Thread Rating:
  • 12 Vote(s) - 2.58 Average
  • 1
  • 2
  • 3
  • 4
  • 5
সাজু ভাই সিরিজ (সিরিজ নম্বর-০২) (গল্প:- হারিকেন) (সমাপ্ত গল্প)
#1
Tongue 
- ডিভোর্সের পাঁচ বছর পরে প্রাক্তন স্ত্রী কল দিয়ে বললো " আমার স্বামীর অপারেশন করতে হবে, তোমার রক্তের সঙ্গে ওর রক্তের গ্রুপ মিল আছে, প্লিজ এক ব্যাগ রক্ত দেবে? "

- আমি প্রথমে কি বলবো বুঝতে পারছি না, কিন্তু সে যখন আবারও বললো " তুমি তো অনেক সময় কত মানুষের জন্য রক্ত দাও, এবার নাহয় আমার বিধবা জীবন থেকে রক্ষা করবা। প্লিজ সাজু, চুপ করে থেকো না তুমি, তোমার কাছে হাতজোড় করে আবেদন জানাচ্ছি। "

- আমি বললাম, তোমার স্বামী এখন কোথায়? 

- চট্টগ্রাম " মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতাল " এ ভর্তি আছে, একটু দয়া করো। আমি তোমার কাছে সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকব, এমনিতেই তুমি আজও আমার কাছে একজন আদর্শ মানুষ। 

- কিন্তু আমি তো ঢাকায়। 

- ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে আসতে পাঁচ ঘন্টার বেশি সময় লাগবে না, অপারেশন আগামীকাল সকাল দশটায়। এখন বাজে মাত্র সন্ধ্যা সাতটা, তুমি যদি এখনই রওনা দাও তাহলে সকাল হবার আগেই পৌঁছে যাবে। 

- অবস্থা কি বেশি সিরিয়াস? 

- হ্যাঁ সাজু, মারাত্মক এক্সিডেন্ট করেছে তাই এই মুহূর্তে মাথায় অপারেশন করতে হবে। মাথার মধ্যে রক্ত জমাট বেঁধে ইনফেকশন হয়েছে আর সেজন্য রক্তের দরকার। 

- ঠিক আছে আমি বের হচ্ছি। 

- মেলা মেলা ধন্যবাদ সাজু। 

- বাহহ তুমিও? 

- সবাই আজ তোমার বলা এই কথাটা পরিচিত বানিয়ে ফেলেছে তাই আমিও বললাম। 

- আচ্ছা আমি রাখছি। 

কল কেটে দিয়ে কিছুক্ষণ চুপচাপ বসে রইলাম, এ জীবন কেন এমন অদ্ভুত? যে মানুষটার জন্য আমার স্ত্রী আমাকে ছেড়ে চলে গেছে, সেই মানুষ এর জীবন বাঁচাতে আমাকে রক্ত দিতে হবে। হায় আল্লাহ, তুমি পৃথিবীতে কত বিচিত্র ঘটনার জন্ম দাও বোঝা বড় মুশকিল গো আল্লাহ। 

রকি আর সজীব দুজনেই চট্টগ্রামে, আমাকে ওরা বেশ কিছুদিন ধরে যেতে বলছে। কিন্তু আমি যাবো যাবো করে যাওয়া হয়ে ওঠে না, তাই এখন তবে যাওয়া হচ্ছে। কিন্তু এছাড়া অবশ্য আগামীকাল সকালে আমি ঠিকই চট্টগ্রামে যেতাম কারণ আজ দুপুরে রকির কাছে অপরিচিত একটা নাম্বার দিয়ে কল এসেছে। লোকটা নাকি আমাদের হারিয়ে যাওয়া বন্ধু শফিকের সন্ধান জানে। শফিক নাকি মারা যায় নাই, তাকে ফেরত পেতে হলে কিছু টাকা দিতে হবে। কক্সবাজারে নাকি সেই অপরিচিত লোকটা থাকে এবং সেখানেই দেখা করতে হবে। তাই সজীব ও রকি দুজনেই আমাকে সেখানে যেতে বলেছে। যদিও আমাদের ধারণা এটা একটা মিথ্যা চক্রের কাজ তবুও গিয়ে তো দেখি। 

