনার মা ।
দেবলীনা আজকে একটা তুঁতে রঙের শাড়ী পড়েছে । চুলগুলি খোলা, পিঠের ওপর ছড়ানো । মনে হয় স্নান করে মন্দিরে এসেছে । মুখে কোন মেকআপ নেই । সরল, নিষ্পাপ মুখটা । কি সুন্দর লাগছে । যেন সদ্য ফোটা একটা ফুল । ভোরের শিশিরে স্নান করেছে । অনুপম কিছুক্ষন মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকল । হঠাত লীনার সাথে চোখাচোখি হয়ে গেল । অনুপম আর কি করে, আস্তে আস্তে ওদের দিকে এগিয়ে গেল ।
মা মিষ্টি হেঁসে বললেন, “আয়, তোর সাথে পরিচয় করিয়ে দিই । ইনি আশালতা রায়, লীনার মা । উনি আমার মতোই গৃহিনী । (আশালতা দেবীর দিকে ঘুরে ) আর এ হ’ল আমার ছেলে । একমাত্র সন্তান, অনুপম বোস । ওর সম্বন্ধে আর কি বলার, সবই তো আপনি জানেন ।”
অনুপম প্রণাম করল । আশালতা দেবী বললেন, “থাক বাবা, তোমার কথা অনেক শুনেছি লীনার কাছ থেকে । আজ দেখে ভালো লাগল । আজকালকার ছেলেমেয়েরা বিশেষ করে তোমার মতো সফলরা বড়দের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে না ।” অনুপম লীনার দিকে তাকিয়ে দেখল, তার গালে রক্তিম আভা । এতে তাকে আরো সুন্দর লাগছে । অনুপমের ইচ্ছা করছিল কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকতে । কিন্তু সবার সামনে কি করবে ।
এরপর আর বেশি কথা হয় না । অনুপমরা বাড়ি ফিরে আসে । অনুপমের চোখের সামনে থেকে সেই শিশিরস্নাতা মুখটা কিছুতেই সরছে না । অনুপম চেষ্টা করছে ভুলতে, চেষ্টা করছে দূরে সরিয়ে রাখতে কিন্তু যত চেষ্টা করে তত বেশি করে মনে পড়ছে । ছেলের পরিবর্তন অনুপমের মায়ের চোখ এড়ায় না । তিনি কালীবাড়িতেই তার চোখে লীনার প্রতি ভালোলাগা লক্ষ্য করেছেন । তিনি মনে মনে মৃদু মৃদু হাসতে থাকেন ।
মা তাকে বলল, “হ্যাঁ রে, আজকে আমার সাথে চল না ?”
অনুপম, “না তুমিই যাও । একাই তো যাও ।”
মা, “সে যাই । কিন্তু তুই তো অনেকদিন যাসনি । ঠাকুরমশাই তোর কথা মাঝে মাঝে জিজ্ঞাসা করেন । একবার চল না দেখা করে আসবি ।”
অনুপম, “তা ঠিক বলেছ । প্রায় একবছর যাইনি । সেবার মাসিরা আসতে ওদের নিয়ে গিয়েছিলাম ।”
মা, “আজকে তো তোর কোন কাজ নেই । চল, তাড়াতাড়ি চলে আসব ।”
অনুপম, “ঠিক আছে । আমি রেডি হয়ে নিচ্ছি , বেশিক্ষণ লাগবে না । তুমি বাবার চা-টা রেডি কর, আমি এক্ষুনি আসছি ।”
কিছুক্ষন পর মায়ে-পোয়ে কালীবাড়ি রওনা হ’ল । সেখানে পৌঁছে আগে মাকে নামিয়ে দিল । তারপর সে গাড়ী পার্ক করে ভেতরে গেল । ভেতরে ঢুকে মাকে এদিক-ওদিক খুঁজতে লাগল । একটু পরেই দেখতে পেল । কিন্তু দেখে তো সে অবাক । মা দেবলীনার সাথে কথা বলছে । সাথে আর একজন ভদ্রমহিলা আছেন । দেখে মনে হয় দেবলীনার মা ।
দেবলীনা আজকে একটা তুঁতে রঙের শাড়ী পড়েছে । চুলগুলি খোলা, পিঠের ওপর ছড়ানো । মনে হয় স্নান করে মন্দিরে এসেছে । মুখে কোন মেকআপ নেই । সরল, নিষ্পাপ মুখটা । কি সুন্দর লাগছে । যেন সদ্য ফোটা একটা ফুল । ভোরের শিশিরে স্নান করেছে । অনুপম কিছুক্ষন মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকল । হঠাত লীনার সাথে চোখাচোখি হয়ে গেল । অনুপম আর কি করে, আস্তে আস্তে ওদের দিকে এগিয়ে গেল ।
মা মিষ্টি হেঁসে বললেন, “আয়, তোর সাথে পরিচয় করিয়ে দিই । ইনি আশালতা রায়, লীনার মা । উনি আমার মতোই গৃহিনী । (আশালতা দেবীর দিকে ঘুরে ) আর এ হ’ল আমার ছেলে । একমাত্র সন্তান, অনুপম বোস । ওর সম্বন্ধে আর কি বলার, সবই তো আপনি জানেন ।”
অনুপম প্রণাম করল । আশালতা দেবী বললেন, “থাক বাবা, তোমার কথা অনেক শুনেছি লীনার কাছ থেকে । আজ দেখে ভালো লাগল । আজকালকার ছেলেমেয়েরা বিশেষ করে তোমার মতো সফলরা বড়দের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে না ।” অনুপম লীনার দিকে তাকিয়ে দেখল, তার গালে রক্তিম আভা । এতে তাকে আরো সুন্দর লাগছে । অনুপমের ইচ্ছা করছিল কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকতে । কিন্তু সবার সামনে কি করবে ।
এরপর আর বেশি কথা হয় না । অনুপমরা বাড়ি ফিরে আসে । অনুপমের চোখের সামনে থেকে সেই শিশিরস্নাতা মুখটা কিছুতেই সরছে না । অনুপম চেষ্টা করছে ভুলতে, চেষ্টা করছে দূরে সরিয়ে রাখতে কিন্তু যত চেষ্টা করে তত বেশি করে মনে পড়ছে । ছেলের পরিবর্তন অনুপমের মায়ের চোখ এড়ায় না । তিনি কালীবাড়িতেই তার চোখে লীনার প্রতি ভালোলাগা লক্ষ্য করেছেন । তিনি মনে মনে মৃদু মৃদু হাসতে থাকেন ।