আমার স্ত্রীর নাম ছিল মারিয়া, মাত্র মাত্র সাত মাস পরে আমাদের ডিভোর্স হয়ে গেছে। পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়েছিল তাই মারিয়ার পছন্দের কেউ থাকতে পারে সেটা জানা হয়নি। বাসর ঘরে যখন মারিয়া আমাকে বলেছিল যে তার পছন্দের কেউ আছে, তখন অবাক হয়েছিলাম। নিজেকে তখন বেশি অপরাধী মনে হয়েছিল কারণ আমি তাকে জিজ্ঞেস করতে পারতাম। 

মা মারা গেছে আমার জন্মের তিন বছর পরে, তার পর থেকে দাদা-দাদীর কাছে বড় হয়েছি। বাবা থাকেন লন্ডনে, বিয়ের আগে থেকে বাবা সেখানে থাকতেন। ইচ্ছে ছিল আমার বয়স ৫/৭ বছর হলে তারপর মাকে ও আমাকে সেখানে নিয়ে যাবেন। কিন্তু মা মারা যাবার পরে সবকিছু পরিবর্তন হয়ে গেল, মৃত্যুর সময় মা দাদা-দাদীর কাছে বলেছেন আমাকে যেন তারা তাদের সঙ্গে রাখে। বাবা আর দেশে আসেননি, সেখানেই দ্বিতীয় বিয়ে করে স্ত্রী নিয়ে সুখে শান্তিতে আছে। এখন তার আরো দুটি মেয়ে আছে, তাদের সঙ্গে আমার কথা হয়, এবং তারা আমাকে বড় ভাইয়ের মতো শ্রদ্ধা করে।

দাদা-দাদীর পছন্দের মেয়ে বিয়ে করেছিলাম তাই নিজে কিছু জিজ্ঞেস করিনি। বাবা বাংলাদেশে না এসেই ওখান থেকে শুধু টাকা দিয়ে দায়িত্ব পালন করে গেছে। মা-বাবার ভালবাসা না পেলেও, টাকা নিয়ে কোনদিন কোন সমস্যার মধ্যে পরিনি। 

★★

" ইউনিক "পরিবহনের বাসের মধ্যে করে চট্টগ্রামে রওনা দিলাম, এ বাসটা ননএসির মধ্যে মোটামুটি ভালো সার্ভিস দেয়। বাসে উঠে আগেই সজীবের কাছে কল দিয়ে আমার যাবার কথা জানালাম। 

কুমিল্লা হোটেল পর্যন্ত আসার মধ্যে মারিয়া মোট চারবার কল করেছে, যে মানুষটা মাত্র সাত মাস আমার সঙ্গে প্রচুর খারাপ ব্যবহার করেছে সেই আজকে কত খবর নিচ্ছে। পৃথিবীতে স্বার্থ ছাড়া আর কিছু বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়, আচ্ছা আমার এই যাবার পিছনে কোন স্বার্থ আছে? 

হোটেল থেকে বের হয়ে বাসে বসে টিকটকের মধ্যে গেলাম, মাস খানিক ধরে টিকটিকে একটা মেয়েকে খুব ভালো লেগেছে। মেয়েটা কখনো তার সম্পুর্ন মুখ বের করে ভিডিও বানায় না, হিজাব স্কার্ফ বা ওড়না দিয়ে খুব সুন্দর মুখ ঢেকে শুধুমাত্র চোখ দুটি বের করা থাকে। তার চোখদুটো অসম্ভব সুন্দর লাগে, আমি সাজু টিকটিকে শুধু ঐ একটা মেয়েকে ফলো করে রেখেছি। যখনি সুযোগ হয় তখনই তার ভিডিও দেখি, ভালো লাগে তাই দেখি তবে কখনো কথা হয়নি। বহুবার কমেন্ট করেছি তার মুখটা দেখার জন্য কিন্তু দেখতে পারিনি। 
তার করা টিকটিক ভিডিওর লোকেশন দেখলে বোঝা যায় তিনি ঢাকা শহরে থাকে। কিন্তু কখনো যদি ঠিকানা বের করতে পারি তাহলে অবশ্যই তার সামনে যাবার ইচ্ছে আছে। 

চট্টগ্রামের জিইসি মোড় নামলাম রাত তিনটায়, সেখান থেকে সিএনজি নিয়ে সরাসরি আগ্রাবাদ শিশু হাসপাতালে চলে গেলাম। মারিয়ার সঙ্গে এর আগেই কথা হয়েছে তাই সে স্বামীকে রেখে নিচে এসে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে। আমি সিএনজি ভাড়া দেবার সময়ই সে আমার কাছে ঘেঁষে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইল। ভাড়া পরিশোধ করার পরেই সে বললো:-

- কোন অসুবিধা হয়নি তো? 

তাকিয়ে দেখি মারিয়া দাঁড়িয়ে আছে, হয়তো স্বামী অসুস্থ তাই টেনশনে চেহারার অবস্থা ভালো নয়। ডিভোর্সের পরে আর কখনো আমাদের দেখা হয়নি, আমার নাম্বার তার কাছে ছিল তাও আমার জানা ছিল না। 

- বললাম, না কোন সমস্যা নেই, কিন্তু তুমি তো একবারে কাছে এসে দাঁড়ালে চিনতে অসুবিধা হয়নি? 

- না সাজু, তুমি ঠিক আগের মতো আছো তাই চিনতে কষ্ট হয়নি। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক কখনো না হলেও আমরা একসাথে এক বিছানায় কিন্তু প্রায় অনেকদিন থেকেছি। প্রতিটি মানুষের শরীরে ঠিক আলাদা একটা ঘ্রাণ থাকে, তোমার শরীরে আজও সেই ঘ্রাণ আছে। 

- হাহাহা। 

- হাসলে কেন? 

- তুমি কি ঘ্রাণ দিয়ে আমাকে চিনলে? 

- না এমনিতেই কথা প্রসঙ্গে বললাম। 

- আচ্ছা বাদ দাও, চলো তাড়াতাড়ি ভিতরে ঢুকে কি কি করতে হবে দেখা যাক। 

- আমার শশুর সবকিছুর ব্যবস্থা করে রেখেছেন, তুমি একটু বিশ্রাম করেই রক্ত দেবে। তারপর সেই রক্ত ফ্রিজে রাখা হবে, আর রক্ত দিয়ে তুমি আবার বিশ্রাম করবে। 

প্যাথলজি ল্যাবের মধ্যে সবকিছু ব্যবস্থা করা, শুধু আমাকে আগে দুটো পরীক্ষা করলো। তারপর এক নার্স এসে আমাকে ভিতরে নিয়ে রক্ত নিলেন, পূর্বে অভিজ্ঞতা আছে তাই নার্ভাস নই। 

রক্ত দেবার পরে আমি যখন মারিয়ার সামনে আর একবার এলাম তখন ভোর পাঁচটা। পৃথিবীর বুকে তখন আলো ফুটতে শুরু করেছে, কাছেই কোথাও দোয়েল পাখির শিশ শোনা যাচ্ছে। 

- মারিয়া বললো, তুমি এখন আমার শশুরের সঙ্গে বাসায় গিয়ে ঘুমাবে। ঠিক আছে? 

- আরে না না, আমার বন্ধুদের বাসা আছে এখানে তাই তাদের বলে রেখেছি। ওরা এসে আমাকে নিয়ে যাবে বা আমি যেতে পারবো, তোমরা বরং তোমার স্বামীর অপারেশনের প্রস্তুতি গ্রহণ করো। 

- কিন্তু তুমি তো আমার অতিথি, তাই না? 

- তাতে কি হয়েছে? অপারেশনের সময় আবার আসবো, এখন আপাতত ওদের কাছে যাই। 

- জোর করবো না, তোমার মতো মানুষকে জোর করার ইচ্ছে নেই, একটা কথা বলবো? 

- বলো। 

- কিছু মনে করবে না তো? 

- না, বলো তুমি। 

- তোমার সঙ্গেই যে আমার বিয়ে হয়েছিল সেকথা কাউকে বলবে না। 

- কাকে বলবো? কে জিজ্ঞেস করবে? 

- এখানে আমার শশুর শাশুড়ী সবাই আছে তাই যে কেউ জিজ্ঞেস করতে পারে, তাই আগে থেকে সাবধান করে দিচ্ছি। 

- আচ্ছা কাউকে বলবো না, যদিও কারো সঙ্গে তেমন কথা হবার সম্ভবনা নেই তবুও যদি জিজ্ঞেস করে তাহলে কি বলবো? 

- আমি তাদের বলেছি তুমি আমার মামাতো ভাইর বন্ধু, আমি আমার মামাতো ভাইকে বলার পরে তিনি তার বন্ধুকে পাঠিয়েছে, সেটাই বলবে। 

- ঠিক আছে। 

- কিছু মনে করোনি তো? 

- আরে না না। 

- মেলা মেলা ধন্যবাদ সাজু ভাই। 

- আচ্ছা তোমার স্বামী তো আমাকে চেনে তাই সে দেখলে তো চিনতে পারবে। 

- ওকে নিয়ে সমস্যা নেই, কিন্তু আমার শশুর আর শাশুড়ির জন্য সমস্যা কারণ তারা তাদের ছেলের জন্য একটা বিবাহিতা মেয়ে কখনো আশা করে নাই। কিন্তু রাহাতের (মারিয়ার স্বামী) জন্য তারা সামনাসামনি কিছু বলে না কিন্তু উঠতে বসতে যা বলে সেগুলো শোনার মতো নয়। 

- বুঝতে পারছি। 

- রাহাতের সঙ্গেও মাঝে মাঝে এসব নিয়ে ঝগড়া ওঠে জানো? তখন খুব কষ্ট হয়, কিন্তু পৃথিবীতে আর কাউকে কিছু বলতে পারি না। 

- তোমার পরিবার সবকিছু মেনে নিয়েছে? 

- এখনো মানেননি, তারা এখনো তোমাকেই তাদের জামাই হিসাবে মানে। আমার স্বামীকে নাকি কোনদিন তারা মানবে না, এমনকি এতবড় এক্সিডেন্টের পরও কেউ আসবে না। 

- একদিন সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে, আচ্ছা আমি তাহলে গেলাম আর কোন সমস্যা হলে আমাকে কল দিও। আর আমি দশটার দিকে আরেকবার এসে দেখা করে যাবো, অপারেশন কি হয়। 

- ঠিক আছে। 

★★

সজীব আর রকি বড়পোল এলাকার কাছেই এল-ব্লক আবাসিক এলাকায় থাকে। আমি একটা সিএনজি নিয়ে সরাসরি ওদের বাসার সামনে এসে নামলাম। সিলভার বেলস গার্লস স্কুলের পাশেই মসজিদুস সালাম জামে মসজিদ, তার কাছেই ওরা বাসা নিয়েছে। 

বাসায় পৌঁছে প্রথমে ফ্রেশ হলাম, রকি ঘুমিয়ে আছে আর সজীব জাগ্রত। ফ্রেশ হয়ে বিছানায় বসে সজীব বললো:-

- হঠাৎ করে সাজু সাহেব চট্টগ্রামে? 

- এমনিতেই চলে এলাম, সারপ্রাইজ, তাছাড়া শফিকের ব্যাপারটা সহজে হজম হচ্ছে না। তাই মনে করলাম যে একবার গিয়ে দেখে আসি সেই লোকটা কি বলতে চায়? 

- কিন্তু তোর মুখ দেখে মনে হচ্ছে নিশ্চয়ই অন্য কোন কারণ আছে, জলদি বল। 

- আর কিছু কারণ নেই ভাই। 

- তোর জন্য একটা গরম খবর আছে। 

- আগে থেকে গরম নাকি আগুন জ্বালিয়ে গরম করা হয়েছে? 

- কি দিবি তাই বল? 

- খবরের উপর নির্ভর করছে। 

- তুই বলেছিলি এরপরে আমার ছুটি হলে আমরা তিনজনে নেপালে বেড়াতে যাবো। 

- আচ্ছা ডানন। 

- তোর লামিয়ার খোঁজ বের করেছি। ( ঠিকটকের সেই মেয়েটার নাম লামিয়া মুনতাহা) 

- মানে কি? সত্যি বলছিস তুই? 

- হ্যাঁ, সে গতকাল রাতে কক্সবাজার গিয়েছে, খুব টেকনিক করে তার সঙ্গে ইনবক্সে কথা হয়েছে। সপ্তাহ খানিকের মতো সে কক্সবাজারে থাকবে তারপর আবার ঢাকায় ফিরবে। 

- কিন্তু কক্সবাজার গেলে নতুন টিকটিকে ভিডিও দেখলাম না কেন? 

- এই রাত্রে তো গেল এখনো হয়তো করতে পারে নাই তাই নতুন ভিডিও নেই। 

- তাহলে আমি আজকেই কক্সবাজার যাবো, এক কাজে দুই কাজ হবে। 

- কিন্তু আমাদের তো অফিস আছে। 

- তোরা ছুটি নিয়ে দুদিন পরে আয় অথবা যদি না যাও তাহলে সমস্যা নেই। আমি শফিকের ব্যাপার আর লামিয়ার খোঁজ দুটোই করবো। 

- কিন্তু এটা যদি কারো বিছানো জাল হয়? তোর তো শত্রুদের অভাব নেই সাজু। 

- আল্লাহ আছে রে, কিছু হবে না, আচ্ছা এখন একটু ঘুমাবো খুব ঘুম পাচ্ছে। 

- ঠিক আছে শুয়ে পর। 

★★

মোবাইলের রিংটোনে ঘুম ভেঙ্গে গেল, সজীব রকি দুজনেই অফিসে চলে গেছে। আমি মোবাইল হাতে নিয়ে দেখি মারিয়া কল দিয়েছে, তাই তাড়াতাড়ি রিসিভ করে বললাম:-

- হ্যালো। 

- মারিয়া কান্না করে দিল, তারপর নিজেকে ঠিক রেখে বললো " সাজু তুমি কোথায়? "

- আমি তো বাসায়, কেন কি হয়েছে? অপারেশন কি হয়ে গেছে নাকি? তোমার স্বামী ভালো আছে? 

- অপারেশন হয়নি সাজু, যে ডাক্তার অপারেশন করবে বলে ঠিক ছিল তিনি একটু আগেই এখানে খুন হয়েছে। 

- মানে...? 

- বাসা থেকে এসে তিনি হাসপাতালের নিজের রুমে ঢুকেছেন, তারপর অনেকক্ষণ ধরে বের হচ্ছে না তাই একজন ভিতরে ঢুকে দেখে তিনি ফ্লোরে মৃত পরে আছে। 

- হাসপাতালের মধ্যে নিজের কেবিনে খুন? 

- হ্যাঁ সাজু, তুমি একটু তাড়াতাড়ি আসো, ওরা বলে এখন নাকি অন্য কোন ডাক্তার অপারেশন করতে পারে না। আমার স্বামীর কি হবে? 

- তুমি শান্ত হও আমি আসছি। 

- আচ্ছা। 

বিদ্যুৎ গতিতে বাসা থেকে বের হয়ে হাসপাতালের দিকে রওনা দিলাম, আধা ঘণ্টার মধ্যে সেখানে পৌঁছে সরাসরি মারিয়ার কাছে গেলাম। 

মারিয়া তখন কান্না করতে করতে ক্লান্ত, তার সঙ্গে তার শশুর শাশুড়ী সবাই আছে। আমি মারিয়াকে সঙ্গে নিয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে দেখা করতে গেলাম। তিনি অলরেডি মৃত ডাক্তারের কাছ থেকে এসেছেন, পুলিশও এসে গেছে। 

আমি পথ ঘুরে কিছুক্ষণ পুলিশের সঙ্গে গিয়ে যেই রুমে খুন হয়েছে সেখানে চোখ বুলিয়ে নিলাম। লাশটা মনোযোগ দিয়ে দেখে আগে গেলাম কথা বলতে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে। 

- বললাম, স্যার ক্ষমা করবেন প্লিজ। আসলে এই মুহূর্তে আপনাদের অবস্থা বুঝতে পারছি কিন্তু এটা যেহেতু হাসপাতাল তাই রোগীদের কাজটা অন্তত বন্ধ করবেন না। 

- জ্বি আমি পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চেষ্টা করে যাচ্ছি, আশা করি ঠিক হবে। 

- আমার একটা রোগী আছে, এখনই অপারেশন হবার কথা। যিনি খুন হয়েছে তার অপারেশন করার কথা ছিল কিন্তু... 

- হ্যাঁ বিষয়টা আমার কানে এসেছে কিন্তু আমার হাসপাতালে ওই ক্রিটিকাল অপারেশন করার জন্য তিনজন অভিজ্ঞ ডাক্তার আছে। তাদের মধ্যে একজন দেশের বাইরে আছে, আরেকজন ছুটিতে কক্সবাজার গেছে, আর তৃতীয়জন তো একটু আগেই খুন হয়েছে। 

- তাহলে কক্সবাজারে যিনি আছে তাকে একটু আনা যায় না? নাহলে অন্য কোন হসপিটাল হতে ডাক্তার আনার ব্যবস্থা করবেন প্লিজ? 

- কক্সবাজারে যে গিয়েছে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না, দেখি কি করা যায়। 

পরিচালকের রুম থেকে বের হয়ে সজীবের সঙ্গে কথা বললাম, তারপর আবার মৃত ডাক্তারের লাশ দেখতে গেলাম। ধারালো ছুরি দিয়ে সরাসরি গলা কেটে দিয়েছে, তবে যতটুকু দরকার ঠিক ততটুকু। 

একটু পরে মারিয়া দৌড়ে এসে বললো পরিচালক নাকি আমাকে ডাকছে। আমি তার সঙ্গে দেখা করতে গেলাম। 

- তিনি বললো, আমাদের আরেকটা সর্বনাশ হয়ে গেছে। 

- কি হয়েছে? 

- কক্সবাজার যে বেড়াতে গেছে তাকেও সকাল বেলা হোটেল রুমের মধ্যে খুন করা হয়েছে। 

আমি সচারাচর অবাক হইনা কিন্তু এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি অবাক হলাম, এটা কি সম্ভব? 

এমন সময় মারিয়ার শাশুড়ি দৌড়ে এসে বললো, বৌমা রাহাত কেমন যেন করছে। ডাক্তার কোথায়? তুমি তাড়াতাড়ি চলো, তোমার শাশুড়ি তো চিৎকার করে কান্না শুরু করেছে। 

.
.

চলবে... 

গল্প:- হারিকেন (সাজু ভাই সিরিজ) 
পর্ব:- ০১ 

লেখা:-
মোঃ সাইফুল ইসলাম (সজীব)



সিরিজ নম্বর-০১ (গল্প সাজু ভাই)  এর লিংক।

===========================
পড়তে থাকুন  চটি গল্প এ-র পাশা-পাশি ভিন্ন ধরনের গল্প ✒।


Keep reading chatty stories as well as different types of stories✒.



( Post By- Kam Pagol) 

[+] 5 users Like Bangla Golpo's post
Like Reply
Do not mention / post any under age /rape content. If found Please use REPORT button.


Messages In This Thread
সাজু ভাই সিরিজ (সিরিজ নম্বর-০২) (গল্প:- হারিকেন) (সমাপ্ত গল্প) - by Bangla Golpo - 30-12-2022, 10:14 PM



Users browsing this thread: 1 Guest(s)